রঙ্গিন পোশাক – সবুজ, সাদা, লাল , কাসসী, জাফরানী ও রেশমী কাপড়
রঙ্গিন পোশাক – সবুজ, সাদা, লাল , কাসসী, জাফরানী ও রেশমী কাপড় >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭৭, পোশাক-পরিচ্ছদ, অধ্যায়ঃ (২৩-৩৬)=১৭টি
৭৭/২৩. অধ্যায়ঃ সবুজ পোশাক প্রসঙ্গে
৭৭/২৪. অধ্যায়ঃ সাদা পোশাক প্রসঙ্গে
৭৭/২৫. অধ্যায়ঃ পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার জায়িয।
৭৭/২৬. অধ্যায়ঃ পরিধান না করে রেশমী কাপড় স্পর্শ করা।
৭৭/২৭. অধ্যায়ঃ রেশমী কাপড় বিছানো।
৭৭/২৮. অধ্যায়ঃ কাসসী পরিধান করা।
৭৭/২৯. অধ্যায়ঃ চর্মরোগের কারণে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড়ের অনুমতি প্রসঙ্গে।
৭৭/৩০. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের রেশমী কাপড় পরিধান করা।
৭৭/৩১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করিতেন।
৭৭/৩২. অধ্যায়ঃ নতুন বস্ত্র পরিধানকারীর জন্য কী দুআ করা হইবে?
৭৭/৩৩. অধ্যায়ঃ পুরুষের জন্য জাফরানী রং-এর বস্ত্র পরিধান প্রসঙ্গে।
৭৭/৩৪. অধ্যায়ঃ জাফরানী রং-এর রঙিন বস্ত্র।
৭৭/৩৫. অধ্যায়ঃ লাল কাপড় প্রসঙ্গে।
৭৭/৩৬. অধ্যায়ঃ লাল মীসারা প্রসঙ্গে।
৭৭/২৩. অধ্যায়ঃ সবুজ পোশাক প্রসঙ্গে
৫৮২৫
ইকরামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রিফাআ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। পরে আবদুর রহমান কুরাযী তাকে বিবাহ করে। আয়েশা (রাদি.) বলেন, তার গায়ে একটি সবুজ রঙের উড়না ছিল। সে আয়েশা (রাদি.) -এর নিকট অভিযোগ করিল এবং (স্বামীর প্রহারজনিত) স্বীয় গাত্রের চামড়ার সবুজ বর্ণ দেখালো। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন এলেন, আর স্ত্রীগণ একে অন্যের সহযোগিতা করে থাকে, তখন আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ কোন মুমিন মহিলাকে এমনভাবে প্রহার করিতে আমি কখনও দেখিনি। মহিলাটির চামড়া তার কাপড়ের চেয়ে বেশি সবুজ হয়ে গেছে। বর্ণনাকারী বলেনঃ আবদুর রহমান শুনতে পেল যে, তার স্ত্রী রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কাছে এসেছে। সুতরাং সেও তার অন্য স্ত্রীর দুটি ছেলে সাথে করে এলো। স্ত্রী লোকটি বললঃ আল্লাহর কসম! তার উপর আমার এ ব্যতীত আর কোন অভিযোগ নেই যে, তার কাছে যা আছে তা আমাকে এ জিনিসের চেয়ে অধিক তৃপ্তি দেয় না। এ বলে তার কাপড়ের আঁচল ধরে দেখাল। আবদুর রহমান বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! সে মিথ্যা বলছে, আমি তাকে ধোলাই করি চামড়া ধোলাই করার ন্যায় (দীর্ঘস্থায়ী সঙ্গম করি)। কিন্তু সে অবাধ্য স্ত্রী, রিফাআর কাছে ফিরে যেতে চায়। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ব্যাপার যদি তাই হয় তাহলে রিফাআ তোমার জন্য হালাল হইবে না, অথবা তুমি তার যোগ্য হইতে পার না, যতক্ষণ না আবদুর রহমান তোমার সুধা আস্বাদন করিবে। বর্ণনাকারী বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আবদুর রহমানের সাথে তার পুত্রদ্বয়কে দেখে বলিলেন, এরা কি তোমার পুত্র? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এই আসল ঘটনা, যে জন্য স্ত্রী লোকটি এমন করেছে। আল্লাহর কসম! কাকের সাথে কাকের যেমন মিল থাকে, তার চেয়েও বেশি মিল আছে ওদের সাথে এর (অর্থাৎ আবদুর রহমানের সাথে তাহাঁর পুত্রদের)। (আঃপ্রঃ- ৫৩৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৫)
৭৭/২৪. অধ্যায়ঃ সাদা পোশাক প্রসঙ্গে
৫৮২৬
সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উহুদের দিন আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর ডানে ও বামে দুজন পুরুষ লোককে দেখলাম। তাদের পরনে সাদা পোষাক ছিল। তাদের এর আগেও দেখিনি, আর পরেও দেখিনি।(আঃপ্রঃ- ৫৪০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৬)
৫৮২৭
আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট আসলাম। তাহাঁর পরনে তখন সাদা পোশাক ছিল। তখন তিনি ছিলেন নিদ্রিত। কিছুক্ষণ পর আবার এলাম, তখন তিনি জেগে গেছেন। তিনি বললেনঃ যে কোন বান্দা লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বলবে এবং এ অবস্থার উপরে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমি বললামঃ সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে? তিনি বললেনঃ যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে তবুও? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে তবুও। আমি বললামঃ যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও? তিনি যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও। আবু যারের নাক ধূলি ধুসরিত হলেও। আবু যার (রাদি.) যখনই এ হাদীস বর্ণনা করিতেন তখন আবু যারের নাসিকা ধূলাচ্ছন্ন হলেও বাক্যটি বলিতেন। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেনঃ এ কথা প্রযোজ্য হয় মৃত্যুর সময় বা তার পূর্বে যখন সে তাওবাহ করে ও লজ্জিত হয় এবং বলে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, তখন তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।(আঃপ্রঃ- ৫৪০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৭)
৭৭/২৫. অধ্যায়ঃ পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার জায়িয।
৫৮২৮
ক্বাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু উসমান নাহদী (রাদি.) -এর থেকে শুনিয়াছি, তিনি বলেছেনঃ আমাদের কাছে উমার (রাদি.) -এর পক্ষ থেকে এক পত্র আসে, এ সময় আমরা উতবাহ ইবনু ফারকাদের সঙ্গে আযারবাইজানে অবস্থান করছিলাম। (পত্রে লেখা ছিলঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) রেশম ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন, তবে এটুকু এবং ইঙ্গিত দিলেন বুড়ো আঙ্গুলের সাথে মিলিত দুআঙ্গুল দ্বারা (বর্ণনাকারী বলেনঃ ) আমরা বুঝতে পারলাম যে (কতটুকু জায়িয তা) জানিয়ে তিনি পাড় ইত্যাদি বুঝাতে চেয়েছেন।[৫৮২৯, ৫৮৩০, ৫৮৩৪, ৫৮৩৫; মুসলিম পর্ব ৩৭/হাদীস ২০৬৯, আহমাদ ৩৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৮)
৫৮২৯
আবু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আযারবাইজানে অবস্থান করছিলাম। এ সময় উমার (রাদি.) আমাদের কাছে লিখে পাঠান যে, নাবী (সাঃআঃ) রেশমী কাপড় পরতে নিষেধ করিয়াছেন; কিন্তু এটুকু এবং নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর দুআঙ্গুল দিয়ে এর পরিমাণ আমাদের বলে দিয়েছেন। যুহাইর মধ্যমা ও শাহাদাত আঙ্গুল তুলে দেখিয়েছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৯)
৫৮৩০
আবু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে, আমরা উতবাহর সাথে ছিলাম। উমার (রাদি.) তার কাছে লিখে পাঠান যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যাকে আখিরাতে রেশম পরানো হইবে না, সে ব্যতীত অন্য কেউ দুনিয়ায় রেশম পরবে না।
আবু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার দুআঙ্গুল অর্থাৎ শাহাদাত ও মধ্যমা দ্বারা ইশারা করিলেন। [৫৮২৮; মুসলিম পর্ব ৩৭/হাদীস ২০৬৯, আহমাদ ৩৬৫]] আঃপ্রঃ- ৫৪০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০০)
৫৮৩১
ইবনু আবু লাইলা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফাহ (রাদি.) মাদাইনে অবস্থান করেছিলেন। তিনি পানি পান করিতে চাইলেন। এক গ্রাম্য লোক একটি রৌপ্য পাত্রে কিছু পানি নিয়ে আসল। হুযাইফা (রাদি.) তা ছুঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ আমি ছুঁড়ে ফেলতাম না; কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করেছি, সে নিবৃত হয়নি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ স্বর্ণ, রৌপ্য, পাতলা ও মোটা রেশম তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের জন্য) দুনিয়ায় এবং তোমাদের (মুসলিমদের) জন্য আখিরাতে। [১](আঃপ্রঃ- ৫৪০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০২ [১])
[১] ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৫৩০১ ক্রমিক ছুটে গেছে যদিও হাদীসের ধারাবাহিকতা ঠিক আছে সেজন্য একটি নম্বর বাদ পড়েছে।
৫৮৩২
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ কথা কি নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত? তিনি জোর দিয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, সে আখিরাতে তা কখনও পরতে পারবে না। [মুসলিম পর্ব ৩৭/হাদীস ৬০৭৩, আহমাদ ১১৯৮৫] আঃপ্রঃ- ৫০৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৩)
৫৮৩৩
খালীফাহ ইবনু কাব হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইরকে খুতবায় বলিতে শুনিয়াছি। তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, আখিরাতে সে তা পরতে পারবে না।(আঃপ্রঃ- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নাই)
৫৮৩৪
উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, আখিরাতে সে তা পরতে পারবে না। (আ. প্র. ৫৪০৮, ই. ফা. ৫৩০৪)
আবু মামার আমাদের বলেছেন ……………… উমার (রাদি.) নাবী হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নাই)
৫৮৩৫
ইমরান ইবনু হিত্তান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাদি.) -এর নিকট রেশম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু আব্বাস (রাদি.) -এর নিকট যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলামঃ তিনি বলিলেন, ইবনু উমারের নিকট জিজ্ঞেস কর। ইবনু উমারকে জিজ্ঞেস করলাম; তিনি বলিলেন, আবু হাফস অর্থাৎ উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুনিয়ায় যে ব্যক্তিই রেশমী কাপড় পরবে, তার আখিরাতে কোন অংশ নেই। আমি বললামঃ তিনি সত্য বলেছেন। আবু হাফ্স রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর উপর মিথ্যারোপ করেননি।
ইমরানের সূত্রে ঐ রকমই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৫)
৭৭/২৬. অধ্যায়ঃ পরিধান না করে রেশমী কাপড় স্পর্শ করা।
এ সম্পর্কে যুবাইদীর সূত্রে আনাস (রাদি.) থেকে নাবী (সাঃআঃ) -এর হাদীস বর্ণিত আছে।
৫৮৩৬
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) -এর জন্যে একখানা রেশমী বস্ত্র উপহার পাঠানো হয়। আমরা তা স্পর্শ করলাম এবং বিস্ময় প্রকাশ করলাম। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা এতে বিস্ময় প্রকাশ করছো? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ জান্নাতে সাদ ইবনু মুআযের রুমাল এর চেয়ে উৎকৃষ্ট হইবে।(আঃপ্রঃ- ৫৪১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৬)
৭৭/২৭. অধ্যায়ঃ রেশমী কাপড় বিছানো।
আবীদাহ বলেন, এটা পরিধানের মতই ।
৫৮৩৭
হুযাইফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে পানাহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং তিনি মোটা ও চিকন রেশমী বস্ত্র পরিধান করিতে ও তাতে উপবেশন করিতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৭)
৭৭/২৮. অধ্যায়ঃ কাসসী পরিধান করা।
আসিম (রাদি.) আবু বুরদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলাম, কাসসী কী? তিনি বলিলেন, এক প্রকার কাপড়- যা শাম (সিরিয়া) অথবা মিসর থেকে আমাদের দেশে আমদানী হয়ে থাকে। চওড়া দিক থেকে নক্শী করা হয়, তাতে রেশম থাকে এবং উৎরুনজের মত তা কারুকার্যখচিত হয়। আর মীসারা এমন বস্ত্র, যা স্ত্রী লোকেরা তাদের স্বামীদের জন্যে প্রস্তুত করে, মখমলের চাদরের মত তা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। জারীর ইয়াযীদ থেকে বর্ণনা করেন, তাহাঁর বর্ণনায় আছে- কাসসী হচ্ছে নক্শী বস্ত্র যা মিসর থেকে আমদানী হয়, তাতে রেশম থাকে। আর মীসারা হলো হিংস্র জন্তুর চামড়া।
৫৮৩৮
বারাআ ইবনু আযিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের লাল বর্ণের মীসারা ও কাসসী পরিধান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৫৪১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৮)
৭৭/২৯. অধ্যায়ঃ চর্মরোগের কারণে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড়ের অনুমতি প্রসঙ্গে।
৫৮৩৯
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যুবায়র ও আবদুর রহমান –কে তাদের চর্মরোগের কারণে রেশমী কাপড় পরিধান করার অনুমতি প্রদান করেছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৯)
৭৭/৩০. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের রেশমী কাপড় পরিধান করা।
৫৮৪০
আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে একটি রেশমী হুল্লা পরতে দেন। আমি তা পরে বের হই। কিন্তু তাহাঁর [নাবী (সাঃআঃ)] মুখমন্ডলে গোস্বার ভাব আমি লক্ষ্য করি। কাজেই আমি তা টুকরো করে আমার পরিবারের মহিলাদের মধ্যে বেঁটে দেই।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১০)
৫৮৪১
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিত। উমার (রাদি.) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রি হইতে দেখে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! আপনি যদি এটি কিনতেন, তাহলে কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসলে এবং জুমুআর দিনে পরিধান করিতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন হিস্যা নেই। পরবর্তী সময়ে নাবী (সাঃআঃ) উমার (রাদি.) -এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাঁকেই পরতে দেন। উমার (রাদি.) বললেনঃ আপনি আমাকে পরিধান করিতে দিয়েছেন, অথচ এ ব্যাপারে যা বলার তা আমি আপনাকে বলিতে শুনিয়াছি। তিনি বললেনঃ আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে, তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১১)
৫৮৪২
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কন্যা উম্মে কুলসূমের পরনে হালকা নক্শা করা রেশমী চাদর দেখেছেন। (আঃপ্রঃ- ৫৪১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১২)
৭৭/৩১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করিতেন।
৫৮৪৩
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক বছর যাবৎ অপেক্ষায় ছিলাম যে উমার (রাদি.) -এর কাছে সে দুটি মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো যারা নাবী (সাঃআঃ) -এর বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু আমি তাঁকে খুব ভয় করে চলতাম। একদিন তিনি কোন এক স্থানে নামলেন এবং (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) আরাক গাছের নিকটে গেলেন। যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, আমি তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ (তাঁরা হলেন) আয়েশা ও হাফ্সাহ। এরপর তিনি বললেনঃ জাহিলী যুগে আমরা নারীদের কোন কিছু বলে গণ্যই করতাম না। যখন ইসলাম আবির্ভূত হলো এবং (কুরআনে) আল্লাহ তাদের (মর্যাদার কথা) উল্লেখ করিলেন, তাতে আমরা দেখলাম যে, আমাদের উপর তাদের হক আছে এবং এতে আমাদের হস্তক্ষেপ করা চলবে না। একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হচ্ছিল। সে আমার উপর শক্ত ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সে স্থানেই। স্ত্রী বললেনঃ তুমি আমাকে এমন বলছ, অথচ তোমার কন্যা নাবী (সাঃআঃ) -কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসাহর কাছে এলাম এবং বললামঃ আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলের নাফরমানী করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নাবী (সাঃআঃ) -কে কষ্ট দেয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মু সালমাহ (রাদি.) -এর কাছে এলাম এবং তাঁকেও তেমনি বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমার! তুমি আমার সকল ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করছ, কিছুই বাকী রাখনি, এমনকি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ও তাহাঁর স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করিলেন। এক লোক ছিলেন আনসারী। তিনি যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর মজলিস থেকে দূরে থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, যা কিছু হতো সে সব আমি তাঁকে জানাতাম। আর আমি যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর মজলিস থেকে অনুপস্থিত থাকতাম, আর তখন তিনি উপস্থিত থাকতেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর এখানে যা কিছু ঘটতো তা এসে আমাকে জানাতেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর চারপাশে যারা (রাজা-সম্রাট) ছিল তাঁদের উপর রসুলের কর্তৃত্ব কায়িম হয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাস্সান শাসক। তার আক্রমনের আমরা আশঙ্কা করতাম। হঠাৎ আনসারী যখন বললঃ এক বড় ঘটনা ঘটে গেছে। আমি তাকে বললামঃ কী সে ঘটনা! গাস্সানী কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চেয়েও ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর সকল স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম সকল কক্ষ থেকে কান্নার শব্দ আসছে। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর কক্ষের কুঠুরিতে অবস্থান করছেন। প্রবেশ দ্বারে অল্প বয়স্ক একজন খাদিম বসে আছেন। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্যে অনুমতি চাও। অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে ঢুকলাম। দেখলাম নাবী (সাঃআঃ) একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন, যাতে তাহাঁর পার্শ্বদেশে দাগ পড়ে গেছে। তাহাঁর মাথার নীচে চামড়ার একটি বালিশ, তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসাহ ও উম্মু সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মু সালামাহ আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সে সব আমি তাহাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হাসলেন। তিনি ঊনত্রিশ রাত সেখানে থাকার পর নামলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৩)
৫৮৪৪
উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন। তখন তিনি বলছিলেনঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, কত যে ফিতনা এ রাতে অবতীর্ণ হয়েছে। আরও কত যে ফিতনা অবতীর্ণ হয়েছে, কে আছে এমন যে, এ কক্ষবাসীগণকে ঘুম থেকে জাগ্রত করিবে। পৃথিবীতে এমন অনেক পোশাক পরিহিতা মহিলাও আছে যারা কিয়ামতের দিন বিবস্ত্র থাকবে। যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হিন্দ বিনত হারিস-এর জামার আস্তিনদ্বয়ের বুতাম লাগানো ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৪)
৭৭/৩২. অধ্যায়ঃ নতুন বস্ত্র পরিধানকারীর জন্য কী দুআ করা হইবে?
৫৮৪৫
খালিদের কন্যা উম্মু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট কিছু কাপড় আনা হয়। তাতে একটি নক্শাওয়ালা কালো চাদর ছিল। তিনি বললেনঃ আমি এ চাদরটি কাকে পরাব এ সম্পর্কে তোমাদের অভিমত কী? সবাই চুপ থাকল। তিনি বললেনঃ উম্মু খালিদকে আমার কাছে নিয়ে এসো। সুতরাং তাঁকে নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে নিয়ে আসা হলো। তিনি নিজ হাতে তাঁকে ঐ চাদর পরিয়ে দিয়ে বললেনঃ পুরাতন কর ও দীর্ঘদিন ব্যবহার কর। তারপর তিনি চাদরের নক্শার দিকে তাকাতে লাগলেন এবং হাতের দ্বারা আমাকে ইশারা করে বলিতে থাকলেনঃ হে উম্মু খালিদ! এ সানা। হাবশী ভাষায় সানা অর্থ সুন্দর।
ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আমার পরিবারের এক স্ত্রীলোক আমাকে বলেছে, সে ঐ চাদর উম্মু খালিদের পরনে দেখেছে।(আঃপ্রঃ- ৫৪১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৫)
৭৭/৩৩. অধ্যায়ঃ পুরুষের জন্য জাফরানী রং-এর বস্ত্র পরিধান প্রসঙ্গে।
৫৮৪৬
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) পুরুষদের জাফরানী রং-এর কাপড় পরতে নিষেধ করিয়াছেন। [মুসলিম ৩৭/২৩, হাদীস ২১০১, আহমাদ ১২৯৪১] আঃপ্রঃ- ৫৪২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৬)
৭৭/৩৪. অধ্যায়ঃ জাফরানী রং-এর রঙিন বস্ত্র।
৫৮৪৭
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিষেধ করিয়াছেন, মুহরিম যেন ওয়ারস্ ঘাসের কিংবা জাফরানের রং দ্বারা রঙানো কাপড় না পরে। [১৩৪](আঃপ্রঃ- ৫৪২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৭)
৭৭/৩৫. অধ্যায়ঃ লাল কাপড় প্রসঙ্গে।
৫৮৪৮
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) ছিলেন মাঝারি আকৃতির। আমি তাঁকে লাল হুল্লা পরা অবস্থায় দেখেছি। তাহাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কিছু আমি দেখিনি।(আঃপ্রঃ- ৫৪২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৮)
৭৭/৩৬. অধ্যায়ঃ লাল মীসারা প্রসঙ্গে।
৫৮৪৯
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের সাতটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেনঃ রোগীর শুশ্রুষা, জানাযায় শরীক হওয়া এবং হাঁচিদাতার জবাব দান। [৪] আর তিনি আমাদের সাতটি হইতে নিষেধ করেছেনঃ রেশমী বস্ত্র, মিহিন রেশমী বস্ত্র, রেশম মিশ্রিত কাতান বস্ত্র, মোটা বস্ত্র এবং লাল মীসারা বস্ত্র পরিধান করিতে।(আঃপ্রঃ- ৫৪২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৯)
[৪] অর্থাৎ হাঁচিদাতা আলহামদু লিল্লাহ বললে জবাবে ইয়ারহামু কাল্লাহ বলা। এখানে তিনটির উল্লেখ আছে, অন্য হাদীস থেকে জানা যায় বাকী চারটি হলঃ দাওয়াত গ্রহণ করা, সালামের জবাব দেয়া, অত্যাচারিত ব্যক্তিকে সাহায্য করা ও কসমকারীকে মুক্ত করা।
Leave a Reply