যুদ্ধবন্দী দেরকে আটক করা , গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ

যুদ্ধবন্দী দেরকে আটক করা , গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ

যুদ্ধবন্দী দেরকে আটক করা , গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১৯. অধ্যায়ঃ যুদ্ধবন্দী দেরকে আটক করা , গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ

৪৪৮১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কিছু সংখ্যক অশ্বারোহী সৈন্যকে নাযদ—এর দিকে পাঠান। অতঃপর বানূ হানীফা গোত্রের এক ব্যক্তিকে তাঁরা ধরে নিয়ে এলো। তার নাম ছিল সুমামাহ ইবনি উসাল। তিনি ইয়ামামাবাসীদের সরদার ছিলেন। তাঁরা মাসজিদের একটি খুঁটির সাথে তাকে বেঁধে রাখলেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তার কাছে আসলেন এবং বলিলেন, হে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে উত্তর দিল, আমার কাছে তো ভালই মনে হচ্ছে। আপনি যদি আমাকে হত্যা করেন, তাহলে খুনী ব্যক্তিকেই হত্যা করিলেন। আর যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনার অনুগ্রহ হইবে কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি সম্পদ চান, তবে আপনাকে তাই দেয়া হইবে, আপনি যা চাইবেন। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাকে যথাবস্থায় রেখে দিলেন। তারপর পরের দিনও তিনি বলিলেন, হে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? তিনি বলিলেন, আমার নিকট তাই মনে হচ্ছে যা আপনার কাছে বলে দিয়েছি। যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনার অনুগ্রহ হইবে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি হত্যা করেন, তবে আপনি একজন খুনী ব্যক্তিকেই হত্যা করবেন। আর যদি আপনি সম্পদ চান তবে আপনাকে তাই দেয়া হইবে আপনি যা চাবেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পরের দিন পর্যন্ত তাকে ঐভাবে রাখলেন। তিনি বলিলেন, হে সুমামাহ! তোমার নিকট কেমন লাগছে? তিনি বলিলেন, আমার নিকট তাই যা আমি আপনাকে ইতিপূর্বে বলেছি। যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনি অনুগ্রহ করবেন একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি আমাকে হত্যা করেন, তবে হত্যার উপযুক্ত ব্যাক্তিকেই হত্যা করবেন। আর যদি আপনি সম্পদ চান, তবে বলুন তাই দেয়া হইবে যা আপনি চাইবেন। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, তোমরা সুমামাহকে ছেড়ে দাও। তারপর তিনি মাসজিদের নিকটবর্তী একটি খেজুর গাছের নিকট গেলেন। সেখানে তিনি গোসল করিলেন। এরপর মাসজিদে প্রবেশ করে বলিলেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ, [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তার বান্দা ও রসূল। হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর শপথ! পৃথিবীতে আমার নিকট আপনার চেহারার চেয়ে খারাপ চেহারা আর ছিল না। আর এখন সকল মানুষের চেহারা থেকে আপনার চেহারাই আমার নিকট অধিক প্রিয়। আল্লাহর শপথ! আপনার ধর্ম থেকে অধিক খারাপ ধর্ম আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার ধর্মই আমার নিকট সকল ধর্ম থেকে অধিক প্রিয়। আল্লাহর কসম! আপনার জনপদ থেকে অধিক নিকৃষ্ট জনপদ আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার জনপদই আমার নিকট সকল জনপদের চেয়ে অধিক প্রিয়। আপনার অশ্বারোহী সৈনিকরা আমাকে ধরে নিয়ে এসেছে। অথচ আমি তখন উমরাহ করার ইচ্ছা করেছিলাম। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে সুসংবাদ দিলেন এবং উমরাহ করার নির্দেশ দিলেন। এরপর যখন তিনি মাক্কায় ফিরে এলেন, তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলিল, তুমি কি ধর্মান্তরিত হয়েছ? তখন তিনি বলিলেন, না। বরং আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে ইসলাম গ্রহন করেছি। আল্লাহর কসম! ইয়ামামা ত্থেকে একটি গমের দানাও তোমাদের কাছে পৌঁছাবে না। যতক্ষন না রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাতে সম্মতি দেন।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৩৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৪৩৯ ]

৪৪৮২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদল অশ্বারোহী সৈনিক প্রেরণ করিলেন নাজদ প্রদেশের দিকে। তারা এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে এলো, যার নাম ছিল সুমামাহ ইবনি উসাল আল-হানাফী। তিনি ছিলেন ইয়ামামাবাসীদের নেতা। এরপর তিনি লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] –এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, সে বলেছে , যদি আপনি আমাকে হত্যা করনে, তবে খুনের উপযুক্ত ব্যক্তিকেই হত্যা করবেন।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৪৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৪৪০]


Posted

in

by

Comments

One response to “যুদ্ধবন্দী দেরকে আটক করা , গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ”

Leave a Reply