মেযবানের সন্তুষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত থাকলে অন্যকে সাথে নিয়ে ..

মেযবানের সন্তুষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত থাকলে অন্যকে সাথে নিয়ে

মেযবানের সন্তুষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত থাকলে অন্যকে সাথে নিয়ে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

২০. অধ্যায়ঃ মেযবানের সন্তুষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত থাকলে অন্যকে সাথে নিয়ে তার গৃহে উপস্থিত হওয়া জায়িয, আর একত্র থেকে খাওয়া মুস্তাহাব।

৫২০৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিনে কিংবা রাতে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তার বাড়ী থেকে] বের হয়ে আবু বকর [রাদি.] ও উমর [রাদি.] –কে দর্শন করিলেন। তিনি প্রশ্ন করিলেন, এ সময় কিসে তোমাদের গৃহ হইতে বের করেছে? তাঁরা বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! উপবাসের যন্ত্রনায়। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন,যে মহান আল্লাহ্‌র হাতে আমার জীবন, তাহাঁর কসম, যা তোমাদের বের করে এনেছে, আমাকেও তা-ই বের করে এনেছে, চলো। তাঁরা উভয়ে তাহাঁর সাথে চলতে লাগলেন। তার পর তিনি এক আনসারীর গৃহে এলেন। তখন তিনি বাড়ীতে ছিলেন না। তাহাঁর সধর্মিণী তাঁকে {রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]} দেখে বলিল, মারহাবা ওয়া আহলান [আরবী]। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে প্রশ্ন করিলেন, অমুক কোথায়? স্ত্রীলোকটি বলিল, তিনি আমাদের জন্য মিষ্ট পানি আনতে গেছেন। তখনই আনসারী ব্যক্তিটি উপস্থিত হয়ে রাসূলুল্লহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর দু সাথীকে দেখিতে পেয়ে বলিলেন, আল্লাহ্‌র প্রশংসা, আজ মেহমানের দিক হইতে আমার থেকে সৌভাগ্যবান আর কেউ নেই। তারপর সে গিয়ে একটি খেজুরের ছড়া নিয়ে আসলেন। তাতে কাচা, পাকা ও শুকনা খেজুর ছিল। তিনি বলিলেন, আপনারা এ ছড়া থেকে খান। এরপর তিনি ছুরি নিলেন [ছাগল জবেহ করার জন্য] তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন, সাবধান, দুধওয়ালা বকরী জবেহ করিবে না। অতঃপর তাদের জন্য [বকরী] জবেহ করলে তাঁরা বকরীর গোশত ও কাঁদির খেজুর খেলেন এবং [মিঠা] পানি পান করিলেন। তাঁরা সকলে ক্ষুদা মিটালেন ও পরিতৃপ্ত হলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন আবু বক্‌র ও উমর [রাদি.] –কে কেন্দ্র করে বললেনঃ যে সত্তার হাতে আমার জীবন, তাহাঁর কসম! কিয়ামতের দিন এ নিয়ামত সম্বন্ধে তোমরা জিজ্ঞাসিত হইবে। ক্ষুধা তোমাদের বাড়ি হইতে বের করে এনেছে অথচ তোমরা এ নিয়ামত লাভ না করে ফেরত যাওনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৫২]

৫২০৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার আবু বাকর [রাদি.] বসে ছিলেন। তাহাঁর সাথে উমর [রাদি.] ও ছিলেন। সে সময় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের পাশে এসে বললেনঃ কোন জিনিস তোমাদের এ স্থানে বসিয়ে রেখেছে? তাঁরা বলিলেন, সে আল্লাহ্‌র কসম! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করিয়াছেন। ক্ষুধা আমাদের ঘর থেকে আমাদের বাইরে নিয়ে এসেছে। অতঃপর বর্ণনাকারী খালাফ ইব্‌নে খলীফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] –এর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৫৩]

৫২১০. জাবির ইব্‌নে আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [খন্দক যুদ্ধের প্রাক্কালে] পরিখা খোড়ার সময় আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর দেহে ক্ষুধার যন্ত্রণা লক্ষ্য করলাম। অতঃপর আমার সহধর্মিণীর নিকট ফিরে এসে তাঁকে বললাম, তোমার কাছে কিছু আছে কি? কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]– কে চরম ক্ষুধারত অবস্থায় দেখেছি। অতঃপর সে একটি চামড়ার ব্যাগ বের করলো, যার মধ্যে এক সা পরিমাণ যব ছিল। আর আমাদের একটা গৃহপালিত বকরী ছিল। আমি ওটা জবেহ করলাম, আর স্ত্রী যবগুলো ভালভাবে পিষে নিল। আমার কাজ সম্পাদনের সঙ্গে সঙ্গে সেও তাহাঁর কাজ শেষ করলো। আমি [রান্নার জন্য] গোশ্ত কেটে ডেগচিতে রাখলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]– এর কাছে ফিরে এলাম। [যাওয়ার সময়] আমার স্ত্রী আমাকে বলিল, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাথীদের দিয়ে তুমি আমাকে লাঞ্ছিত কর না। তিনি বলেন, তারপর আমি তাহাঁর নিকট এসে চুপি চুপি তাঁকে বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা একটি বকরী জবেহ করেছি আর আমাদের এক সা পরিমাণ যব ছিল আমার স্ত্রী তাই পিষে নিয়েছে। সুতরাং আপনি কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আসুন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দরাজ কণ্ঠে বলিলেন, হে পরিখা খননকারীরা! জাবির তোমাদের জন্য কিছু খাবার তৈরী করেছে। তোমরা সকলে চলো। আর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [আমাকে বললেনঃ আমি না আসা পর্যন্ত তোমাদের ডেগ [চুলা থেকে] নামাবে না এবং খামীর দ্বারা রুটি প্রস্তত করিবে না। আমি আসলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মানুষদের আগে আগে আসলেন। আমি আমার স্ত্রীর নিকট এলে সে আমাকে [তিরস্কার করে] বলিল, তোমার ধ্বংস হোক, তোমার ধ্বংস হোক। আমি বললাম, আমি তাই করেছি, তুমি যাই আমাকে বলেছিলে। অতঃপর সে খামিরগুলো বের করলো তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মধ্যে একটু লালা দিলেন এবং বারাকাতের দুয়া করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, রুটি প্রস্ততকারীনিকে ডাক, যে তোমার সঙ্গে রুটি প্রস্তত করিবে। আর তুমি পাতিল হইতে পেয়ালা ভরে ভরে নিবে। আর ডেগ [চুল্লি হইতে] নামাবে না। তাঁরা ছিলেন মোট এক হাজার মানুষ। আল্লাহ্‌র নামে শপথ করছি! তাঁরা সকলে খাবার খেলেন। পরিশেষে তাঁরা তা রেখে এমনভাবে ফিরে গেলেন যে, আমাদের ডেগ আগের মতো উতলিয়ে পড়ছিল। আর আমাদের খামীর পূর্বের মতো রুটি প্রস্তত করা হচ্ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৫৪]

৫২১১. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [একদা] আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] উম্মু সুলায়ম [রাদি.]- কে বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দুর্বল শব্দ শ্রবণ করে বুঝতে পেরেছি যে, তিনি ক্ষুধার্ত। তাই তোমার কাছে কিছু আছে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি যবের কয়েক খণ্ড রুটি বের করিলেন। তারপর তার ওড়না নিলেন এবং এটির একাংশ দিয়ে রুটিগুলো পেচিয়ে আমার কাপড়ের তলায় গুঁজে দিলেন এবং ওপর অংশ আমার দেহে জড়িয়ে দিলেন। অতঃপর আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে প্রেরণ করিলেন। তিনি [আনাস] বলেন, আমি এগুলো নিয়ে এসে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে দেখিতে পেলাম তিনি মসজিদে বসে আছেন। তাহাঁর সাথে আরও মানুষ ছিলেন। আমি তাঁদের নিকট গিয়ে দাঁড়ালাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমাকে আবু তালহাহ প্রেরণ করিয়াছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, খাওয়ার ব্যাপারে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাথীদের বলিলেন, সবাই চলো। আনাস [রাদি.] বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গেলেন। আর আমি তাদের সামনে চলতে লাগলাম। পরিশেষে আমি আবু তালহাহ [রাদি.]-এর কাছে এসে তাঁকে [ঘটনা] খবর দিলাম তখন আবু তালহাহ [রাদি.] বলিলেন, হে উম্মু সুলায়ম [রাদি.]! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তো লোকদের নিয়ে আসছেন, অথচ আমাদের কাছে সে পরিমাণ খাদ্য নেই যা দিয়ে তাঁদের আপ্যায়ন করিতে পারি। {উম্মু সুলায়ম [রাদি.] বলিলেন, [তুমি উদ্বিগ্ন হয়ো না] আল্লাহ্‌ এবং তাহাঁর রাসূলই ভাল জানেন। আনাস [রাদি.] বলেন, তারপর আবু তালহাহ [রাদি.] যেয়ে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর সাথে দেখা করিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাথে এসে [উভয়ে] ঘরে ঢুকলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উম্মু সুলায়ম [রাদি.] –কে লক্ষ্য করে বলিলেন, হে উম্মু সুলায়ম! তোমার কাছে যা আছে নিয়ে আসো। তিনি সে রুটিগুলো তা সাথে করে নিয়ে আসলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দান করিলেন সেগুলো টুকরা টুকরা করা হলো। আর উম্মু সুলায়ম [রাদি.] চামড়া দ্বারা তৈরী ঘি-এর পাত্রটি চিপে সেটি সালুন হিসেবে দিলেন। আর এর ভিতরে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহ্‌র ইচ্ছানুযায়ী কিছু পড়লেন। অতঃপর বলিলেন , দশজনকে আসতে বলো। তাদের ডাকা হলে এসে তৃপ্তির সাথে খাবার খেয়ে বেরিয়ে গেলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, আরো দশজনকে আসতে বলো। তাদের ডাকা হলে তারা পেট ভরে খেয়ে চলে গেলেন। পুনরায় তিনি বলিলেন, দশ জনকে ডাক। এভাবে দলের সকলে পেটপুরে খাবার খেলেন। সত্তর কিংবা আশিজন লোক তাদের দলে ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৫৫]

৫২১২. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু তালহাহ [রাদি.] কিছু খাদ্যের ব্যবস্থা করে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে দাওয়াত করার জন্য আমাকে প্রেরণ করিলেন। আমি তাহাঁর নিকট গেলাম। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাথীদের সাথে ছিলেন। তিনি আমার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলেন। আমি লজ্জার সাথে বললাম, আপনি আবু তালহার দাওয়াত কবুল করুন। তখন তিনি লোকদের বললেনঃ তোমরা সবাই চলো। আবু তালহাহ [রাদি.] হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি তো শুধুমাত্র আপনার জন্য সামান্য খাবার ব্যবস্থা করেছি। আনাস [রাদি.] বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাবারগুলো ছুঁয়ে দেখলেন এবং এতে বারাকাতের দুয়া করিলেন। অতঃপর বলিলেন, আমার সাথীদের মধ্য থেকে দশজন করে ঘরে নিয়ে এসো। তিনি তাঁদের বলিলেন, তোমরা খেতে থাক। তিনি তাঁদের জন্য তাহাঁর আঙ্গুলের মধ্য থেকে কিছু বের করে দিলেন। তাঁরা সকলে তৃপ্তি সহ খাওয়ার পর বেরিয়ে গেলেন। অতঃপর বলিলেন, আরো দশজনকে ঘরে নিয়ে এসো। তারাও আহার শেষে বের হয়ে গেলেন। এভাবে দশজন ঘরে প্রবেশ করে এবং দশজন বের হয়ে যায়। এমনকি তাদের মাঝ থেকে একজন বাকী থাকেনি যে ঘরে ঢুকেনি। অতঃপর তিনি পাত্র খুলে দেখলেন, সকলে আহার করার পূর্বে যেমন ছিল এখনও ঠিক তেমনি আছে। {১১}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৪ ইসলামিক সেন্টার-৫১৫৬]

{১১} অর্থাৎ পাত্রের খাবার আগের যেমন ছিল সবাই খাওয়ার পর ঠিক তেমনই র‍য়ে গেল । এটা ছিল রাসূল [সাঃআঃ] -এর মুজিযা ।

৫২১৩. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু তালহাহ [রাদি.] আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে প্রেরণ করিলেন। রাবী ইব্‌নে নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] –এর হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেন। তবে হাদীসটির শেষাংশে তিনি বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাকী অংশ জমা করে এতে বারাকাতের প্রার্থনা করিলেন। আনাস [রাদি.] বলেন, ফলে তা [পূর্বে] যেমনি ছিল আবার তেমনি হয়ে গেল এবং তিনি বললেনঃ এবার তোমরা নাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৫, ইসলামিক সেন্টার-৫১৫৭]

৫২১৪. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একমাত্র নবী[সাঃআঃ]–এর জন্য খাবার তৈরী করিতে আবু তালহাহ [রাদি.] উম্মু সুলায়ম [রাদি.]–কে আদেশ করিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে তাহাঁর কাছে প্রেরণ করিলেন। অতঃপর রাবী শেষ পর্যন্ত হাদীস তি রিওয়ায়াত করেন। এ হাদীসে তিনি বলেছেন, অতঃপর নবী [সাঃআঃ] তাতে হাত-রাখলেন এবং আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করিলেন। অতঃপর বলিলেন, দশজনকে ডাকো। তাদের ডাকলে তারা ঘরে ঢুকলো। তিনি বলিলেন, তোমরা

بِسْمِ ٱللَّٰهِ

বিসমিল্লাহ [আল্লাহ্‌র নামে] বলে খাওয়া শুরু করো। তারা আহার করলো। এভাবে আশিজনের সাথে এ রকম করিলেন। সবশেষে নবী [সাঃআঃ] ও ঘরের লোকেরা খাবার খেলেন এবং কিয়দংশ রেখে গেলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৬, ইসলামিক সেন্টার-৫১৫৮]

৫২১৫. আনাস ইবনে মালিক [রাদি.] –এর সনদ হইতে বর্ণীতঃ

আবু তালহাহ্ [রাদি.]- এর খাবারের এ বর্ণনাটি নবী [সাঃআঃ] হইতে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। এর মধ্যে রাবী বলেছেন, তারপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আগমনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আবু তালহাহ্ [রাদি.] দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর তাঁকে বলিলেন, হে আল্লহার রাসূল! এতো কিছু মাত্র [অল্প খাবার]। তিনি বলিলেন, তাই নিয়ে আসো। আল্লাহ অবশ্যই এতে বারাকাত দান করবেন।

[ই.ফা ৫১৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৫৯]

৫২১৬. আনাস ইবনে মালিক [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এতে বর্ণনাকারী বলেছেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাবার খেলেন। ঘরের অধিকারীরা ও খাবার খেলো এবং তাদের প্রতিবেশীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কিয়দাংশ রাখলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৬০]

৫২১৭. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু তালহাহ [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে মাসজিদে শয়ন করে ও পিঠ উপর-নিচ করিতে দেখলেন। তখন তিনি উম্মু সুলায়ম [রাদি.]-এর সন্নিকটে এসে বসলেন। আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে মাসজিদে শয়ন করে পেট ও পিঠ উপর-নীচ করিতে লক্ষ্য করেছি। আমার ধারণা হল , তিনি ক্ষুধার্ত। তারপর রাবী শেষ পর্যন্ত হাদীস টি বর্ণনা করেন। এতে তিনি বলেছেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু তালহাহ [রাদি.], উম্মু সুলায়ম [রাদি.] ও আনাস [রাদি.] খাবার খেলেন। সামান্য অবশিষ্ট র‍য়ে গেলে আমরা সেটা প্রতিবেশীরদের কাছে উপটৌকন প্রেরণ করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৪৯, ই . সে. ৫১৬১]

৫২১৮. আনাস ইব্‌নে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর কাছে এসে তাঁকে দেখলাম, তিনি সাহাবীদের সাথে বসে আলোচনায় রত আছেন এবং এবং তিনি তাহাঁর পেট একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। বর্ণনাকারী উসামাহ্‌ বলেন, পাথর সহ ছিল কি-না এতে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। আমি তাহাঁর কোন এক সাহাবীকে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর পেট কেন বেধে রেখেছেন? তাঁরা বলিলেন, ক্ষুধার তাড়নায়। তারপর আমি আবু তালহাহ [রাদি.]-এর কাছে গেলাম। তিনি উম্মু সুলায়ম বিনতে মিলহান [রাদি.] –এর স্বামী ছিলেন। আমি বললাম, আব্বা! আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে প্রত্যক্ষ করলাম, তিনি বস্ত্র দ্বারা তাহাঁর পেট বেঁধে রেখেছেন। আমি তাহাঁর এক সাহাবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলিলেন, ক্ষুধার যন্ত্রণায়। অতঃপর আবু তালহাহ [রাদি.] আমার মায়ের নিকট গিয়ে বলিলেন, কিছু আছে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ; আমার কাছে কয়েক টুকরা রুটি আর কিছু খেজুর আছে। যদি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের ঘরে একাকী আসেন, তাহলে আমরা তাঁকে তৃপ্তি সহকারে আহার করাতে পারি। আর যদি ভিন্ন কেউ তাহাঁর সাথে তাহলে তাঁদের সামান্য হইবে। অতঃপর বর্ণনাকারী ঘটনা সহ পূর্ব হাদীস টি বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৫০, ইসলামিক সেন্টার-৫১৬২]

৫২১৯. আনাস ইবনে মালিক [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে আবু তালহার আহারের ব্যাপারে তাঁদের [উপরোল্লিখিত রাবীদের] হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেন।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৫১, ইসলামিক সেন্টার-৫১৬৩]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply