যে সব নারীকে বিবাহ করা হারাম এবং হালাল

যে সব নারীকে বিবাহ করা হারাম এবং হালাল

যে সব নারীকে বিবাহ করা হারাম এবং হালাল >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ২৬, নিকাহ, হাদীস (৩২৮৩-৩৩৪৫)

১.পরিচ্ছেদঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যে বিবাহ দ্বারা তালাকদাতার জন্য হালাল হয়
২.পরিচ্ছেদঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যে বিবাহ দ্বারা তালাকদাতার জন্য হালাল হয়
৩.পরিচ্ছেদঃ মা ও কন্যাকে একত্রে বিবাহ করা হারাম
৪.পরিচ্ছেদঃ দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা হারাম
৫.পরিচ্ছেদঃকোন নারী এবং তার ফুফুকে একত্রে বিবাহ করা প্রসঙ্গে
৬.পরিচ্ছেদঃ কোন নারী এবং তার খালাকে একত্রে বিবাহ করা হারাম
৭.পরিচ্ছেদঃ দুধ পান সম্পর্কের কারণে যারা হারাম
৮.পরিচ্ছেদঃ দুধ ভাই-এর কন্যা হারাম হওয়া
৯.পরিচ্ছেদঃ কতটুকু দুধ পান করা [বিবাহ] হারাম করে
১০.পরিচ্ছেদঃ যে পুরুষের সুত্রে দুধ [মহিলার দুধ পান করানো দ্বারা পুরুষের সাথেও সম্পর্ক স্থাপিত হয়]
১১.পরিচ্ছেদঃ বয়স্ককে দুধ পান করানো সম্পর্কে
১২.পরিচ্ছেদঃ গীলা [স্তন্যদানকারিণী স্ত্রীর সাথে সহবাস] ও পরবর্তী গর্বধারন সম্পর্কে
১২.পরিচ্ছেদঃ আযল১ করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ স্তন্যদানের অধিকার [হক] ও এর মর্যাদা
১৫.পরিচ্ছেদঃ স্তন্যদান বিষয়ে সাক্ষ্য
১৬.পরিচ্ছেদঃ পিতার বিবাহিতাকে বিবাহ করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ শিগার [পদ্ধতির বিবাহ ]১
১৮.পরিচ্ছেদঃ শিগার এর ব্যাখ্যা
১৯.পরিচ্ছেদঃ কুরআনের সূরা [শিখানো]-র শর্তে বিবাহ দেয়া
২০.পরিচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহনের শর্তে বিবাহ করা
২১..পরিচ্ছেদঃ দাসত্ব মুক্তির বিনিময় বিবাহ করা
২২.পরিচ্ছেদঃ নিজের দাসীকে মুক্তি প্রদান করে বিবাহ করা

১.পরিচ্ছেদঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যে বিবাহ দ্বারা তালাকদাতার জন্য হালাল হয়

৩২৮৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রিফাআ [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে বলিলেন, রিফাআ আমাকে তালাক দিয়েছে এবং চূড়ান্ত তালাক দিয়ে ফেলেছে। এরপর আমি আবদুর রহমান ইবনি যাবীর [রাঃআঃ]-কে বিবাহ করেছি। কিন্তু তার কাছে আমার কাপড়ের আঁচালের মত ব্যতীত আর কিছু [পুরুষত্ব শক্তি] নেই। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হেসে ফেললেন এবং বলিলেন, হয়তো তুমি রিফাআর নিকট প্রত্যাবর্তনের ইচ্ছা করছো। তা [হালাল] হইবে না, যে পর্যন্ত না সে [নতুন স্বামী] তোমার মধুর স্বাদ গ্রহণ করে, আর তুমি তার মধুর স্বাদ গ্রহণ কর। [অর্থাৎ তোমাদের সহবাস হয়।]

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২.পরিচ্ছেদঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যে বিবাহ দ্বারা তালাকদাতার জন্য হালাল হয়

৩২৮৪. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর স্ত্রী উম্মু সালামা— তাঁকে সংবাদ দিয়েছেন, আবু সুফিয়ানের কন্যা উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ! আবু সুফিয়ানের কন্যা, আমার বোনকে আপনি বিবাহ করুন। তিনি বলেন, তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তুমি কি এটা পছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি আপনার সাথে [স্ত্রীরূপে] একাকী নই, সুতরাং কল্যাণের বিষয়ে আমার বোন আমার অংশীদার হইবে। এটাই আমার কাছে অধিক পছন্দনীয়। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তোমার বোন আমার জন্য হালাল হইবে না। আমি বললাম, আল্লাহর কসম, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমরা বলাবলি করছি যে, আপনি দুররাহ বিনত আবু সালামাকে [রাঃআঃ] বিবাহ করিতে ইচ্ছা রাখেন। তিনি বলিলেন, উম্মু সালামার [রাঃআঃ] কন্যা? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম। যদি সে আমার ক্রোড়ে পালিত কন্যা নাও হতো, তবুও সে আমার জন্য হালাল হতো না। কেননা, সে তো আমার দুধ ভাই-এর কন্যা। আমাকে এবং আবু সালামকে [রাঃআঃ] সুওয়াইবা [রাঃআঃ] দুধ পান করিয়েছেন। অতএব, তোমাদের বোনদেরকে বা কন্যাদেরকে আমার কাছে [বিবাহের জন্য] পেশ করো না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩.পরিচ্ছেদঃ মা ও কন্যাকে একত্রে বিবাহ করা হারাম

৩২৮৫. যয়নাব বিনত আবু সালামা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমার পিতার কন্যা অর্থাৎ আমার বোনকে আপনি বিবাহ করুন। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তুমি কি তা পছন্দ কর? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি তো আপনার একমাত্র স্ত্রী নই, বরং আরো যারা [আপনার স্ত্রী হওয়ার] সৌভাগ্য আমার শরীক হইবে, আমার বোনও তাহাদের অন্তর্ভূক্ত হোক, আমি তা পছন্দ করি। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, এটা হালাল হইবে না। উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আল্লাহর শপথ। আমরা বলাবলি করেছি যে, আপনি দুররাহ বিনত আবু সালামা [রাঃ]-কে বিবাহ করবেন। তিনি বলিলেন, উম্মু সালামার কন্যা? উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, হ্যাঁ। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, আল্লাহর শপথ। যদি সে আমার ক্রোড়ে [আমার স্ত্রীর কন্যারূপে] পালিত না হতো, তাহলেও সে হালাল হতো না। কেননা, সে আমার দুধ ভাই-এর কন্যা। আমাকে এবং আবু সালামা [রাঃআঃ]-কে সুওয়াইবা [রাঃআঃ] দুধ পান করিয়েছেন। অতএব তোমাদের কন্যাদেরকে এবং বোনদেরকে আমার সঙ্গে বিবাহের প্রস্তাব দেবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৮৬. ইরাক ইবনি মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

যয়নাব বিনত আবু সালামা [রাঃআঃ] তাকে অবহিত করিয়াছেন যে, উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলিলেন, আমরা বলাবলি করি যে, আপনি দুররা বিনত আবু সালামাকে বিবাহ করবেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, উম্মু সালামা [রাঃআঃ]-কে বিয়ে করা সত্ত্বেও? যদি আমি উম্মু সালামাকে বিবাহ নাও করতাম, তবুও সে আমার জন্য হালাল হতো না। কেননা তার পিতা আমার দুধ ভাই।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪.পরিচ্ছেদঃ দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা হারাম

৩২৮৭. উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমার বোনের ব্যাপারে আপনার কোন আগ্রহ আছে? তিনি বলিলেন, আমি কি করব? উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনি তাকে বিবাহ করবেন। তিনি বলিলেন, এটা কি তোমার নিকট খবু পছন্দনীয়? উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, হ্যাঁ। আমি তো আপনার একমাত্র স্ত্রী নই, বরং আরো যারা আমার সাথে [সৌভাগ্য ও] মঙ্গলের অংশীদার হইবে, আমি ভালবাসি যে, আমার বোনও তাহাদের অন্তর্ভূক্ত হোক। তিনি বলিলেন, সে আমার জন্য হালাল হইবে না। উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, আমি জানিতে পেরেছি যে, আপনি দুররা বিনত উম্মু সালামা [রাঃআঃ]-কে বিবাহের পয়গাম দিচ্ছেন। তিনি বলিলেন, আবু সালামা [রাঃআঃ]-এর কন্যা? উম্মু হাবীবা [রাঃআঃ] বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম! যদি সে আমার কাছে পালিত, আমার স্ত্রীর কন্যা নাও হতো, তবুও সে আমার জন্য হালাল হতো না। কেননা, সে তো আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা। অতএব, তোমাদের কন্যাদের ও তোমাদের বোনদের আমার সঙ্গে বিবাহের প্রস্তাব করিবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫.পরিচ্ছেদঃকোন নারী এবং তার ফুফুকে একত্রে বিবাহ করা প্রসঙ্গে

৩২৮৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, কোন নারী ও তার ফুফুকে একত্রে বিবাহ করিবে না। আর কোন নারী ও তার খালাকে একত্রে বিবাহ করিবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৮৯. কাবীসা ইবনি যুওয়ারব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন নারী ও তার ফুফুকে একত্রে বিবাহ করিতে এবং কোন নারী ও তার খালাকে একত্রে বিবাহ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

কোন নারীর ফুফু এবং খালার সাথে অথবা [ফুফু বা খালার বিয়ে করার পর] ঐ নারীকে বিবাহ করিতে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

চারজন পরষ্পর সম্পর্কীয়া নারীকে একত্রে বিবাহ করিতে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিষেধ করিয়াছেন। কোন নারী ও তার ফুফু এবং কোন নারী ও তার খালা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন নারীকে তার ফুফুর সাথে অথবা তার খালার সাথে বিবাহ করিবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, কোন নারীকে তার খালা অথবা তার ফুফুর সাথে বিবাহ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, কোন নারীকে তার ফুফুর সাথে অথবা তার খালার সাথে বিবাহ করিবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬.পরিচ্ছেদঃ কোন নারী এবং তার খালাকে একত্রে বিবাহ করা হারাম

৩২৯৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, কোন নারীকে তার ফুফুর সাথে অথবা তার খালার সাথে [বা আগে পরে] বিবাহ করা যাবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনে, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন নারীকে তার ফুফুর সাথে অথবা ফুফুকে তার ভাই-এর কন্যার সাথে বিবাহ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৭. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, কোন নারীকে তার ফুফু অথবা তার খালার সাথে বিবাহ করা যাবে না। রাবী আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি এটা জাবির [রাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৮. শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন নারীকে তার ফুফু এবং খালার সাথে বিবাহ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২৯৯. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন নারীকে তার ফুফু অথবা তার খালার সাথে বিবাহ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭.পরিচ্ছেদঃ দুধ পান সম্পর্কের কারণে যারা হারাম

৩৩০০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, জন্ম সম্পর্ক যাকে হারাম করে, দুধ পানের সম্পর্কও তাকে হারাম করে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০১. উরওয়া [রঃ] সূত্রে আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তাকে অবহিত করিয়াছেন যে, তাহাঁর দুধ চাচা আফলাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর নিকট [আসতে] অনুমতি চাইলে তিনি তার সংগে পর্দা করিলেন। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে এ সংবাদ দিলে তিনি বলিলেন, তার সংগে পর্দা করো না। কেননা, দুধ পান সম্পর্ক দ্বারা ঐ সকল লোক হারাম হয়, যারা বংশগত সম্পর্কে হারাম হয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, বংশগত সূত্রে যারা হারাম, দুধ পানের সম্পর্ক দ্বারা তারা হারাম।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০৩. আমরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাঃআঃ]—কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, জন্মসূত্রে যারা হারাম, দুধপান সম্পর্ক দ্বারাও তারা হারাম।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮.পরিচ্ছেদঃ দুধ ভাই-এর কন্যা হারাম হওয়া

৩৩০৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আপনার কি হলো যে, আপনি কুরায়শদের প্রতিই [বিবাহ করার] আগ্রহ করেন, আর আমাদেরকে [অর্থাৎ বনী হাশিমকে] পরিত্যাগ করেন। তিনি বলিলেন, তোমার নিকট কি কেউ আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ, হামযা [রাঃআঃ]-এর কন্যা। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, সে আমার জন্য হালাল হইবে না। কেননা, সে তো আমার দুধ ভাই-এর কন্যা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হামযাহার [রাঃআঃ] কন্যা [কে বিবাহ করা] সম্বন্ধে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, সে তো আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা। শুবা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির ইবনি যায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এটা শুনেছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০৬. ইব্ন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

হামযা [রাঃআঃ]-এর কন্যাকে বিবাহ করা সম্বন্ধে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -কে বলা হলে তিনি বললেনঃ সেতো আমার দুধ ভাই-এর কন্যা। আর বংশ সুত্রে যারা হারাম হয়, দুধ পান সম্পর্ক দ্বারা তারা হারাম হয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯.পরিচ্ছেদঃ কতটুকু দুধ পান করা [বিবাহ] হারাম করে

৩৩০৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ মহান মহিয়ান আল্লাহ্ তাআলা যা নাযিল করিয়াছেন, তাতে রয়েছে; হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] [তার ভাষ্যে] বলেন, যে কুরআনে যা নাযিল করা হইয়াছে তাতে রয়েছে, সুনির্দিষ্ট দশবার দুধপান হারাম করে দেয়। এরপর তা [ঐ দশবার] পরিবর্তিত [মানসূথ] হইয়া গেল সুনির্দিষ্ট পাঁচবার দ্বারা। এরপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [ওফাত বরণ] করেন। তখনও তা [পাঁচবারের কথা,] কুরআনে তিলাওয়াত করা হত। {১}

{১} পরে পাঁচ বারের কথাও রহিত হইয়া যায়। কিন্তু যারা এ খবর জানতো না, তারা নাবী [সা]-এর ইনতিকালের পরও কিছু দিন এ আয়াত তিলাওয়াত করতো।]বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০৮. উম্মু ফযল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দুধপান সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ একবার, দুবার [শিশুকে] ঢেলে দেয়া [পান করা] হারাম করে না। কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, একবার, দুবার [স্তন] চোষণ করায় বিবাহ হারাম হয় না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩০৯. আবদুল্লাহ ইব্ন যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার এবং দুবার [স্তন] চোষণ করা হারাম করে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ একবার এবং দুবার [স্তন] চোষণ করা হারাম করে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১১. কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমরা ইবরাহীম ইব্ন ইয়াযীদ নখঈকে [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] দুধপান সম্বন্ধে প্রশ্ন করে লিখেছিলাম। [উত্তরে] তিনি লিখলেন, শুরায়হ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাদেরকে বর্ণনা করিয়াছেন, আলী [রাঃআঃ] এবং ইব্ন মাসঊদ [রাঃআঃ] বলিতেনঃ দুধপান অল্প হোক অথবা অধিক হোক, তা [বিবাহ] হারাম করে। তার কিতাবে আরো ছিল, আবু শাছা মুহারিবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনা করিয়াছেন—আয়েশা [রাঃআঃ] তাহাঁর কাছে বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিতেনঃ একবার, দুবার [অতর্কিতে] চুষে নিলে, তা হারাম করে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১২. মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেন, [একদা] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমার নিকট আগমন করিলেন, তখন আমার নিকট এক ব্যক্তি উপবিষ্ট ছিল। এটা তাহাঁর নিকট বেশ খারাপ লাগলো। আমি তাহাঁর চেহারায় ক্রোধের লক্ষণ দেখিতে পেলাম। আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ ! সে আমার দুধ-ভাই। তিনি বললেনঃ চিন্তা [গভীরভাবে সন্ধান] করে দেখ, তোমাদের কি [ধরনের] ভাই। অন্য সময় তিনি বলছেনঃ চিন্তা করে দেখ, কে তোমাদের দুধ-ভাই। এরপর তিনি বললেনঃ দুধপান ধর্তব্য হয় তা দ্বারা, ক্ষুধা নিবারনের জন্য যা পান করা হয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০.পরিচ্ছেদঃ যে পুরুষের সুত্রে দুধ [মহিলার দুধ পান করানো দ্বারা পুরুষের সাথেও সম্পর্ক স্থাপিত হয়]

৩৩১৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একদা] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর নিকট ছিলেন, এমন সময় তিনি শুনতে পেলেন, এক ব্যক্তি হাফ্সা [রাঃআঃ]-এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছে। আয়েশা [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! এ ব্যক্তি আপনার [স্ত্রীর] ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমার মনে হয় সে অমুক ব্যক্তি, যে হাফসা দুধ সম্পর্কের চাচা। আয়েশা [রাঃআঃ] বলিলেন, আমি বললামঃ যদি অমুক ব্যক্তি জীবিত থাকতো, [অর্থাৎ] তার দুধ সম্পর্কের চাচা তবে, আমার কাছে আসতো? রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ জন্মগত সম্পর্কে যা হারাম হয়, দুধ পানের সম্পর্কও তাকে হারাম করে দেয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১৪. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেন, আমার দুধ সম্পর্কীয় চাচা আবুল জাদ আগমন করলে আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। রাবী বলেন, হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেনঃ তিনি ছিলেন আবুল কুআইস [রাঃআঃ]। এরপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আগমন করলে আমি তাকে অবহিত করলাম, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তাকে অনুমতি দেবে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবুল কুআইস [রাঃআঃ]-এর ভাই [আকলা] অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন। এরপর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]- এর নিকট তিনি এ ব্যাপারে আলোচনা করলে তিনি বলেন, তুমি তাকে অনুমতি দিও, কেননা সে তোমার চাচা। আমি বললামঃ আমাকে তো মহিলা দুধ পান করিয়েছে, পুরুষ তো দুধপান করায় নি। তিনি বললেনঃ সে তোমার চাচা, অতএব সে তোমার নিকট প্রবেশ করিতে পারবে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবুল কুআইস [রাঃআঃ]-এর ভাই আফ্লাহ্ [রাঃআঃ] আমার নিকট আসতে অনুমতি চান; তিনি ছিলেন আমার দুধ সম্পর্কের চাচা। আমি তাকে অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানালাম। ইত্যবসরে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আগমন করলে আমি তাঁকে তা জানালাম। তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দিও, কেননা সে তোমার চাচা। আয়েশা [রাঃআঃ] বলেনঃ এটা ছিল পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরের ঘটনা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার চাচা আফলাহ্ পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পর আমার নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দিলাম না। এরপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আগমন করলে আমি তাহাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলিলেন তাকে অনুমতি দেবে। কেননা সে তোমার চাচা। আমি বললামঃ আমাকে তো নারী দুধ পার করিয়েছে, কোন পুরুষ তো দুধ পান করায় নি। তিনি বললেনঃ তোমার ডান হাত মাটিযুক্ত হোক [বুদ্ধির অপরিপক্কতা দূর হোক]। তাকে অনুমতি দেবে, কেননা সে তোমার চাচা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩১৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবুল কুআইস [রাঃআঃ]-এর ভাই আফলাহ্ [রাঃআঃ] অনুমতি চাইলে আমি বললামঃ আমি তাকে অনুমতি দেব না, যতক্ষণ না রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট হইতে অনুমতি পাই। পরে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আগমন করলে আমি তাঁকে বললামঃ আবুল কুআইস [রাঃআঃ]-এর ভাই আফলাহ্ [রাঃআঃ] এসে অনুমতি চাচ্ছিল। আমি তাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তাকে অনুমতি দেবে, কেননা সে তোমার চাচা। আমি বললামঃ আমাকে তো দুধ পান করিয়েছে আবুল কুআইস [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী, কোন পুরুষ তো আমাকে দুধ পান করায় নি। তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দেবে, কেননা সে তোমার চাচা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১.পরিচ্ছেদঃ বয়স্ককে দুধ পান করানো সম্পর্কে

৩৩১৯. মাখরামা ইব্ন বুকায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি হুমাইদ ইব্ন নাফিকে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি যয়নব বিনত আবু সালামা [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর স্ত্রী আয়েশা [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ সাহ্লা বিনত সুহায়ল [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার নিকট সালিম-এর আগমনের কারণে আমি আবু হুযায়ফা-এর চেহারায় [ক্রোধের] চিহ্ন দেখিতেছি। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তুমি তাকে দুধ পান করিয়ে দাও। আমি বললামঃ সে তো দাড়িওয়ালা [বয়স্ক লোক]। তিনি বললেনঃ তাকে তুমি দুধ পান করিয়ে দাও। আবু হুযায়ফা-এর চেহেরায় যে [ক্রোধের] চিহ্ন দেখিতেছো তা দূর হইয়া যাবে। সাহলা [রাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর কসম! এরপর আবু হুযায়ফা [রাঃআঃ]-এর চেহারায় আমি আর [ক্রোধের] চিহ্ন দেখিনি।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ [একদা] সাহলা বিনত সুহায়ল [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর খিদমতে এসে বললেনঃ আমি আমার নিকট সালিম-এর আগমনের কারণে আবু হুযায়ফা-এর চেহারায় [ক্রোধের] চিহ্ন দেখিতেছি। তিনি বললেনঃ তাকে দুধ পান করিয়ে দাও। তিনি [সাহলা] বলিলেন, তাকে দুধ পান করাব কিভাবে, সে তো একজন বয়স্ক পুরুষ? তিনি বললেনঃ আমি কি জানি না যে সে একজন বয়স্ক পুরুষ? পরে তিনি [সাহলা] [তাকে দুধ পান করালেন এবং] এসে বলিলেন, যিনি আপনাকে নাবী করে পাঠিয়েছেন তাহাঁর কসম! এরপর আমি আবু হুযায়ফা [রাঃআঃ]-এর চেহারায় কোন ক্রোধ দেখিনি, যা আমার খারাপ লাগতো।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু হুযায়ফা-এর মাওলা সালিমকে দুধ পান করাবার জন্য আবু হুযায়ফা-এর স্ত্রীকে আদেশ করিয়াছেন। যাতে আবু হুযায়ফা-এর [ক্ষোভ] প্রশমিত হইয়া যায়। অতএব, তিনি তাকে দুধ পান করালেন, অথচ তখন সে ছিল একজন বয়স্ক পুরুষ। রবীআ বলেনঃ এটা ছিল সালিম-এর জন্য বিশেষ অনুমতি।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ সাহ্লা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর খিদমতে আগমন করে আরয করলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! সালিম আমাদের নিকট আগমন করে। পুরুষ যা বুঝে, সেও তা বুঝে, আর পুরুষ যা জানে, সেও তা জানে। তিনি বললেনঃ তাকে দুধ পান করিয়ে দাও। তাহলে তুমি তার জন্য এভাবে হারাম হইয়া যাবে। রাবী আবু মুলায়কা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ এক বছর যাবত আমি অপেক্ষা করলাম, তা [এ হাদিছ] বর্ণনা করিনি। এরপর কাসেম [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি বলিলেন, তা বর্ণনা কর, ভয় করো না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুযায়ফা-এর পালকপুত্র সালিম আবু হুযায়ফা এবং তার পরিবারের সাথে তাহাদের ঘরে ছিল। সুহায়ল কন্যা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর খিদমতে এসে বললেনঃ [পূর্ণ বয়স্ক] পুরুষরা যে পর্যায়ে উপনীত হয়, সালিমও সে পর্যায়ে উপনীত হইয়াছে। তারা যা বুঝে, সেও তা বুঝে। সে আমাদের কাছে যাতায়াত করে। এজন্য আমি আবু হুযায়ফা-এর মনে কিছু ক্ষোভের ভাব অনুভব করি। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তুমি তাকে দুধ পান করাও, তা হলে তুমি তার জন্য হারাম হইয়া যাবে। অতএব আমি তাকে দুধ পান করালাম। এতে আবু হুযায়ফা-এর মনে যা ছিল, তা দূর হলো। পরে আমি তাহাঁর খিদমতে আরয করলাম, আমি তাকে দুধ পান করিয়েছি, তাতে আবু হুযায়ফা-এর মনে যা ছিল, তা দূর হইয়া গেছে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২৪. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর স্ত্রীগণ তাঁদের নিকট এ ধরনের দুধ সম্পর্কের কোন ব্যক্তির আগমনকে অপছন্দ করিতেন [আয়েশা রাঃআঃ ব্যতীত], অর্থাৎ বয়স্কদের দুধ সম্পর্ক। তাঁরা আয়েশা [রাঃআঃ]- কে বলিতেনঃ আল্লাহর কসম! আমরা মনে করি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সাহলা বিনত সুহায়ল-কে যে আদেশ করেন, তা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর পক্ষ হইতে শুধু সালিম-এর দুধ পানের ব্যাপারেই বিশেষ অনুমতি ছিল। আল্লাহর কসম! এ ধরনের দুধ সম্পর্ক নিয়ে কেউ আমাদের নিকট আগমন করিবে না এবং আমাদেরকে দেখবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২৫. আবু উবায়দা ইব্ন আবদুল্লাহ ইব্ন যামআ হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর মাতা যয়নাব বিনত আবু সালমা তাকে [ইব্ন শিহাবকে] অবহিত করিয়াছেন, তার মাতা রাসূলুল্লাহ্র স্ত্রী উম্মু সালামা বলিতেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর সকল স্ত্রীই এ দুধ সম্পর্কে তাঁদের নিকট প্রবেশকে অপছন্দ করিতেন। তাঁরা আয়েশা [রাঃআঃ]-কে বলিতেনঃ আল্লাহর কসম! আমরা মনে করি, এটা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] –এর বিশেষ অনুমতি, যা ছিল শুধু সালিম-এর জন্য। কেউ এ দুধ সম্পর্কের কারণে আমাদের নিকট আগমন করিবে না এবং আমাদেরকে দেখবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১২.পরিচ্ছেদঃ গীলা [স্তন্যদানকারিণী স্ত্রীর সাথে সহবাস] ও পরবর্তী গর্বধারন সম্পর্কে

৩৩২৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

জুদামা বিনত ওয়াহব তাহাঁর নিকট বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, গীলা [অর্থাৎ স্তন্য – দানকারিণী স্ত্রীর সাথে সহবাস] করিতে নিষেধ করবো। পরে আমার মনে হলো যে, পারস্য এবং রোমের অধিবাসীরা এমন করে থাকে। ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ তারা এমন করে, অথচ এতে তাহাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হয় না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৩.পরিচ্ছেদঃ আযল১ করা

৩৩২৭. আবদুর রহমান ইবনি বিশর ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি হাদীসটি আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ]-এর দিকে সম্পর্কিত করিয়াছেন, তিনি বলেছেন, [একদা] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]- এর নিকট এ আযল সম্বন্ধে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেনঃ এটা কি ? আমরা বললামঃ কোন ব্যক্তির স্ত্রী থাকে, আর সে তার সাথে সহবাস করার সময় গর্ভধারণ করাকে অপছন্দ করে; অথবা তার দাসী থাকে, তাহাঁর সাথে সহবাস করে এবং গরভধারন অপছন্দ করে। তিনি বললেনঃ না, এটা করলে তোমাদের ক্ষতি নাই। কেননা, যা নির্ধারিত [তাকীরে] আছে তা হইবেই।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩২৮. আবু সাইদ যুরাকী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]- কে আযল সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে যে, আমার স্ত্রী স্তন্যদান করে, আমি তার গর্ভধারন পছন্দ করি না। নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ জরায়ুতে [গর্ভে] যা হওয়ার নির্ধারিত আছে তা হইবেই।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪.পরিচ্ছেদঃ স্তন্যদানের অধিকার [হক] ও এর মর্যাদা

৩৩২৯. ইয়াকুব ইবনি ইবরাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমি কি করে স্তন্যদানের হক আদায় করিতে পারি ? তিনি বললেনঃ একজন দাস অথবা দাসী [দান করা] দ্বারা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

১৫.পরিচ্ছেদঃ স্তন্যদান বিষয়ে সাক্ষ্য

৩৩৩০. উকবা ইবনি হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি তা [এ হাদীস] উকবা হইতেও শ্রবন করেছি, কিন্তু আমি উবায়দের হাদীস অধিক স্মরণ রাখি। তিনি বলেন, আমি এক নারীকে বিবাহ করলাম। আমাদের নিকট একজন কাল নারী এসে বললোঃ আমি তোমাদের উভয়কে স্তন্যদান করেছি। এরপর আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে তাঁকে অবহিত করলাম আমি বললামঃ আমি অমুকের কন্যা অমুককে বিবাহ করেছি। তখন এক কাল [হাবশী] নারী এসে বললঃ আমি তোমাদের উভয়কে স্তন্যদান করেছি। তখন তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। আমি তাহাঁর সামনে গিয়ে বললামঃ সে মিথ্যাবাদী। তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তাহলে তুমি কি করে [তার সাথে সহবাস করছো] ? অথচ এ মহিলা মনে করে যে, সে তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে ? অতএব তুমি তাঁকে [তোমার স্ত্রীকে] তোমার থেকে পৃথক করে দাও।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬.পরিচ্ছেদঃ পিতার বিবাহিতাকে বিবাহ করা

৩৩৩১. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আমার মামার সাথে সাক্ষাৎ করলাম, তখন তাহাঁর সাথে একখানা ঝাণ্ডা ছিল। আমি বললামঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন ? তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে এমন এক ব্যক্তির নিকট পাঠিয়েছেন, যে ব্যক্তি তাহাঁর পিতার মৃত্যুর পর তার পিতার স্ত্রীকে বিবাহ করেছে , তার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার জন্য, অথবা [তিনি বলেছেন] তাকে হত্যা করার জন্য।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৩২. ইয়াযীদ ইবনি বারা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ আমি আমার চাচা সাক্ষাৎ পেলাম, তার সাথে একটি পতাকা ছিল। আমি বললামঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন ? তিনি বললেনঃ আমাকে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] প্রেরন করিয়াছেন , এমন ব্যক্তির নিকট, যে তার পিতার স্ত্রীকে বিবাহ করেছে। তিনি আমাকে আদেশ করিয়াছেন তার গর্দান উড়িয়ে দিতে, এবং তার মাল ছিনিয়ে নিতে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৩৩. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আওতাস নামক স্থানে একদল সৈন্য পাঠালেন। তারা শত্রু সৈন্যদের সাথে মুকাবিলা করে তাহাদের উপর বিজয় লাভ করিলেন, তাহাদের মহিলাদের যুদ্ধ বন্দী করিলেন, যাদের মুশরিক স্বামী ছিল। মুসলমানগণ তাহাদের সাথে সহবাস করা হইতে বিরত রইলেন, তখন মহান মহিয়ান আল্লাহ্ তাআলা [আয়াত-এ] নাযিল করলেনঃ

অর্থঃ “নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ব্যতীত সকল সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ”। [৪ঃ২৪]। অর্থাৎ এরা তোমাদের জন্য হালাল, তবে তাহাদের ইদ্দতপূর্ণ হওয়ার পর।

{১} মোহরানা নির্ধারণ না করে একে অপরের বোন বা কন্যাকে বিয়ে করা এবং এ বিনিময়কেই মোহর সাব্যস্ত করা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭.পরিচ্ছেদঃ শিগার [পদ্ধতির বিবাহ ]১

৩৩৩৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] শিগার করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৩৫. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ ইসলামে জালাব {১} জানাব {২} এবং শিগার নেই। আর যে ব্যক্তি লুট করে কিছু আত্মসাৎ করে , সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

{১} যাকাত আদায়কারী কর্তৃক যাকাত দাতাহাদের স্থানে না গিয়ে নির্ধারিত স্থানে মাল সম্পদ নিয়ে আসতে বাধ্য করাকে জালব বলা হয়।{২} জনপদের শেষ প্রান্তে যাকাত আদায়কারী কর্তৃক চৌকী স্থাপন করা এবং সেখানে বসে যাকাতদাতাহাদের কাছে না গিয়ে যাকাত আদায় করা। অথবা যাকাতদাতা কর্তৃক তার মাল সম্পদ দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যাওয়া, যাতে যাকাত আদায়কারী অসুবিধায় পড়েন।বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৩৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, ইসলামে জালাব, জানাব এবং শিগার নেই। [আবু আবদুর রহমান বলেন, এটা [এ সনদ] অত্যন্ত ভুল। সঠিক হলো বিশর –এর বর্ণনা।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮.পরিচ্ছেদঃ শিগার এর ব্যাখ্যা

৩৩৩৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] শিগার করিতে নিষেধ করিয়াছেন। শিগার হলো কোন ব্যক্তি তার কন্যাকে অন্য একজনের নিকট বিবাহ দেয় এই শর্তে যে, সে ব্যক্তি তার কন্যাকে এ ব্যক্তির নিকট বিবাহ দিবে। আর এ উভয়ের মধ্যে কোন মোহর ধার্য হইবে না।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৩৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] শিগার করিতে নিষেধ করিয়াছেন। রাবী উবায়দুল্লাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ শিগার হলো কোন ব্যক্তি তার কন্যাকে এ শর্তে বিবাহ দেবে যে, ঐ ব্যক্তি তার বোনকে এ ব্যক্তির নিকট বিবাহ দেবে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯.পরিচ্ছেদঃ কুরআনের সূরা [শিখানো]-র শর্তে বিবাহ দেয়া

৩৩৩৯. সাহল ইবনি সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

একজন মহিলা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]। আমি এসেছি নিজেকে আপনাকে দান করার জন্য। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার প্রতি দৃষ্টি দিলেন, তাহাঁর দৃষ্টিকে তিনি উপরে উঠালেন, এরপর নিচু করিলেন। তারপর তিনি তাহাঁর মস্তক নিচু করে রইলেন। মহিলাটি যখন দেখলো, তিনি তার ব্যাপারে কিছুই ফইসালা করছেন না, তখন সে বসে পড়লো। এসময় তাহাঁর সাহাবীদের এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলিলেন; ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ! যদি এ মহিলার প্রতি আপনার প্রয়োজন না থাকে, তবে তাকে আমার নিকট বিবাহ দিন। তিনি বললেনঃ তোমার নিকট কিছু আছে কি ? সে বললেনঃ না। আল্লাহর কসম। আমি কিছুই পেলাম না। তিনি বললেনঃ দেখ যদি একটি লোহার আংটিও পাও। সে ব্যক্তি চলে গেল, এরপর এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! না, এক্তি লোহার আংটিও পেলাম না, কিন্তু এ তহবন্দটি আছে, তাকে এর অর্ধেক দিতে পারি। সাহল [রাঃআঃ] বলেনঃ তার কোন চাদরও ছিল না। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তোমার এ তহবন্দ দিয়ে কি করিবে ? যদি তুমি তা পরিধান কর, তাহলে তার গায়ে এর কিছুই থাকিবে না। আর যদি সে পরিধান করে, তবে তোমার গায়ে কিছুই থাকিবে না। তখন ঐ লোকটি অনেক্ষন বসে রইল। এরপর ঐ ব্যক্তি দাঁড়িয়ে গেল এবং রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে চলে যেতে দেখিতে পেলেন। তারপর তাকে ডাকতে আদেশ করলে তাকে ডাকা হলো। সে আসলে তিনি বললেনঃ তোমার নিকট কুরআনের কিছু আছে কি ? সে বললেনঃ আমার নিকট অমুক সুরা রয়েছ, আর তা গুণে গুণে বললো। তিনি বললেনঃ তুমি কি তা মুখস্ত পড়তে পার ? সে বললেনঃ কুরআনের যে অংশ তোমার মুখস্ত আছে, তার বিনিময় আমি মহিলাকে তোমার অধিকারে [বিয়েতে] দিয়ে দিলাম।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০.পরিচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহনের শর্তে বিবাহ করা

৩৩৪০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু তালহা [রাঃআঃ] উম্মু সুলায়মকে বিবাহ করিলেন। তাহাদের মধ্যকার মোহর ছিল ইসলাম। উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ] আবু তালহা [রাঃআঃ]-এর পূর্বেই ইসলাম গ্রহন করেন। আবু তালহা [রাঃআঃ] তাকে বিবাহের পয়গাম দিলে তিনি বললেনঃ আমি ইসলাম গ্রহন করেছি। যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর, তাহলে আমি তোমাকে বিবাহ করবো। সে ইসলাম গ্রহণ করলে এটাই তাহাদের মোহর ধার্য হয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৪১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু তালহা [রাঃআঃ] উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ]-কে বিবাহের পয়গাম দিলে তিনি বললেনঃ হে আবু তালহা ! আল্লাহর কসম ! তোমার মত ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেয়া যায় না। কিন্তু তুমি একজন কাফির, আর আমি একজন মুসলিম মহিলা। তোমাকে বিবাহ করা আমার জন্য বৈধ নয়। যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর, তাহলে তা-ই আমার মোহর হইবে। আমি তোমার কাছে এর অতিরিক্ত কিছুই চাই না। তখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করলে তা-ই তার মোহর ধার্য হলো। সাবিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ আমি কখনো এমন কোন মহিলার কথা শুনি নাই, যে মোহরের ব্যাপারে উম্মু সুলায়ম [রাঃআঃ] হইতে উত্তম। পরে তিনি তার সাথে একান্ত নির্জনবাস করলে তিনি তাকে [স্বামীকে] সন্তান দান করেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১.পরিচ্ছেদঃ দাসত্ব মুক্তির বিনিময় বিবাহ করা

৩৩৪২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সফিয়্যা [রাঃআঃ]-কে মুক্ত করে দিলেন, আর এটাকেই তিনি তাহাঁর মোহর ধার্য করিলেন।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৪৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সফিয়্যা [রাঃআঃ]-কে মুক্ত করে দিলেন, আর এই মুক্ত করাকে তাহাঁর মোহর ধার্য করিলেন১ –এ শব্দ ভাষ্য মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২২.পরিচ্ছেদঃ নিজের দাসীকে মুক্তি প্রদান করে বিবাহ করা

৩৩৪৪. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তিন ধরনের লোক রয়েছে, যাদের দুই গুন বিনিময় দেয়া হইবে। এক ব্যক্তি যাহার দাসী ছিল, তাকে সে শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছে এবং উত্তম ভাবে শিক্ষা দিয়েছে এবং তাকে ইলম- [দীন] শিক্ষা দিয়েছে এবং তা উত্তম ভাবে শিক্ষা দিয়েছে। এরপর সে তাকে মুক্ত করে বিবাহ [করে স্ত্রীর মর্যাদা প্রদান] করেছে। [দ্বিতীয়ত] ঐ দাস, যে আল্লাহর হক এবং তার মনিবের হক আদায় করে। এবং [তৃতীয়ত], আহলে কিতাবের মধ্যে যারা মুমিন হয়।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩৪৫. আবু মুসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার দাসীকে মুক্ত করে বিবাহ করে, তার জন্য দ্বিগুণ প্রতিদান রয়েছে।

বিবাহ আইন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply