যাদু টোনা মুরতাদ – মুসলমানকে হত্যা করার অবৈধতা

যাদু টোনা মুরতাদ – মুসলমানকে হত্যা করার অবৈধতা

যাদু টোনা মুরতাদ – মুসলমানকে হত্যা করার অবৈধতা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৩৮, হত্যা অবৈধ হওয়া, হাদীস (৪০৫৭-৪১৩২)

১.পরিছেদঃ মুরতাদ সম্পর্কে বিধান
২.পরিছেদঃ মুরতাদ -এর তাওবা
৩.পরিছেদঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে মন্দ বলার শাস্তি
৪.পরিছেদঃ এই হাদীস সম্পর্কে আমাশ থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে শাব্দিক পার্থক্য
৫.পরিছেদঃ যাদু প্রসঙ্গ
৬.পরিছেদঃ যাদুকর সম্পর্কে হুকুম
৭.পরিছেদঃ কিতাবী যাদুকরদের বর্ণনা
৮.পরিছেদঃ কেউ মাল ছিনিয়ে নিতে চাইলে কি করিবে
৯.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি স্বীয় সম্পদ রক্ষার্থে মারা যায়
১০.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি পরিবার-পরিজনের রক্ষার্থে যুদ্ধ করে
১১.পরিছেদঃ যে ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করে
১২.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি তলোয়ার খাপমুক্ত করে, তারপর মানুষের মধ্যে তা চালনা করে
১৩.পরিছেদঃ মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করা
১৪.পরিছেদঃ যে বিভ্রান্তির পতাকাতলে যুদ্ধ করে তার সম্পর্কে কঠোর বাণী
১৫.পরিছেদঃ মুসলমানকে হত্যা করার অবৈধতা

১.পরিছেদঃ মুরতাদ সম্পর্কে বিধান

৪০৫৭. উসমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে বলিতে শুনেছিঃ তিন কারণ ব্যতীত কোন মুসলিমকে হত্যা করা বৈধ নয়ঃ [১] যে ব্যক্তি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ব্যভিচার করে, তাকে রজম করা হইবে; [২] যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অন্যকে হত্যা করে, তার কিসাস নেয়া হইবে; [৩] যে ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়, তাকে হত্যা করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৫৮. উসমান ইবনি আফফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে বলিতে শুনেছিঃ তিনটি কারণ ব্যতীত কোন মুসলমানের রক্ত বৈধ হয় নাঃ যদি সে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, বা যদি কোন লোককে হত্যা করে তবে তাকে হত্যা করা হইবে, অথবা যদি কেউ ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হইয়া যায়, তখন তাকে হত্যা করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৫৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে দ্বীন [ইসলাম] পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬০. ইকরিমা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

কিছু লোক ইসলাম থেকে মুরতাদ হইয়া যায়, তখন আলী [রাঃআঃ] তাহাদের আগুনে জ্বালিয়ে দেন। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ যদি আমি তাহাঁর স্থলে হতাম, তবে তাহাদেরকে কখনও জ্বালাতাম না। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কাউকে আল্লাহ তাআলার আযাব দ্বারা আযাব দিও না। আমি হলে তাহাদেরকে হত্যা করতাম। কারণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাহাঁর দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬৩. হাসান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০৬৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আলী [রাঃআঃ] –এর নিকট যুত পাহাড়ের কিছু লোক আনা হলো যারা মূর্তিপূজা করতো। তিনি তাহাদেরকে আগুনে জ্বালিয়ে দিলেন। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করে ফেল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬৬. আবু মূসা আশ্আরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাকে ইয়ামনে [সুবেদার করে] পাঠান। পরে তিনি মুআয ইবনি জাবাল [রাঃআঃ] -কে পাঠান। যখন তিনি সেখানে পৌঁছলেন, তখন বললেনঃ হে জনগণ! আমি তোমাদের নিকট রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর দূত হিসেবে এসেছি। আবু মূসা আশ্আরী [রাঃআঃ] তাহাঁর বসার জন্য একটি তাকিয়া স্থাপন করিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তিকে আনা হলো, যে প্রথমে ইয়াহূদী ছিল, পরে ইসলাম গ্রহণ করে পরে আবার কাফির হইয়া যায়। মুআয [রাঃআঃ] বললেনঃ এই ব্যক্তিকে আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী হত্যা না করা পর্যন্ত আমি বসবো না। তিনি তিনবার এরূপ বলেন। এরপর যখন তাকে হত্যা করা হয়, তখন তিনি বসেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬৭. মুসআব ইবনি সাদ তার পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ মক্কা বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সকলকে নিরাপত্তা দান করেন, কিন্তু চারজন পুরুষ এবং দুজন নারী ব্যতীত। তিনি তাহাদের সম্পর্কে বলেনঃ তাহাদেরকে যেখানেই পাবে হত্যা করিবে; যদিও তারা কাবার পর্দা ধরে থাকে। তারা হলো, ইকরিমা ইবনি আবু জাহল, আবদুল্লাহ ইবনি খাতাল, মিকয়াস ইবনি সুবাবা, আবদুল্লাহ ইবনি সাদ ইবনি আবু সারহ্। আবদুল্লাহ ইবনি খাতালকে কাবার গিলাফের সাথে লটকে থাকা অবস্থায় পাওয়া গেল এবং তাকে হত্যা করার জন্য দুই ব্যক্তি ছুটে গেল। একজন হলো সাঈদ ইবনি হুরায়স, অন্যজন আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাঃআঃ]। সাঈদ ছিলেন জওয়ান, তিনি আগে গিয়ে তাকে হত্যা করিলেন। আর মিকয়াস ইবনি সুবাবাকে লোকেরা বাজারে পেল এবং তারা তাকে হত্যা করলো। আর ইকরিমা ইবনি আবু জাহল নৌযানে সমুদ্র পার হইতে গেলে ঝড়ের কবলে পড়লো। জাহাজের লোক বললো, এখন তোমরা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাক। কেননা তোমরা যে মূর্তির পূজা কর তারা তোমাদের কোন সাহায্য করিতে পারবে না। ইকরিমা বললেনঃ আল্লাহর কসম! যদি সমুদ্রে তিনি ব্যতীত আমাকে আর কেউ রক্ষা করিতে না পারেন; তবে স্থলভাগেও তিনি ছাড়া আমাকে কেউ রক্ষা করিতে পারবেনা। আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ওয়াদা করছি, যদি আপনি আমাকে এই মুসীবত হইতে নাজাত দেন তবে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হবো এবং আমি তাহাঁর নিকট বায়আত গ্রহণ করবো। আমার ধারণা, তিনি আমায় ক্ষমা করবেন এবং রহম করবেন। পরে তিনি এসে মুসলমান হইয়া যান। আবদুল্লাহ ইবনি আবু সারহ্ উসমান [রাঃআঃ] -এর নিকট গিয়ে লুকিয়ে থাকলেন। যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকদের বায়আত -এর জন্য আহ্বান করিলেন, তখন উসমান [রাঃআঃ] তাকে নিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট হাযির করে দিলেন। তিনি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আবদুল্লাহর বায়আত গ্রহণ করুন। তিনি মাথা উঠিয়ে তিনবার আবদুল্লাহর প্রতি দৃষ্টি করিলেন। তিনবারের পর তিনি তার বায়আত গ্রহণ করিলেন। এরপর তিনি সাহাবায়ে কিরামের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কোন বুদ্ধিমান লোক কি ছিল না যে, যখন আমি তার বায়আত গ্রহণ করছিলাম না, তখন এসে তাকে হত্যা করতো? সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনার মনের কথা আমরা কি করে জানবো? আপনি চক্ষু দ্বারা কেন ইশারা করিলেন না? তিনি বললেনঃ [বাহ্যত চুপ থেকে] চোখে ইঙ্গিত করা নাবীর পক্ষে শোভন নয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

২.পরিছেদঃ মুরতাদ -এর তাওবা

৪০৬৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক আনসারী ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হইয়া গেল এবং মুশরিকদের সাথে মিলিত হলো। পরে সে লজ্জিত হইয়া নিজের কওমকে বলে পাঠালোঃ তোমরা নাবী [সাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা কর, আমার কি তাওবা করার সুযোগ আছে? তার কওমের লোক নাবী [সাঃআঃ] -কে বললেনঃ অমুক ব্যক্তি লজ্জিত হইয়াছে, এখন কি তার তাওবা কবূল হইয়াছে? তখন এই আয়াত নাযিল হয়ঃ {আরবি} অর্থঃ ঈমান আনার পর ও রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্যদানের পর যারা কুফ্‌রী করে আল্লাহ তাহাদের কিভাবে হিদায়াত করবেন? …… আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [৩ঃ ৮৬-৮৯]

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৬৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

সূরা নাহলের আয়াতঃ [আরবি] {যারা ঈমান আনার পর কুফরী করে, তবে যাকে বাধ্য করা হয় সে ব্যতীত……. তাহাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি} মানসুখ হইয়া গেছে।১ এদের মধ্যের কিছু লোককে বাদ দেওয়া হইয়াছে, যাদের কথা পরের আয়াতে বর্ণনা করা হইয়াছে। ইরশাদ হইয়াছেঃ [আরবি] {যারা নির্যাতিত হওয়ার পর হিজরত করে, পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে, তোমার প্রতিপালক এসবের পর তাহাদের প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু}২ এই আয়াতটি আবদুল্লাহ্‌ ইবনি সাদ ইবনি আবু সারহ -এর ব্যাপারে নাযিল হয়, যিনি মিশরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর মুহরী ছিলেন। পরে তিনি শয়তানের প্ররোচনায় কাফিরদের সাথে মিলিত হন। মক্কা বিজিত হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে হত্যা করার আদেশ দেন। এ সময় উসমান [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট তার নিরাপত্তা প্রার্থনা করলে, তিনি তাকে নিরাপত্তা দান করেন।

{১} ১৬ঃ ১০৬ আয়াত।

{২} ১৬ঃ ১১০ আয়াত

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩.পরিছেদঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে মন্দ বলার শাস্তি

৪০৭০. উসমান শাহ্‌হাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এক অন্ধ লোকের চালক ছিলাম। একদা তাকে নিয়ে ইকরিমার কাছে গেলাম। তিনি আমাদের কাছে বর্ণনা করিলেন যে, হযরত ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সময় এক অন্ধ লোক ছিল। তার এক দাসী ছিল, যাহার গর্ভে তার দুই ছেলে জন্মে। সে দাসী সর্বদাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কথা উল্লেখ করে তাঁকে মন্দ বলতো। অন্ধ ব্যক্তিটি তাকে এজন্য তিরস্কার করতো, কিন্তু সে তাতে কর্ণপাত করতো না। তাকে নিষেধ করতো, কিন্তু তবুও বিরত হত না। অন্ধ লোকটি বলেনঃ একরাত্রে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কথা উল্লেখ করলে সে তাহাঁর নিন্দা করিতে শুরু করিল। আমার তা সহ্য না হওয়ায় আমি একটি হাতিয়ার নিয়ে তার পেটে বিদ্ধ করলাম। তাতে সে মারা গেল। ভোরে লোকে তাকে মৃতাবস্থায় দেখে ব্যাপারটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খিদমতে জানাল। তিনি সকল লোককে একত্র করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে বলছি, যে এমন কাজ করেছে সে আসুক। এ কথা শুনে ঐ অন্ধ ব্যক্তি ভয়ে উঠে এসে হাযির হলেন এবং বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি এই কাজ করেছি। সে আমার বাঁদী ছিল, আমার অত্যন্ত স্নেহশীলা ছিল, সঙ্গিনী ছিল। তার গর্ভের আমার দুটি ছেলে রয়েছে, যারা মুক্তাসদৃশ। কিন্তু সে প্রায় আপনাকে মন্দ বলতো, গালি দিতো। আমি নিষেধ করলেও সে কর্ণপাত করতো না। তিরস্কার করলেও সে নিবৃত হতো না। অবশেষে গত রাতে আমি আপনার উল্লেখ করলে সে আপনাকে মন্দ বলিতে আরম্ভ করিল। আমি একটি অস্ত্র উঠিয়ে তার পেটে রেখে চেপে ধরি, তাতে সে মারা যায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক, ঐ দাসীর রক্তের কোন বিনিময় নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস.

৪০৭১. আবু বারযা আস্‌লামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবু বকর সিদ্দীক [রাঃআঃ] -কে মন্দ বললে, আমি বললামঃ আমি কি তাকে হত্যা করবো? তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেনঃ এই মর্যাদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ব্যতীত আর কারো নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪.পরিছেদঃ এই হাদীস সম্পর্কে আমাশ থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে শাব্দিক পার্থক্য

৪০৭২. আবু বারযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আবু বকর [রাঃআঃ] কারো উপর রাগান্বিত হলে, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! এ ব্যক্তি কে? তিনি বললেনঃ কেন? আমি বললামঃ আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেব, যদি আপনি আমাকে একাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি বললেনঃ যদি আমি ইচ্ছা করতাম, তবে তোমাকে আদেশ করতাম। আল্লাহর কসম! আমার কথার ভীষণতায় তার ক্রোধ দমিত হলো; পরে তিনি বললেনঃ মুহাম্মদ [সাঃআঃ] -এর পর কারো জন্য এই মর্যাদা নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৭৩.আবু বারযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি আবু বকর [রাঃআঃ] -এর নিকট দিয়ে গেলাম, সে সময় তিনি এক ব্যক্তির উপর রাগান্বিত ছিলেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! এ ব্যক্তি কে, যাহার উপর আপনি রাগান্বিত হইয়াছেন? তিনি বললেনঃ তুমি কেন তার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছো? আমি বললামঃ তার গর্দান উড়িয়ে দেব। আমার কথার ভীষণতায় তাহাঁর রাগ প্রশমিত হলো। তারপর তিনি বললেনঃ নাবী [সাঃআঃ] -এর পর কারো জন্য এর সুযোগ নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৭৪. আবু বারযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু বকর [রাঃআঃ] এক ব্যক্তির উপর রাগান্বিত হলেন, তখন আবু বারযা [রাঃআঃ] বললেনঃ যদি আপনি আমাকে আদেশ করেন, তবে অবশ্যই আমি তাকে হত্যা করবো। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পর কারো জন্য এ মর্যাদা নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৭৫. আবু বারযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু বকর [রাঃআঃ] এক ব্যক্তির উপর প্রচণ্ড রাগান্বিত হলে তাহাঁর চেহারার রং পরিবর্তন হইয়া যায়। তখন আমি বলিঃ হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! আল্লাহর কসম! আপনি যদি আমাকে আদেশ দেন, তবে আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেব। আমার একথায় যেন তাহাঁর উপর ঠান্ডা পানি ঢালা হলো এবং সে ব্যক্তির উপর থেকে তাহাঁর রাগ চলে গেল। আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বারযা! তোমার মাতা তোমার উপর ক্রন্দন করুক! বস্তুত এ মর্যাদা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর পর আর কারো জন্য নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৭৬. আবু বারযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবু বকর [রাঃআঃ] -এর নিকট গিয়ে দেখলাম তিনি এক ব্যক্তিকে তিরস্কার করছেন। আর ঐ লোকটিও তাহাঁর কথার উত্তর কঠোর ভাষায় দিচ্ছিল। আমি বললামঃ আমি কি ঐ ব্যক্তির গর্দান উড়িয়ে দেব না? এতে তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর পর এটা আর কারো জন্য বৈধ নয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৭৭. আবু বারযা আসলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

একদা আমরা আবু বকর [রাঃআঃ] -এর নিকট ছিলাম। এ সময় তিনি একজন মুসলমানের প্রতি অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হলেন। এ অবস্থা দেখে আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! আমি কি তার গর্দান উড়িয়ে দেব? আমার হত্যা করার কথার পর, তিনি এ কথা ছেড়ে অন্য কথা আরম্ভ করিলেন। আমরা সেখান হইতে ফিরে আসলে তিনি আমাকে ডেকে পাঠান এবং বলেনঃ হে আবু বারযা! তুমি কি বলেছিলে? বস্তুত আমি কি বলেছিলাম তা ভুলে গিয়েছিলাম। তাই বললাম, আপনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিন। তিনি বলিলেন, তোমার কি মনে পড়ছে না? আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! না। তিনি বললেনঃ যখন তুমি আমাকে এক ব্যক্তির উপর রাগান্বিত হইতে দেখেছিলে, তখন তুমি বলেছিলেঃ হে রাসূলের খলীফা! আমি কি ঐ ব্যক্তির গর্দান উড়িয়ে দেব কি না? তুমি কি ঐরূপ করিতে চাও? আমি বললামঃ নিশ্চয়ই। এখনও যদি আপনি আদেশ করেন, তবে আমি তাকে হত্যা করবো। তিনি বললেনঃ রাসূল্লুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] -এর পর এ মর্যাদা আর কারো জন্য নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৫.পরিছেদঃ যাদু প্রসঙ্গ

৪০৭৮. সফ্‌ওয়ান ইবনি আসলাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী নিজ সাথীকে বললোঃ চল এই নাবীর কাছে যাই। সাথী ইয়াহূদী বললোঃ তাকে নাবী বলো না, যদি সে তোমার কথা শুনতে পায়, তবে খুশিতে তার চার চোখ হইয়া যাবে, [অর্থাৎ খুশিতে আত্মহারা হইবে]। এরপর তারা উভয়ে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে তাঁকে নয়টি নিদর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো, যা আল্লাহ তাআলা মূসা [আঃ] -কে দান করেছিলেন। তিনি তাহাদেরকে বললেনঃ আল্লাহর সাথে কারো শরীক করো না, চুরি করো না, ব্যভিচার করো না, আর যে জীবন আল্লাহ তাআলা হারাম করিয়াছেন, তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করো না, আর অন্যায়ভাবে শাস্তি দেয়ার জন্য কাউকে হাকিমের কাছে নিও না, যাদু করো না, সুদ খাবে না, পবিত্রা নারীদেরকে ব্যভিচারের অপবাদ দেবে না, জিহাদের দিন পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিবে না। এই নয়টি আদেশ, আর একটি আদেশ তো তোমরা ইয়াহূদীদের সাথে সম্পর্কিত, তা এই যে, তোমরা শনিবারের ব্যাপারে সীমালংঘন করিবে না। এ কথা শুনে ঐ ইয়াহূদীদ্বয় তাহাঁর হস্ত ও পদদ্বয়ে চুমু খেল। আর তারা বললোঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি একজন নাবী। তিনি বললেনঃ তাহলে আমার অনুসরণে তোমাদের বাধা কোথায়? তারা বললোঃ দাঊদ [আঃ] দুআ করেছিলেন যে, তাহাঁর বংশে সর্বদা একজন নাবী হইবেন। তাই আমরা ভয় করছি যদি আমরা আপনার অনুসরণ করি, তাহলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে হত্যা করিবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৬.পরিছেদঃ যাদুকর সম্পর্কে হুকুম

৪০৭৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গিরা দিয়ে তাতে ফুঁক দেয়, সে যাদু করলো, আর যে যাদু করলো, সে মুশরিক হলো। আর যে ব্যক্তি গলায় কিছু ঝুলায়, তাকে সেই জিনিসের উপর ন্যস্ত করা হয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৭.পরিছেদঃ কিতাবী যাদুকরদের বর্ণনা

৪০৮০. যায়দ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহূদী রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে যাদু করেছিল, যে কারণে কয়েকদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। এরপর জিব্‌রাঈল [আঃ] তাহাঁর নিকট এসে বললেনঃ এক ইয়াহূদী আপনার উপর যাদু করেছে। গিরা দিয়ে তা অমুক কূপের মধ্যে রেখেছে। তিনি সেখানে লোক পাঠালে, তারা তা তুলে আনল। তখন নাবী [সাঃআঃ] এমনভাবে দাঁড়ালেন, যেন তাঁকে বন্ধনমুক্ত করা হইয়াছে। তিনি ঐ ইয়াহূদীর নিকট এ ব্যাপারে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করিলেন না, আর ঐ ইয়াহূদীও কখনও তাহাঁর চেহারার এর চিহ্ন দেখিতে পেল না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৮.পরিছেদঃ কেউ মাল ছিনিয়ে নিতে চাইলে কি করিবে

৪০৮১. কাবূস ইবনি আবুল মুখারিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা হইতে হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললো, যদি কেউ আমার মাল লুট করিতে আসে, তখন আমি কি করবো? তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আল্লাহর নামে উপদেশ দাও। সে ব্যক্তি বললো, যদি সে উপদেশ গ্রহণ না করে? তিনি বললেনঃ তবে তুমি তোমার অন্যান্য মুসলিম পড়শীর সাহায্য গ্রহণ কর। সে বললোঃ যদি ঐরূপ কোন মুসলিম প্রতিবেশী আমার না থাকে? তিনি বললেনঃ তবে তুমি শাসকের আশ্রয় গ্রহণ করিবে। সে বললোঃ যদি শাসকও দূরে থাকে? তিনি বললেনঃ তবে তুমি তোমার মাল রক্ষার্থে জিহাদ করিবে; যাতে তুমি শহীদ হইয়া যাও কিংবা তোমার সম্পদ রক্ষায় সক্ষম হও।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৪০৮২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! যদি কোন ব্যক্তি জোরপূর্বক আমার মাল ছিনিয়ে নিতে আসে, তখন আমি কি করবো? তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আল্লাহর কসম দেবে। সে বললোঃ যদি সে তা না মানে? তিনি বললেনঃ আবারও আল্লাহর কসম দেবে। সে বললো, যদি তাও না মানে? তিনি বলিলেন, আবারও আল্লাহর কসম দেবে। সে বললো, যদি তারপরও না মানে? তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি তার সাথে যুদ্ধ করিবে। যদি তুমি নিহত হও, তবে তুমি বেহেশতে যাবে, আর যদি সে মারা যায়, তবে সে দোযখে যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৮৩. আবু হুরাইরা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –এর নিকট এসে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! যদি কোন ব্যক্তি বলপূর্বক আমার মাল ছিনিয়ে নিতে আসে, তখন আমি কি করবো? তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আল্লাহর কসম দিবে। সে বললোঃ যদি সে তা না মানে? তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আল্লাহর কসম দিবে। সে বললোঃ যদি সে না মানে? তিনি বলিলেন, তুমি তাকে আল্লাহর কসম দেবে। সে বললো, যদি সে তা না মানে? তিনি বললেনঃ তখন তুমি তার সাথে যুদ্ধ করিবে। যদি তুমি নিহত হও, তবে তুমি জান্নাতে যাবে, আর যদি ঐ ব্যক্তি মারা যায়, তবে সে জাহান্নামে যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৯.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি স্বীয় সম্পদ রক্ষার্থে মারা যায়

৪০৮৪. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে নিহত হয়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৮৫. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে নিহত হয়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে অন্যায়ভাবে নিহত হয়, তার জন্য জান্নাত রয়েছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মাল-সম্পদ রক্ষার্থে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৮৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যাহার মাল কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিতে চায়, আর সে যুদ্ধ করে নিহত হয়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মাল রক্ষার্থে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৯০. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৯১. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজ মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৯২. বুরায়দা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মাল রক্ষার্থে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০৯৩. আবু জাফর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যুলুমের কারণে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১০.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি পরিবার-পরিজনের রক্ষার্থে যুদ্ধ করে

৪০৯৪. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ। এমনিভাবে যে ব্যক্তি নিজের প্রাণ রক্ষার্থে যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ এবং যে নিজ পরিবারের লোকের জন্য যুদ্ধ করে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১১.পরিছেদঃ যে ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করে

৪০৯৫. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজ মাল রক্ষার্থে যুদ্ধ করে মারা যায় সে শহীদ। আর যে ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের রক্ষা করিতে গিয়ে মারা যায়, সেও শহীদ, আর যে ব্যক্তি তার দ্বীন রক্ষা করার জন্য নিহত হয়, সেও শহীদ। এবং যে নিজ প্রাণ রক্ষা করিতে গিয়ে নিহত হয়, সেও শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৯৬. আবু জাফর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি সুআয়দ ইবনি মুকাররিন -এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম, সে সময় তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যুলুম -এর প্রতিরোধ করিতে গিয়ে মারা যায়, সে শহীদ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১২.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি তলোয়ার খাপমুক্ত করে, তারপর মানুষের মধ্যে তা চালনা করে

৪০৯৭. ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তলোয়ার খাপমুক্ত করে, তারপর লোকের উপর তা চালায়, [সে নিহত হলে] তার রক্ত বৃথা যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  শায

৪০৯৮. ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হইয়াছে। কিন্তু তিনি এটাকে মারুফূ রূপে বর্ণনা করেন নি।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  নির্ণীত নয়

৪০৯৯. ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি অস্ত্র উঠিয়ে চালাবে, তার রক্ত বৃথা যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১০০. আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে আমাদের উপর অস্ত্র চালায়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১০১. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট ইয়ামন থেকে কিছু মাটি মিশ্রিত সোনা পাঠান, তিনি তা আকরা ইবনি হাবিস হানযালী মুজাশিঈ, উয়ায়না ইবনি বাদর আল-ফাযারী, আলকামা ইবনি উলায়া আরিমী কিলাবী ও যায়দ খায়ল তায়ী নাবহানীর মধ্যে বন্টন করে দেন। এতে কুরায়শ এবং আনসারীগণ ক্রোধান্বিত হল এবং তারা বললোঃ তিনি নজদের নেতাহাদের দেন, আমাদের দেন না। তিনি বলেনঃ [যেহেতু তারা নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাই তাহাদেরকে দিয়ে] তাহাদের মনোরঞ্জন করছি মাত্র [আর তোমরা তো পূর্বে মুসলমান হইয়াছো]। এমন সময় এক ব্যক্তি এগিয়ে আসল, যাহার চক্ষু কোটরাগত, গন্ডদ্বয় ফোলা, ঘন দাড়িবিশিষ্ট ও মাথা মুড়ানো ছিল। সে বললোঃ হে মুহাম্মদ [সাঃআঃ]! আল্লাহকে ভয় কর। তিনি বললেনঃ যদি আমিই আল্লাহর নাফরমানী করি, তবে আর কে তাহাঁর আনুগত্য করিবে? আল্লাহ্ তাআলা আমাকে জগতবাসীর মধ্যে আমীনরূপে সৃষ্টি করিয়াছেন, আর তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না! এমন সময় লোকদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইলে তিনি নিষেধ করিলেন। যখন সে ব্যক্তি চলে গেল, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তার বংশে এমন কিছু লোক জন্ম নিবে, যারা কুরআন তিলাওয়াত করিবে, কিন্তু কুরআন তাহাদের গলার নীচে নামবে না, তারা ধর্ম থেকে এভাবে বের হইয়া যাবে, যেমন তীর জন্তুর শরীর ভেদ করে বের হইয়া যায়। তারা মুসলমানদের হত্যা করিবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দেবে। আমি যদি তাহাদেরকে পাই, তবে তাহাদেরকে এমনভাবে হত্যা করবো, যেমন আদ বংশের লোকদেরকে হত্যা করা হইয়াছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১০২. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ শেষ যুগে এমন কিছু লোক জন্ম নেবে যারা হইবে অল্পবয়স্ক এবং জ্ঞানহীন। প্রকাশ্যে তারা ভাল কথা বলবে, কিন্তু ঈমান তাহাদের গলার নীচে যাবে না। তারা ধর্ম হইতে এমনভাবে বের হইয়া যাবে, যেমন তীর লক্ষ্যস্থল ভেদ করে যায়। তোমরা তাহাদেরকে দেখিতে পেলে হত্যা করিবে। কেননা তাহাদের হত্যা করা হলে কিয়ামতের দিন তাহাদের হত্যাকারীদের জন্য প্রতিদান থাকিবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১০৩. বসরী হাররানী শারীক ইবনি শিহাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কোন সাহাবীর সাথে মিলিত হবো এবং খারিজীদের ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করবো। ঘটনাক্রমে ঈদের দিন আবু বারযা আসলামী [রাঃআঃ] -কে তাহাঁর কয়েকজন সাথীর সাথে দেখলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি খারিজীদের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট কিছু শুনেছেন? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমি নিজের কানে শুনিয়াছি, চক্ষে দেখেছি। একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট কিছু মাল আসে। তা তাহাঁর ডানদিকের এবং বামদিকের লোকদের মধ্যে বন্টন করে দেন এবং যারা তাহাঁর পিছনে ছিল, তাহাদেরকে কিছুই দিলেন না। তখন তাহাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললোঃ হে মুহাম্মদ [সাঃআঃ]! আপনি ইনসাফের সাথে বন্টন করেন নি। সে ছিল কাল রংবিশিষ্ট, মুড়ানো মাথা এবং সাদা কাপড় পরিহিত। একথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অতিশয় রাগান্বিত হলেন এবং বললেনঃ আল্লাহর শপথ! তোমরা কাউকে আমার পরে আমার থেকে অধিক ইনসাফকারী দেখিতে পাবে না। পরে তিনি বললেনঃ শেষ যুগে এমন কতক লোকের আবির্ভাব হইবে, মনে হয় এই ব্যক্তি তাহাদের একজন। যারা কুরআন তিলাওয়াত করিবে, কিন্তু কুরআন তাহাদের গলার নিচে ঢুকবে না। তারা ইসলাম হইতে এমনভাবে বের হইয়া যাবে, যেমন তীর শিকার হইতে বের হইয়া যায়। তাহাদের চিহ্ন হলো তাহাদের মাথা মুড়ানো থাকিবে। তারা এভাবে প্রকাশ পেতে থাকিবে এবং তাহাদের শেষ দলটি দজ্জালের সাথে বের হইবে। যদি তোমরা তাহাদের পাও, তবে তাহাদের হত্যা করিবে। কেননা তারা সৃষ্টির মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

১৩.পরিছেদঃ মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করা

১০৪. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করা কুফরী এবং তাহাদের গালি দেয়া পাপ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১০৫. আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১০৬. আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১০৭. আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১০৮. আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১০৯. শুবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি হাম্মাদকে বললামঃ আমি মনসূর, সুলায়মান এবং যুবায়দ হইতে শুনিয়াছি। তারা আবু ওয়ায়ল সূত্রে আব্দুল্লাহ্ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী। এদের মধ্যে আপনি কাকে সন্দেহ করেন? মনসুরকে সন্দেহ করেন? যুবায়দকে সন্দেহ করেন? না সুলায়মানকে? তিনি বললেনঃ না, আমি আবু ওয়ায়লকে সন্দেহ করি।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১১০. আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী। [যুবায়দ বলেন] আমি আবু ওয়ায়লকে বললামঃ আপনি কি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১১১. মানসুর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবু ওয়ায়ল থেকে এবং তিনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] থেকে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১১২. আবু ওয়ায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া পাপ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১১৩. শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিনদের সাথে যুদ্ধ করা কুফরী এবং তাকে গালি দেয়া পাপ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

১৪.পরিছেদঃ যে বিভ্রান্তির পতাকাতলে যুদ্ধ করে তার সম্পর্কে কঠোর বাণী

৪১১৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নেতার আনুগত্য হইতে বের হইয়া যায় এবং মুসলমানদের দল ত্যাগ করে, আর এই অবস্থায় মারা যায়, তার মৃত্যু হইবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু। যে ব্যক্তি আমার উম্মতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত হইয়া ভাল-মন্দ নির্বিচারে হত্যা করে এবং মুসলমানকেও ছাড়ে না; আর যাহার সাথে যে অঙ্গীকারবদ্ধ, তার অঙ্গীকার রক্ষা করে না, তার সাথে আমার কোন সম্বন্ধ থাকিবে না। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্টতা এবং অজ্ঞতার পতাকাতলে যুদ্ধ করে, আর লোকদেরকে জাত্যাভিমানের দিকে আহবান করে এবং তার ক্রোধ জাত্যাভিমানের জন্যই হয়, পরে সে নিহত হয়; তার মৃত্যু জাহিলিয়াতের মৃত্যু হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১১৫. জুনদুব ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পথভ্রষ্টতার পতাকার নিচে যুদ্ধ করে বা নিজের কওমের স্বার্থে যুদ্ধ করে, আর এর জন্যই তার ক্রোধ জন্মে; তার মৃত্যু হইবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১৫.পরিছেদঃ মুসলমানকে হত্যা করার অবৈধতা

৪১১৬. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন একজন মুসলমান অন্য মুসলমানের উপর হাতিয়ার উত্তোলন করে, তারা উভয়েই জাহান্নামের প্রান্তে পৌঁছে যায়। এরপর যদি হত্যা করে, তবে তারা উভয়েই দোযখে পতিত হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১১৭. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন দুই মুসলমান ব্যক্তি একে অন্যের উপর অস্ত্র উঠায়, তারা উভয়ে দোযখের নিকট পৌঁছে যায়। আর যখন তারা একে অন্যকে হত্যা করে, তখন তারা উভয়ে দোযখে যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মাওকুফ

৪১১৮. আবু মুসা [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন দুই মুসলমান তরবারি নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং একে অন্যকে হত্যা করে, তারা উভয়ে দোযখে যাবে। কেউ বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! হত্যাকারী তো দোযখে যাবে, কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপার কি? তিনি বললেনঃ সে তার সাথীকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  নির্ণীত নয়

৪১১৯. আবু মুসা আশআরী [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যখন দুই মুসলমান তলোয়ার নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং একে অন্যকে হত্যা করে, তারা উভয়ে দোযখে প্রবেশ করিবে। অতঃপর পূর্বের অনুরূপ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২০. আবু বাক্‌রা [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন দুই মুসলমান তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং তাহাদের প্রত্যেকেই অন্যকে হত্যা করার ইচ্ছা করে, তারা উভয়ে দোযখে যাবে। কেউ বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! হত্যাকারী তো যাবে, কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন যাবে? তিনি বললেনঃ সেও তার সাথীকে হত্যা করার জন্য লালায়িত ছিল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২১. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন দুই মুসলমান তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং একজন অন্যজনকে হত্যা করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি জাহান্নামী হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২২. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ যখন দুই মুসলমান তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং একে অন্যকে হত্যা করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামী হয়। তারা জিজ্ঞেস করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! হত্যাকারীর ক্ষেত্রে তো এটা স্পষ্ট, কিন্তু নিহইতের ব্যাপারটা কী? তিনি বললেনঃ সেও তার সঙ্গীকে হত্যা করিতে চেয়েছিল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৩. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি দুই মুসলমান তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং একজন অন্যজনকে হত্যা করে, তাহলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৪. আবু মূসা আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন দুইজন মুসলমান তলোয়ার নিয়ে মুখোমুখি হয় এবং একে অন্যকে হত্যা করে, তখন উভয়েই দোযখী। এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! হত্যাকারীর অবস্থা তো এই, কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন দোযখে যাবে? তিনি বললেনঃ সেও তার সাথীকে হত্যা করার ইচ্ছা করেছিল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার পরে তোমরা কাফির হইয়া যেও না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কাফির হইয়া যেও না যে, একে অন্যের গলা কাটবে। আর কোন ব্যক্তিকে তার পিতা বা ভাই -এর অপরাধে অভিযুক্ত করা যাবে না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৭. আবদুল্লাহ্‌ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কাফির হইয়া যেও না যে, একে অন্যের গলা কাটবে। আর কোন ব্যক্তিকে তার পিতা বা ভাই -এর অপরাধে পাকড়াও করা যাবে না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৮. মাসরূক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদেরকে যেন এমন না পাই যে, আমার পরে কাফির হইয়া গিয়ে একে অন্যের গলা কাটতে আরম্ভ করছ আর কোন ব্যক্তিকে তার পিতা ও ভাইয়ের অপরাধে পাকড়াও করা যাবে না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১২৯. মাসরূক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কাফির হইয়া যেও না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১৩০. আবু বাকরা [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ তোমরা আমার পরে পথভ্রষ্ট হয়ো না যে, একে অপরের গর্দান উড়াবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১৩১. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বিদায় হজ্জের দিন লোকদেরকে চুপ করান। এরপর তিনি বলেনঃ তোমরা আমার পরে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াতে থাকিবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪১৩২. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ্‌ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ লোকদেরকে চুপ করাও, এরপর বললেনঃ আমি যেন তোমাদেরকে আমার পরে কাফির হইয়া যেতে না দেখি যে, তোমরা একে অন্যের গর্দান উড়াতে উদ্যত হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply