রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন । ঈসা (আ) ও দজ্জালের বিবরণ

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন । ঈসা (আ) ও দজ্জালের বিবরণ

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন । ঈসা (আ) ও দজ্জালের বিবরণ, এই অধ্যায়ে হাদীস =৩৯ টি ( ১৭০৬-১৭৪৪ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৪৯ঃ রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৈহিক গঠন সম্পর্কে

পরিচ্ছেদঃ ১ – রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর দৈহিক গঠনের বিবরণ
পরিচ্ছেদঃ ২ -ঈসা [আ] ও দজ্জালের বিবরণ
পরিচ্ছেদঃ ৩ -ফিতরাত বা স্বভাব প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৪ -বাম হাতে খাওয়া নিষেধ প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৫ -মিসকীন সম্পর্কে বিবরণ
পরিচ্ছেদঃ ৬ -কাফিরের অন্ত্র প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৭ -রৌপ্য পাত্রে পান করা এবং পানীয় বস্তুতে নিঃশ্বাস ফেলা নিষেধ
পরিচ্ছেদঃ ৮ -দাঁড়িয়ে পান করা প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদঃ ৯ -পানীয় বস্তু ডান দিক হইতে বিতরণ আরম্ভ করা সুন্নত
পরিচ্ছেদঃ ১০ -পানাহার সম্বন্ধীয় বিবিধ বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ১১ -গোশত খাওয়া প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদঃ ১২ -আংটি পরিধান প্রসঙ্গে
হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
পরিচ্ছেদঃ ১৩ -জন্তুর গলার হার ও ঘন্টা খুলে ফেলা

পরিচ্ছেদঃ ১ – রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর দৈহিক গঠনের বিবরণ

১৬৪৯ আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ অধিক লম্বা বা অধিক বেঁটে ছিলেন না। আর না তিনি চুনের মতো সাদা ছিলেন, না একেবারে শ্যামল বর্ণ ছিলেন [বরং সাদা লাল মিশান রং ছিল]। তাঁর চুল [হাবশীদের মতো] খুব কোঁকড়ানও ছিল না আর একেবারে সোজাও ছিল না। যখন তিনি চল্লিশ বৎসর বয়সে উপনীত হলেন তখন আল্লাহ্ তাআলা তাহাকে নবী করলেন। নবী হওয়ার পর তিনি দশ বৎসর মক্কায় এবং দশ বৎসর মদীনায় অবস্থান করলেন। ষাট বৎসর বয়সে ইনতিকাল করেন। {১} ঐ সময় তাঁর চুল ও দাড়ির ২০টি চুলও সাদা হয়নি।

[বুখারি ৩৫৪৮, মুসলিম ২৩৪৭]{১} মুসলিম শরীফে আছে, তাঁর বয়স ৬৩ বৎসর হয়েছিল। বুখারি-মুসলিমেও আয়েশা [রাদি.] কর্তৃক তাঁর এই বয়সই বর্ণিত হয়েছে। নবী হওয়ার পর তিনি মক্কায় ১৩ বৎসর এবং মদীনায় ১০ বৎসর ছিলেন।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২ -ঈসা [আ] ও দজ্জালের বিবরণ

১৬৫০ আবদুল্লাহ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, রাত্রে আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি কাবার কাছে রয়েছি এবং সেই অবস্থায় আমি মেটে রঙের একজন লোক দেখলাম যেরূপ মেটে রঙের সুশ্রী লোক হয়ে থাকে। তার কাঁধ পর্যন্ত চুল লম্বা ছিল। তার চুলে তিনি চিরুনী দিয়ে আঁচড়িয়েছেন এবং উহা হইতে তখনও পানি ঝরছে। তিনি দুইজন লোকের উপর ভর করে অথবা তিনি বলেছেন দুইজন লোকের কাঁধে ভর করে কাবার তাওয়াফ করছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে ? আমাকে উত্তর দেয়া হল, ইনি মসীহ ইব্নু মরিয়াম। {১} অতঃপর আমি অন্য একজন লোককে দেখলাম [যার] চুল খুব কোঁকড়ান। ডান চোখ তার কানা যেন ঐ চক্ষু ফোলা আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই ব্যক্তি কে ? কেউ উত্তর দিল, এ হল মসীহ্ দাজ্জাল।

[বুখারি ৫৯০২, মুসলিম ১৬৯]{১} ঈসা [আ]-এর স্পর্শ দ্বারা রুগ্ন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যেত, এইজন্য তাহাকে মসীহ্ বলা হত। দজ্জালকে মসীহ বলার কারণ এই যে, সে ৪০ দিনের মধ্যে সমস্ত পৃথিবী ঘুরে আসবে। ঈসা [আ] ও দজ্জাল কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে আগমন করিবেন। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ উভয়ের চিহ্ন বলে দিয়েছেন যেন মুসলমান তাকে চিনতে পারে এবং ধোঁকায় পতিত না হয়।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৩ -ফিতরাত বা স্বভাব প্রসঙ্গ

প্রকৃতিগত সুন্নত পাঁচটি [১] নখ কাটা, [২] গোঁফ ছাঁটা, [৩] বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা, [৪] নাভীর নিচের চুল কামান, [৫] খাতনা করা।

১৬৫১ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

[মারফু, বুখারি ৫৮৮৯, মুসলিম ২৫৭]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ মারফু

১৬৫২ সাঈদ ইবনি মুসায়্যার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ইবরাহীম [আ] সর্বপ্রথম মেহমানদারী করিয়াছেন, সর্বপ্রথম খাতনা করিয়াছেন, সর্বপ্রথম গোঁফ কেটেছেন, আর সর্বপ্রথম সাদা চুল দেখে বলেছেন, ইয়া আল্লাহ্, ইহা কি ? আল্লাহ্ তাআলা বলিলেন ইহা ইজ্জত ও সম্মান। ইবরাহীম [আ] বলিলেন হে প্রভু, আমার সম্মান বাড়িয়ে দাও। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, গোঁফ এমনভাবে কাটা উচিত যেন ঠোঁটের কিনারা দেখা যায়। একেবারে কামিয়ে ফেলবে না। {১}

{১} ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-এর মতে গোঁফ কামান সুন্নত। আর আবু হানীফ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর মতে ছোট করে কেটে ফেলা উত্তম।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৪ -বাম হাতে খাওয়া নিষেধ প্রসঙ্গ

১৬৫৩ জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বাম হাতে খেতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি এক জুতা পরিধান করে চলতে, এক কাপড়ে নিজেকে ঢেকে নিতে নিষেধ করিয়াছেন যাতে লজ্জাস্থানে কোন কাপড় না থাকে ।

[সহীহ, মুসলিম ২০৯৯]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৫৪ আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেহ খেতে বসে তখন ডান হাতে তার খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। কেননা শয়তান বাম হাতে খায় এবং পান করে।

[সহীহ, মুসলিম ২০২০]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৫ -মিসকীন সম্পর্কে বিবরণ

১৬৫৫ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে সে মিসকীন নয়, যাকে এক লোকমা, দুই লোকমা একটি খেজুর বা দুটি খেজুর দান করা হয়। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! তা হলে মিসকীন কারা ? তিনি বলিলেন, যার নিকট এই পরিমাণ মাল নাই, যা দিয়ে সে নিজের প্রয়োজন মিটাতে পারে আর তার অবস্থা কারো জানা নাই যে, তাকে সাদকা দেয়া যেতে পারে, আর না সে লোকের নিকট চেয়ে বেড়ায়।

[বুখারি ১৪৭৯, মুসলিম ১০৩৯]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৫৬ যায়দ ইব্নু আসলাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ইব্নু বুজাইদ আনসারী আল হারেসী [রাদি.] হইতে এবং তিনি তাঁর দাদা হইতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ইরশাদ করিয়াছেন যে, মিসকীনদেরকে [যা কিছু সম্ভব হয়] দাও, যদিও পোড়া খুর হোক না কেন।

{১} [সহীহ, নাসাঈ ২৫৬৩, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন {সহীহ আল জামে} ৩৫০২]{১} পোড়া খুর বা আগুনে জ্বলে গিয়েছে এমন খুর বলিতে মামুলী বস্তুকে বুঝায় অর্থাৎ মিসকীনকে উল্লেখযোগ্য কিছু দান করিতে সমর্থ না হলে অন্তত যৎকিঞ্চিৎ বস্তুও যদি দিতে পারা যায়, তবে তাই দাও।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৬ -কাফিরের অন্ত্র প্রসঙ্গ

১৬৫৭ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, মুসলমান এক অন্ত্রে খায় এবং কাফির সাত অন্ত্রে খায়।

{১} [বুখারি ৫৩৯৬, মুসলিম ২০৬২]{১} প্রকৃত মুসলমান সবর করে। আর কাফির পেট পুরে খায়। অধিক খাওয়া অবৈধ নয়। তবে পেট পূর্ণ করে খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কাজেই পরিমাণ মতো খাওয়াই উত্তম। লোভের বশবর্তী হয়ে অধিক খাওয়া মন্দ কর্মের শামিলরাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৫৮ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জনৈক কাফির [জাহজা ইব্নু সাঈদ গেফারী] রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর মেহমান হল। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ একটি ছাগলের দুধ দোহন করিতে নির্দেশ দান করলেন। [কাফির] মেহমান সমস্ত দুধ পান করিল। আবার দ্বিতীয় ছাগলের দুধ দোহন করা হলে পর লোকটি উহাও সব পান করিল। অতঃপর তৃতীয় ছাগলের দুধও সব পান করিল। এইভাবে একে একে সাতটি ছাগলের দুধ সে [একাই] পান করিল। পরদিন সকালে লোকটি ইসলাম গ্রহণ করিল। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ তাকে একটি ছাগলের দুধ পান করিতে দিলেন। তিনি তা পান করলেন, পরে আরো একটি ছাগলের দুধপান করিতে দিলেন। কিন্তু তিনি তা পান করিতে সক্ষম হলেন না। তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ফরমালেন, মুসলমান এক পেটে পান করে, কিন্তু কাফির সাত পেটে পান করে।

[বুখারি ৫৩৯৬, মুসলিম ২০৬৩]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৭ -রৌপ্য পাত্রে পান করা এবং পানীয় বস্তুতে নিঃশ্বাস ফেলা নিষেধ

১৬৫৯ উম্মে সালমা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি রৌপ্যের [অথবা স্বর্ণের] পাত্রে করে পানাহার করে, সে স্বীয় পেটে ঘটাঘট জাহান্নামের আগুন ভরে নেয়।

[বুখারি ৫৬৩৪, মুসলিম ২০৬৫]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৬০ আবু মুসান্না জুহনী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি মারওয়ান ইব্নু হাকাম [রাদি.]-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় তার নিকট আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] আগমন করলেন, তখন মারওয়ান তাহাকে বলিলেন, আপনি কি রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর কাছে শুনেছেন যে, তিনি পানিতে [কিংবা পানীয় বস্তুতে] শ্বাস ফেলতে [ফুঁ দিতে] নিষেধ করিয়াছেন? আবু সাঈদ [রাদি.] উত্তর দিলেন, জি হ্যাঁ। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি এক নিশ্বাসে [পানি পান করে] তৃপ্ত হই না। তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, পাত্রটিকে মুখ হইতে পৃথক করে নিশ্বাস গ্রহণ কর। সেই ব্যক্তি পুনরায় জিজ্ঞেস করিল, পানিতে কোন ময়লা [জাতীয় কিছু ভাসতে] দেখলে তখন কি করব? রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন [কিছু পানিসহ] সেটা বাহিরে ফেলে দাও।

{১} [হাসান, তিরমিজি ১৮৮৭, আলবানী হাদীসটি হাসান বলেছেন, {আস সিলসিলাহ আস সহীহাহ ৩৮৫}]{১} পানিতে অন্য কোন খারাপ বস্তু পড়লে উহাকে ফুঁ দিয়ে বের করিতে নেই, বরং পানির কিছু অংশ এমনভাবে ফেলে দেবে যে, সেই সঙ্গে ঐ বস্তু বের হয়ে যায়। রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৮ -দাঁড়িয়ে পান করা প্রসঙ্গ

১৬৬১ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.], আলী ইব্নু আবী তালিব [রাদি.] ও উসমান ইব্নু আফফান [রাদি.] দাঁড়িয়ে পানি পান করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৬২ ইব্নু শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ]- হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল মুমিনীন আয়িশা [রাদি.] ও সাদ ইব্নু আবী ওয়াক্কাস [রাদি.] দাঁড়িয়ে পানি পান করাকে খারাপ মনে করিতেন না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৬৩ আবু জাফর কারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.]-কে দাঁড়িয়ে পানি পান করিতে দেখেছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৬৪ আমির ইব্নু আবদুল্লাহ্ ইব্নু যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর পিতা দাঁড়িয়ে পানি পান করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৯ -পানীয় বস্তু ডান দিক হইতে বিতরণ আরম্ভ করা সুন্নত

১৬৬৫ আনাস ইব্নু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর খিদমতে দুগ্ধ আনা হল। তাতে কুয়ার পানি মিশ্রিত ছিল। তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর ডান দিকে বসা ছিলেন জনৈক মরুবাসী এবং বাম দিকে ছিলেন আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.]। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ দুগ্ধ পান করলেন এবং সেই মরুবাসী লোকটিকে পান করিতে দিলেন আর বলিলেন, ডান দিক হইতে পরিবেশন কর।

{১} [বুখারি ৫৬১৯, মুসলিম ২০২৯]{১} অথচ আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.] উক্ত মরুবাসী লোকটির তুলনায় মর্যাদার দিক দিয়ে বহু ঊর্ধ্বে ছিলেন। তথাপি রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ডান দিকে বেদুঈনকে দেয়া পছন্দ করিয়াছেন। যে কোন ভাল কাজ ডানদিক হইতে আরম্ভ করাকে তিনি ভালবাসতেন।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৬৬ সাহল ইব্নু সাদ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর কাছে দুধ আনা হল। তিনি তা থেকে পান করলেন। তখন তাঁর ডান দিকে একটি বালক এবং বাম দিকে কয়েকজন বৃদ্ধ লোক ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বালকটিকে বলিলেন, তুমি অনুমতি দিলে আমি আগে এই [বাম দিকের] বৃদ্ধ লোকদেরকে দেই ? বালকটি বলল, না, আল্লাহর কসম! ইয়া রসূলাল্লাহ্, আপনার উচ্ছিষ্ট হইতে আমার অংশ আমি কাউকে দিতে চাই না। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আগে তাকেই দিলেন।

[বুখারি ৫৬২০, মুসলিম ২০৩০]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১০ -পানাহার সম্বন্ধীয় বিবিধ বর্ণনা

১৬৬৭ আনাস ইব্নু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু তালহা [আনাস ইব্নু মালিকের মাতা-উম্মে সুলাইম-এর দ্বিতীয় স্বামী] উম্মে সুলাইমকে বলিলেন যে, আমি দেখলাম, ক্ষুধার কারণে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর আওয়ায বের হচ্ছে না। তোমার কাছে কিছু খাবার আছে কি ? [এটা শুনে] উম্মে সুলাইম বলল, হ্যাঁ আছে। অতঃপর যবের তৈরি কিছু রুটি সে বের করিল এবং একখানা কাপড়ের এক অংশ দিয়ে তা আবৃত করে আমার [আনাসের] হাতে দিয়ে দিল। কাপড়ের অন্য অংশ আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে আমাকে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর খিদমতে পাঠিয়ে দিল। আমি উহা নিয়ে যখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর খিদমতে হাযির হলাম, তখন তিনি মসজিদে বসা ছিলেন। অনেক লোক তাঁর কাছে বসা ছিল। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। তিনি নিজেই জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে আবু তালহা পাঠিয়েছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি [আবার] জিজ্ঞেস করলেন, খাবারের জন্য পাঠিয়েছে ? আমি বললাম হ্যাঁ। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ [উপস্থিত] সকলকে বলিলেন, তোমরা সকলেই উঠ। অতএব সকলেই উঠল। আমি আগে আগে ছিলাম [আর তারা আমার পেছনে পেছনে আসছিলেন]। আমি [আনাস] আবু তালহাকে গিয়ে খবর দিলাম। আবু তালহা উম্মে সুলাইমকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ মানুষজন সঙ্গে নিয়ে আসতেছেন। অথচ আমাদের কাছে এই পরিমাণ খাবার নাই যে, তাঁদের সকলকে খাওয়াতে পারি! উম্মে সুলাইম বলিলেন, আল্লাহ্ ও আল্লাহর রসূল খুব ভাল অবগত আছেন। আবু তালহা বের হয়ে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আবু তালহার সাথে অগ্রসর হলেন এবং তাঁরা উভয়ে গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, হে উম্মে সুলাইম! তোমার কাছে যা কিছু আছে আমার কাছে নিয়ে আস। উম্মে সুলাইম সেই রুটি নিয়ে এলেন। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ উহাকে টুকরা টুকরা [খণ্ড খণ্ড] করার নির্দেশ দিলেন। উম্মে সুলাইম রুটির সেই খণ্ডগুলোতে এক কৌটা ঘী ছিটিয়ে দিলেন তখন উহা মলীদা হয়ে গেল। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আল্লাহ্ যা চাহেন তা বলিলেন, [পড়লেন]। তৎপর ইরশাদ করলেন, দশজনকে ডাক। অতএব দশজনকে ডাকা হল। তাঁরা সকলেই খেয়ে তৃপ্ত হয়ে চলে গেলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আর দশজনকে ডাকতে বলিলেন। সেই দশজন এসে তৃপ্ত হয়ে খেলেন এবং চলে গেলেন। এইভাবে আরও দশজনকে ডাকতে বলিলেন। তাঁরাও তৃপ্ত হয়ে খেলেন এবং চলে গেলেন। এমন কি যতজন মানুষ সঙ্গে এসেছিলেন সত্তর কিংবা আশিজন সকলেই তৃপ্ত হয়ে খেলেন।

[বুখারি ৩৫৭৮, মুসলিম ২০৪০]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৬৮ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, দুইজনের খাবার তিনজনের জন্য যথেষ্ট এবং তিনজনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট।

[বুখারি ৫৩৯২, মুসলিম ২০৫৮]রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৬৯ জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন যে, [ঘরের] দরজা বন্ধ কর, মশকের মুখ বন্ধ কর, পাত্র ঢেকে রাখ এবং বাতি নিভিয়ে দাও। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খোলে না, [মশকের মুখে দেয়া] ছিপি খোলে না, ঢাকা পাত্র খুলে না। আর ইঁদুর লোকদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়।

{১} [বুখারি ৩২৮০, মুসলিম ২০১২]{১} ইঁদুর অনেক সময় বাতির সলতে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় সলতে জ্বলন্ত অবস্থায় থাকলে ঘরে আগুন লেগে যাওয়ার আশংকা থাকে।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৭০ আবু শুরাইহ আল কাবী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও কিয়ামতের উপর ঈমান এনেছে, সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা নীরব থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান এনেছে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান এনেছে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। একদিন এক রাত ভাল মতো মেহমানদারী করিবে এবং তিন দিন পর্যন্ত যা আছে, তা দিয়েই মেহমানদারী করিবে। এর পরও মেহমানদারী করিতে পারলে সাদাকা করার সাওয়াব পাবে। আর মেহমানের জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, মেযবানকে [যার কাছে মেহমান হয়েছে তাকে] কষ্ট দিয়ে বেশি দিন তার কাছে অবস্থান করিবে।

{১} [বুখারি ৬০১৯, মুসলিম ৪৮]{১} অর্থাৎ মেহমান এলে তাকে হাসিমুখে স্বাগত জানাবে, তার আরামে থাকার ব্যবস্থা করিবে, সাধ্যমতো ভাল খাবার খাওয়াবে এবং কুশলবার্তা জিজ্ঞেস করিবে। তিনদিন পর্যন্ত মেহমানদারী করা সুন্নত। এর অধিক সওয়াবের কাজ বটে। রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭১ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, এক ব্যক্তি পথ চলতেছিল। সে খুব বেশি পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল। একটি কূপ দেখে উহাতে নেমে পানি পান করিল। এরপর কূপ হইতে বেরিয়ে এসে দেখল যে, একটি কুকুর পিপাসায় কাতর হয়ে হাঁপাচ্ছে এবং কাদা লেহন করিতেছে। লোকটি [মনে মনে] বলল, আমার মতো এই কুকুরটিও পিপাসায় কাতর হয়েছে। অতঃপর লোকটি [পুনরায়] কূপে নেমে তার মোজায় পানি ভর্তি করে মুখ দিয়ে ধরে নিয়ে বের হয়ে এল। {১} অতঃপর লোকটি কুকুরটিকে পানি পান করাল। [তার এই কাজে] আল্লাহ্ তাআলা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাকে মাফ করে দিলেন। সাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! জানোয়ারকে [জীবজন্তুকে] পানি খাওয়ালে আমাদের সওয়াব হইবে কি ? রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, নিশ্চয়ই! প্রাণী মাত্রকেই পানি পান করানোর মধ্যে সওয়াব আছে।

{২} [বুখারি ২৩৬৩, মুসলিম ২২৪৪]{১} চামড়ার মোজায় পানি ভরে রাখা যায়। কূপের ভিতরে গিয়ে মোজায় পানি নিয়ে বের হইতে অসুবিধা হয় বিধায় পানি ভর্তি মোজাকে হাতে রাখতে পারেনি, বরং মুখে করে আনতে হয়েছে।{২} পিপাসার্ত মুসলমান হোক কিংবা কাফের হোক অথবা অপর কোন জীবজন্তু হোক, তাদের প্রতি সদয় হওয়া সওয়াবের কাজ- মানবীয় দায়িত্বও বটে। সৃষ্টির প্রতি দয়া প্রদর্শন এমনই ব্যাপার, যা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয়। উহা কখনও বিফল হয় না। তবে ঐ সমস্ত জীবজন্তু এই নিয়মবহির্ভূত যারা মানুষের শত্রু। যেমন সাপ, বিচ্ছু, বাঘ, ভল্লুক ইত্যাদি। এইগুলোর প্রতি সদয় হইতে নেই, বরং এইগুলোকে যেখানেই পাওয়া যায় মেরে ফেলাই সওয়াবের কাজ। অন্যথায় এরা মানুষের প্রাণ সংহার করিবে।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদী

১৬৭২ জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ একটি সেনাবাহিনী সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় প্রেরণ করলেন। আবু উবায়দা ইব্নুল জাররাহ [রাদি.]-কে সে বাহিনীর নেতা বানালেন। সে বাহিনীতে তিন শত সৈনিক ছিল। আমিও [অর্থাৎ জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ] সে দলে শামিল ছিলাম। পথিমধ্যে [আমাদের] আহার্য ফুরিয়ে গেল। আবু উবায়দা [রাদি.] যে পরিমাণ খাদ্য অবশিষ্ট আছে, উহা একত্র করার আদেশ দিলেন। অতএব তা একত্র করা হলে পর দেখা গেল যে, দুই বস্তা খেজুর মাত্র আছে। আবু উবায়দা [রাদি.] আমাদেরকে প্রতিদিন অল্প অল্প দিতেন। শেষ পর্যন্ত জনপ্রতি [মাত্র] একটি করে খেজুর পাওয়া যেতে লাগল। অতঃপর তাও নিঃশেষ হয়ে গেল। ওয়াহাব ইব্নু কায়সান [রাদি.] বলেন, আমি জাবির [রাদি.]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, একটি করে খেজুরে কি হত ? [কিছুই তো হয় না]। তিনি বলেন, তাও যখন শেষ হয়ে গেল, তখন সেইটার কদর বুঝতে পারলাম। অতঃপর আমরা যখন সমুদ্র তীরে পৌঁছালাম, তখন সেখানে পাহাড়সম এক বিরাট মাছ পাওয়া গেল। গোটা বাহিনী আঠার দিন পর্যন্ত সেই মাছ খেল। অতঃপর আবু উবায়দা সেই মাছের হাড় [কাঁটা] দাঁড় করাবার নির্দেশ দিলেন। পাঁজরের দুইটি হাড় মুখোমুখি করে দাঁড় করিয়ে রাখা হল। উহার নিচে দিয়ে উষ্ট্র চলে গেল, উষ্ট্রের গায়ে হাড় লাগল না। {১} [বুখারি ২৪৮৩, মুসলিম ১৯৩৫]

ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, الظَّرِبُ অর্থ পাহাড়।

{১} বুখারি শরীফের রেওয়ায়তে আছে যে, অতঃপর আমরা যখন মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নিকট এই ঘটনা বর্ণনা করলাম, তখন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বললেনঃ আল্লাহ্ তোমাদের রিযিকের ব্যবস্থা করিয়াছেন, সেটা খাও। যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে আমাকেও দাও। বাহিনীর লোকদের কেউ কেউ কিছু গোশত সঙ্গে নিয়ে এসেছিল; রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ তা খেলেন।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৭৩ সাদ ইব্নু মুআযের দাদী হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, হে মুসলিম মহিলাগণ! তোমাদের কেউই যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে তুচ্ছ মনে না করে, যদিও সে ছাগলের পোড়া খুর পাঠায় না কেন।

{১} [বুখারি ৬০১৭, মুসলিম ১০২৯, আবু হুরাইরা থেকে বর্ণনা করেন]{১} অর্থাৎ কেউ কোন মামুলী বস্তুও যদি প্রতিবেশীর জন্য পাঠায়, উহাকে তুচ্ছ করে অগ্রাহ্য করিবে না, বরং যা দেয় তা সন্তুষ্ট চিত্তে কবুল করিতে হয়।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৭৪ আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবী বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন যে, ইহুদীগণকে আল্লাহ্ ধ্বংস করুন, তাদের উপর চর্বি খাওয়া হারাম করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা উহা বিক্রয় করে মূল্য খেয়েছে।

{১} [বুখারি ২২২৪, মুসলিম ১৫৮৩, তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]{১} বোঝা গেল যে, যাহা খাওয়া হারাম উহা বিক্রয় করাও হারাম।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭৫ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, ঈসা ইব্নু মরিয়ম [আ.] বলিতেন, হে বনী ইসরাঈল! তোমরা স্বচ্ছ পানি, শাকপাতা ও যবের রুটি খাও; গমের রুটি খেও না। কেননা তোমরা উহার শোকরিয়া আদায় করিতে পারবে না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭৬ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি আবু বাকর সিদ্দীক এবং উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে উপস্থিত পেলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উভয়কে মসজিদে আগমনের কারণ জিজ্ঞেস করলেন। তাঁরা বলিলেন, ক্ষুধার তাড়না আমাদেরকে বের করে এনেছে। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, আমাকেও ক্ষুধায় এখানে নিয়ে এসেছে। অতঃপর তাঁরা {রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ, আবু বাকর ও উমার [রাদি.]} আবুল হাইসাম ইবনি তাইহান আনসারী [রাদি.]-এর নিকট গেলেন। তিনি যবের রুটি তৈরি করার আদেশ দিলেন এবং নিজে একটি ছাগল জবাই করার জন্য উদ্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, দুধের ছাগল জবাই করো না। অতঃপর তিনি [আবুল হাইসাম] আর একটি ছাগল জবাই করলেন এবং মশকে মিষ্ট পানি ভরে [ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য] একটি খেজুর গাছে ঝুলায়ে রাখলেন। অতঃপর খাবার পরিবেশিত হলে সকলে খেলেন এবং সেই পানি পান করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, এটা সেই নিয়ামত রোজ কিয়ামতে যার সম্বন্ধে তোমরা জিজ্ঞাসিত হইবে।

{১} [সহীহ, ঈমাম মুসলিম মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন ২০৩৮, ঈমাম মালিক এর নিকট হাদীসটি পৌঁছেছে মর্মে বর্ণনা করিয়াছেন]{১} এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন “অতঃপর নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে নিয়ামত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হইবে।”রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭৭ ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] একদা রুটিতে ঘী মেখে খাচ্ছিলেন। এমন সময় জনৈক গ্রাম্য লোক এল। তিনি তাকেও ডাকলেন। গ্রাম্য লোকটিও রুটি খেতে লাগল এবং রুটির সাথে সেই ময়লাও খেতে লাগল, যা ঘী-এর পাত্রে লেগেছিল। উমার [রাদি.] তাকে বলিলেন, তুমি কোনদিন কিছু খাওনি মনে হচেছ! লোকটি বলল, আল্লাহর কসম! আমি অনেক দিন ধরে ঘী খাইনি এবং ঘী লেগে আছে এমন রুটি মুখে দেইনি। অতঃপর উমার [রাদি.] বলিলেন, যতদিন পর্যন্ত জনসাধারণের আর্থিক অবস্থা পূর্বে যেমন ছিল তেমন না হয়, ততদিন পর্যন্ত আমিও ঘৃত খাব না। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} তখন দেশে খাদ্যভাব ছিল। জনসাধারণের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাই অনেকদিন ধরে জনগণ ভাল খাবার খেতে পারেনি। গ্রাম্য লোকটি সেই কথাই বলছিল। পক্ষান্তরে উমার [রাদি.] প্রকৃত ব্যাপার উপলব্ধি করে জনগণের আর্থিক অবস্তা পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত ঘৃত খাবেন না বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭৮ আনাস ইব্নু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.] যখন আমীরুল মুমিনীন ছিলেন, তখন তাঁর সম্মুখে এক সা খেজুর রাখা হত; আর তিনি উহা খেতেন। এমন কি খারাপ ও শুকনা খেজুরও খেতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.] বলেন, উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.]-কে যখন ফড়িং সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হল [ইহা কি হালাল, না হারাম] তিনি বলিলেন, আমি পছন্দ করি যে, যদি আমার কাছে এক থলি ফড়িং হত, তবে আমি উহা খেতাম [অর্থাৎ ফড়িং খাওয়া হালাল এবং উহা বেশ ভাল খাদ্য]। [ইহা পঙ্গপাল, এক বিশেষ ধরনের ফড়িং।] [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭৯ হুমাইদ ইব্নু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবু হুরায়রা [রাদি.]-এর নিকট তাঁর আকীকস্থ [জায়গার নাম] যমীনের খামারে বসেছিলাম। এমন সময় তাঁর নিকট কিছু সংখ্যক মদীনাবাসী সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে এসে তার নিকট নামল। হুমাইদ বলেন, আবু হুরায়রা [রাদি.] আমাকে বলিলেন, আমার আম্মার নিকট গিয়ে আমার সালাম বল এবং আমাদের কিছু খাওয়াইতে বল। হুমাইদ বলেন, [আমি তাঁর আম্মার কাছে গিয়ে উক্ত সংবাদ জানালাম]। তিনি তিনটি রুটি, কিছু যাইতুনের তেল এবং সামান্য লবণ পাত্রে রেখে উহা আমার মাথার উপর রাখলেন। উহা নিয়ে আমি তাঁদের [আবু হুরায়রা প্রমুখের] কাছে পৌঁছালাম এবং তাঁদের সম্মুখে উহা রাখলাম। আবু হুরায়রা [রাদি.] উহা দেখে আল্লাহু আকবার বলিলেন এবং বলিলেন, আল্লাহর শোকর, যিনি পেট ভরে রুটি খাইয়েছেন। ইতোপূর্বে আমাদের অবস্থা এই ছিল যে, খেজুর ও পানি ব্যতীত আর কিছুই ছিল না। উক্ত খাবার আগন্তুকদের জন্য যথেষ্ট হয়নি। অতঃপর তারা চলে গেল, আবু হুরায়রা [রাদি.] আমাকে বলিলেন, ভাতিজা! ছাগলগুলোকে ভালমতে যত্ন করো, উহাদের নাক মুছে দিও, উহাদের থাকার স্থানটা পরিষ্কার রেখো এবং সেখানেই এক কোণে নামাজ পড়িও। কেননা উহা বেহেশতী জীব। সেই জাতের কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে জনসাধারণের উপর এমনই এক সময় আসবে, যখন মারওয়ানের [আড়ম্বরপূর্ণ] ঘরের চেয়ে ছাগলের ছোট একটি পাল অধিক প্রিয় হইবে। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} মারওয়ান তখন মদীনার গভর্নর ছিলেন। তাঁর ঘর সেই হিসাবে আড়ম্বরপূর্ণ হইবে এবং বিরাট হইবে। উদ্দেশ্য এই যে, ফিতনা-ফাসাদের যুগে ঘরের কোণে কিংবা মাঠে-জঙ্গলে তথা নির্জনে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকা রাজত্বের চেয়েও উত্তম হইবে।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৮০ আবু নাঈম ওয়াহব ইব্নু কাইসান [রাদি.] জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর নিকট খাবার নিয়ে আসা হল। তাঁর সাথে তাঁর পালক ছেলে উমার ইব্নু আবী সালমাও ছিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ তাহাকে বলিলেন, বিসমিল্লাহ্ বলে তোমার সামনের দিক হইতে খাও। [সহীহ, ঈমাম বুখারি ৫৩৭৮, ওমর বিন আবু সালামাহ থেকে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করিয়াছেন, আর ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৮১ ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি কাসিম ইব্নু মুহাম্মাদকে বলিতে শুনিয়াছি যে, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ্ ইব্নু আব্বাস [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট এসে বলল, আমার নিকট একটি ইয়াতীম বালক আছে। তার উট আছে। আমি উহার দুধ পান করব কি ? ইব্নু আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, যদি তুমি তার হারিয়ে যাওয়া উট তালাশ কর এবং উটের অসুখে-বিসুখে ঔষধ সেবন করাও, উহার [খড়-কুড়া ও পানির] হাউজ লেপন কর এবং পানের সময় পানি দাও তবে তুমি উহার দুধ এইভাবে পান করিতে পার যে, উটের বাচ্চার যেন ক্ষতি না হয় কিংবা উটের বংশ বৃদ্ধির জন্য উহা ক্ষতিকর না হয়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৮২ বর্ণণাকারী হইতে বর্ণিতঃ

উরওয়া ইব্নু যুবাইর [রাদি.]-এর কাছে যখন কোন খাবার কিংবা পানীয় বস্তু আসত, এমন কি ঔষধও আসত, তবে তিনি উহা খেতেন এবং পান করিতেন আর বলিতেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যই, যিনি আমাদেরকে হিদায়াত করিয়াছেন, খাইয়েছেন, পান করিয়েছেন এবং নিয়ামত দান করিয়াছেন। তিনি সর্বাপেক্ষা বড়। হে পরওয়ারদিগার! তোমার নিয়ামত আমরা তখন পেয়েছি, যখন আমরা পাপাচারে লিপ্ত ছিলাম। সেই নিয়ামতেই সকাল-সন্ধ্যা অতিবাহিত করেছি। আমরা তোমার কাছে সেই নিয়ামত আমাদের জন্য পূর্ণ করে দিতে এবং আমাদেরকে শোকর আদায় করার তৌফিক দানের প্রার্থনা করছি। তোমার উত্তম [দানের] চাইতে আর কিছুই উত্তম নাই এবং তুমি ব্যতীত কোনই মাবুদ নেই। হে নেক বান্দাদের এবং সারা জাহানের প্রতিপালক! সমস্ত প্রশংসা [তুমি] আল্লাহর জন্যই, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোনই মাবুদ নেই। আল্লাহ্ যা চান তাই হয়, আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা নেই। হে পরওয়ারদিগার! আমাদের রুজি-রোজগারে বরকত দাও এবং আমাদেরকে দোযখের আযাব হইতে রক্ষা কর। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৮৩ বর্ণণাকারী হইতে বর্ণিতঃ

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-এর কাছে কেউ জিজ্ঞেস করিল, যদি কোন স্ত্রীলোক গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে [অর্থাৎ যার সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া শরীয়তসম্মত, তার সাথে] কিংবা স্বয়ং তার গোলামের সাথে খাবার খায়, তবে কি উহা জায়েয আছে ? অতঃপর তিনি [ঈমাম মালিক] উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ, যদি প্রচলিত প্রথানুযায়ী হয় এবং সেখানে অপরাপর মানুষও থাকে তবে কোন অসুবিধা নেই। মহিলা কখনও তারা স্বামীর সাথে খায় এবং সেই সমস্ত লোকের সাথেও খায়, যাদেরকে তার স্বামী খাওয়ায়, আবার কখনও স্বীয় ভ্রাতার সাথে খায়। তবে স্ত্রীলোকের জন্য গায়রে মাহরামের সাথে নির্জনে থাকা মকরূহ [তাহরীমা]।

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১১ -গোশত খাওয়া প্রসঙ্গে

১৬৮৪ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.] বলেছেন, গোশত খাওয়া হইতে বিরত থাক। কেননা শরাবের [মদের] মতো গোশত খাওয়ারও একটা নেশা হয়। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.] জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ আনসারী [রাদি.]-কে এমন অবস্থায় দেখলেন যে, তখন তার [জাবিরের] সাথে গোশতের একটা পূর্ণ থলি ছিল। উমার [রাদি.] জিজ্ঞেস করলেন, ইহা কি? জাবির [রাদি.] জওয়াব দিলেন, ইয়া আমীরুল মুমিনীন! আমার গোশত খাওয়ার ইচ্ছা হল, তাই এক দিরহামের গোশত ক্রয় করলাম। উমার [রাদি.] বলিলেন, তোমাদের কেউই ইহা চায় না যে, নিজে না খেয়ে প্রতিবেশীকে খাওয়াবে কিংবা তার চাচাত ভাইকে দিবে। তোমাদের নিকট হইতে এই আয়াতটি কোথায় গেল [যেখানে বলা হয়েছে যে] أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَاتِكُمْ তোমরা পার্থিব জীবনে দুনিয়ার স্বাদ উপভোগ করলে এবং বেশ উপকৃত হলে [অতএব আজ উহার পরিণাম ভোগ কর]। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} উদ্দেশ্য এই যে, গোশত খাওয়া যদিও ভাল, কিন্তু এমনভাবে খাওয়া ভাল নয়, উহা অভ্যাসে পরিণত হয়। এমন কি উহা ব্যতীত আর কিছু খেতেই মনে চায় না।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১২ -আংটি পরিধান প্রসঙ্গে

১৬৮৫ আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ স্বর্ণের একটি আংটি পরিধান করিতেন। একদা তিনি দাঁড়িয়ে উক্ত আংটি ফেলে দিলেন এবং বলিলেন, আর কখনও ইহা পরিধান করব না। [ইহা দেখে] অন্যান্য সকলেই নিজ নিজ আংটি খুলে ফেললেন।

{১} [বুখারি ৫৮৬৯, মুসলিম ২০৭১]{১} বুখারি ও মুসলিম শরীফের রেওয়ায়তে আছে যে, এর পর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ রৌপ্যের আংটি তৈরি করিয়েছিলেন। অতঃপর সাহাবীগণও রৌপ্যের আংটি তৈরি করিয়েছিলেন।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৮৬ সাদাকা ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাদি.]-এর কাছে আংটি পরিধান করার বৈধতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, পরিধান কর এবং লোকজনকে জানিয়ে দাও যে, আমি তোমাকে আংটি পরিধান করার পক্ষে ফাতাওয়া দিয়েছি। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৩ -জন্তুর গলার হার ও ঘন্টা খুলে ফেলা

১৬৮৭ আবু বাসীর আনসারী আব্বাদ ইবনি তামীমকে হইতে বর্ণিতঃ

তিনি [আবু বাসীর] রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর সাথে কোনও একা সফরে ছিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ একজনকে কাজে পাঠালেন, আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবু বাকর [রাদি.] বলেন, আমার বিশ্বাস যে, তখন সমস্ত লোক ঘুমিয়েছিল। কাজটি ছিল কোন উটের গলায় কোন হার, তাবীয কিংবা ঘন্টা যেন না থাকে। থাকলে কেটে ফেলতে বলেন। {১} [বুখারি ৩০০৫, মুসলিম ২১১৫]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমার মনে হয় চোখ লাগবে এই ভয়ে তা লটকানো হয়েছিল।

{১} ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, সেই তাবীয কিংবা হার ইত্যাদি যা বদ নজর হইতে রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হত। তাতে ঘন্টা বেঁধে দেয়া হত। ফলে উটের অসুবিধা হত এবং ঘন্টার শব্দে শত্রুরাও সাবধান হয়ে যেত।রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

Comments

One response to “রাসুল সাঃ এর দৈহিক গঠন । ঈসা (আ) ও দজ্জালের বিবরণ”

Leave a Reply