রক্তমোক্ষণ রক্তক্ষরণ এ চাটাই পোড়া ও মেহেদি দিয়ে চিকিৎসা

রক্তমোক্ষণ করা

রক্তমোক্ষণ

সহিহুল বুখারি – ৫৭২২ঃ সাহ্‌ল ইবনু সাদ সাঈদী (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন নবী (সাঃআঃ) -এর মাথায় লৌহ শিরস্ত্রাণ চূর্ণ করে দেয়া হল, আর তাহাঁর মুখমন্ডল রক্তাক্ত হয়ে গেল এবং তাহাঁর রুবাঈ দাঁত ভেঙ্গে গেল, তখন আলী (রাঃ) ঢাল ভর্তি করে পানি দিতে থাকলেন এবং ফাতিমা (রাঃ) এসে তাহাঁর চেহারা থেকে রক্ত ধুয়ে দিতে লাগলেন। ফাতিমা (রাঃ) যখন দেখলেন যে, পানি ঢালার পরও অনেক রক্ত ঝরে চলছে, তখন তিনি একটি চাটাই নিয়ে এসে তা পুড়ালেন এবং নবী (সাঃআঃ) -এর যখমের উপর ছাই লাগিয়ে দিলেন। ফলে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল।

(আধুনিক প্রঃ- ৫৩০২, ইঃ ফাঃ- ৫১৯৮)

সুনান আত তিরমিজি

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫১ঃ আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘাড়ের দুই পাশের শিরায় এবং ঘাড়ের কাছাকাছি পিঠের ফুলা অংশে রক্তক্ষরণ করাতেন। তিনি মাসের সতের, ঊনিশ ও একুশ তারিখে রক্তক্ষরণ করাতেন।

সতাহকিক আলবানি হীহ, ইবনু মা-জাহ ।

আবূ ঈসা বলেন, ইবনু আব্বাস ও মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদিস বর্ণিত আছে । এ হাদিসটি হাসান গারীব । শিঙ্গা লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫২ তাহকিক আলবানি

ইবনু মাসঊদ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃতিনি বলেন, মিরাজের রাত প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, এই রাতে ফেরেশতাহাদের যে দলের সম্মুখ দিয়েই তিনি যাচ্ছিলেন তারা বলেছেন, “আপনার উম্মাতকে রক্তক্ষরণের নির্দেশ দিন”।

সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৪৭৭)।

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ – ৩৮৯৪ঃ ইয়াযীদ ইবনু আবূ উবাইদাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি সালামাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) এর পায়ের গোছায় একটি ক্ষতচিহ্ন দেখে বললাম, এটা কি? তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে এখানে আঘাত পেয়েছিলাম। লোকেরা বলিতে লাগলো যে, সালামাহ আহত হয়েছেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমার নিকট আনা হলে তিনি আমার ক্ষতস্থানে তিনবার ফুঁ দিলেন। ফলে আজ পর্যন্ত আমি তাতে কোন ব্যথা অনুভব করি না।

হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫৩ ঃ ইকরিমা (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ

ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ)-এর তিনটি গোলাম ছিল। এরা রক্তমোক্ষণের কাজ করত। এদের মধ্যে দু’টি গোলাম তার ও পরিবারের উপার্জনের উদ্দেশ্যে অর্থের বিনিময়ে রক্তমোক্ষণ করত এবং অপরটি ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) ও তার পরিবারের লোকদের রক্তমোক্ষণ করত।

তাহকিক আলবানি -সনদ দুর্বল । রাবী বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) বলিতেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রক্তমোক্ষণে অভিজ্ঞ দাস কতইনা ভাল! সে খারাপ রক্ত বের করে দিয়ে (উপার্জনের মাধ্যমে) পিঠের বোঝা হালকা করে এবং চোখের ময়লা দূর করে। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৪৭৮)

ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) আরো বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজে যাবার সময় তিনি ফেরেশতাহাদের যে দলকেই অতিক্রম করেন তারা বলেন, “আপনি অবশ্যই রক্তমোক্ষণ করাবেন”। সহীহ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ সতের, ঊনিশ ও একুশ তারিখে তোমাদের রক্তমোক্ষণ করানো উত্তম। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা যেসমস্ত ঔষধ ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম ঔষধ হচ্ছে নস্য, লাদুদ, রক্তমোক্ষণ ও জোলাপ। সহীহ

আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) ও তার সঙ্গীগণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মুখ দিয়ে ঔষধ সেবন করান। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কে আমাকে ঔষধ সেবন করিয়েছে? সবাই এ কথায় চুপ থাকলেন। তিনি বলেন, যারা ঘরের মধ্যে উপস্থিত আছে তাহাদের মধ্যে তাহাঁর চাচা আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) ব্যতীত আর সবাইকে লাদু পান করানো হইবে। “তাঁকে আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) লাদুদ করিয়াছেন” এই অংশ ব্যতীত সহীহ, আর ঐ অংশটুকু মুনকার। কেননা ঐ অংশটুকু আইশা (রাদিআল্লাহু আঃ) বর্ণিত হাদিস “আব্বাস ব্যতীত, কারণ তিনি তোমাদের নিকট উপস্থিত নেই”-এর বিপরীত।

নাসরের মতে লাদূদ ও ওয়াজূর সমার্থবোধক। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। আব্বাস ইবনু মানসূরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদিস প্রসঙ্গে জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আইশা (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও হাদিস বর্ণিত আছে। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫৪ ঃ আলী ইবনু উবাইদুল্লাহ (রহঃ) হইতে তাহাঁর দাদী হতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খাদিমা (সেবিকা) ছিলেন। তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দেহে কোন তলোয়ার বা দা-এর আঘাতে ক্ষত হতো, তিনি তাতে মেহেদী লাগানোর জন্য আমাকে নির্দেশ দিতেন।

সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৫০)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদিস প্রসঙ্গে শুধুমাত্র ফাইদের সূত্রে জেনেছি । এই হাদিসটি কেউ কেউ ফাইদের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন এবং বলেছেন, উবাইদুল্লাহ ইবনু আলী তাহাঁর দাদী সালমা হইতে বর্ণিত । সনদসূত্রে উবাইদুল্লাহ ইবনু আলী উল্লেখ করাই সহীহ্ । উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে মুহাম্মদ ইবনুল আলা হইতে, তিনি যাইদ ইবনুল হুবাব হইতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনু আলীর মুক্তদাস ফাইদ হইতে, তিনি তাহাঁর দাদী হইতে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সূত্রে । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

সুনান আবু দাউদ

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬০ঃ আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনবার ঘাড়ের দু’টি রগে এবং কাঁধে রক্তমোক্ষণ করিয়েছেন। মা’মার (রহঃ) বলেন, একদা আমি রক্তমোক্ষণ করালে আমার স্মৃতি লোপ পেলো, এমনকি সলাতে সূরাহ ফাতিহা অন্যের সাহায্য নিয়ে পাঠ করলাম। তিনি তার মাথার মাঝখানে রক্তমোক্ষণ করিয়েছিলেন।

মা’মার বর্ণিত হাদিস সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৫৮ঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খাদেম সালমা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কেউ মাথাব্যথার অভিযোগ নিয়ে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এলে তিনি তাকে বলিতেনঃ রক্তমোক্ষণ করাও। আর পায়ের ব্যথার অভিযোগের ক্ষেত্রে বলিতেন : মেহেদী পাতার রস লাগাও।

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৫৯ঃআবূ কাবশাহ আল-আনসারী (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাঁর সিঁথিতে এবং দু’ কাঁধের মধ্যখানে রক্তমোক্ষণ করাতেন। তিনি বলিতেনঃ যে ব্যক্তি এই অঙ্গ হইতে রক্তমোক্ষণ করাবে, সে কোন রোগের কোন ঔষধ ব্যবহার না করলেও তার অসুবিধা নেই।

তাহকিক আলবানি । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬১ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসের সতেরো, ঊনিশ বা একুশ তারিখে রক্তমোক্ষণ করাবে, তা সকল রোগের মহা ঔষধ।

তাহকিক আলবানি ।হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬২ঃ কায়্যিসাহ বিনতু আবূ বাকরাহ (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ

তার পিতা নিজের পরিজনকে মঙ্গলবার দিন রক্তমোক্ষণ করাতে বারণ করিতেন। তিনি দাবি করিতেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হইতে এরুপ বর্ণিত হয়েছে যে, মঙ্গলবার দিন হলো রক্তের দিন; এদিনে এমন একটি মুহূর্ত রহিয়াছে, যখন রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না।

দুর্বল : মিশকাত (৪৫৪৯)। (৩৮৬২) বায়হাক্বী। এর সানাদে কাবশাহ বিনতু আবূ বাকরাহ অজ্ঞাত। হাফিয বলেনঃ তার অবস্থা জানা যায়নি। তাহকিক আলবানি ।হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬৩ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাড় মচ্‌কে গেলে তিনি এর জন্য রক্তমোক্ষণ করান।

তাহকিক আলবানি । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬৪ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উবাই (রাদিআল্লাহু আঃ)-এর নিকট একজন ডাক্তার পাঠালেন। অতএব সে তার একটি শিরা কেটে দেয়।

তাহকিক আলবানি ।হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

ইবনে মাজাহ

হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৪৬৪ঃ সাহল বিন সা’দ আস-সাইদী (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

উহুদ যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আহত হলেন। তাহাঁর সামনের পাটির দাঁত ভেঙ্গে গেলো এবং শিরস্ত্রাণের আংটা তাহাঁর মাথায় ঢুকে গেলো। আলী (রাদিআল্লাহু আঃ) ক্ষতস্থানে তার ঢাল দ্বারা পানি ঢালছিলেন এবং ফাতিমা (রাদিআল্লাহু আঃ) তার ক্ষতের রক্ত ধুয়ে দিচ্ছিলেন। ফাতিমা (রাদিআল্লাহু আঃ) যখন দেখলেন যে, পানিতে আরো অধিক রক্ত নির্গত হচ্ছে, তখন তিনি এক খণ্ড চাটাই নিয়ে তা পোড়ালেন, অতঃপর তার ছাই তাহাঁর ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিলেন। এতে রক্ত নির্গমন বন্ধ হয়ে গেলো।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৪৬৫ঃ সাহল বিন সা’দ আস-সাইদী (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

আমি ভালো করেই চিনি যে, উহূদ যুদ্ধের দিন কে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর মুখমন্ডল জখম করেছিলো, কে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর জখম ধুয়েছিল এবং তাতে ঔষুধ লাগিয়েছিল, কে ঢালে করে পানি বয়ে এনেছিলেন, কিসের দ্বারা জখমে প্রলেপ দেয়া হইয়াছিল যার ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হইয়াছিল। অতএব যিনি ঢালে করে পানি বয়ে এনেছিলেন তিনি হলেন আলী (রাদিআল্লাহু আঃ), যিনি জখমের চিকিৎসা করেছিলেন তিনি হলেন ফাতিমা (রাদিআল্লাহু আঃ)। রক্ত বন্ধ না হলে তিনি তাহাঁর জন্য এক টুকরা পুরানো চাটাই পোড়ালেন এবং তার ছাই তাহাঁর জখমের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন, ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে গেলো।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৭৬ঃ আবূ হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা যে সকল জিনিস দ্বারা চিকিৎসা করো তার কোনটির মধ্যে উপকার থাকলে তা রক্তমোক্ষণের মধ্যে আছে।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৭৭ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মিরাজের রাতে আমি ফেরেশতাহাদের যে দলকেই অতিক্রম করেছিলাম, তাহাদের সকলে আমাকে বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি অবশ্যই রক্তমোক্ষণ করবেন।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৭৮ ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

(রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, রক্তমোক্ষণকারী বান্দা কতই না উত্তম! সে খারাপ রক্ত বের করে দিয়ে (উপার্জনের মাধ্যমে) পিঠের বোঝা হালকা করে এবং চোখের ময়লা দূর করে।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। (৩৪৭৮) তিরমিযী ২০৫৩। দঈফাহ ২০৩৬, দঈফ আল-জামি ৫৯৬৬। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৭৯ঃআনাস বিন মালিক (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মিরাজের রাতে আমি ফেরেশতাহাদের যে দলকেই অতিক্রম করেছি, তারা আমাকে বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! হে মুহাম্মাদ! আপনার উম্মাতকে রক্তমোক্ষণ করানোর নির্দেশ দিন।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮০ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী উম্মু সালামা (রাদিআল্লাহু আঃ) তার নিকট রক্তমোক্ষণ করানোর অনুমতি চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ তাইবাকে তার রক্তমোক্ষণ করার নির্দেশ দিলেন। রাবী বলেন, আমার মনে হয়, আবূ তাইবা তার দুধ ভাই ছিলেন কিংবা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮১ঃ আবদুল্লাহ বিন বুহায়নাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাহী জামাল’ নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় তাহাঁর মাথার মধ্যখান বরাবর রক্তমোক্ষণ করিয়েছেন।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮২ঃ আলী (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

জিবরাঈল (আলায়হিস সালাম) ঘাড়ের দু’পাশের শিরায় এবং ঘাড়ের কাছাকাছি পিঠের ফোলা অংশে রক্তমোক্ষণ করানোর পরামর্শ নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসেন।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। (৩৪৮২) হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ খুবই দুর্বল

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৩ঃ আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ পাশের শিরায় এবং ঘাড়ের কাছাকাছি পিঠের ফোলা অংশে রক্তমোক্ষণ করান।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৪ঃ আবূ কাবশাহ আল-আনমারী (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাঁর মাথার মাঝখানে এবং দু’ কাঁধের মাঝ বরাবর রক্তমোক্ষণ করাতেন এবং বলিতেনঃ যে ব্যক্তি নিজ দেহের এ অংশ থেকে রক্তমোক্ষণ করাবে, সে তার কোন রোগের চিকিৎসা না করালেও তার কোন ক্ষতি হইবে না।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৫ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাঁর ঘোড়া থেকে একটি খেজুর কাণ্ডের উপর ছিটকে গেলে তাহাঁর পা মচকে যায়। ওয়াকী (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন, অর্থাৎ ব্যথার কারণে মচকে যাওয়া স্থানে তিনি রক্তমোক্ষণ করান।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৬ঃ আনাস বিন মালিক (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তি রক্তমোক্ষণ করাতে চাইলে যেন মাসের সতের, উনিশ বা একুশ তারিখ বেছে নেয়। তোমাদের কারো যেন উচ্চ রক্তচাপ না হয়। কারণ তাতে জীবননাশের আশংকা আছে।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৭ঃ ইবনু উমার (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

হে নাফে! আমার রক্তে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে (রক্তচাপ বেড়েছে)। অতএব আমার জন্য একজন রক্তমোক্ষণকারী খুঁজে আনো, আর সম্ভব হলে সদাশয় কাউকে আনবে। বৃদ্ধ বা বালককে আনবে না। কারণ, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলিতে শুনেছিঃ বাসী মুখে রক্তমোক্ষণ করালে তাতে নিরাময় ও বরকত লাভ হয় এবং তাতে জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। অতএব আল্লাহর বরকত লাভে ধন্য হইতে তোমরা বৃহস্পতিবার রক্তমোক্ষণ করাও, কিন্তু বুধ, শুক্র, শনি ও রবিবারকে রক্তমোক্ষণ করানোর জন্য বেছে নেয়া থেকে বিরত থাকো। সোম ও মঙ্গলবারে রক্তমোক্ষণ করাও, কেননা এই দিনই আল্লাহ আইউব (আলাইহিস সালাম)-কে রোগমুক্তি দান করেন এবং বুধবার তাকে রোগাক্রান্ত করেন। আর কুষ্ঠরোগ ও ধবল বুধবার দিনে বা রাতেই শুরু হয়।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। (৩৪৮৭) হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৭৬৬। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৮ঃ ইবনু উমার (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

হে নাফে! আমার রক্তচাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতএব আমার জন্য তুমি এক যুবক রক্তমোক্ষণকারীকে নিয়ে এসো, বৃদ্ধকেও নয় এবং বালককেও নয়। রাবী বলেন, বিন উমার (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলিতে শুনেছিঃ বাসি মুখে রক্তমোক্ষণ করানো উত্তম, তা জ্ঞান বৃদ্ধি করে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং হাফেজের মুখস্থ শক্তি বৃদ্ধি করে। কেউ রক্তমোক্ষণ করাতে চাইলে যেন আল্লাহর নামে বৃহস্পতিবারে তা করায়। তোমরা শুক্র, শনি ও রবিবার রক্তমোক্ষণ করানো পরিহার করো এবং সোমবার ও মঙ্গলবার রক্তমোক্ষণ করাও, কিন্তু বুধবার তা করাবে না। কারণ এইদিনই আইউব (আলাইহিস সালাম) বিপদে পতিত হন। আর কুষ্ঠ রোগ ও শ্বেতরোগ বুধবার দিনে বা রাতেই শুরু হয়।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। (৩৪৮৮) হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৭৬৬। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস

হাদিসঃ ইবনে মাজাহ- ৩৫০২ঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুক্তদাসী সালমা উম্মু রাফি’ (রা) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো আঘাত পেলে বা তাঁর কাটা বিদ্ধ হলে তিনি আহত স্থানে মেহেদী লাগাতেন।

তাহকীক আলবানীঃ হাসান। [৩৫০২] তিরমিযী ২০৫৪, আবূ দাঊদ ৩৮৫৮, আহমাদ ২৭০৭০। সহীহাহ ২০৫৯। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

আদাবুল মুফরাদ -৫০৮ঃ আতা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি সেই কৃষ্ণকায় দীর্ঘদেহী উম্মু যুফারকে কাবা ঘরের সিঁড়ির উপর দেখেছেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আবু মুলায়কা আমাকে অবহিত করিয়াছেন যে, কাসেম [রাহিমাহুল্লাহ] তাকে অবহিত করিয়াছেন। আয়েশা [রাঃআঃ] তাকে অবহিত করেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ মুমিন ব্যক্তির দেহে কাঁটা বিদ্ধ হলে বা ততোধিক বিপদ এলে তাতে তার গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়

[বোখারী, মুসলিম, মুশকিলুল আছার]। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

আদাবুল মুফরাদ -৫০৯ঃ আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে কোন মুসলমানের গায়ে এই দুনিয়ায় কাঁটা বিদ্ধ হয় এবং সে তাতে সওয়াবের আশা রাখে, তার বিনিময়ে কিয়ামতের দিন তার গুনাহসমূহ মাফ করা হইবে

[আহমাদ, মুশকিলুল আছার]। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “রক্তমোক্ষণ রক্তক্ষরণ এ চাটাই পোড়া ও মেহেদি দিয়ে চিকিৎসা”

Leave a Reply