যুদ্ধে পশুর ব্যবহার , গনীমত, ঘোড়দৌড়, গাধা, সাদা খচ্চর
যুদ্ধে পশুর ব্যবহার , গনীমত, ঘোড়দৌড়, গাধা, সাদা খচ্চর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫৬, জিহাদ, অধ্যায়ঃ (৪৩-৬১)=১৯টি
৫৬/৪৩. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার কপালের কেশদামে কল্যাণ বিধিবদ্ধ আছে কেয়ামত অবধি।
৫৬/৪৪. অধ্যায়ঃ জিহাদ চলতে থাকবে সৎ বা অসৎ লোকের নেতৃত্বে।
৫৬/৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে ঘোড়া প্রস্তুত রাখে। মহান আল্লাহর বাণীঃ “যে জিহাদের উদ্দেশে ঘোড়া পালন করে।” (সুরা আল-আনফালঃ ৫২)
৫৬/৪৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়া ও গাধার নাম রাখা।
৫৬/৪৭. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার অকল্যাণ সম্পর্কে যা বলা হয়।
৫৬/৪৮. অধ্যায়ঃ ঘোড়া তিন ধরনের মানুষের জন্য। আর আল্লাহ তাআলার বাণীঃ তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা তোমাদের আরোহণের জন্য ও শোভার জন্য এবং আরো সৃষ্টি করবেন এমন বস্তু যা তোমরা জান না। (আন-নাহল ৮)
৫৬/৪৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি জিহাদে অন্যের পশুকে চাবুক মারে।
৫৬/৫০. অধ্যায়ঃ অবাধ্য পশু এবং তেজী ঘোড়ায় আরোহণ করা।
৫৬/৫১. অধ্যায়ঃ গনীমতে ঘোড়ার অংশ।
৫৬/৫২. অধ্যায়ঃ যুদ্ধে যে ব্যক্তি অন্যের বাহনের পশু চালনা করে।
৫৬/৫৩. অধ্যায়ঃ বাহনের পশুর ও পা-দানি সম্পর্কে।
৫৬/৫৪. অধ্যায়ঃ গদিবিহীন অশ্বোপরি আরোহণ।
৫৬/৫৫. অধ্যায়ঃ ধীরগতি সম্পন্ন ঘোড়া।
৫৬/৫৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়দৌড়
৫৬/৫৭. অধ্যায়ঃ প্রতিযোগিতার জন্য অশ্বের প্রশিক্ষণ।
৫৬/৫৮. অধ্যায়ঃ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অশ্বেও দৌড় প্রতিযোগিতার সীমা।
৫৬/৫৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর উষ্ট্রী প্রসঙ্গে।
৫৬/৬০. অধ্যায়ঃ গর্দভের পিঠে সাওয়ার অবস্থায় যুদ্ধ।
৫৬/৬১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর সাদা খচ্চর।
৫৬/৪৩. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার কপালের কেশদামে কল্যাণ বিধিবদ্ধ আছে কেয়ামত অবধি।
২৮৪৯.আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশগুচ্ছে কল্যাণ আছে কিয়ামত অবধি।
২৮৫০. উরওয়াহ ইবনু জাদ (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঘোড়ার কপালের কেশগুচ্ছে কেয়ামত পর্যন্ত কল্যাণ আছে। সুলাইমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) শুবা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে উরওয়াহ ইবনু আবুল জাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদীস বর্ণনায় সুলাইমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন মুসাদ্দাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)……উরওয়া ইবনু আবু জাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে।
২৮৫১. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশ দামে বরকত আছে।
৫৬/৪৪. অধ্যায়ঃ জিহাদ চলতে থাকবে সৎ বা অসৎ লোকের নেতৃত্বে।
কেননা নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশ গুচ্ছে কল্যাণ নিবন্ধ রয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত
২৮৫২. উরওয়াহ বারিকী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশ গুচ্ছে কল্যাণ রয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত। অর্থাৎ (আখিরাতের) পুরষ্কার এবং গনীমতের মাল।
৫৬/৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে ঘোড়া প্রস্তুত রাখে। মহান আল্লাহর বাণীঃ “যে জিহাদের উদ্দেশে ঘোড়া পালন করে।” (সুরা আল-আনফালঃ ৫২)
২৮৫৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাহাঁর প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বাস রেখে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য ঘোড়া প্রস্তুত রাখে, কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির পাল্লায় ঘোড়ার খাদ্য, পানীয়, গোবর ও পেশাব ওজন করা হইবে।
৫৬/৪৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়া ও গাধার নাম রাখা।
২৮৫৪. আবু ক্বাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি একদা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে বের হন। কিন্তু তিনি কয়েকজন সঙ্গী সহ পেছনে পড়ে গেলেন। আবু ক্বাতাদা (রাদি.) ব্যতীত তার সঙ্গীরা সকলেই ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। আবু ক্বাতাদা (রাদি.) দেখার পূর্বে তার সঙ্গীরা একটি বন্য গাধা দেখিতে পান এবং তাকে চলে যেতে দেন; আবু ক্বাতাদা (রাদি.) গাধাটি দেখা মাত্রই জারাদা নামক তার ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করেন এবং ঘোড়ার চাবুকটি উঠিয়ে দিতে সঙ্গীদের বলেন; কিন্তু সঙ্গীরা অস্বীকার করলে তখন আবু ক্বাতাদা (রাদি.) নিজেই চাবুকটি তুলে নেন এবং গাধাটি শিকার করে সঙ্গীদের নিয়ে এর গোশ্ত আহার করেন। এতে তারা লজ্জিত হন। অতঃপর তারা যখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট পৌঁছলেন তখন তিনি বলেন, গাধাটির কোন অংশ তোমাদের নিকট আছে কি? তারা বলিলেন, আমাদের সঙ্গে একটি পায়া আছে। নাবী (সাঃআঃ) তা নিয়ে আহার করিলেন।
২৮৫৫. সাহল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের বাগানে নাবী (সাঃআঃ)-এর একটি ঘোড়া থাকত, যাকে লুহাইফ বলা হত। আর কেউ কেউ বলেছেন, “লুখাইফ”।
২৮৫৬. মুআয (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বলিলেন, হে মুআয, তুমি কি জান বান্দার উপর আল্লাহর হক কী? এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বলিলেন, বান্দার উপর আল্লাহর হক হলো, বান্দা তাহাঁর ইবাদত করিবে এবং তাহাঁর সাথে কাউকে শরীক করিবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক হলো, তাহাঁর ইবাদাতে কাউকে শরীক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! আমি কি লোকদের এ সুসংবাদ দিব না? তিনি বলিলেন, তুমি তাদের সুসংবাদটি দিও না, তাহলে লোকেরা এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
২৮৫৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক সময় মদীনায় আতংক ছড়িয়ে পড়লে নাবী (সাঃআঃ) আমাদের মানদূব নামক ঘোড়াটি চেয়ে নিলেন। পরে তিনি বলিলেন, আতংকের কোন কারণ তো আমি দেখিতে পেলাম না। আমি ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত (দ্রুতগামী) পেয়েছি।
৫৬/৪৭. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার অকল্যাণ সম্পর্কে যা বলা হয়।
২৮৫৮. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনটি জিনিসে অকল্যাণ আছেঃ ঘোড়ায়, নারীতে ও বাড়ীতে।
২৮৫৯. সাহল ইবনু সাদ সাঈদী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, যদি কোন কিছুতে অকল্যাণ থেকে থাকে, তবে তা আছে নারী, ঘোড়া ও বাড়ীতে।
৫৬/৪৮. অধ্যায়ঃ ঘোড়া তিন ধরনের মানুষের জন্য। আর আল্লাহ তাআলার বাণীঃ তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা তোমাদের আরোহণের জন্য ও শোভার জন্য এবং আরো সৃষ্টি করবেন এমন বস্তু যা তোমরা জান না। (আন-নাহল ৮)
২৮৬০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, ঘোড়া তিন শ্রেণীর লোকের জন্য। একজনের জন্য পুরষ্কার; একজনের জন্য আবরণ এবং একজনের জন্য (পাপের) বোঝা। যার জন্য পুরষ্কার, সে হলো, ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়া বেঁধে রাখে এবং রশি কোন চারণভূমি বা বাগানে লম্বা কর দেয়, আর ঘোড়াটি সে চারণভূমি বা বাগানে ঘাস খায়, তবে এর জন্য তার পুণ্য রয়েছে। আর ঘোড়াটি যদি রশি ছিঁড়ে এক বা দুটি টিলা অতিক্রম করে তাহলেও তার গোবর ও পদক্ষেপ সমূহের বিনিময়ে তার জন্য পুণ্য রয়েছে। এমনকি ঐ ঘোড়া যদি কোন নহরে গিয়ে তা থেকে পানি পান করে, অথচ তার মালিক পানি পান করানোর ইচ্ছা করেনি, তবে এর ফলেও তার জন্য পুণ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি অহংকার, লৌকিকতা প্রদর্শন এবং মুসলিমদের সাথে শত্রুতা করার জন্য ঘোড়া বেঁধে রাখে তবে তার জন্য তা (পাপের) বোঝা। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে আমার উপর আর কিছু অবতীর্ণ হয়নি, ব্যাপক অর্থপূর্ণ এই একটি আয়াত ব্যতীত। (আল্লাহর বাণীঃ) কেউ অণু পরিমাণ নেক কাজ করে থাকলে, সে তা দেখিতে পাবে; আর কেউ অণু পরিমাণ বদ কাজ করে থাকলে, সে তাও দেখিতে পাবে। (যিলযাল ৭-৮)
৫৬/৪৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি জিহাদে অন্যের পশুকে চাবুক মারে।
২৮৬১. আবুল মুতাওয়াক্কিল নাজী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাদি.)-এর নিকট গিয়ে তাকে বললাম, আপনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট হইতে যা শুনেছেন, তা থেকে আমার নিকট কিছু বলুন। তখন জাবির (রাদি.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কোন এক সফরে তার সঙ্গে ছিলাম। আবু আকীল বলিলেন, সেটি কি জিহাদের সফর ছিল, না উমরা পালনের, তা আমার জানা নেই। আমরা যখন প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম, তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যারা পরিজনদের নিকট তাড়াতাড়ি যেতে আগ্রহী, তারা তাড়াতাড়ি যাও। জাবির (রাদি.) বলেন, অতঃপর আমি একটি উটের পিঠে চড়ে বেরিয়ে পড়লাম, সেটির দেহে কোন দাগ ছিল না এবং বর্ণ ছিল লাল-কালো মিশ্রিত। লোকেরা আমার পেছনে পেছনে চলছিল। পথিমধ্যে আমার উটটি ক্লান্ত হয়ে থেমে পড়লে নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, হে জাবির! তুমি থাম। অতঃপর তিনি চাবুক দিয়ে উটটিকে একটি আঘাত করিলেন, আর উটটি হঠাৎ দ্রুত চলতে লাগল। অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি উটটি বিক্রি করিবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর মদীনায় পৌঁছলে নাবী (সাঃআঃ) সাহাবীদের একদল সহ মসজিদে প্রবেশ করিলেন। আমি আমার উটটিকে মসজিদের বালাত-এর পার্শ্বে বেঁধে রেখে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এগিয়ে গেলাম এবং বললাম, এই আপনার উট। তখন তিনি বেরিয়ে এসে উটটি ঘুরে ঘুরে দেখিতে লাগলেন এবং বলিতে লাগলেন, হ্যাঁ, উটটিতো আমারই। অতঃপর তিনি কয়েক উকিয়া স্বর্ণসহ এই বলে পাঠালেন যে, এগুলো জাবিরকে দাও। অতঃপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি উটের পুরা মূল্য পেয়েছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, মূল্য এবং উট তোমারই।
৫৬/৫০. অধ্যায়ঃ অবাধ্য পশু এবং তেজী ঘোড়ায় আরোহণ করা।
রাশিদ ইবনু সাদ (রাদি.) বলেন, সাল্ফ সালেহীন তেজী ঘোড়ায় চড়তে ভালবাসতেন। কেননা সেগুলো খুব দ্রুতগামী ও খুব সাহসী।
২৮৬২. ক্বাতাদা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, এক সময় মদীনাতে আতংক দেখা দিলে নাবী (সাঃআঃ) আবু ত্বলহার মানদূব নামক ঘোড়াটি চেয়ে নিলেন এবং এর উপর আরোহণ করিলেন আর বলিলেন, আমি কোন আতংক দেখিনি। কিন্তু ঘোড়াটি সমুদ্রের মত গতিশীল পেয়েছি।
৫৬/৫১. অধ্যায়ঃ গনীমতে ঘোড়ার অংশ।
মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ঘোড়া ও বিশেষ করে তুর্কী ঘোড়ার গনীমাতে অংশ দেয়া হইবে। আল্লাহর বাণীঃ “তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা তোমাদের আরোহণের জন্য ও শোভার জন্য।” (নাহল ৮) একাধিক ঘোড়া হলে এর কোন অংশ দেয়া হইবে না।
২৮৬৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) গনীমতের মাল থেকে ঘোড়ার জন্য দুঅংশ এবং আরোহীর জন্য এক অংশ নির্ধারণ করেছিলেন।
৫৬/৫২. অধ্যায়ঃ যুদ্ধে যে ব্যক্তি অন্যের বাহনের পশু চালনা করে।
২৮৬৪. আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বারা ইবনু আযিব (রাদি.)-কে বলিল, আপনারা কি হুনায়নের যুদ্ধে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে ময়দানে রেখে পলায়ন করেছিলেন? বারা ইবনু আযিব (রাদি.) বলেন, কিন্তু আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) পলায়ন করেননি। হাওয়াযিনরা ছিল সূদক্ষ তীরন্দাজ। আমরা সামনা-সামনি যুদ্ধে তাদের পরাস্ত করলে তারা পালিয়ে যেতে লাগল। তখন মুসলিমরা তাদের পিছু ধাওয়া না করে গনীমতের মাল সংগ্রহে ব্যস্ত হল। তখন শত্রুরা তীর বর্ষনের মাধ্যমে আমাদের আক্রমণ করে বসল। তবে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) স্থান ত্যাগ করেননি। আমি তাঁকে তাহাঁর সাদা খচ্চরটির উপর অটল অবস্থায় দেখেছি। আবু সুফিয়ান (রাদি.) তাহাঁর বাহনের লাগাম ধরে টানছেন; আর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলছেন, আমি মিথ্যা নাবী নই, আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর।
৫৬/৫৩. অধ্যায়ঃ বাহনের পশুর ও পা-দানি সম্পর্কে।
২৮৬৫. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) সাওয়ার হয়ে পা-দানিতে পা রাখার পর উটটি দাঁড়িয়ে গেলে যুল-হুলাইফা মসজিদের নিকট তিনি ইহরাম বেঁধে নিতেন।
৫৬/৫৪. অধ্যায়ঃ গদিবিহীন অশ্বোপরি আরোহণ।
২৮৬৬. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) গদিহীন ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে লোকদের সম্মুখে হাজির হলেন; তাহাঁর কাঁধে ছিল তলোয়ার।
৫৬/৫৫. অধ্যায়ঃ ধীরগতি সম্পন্ন ঘোড়া।
২৮৬৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার মদীনাবাসীগণ আতংকিত হয়ে পড়লে নাবী (সাঃআঃ) আবু ত্বলহা (রাদি.)-এর ধীরগতি সম্পন্ন ঘোড়ায় চড়লেন। তিনি ফিরে এসে বলিলেন, আমি তোমার ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত গতিশীল পেয়েছি। এরপর ঘোড়াটিকে আর কখনো পেছনে ফেলা যেতো না।
৫৬/৫৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়দৌড়
২৮৬৮. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অশ্বের জন্য হাফ্য়া থেকে সানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত এবং প্রশিক্ষণহীন অশ্বের জন্য সানিয়্যা থেকে বনূ যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, আমি উক্ত প্রতিযোগিতার একজন প্রতিযোগী ছিলাম। সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাফ্য়া থেকে সানিয়্যাতুল বিদার দূরত্ব পাঁচ কিংবা ছয় মাইল এবং সানিয়্যা থেকে বনূ যুরায়কের মসজিদের দূরত্ব এক মাইল।
৫৬/৫৭. অধ্যায়ঃ প্রতিযোগিতার জন্য অশ্বের প্রশিক্ষণ।
২৮৬৯. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) প্রশিক্ষণহীন ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করিয়াছেন এবং এই দৌড়ের সীমানা ছিল সানিয়্যা থেকে বনূ যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত।আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। আবু আবদুল্লাহ (বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)) বলেন, —– এর অর্থ সীমা।
৫৬/৫৮. অধ্যায়ঃ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অশ্বেও দৌড় প্রতিযোগিতার সীমা।
২৮৭০ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা করিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতা হাফয়া থেকে শুরু হত এবং সানিয়্যাতুল বিদায় শেষ হত। (রাবী আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন), আমি মূসা (রাদি.)-কে বললাম, এর দূরত্ব কী পরিমাণ হইবে? তিনি বলিলেন, ছয় বা সাত মাইল। প্রশিক্ষণহীন ঘোড়ার প্রতিযোগিতা শুরু হতো সানিয়্যাতুল বিদা থেকে এবং শেষ হতো বনূ যুরাইকের মসজিদে। আমি বললাম, এর মধ্যে দূরত্ব কত? তিনি বলিলেন, এক মাইল বা তার তদ্রূপ। ইবনু উমর (রাদি.) এতে প্রতিযোগীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
৫৬/৫৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর উষ্ট্রী প্রসঙ্গে।
ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) উসামাকে কাসওয়া নাম্নী উষ্ট্রীর পিঠে তাহাঁর পিছনে বসান। মিসওয়ার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, তাহাঁর উষ্ট্রী কাসওয়া কখনো অবাধ্য হয়নি।
২৮৭১. আনাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ)-এর একটি উষ্ট্রী ছিল যেটিকে আযবা বলা হত।
২৮৭২. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর আযবা নামের একটি উষ্ট্রী ছিল। কোন উষ্ট্রী তার আগে যেতে পারত না। হুমাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কোন উষ্ট্রী তার আগে যেতে সক্ষম হতো না। একদা এক বেদুইন একটি জওয়ান উটে চড়ে আসল এবং আযবা-এর আগে চলে গেল। এতে মুসলিমদের মনে কষ্ট হল। এমনকি নাবী (সাঃআঃ)-ও তা বুঝতে পারলেন। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহর নিয়ম এই যে, দুনিয়ার সবকিছুরই উত্থানের পর পতন আছে।
৫৬/৬০. অধ্যায়ঃ গর্দভের পিঠে সাওয়ার অবস্থায় যুদ্ধ।
৫৬/৬১. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর সাদা খচ্চর।
আনাস (রাদি.) তা বর্ণনা করিয়াছেন। আবু হুমাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আয়লার শাসক নাবী (সাঃআঃ)-কে একটি সাদা খচ্চর হাদিয়া দিয়েছিলেন
২৮৭৩. আমর ইবনু হারিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সাদা খচ্চর, কিছু যুদ্ধ সামগ্রী ও সামান্য ভূমি ছাড়া আর কিছুই রেখে যাননি। এগুলোও তিনি সদকা স্বরূপ ছেড়ে যান।
২৮৭৪. বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কোন এক ব্যক্তি তাঁকে বলিলেন, হে আবু উমারাহ! আপনারা হুনায়নের দিন পলায়ন করেছিলেন? তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম, না। নাবী (সাঃআঃ) কখনো পলায়ন করেননি বরং অতি উৎসাহী অগ্রবর্তী কতিপয় ব্যক্তি হাওয়াযিনদের তীর নিক্ষেপের ফলে পালিয়ে ছিলেন। আর নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সাদা খচ্চরটির উপর উপবিষ্ট ছিলেন এবং আবু সুফিয়ান ইবনু হারিস (রাদি.) এর লাগাম ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলেছিলেন, আমি মিথ্যা নাবী নই, আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর।
Leave a Reply