রুকুর তাসবিহ দোয়া তাকবীর সময় ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন
রুকুর তাসবিহ দোয়া তাকবীর সময় ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১০, আযান, অধ্যায়ঃ (১১৫-১২৭)=১৩টি
১০/১১৪. অধ্যায়ঃ কাতারে পৌঁছার পূর্বেই রুকূতে চলে গেলে ।
১০/১১৫. অধ্যায়ঃ রুকূতে তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
১০/১১৬. অধ্যায়ঃ সিজদার তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
১০/১১৭. অধ্যায়ঃ সিজদা হইতে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলা ।
১০/১১৮. অধায়ঃ রুকূতে হাঁটুর উপর হাত রাখা ।
১০/১১৯. অধ্যায়ঃ যদি কেউ সঠিকভাবে রুকু না করে ।
১০/১২০. অধায়ঃ রুকূতে পিঠ সোজা রাখা ।
১০/১২১. অধায়ঃ রুকূ পূর্ণ করার সীমা এবং এতে মধ্যম পন্থা ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন ।
১০/১২২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সঠিকভাবে রুকূ করেনি তাকে পুনরায় সালাত আদায়ের জন্য নাবী (সাঃআঃ)-এর নির্দেশ ।
১০/১২৩. অধ্যায়ঃ রুকূতে দুআ ।
১০/১২৪. অধ্যায়ঃ রুকূ হইতে মাথা উঠানোর সময় ইমাম ও মুক্তাদী যা বলবেন ।
১০/১২৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ-এর ফযীলত ।
১০/১২৬. অধ্যায়ঃ
১০/১২৭. অধ্যায়ঃ রুকূ হইতে মাথা উঠানোর পর স্থির হওয়া ।
১০/১১৪. অধ্যায়ঃ কাতারে পৌঁছার পূর্বেই রুকূতে চলে গেলে ।
৭৮৩. আবু বকর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এমন অবস্থায় পৌঁছলেন যে, নাবী (সাঃআঃ) তখন রুকূতে ছিলেন। তখন কাতার পর্যন্ত পৌঁছার পূর্বেই তিনি রুকূতে চলে যান। এ ঘটনা নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট ব্যক্ত করা হলে, তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা তোমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিন। তবে এ রকম আর করিবে না।
১০/১১৫. অধ্যায়ঃ রুকূতে তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
এ ব্যাপারে ইবনু আব্বাস (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। এ বিষয়ে মালিক ইবনু হুওয়ারিস (রাদি.) হইতেও রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে।
৭৮৪. ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বসরায় আলী (রাদি.)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর বলিলেন, ইনি [আলী (রাদি.)] আমাকে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে আদায়কৃত সালাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। আর তিনি উল্লেখ করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) প্রতিবার (মাথা) উঠাতে ও নামাতে তাকবীর বলিতেন।
৭৮৫. আবু সালামা ও আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তাদের সঙ্গে সালাত আদায় করিতেন এবং প্রতিবার উঠা বসার সময় তাকবীর বলিতেন। সালাত শেষ করে তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে আমার সালাতই আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।
১০/১১৬. অধ্যায়ঃ সিজদার তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
৭৮৬. মুতার্রিফ ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাদি.) আলী ইবনু ত্বলিব (রাদি.)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন সিজদায় গেলেন তখন তাকবীর বলিলেন, সিজদা হইতে যখন মাথা উঠালেন তখনও তাকবীর বলিলেন, আবার দুরাকআতের পর যখন দাঁড়ালেন তখনও তাকবীর বলিলেন। তিনি যখন সালাত শেষ করিলেন তখন ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাদি.) আমার হাত ধরে বলিলেন, ইনি [আলী (রাদি.)] আমাকে মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর সালাত স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বা তিনি বলেছিলেন, আমাদের নিয়ে মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করিয়াছেন।
৭৮৭. ইকরিমাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাকামে (ইবরাহীমের নিকট) এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, প্রতিবার উঠা ও ঝুঁকার সময় এবং দাঁড়ানো ও বসার সময় তাকবীর বলছেন। আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে এ কথা জানালে তিনি বলিলেন, তুমি মাতৃহীন হও [১], একি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সালাত নয়?
[১] এটা তিরস্কার স্বরূপ বলা হয়েছে, খারাপ উদ্দেশে নয় ।
১০/১১৭. অধ্যায়ঃ সিজদা হইতে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলা ।
৭৮৮. ইকরিমাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মক্কায় এক বৃদ্ধের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি বাইশবার তাকবীর বলিলেন। আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে বললাম, লোকটি তো আহমক। তিনি বলিলেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক। এ যে আবুল ক্বাসিম-এর সুন্নাত। মূসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ক্বাতাদা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রেও ইকরিমাহ (রাদি.) হইতে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।
৭৮৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাত আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিতেন। অতঃপর রুকূতে যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন, আবার যখন রুকূ হইতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন
اللهُ | سَمِعَ |
আল্লাহর | যে প্রশংসা করে |
حَمِدَه | لِمَن |
প্রশংসা শোনেন | তার |
বলিতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে
رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
الحَمدُ | وَلَكَ | رَبَّناَ |
সমস্ত প্রশংসা | আর আপনার জন্যই | হে আমাদের রব্ব |
বলিতেন। অতঃপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলিতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। এভাবেই তিনি পুরো সালাত শেষ করিতেন। আর দ্বিতীয় রাকআতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাকআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) লাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিতে وَلَكَ الحَمدُ উল্লেখ করিয়াছেন।
১০/১১৮. অধায়ঃ রুকূতে হাঁটুর উপর হাত রাখা ।
আবু হুমায়দ (রাদি.) তাহাঁর সঙ্গীদের সামনে বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) (রুকূর সময়) দু হাত দিয়ে উভয় হাঁটুতে ভর দিতেন ।
৭৯০. মুসআব ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি আমার পিতার পাশে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। এবং (রুকুর সময়) দু হাত জোড় করে উভয় উরুর মাঝে রাখলাম। আমার পিতা আমাকে এমন করিতে নিষেধ করিলেন এবং বলিলেন, আগে আমরা এমন করতাম; পরে আমাদেরকে এ হইতে নিষেধ করা হয়েছে এবং হাত হাঁটুর উপর রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
১০/১১৯. অধ্যায়ঃ যদি কেউ সঠিকভাবে রুকু না করে ।
৭৯১. যায়দ ইবনু ওয়াহব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফা (রাদি.) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে রুকূ ও সিজদা ঠিকমত আদায় করছে না। তিনি তাকে বলিলেন, তোমার সালাত হয়নি। যদি তুমি (এই অবস্থায়) মারা যাও, তাহলে আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-কে যে আদর্শ দিয়েছেন সে আদর্শ হইতে বিচ্যুত অবস্থায় তুমি মারা যাবে।
১০/১২০. অধায়ঃ রুকূতে পিঠ সোজা রাখা ।
আবু হুমায়দ (রাদি.) তাহাঁর সাথীদের সামনে বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) রুকূ করিতেন এবং রুকূতে পিঠ সোজা রাখতেন ।
১০/১২১. অধায়ঃ রুকূ পূর্ণ করার সীমা এবং এতে মধ্যম পন্থা ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন ।
৭৯২. বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ছাড়া নাবী (সাঃআঃ)-এর রুকূ, সিজদা এবং দু সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকূ হইতে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ ছিল।
১০/১২২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সঠিকভাবে রুকূ করেনি তাকে পুনরায় সালাত আদায়ের জন্য নাবী (সাঃআঃ)-এর নির্দেশ ।
৭৯৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একসময়ে নাবী (সাঃআঃ) মসজিদে তাশরীফ আনলেন, তখন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলো। অতঃপর সে নাবী (সাঃআঃ)-কে সালাম করলো। নাবী (সাঃআঃ) তার সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। লোকটি আবার সালাত আদায় করিল এবং আবার এসে নাবী (সাঃআঃ)-কে সালাম দিল। তিনি বললেনঃ আবার গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। অতঃপর লোকটি বলিল, সে মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করিয়াছেন, আমি এর চেয়ে সুন্দর সালাত আদায় করিতে জানি না। কাজেই, আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন হইতে যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ ততটুকু পড়বে। অতঃপর রুকূতে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ আদায় করিবে। অতঃপর রুকূ হইতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরস্থিরভাবে সিজদা করিবে। অতঃপর সিজদা হইতে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করিবে। অতঃপর পুরো সালাত এভাবে আদায় করিবে।
১০/১২৩. অধ্যায়ঃ রুকূতে দুআ ।
৭৯৪. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রুকূ ও সিজদায় এ দুআ পড়তেন-
سُبحاَنَكَ اللَّهُمَّ رَبّاَناَ وَبِحَمدِكَ اللَهُمَّ إِغفِرليِ
উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা; আল্লাহুম্মাগফরলি, অর্থঃ “হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করিতেন।
رَبّاَناَ | اللَّهُمَّ | سُبحاَنَكَ |
হে আমাদের রব | আল্লাহ | আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি |
إِغفِرليِ | اللَهُمَّ | وَبِحَمدِكَ |
আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন | হে আল্লাহ! | এবং আপনার প্রশংসা করছি |
১০/১২৪. অধ্যায়ঃ রুকূ হইতে মাথা উঠানোর সময় ইমাম ও মুক্তাদী যা বলবেন ।
৭৯৫. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলে (রুকূ থেকে উঠতেন) তখন
اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আল্লাহ, আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
বলিতেন, আর তিনি যখন রুকূতে যেতেন এবং রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন, তখন তাক্বীর বলিতেন এবং উভয় সিজ্দা থেকে যখন দাঁড়াতেন, তখন
اللَّهُ أَكبَر
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবর, অর্থঃ আল্লাহ মহান
বলিতেন।
আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ-এর ফযীলত ।
৭৯৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইমাম যখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলেন, তখন তোমরা
اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আল্লাহ, আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
১০/১২৬. অধ্যায়ঃ
৭৯৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অবশ্যই নাবী (সাঃআঃ)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব। আবু হুরাইরা (রাদি.) যুহর, ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকআতেঃ
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলার পর কুনূত পড়তেন। এতে তিনি মুমিনগণের জন্য দুআ করিতেন এবং কাফিরদের প্রতি অভিসম্পাত করিতেন।
৭৯৮. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সময়ে) কুনূত ফজর ও মাগরিবের সালাতে পড়া হত।
৭৯৯. রিফাআ ইবনু রাফি যুরাকী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলিলেন, তখন পিছন থেকে এক সাহাবী
رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ حَمداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فيِهِ
উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু, হামদান কাছীরান ত্বায়্যিবান মুবা–রাকান ফীহি, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা; অঢেল, পবিত্র ও বরকত-রয়েছে-এমন প্রশংসা
الحَمدُ | وَلَكَ | رَبَّناَ |
সমস্ত প্রশংসা | আর আপনার জন্যই | হে আমাদের রব্ব |
طَيِّباً | كَثيراً | حَمداً |
পবিত্র | অঢেল | প্রশংসা |
فيِهِ | مُبارَكاً | |
এমন | ও বরকত |
বলিলেন। সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, কে এরূপ বলেছিল? সে সাহাবী বলিলেন, আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি দেখলাম ত্রিশ জনের অধিক মালাইকা এর সওয়াব কে পূর্বে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন। [১]
[১] রুকূর পর পঠিতব্য দুআর মর্যাদার কারণে এর সওয়াব লেখার জন্য মালাকদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তাই রুকূ হইতে উঠে এই দুআটি পাঠ করা অধিক মর্যাদাপূর্ণ যা অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে অনেকে না জানার কারণে পড়েন না ।
১০/১২৭. অধ্যায়ঃ রুকূ হইতে মাথা উঠানোর পর স্থির হওয়া ।
আবু হুমায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণনা করেন, নাবী (সাঃআঃ) উঠে এমন সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যে, মেরুদন্ডের হাড় যথাস্থানে ফিরে আসতো ।
৮০০. সাবিত (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) আমাদেরকে নাবী (সাঃআঃ)-এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করে দেখালেন। তিনি যখন রুকূ হইতে মাথা উঠালেন, তখন (এতক্ষণ) দাঁড়িয়ে রইলেন যে, আমরা মনে করলাম, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।
৮০১. বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর রুকূ ও সিজদা এবং তিনি যখন রুকূ হইতে মাথা উঠাতেন, এবং দু সিজদার মধ্যবর্তী সময় সবই প্রায় সমান হত।
৮০২. আবু কিলাবা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মালিক ইবনু হুওায়াইরিস (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)–এর সালাত কেমন ছিল তা আমাদের দেখালেন। অতঃপর রুকূতে গেলেন এবং ধিরস্থিরভাবে রুকূ আদায় করিলেন; অতঃপর তাহাঁর মাথা উঠালেন এবং কিছুক্ষণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তিনি আমাদের নিয়ে আমাদের এই শায়খ আবু বুরাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)–এর ন্যায় সালাত আদায় করিলেন। আর আবু বুরাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) দ্বিতীয় সিজদা হইতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসতেন, অতঃপর দাঁড়াতেন।
Leave a Reply