যবেহ সম্পর্কিত অধ্যায় । বিসমিল্লাহ বলা
যবেহ সম্পর্কিত অধ্যায় । বিসমিল্লাহ বলা , হাদীস=৯ টি ( ১০৩৯-১০৪৭ পর্যন্ত )>> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ২৪ঃ যবেহ সম্পর্কিত অধ্যায়
পরিচ্ছেদ ১ -যবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা
পরিচ্ছেদ ২ – প্রয়োজনবশত যে প্রকারের যবেহ বৈধ
পরিচ্ছেদ ৩ – যে ধরনের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া মাকরূহ
পরিচ্ছেদ : ৪ -যবেহকৃত পশুর উদরস্থ বাচ্চার যবেহ
পরিচ্ছেদ ১ -যবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা
১০৩২ হিশাম ইবনি উরওয়াহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : গ্রাম হইতে লোকেরা আমাদের জন্য গোশত নিয়ে আসে, জানি না এতে যবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। [উহা আমরা খেতে পারি কি?] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন : নিজেরা বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে নিও। [সহীহ, ঈমাম বুখারি আয়িশা [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন {বুখারি ৭৩৯৮} তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]
মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : এই জবাবটি ইসলামের প্রথম যুগের। {১}
{১} হাদীসটির মর্ম হল, কোন মুসলমান যদি গোশত নিয়ে আসে তবে অনর্থক সন্দেহ করো না। বরং মনের দ্বিধা দূর করার জন্য নিজেই বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে নাও। এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
১০৩৩ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস ইবনি আবী রবীয়া মাখযুমী [রাদি.] স্বীয় গোলামকে একটি পশু যবেহ করিতে নির্দেশ দেন। যবেহ করার সময় আবদুল্লাহ তাকে বলিলেন : বিসমিল্লাহ বলে নাও। সে বলল : হ্যাঁ, বলেছি। আবদুল্লাহ পুনরায় বলিলেন : কম বখত বিসমিল্লাহ বলে নাও। সে বলল : বলেছি। আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস ইবনি আবী রবীয়া [রাদি.] তখন বলিলেন : আল্লাহর কসম, এই গোশত আমি খাব না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ২ – প্রয়োজনবশত যে প্রকারের যবেহ বৈধ
১০৩৪ আতা ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
বনূ হারিসা গোত্রের আনসারী জনৈক ব্যক্তি উহুদের নিকট তার দুধালো উষ্ট্রী চরাচ্ছিল। উষ্ট্রীটি মৃত্যুমুখী হলে তিনি একটি ধারাল লাকড়ি দ্বারা উষ্ট্রীটি যবেহ করেন। অতঃপর এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন : এতে কোন দোষ নেই। তুমি তা খেতে পার। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
১০৩৫ মুআয ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
কাব ইবনি মালিক [রাদি.]-এর দাসী মদীনার অদূরবর্তী সলা নামক স্থানে বকরী চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি বকরী মারা যাচ্ছিল দেখে সে একটি ধারাল পাথর দ্বারা তাকে যবেহ করে ফেলে। পরে এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলিলেন : এতে কোন দোষ নেই। তুমি তা খেতে পার।
[সহীহ, বুখারি ৫৫০৫] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০৩৬ আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- আরবীয় খ্রিস্টান কর্তৃক যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া যায়েয কি না? তিনি বলেন : হ্যাঁ, কোন অসুবিধা নাই। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করেন, وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ “তাদের সাথে যে ব্যক্তি বন্ধুত্ব করিবে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হইবে”। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
{১} এটা দ্বারা ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর এই কথা বোঝান উদ্দেশ্য ছিল যে, কাফেরদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া যায়েয হলেও তাদেরকে নিজেদের পশু যবেহ করিতে দেয়া উচিত নয় কারণ উহা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার শামিল।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১০৩৭ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ
তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিতেন : যা ধমনীসমূহ কেটে দেয় তা হইতে আহার করিতে পার। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাদি.] বলিতেন : যে জিনিসের সাহায্যে যবেহ করা হয় তা যদি ধমনীসমূহ কেটে দেয় তবে প্রয়োজনের সময় উহা আহার করা যায়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ৩ – যে ধরনের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া মাকরূহ
১০৩৮ আকীল ইবনি আবু তালীব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একটি বকরী যবেহ করার পর উহার অংশ বিশেষ [পা] নড়াচড়া করেছিল, উহা খাওয়া কি জায়েয হইবে? আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিলেন : খেতে পার। পরে আবু মুররা যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.]-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন : মৃত পশুও অনেক সময় নড়ে উঠতে পারে এবং তা খেতে তিনি নিষেধ করে দিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : কোন একটি বকরী উপর হইতে পড়ে তার পা ভেঙ্গে যায়। তখন মালিক তাকে যবহ করে ফেলে। যবহ করার সময় রক্ত বের হয়েছিল বটে, তবে তা নড়াচড়া করেনি। এর গোশত খাওয়া কি জায়েয হইবে? মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন : যবহ করার সময় যদি রক্ত প্রবাহিত হয় এবং চক্ষু নড়ে তবে উহার গোশত খেতে পার।
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ : ৪ -যবেহকৃত পশুর উদরস্থ বাচ্চার যবেহ
১০৩৯ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উটনী নাহর করা হলে উহার উদরস্থ বাচ্চাটিরও যবেহ হয়েছে বলে গণ্য হইবে। শর্ত হল, বাচ্চার সমস্ত অঙ্গ পূর্ণ হইতে হইবে এবং উহার লোম গজাতে হইবে। আর বাচ্চাটি যদি জীবিত বের হয় তবে রক্ত বের করে দেওয়ার উদ্দেশ্য আলাদাভাবে উহা যবেহ করিতে হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
১০৪০ সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উদরস্থ বাচ্চাটি যদি পূর্ণাঙ্গ হয়ে থাকে এবং উহার লোম গজিয়ে থাকে তবে মায়ের যবেহ বাচ্চার যবেহ বলে গণ্য হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]
এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
Leave a Reply