অপবাদ, অশ্লীলতা, বিবাহিত-অবিবাহিত যেনাকারীর শাস্তি । রজম করা

অপবাদ, অশ্লীলতা, বিবাহিত-অবিবাহিত যেনাকারীর শাস্তি । রজম করা

অপবাদ, অশ্লীলতা, বিবাহিত-অবিবাহিত যেনাকারীর শাস্তি । রজম করা  >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৮৬, শরীয়তের শাস্তি, অধ্যায়ঃ (১৯-৪৭)=২৯টি

৮৬/১৯. অধ্যায়ঃ অশ্লীলতা পরিত্যাগকারীর ফাযীলাত।
৮৬/২০. অধ্যায়ঃ ব্যভিচারীদের পাপ।
৮৬/২১. অধ্যায়ঃ বিবাহিতকে পাথর মেরে হত্যা করা।
৮৬/২২. অধ্যায়ঃ পাগল ও পাগলী কে পাথর মেরে হত্যা করা যাবে না। [১০৫] আলী (রাদি.) উমার (রাদি.) – কে বলিলেন, আপনি কি জানেন না যে, পাগল থেকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত, বালক থেকে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত, ঘুমন্ত লোক না জাগা পর্যন্ত কলম তুলে নেয়া হয়েছে?
৮৬/২৩. অধ্যায়ঃ যেনাকারীর জন্য পাথর।
৮৬/২৪. অধ্যায়ঃ সমতল স্থানে রজম করা।
৮৬/২৫. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে্ ও জানাজা আদায়ের জায়গায় রজম করা।
৮৬/২৬. অধ্যায়ঃ যে এমন কোন অপরাধ করিল যা হদ – এর সীমার মধ্যে নয় এবং সে ইমামকে জানালো। তবে তাওবাহ্র পর তাকে কোন শাস্তি দেয়া হইবে না, যখন সে ফতোয়া জানার জন্য আসে।
৮৬/২৭. অধ্যায়ঃ যে কেউ শাস্তির ব্যাপারে স্বীকার করিল অথচ বিস্তারিত জানাল না, তখন ইমাদের জন্য তা গোপন রাখা সঠিক হইবে কি?
৮৬/২৮. অধ্যায়ঃ নিজের দোষ স্বীকারকারীকে ইমাম কি একথা বলিতে পারে যে, সম্ভবত তুমি স্পর্শ করেছ কিংবা ইঙ্গিত করেছ?
৮৬/২৯. অধ্যায়ঃ নিজের দোষ স্বীকারকারীকে ইমামের প্রশ্ন তুমি কি বিবাহিত?
৮৬/৩০.অধ্যায়ঃ যিনার কথা স্বীকার করা।
৮৬/৩১. অধ্যায়ঃ যিনার কারণে বিবাহিতা গর্ভবতী নারীকে পাথর মেরে হত্যা করা।
৮৬/৩২. অধ্যায়ঃ অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে বেত্রাঘাত করা হইবে এবং নির্বাসিত করা হইবে।
৮৬/৩৩. অধ্যায়ঃ গুনাহ্গার ও নপুংসকদের নির্বাসিত করা।
৮৬/৩৪. অধ্যায়ঃ ইমামের অনুপস্থিতিতে অন্যকে হদ প্রয়োগের নির্দেশ দেয়া।
৮৬/৩৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের মধ্যে কারো সাধ্বী, বিশ্বাসী নারী বিবাহের সামর্থ্য না থাকলে… আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সুরা আন্-নিসা ৪/২৫) (আরবী) অর্থ (আরবী) (ব্যভিচারিণী)
৮৬/৩৭. অধ্যায়ঃ দাসী যিনা করলে তাকে তিরস্কার করা ও নির্বাসন দেয়া যাবে না।
৮৬/৩৮. অধ্যায়ঃ অধ্যায়ঃ যিম্মিদের বিবাহ হওয়া সম্পর্কে বিধান এবং তারা যিনা করলে ও তাদের মোকদ্দমা ইমামের নিকট পেশ করা হলে তার বিধান।
৮৬/৩৯. অধ্যায়ঃ বিচারক ও লোকদের নিকট স্বীয় স্ত্রী বা অন্যের স্ত্রীর ব্যাপারে যখন যিনার অভিযোগ করা হয় তখন বিচারকের জন্য কি জরুরী নয় যে, তার নিকট পাঠিয়ে তাকে ঐ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিবে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে?
৮৬/৪০. অধ্যায়ঃ শাসক ব্যতীত অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে।
৮৬/৪১. অধ্যায়ঃ যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে দেখে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে।
৮৬/৪২. অধ্যায়ঃ কোন বিষয়ে অস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা
৮৬/৪৩. অধ্যায়ঃ শাস্তি ও শাসনের পরিমাণ কতটুকু
৮৬/৪৪. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি প্রমাণ ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৮৬/৪৫. অধ্যায়ঃ সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা।
৮৬/৪৬. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা
৮৬/৪৭. অধ্যায়ঃ ইমাম থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর হদ প্রয়োগ করার জন্য তিনি কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করিতে পারেন কি? উমর (রা.) এমনটা করিয়াছেন

৮৬/১৯. অধ্যায়ঃ অশ্লীলতা পরিত্যাগকারীর ফাযীলাত।

৬৮০৬. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সাত রকমের লোক, যাদেরকে আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন তাহাঁর ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, যেদিন তাহাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া হইবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ; ২. আল্লাহর ইবাদাতে লিপ্ত যুবক; ৩. এমন যে ব্যক্তি আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চোখ দুটি অশ্রুসিক্ত হয়; ৪. এমন ব্যক্তি যার অন্তর মাসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে; ৫. এমন দুব্যক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশে পরস্পর ভালোবাসা রাখে; ৬. এমন ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত রূপসী নারী নিজের দিকে ডাকল আর সে বলিল, আমি আল্লাহকে ভয় করি; ৭.এমন ব্যক্তি যে সদাকাহ করিল আর এমনভাবে করিল যে, তার বাম হাত জানে না যে তার ডান হাত কী করে।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫০)

৬৮০৭. সাহল ইবনু সাদ সাঈদী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে কেউ আমার জন্য তার দুপা ও দুচোয়ালের মাঝের স্থানের দায়িত্ব নেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নেব।

[১০৩](আঃপ্রঃ- ৬৩৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫১)

[১০৩] অর্থাৎ যিনা ব্যাভিচার থেকে দূরে থাকবে এবং জিহবা সংযত রাখবে।

৮৬/২০. অধ্যায়ঃ ব্যভিচারীদের পাপ।

আল্লাহর বাণীঃ আর তারা যিনা করে না- (সুরা আল-ফুরক্বান ২৫/৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটেও যেয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ- (সুরা ইসরা ১৭/৩২)।

৬৮০৮. ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদেরকে আনাস (রাদি.) বলেছেন যে, আমি তোমাদেরকে এমন এক হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পরে তোমাদেরকে কেউ বর্ণনা করিবে না। আমি নাবী (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনিয়াছি যে, ক্বিয়ামাত সংঘটিত হইবে না অথবা তিনি বলেছেন, ক্বিয়ামাতের আগের নিদর্শনগুলোর মধ্যে হল এই যে, ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হইবে, মূর্খতার বিস্তার ঘটবে, মদ পান করা হইবে, ব্যাপকভাবে যিনা হইবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে, নারীর সংখ্যা এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর কর্তৃত্বে থাকবে একজন পুরুষ।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫২)

৬৮০৯. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুমিন থাকা অবস্থায় কোন ব্যাক্তি ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় না। মুমিন থাকা অবস্থায় কোন চোর চুরি করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ মদ্য পান করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ হত্যা করে না।

ইক্বরিমাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.) – কে জিজ্ঞেস করলাম, তার থেকে ঈমান কিভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয়? তিনি বললেনঃ এভাবে। আর অঙ্গুলিগুলো পরস্পর জড়ালেন, এরপর অঙ্গুলিগুলো বের করিলেন। যদি সে তাওবাহ করে তবে আগের অবস্থায় এভাবে ফিরে আসে। এ বলে অঙ্গুলিগুলো আবার পরস্পর জড়ালেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৩)

৬৮১০. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যিনাকারী যিনা করার সময় মুমিন থাকে না। চোর চু্রি করার সময় মুমিন থাকে না। মদপানকারী মদ পানের সময় মুমিন থাকে না। তবে তারপরও তাওবাহ উন্মুক্ত।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৪)

৬৮১১. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কোন পাপটি সব থেকে বড়? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহর কোন সমকক্ষ স্থির করিবে। অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সঙ্গে আহার করিবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিবেশির স্ত্রীর সাথে যিনা করা।

ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – আবদুল্লাহ (রাদি.) আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল!……এরকম বর্ণনা করিয়াছেন। আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – আবু মায়সারা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ছাড় এটাকে, ছাড় এটাকে।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৫)

৮৬/২১. অধ্যায়ঃ বিবাহিতকে পাথর মেরে হত্যা করা।

হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যে নিজের বোনের সাথে যিনা করে তার উপর যিনার হদ জারি হইবে।

৬৮১২. শাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আলী (রাদি.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আলী (রাদি.) জুমআর দিন এক মহিলাকে যখন পাথর মেরে হত্যা করেন তখন বলেন, আমি তাকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর সুন্নাত অনুযায়ী পাথর মেরে হত্যা করলাম।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৫)

৬৮১৩.শায়বানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবু আওফা (রাদি.) – কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পাথর মেরে হত্যা করিয়াছেন কি? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, সুরায়ে নূর – এর আগে না পরে? তিনি বলিলেন, আমি জানি না।

[৬৮৪০; মুসলিম ২৯/৬, হাদীস ১৭০২] (আঃপ্রঃ- ৬৩৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৭)

৬৮১৪. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, আসলাম গোত্রের এক লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে এল। এসে বলিল, সে যিনা করেছে এবং নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিল। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার ব্যাপারে আদেশ দিলেন, তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হলো। সে ছিল বিবাহিত।

[১০৪](আঃপ্রঃ- ৬৩৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৮)

[১০৪] এ যিনাকারীরা ছিলেন পূর্ণ ঈমানদার। অপরাধ করে তারা ক্ষমা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে যেতেন। তাঁরা চাইতেন যত শাস্তি দুনিয়াতেই হয়ে যাক। আখিরাতের আদালতে যেন লজ্জিত, ঘৃণিত ও শাস্তিপ্রাপ্ত হইতে না হয়।

৮৬/২২. অধ্যায়ঃ পাগল ও পাগলী কে পাথর মেরে হত্যা করা যাবে না। [১০৫] আলী (রাদি.) উমার (রাদি.) – কে বলিলেন, আপনি কি জানেন না যে, পাগল থেকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত, বালক থেকে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত, ঘুমন্ত লোক না জাগা পর্যন্ত কলম তুলে নেয়া হয়েছে?

[১০৫] তারা যদি পাগল অবস্থায় ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তবে রজম করা যাবে না। এ ব্যাপারে ইমামদের মাঝে কোনো মতভেদ নেই। পক্ষান্তরে সুস্থ অবস্থায় যদি ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়, অতঃপর পাগলামি পরিদৃষ্ট হয়, তাহলে সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত রজম করা বিলম্ব করিতে হইবে কি না এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। জামহুর ওলামার মতে রজমের উদ্দেশই হল বিনাশ করা। ফলে এ বিলম্ব করার কোন অর্থই হয় না। অন্যদিকে আবার বেত্রাঘাতের ব্যাপারটি ভিন্ন। কারণ এর উদ্দেশ্য হল কষ্ট যন্ত্রণা দেয়া। সুতরাং তা কার্যকর করার জন্য সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করিতে হইবে। (ফাতহুল বারী)

৬৮১৫. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে এল। তিনি তখন মাসজিদে ছিলেন। সে তাঁকে ডেকে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে কথাটি সে চারবার বলিল। যখন সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিল তখন নাবী (সাঃআঃ) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার মধ্যে কি পাগলামীর দোষ আছে? সে বলিল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি কি বিবাহিত? সে বলিল, হ্যাঁ। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও আর পাথর মেরে হত্যা কর।

[১০৬](আঃপ্রঃ- ৬৩৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৯)

[১০৬] হাদীসটি হইতে জানা যায়ঃ

(১) একজন মুসলিম ব্যক্তির জীবন শেষ করার ব্যপারে দৃঢ়ীকরণ।

(২) মাসজিদের অভ্যন্তরে ইমামের নিকট খারাপ কাজের স্বীকারোক্তির বৈধতা এবং প্রয়োজনে বিভিন্ন অশ্লীল কথা যা মুখে উচ্চারণ করা লজ্জাকর তার বর্ণনা দেয়া।

(৩) ঊচ্চ আওয়াজে বয়োজ্যেষ্ঠের আহবান করা।

(৪) হাদ্দ কায়েমের জন্য কোন (আরবী) বা সম্ভাব্য বিষয়ের স্বীকারকারীকে পরিত্যাগ করা। কারণ সে যা বর্ণনা করিবে তা সম্ভবত হাদ্দকে আবশ্যক করিবে না অথবা সে ফিরে আসবে।

(৫) যে ব্যাক্তি কোন গুনাহের কাজ করে লজ্জিত হইবে তার দ্রুতগতিতে তাওবা করা মুস্তাহাব। তা কাউকে না জানানো।

(৬) গুনাহের কাজ সম্পাদনকারী যদি তার গুনাহের কথা কাউকে জানায় তাহলে শ্রবণকারীর জন্য মুস্তাহাব পন্থা হল যে, সে তাকে তাওবা করিতে বলবে এবং ব্যাপারটি গোপন রাখবে।

(৭) হাদীসে উল্লেখিত (আরবী) বাহ্যিক ভাষ্য থেকে চারবার যেনার স্বীকারোক্তির পুনরাবৃত্তি করা শর্ত – এর প্রমাণ গ্রহণ করা হয়েছে।

(৮) হাদ্দ কায়েমের জন্য নেতার অন্যকে দায়িত্ব প্রদান করা জায়েয।

(৯) উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমান পেশ করা হয়েছে যে, রজম করার জন্য গর্ত খনন করা শর্ত নয়।

(১০) মাতালের স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। (ফাতহুল বারী)

৬৮১৬

ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন ,আমাকে এমন এক ব্যক্তি বর্ণনা করিয়াছেন, যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) – কে বলিতে শুনেছেন যে, তাকে পাথর মেরে হত্যাকারীদের মধ্যে আমি একজন ছিলাম। আমরা তাকে জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করি। পাথরের আঘাত যখন তার অসহ্য হচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। আমরা হার্‌রা নামক স্থানে তাকে ধরলাম। আর সেখানে তাকে পাথর মেরে হত্যা করলাম।

[৫২৭০; মুসলিম ২৯/৫, হাদীস ১৬৯১, আহমাদ ১৪৪৬৯] (আঃপ্রঃ- ৬৩৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫৯)

৮৬/২৩. অধ্যায়ঃ যেনাকারীর জন্য পাথর।

৬৮১৭. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাদ ও ইবনু যামআহ (রাদি.) ঝগড়া করিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআহ! এ সন্তান তোমারই। সন্তান বিছানার মালিকের। আর হে সাওদা! তুমি তার থেকে পর্দা কর।

কুতাইবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে আমাদেরকে এ বাক্যটি অধিক বলেছেন যে, যেনাকারীর জন্য পাথর।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬০)

৬৮১৮. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ বিছানা যার সন্তান তার আর যেনাকারীর জন্য পাথর।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬১)

৮৬/২৪. অধ্যায়ঃ সমতল স্থানে রজম করা।

৬৮১৯. ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে এক ইয়াহূদী পুরুষ ও এক ইয়াহূদী নারীকে আনা হল। তারা দুজনেই যিনা করেছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করিলেন, এ সম্পর্কে তোমরা তোমাদের কিতাবে কী পাচ্ছ? তারা বলিল, আমাদের পাদ্রীরা চেহারা কালো করার ও দুজনকে গাধার পিঠে উল্টো বসিয়ে প্রদক্ষিণ করার নিয়ম চালু করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাদেরকে তাওরাত নিয়ে আসতে বলুন। এরপর তা নিয়ে আসা হল। তাদেরকে একজন রজমের আয়াতের উপর নিজের হাত রেখে দিল এবং এর আগে-পিছে পড়তে লাগল। তখন ইবনু সালাম (রাদি.) তাকে বলিলেন, তোমার হাত ওঠাও। দেখা গেল তার হাতের নিচে রয়েছে রজমের আয়াত। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাদের দুজনের ব্যাপারে আদেশ দিলেন, উভয়কে পাথর মেরে হত্যা করা হল। ইবনু উমার বলেন, তাদের উভয়কে সমতল স্থানে রজম করা হয়েছে। তখন ইয়াহূদী পুরুষটাকে দেখেছি ইয়াহূদী স্ত্রীলোকটির উপর উপুড় হয়ে পড়ে আছে।[১৩২৯; মুসলিম ৬/৬, হাদীস ১৬৯৯, আহমাদ ৪৪৯৮]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬২)

৮৬/২৫. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে্ ও জানাজা আদায়ের জায়গায় রজম করা।

৬৮২০. জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আস্লামা গোত্রের এক লোক নাবী সাঃআঃ-এর কাছে এসে যিনার কথা স্বীকার করিল। তখন নাবী সাঃআঃ তাহাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে নিজের বিপক্ষে চারবার সাক্ষ্য দিল। নাবী সাঃআঃ তাকে বললেনঃ তুমি কি পাগল? সে বলিল, না। তিনি তার সম্পর্কে আদেশ দিলেন। তখন তাকে ঈদগাহে পাথর মেরে হত্যা করা হল। পাথর যখন তাকে অসহনীয় যন্ত্রণা দিচ্ছিল, তখন সে পালাতে লাগল। তারপর তাকে ধরা হল ও পাথর মেরে হত্যা করা হল। অবশেষে সে মারা গেল। নাবী সাঃআঃ তার সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করিলেন ও তার সালাতে জানাযা আদায় করিলেন।

ইউনুস ও ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে فَصَلَّى عَلَيْهِ বাক্যটি বলেননি। [৫২৭০]

আবু আবদুল্লাহ বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে প্রশ্ন করা হয়েছে صَلَّى عَلَيْهِ বর্ণনাটি কি বিশুদ্ধ? তিনি বলিলেন, এটিকে মামার বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো এটিকে মামার ছাড়া আর কেউ বর্ণনা করেছে কি? তিনি বলিলেন, না।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৩)

৮৬/২৬. অধ্যায়ঃ যে এমন কোন অপরাধ করিল যা হদ – এর সীমার মধ্যে নয় এবং সে ইমামকে জানালো। তবে তাওবাহ্র পর তাকে কোন শাস্তি দেয়া হইবে না, যখন সে ফতোয়া জানার জন্য আসে।

আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এমন ব্যক্তিকে শাস্তি দেননি। ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, শাস্তি দেননি ঐ লোককে যে রমযানে স্ত্রী সংগম করেছে এবং উমার (রাদি.) শাস্তি দেননি হরিণ শিকারীকে। এ সম্পর্কে আবু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু মাসঊদ (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা আছে।

৬৮২১. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক লোক রমযানে আপন স্ত্রীর সাথে যৌন সংযোগ করে ফেললো। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে ফতোয়া জানতে চাইল। তখন তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, একটি গোলাম আযাদ করার সামর্থ্য তোমার আছে কি? সে বলিল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি দুমাস সিয়াম পালন করিতে পারবে? সে বলিল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে ষাটজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াও

।(আঃপ্রঃ- ৬৩৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৪)

৬৮২২. লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – এর সূত্রে আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক লোক নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে মাসজিদে আসল। তখন সে বলিল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তা কার সঙ্গে? সে বলিল, আমি রমাযানের ভিতর আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি। তখন তিনি তাকে বললেনঃ তুমি সদাকাহ কর। সে বলিল, আমার কাছে কিছুই নেই। সে বসে থাকল। এমন সময় এক লোক একটি গাধা হাঁকিয়ে নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে এল। আর তার সঙ্গে ছিল খাদ্যদ্রব্য। আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জানি না, নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে কী আসল? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ ধ্বংসপ্রাপ্ত লোকটি কোথায়? সে বলিল, এই তো আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সদাকাহ করে দাও। সে বলিল, আমার চেয়ে অধিক অভাবী লোকদের (ভিতর সাদকা করব)? আমার পরিবারের কাছে সামান্য খাবারও নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরাই খাও।

[১৯৩৫; মুসলিম ১৩/১৪, হাদীস ১১১২](আঃপ্রঃ- ৬৩৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৪)

৮৬/২৭. অধ্যায়ঃ যে কেউ শাস্তির ব্যাপারে স্বীকার করিল অথচ বিস্তারিত জানাল না, তখন ইমাদের জন্য তা গোপন রাখা সঠিক হইবে কি?

৬৮২৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে ছিলাম। তখন এক লোক তাহাঁর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমাকে শাস্তি দিন। কিন্তু তিনি তাকে অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন না। আনাস (রাদি.) বলেন তখন সলাতের সময় এসে গেল। লোকটি নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে সলাত আদায় করিল। যখন নাবী (সাঃআঃ) সলাত আদায় করিলেন, তখন লোকটি তাহাঁর কাছে গিয়ে দাঁড়াল এবং বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমার আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী শাস্তি দিন। তিনি বললেনঃ তুমি কি আমার সাথে সলাত আদায় করনি? সে বলিল, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। অথবা বললেনঃ তোমার শাস্তি (ক্ষমা করে দিয়েছেন)। [১০৭][মুসলিম ৪৯/৭, হাদীস ২৭৬৪] (আঃপ্রঃ- ৬৩৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৫)

[১০৭] কেউ যদি কোন ছোট পাপ করে, তবে সালাত আদায়ের মাধ্যমে তার পাপ মুছে যায়। কারণ অশ্লীল অন্যায় কাজ থেকে বিরত থেকে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য সালাতে আল্লাহর নিকট সাহায্যের আবেদন নিবেদন করা হয়। কেউ যদি সালাত প্রকৃতভাবেই আদায় করে, তবে তার গুনাহ অবশিষ্ট থাকে না। অনুরূপভাবে ওযূর মাধ্যমেও ছোট ছোট গুনাহগুলো ঝরে যায়। কিন্ত কাবীরাহ গুনাহ তাওবাহ ব্যতীত ক্ষমা করা হয় না (সুরা নিসার ৩১ নং আয়াত এবং নাবী (সাঃআঃ) – এর বাণী যা ইমাম মুসলিম বর্ণনা করিয়াছেন “মিশকাত” (৫৬৪))।

সংক্ষেপে তাওবাহ গ্রহণযোগ্যতার শর্তসমূহঃ (১) একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা উদ্দেশ্যেই তাওবাহ হইতে হইবে। (২) কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হইতে হইবে। (৩) সে গুনাহ থেকে সর্ম্পর্ণরূপে মুক্ত হইতে হইবে। (৪) পুনরায় সে গুনাহে জড়িত না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করিতে হইবে। (৫) তাওবাহ কবূল হওয়ার সময়ের মধ্যেই তাওবাহ করিতে হইবে। অর্থাৎ আত্মা বের হয়ে যাবার সময় [মৃত্যুর সময়] গড়গড় শব্দ করা শুরু হয়ে গেলে আর সে সময়ে তাওবাহ করলে, তাওবাহ কোন কাজে লাগবে না (অর্থাৎ এর পূর্বেই তাওবাহ করিতে হইবে যেমনটি সহীহ হাদীস সমূহের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে) এবং সূর্য পশ্চিম হইতে উদিত হওয়ার পূর্বেই তাওবাহ করিতে হইবে। অর্থাৎ কিয়ামাতের আলামত পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হয়ে গেলে আর তাওবাহ করার সুযোগ থাকবে না। (৬) এ ছাড়া বান্দার হক নষ্ট করে থাকলে তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করিতে হইবে এবং সে ক্ষমা করলেই ক্ষমা পাওয়া যাবে। তবে কোনক্রমেই যদি তার নিকট থেকে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ না থাকে তাহলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিতে হইবে। হয়তো এর মাধ্যমে ক্ষমার পাওয়া যাবে। বিশেষজ্ঞ আলেমগণ এ সিদ্ধান্তই দিয়েছে। (৭) সম্পূর্ণভাবে বিদআতী আমল থেকে মুক্ত হইতে হইবে। কারণ রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ

“আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বিদআতির বিদআতকে পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তাওবার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন”। [হাদীছটি তাবারানী বর্ণনা করিয়াছেন। হাদীসটি সহীহ, দেখুন “সহীহ আত-তারগীব অত-তারহীব” (১/১৩০ হাদীস নং ৫৪] এবং “সিলসিলাতুস সাহীহাহ” (১৬২০)]।

৮৬/২৮. অধ্যায়ঃ নিজের দোষ স্বীকারকারীকে ইমাম কি একথা বলিতে পারে যে, সম্ভবত তুমি স্পর্শ করেছ কিংবা ইঙ্গিত করেছ?

৬৮২৪. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন মায়িয ইবনু মালিক নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে এল তখন তাকে বলিলেন সম্ভবত তুমি চুম্বন করেছ অথবা ইশারা করেছ অথবা (খারাপ দৃষ্টিতে) তাকিয়েছ? সে বলিল, না, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তাহলে কি তার সঙ্গে তুমি সঙ্গম করেছ? কথাটি তিনি তাকে অস্পষ্টভাবে জিজ্ঞেস করেননি, (বরং স্পষ্টভাবে জিজ্ঞেস করিয়াছেন)। সে বলিল, হ্যাঁ। তখন তাকে রজম করার নির্দেশ দিলেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৬)

৮৬/২৯. অধ্যায়ঃ নিজের দোষ স্বীকারকারীকে ইমামের প্রশ্ন তুমি কি বিবাহিত?

৬৮২৫. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে এল। তখন তিনি মাসজিদে ছিলেন। এসে তাঁকে ডাক দিল, হে আল্লাহর রাসুল। আমি যিনা করেছি, সে নিজেকেই উদ্দেশ্য করিল। তখন তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কিন্তু সে ঐদিকেই ফিরে দাঁড়াল, যে দিকটি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে সম্মুখ করিলেন এবং বলিল হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন, আর সে এদিকেই এল যে দিকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি তখন নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিল তখন নাবী (সাঃআঃ) তাকে ডাকলেন। এরপর জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মধ্যে পাগলামি আছে কি? সে বলিল, না, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি কি বিবাহিত? সে বলিল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও এবং পাথর মেরে হত্যা কর।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৭)

৬৮২৬. ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে এ হাদীস এমন ব্যক্তি বর্ণনা করিয়াছেন যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.)-কে বলিতে শুনেছেন যে, তাকে পাথর মেরে হত্যাকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা তাকে ঈদগাহে বা জানাযাহ আদায়ের স্থানে রজম করেছি। পাথরের আঘাত যখন তাকে অস্থির করে তুলল, তখন সে দ্রুত পালাতে লাগল। শেষে আমরা হার্‌রা নামক স্থানে তাকে পেলাম এবং তাকে পাথর মেরে হত্যা করলাম।

(আঃপ্রঃ- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৭)

৮৬/৩০.অধ্যায়ঃ যিনার কথা স্বীকার করা।

৬৮২৭. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে ছিলাম। এক লোক দাঁড়িয়ে বলিল, আমি আপনাকে (আল্লাহর) কসম দিয়ে বলছি। আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব মত ফায়সালা করুন। তখন তার বিপক্ষের লোকটি দাঁড়াল। আর সে ছিল তার চেয়ে বুদ্ধিমান। তাই সে বলিল, আপনি আমাদের ফায়সালা আল্লাহর কিতাব মুতাবিক করে দিন। আর আমাকে অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। সে বলিল, আমার ছেলে ঐ ব্যক্তির অধীনে চাকর ছিল। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। আমি একশ ছাগল ও একজন গোলামের বিনিময়ে তার সঙ্গে মীমাংসা করি। তারপর আমি আলিমদের অনেককে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা আমাকে বলিলেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর পাথর মেরে হত্যা হলো তার স্ত্রীর শাস্তি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের ফায়সালা করব। একশ ছাগল ও গোলাম তোমাকে ফিরিয়ে দেয়া হইবে। আর তোমার ছেলের উপর একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি সকালে ঐ লোকের স্ত্রীর কাছে যাবে। যদি সে স্বীকার করে তবে তাকে পাথর মেরে হত্যা করিবে। পরদিন সকালে তিনি তার কাছে গেলেন। আর সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হল।

আমি সুফ্‌ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – কে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোকটি এ কথা বলেনি যে, লোকেরা আমাকে বলেছে যে, আমার ছেলের ওপর রজম হইবে। তখন তিনি বলিলেন, যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে এ কথা শুনিয়াছি কিনা, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। তাই কোন সময় এ কথা বর্ণনা করি আর কোন সময় চুপ থাকি।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৮)

৬৮২৮. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে ছিলাম। এক লোক দাঁড়িয়ে বলিল, আমি আপনাকে (আল্লাহর) কসম দিয়ে বলছি। আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব মত ফায়সালা করুন। তখন তার বিপক্ষের লোকটি দাঁড়াল। আর সে ছিল তার চেয়ে বুদ্ধিমান। তাই সে বলিল, আপনি আমাদের ফায়সালা আল্লাহর কিতাব মুতাবিক করে দিন। আর আমাকে অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। সে বলিল, আমার ছেলে ঐ ব্যক্তির অধীনে চাকর ছিল। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। আমি একশ ছাগল ও একজন গোলামের বিনিময়ে তার সঙ্গে মীমাংসা করি। তারপর আমি আলিমদের অনেককে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা আমাকে বলিলেন যে, আমার ছেলেন শাস্তি একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর পাথর মেরে হত্যা হলো তার স্ত্রীর শাস্তি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের ফায়সালা করব। একশ ছাগল ও গোলাম তোমাকে ফিরিয়ে দেয়া হইবে। আর তোমার ছেলের উপর একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি সকালে ঐ লোকের স্ত্রীর কাছে যাবে। যদি সে স্বীকার করে তবে তাকে পাথর মেরে হত্যা করিবে। পরদিন সকালে তিনি তার কাছে গেলেন। আর সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হল।

আমি সুফ্‌ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – কে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোকটি এ কথা বলেনি যে, লোকেরা আমাকে বলেছে যে, আমার ছেলের ওপর রজম হইবে। তখন তিনি বলিলেন, যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে এ কথা শুনিয়াছি কিনা, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। তাই কোন সময় এ কথা বর্ণনা করি আর কোন সময় চুপ থাকি।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৮)

৬৮২৯.ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উমার (রাদি.) বলেছেন, আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, দীর্ঘ যুগ পার হবার পর কোন লোক এ কথা বলিতে পারে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর মেরে হত্যার বিধান পাচ্ছি না। ফলে এমন একটি ফরয ত্যাগ করার কারণে তারা পথভ্রষ্ট হইবে যা আল্লাহ অবতীর্ণ করিয়াছেন। সাবধান! যখন প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে তখন যিনাকারীর জন্য পাথর মেরে হত্যার বিধান নিঃসন্দেহে অবধারিত। সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এরকমই আমি স্মরণ রেখেছি। সাবধান! রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) পাথর মেরে হত্যা করেছে, আর আমরাও তারপরে পাথর মেরে হত্যা করেছি।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৯)

৮৬/৩১. অধ্যায়ঃ যিনার কারণে বিবাহিতা গর্ভবতী নারীকে পাথর মেরে হত্যা করা।

৬৮৩০.ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মুহাজিরদের কতক লোককে পড়াতাম। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) অন্যতম ছিলেন। একবার আমি তাহাঁর মিনার বাড়িতে ছিলাম। তখন তিনি উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) – এর সঙ্গে তাহাঁর সর্বশেষ হাজ্জে রয়েছেন। এমন সময় আবদুর রহমান (রাদি.) আমার কাছে ফিরে এসে বলিলেন, যদি আপনি ঐ লোকটিকে দেখিতেন, যে লোকটি আজ আমীরুল মুমিনীন-এর কাছে এসেছিল এবং বলেছিল, হে আমীরুল মুমিনীন! অমুক ব্যক্তির ব্যাপারে আপনার কিছু করার আছে কি যে লোকটি বলে থাকে যে, যদি উমার মারা যান তাহলে অবশ্যই অমুকের হাতে বায়আত করব। আল্লাহর কসম! আবু বাক্‌রের বায়আত আকস্মিক ব্যাপার-ই ছিল। ফলে তা হয়ে যায়। এ কথা শুনে তিনি ভীষণভবে রাগান্বিত হলেন। তারপর বলিলেন, ইনশা আল্লাহ সন্ধ্যায় আমি অবশ্যই লোকদের মধ্যে দাঁড়াব আর তাদেরকে ঐসব লোক থেকে সতর্ক করে দিব, যারা তাদের বিষয়াদি আত্মসাৎ করিতে চায়। আবদুর রহমান (রাদি.) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি এমনটা করবেন না। কারণ, হাজ্জের মওসুম নিম্নস্তরের ও নির্বোধ লোকদেরকে একত্রিত করে। আর এরাই আপনার নৈকট্যের সুযোগে প্রাধান্য বিস্তার করে ফেলবে, যখন আপনি লোকদের মধ্যে দাঁড়াবেন। আমার ভয় হচ্ছে, আপনি যখন দাঁড়িয়ে কোন কথা বলবেন তখন তা সব জায়গায় তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়বে। আর তারা তা ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারবে না। আর সঠিক রাখতেও পারবে না। সুতরাং মাদীনাহ পৌঁছা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর তা হল হিজরাত ও সুন্নাতের কেন্দ্রস্থল। ফলে সেখানে জ্ঞানী ও সুধীবর্গের সঙ্গে মিলিত হইবেন। আর যা বলার তা দৃঢ়তার সঙ্গে বলিতে পারবেন। জ্ঞানী ব্যক্তিরা আপনার কথাকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবে ও সঠিক ব্যবহার করিবে। তখন উমার (রাদি.) বলিলেন, জেনে রেখো! আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি মাদীনাহ পৌঁছার পর সর্বপ্রথম এ কাজটি নিয়ে ভাষণের জন্য দাঁড়াব। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আমরা যিলহাজ্জ মাসের শেষ দিকে মদিনায় ফিরলাম। যখন জুমুআহর দিন এল সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রমের সঙ্গে সঙ্গে আমি মাসজিদে গেলাম। পৌঁছে দেখি, সাঈদ ইবনু যায়দ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল (রাদি.) মিম্বরের গোড়ায় বসে আছেন, আমিও তার পাশে এমনভাবে বসলাম যেন আমার হাঁটু তার হাঁটু স্পর্শ করছে। অল্পক্ষণের মধ্যে উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) বেরিয়ে আসলেন। আমি যখন তাঁকে সামনের দিকে আসতে দেখলাম তখন সাঈদ ইবনু যায়দ ইবনু আমর ইবনু নুফায়লকে বললাম, আজ সন্ধ্যায় অবশ্যই তিনি এমন কিছু কথা বলবেন যা তিনি খলীফা হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত বলেননি। কিন্তু তিনি আমার কথাটি উড়িয়ে দিলেন এবং বলিলেন, আমার মনে হয় না যে, তিনি এমন কোন কথা বলবেন, যা এর আগে বলেননি। এরপর উমর (রাদি.) মিম্বরের উপরে বসলেন। যখন মুয়ায্‌যিনগণ আযান থেকে ফারিগ হয়ে গেলেন তখন তিনি দাঁড়ালেন। আর আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করিলেন। তারপর বলিলেন, আম্মবাদ! আজ আমি তোমাদেরকে এমন কথা বলিতে চাই, যা আমারই বলা কর্তব্য। হয়তবা কথাটি আমার মৃত্যুর সন্নিকট সময়ে হচ্ছে। তাই যে ব্যক্তি কথাগুলো ঠিকভাবে বুঝে সংরক্ষণ করিবে সে যেন কথাগুলো ঐসব স্থানে পৌঁছে দেয় যেখানে তার সওয়ারী পৌঁছবে। আর যে ব্যক্তি কথাগুলো ঠিকভাবে বুঝতে আশংকাবোধ করছে আমি তার জন্য আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করা ঠিক মনে করছি না। নিশ্চয় আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) – কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তাহাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি ছিল রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, বুঝেছি, আয়ত্ত করেছি। [১০৮] আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) পাথর মেরে হত্যা করিয়াছেন। আমরাও তাহাঁর পরে পাথর মেরে হত্যা করেছি। আমি আশংকা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর কোন লোক এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর মেরে হত্যার আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফরয ত্যাগের কারণে পথভ্রষ্ট হইবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করিয়াছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর পাথর মেরে হত্যা অবধারিত, যে বিবাহিত হবার পর যিনা করিবে, সে পুরুষ হোক বা নারী। যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে। তেমনি আমরা আল্লাহর কিতাবে এও পড়তাম যে, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, তোমরা স্বীয় বাপ-দাদা থেকে বিমুখ হইবে। অথবা বলেছেন, এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, স্বীয় বাবা-দাদা থেকে বিমুখ হইবে। জেনে রেখো! রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা সীমা ছাড়িয়ে আমার প্রশংসা করো না, যেভাবে ঈসা ইবনু মরিয়ামের সীমা ছাড়িয়ে প্রশংসা করা হয়েছে। তোমরা বল, আল্লাহর বান্দা ও তাহাঁর রাসুল। এরপর আমার কাছে এ কথা পৌছেঁছে যে, তোমাদের কেউ এ কথা বলছে যে, আল্লাহর কসম! যদি উমার মারা যায় তাহলে আমি অমুকের হাতে বাইআত করব। কেউ যেন এ কথা বলে ধোঁকায় না পড়ে যে আবু বকর – এর বায়আত ছিল আকস্মিক ঘটনা। ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। জেনে রেখো! তা অবশ্যই এমন ছিল। তবে আল্লাহ আকস্মিক বায়আতের ক্ষতি প্রতিহত করিয়াছেন। সফর করে সওয়ারীগুলোর ঘাড় ভেঙ্গে যায় — এমন স্থান পর্যন্ত মানুষের মাঝে আবু বাকরের মত কে আছে? যে কেউ মুসলিমদের পরামর্শ ছাড়া কোন লোকের হাতে বায়আত করিবে, তার অনুসরণ করা যাবে না এবং ঐ লোকেরও না, যে তার অনুসরণ করিবে। কেননা, উভয়েরই হত্যার শিকার হবার আশংকা রয়েছে। যখন আল্লাহ তাহাঁর নাবী (সাঃআঃ) – কে ওফাত দিলেন, তখন আবু বকর (রাদি.) ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। অবশ্য আনসারগণ আমাদের বিরোধিতা করিয়াছেন। তারা সকলে বানী সাঈদার চত্বরে মিলিত হয়েছেন। আমাদের থেকে বিমুখ হয়ে আলী, যুবায়ব ও তাদেঁর সাথীরাও বিরোধিতা করিয়াছেন। অপরদিকে মুহাজিরগণ আবু বকরের কাছে সমবেত হলেন। তখন আমি আবু বকরকে বললাম, হে আবু বকর! আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঐ আনসার ভাইদের কাছে চলুন। আমরা তাদের উদ্দেশে রওনা হলাম। যখন আমরা তাদের নিকটবর্তী হলাম তখন আমাদের সঙ্গে তাদের দুজন পূণ্যবান ব্যক্তির সাক্ষাৎ হল। তারা উভয়েই এ বিষয়ে আলোচনা করিলেন, যে বিষয়ে লোকেরা ঐকমত্য করছিল। এরপর তারা বলিলেন, হে মুহাজির দল! আপনারা কোথায় যাচ্ছেন? তখন আমরা বললাম, আমরা আমাদের ঐ আনসার ভাইদের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। তারা বলিলেন, না, আপনাদের তাদের নিকট না যাওয়াই উচিত। আপনারা আপনাদের বিষয় সমাপ্ত করে নিন। তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাদের কাছে যাব। আমরা চললাম। অবশেষে বানী সাঈদার চত্বরে তাদের কাছে এলাম। আমরা দেখিতে পেলাম তাদের মাঝখানে এক লোক বস্ত্রাবৃত অবস্থায় রয়েছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোক কে? তারা জবাব দিল ইনি সাদ ইবনু উবাদাহ। আমি জিজ্ঞেস করলা, তার কী হয়েছে? তারা বলিল, তিনি জ্বরে আক্রান্ত। আমরা কিছুক্ষণ বসার পরই তাদের খতীব উঠে দাঁড়িয়ে কালিমায়ে শাহাদাত পড়লেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করিলেন। তারপর বলিলেন, আম্মবাদ। আমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী ও ইসলামের সেনাদল এবং তোমরা হে মুহাজির দল! একটি ছোট দল মাত্র, যে দলটি তোমাদের গোত্র থেকে আলাদা হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। অথচ এরা এখন আমাদেরকে মূল থেকে সরিয়ে দিতে এবং খিলাফত থেকে বঞ্চিত করে দিতে চাচ্ছে। যখন তিনি নিশ্চুপ হলেন তখন আমি কিছু বলার ইচ্ছে করলাম। আর আমি আগে থেকেই কিছু কথা সাজিয়ে রেখেছিলাম, যা আমার কাছে ভাল লাগছিল। আমি ইচ্ছে করলাম যে, আবু বকর (রাদি.) – এর সামনে কথাটি পেশ করব। আমি তার ভাষণ থেকে সৃষ্ট রাগকে কিছুটা ঠাণ্ডা করিতে চাইলাম। আমি যখন কথা বলিতে চাইলাম তখন আবু বকর (রাদি.) বলিলেন, তুমি থাম। আমি তাকেঁ রাগান্বিত করাটা পছন্দ করলাম না। তাই আবু বকর (রাদি.) কথা বলিলেন, আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে সহনশীল ও গম্ভীর। আল্লাহর কসম! তিনি এমন কোন কথা বাদ দেননি যা আমি সাজিয়ে রেখেছিলাম। অথচ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঐরকম বরং তার থেকেও উত্তম কথা বলিলেন। অবশেষে তিনি কথা বন্ধ করে দিলেন। এরপর আবার বলিলেন, তোমরা তোমাদের ব্যাপারে যেসব উত্তম কাজের কথা বলেছ আসলে তোমরা এর উপযুক্ত। তবে খিলাফাতের ব্যাপারটি কেবল এই কুরাইশ বংশের জন্য নির্দিষ্ট। তারা হচ্ছে বংশ ও আবাসভূমির দিক দিয়ে সর্বোত্তম আরব। আর আমি এ দুজন হইতে যে – কোন একজনকে তোমাদের জন্য নির্ধারিত করলাম। তোমরা যে-কোন একজনের হাতে ই্চ্ছা বায়আত করে নাও। এরপর তিনি আমার ও আবু উবাইহাদ ইবনু জাররাহ (রাদি.) – এর হাত ধরলেন। তিনি আমাদের মাঝখানেই বসা ছিলেন। আমি তাহাঁর এ কথা ব্যতীত যত কথা বলেছেন কোনটাকে অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম! আবু বাক্‌র যে জাতির মধ্যে বর্তমান আছেন সে জাতির উপর আমি শাসক নিযুক্ত হবার চেয়ে এটাই শ্রেয় যে, আমাকে পেশ করে আমার ঘাড় ভেঙ্গে দেয়া হইবে, ফলে তা আমাকে কোন গুনাহের কাছে আর নিয়ে যেতে পারবে না। হে আল্লাহ! হয়ত আমার আত্মা আমার মৃত্যুর সময় এমন কিছু আকাঙ্খা করিতে পারে, যা এখন আমি পাচ্ছি না। তখন আনসারদের এক ব্যক্তি বলে উঠল, আমি এ জাতির অভিজ্ঞ ও বংশগত সম্ভ্রান্ত। হে কুরাইশগণ! আমাদের হইতে হইবে এক আমীর আর তোমাদের হইতে হইবে এক আমীর। এ সময় অনেক কথা ও হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। আমি এ মতবিরোধের দরুন শংকিত হয়ে পড়লাম। তাই আমি বললাম, হে আবু বকর! আপনি হাত বাড়ান। তিনি হাত বাড়ালেন। আমি তাহাঁর হাতে বায়আত করলাম। মুহাজিরগণও তাহাঁর হাতে বায়আত করিলেন। অতঃপর আনসারগণও তাহাঁর হাতে বায়আত করিলেন। আর আমরা সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদি.) – এর দিকে এগোলাম। তখন তাদের এক লোক বলে উঠল, তোমরা সাদ ইবনু উবাদাকে জানে মেরে ফেলেছ। তখন আমি বললাম, আল্লাহ সাদ ইবনু ওবাদাকে হত্যা করিয়াছেন। উমার (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা সে সময়ের জরুরী বিষয়ের মধ্যে আবু বকরের বায়আতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছুকে মনে করিনি। আমাদের ভয় ছিলে যে, যদি বায়আতের কাজ অসম্পন্ন থাকে, আর এ জাতি থেকে আলাদা হয়ে যাই তাহলে তারা আমাদের পরে তাদের কারো হাতে বায়আত করে নিতে পারে। তারপর হয়ত আমাদেরকে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের অনুসরণ করিতে হত, না হয় তাদের বিরোধিতা করিতে হত, ফলে তা মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াত। অতএব যে ব্যক্তি মুসলিমদের পরামর্শ ছাড়া কোন ব্যক্তির হাতে বায়আত করিবে তার অনুসরণ করা যাবে না। আর ঐ লোকেরও না, যে তার অনুসরণ করিবে। কেননা উভয়েরই নিহত হওয়ার আশংকা আছে। (আঃপ্রঃ- ৬৩৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭০)

[১] খারেজী এবং কিছু মুতাযিলা সম্প্রদায় কোরআনে উল্লেখিত রজমের আয়াতকে অস্বীকার করে, যার তেলাওয়াত মানসুখ হলেও হুকুম অবশিষ্ট আছে। আয়াতটি হলঃ الشيخ والشيخة إذا زنيا فارجموهما البتة অথচ আয়াতটি কোরআনের অংশ এবং হুকুমটি অবশিষ্ট আছে এর অনেক প্রমাণ রয়েছে।

(১) আব্দুর রাজ্জাক ও ইমাম ত্ববারী ইবনে আববাসের সূত্রে বর্ণনা করেন: উমর (রাদি.) বলেন: سيجيء قوم يكذبون بالرجم

(২) সুনানে নাসায়ীতে ওবায়দুল্লাহ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু উতবার সূত্রে উমর (রাদি.) এর হাদীস :

وأن ناسا يقولون ما بال الرجم وانما في كتاب الله الجلد ألا قد رجم رسول الله সাঃ

(৩) মুয়াত্তা মালেক সায়ীদ বিন মুসায়্যিব এর সূত্রে উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিত হাদীস :

إياكم أن تهلكوا عن آية الرجم أن يقول قائل لا أجد حدين في كتاب الله فقد رجم

(৪) বুখারীতে বর্ণিত ৬৮১৯ নং হাদীসে ইয়াহুদী পুরুষ ও একজন মহিলার রজমের ঘটনা। মায়েয বিন মালিকের রজমের ঘটনা, হাদীস নং ৬৮১৪, ৬৮২৪।

বিবাহিত এবং অবিবাহিত পুরুষ-মহিলার যেনার হুকুম :

* যিনাকার পুরুষ-মহিলা যদি বিবাহিত হয় তবে তাদের হুকুম হল শুধু রজম।

* পক্ষান্তরে যেনাকার পুরুষ-মহিলা যদি অবিবাহিত হয় তবে তাদের হুকুম হল একশত বেত্রাঘাত ও এক বছর নির্বাসন। (ফাতহুল বারী)

৮৬/৩২. অধ্যায়ঃ অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে বেত্রাঘাত করা হইবে এবং নির্বাসিত করা হইবে।

(আল্লাহর বাণী) : ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী ওদের প্রত্যেককে একশ বেত্রাঘাত করিবে…. বিশ্বাসীদের জন্য এদেরেকে বিবাহ করা অবৈধ পর্যন্ত। (সুরা আন্-নূর ২৪/২০৩)

ইবনু উনায়না (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (আরবী) হদ প্রতিষ্ঠা করা।

৬৮৩১. যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে আদেশ দিতে শুনিয়াছি ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে একশ বেত্রাঘাত করার ও এক বছরের জন্য নির্বাসনের, যে অবিবাহিত অবস্থায় যিনা করেছে।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭১)

৬৮৩২. ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) নির্বাসিত করিতেন। অতঃপর সবসময় এ সুন্নাত চালু আছে। (

আঃপ্রঃ- ৬৩৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭১)

৬৮৩৩.আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, যে যিনা করেছে অথচ সে অবিবাহিত রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ ব্যক্তি সম্বন্ধে হদ প্রয়োগসহ এক বছরের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭২)

৮৬/৩৩. অধ্যায়ঃ গুনাহ্গার ও নপুংসকদের নির্বাসিত করা।

৬৮৩৪. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লানত করিয়াছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরূষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেনঃ তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হইতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৩)

৮৬/৩৪. অধ্যায়ঃ ইমামের অনুপস্থিতিতে অন্যকে হদ প্রয়োগের নির্দেশ দেয়া।

৬৮৩৫. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক বেদুঈন নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট এল। এ সময় তিনি উপবিষ্ট ছিলেন। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। এরপর তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল এবং বলিল, এ সত্যই বলেছে হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। আমার ছেলে তার অধীনে চাকর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। তখন লোকেরা আমাকে জানাল যে, আমার ছেলের উপর পাথর মেরে হত্যার হুকুম হইবে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একজন দাসী দিয়ে আপোস করে নেই। এরপর আমি আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি, তখন তাঁরা বলিলেন যে, আমার ছেলের দণ্ড হল একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। তা শুনে তিনি বলিলেন, কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই তোমাদের উভয়ের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দেব। ঐ ছাগল ও দাসীটি তোমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হইবে আর তোমার ছেলের জন্য সাব্যস্ত হইবে একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি সকালে ঐ নারীর কাছে যাও এবং তাকে পাথর মেরে হত্যা কর। উনাইস সকালে গেলেন ও তাকে পাথর মেরে হত্যা করিলেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৪)

৬৮৩৬. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক বেদুঈন নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট এল। এ সময় তিনি উপবিষ্ট ছিলেন। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। এরপর তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল এবং বলিল, এ সত্যই বলেছে হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। আমার ছেলে তার অধীনে চাকর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। তখন লোকেরা আমাকে জানাল যে, আমার ছেলের উপর পাথর মেরে হত্যার হুকুম হইবে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একজন দাসী দিয়ে আপোস করে নেই। এরপর আমি আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি, তখন তাঁরা বলিলেন যে, আমার ছেলের দণ্ড হল একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। তা শুনে তিনি বলিলেন, কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই তোমাদের উভয়ের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দেব। ঐ ছাগল ও দাসীটি তোমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হইবে আর তোমার ছেলের জন্য সাব্যস্ত হইবে একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি সকালে ঐ নারীর কাছে যাও এবং তাকে পাথর মেরে হত্যা কর। উনাইস সকালে গেলেন ও তাকে পাথর মেরে হত্যা করিলেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৪)

৮৬/৩৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের মধ্যে কারো সাধ্বী, বিশ্বাসী নারী বিবাহের সামর্থ্য না থাকলে… আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সুরা আন্-নিসা ৪/২৫) (আরবী) অর্থ (আরবী) (ব্যভিচারিণী)

৮৬/৩৬. অধ্যায়ঃ

দাসী যখন ব্যভিচার করে

৬৮৩৭. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, অবিবাহিতা দাসী যিনা করলে তার হুকুম সম্পর্সে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ সে যদি যিনা করে তাকে তোমরা বেত্রাঘাত করিবে। আবার যদি যিনা করে তাহলেও বেত্রাঘাত করিবে। তারপর যদি যিনা করে তাহলেও বেত্রাঘাত করিবে। এরপর তাকে একগুচ্ছ চুলের বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে ফেলবে। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জানি না যে, (বিক্রির কথা) তৃতীয়বারের পর না চতুর্থবারের পর।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৫)

৬৮৩৮. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, অবিবাহিতা দাসী যিনা করলে তার হুকুম সম্পর্সে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ সে যদি যিনা করে তাকে তোমরা বেত্রাঘাত করিবে। আবার যদি যিনা করে তাহলেও বেত্রাঘাত করিবে। তারপর যদি যিনা করে তাহলেও বেত্রাঘাত করিবে। এরপর তাকে একগুচ্ছ চুলের বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে ফেলবে। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জানি না যে, (বিক্রির কথা) তৃতীয়বারের পর না চতুর্থবারের পর।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৫)

৮৬/৩৭. অধ্যায়ঃ দাসী যিনা করলে তাকে তিরস্কার করা ও নির্বাসন দেয়া যাবে না।

৬৮৩৯. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দাসী যখন যিনা করে আর প্রমাণিত হয়ে যায়, তখন যেন তাকে বেত্রাঘাত করে এবং তিরস্কার না করে। আবার যদি যিনা করে তাহলেও যেন বেত্রাঘাত করে, তিরস্কার না করে। যদি তৃতীয়বারও যিনা করে তাহলে যেন চুলের একটি রশির বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দেয়। ইসমাঈল ইবনু উমাইয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সাঈদ… আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এর অনুসরণ করিয়াছেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৬)

৮৬/৩৮. অধ্যায়ঃ অধ্যায়ঃ যিম্মিদের বিবাহ হওয়া সম্পর্কে বিধান এবং তারা যিনা করলে ও তাদের মোকদ্দমা ইমামের নিকট পেশ করা হলে তার বিধান।

৬৮৪০. শায়বানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবু আওফা (রাদি.) – কে পাথর মেরে হত্যা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বলিলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাথর মেরে হত্যা করিয়াছেন। আমি বললাম, সুরায়ে নূরের (আয়াত নাযিলের) আগে না পরে? তিনি বলিলেন, তা আমি জানি না।

আলী ইবনু মুসহির, খালিদ ইবনু আবদুল্লাহ মুহারিবী ও আবিদা ইবনু হুমায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আশ-শায়বানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে আবদুল ওয়াহিদ এর অনুসরণ করিয়াছেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৭)

৬৮৪১.আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এসে জানাল তাদের একজন পুরুষ ও একজন নারী যিনা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করিলেন যে, তোমরা তাওরাতে রজম সম্পর্কে কী পাচ্ছ? তারা বলিল, তাদেরকে অপমান ও বেত্রাঘাত করা হয়। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) বলিলেন, তোমরা মিথ্যে বলেছ। তাওরাতে অবশ্যই রজমের কথা আছে। তারা তাওরাত নিয়ে এল এবং তা খুলল। আর তাদের একজন রজমের আয়াতের ওপর হাত রেখে দিয়ে তার অগ্র পশ্চাৎ পাঠ করিল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) বলিলেন, তোমার হাত উঠাও। সে হাত উঠালে দেখা গেল তাতে রজমের আয়াত ঠিকই আছে। [১০৯] তারা বলিল, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম সত্যই বলেছেন। হে মুহাম্মাদ! তাতে রজমের আয়াত রয়েছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উভয়ের ব্যাপারে আদেশ করিলেন এবং তাদের উভয়কে রজম করা হল। আমি দেখলাম, পুরুষটি নারীটির উপর উপুড় হয়ে আছে। সে তাকে পাথরের আঘাত হইতে রক্ষা করছে। (

আঃপ্রঃ- ৬৩৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৮)

[১০৯] আল্লাহর বাণী-নিশ্চয়ই যারা আমাদের অবতীর্ণ কোন দলীল এবং হিদায়াতকে লোকদের জন্য আমরা কিতাবের মধ্যে বর্ণনা করার পরেও গোপন করে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাৎ করেন আর অভিসম্পাতকারীরাও তাদের প্রতি অভিসম্পাত করে থাকে – বাকারাহ ১৫৯ আয়াত। আরো দেখুনঃ বাকারাহ ১৭৪।

৮৬/৩৯. অধ্যায়ঃ বিচারক ও লোকদের নিকট স্বীয় স্ত্রী বা অন্যের স্ত্রীর ব্যাপারে যখন যিনার অভিযোগ করা হয় তখন বিচারকের জন্য কি জরুরী নয় যে, তার নিকট পাঠিয়ে তাকে ঐ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিবে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে?

৬৮৪২আবু হুরাইরাহ (রাদি.) ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

দুজন লোক রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট তাদের বিবাদ নিয়ে আসল। তাদের একজন বলিল, আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। অন্যজন বলিল – আর সে ছিল দুজনের মাঝে অধিক বিজ্ঞ – হাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বলিলেন, বল। সে বলিল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আসীফ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলিল যে, আমার ছেলের ওপর বর্তাবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তাঁরা আমাকে বলিলেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপর-ই বর্তাবে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জেনে রেখ! কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব মুতাবিক তোমাদের উভয়ের মাঝে ফায়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমাকে ফেরত দেয়া হইবে এবং তার ছেলেকে একশ বেত্রাঘাত করিলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করিলেন। আর উনাইস আস্‌লামী (রাদি.) – কে আদেশ করিলেন যেন সে অপর ব্যক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তবে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে সে রজম করিল।

[১১০](আঃপ্রঃ- ৬৩৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৯)

[১১০] যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রী অথবা অন্য কোন মহিলাকে যেনার অপবাদ য়ে এবং এ ব্যাপারে প্রমাণ পেশ করিতে না পারে তবে ঐ অপবাদদাতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়িম করা ওয়াজিব। কিন্তু যদি মহিলা তার যিনার কথা স্বীকার করে তাহলে সেই মহিলার উপর যেনার হাদ্দ কায়েম করিতে হইবে। আর এ জন্যই বিচারকের উপর ওয়াজিব দায়িত্ব হল, সে ঐ মহিলার নিকট কাউকে প্রেরণ করিবে তার কাছে অপবাদের সত্যতা জানতে। হাদীসে উল্লেখিত উনাইসাকে ঐ মহিলার কাছে প্রেরণের আসল উদ্দেশ্যই এটা। কারণ ঐ মহিলা যদি তার যেনার কথা স্বীকার না করিতেন তবে আসিফের পিতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়েম করা ওয়াজিব হয়ে যেত। (ফাতহুল বারী)

৬৮৪৩. আবু হুরাইরাহ (রাদি.) ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

দুজন লোক রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট তাদের বিবাদ নিয়ে আসল। তাদের একজন বলিল, আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। অন্যজন বলিল – আর সে ছিল দুজনের মাঝে অধিক বিজ্ঞ – হাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বলিলেন, বল। সে বলিল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আসীফ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলিল যে, আমার ছেলের ওপর বর্তাবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তাঁরা আমাকে বলিলেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপর-ই বর্তাবে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জেনে রেখ! কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব মুতাবিক তোমাদের উভয়ের মাঝে ফায়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমাকে ফেরত দেয়া হইবে এবং তার ছেলেকে একশ বেত্রাঘাত করিলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করিলেন। আর উনাইস আস্‌লামী (রাদি.) – কে আদেশ করিলেন যেন সে অপর ব্যক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তবে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে সে রজম করিল। [১১০]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৯)

[১১০] যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রী অথবা অন্য কোন মহিলাকে যেনার অপবাদ য়ে এবং এ ব্যাপারে প্রমাণ পেশ করিতে না পারে তবে ঐ অপবাদদাতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়িম করা ওয়াজিব। কিন্তু যদি মহিলা তার যিনার কথা স্বীকার করে তাহলে সেই মহিলার উপর যেনার হাদ্দ কায়েম করিতে হইবে। আর এ জন্যই বিচারকের উপর ওয়াজিব দায়িত্ব হল, সে ঐ মহিলার নিকট কাউকে প্রেরণ করিবে তার কাছে অপবাদের সত্যতা জানতে। হাদীসে উল্লেখিত উনাইসাকে ঐ মহিলার কাছে প্রেরণের আসল উদ্দেশ্যই এটা। কারণ ঐ মহিলা যদি তার যেনার কথা স্বীকার না করিতেন তবে আসিফের পিতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়েম করা ওয়াজিব হয়ে যেত। (ফাতহুল বারী)

৮৬/৪০. অধ্যায়ঃ শাসক ব্যতীত অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে।

আবু সাঈদ (রাদি.) নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ সলাত আদায় করে আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছে করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। সে যদি বাধা না মানে তাহলে যেন তার সঙ্গে লড়াই করে। আবু সাঈদ (রাদি.) এমন করিয়াছেন।

৬৮৪৪.আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আবু বকর (রাদি.) এলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় মাথা আমার উরুর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বলিলেন, তুমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরস্কার করিলেন ও নিজ হাত দ্বারা আমার কোমরে আঘাত করিতে লাগলেন। আর রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া হইতে বিরত রেখেছিল। তখন আল্লাহ তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করিলেন। [১১১]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮০)

[১১১] আল্লাহ তাআলা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র উম্মাতের উপর যে সমস্ত রাহমাত বর্ষণ করিয়াছেন তার একটি হল এই তায়াম্মুমের বিধান। তায়াম্মুমের বিধান আল্লাহ না দিলে ইবাদাত বন্দেগী অনেক সময় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ত।

৬৮৪৫.আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আবু বাকর (রাদি.) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন আর বলিলেন, তুমি লোকজনকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর অবস্থানের দরুন মরার মত ছিলাম। অথচ তা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। সামনে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। لَكَزَ- وَوَكَزَ একই অর্থের। [৪৪৩]

আঃপ্রঃ- ৬৩৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮১)

৮৬/৪১. অধ্যায়ঃ যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে দেখে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে।

৬৮৪৬. মুগীরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদি.) বলেছেন, যদি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোন পরপুরুষকে দেখি তবে আমি তাকে তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব। তার এ উক্তি রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে পৌঁছল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি সাদ এর আত্মমর্যাদাবোধে আশ্চর্য হচ্ছ? আমি ওর থেকে অধিক আত্মসম্মানী। আর আল্লাহ আমার থেকেও অধিক আত্মসম্মানের অধিকারী।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮২)

৮৬/৪২. অধ্যায়ঃ কোন বিষয়ে অস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা

৬৮৪৭. আবু হুরাইরা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, জনৈক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকটে এলে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্ত্রী একটি কালো ছেলে জন্ম দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার কোন উট আছে কি? সে বলিল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কি? সে বলিল, লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কি ছাই বর্ণের কোন উট আছে? সে বলিল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ এটা কোথা থেকে হল? সে বলিল, আমার ধারণা যে, কোন শিরা (বংশমূল) একে টেনে এনেছে। তিনি বলিলেন, তাহলে হয়ত তোমার এ পুত্র কোন শিরা (বংশমূল) টেনে এনেছে।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৩)

৮৬/৪৩. অধ্যায়ঃ শাস্তি ও শাসনের পরিমাণ কতটুকু

৬৮৪৮. আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)… … আবু বুর্‌দা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলিতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না।

[৬৮৪৯, ৬৮৫০; মুসলিম ২৯/৯, হাদীস ১৭০৮, আহমাদ ১৬৪৮৬] (আঃপ্রঃ- ৬৩৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৪)

৬৮৪৯. আমর ইবন আলী(রা.)… … আবদুর রহমান ইবন জাবীর (র.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি এমন একজন থেকে বর্ণনা করেন যিনি নাবী (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন যে, আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ প্রহারের বেশি শাস্তি নেই।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৫)

৬৮৫০. ইয়াহইয়া ইবন সুলায়মান (র.)… … আবু বুরদা আনসারী (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্যত্র দশ কশাঘাতের বেশি প্রয়োগ করা যাবে না।[৬৮৪৮; মুসলিম ২৯/৯, হাদীস ১৭০৮, আহমাদ ১৬৪৮৬]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৬)

৬৮৫১. ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র.)…… আবু হুরাইরা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) লাগাতার সিয়াম পালন থেকে নিষেধ করিয়াছেন। তখন মুসলমানদের থেকে এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রাসুল ! আপনি তো লাগাতার সিয়াম পালন করেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ আমার মত তোমাদের মধ্যে কে আছে? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমন অবস্থায় যে, আমার রব আমাকে পানাহার করান। যখন তারা লাগাতার সিয়াম পালন করা থেকে বিরত থাকল না তখন তিনি একদিন তাদের সাথে লাগাতার (দিনের পর দিন) সিয়াম পালন করিতে থাকলেন। এরপর যখন তারা নতুন চাঁদ দেখল তখন তিনি বললেনঃ যাদি তা আরো দেরি হত তাহলে আমি তোমাদের আরো বাড়িয়ে দিতাম। কথাটি যেন শাসন স্বরূপ বলিলেন,যাখন তারা বিরত রইল না। শুআয়ব, ইয়াহয়া ইবন সাঈদ ও ইউনুস (র.) যুহরী (র.) থেকে উকায়ল (র.) এর অনুসরণ করিয়াছেন। আবদুর রহমান ইবন খালিদ (র.)…… আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৭)

৬৮৫২. আইয়াশ ইবন ওয়ালীদ (র.)…… আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর যুগে প্রহার করা হত যখন তারা অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করত। তারা তা যেন তাদের স্থানে বিক্রি না করে যে পর্যন্ত না তারা তা আপন বিক্রয়স্থলে ওঠায়।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৮)

৬৮৫৩. আবদান (র.)…… আয়েশা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিজের জন্য তার উপর আপতিত বিষয়ের কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যে পর্যন্ত না আল্লাহর অলঙ্ঘনীয় সীমালঙ্ঘন করা হয়। এমন হলে তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রতিশোধ গ্রহণ করিতেন।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৯)

৮৬/৪৪. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি প্রমাণ ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়

৬৮৫৪.আলী (র.)…… সাহল ইবন সাদ (র.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দুজন লিআনকারীর ব্যাপারে দেখেছি যে, তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে। আমি তখন পনের বছরের যুবক ছিলাম। এরপর স্বামী বলিল, আমি যদি তাকে রেখে দেই তাহলে তার উপর আমি মিথ্যা আরোপ করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যুহরী (র.) থেকে তা স্মরণ রেখেছিযে, যদি সে এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় তাহলে সে সত্যবাদী। আর যদি এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় যেন টিকটিকির ন্যায় লাল, তাহলে সে মিথ্যাবাদী। আমি যুহরী (র.)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, সে সন্তানটি ঘৃণ্য আকৃতির জন্ম নেয়।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯০)

৬৮৫৫. আলী ইবন আবদুল্লাহ (র.)…… কাসিম ইবন মুহাম্মদ (র.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, ইবন আব্বাস (রাদি.) দুজন লিআনকারী সম্পর্কে আলোচনা করিলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবন সাদ্দাদ (র.) বলিলেন, এ কি সে মহিলা যার সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি যদি কোন মহিলাকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম……? তিনি বলিলেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯১)

৬৮৫৬.আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)…… ইবন আব্বাস (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর নিকটে লিআনকারীদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল। তখন আসিম ইবনআদী (রাদি.) তার সম্বন্ধে কিছু কটুক্তি করিলেন। তারপর তিনি ফিরে গেলেন। তখন তার স্বগোত্রের এক ব্যক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করিল যে, সে তার স্ত্রীর কাছে অন্য এক ব্যক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাদি.) বলেন, আমি আমার এ উক্তির দরুনই এ পরীক্ষায় পড়েছি। এরপর তিনি তাকে নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর কাছে নিয়ে গেলেন। আর সে তাঁকে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জানাল যার সাথে তার স্ত্রীকে পেয়েছে। এ ব্যক্তিটি গৌর বর্ণ, হালকা-পাতলা, সোজা চুল বিশিষ্ট ছিল। আর যে ব্যক্তি সম্বন্ধে দাবি করেছে যে, সে তাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে সে ছিল মেটে বর্ণের, মোটা গোড়ালী, স্থুল গোশ্‌তবিশিষ্ট। তখন নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! স্পষ্ট করে দিন। ফলে সে মহিলাটি ঐ ব্যক্তি সদৃশ সন্তান জন্ম দিল যার কথা তার স্বামী উল্লেখ করেছিল যে, তাকে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে। তখন নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) উভয়ের মধ্যে লিআন কার্যকর করিলেন। তখন এক ব্যক্তি এ মজলিসেই ইবন আব্বাস (রাদি.)- কে বলিল, এটা কি সে মহিলা যার সম্পর্কে নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যদি আমি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম। তিনি বলেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে ইসলামে থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

(আঃপ্রঃ- ৬৩৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯২)

৮৬/৪৫. অধ্যায়ঃ সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা।

আর যারা সাধ্বী রমনীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি কশাঘাত কর……ক্ষমাশীল দয়ালু পর্যন্ত। (২৪ : ৪-৫) যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ : ২৩)

৬৮৫৭. আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ (র.)…… আবু হুরাইরা (র.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ (র.)…… আবু হুরাইরা (র.) সূত্রে নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল ! সেগুলো কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, জাদু, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করিয়াছেন, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা, সাধ্বী সরলমনা রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা। [১]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৩)

[১] হাদীসে উল্লেখিত موبقة বা ধ্বংসাত্মক বিষয় দ্বারা বড় কবীরা গুনাহ উদ্দেশ্য, যা আবু হুরাইরার (রাদি.) অন্য সূত্রে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন ইমাম বায্যার ও ইবনুল মুনযির আবু হুরাইরার সূত্রে বর্ণনা করেন, الكبائر الشرك بالله وقتل النفس এবং ইমাম নাসায়ী, ইমাম ত্বরাবানী সুহাইবের সূত্রে আবু হুরাইরা ও আবু সাঈদ থেকে বর্ণনা করেন,

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مامن عبد يصلي الخمس ويجتنب الكبائر السبع الا فتحت له أبواب الجنة।

হাদীসটিকে ইবনে হিববান ও হাকেম সহীহ বলেছেন। কিন্তু উল্লেখিত হাদীসের সব ব্যাখ্যা করেননি। অন্যদিকে ইসমাঈল আল কাজী সহীহ সনদে সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব হইতে ১০টির কথা উল্লেখ করেন। তিনি হাদীসে উল্লেখিত মূল ৭টির সাথে যা অতিরিক্ত বর্ণনা করেন তা হল, وعقوق الوالدين- واليمين الغموس وشرب الخمر কবীরা গুনাহের সংখ্যা নিরুপণ নিয়ে রয়েছে বিশদ মতভেদ। ইমাম ত্ববারী ও ইসমাঈল ইবনু আববাস (রাদি.) হইতে বর্ণনা করেন, তাঁকে ৭টি কবীরা গুনাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ ৭৭টিরও অধিক। অন্য আরেক বর্ণনায় ওগুলো প্রায় ৭০টি, আবার আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে, ওগুলোর সংখ্যা ৭শটি। (ফাতহুল বারী)

৮৬/৪৬. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা

৬৮৫৮. মুসাদ্দাদ (র.)…… আবুহুরাইরা (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাঃআঃ)–কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করিল। অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে। কিয়ামত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হইবে। তবে যদি এমনি হয় যেমন সে বলেছে (সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হইবে না)। [মুসলিম ২৭/৯, হাদীস ১৬৬০, আহমাদ ৯৫৭২]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৪)

৮৬/৪৭. অধ্যায়ঃ ইমাম থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর হদ প্রয়োগ করার জন্য তিনি কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করিতে পারেন কি? উমর (রা.) এমনটা করিয়াছেন

৬৮৫৯.মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ (র.)…… আবুহুরাইরা ও যায়িদইবন খালিদ জুহানী (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, জনৈক ব্যক্তি নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলিল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রাসুল ! নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলিল, আমার ছেলে এর ব্যক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর কজন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার ছেলের উপর একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হইবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস ! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করিবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করিবে। সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে সে রজম করিল। [২৩১৪, ২৩১৫; মুসলিম ২৯/৫, হাদীস ১৬৯৭, ১৬৯৮]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৫)

৬৮৬০. মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ (র.)…… আবুহুরাইরা ও যায়িদইবন খালিদ জুহানী (রা.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, জনৈক ব্যক্তি নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলিল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রাসুল ! নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলিল, আমার ছেলে এর ব্যক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর কজন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার ছেলের উপর একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হইবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস ! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করিবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করিবে। সে স্বীকার করিল। ফলে তাকে সে রজম করিল।[২৩১৪, ২৩১৫; মুসলিম ২৯/৫, হাদীস ১৬৯৭, ১৬৯৮]

(আঃপ্রঃ- ৬৩৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৫)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply