শাবান, যুলহজ্জ, আরাফা ও মুহাররম মাসের রোযা

শাবান, যুলহজ্জ, আরাফা ও মুহাররম মাসের রোযা

মুহাররম মাসের রোযা নবম ও দশম তারিখে রাখার ফযীলত  >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর ৭ টি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

শাবান, যুলহজ্জ, আরাফা ও মুহাররম মাসের রোযা

পরিচ্ছেদ – ২২৫ঃ মুহার্রাম, শা’বান তথা অন্যান্য হারাম [পবিত্র] মাসে রোযা রাখার ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২২৬ঃ যুলহজ্জের প্রথম দশকে রোযা পালন তথা অন্যান্য পূণ্যকর্ম করার ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২২৭ঃ আরাফা ও মুহার্রাম মাসের নবম ও দশম তারীখে রোযা রাখার ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২২৮ঃ শাওয়াল মাসের ছ’দিন রোযা পালনের ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২২৯ঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২৩০ঃ প্রত্যেক মাসে তিনটি ক’রে রোযা রাখা মুস্তাহাব। প্রতি মাসে শুক্ল পক্ষের , ও তারীখে রোযা পালন করা উত্তম।। অন্য মতে ,, ও তারীখে। প্রথমোক্ত মতটিই প্রসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ।
পরিচ্ছেদ – ২৩১ঃ রাযাদারকে ইফতার করানোর ফযীলত এবং যে রোযাদারের নিকট কিছু ভক্ষণ করা হয় তার ফযীলত এবং যার নিকট ভক্ষণ করা হয় তার জন্য ভক্ষণকারীর দুআ

পরিচ্ছেদ – ২২৫ -মুহাররম, শা’বান তথা অন্যান্য হারাম (পবিত্র) মাসে রোযা রাখার ফযীলত

১২৫৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “মাহে রমযানের পর সর্বোত্তম রোযা, আল্লাহর মাস মুহাররম। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামাজ রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাজ।”

(মুসলিম ১১৬৩, তিরমিজি ৪৩৮, ৭৪০, আবু দাউদ ২৪২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৪২, আহমাদ ৭৯৬৬, ৮১৫৮, ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ১৭৫৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৫৫. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘নবী (সাঃআঃ) শাবান মাস চাইতে বেশি নফল রোযা অন্য কোন মাসে রাখতেন না। নিঃসন্দেহে তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোযা রাখতেন।’

অন্য বর্ণনায় আছে, ‘অল্প কিছুদিন ছাড়া তিনি পূর্ণ শা‘বান মাস রোযা রাখতেন।’

(সহীহুল বুখারী ৪৩, ১১৩২, ১১৫১, ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৮৭, ৬৪৬১, ৬৪৬২, ৬৪৬৪-৬৪৬৭, মুসলিম ৭৪১, ৭৮২, ৭৮৩, ৭৮৫, ১২৫৬, ৭৮২, ১৮১৮, নাসায়ী ৭৬২, ১৬১৬, ১৬৪২, ১৬৫২, ২১৭৭, ২৩৪৭, ২৩৪৯, ২৩৫১, ৫০৩৫, আবু দাউদ ১৩১৭, ১৩৬৮, ১৩৭০, ২৪৩৪, ইবনু মাজাহ ১৭১০, ৪২৩৮, আহমাদ ২৩৫২৩, ২৩৬০৪, ২৩৬৪২, ২৩৬০৪, ২৩৬৬৯, ২৪০১৯, ২৪১০৭, মুওয়াত্তা মালিক ৪২২, ৬৮৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৫৬. মুজীবাহ আল-বাহিলিয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তার বাবা বা চাচা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট উপস্থিত হন। অতঃপর তিনি চলে যান এবং একবছর পর পুনরায় উপস্থিত হন। তার অবস্থা ও চেহারা-সুরাত সে সময় (অনেক) পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃআঃ) ! আমাকে কি আপনি চিনতে পারছেন না? জবাবে তিনি বললেন, কে তুমি? তিনি বলেন, আমি হলাম সেই বাহিলী, আপনার নিকট প্রথম বছরে এসেছিলাম। নবী (সাঃআঃ) বললেন, তোমার এ পরিবর্তন কিভাবে হল, তোমার চেহারা-সুরত না বেশ সুন্দর ছিল? বাহিলী উত্তর দেন, আপনার নিকট হতে বিদায় নেয়ার পর থেকে আমি প্রতি রাতে ব্যতীত আর কখনো খাদ্য গ্রহণ করিনি (প্রতিদিন রোযা রেখেছি)। নাবী (সাঃআঃ) বললেন, নিজের জীবনকে তুমি কষ্ট দিয়েছ। অতঃপর বললেন, রমজানে রোযা রাখো, এরপর প্রতি মাসে একদিন করে (রোযা রাখো)। বাহিলী বলল, আরো বেশি করে দিন, কারণ আমার ভিতর এর শক্তি আছে। জবাবে বললেন, ঠিক আছে, প্রতি মাসে দু‘দিন করে। বাহিলী বলেন, আমি অধিক সামর্থ্য রাখি। নবী (সাঃআঃ) বললেন, তবে প্রতি মাসে তিনদিন করে। বাহিলী বলেন, আরো বেশী করুন। জবাবে নবী (সাঃআঃ) বললেন, হারাম মাসগুলোয় (যিলক্বদ, যিলহাজ্জ, মুহাররাম ও রজব) রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও, হারাম মাসগুলোয় রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও, হারাম মাসগুলোয় রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নিজের তিন আঙ্গুল দিয়ে তিনি ইশারা করেন, প্রথমে সেগুলোকে মিলিত করেন, তারপর ছেড়ে দেন (অর্থাৎ, তিনদিন রোযা রাখো এবং তিনদিন খাও। (আমি (আলবানী) বলছিঃ এর সনদটি দুর্বল। যেমনটি আমি “আত্‌তা‘লীকুর রাগীব আলাত্ তারগীব অত্‌তারহীব” গ্রন্থে (২/৮২) বর্ণনা করেছি। এর সনদের বর্ণনাকারী মুজীবাহ্ বাহেলিয়্যাহ্ সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তিনি গারীব তাকে চেনা যায় না। উল্লেখ্য বর্ণনাকারী আবুস সালীল তার থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এ সনদের মধ্যে মুজীবাহ্ কার থেকে বর্ণনা করেছেন সে ব্যাপারে ইযতিরাবও সংঘটিত হয়েছে। বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফু আবী দাঊদ-আলউম্ম-” গ্রন্থে (নং ৪১৯)।

উল্লেখ্য কাহমাস হিলালী কর্তৃক বর্ণিত হাদীস হতে মারফূ’ হিসেবে অনুরূপ ঘটনা সম্বলিত হাদীসটির একটি ভালো শাহেদ রয়েছে (কিন্তু ঘটনা এক নয়)। তবে “যিদনী…” এ অংশ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ছাড়া। কাহমাস হিলালী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি সহীহ্‌ বিধায় সেটিকে “সিলসিল্যাহ্‌ সহীহাহ্‌” গ্রন্থে (২৬২৩) উল্লেখ করা হয়েছে।)

হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২২৬ঃ যুলহজ্জের প্রথম দশকে রোযা পালন তথা অন্যান্য পুণ্যকর্ম করার ফযীলত

১২৫৭.আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “এই দিনগুলির (অর্থাৎ, যুল হিজ্জার প্রথম দশ দিনের) তুলনায় এমন কোন দিন নেই, যাতে কোন সৎকাজ আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।” লোকেরা বলল, ‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয় কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে কোন (মুজাহিদ) ব্যক্তি যদি তার জান মালসহ বের হয়ে যায় এবং তার কোন কিছুই নিয়ে আর ফিরে না আসে।” (অর্থাৎ, শাহাদত বরণ করে, তাহলে হয়তো তার সমান হতে পারে।)

(সহীহুল বুখারী ৯৬৯, তিরমিজি ৭৫৭, আবু দাউদ ২৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১৭২৭, আহমাদ ১৯৬৯, ৩১২৯, ৩২১৮, দারেমী ১৭৭৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২২৭ঃ আরাফা ও মুহার্‌রাম মাসের নবম ও দশম তারিখে রোযা রাখার ফযীলত

১২৫৮. আবু কাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাঃআঃ)-কে আরাফার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, “তার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গোনাহ মোচন করে দেয়।”

(মুসলিম ১১৬২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৫৯. ইবনে আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আশূরার (মুহার্‌রাম মাসের দশম) দিনে স্বয়ং রোযা রেখেছেন এবং ঐ দিনে রোযা রাখতে আদেশ করেছেন।

(সহীহুল বুখারী ২০০৪, ৩৩৯৭, ৩৯৪৩, ৪৬৮০, ৪৭৩৭, মুসলিম ১১৩০, আবু দাউদ ২৪৪৪, ইবনু মাজাহ ১৭৩৪, আহমাদ ১৯৭২, ২১০৭, ২১৫৫, ২৬৩৯, ২৮২৭, ৩১০২, ৩১৫৪, ৩২০৩, দারেমী ১৭৫৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬০. আবু কাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাঃআঃ)-কে আশূরার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, “তা বিগত এক বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়।”

(মুসলিম ১১৬২, আহমাদ ২২০২৪, ২২১১৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬১. ইবনে আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “আগামী বছর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে মুহাররম মাসের নবম তারিখে অবশ্যই রোযা রাখব।” (অর্থাৎ, নবম ও দশম দু’দিন ব্যাপী রোযা রাখব।)

(মুসলিম ১১৩৪, আবু দাউদ ২৪৪৫, আহমাদ ২১০৭, ২৬৩৯, ২৮২৭, ২১০২, ৩১৫৪, দারেমী ১৭৫৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২২৮ঃশাওয়াল মাসের ছ’দিন রোযা পালনের ফযীলত

১২৬২. আবু আইয়ূব আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমযানের রোযা পালনের পর শওয়াল মাসের ছয়দিন রোযা রাখল, সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।”

(মুসলিম ১১৬৪, তিরমিজি ৭৫৯, আবু দাউদ ২৪৩৩, ইবনু মাজাহ ১৭১৬, আহমাদ ২৩০২২, ২৩০৪৪, দারেমী ১৭৫৪) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২২৯ঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার ফযীলত

১২৬৩. আবু কাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে সোমবার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, “ওটি এমন একটি দিন, যেদিন আমার জন্ম হয়েছে, যেদিন আমি (নবীরূপে) প্রেরিত হয়েছি অথবা ঐ দিনে আমার প্রতি (সর্বপ্রথম) ‘অহী’ অবতীর্ণ করা হয়েছে।”

(মুসলিম ১১৬২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “(মানুষের) আমলসমূহ সোম ও বৃহস্পতিবারে (আল্লাহর দরবারে) পেশ করা হয়। তাই আমি ভালবাসি যে, আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোযার অবস্থায় থাকি।”

(তিরমিজি হাসান) (মুসলিম ২৫৬৫, তিরমিজি ৭৪৭, ২০২৩, আবু দাউদ ৪৯২৬, ইবনু মাজাহ ১৭৪০, আহমাদ ৭৫৮৩, ৮১১৬, ৮৯৪৬, ৯৯০২, ২৭৪৯০, ২৭২৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৬৮৬, ১৬৮৭, দারেমী ১৭৫১ ) ইমাম মুসলিমও এটি বর্ণনা করেছেন, তবে তাতে রোযার উল্লেখ নেই। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১২৬৫. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সোম ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার জন্য সমধিক সচেষ্ট থাকতেন।’

(তিরমিজি হাসান) (তিরমিজি ৭৪৫, নাসায়ী ২৩৬১-২৩৬৪, ইবনু মাজাহ ১৭৩৯)হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২৩০ঃ প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখা মুস্তাহাব

১২৬৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু (সাঃআঃ) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন; প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা। চাশ্‌তের দু’ রাকআত নামাজ আদায় করা এবং নিদ্রা যাবার পূর্বে বিত্‌র নামাজ পড়া।’

(সহীহুল বুখারী ১১৭৮, ১৯৮১, মুসলিম ৭২১, তিরমিজি ৭৬০, নাসায়ী ১৬৭৭, ১৬৭৮, ২৪০৬, আবু দাউদ ১৪৩২, আহমাদ ৭০৫৮, ৭১৪০, ৭৪০৯, ৭৪৬০, ৭৪৮৩, ৭৫৪১, ৭৬১৫, ৮০৪৪, ৯৬০০, ৯৯০৩, ১০১০৫, দারেমী ১৪৫৪, ১৭৪৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬৭. আবু দারদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু (সাঃআঃ) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না; প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা পালন করা, চাশ্‌তের নামাজ পড়া এবং বিত্‌র না পড়ে নিদ্রা না যাওয়া।’

(মুসলিম ৭২২, আবু দাউদ ১৪৩৩, আহমাদ ২৬৯৩৫, ২৭০০৩)হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬৮. ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আম্‌র ইবনে আ’স (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছর ধরে রোযা রাখার সমান।”

(সহীহুল বুখারী ১১৫৯, ১৯৭৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৬৯. মুআযাহ আদাভিয়্যাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আয়েশা (রাদি.) কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহর রসূল কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমি বললাম, ‘মাসের কোন্‌ কোন্‌ দিনে রোযা রাখতেন?’ তিনি বললেন, ‘মাসের যে কোন দিনে রোযা রাখতে তিনি পরোয়া করতেন না।’

(মুসলিম ১১৬০, তিরমিজি ৭৬৩, আবু দাউদ ৩৪৫৩, ইবনু মাজাহ ১৭০৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৭০. আবু জর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেন, “প্রত্যেক মাসে (নফল) রোযা পালন করলে (শুক্লপক্ষের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।”

(তিরমিজি ৭৬১, নাসায়ী ২৪২৪)হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১২৭১. ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার জন্য আদেশ করতেন।’

(আবু দাউদ ২৪৪৯, নাসায়ী ২৪৩২ [আব্দুল মালেকবিন কাতাদা ইবন মালহান]) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২৭২. ইবনে আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঘরে ও সফরে কোথাও শুক্লপক্ষের (তিন) দিনের রোযা ছাড়তেন না।’

(নাসাঈ হাসান সূত্রে) (নাসায়ী ২৩৪৫ [জা‘ফর বিন আবুল মুগিরা]) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২৩১ঃ রোযাদারকে ইফতার করানোর ফযীলত এবং যে রোযাদারের নিকট কিছু ভক্ষণ করা হয় তার ফযীলত এবং যার নিকট ভক্ষণ করা হয় তার জন্য ভক্ষণকারীর দু‘আ।

১২৭৩. যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে (রোজাদারের) সমান নেকীর অধিকারী হবে। আর তাতে রোজাদারের নেকীর কিছুই কমবে না।”

তিরমিজি ৮০৭, ইবনু মাজাহ ১৪৪৬, আহমাদ ২১১৬৮, দারেমী ১৭০২

হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১২৭৪.ম্মু ‘উমারা আল-আনসারিয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন একদিন তার নিকট গেলেন। তার সামনে তিনি খাবার রাখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমিও খাও। তিনি বললেন, আমি তো রোজাদার। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রোজাদারের সামনে যখন খাবার আহার-কারীদের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা পেট ভরে না খাওয়া পর্যন্ত তার (রোজাদারের) জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন।

দীসটি দুর্বল। আমি (আলবানী) বলছি : তিরমিজির কোন কোন কপিতে হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলা হয়েছে। আর এ সবগুলোর ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। আমি এ সম্পর্কে “য‘ঈফাহ্” গ্রন্থে (নং ১৩৩২) আলোচানা করেছি। শু‘য়াইব আলআরনাউতও “মুসনাদু আহমাদ” গ্রন্থে (২৬৫২০, ২৬৫২১) হাদীসটির সনদকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। এর সনদের বর্ণনাকারী লাইলাকে চেনা যায় না। হাফিয যাহাবী তাকে “আননিসওয়াতুল মাজহূলাত” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন : তার থেকে শুধুমাত্র হাবীব ইবনু যায়েদ বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ্য সওম পালনকারীদের ইফতার করার সময় ফেরেশতারা রহমাত কামনা করে দু‘আ করতে থাকেন। এ মর্মে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম হতে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (“সহীহ্ আবী দাঊদ” (৩৮৫৪) ও “সহীহ্ ইবনু মাজাহ্” (১৭৪৭))। তবে আলোচ্য হাদীসটি মওকূফ হিসেবে সহীহ্ সূত্রে সংক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ভাষায় আবু আইঊব (রাদি.) হতে বর্ণিত হয়েছেঃ الصائم إذا أكل عنده صلت عليه الملائكة অর্থাৎ ‘সওম পালনকারী ব্যক্তির নিকট খাওয়া হলে ফেরেশতারা রহমাত কামনা করে তার জন্য দু‘আ করে।’ যা মারফূ‘র হুকুম বহন করে। তবে অতিরিক্ত অংশ সহকারে হাদীসটি দুর্বল যেমনটি তিরমিজিতে বর্ণিত হয়েছে। (বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফাহ্” (১৩৩২))। আল্লাহই বেশী জানেন।

হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

১২৭৫. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সায়াদ ইবনে উবাদাহ (রাদি.)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। তিনি রুটি ও (জয়তুনের) তেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে পেশ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ভক্ষণ করে এই দো‘আ পড়লেন,

أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ ؛ وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الأَبرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ المَلاَئِكَةُ

‘আফত্বারা ইন্দাকুমুস স্বা-য়িমূন, অআকালা ত্বাআমাকুমুল আবরার, অস্বাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকাহ।’

অর্থাৎ রোজাদারগণ তোমাদের নিকট ইফতার করল। সৎ ব্যক্তিগণ তোমাদের খাবার ভক্ষণ করল এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের (ক্ষমার) জন্য দো‘আ করলেন।

আবু দাউদ ৩৮৫৪, আহমাদ ১১৭৬৭, ১২৬৭৩, দারেমী ১৭৭২. হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস


by

Comments

One response to “শাবান, যুলহজ্জ, আরাফা ও মুহাররম মাসের রোযা”

Leave a Reply