খেলাধুলা উদারতা হাসি পরামর্শ মহব্বত ও রসিকতা নিয়ে হাদিস

খেলাধুলা উদারতা হাসি পরামর্শ মহব্বত ও রসিকতা নিয়ে হাদিস

খেলাধুলা উদারতা হাসি পরামর্শ মহব্বত ও রসিকতা নিয়ে হাদিস << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ৬, দান্যতা, কৃপণতা ও দোষ

১২১. অনুচ্ছেদঃ যে ধরনের খেলাধুলা, হাসি-ঠাট্টা ও রসিকতা নিষিদ্ধ।
১২২. অনুচ্ছেদঃ কল্যাণের দিকে পথ প্রদর্শন।
১২৩. অনুচ্ছেদঃ মানুষের প্রতি ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন।
১২৪. অনুচ্ছেদঃ মানুষের সাথে খোলা মনে মেলামেশা করা।
১২৫. অনুচ্ছেদঃ মুচকি হাসি।
১২৬. অনুচ্ছেদঃ হাসি।
১২৭. অনুচ্ছেদঃ তুমি আবির্ভূত হলে সশরীরে আবির্ভূত হও এবং প্রস্থান করলেও সশরীরে প্রস্থান করো।
১২৮. অনুচ্ছেদঃ পরামর্শদাতা হলো আমানতদার।
১২৯. অনুচ্ছেদঃ পরামর্শ করা।
১৩০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তার ভাইকে ভ্রান্ত পরামর্শ দেয় তার পাপ।
১৩১. অনুচ্ছেদঃ মানুষের পারস্পরিক মহব্বত।
১৩২. অনুচ্ছেদঃ স্নেহ-মমতা।
১৩৩. অনুচ্ছেদঃ রসিকতা।
১৩৪. অনুচ্ছেদঃ শিশুর সাথে রসিকতা।

১২১. অনুচ্ছেদঃ যে ধরনের খেলাধুলা, হাসি-ঠাট্টা ও রসিকতা নিষিদ্ধ।

২৪০

আবদুল্লাহ ইবনুস সাইব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যেন তার সাথীর কোন বস্তু হস্তগত না করে, ঠাট্টাচ্ছলেও নয়, বাস্তবিকপক্ষেও নয়। তোমাদের কেউ তার সাথীর লাঠি নিলেও তা যেন তাকে ফেরত দেয় [দারিমি, তিরমিজী, তাহাবী]।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১২২. অনুচ্ছেদঃ কল্যাণের দিকে পথ প্রদর্শন।

২৪১

আবু মাসউদ আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, আমি ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েছি। আমাকে একটি বাহন দান করুন। তিনি বলেনঃ আমার কাছে তা নেই। বরং তুমি অমুকের কাছে যাও। হয়তো সে তোমাকে বাহন দিতে পারে। সে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট গেলো এবং সে তাকে বাহন দান করলো। লোকটি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট ফিরে এসে তাকে তা অবহিত করলো। তিনি বলেনঃ কেউ কল্যাণের পথ দেখালে সে কল্যাণ সাধনকারীর সমান সওয়াব পায় [মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৩. অনুচ্ছেদঃ মানুষের প্রতি ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন।

২৪২

আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ইহুদী নারী বিষ মিশ্রিত ছাগলের গোশত নিয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো। তিনি তার কিছুটা আহার করিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করে আনা হলো। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আমরা কি তাকে হত্যা করবো না? তিনি বলেনঃ না। রাবী বলেন, আমি আজীবন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুখগহ্বরে সেই বিষের ক্রিয়া লক্ষ্য করেছি [বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, আহমাদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৩

ওয়াহব ইবনি কায়সান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমি আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর [রাঃআঃ]-কে মিম্বারের উপর বলিতে শুনেছিঃ “ক্ষমার নীতি অবলম্বন করো, সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদের থেকে দূরে থাকো” [৭ : ১৯৯]। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! এই আয়াতে লোকদের উত্তম চরিত্র গ্রহণের আদেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর শপথ! যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাহাদের সাথে থাকবো, ততক্ষণ তাহাদের থেকে তা গ্রহণ করিতে থাকবো [বোখারী, আবু দাউদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৪

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা জ্ঞান দান করো, দীনকে সহজসাধ্য করো, কঠিন করো না এবং তোমাদের মধ্যকার কেউ ক্রুদ্ধ হলে সে যেন নীরবতা অবলম্বন করে [আবু দাউদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৪. অনুচ্ছেদঃ মানুষের সাথে খোলা মনে মেলামেশা করা।

২৪৫

আতা ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাত করে বললাম, তাওরাতে উক্ত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বলেন, অবশ্যই। আল্লাহর শপথ! তাওরাতেও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এমন কতক বৈশিষ্ট্য উক্ত আছে যা কুরআনেও উক্ত আছেঃ “হে নাবী! নিশ্চয় আমি আপনাকে সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি” [৩৩ : ৪৫] এবং নিরক্ষরদের আশ্ৰয়স্থল, আপনি আমার বান্দা ও আমার রাসূল। আমি আপনার নাম রেখেছি মুতাওয়াক্কিল [আল্লাহর উপর নির্ভরশীল]। আপনি রুক্ষ মেজাজ, পাষাণহৃদয় ও হাট-বাজারে শোরগোলকারী নন। আপনি মন্দকে মন্দ দ্বারা প্রতিহত করেন নাসায়ী, বরং ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তাকে ততক্ষণ পর্যন্ত তুলে নিবেন না যতক্ষণ তাহাঁর দ্বারা বক্র জাতিকে সরল পথে প্রতিষ্ঠিত না করবেন এবং তারা বলবে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। এর দ্বারা তিনি অন্ধ চক্ষু খুলে দিবেন, বধির কানকে শ্রবণশক্তি দান করবেন, আচ্ছাদিত অন্তরসমূহকে আচ্ছাদনমুক্ত করবেন [বোখারী]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৬

আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

কুরআনের আয়াতঃ “হে নাবী! নিশ্চয় আমি আপনাকে সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি” [৩৩ : ৪৫], তাওরাতে অনুরূপ উল্লেখ আছে [বোখারী]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৭

মুয়াবিয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এমন কথা শুনিয়াছি যার দ্বারা আল্লাহ আমাকে উপকৃত করিয়াছেন। আমি তাকে বলিতে শুনেছিঃ “তুমি সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কারো পেছনে লেগে গেলে তাহাদের সর্বনাশ করিবে”। সুতরাং আমি তাহাদের ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণ হবো না এবং তাহাদের সর্বনাশও করবো না [আবু দাউদ, ইবনি হিব্বান]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৮

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমার এই দুই কান শুনেছে এবং আমার এই দুই চোখ দেখেছে যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুই হাতে হাসান অথবা হুসাইনের দুই হাত চেপে ধরলেন। তার দুই পা ছিল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পায়ের উপর। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলছিলেনঃ আরোহণ করো। বালকটি চড়তে থাকে, এমনকি তার পদদ্বয় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বুকের উপর রাখলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমার মুখ উন্মুক্ত করো। অতঃপর তিনি তাকে চুমা দিলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি তাকে মহব্বত করুন। কেননা আমি তাকে মহব্বত করি [তাবারানি]।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১২৫. অনুচ্ছেদঃ মুচকি হাসি।

২৪৯

কায়েস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমি জারীর [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখনই আমাকে দেখেছেন, আমার সামনে মুচকি হাসি দিয়েছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এই দরজা দিয়ে কল্যাণময় ও বরকতের অধিকারী এক ব্যক্তি প্রবেশ করিবে যার চেহারায় ফেরেশতার হাতের স্পর্শ রহিয়াছে। জারীর [রাঃআঃ] তখন সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করিলেন [বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, আহমাদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫০

মহানাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এমনভাবে হাসতে দেখিনি যাতে তার আলজিভ দেখা যায়। তিনি মুচকি হাসতেন। তিনি আরও বলেন, তিনি মেঘ অথবা বাতাস বইতে দেখলে তাহাঁর চেহারায় দুশ্চিন্তা প্রকাশ পেতো। তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! লোকেরা মেঘ দেখে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়। আর আমি লক্ষ্য করেছি যে, আপনি মেঘ দেখলে আপনার চেহারায় বিরূপ অবস্থা প্রতিভাত হয়। তিনি বলেনঃ হে আয়েশা! তা যে শাস্তির বাহক নয় সেই নিশ্চয়তা আমাকে কে দিবে? এক সম্প্রদায়কে বায়ু দ্বারা শাস্তি দেয়া হয়েছিল। এক সম্প্রদায় শাস্তি আসতে দেখে বললো, তা আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করিবে [বোখারী, মুসলিম, দারিমি]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৬. অনুচ্ছেদঃ হাসি।

২৫১

আবু হুরাইরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কম হাসো, কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায় [তিরমিজী, ইবনি মাজাহ]।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

২৫২

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা বেশি হাসবে না। কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায় [ইবনি মাজাহ, তাবারানি]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫৩

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কতক সাহাবীকে অতিক্রম করছিলেন। তখন তারা হাস্যালাপ ও কথাবার্তায় ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেনঃ সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশী কাঁদতে। অতঃপর তিনি চলে গেলেন এবং লোকজন কাঁদতে লাগলো। তখন মহামহিম আল্লাহ ওহী নাযিল করেন, হে মুহাম্মাদ! আমার বান্দাদেরকে কেন নিরাশ করছো। নাবী [সাঃআঃ] ফিরে এসে বলেনঃ তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো, সরল পথ অবলম্বন করো এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে তৎপর হও [বোখারী, আহমাদ, ইবনি হিব্বান]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৭. অনুচ্ছেদঃ তুমি আবির্ভূত হলে সশরীরে আবির্ভূত হও এবং প্রস্থান করলেও সশরীরে প্রস্থান করো।

২৫৪

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি এ হাদিস বর্ণনাকালে প্রায়ই মহানাবী [সাঃআঃ]-এর উল্লেখ করে বলিতেন, যাঁর ভ্রুযুগল প্রশস্ত, বাহুদ্বয় শুভ্র তিনি আমাকে বলেছেনঃ “তুমি যখন আবির্ভূত হইবে পূর্ণদেহে আবির্ভূত হইবে এবং যখন প্রস্থান করিবে পূর্ণদেহে প্রস্থান করিবে”। কোন চোখ তাহাঁর মত কাউকে কখনও দেখেনি এবং কখনও দেখবে না।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৮. অনুচ্ছেদঃ পরামর্শদাতা হলো আমানতদার।

২৫৫

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] আবুল হায়ছাম [রাঃআঃ]-কে বলেনঃ তোমার কি খাদেম আছে? তিনি বলেন, না। তিনি বলেনঃ আমাদের কাছে বন্দী আসলে তুমি আমাদের নিকট আসবে। তারপর নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে দু’জন বন্দী আনা হলো, এদের সাথে তৃতীয় কেউ ছিলো না। তখন আবুল হায়ছাম [রাঃআঃ] তাহাঁর নিকট উপস্থিত হলেন। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি এদের দুইজনের মধ্যে একজনকে বেছে নাও। তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনিই আমাকে একজন বেছে দিন। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয় তাকে বিশ্বস্ত হইতে হয়। একে নিয়ে যাও। আমি তাকে নামায পড়তে দেখেছি। তার সাথে সদ্ব্যবহার করিবে। পরে তার স্ত্রী তাকে বলেন, নাবী [সাঃআঃ] তার ব্যাপারে যা বলেছেন, তাকে দাসত্বমুক্ত করা ছাড়া অন্যভাবে তার দাবি তুমি পূরণ করিতে পারবে না। আবুল হায়ছাম [রাঃআঃ] বলেন, সে স্বাধীন। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ কোন নাবী অথবা খলীফা প্রেরণ করেননি যার সাথে দুইজন অন্তরঙ্গ বন্ধু দেননি। এক বন্ধু তাকে উত্তম কাজের প্রেরণা দেয় এবং পাপ কাজ থেকে বারণ করে এবং অপরটি তার সর্বনাশ সাধন করে। যে ব্যক্তি মন্দ প্ররোচনাদানকারী বন্ধুর প্ররোচনা থেকে রক্ষা পেয়েছে সে রক্ষা পেয়েছ [আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, হাকিম, ইবনি হিব্বান, তাহাবী]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৯. অনুচ্ছেদঃ পরামর্শ করা।

২৫৬

আমর ইবনি দীনার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] তিলাওয়াত করেন, “তাহাদের সাথে কোন কোন ব্যাপারে পরামর্শ করুন” [মুসান্নাফ ইবনি শায় বাযযার, তাবারানি]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫৭

হাসান বসরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আল্লাহর শপথ! যে সম্প্রদায়ের লোকজন পরামর্শ করে কাজ করে, তারা সর্বোত্তম পন্থার সন্ধান পেয়ে যায়। তারপর তিনি তিলাওয়াত করেন, “তাহাদের বিষয়সমূহ পরামর্শের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়” [৪২ : ৩৮]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তার ভাইকে ভ্রান্ত পরামর্শ দেয় তার পাপ।

২৫৮

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি যা বলিনি তা যে ব্যক্তি আমার প্রতি আরোপ করিবে সে যেন দোযখে তার স্থান করে নিলো। কোন ব্যক্তির নিকট তার কোন মুসলমান ভাই পরামর্শ চাইলো কিন্তু সে তাকে ভ্রান্ত পরামর্শ দিলো। সে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। আর যে ব্যক্তি দলীল-প্রমাণ ছাড়াই ফতোয়া দিলো, তার এই ফতোয়াদানের পাপ তার উপরই বর্তাবে [মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩১. অনুচ্ছেদঃ মানুষের পারস্পরিক মহব্বত।

২৫৯

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমরা ইসলাম গ্রহণ না করা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না। তোমরা পরস্পরকে মহব্বত না করা পর্যন্ত মুসলমান হইতে পারবে না। তোমরা সালামের প্রসার ঘটালে তোমাদের মধ্যে মহব্বত সৃষ্টি হইবে। সাবধান! তোমরা অবশ্যই বিদ্বেষ পরিহার করিবে। কারণ তা মুণ্ডনকারী। আমি তোমাদের বলি না যে, তা চুল মুণ্ডন করে, বরং দীনকে মুণ্ডন করে [আহমাদ, ইবনি মাজাহ, আবু দাউদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি

১৩২. অনুচ্ছেদঃ স্নেহ-মমতা।

২৬০

আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মুমিন দুই ব্যক্তির রূহ এক দিনের দূরত্ব থেকে পরস্পরের সাথে সাক্ষাত করে, অথচ তাহাদের একজন অপরজনকে কখনো দেখেনি [ইতহাফ]।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৬১

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

কতো সুখ-সুবিধার শোকরগোযারী করা হয় না। কতো আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়। কিন্তু অন্তরসমূহের ঘনিষ্ঠতার মত কিছু আমি দেখেনি [ইতহাফ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬২

উমাইর ইবনি ইসহাক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমরা আলোচনা করতাম যে, সর্বপ্রথম মানুষের মন থেকে স্নেহ-মমতা তুলে নেয়া হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৩. অনুচ্ছেদঃ রসিকতা।

২৬৩

আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর এক স্ত্রীর নিকট এলেন। উম্মু সুলাইম [রাঃআঃ]-ও তাহাদের সাথে ছিলেন। তিনি বলেনঃ “ধীরে হে আনজাশা, ধীরে! তোমার চালান যে কাঁচের চালান হে”! রাবী আবু কিলাবা [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এমন বাক্য উচ্চারণ করিলেন, যদি তোমাদের মধ্যকার কেউ তা বলতো, তবে তোমরা নিশ্চয় তাকে দোষারোপ করিতে। তাহাঁর সেই বাক্যটি ছিলঃ “তোমার চালান যে কাঁচের চালান হে” [বোখারী, মুসলিম, নাসায়ী]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬৪

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি আমাদের সাথে রসিকতাও করেন। তিনি বলেনঃ আমি সত্য ছাড়া কিছু বলি না [তিরমিজী, আহমাদ] ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬৫

বাকর ইবনি আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণ একে অপরের প্রতি তরমুজ নিক্ষেপ করেও রসিকতা করিতেন। কিন্তু তারা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হলে যোগ্য পুরুষই প্রতিপন্ন হইতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬৬

ইবনি আবু মুলাইকা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আয়েশা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে রসিকতা করিলেন। তার মা বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এই পরিবারের কোন কোন রসিকতা কিনানা গোত্র থেকে এসেছে। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ বরং আমাদের কতক রসিকতা ঐ গোত্র থেকেই এসেছে।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৬৭

আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট একটি বাহন চাইতে আসে। তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে একটা উষ্ট্রীর বাচ্চা বাহন হিসেবে দিবো। সে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! উস্ত্রীর বাচ্চা দিয়ে আমি কি করবো! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ উষ্ট্রীই তো উট প্রসব করে [আবু দাউদ, তিরমিজী, আহমাদ]।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪. অনুচ্ছেদঃ শিশুর সাথে রসিকতা।

২৬৮

আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] আমাদের [শিশুদের] সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করিতেন। তিনি আমার ছোট ভাইকে বলিতেনঃ হে আবু উমাইর! কি করলো তোমার নুগায়র [বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]!

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬৯

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] হাসান অথবা হুসাইন [রাঃআঃ]-এর হাত ধরলেন, অতঃপর তার পদদ্বয় নিজের পদদ্বয়ের উপর রাখলেন, অতঃপর বলেনঃ আরোহণ করো।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

Comments

Leave a Reply