মুসাফিরদের নামাজ এবং গৃহের নামাজ
মুসাফিরদের নামাজ এবং গৃহের নামাজ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১.অধ্যায়ঃ মুসাফিরদের নামাজ এবং তার ক্বস্র [সংক্ষিপ্ত করা]
২. অধ্যায়ঃ মিনায় নামাজ ক্বস্র করা
৩. অধ্যায় : বর্ষণমুখর দিনে গৃহে নামাজ আদায়
৪. অধ্যায়ঃ সফরে সওয়ারী জন্তুর উপর নাফ্ল নামাজ আদায় বৈধ, তারটি মুখটি যেদিকে হোক না কেন
৫. অধ্যায়ঃ সফরে দু ওয়াক্তের নামাজ একত্রে [এক ওয়াক্তে] আদায় জায়িয
৬. অধ্যায়ঃ আবাসে দু ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায়
১.অধ্যায়ঃ মুসাফিরদের নামাজ এবং তার ক্বস্র [সংক্ষিপ্ত করা]
১৪৫৫. নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বাড়িতে কিংবা সফরে যে কোন অবস্থায় প্রথমে নামাজ দু দু রাকআত করে ফর্জ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সফরের নামাজ দু রাকআত ঠিক রাখা হলেও বাড়ীতে অবস্থানকালীন নামাজের রাকআত সংখ্যা বৃদ্ধি করা দেয়া হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪০ , ইসলামিক সেন্টার-১৪৫০]
{বিঃদ্রঃ হাদীস নং ১৪৫৫ দুইবার এসেছে, তাই প্রথমটি হাদীস নং ১৪৫৪ এর সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হল।}
১৪৫৬. নবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নামাজ ফরয করার সময় আল্লাহ তাআলা দু রাকআত করে ফরয করেছিলেন। তবে পরে বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাতে বৃদ্ধি করে পূর্নাঙ্গ করা হয়েছে এবং সফরকালীন নামাজ পূর্বের মত দু রাকআতই রাখা হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪১, ইসলামিক সেন্টার-১৪৫১]
১৪৫৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
প্রথমে নামাজ ফর্য হয়েছিল দু রাকআত করে। পরবর্তী সময়ে সফরকালীন নামাজ দু রাকআত ঠিক রাখা হয়েছে কিন্ত বাড়ীতে অবস্থানকালীন নামাজ পূর্ণাঙ্গ [অর্থাৎ চার রাকআত] করা হয়েছে।
বর্ণনাকারী যুহরী বলেছেনঃ আমি উরওয়াহ্কে জিজ্ঞেস করলাম-তাহলে কী কারণে আয়িশা [রাদি.] সফরকালীন নামাজ পুরো আদায় করিতেন? জবাবে উরওয়াহ্ বললেনঃ আয়েশাহ উসমানের ব্যাখ্যার মতো এ হাদীসটির ব্যাখ্যা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪২,ই.সে ১৪৫২]
১৪৫৮. ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ আমি উমর ইবনিল খাত্ত্বাবকে জিজ্ঞেস করলাম যে,আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “কাফিররা তোমাদেরকে কষ্ট দিবে এ আশঙ্কা থাকলে নামাজ ক্বস্র করে আদায় করিতে তোমাদের কোন দোষ হইবে না”-[সুরা আন্ নিসা ৪:১০১]। কিন্ত এখন তো লোকেরা নিরাপত্তা লাভ করিয়াছেন। [সুতরাং এখন ক্বস্র নামাজ আদায় করার প্রয়োজন কী?] এ কথা শুনে উমর ইবনিল খাত্ত্বাব বললেনঃ তুমি যে কারনে বিস্মিত হয়েছ আমিও ঠিক একই কারণে বিস্মিত হয়েছিলাম [অর্থাৎ আমিও ক্বস্র নামাজ আদায়ের কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছিলাম না]। তাই উক্ত বিষয়ে আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ এটি তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সদাক্বাহ্ বা দান। সুতরাং তোমরা তাহাঁর দেয়া সদাক্বাহ্ গ্রহণ কর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৩,ই.সে ১৪৫৩]
১৪৫৯. ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি উমর ইবনিল খাত্ত্বাবকে জিজ্ঞেস করলাম। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি আবদুল্লাহ ইবনি ইদরীস বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৪,ই.সে ১৪৫৪]
১৪৬০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের নবীর জবানীতে আল্লাহ তাআলা বাড়ীতে অবস্থানকালীন নামাজ চার রাকআত, সফরের নামাজ দু রাকআত এবং ভীতিকর অবস্থানকালীন নামাজ এক রাকআত ফারয্ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৫, ই.সে ১৪৫৫]
১৪৬১. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের নবী [সাঃআঃ] এর জবানীতে মুসাফিরের নামাজ দু রাকআত, মুকীম বা বাড়ীতে অবস্থানকালীন নামাজ চার রাকআত এবং ভীতিকর অবস্থায় নামাজ এক রাকআত ফরয করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৬, ই.সে ১৪৫৬]
১৪৬২. মূসা ইবনি সালামাহ্ আল হুযালী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আমি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি মাক্কায় অবস্থানকালে যদি ইমামের পিছনে নামাজ আদায় না করি তাহলে কীভাবে নামাজ আদায় করব। জবাবে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস বলিলেন, দু রাকআত নামাজ আদায় করিবে। এটি আবুল ক্বাসিম [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৭, ই.সে ১৪৫৭]
১৪৬৩. ক্বাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানদে অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৮, ই.সে ১৪৫৭-ক]
১৪৬৪. উমর ইবনিল খাত্ত্বাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আমি মাক্কার কোন একটি পথে আসিম ইবনি উমর-এর সাথে চলছিলাম। এ সময় তিনি আমাদের সাথে করে যুহরের নামাজ আদায় করিলেন এবং মাত্র দু রাকআত আদায় করিলেন। তারপর তিনি তাহাঁর কাফিলার মধ্যে ফিরে আসলেন। আমরাও তাহাঁর সাথে ফিরে আসলাম। তিনি সেখানে বসে পড়লে আমরাও তাহাঁর সাথে বসে পড়লাম। এ সময় যে স্থানে তিনি নামাজ আদায় করেছিলেন সে স্থানে তাহাঁর দৃষ্টি পড়লে কিছু সংখ্যক লোককে সেখানে দাঁড়ানো দেখিতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, এরা ওখানে কী করছে? আমি বললাম, তারা সুন্নাত পড়ছে। তিনি এ কথা শুনে বললেনঃ ভাতিজা, আমাদেরকে যদি সুন্নাত আদায় করিতে হত তাহলে আমি ফরয নামাজ ও পূর্ণ আদায় করতাম। আমি সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে থেকে দেখেছি আমৃত্যু তিনি দু রাকআতের অধিক আদায় করেননি। আমি সফরে আবু বাক্রের সাথে থেকে দেখেছি আল্লাহ তাকে ওফাত দান না করা পর্যন্ত তিনি দু রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন। আমি সফরে উমারের সাথে দেখেছি তিনি দুরাকআত নামাজই আদায় করিয়াছেন। মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরনের উত্তম নমুনা রয়েছে”-[সূরাহ আল আহ্যাব ৩৩ : ২১]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৪৯,ই.সে ১৪৫৮]
১৪৬৫. হাফস্ ইবনি আসিম থেকে [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি সাংঘাতিকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লাম। আবদুল্লাহ ইবনি উমর আমাকে দেখিতে আসলেন। সে সময় আমি তাঁকে সফরে সুন্নাত নামাজ আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন- আমি সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গী হয়েছি। কিন্ত কখনো তাঁকে নাফ্ল নামাজ আদায় করিতে দেখেনি। আর আমি যদি সফরে সুন্নাত নামাজ আদায় করতাম তাহলে ফরয নামাজ ও পূর্ণ করে আদায় করতাম। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরণের জন্য উত্তম নীতিমালা রয়েছে”-[সুরা আল আহ্যাব ৩৩ : ২১]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫০, ই.সে ১৪৫৯]
১৪৬৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বিদায় হাজ্জের সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনাহ্ থেকে যুহরের নামাজ চার রাকআত আদায় করে রওয়ানা হয়েছিলেন এবং যুল-হুলায়ফাতে পৌছে আস্রের নামাজ দু রাকআত আদায় করেছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫১, ই.সে ১৪৬০]
১৪৬৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সফরে আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাদীনায় যুহরের নামাজ চার রাকআত আদায় করে বের হয়েছি এবং যুল-হুলায়ফাতে পৌছে তাহাঁর সাথে আস্রের নামাজ মাত্র দু রাকআত আদায় করেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫২, ই.সে ১৪৬১]
১৪৬৮. ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইয়াযীদ আল হুনায়ী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে সফররত অবস্থায় সলাতে ক্কস্র করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন তিন মাইল অথবা তিন ফারসাখ দূরত্বের সফরে বের হইতেন তখনই দু রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইয়াযীদ আল হুনায়ী তিন মাইল দূরত্বের কথা বলেছেন, না তিন ফারসাখ দূরত্বের কথা বলেছেন তাতে শুবার সন্দেহ রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৩, ই.সে ১৪৬২]
১৪৬৯. জুবায়র ইবনি নুফায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি শুরাহ্বীল ইবনি আস্ সিম্ত্ব [রাদি.]-এর সাথে সতের বা আঠার মাইল দূরবর্তী এক গ্রামে গেলাম। তিনি সেখানে [চার রাকআতের পরিবর্তে] দু রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। আমি তাঁকে কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেলনঃ আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে যা করিতে দেখেছি তাই করে থাকি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৪, ই.সে ১৪৬৩]
১৪৭০. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি [শুবাহ্] শুরাহবীল না বলে মুহাম্মাদ ইবনিস্ সিম্ত্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি তার বর্ণিত হাদীসে এতটুকু কথা অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি হিম্স-এর আঠার মাইল দূরবর্তী “দূমীন” নামে পরিচিত একটি স্থানে উপনীত হলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৫, ই.সে ১৪৬৪]
১৪৭১. আনাস ইবন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [বিদায় হাজ্জের সফরে] আমরা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাদীনাহ্ থেকে মাক্কার দিকে বের হলাম। [এ সফরে] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সব ওয়াক্তের নামাজই দু রাকআত করে আদায় করিয়াছেন এবং মাদীনায় ফিরে এসেছেন। বর্ণনাকারী ইসহাক্ব ইবনি ইয়াহ্ইয়া বর্ণনা করিয়াছেন- আমি আনাস ইবনি মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি মাক্কায় কদিন পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন? জবাবে আনাস ইবনি মালিক বললেনঃ দশদিন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৬, ই.সে ১৪৬৫]
১৪৭২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] থেকে হুশায়ম বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৭,ই.সে ১৪৬৬]
১৪৭৩. ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, আমরা মাদীনাহ্ থেকে হাজ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম …। এরপর তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৮, ই.সে ১৪৬৭]
১৪৭৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে তিনি হাজ্জের কথা উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৫৯, ই.সে ১৪৬৮]
২. অধ্যায়ঃ মিনায় নামাজ ক্বস্র করা
১৪৭৫. সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা আবদুল্লাহ ইবনি উমর-এর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি মিনা এবং অন্যান্য স্থানে মুসাফিরের মতো দু রাকআত করে নামাজ আদায় করেছিলেন। আর আবু বকর, উমর তাদের খিলাফাত যুগে এবং উসামান তাহাঁর খিলাফাতের প্রথম দিকে সফরকালের নামাজ দু রাকআত করে আদায় করিয়াছেন এবং পরবর্তী সময়ে পূর্ণ চার রাকআত আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬০,ই.সে ১৪৬৯]
১৪৭৬. যুহ্রী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি এতে মিনাতে কথাটি উল্লেখ করিয়াছেন। তবে অন্যান্য স্থানে কথাটি উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬১, ই.সে ১৪৭০]
১৪৭৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [বিদায় হাজ্জের সময়] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিনাতে [ফরয নামাজ চার রাকআতের পরিবর্তে] দু রাকআত আদায় করিয়াছেন। পরে আবু বাক্র তাহাঁর খিলাফাতকালে তাই করিয়াছেন। আবু বাক্রের পর উমরও তাই করিয়াছেন। কিন্ত পরে চার রাকআত আদায় করিয়াছেন। সুতরাং, আবদুল্লাহ ইবনি উমর ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করলে চার রাকআত আদায় করিতেন। কিন্ত যখন তিনি একাকী নামাজ আদায় করিতেন দু রাকআত আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬২, ই.সে ১৪৭১]
১৪৭৮. উবায়দুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৩, ই.সে ১৪৭২]
১৪৭৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] হাজ্জের সময় মিনাতে অবস্থানকালে মুসাফিরের ন্যায় দু রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন। অতঃপর আবু বাক্র, উমর এবং উসমানও তাঁদের খিলাফাতকালে আট বছর অথবা [বর্ণনাকারীর সন্দেহে] ছয় বছর যাবৎ তাই করিয়াছেন। হাফস্ বর্ণনা করিয়াছেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমর মিনাতে অবস্থানকালে নামাজ দু রাকআত আদায় করিতেন এবং পরে তাহাঁর বিছানায় চলে আসলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা, আপনি আরও দু রাকআত নামাজ আদায় করলে ভাল হত। তিনি বললেনঃ আমার যদি এরূপ করিতে হত তাহলে আমি ফরয নামাজ পূর্নাঙ্গ করে [চার রাকআত] আদায় করতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৪, ই.সে ১৪৭৩]
১৪৮০. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে হাদীসটি বর্ণিত। তবে তারা তাঁদের বর্ণিত হাদীসে মিনাতে অবস্থাকালে কথাটি উল্লেখ করেননি। বরং বলেছেন, তিনি [সাঃআঃ] সফরে এভাবে নামাজ আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৫, ই.সে ১৪৭৪]
১৪৮১. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উসমান মিনাতে অবস্থানকালে আমাদের সাথে নিয়ে ফারয্ নামাজ চার রাকআত আদায় করিলেন। বিষয়টি আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদকে অবহিত করা হলে তিনি
ইন্না- লিল্লা-হি ওয়া ইন্না- ইলাই-হি র-জিঊন পরলেন। পরে তিনি বললেনঃ আমি মিনাতে অবস্থানকালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে দু রাকআত নামাজ আদায় করেছি। আবু বাক্র সিদ্দীকের সাথেও দু রাকআত নামাজ আদায় করেছি। আমি মিনাতে অবস্থানকালে উমর ইবনিল খাত্ত্বাবের সাথেও দু রাকআত নামাজ আদায় করেছি। চার রাকআতের পরিবর্তে দু রাকআত নামাজই যদি আমার জন্য মাকবূল হত তাহলে কতই না ভাল হত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৬, ইসলামিক সেন্টার-১৪৭৫]
১৪৮২. আবু বাকর ইবনি আবু শায়বাহ্ ও আবু কুরায়ব, উসমান ইবনি আবু শায়বাহ্, ইসহাক্ব ও ইবনি খশ্রাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই আমাশ হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৭, ই.সে ১৪৭৬]
১৪৮৩. হারিসাহ্ ইবনি ওয়াহ্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মিনাতে অবস্থানকালে আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দু রাকআত নামাজ আদায় করেছি। অথচ লোকজন নিরাপদ ও আতঙ্কহীন ছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৮,ই.সে ১৪৭৭]
১৪৮৪. হারিসাহ্ ইবনি ওয়াহ্ব আল খুযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বিদায় হাজ্জের সময় মিনাতে অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পিছনে নামাজ আদায় করেছি। তিনি তখন দু রাকআত নামাজ আদায় করেছিলেন। তখন তাহাঁর পিছনে বহু সংখ্যক লোক ছিল।
ঈমাম মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ হারিসাহ্ ইবনি ওয়াহ্ব খুযাঈ উবায়দুল্লাহ ইবনি উমর ইবনিল খাত্ত্বাবের ভাই। তারা একই মায়ের গর্ভজাত সন্তান।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৬৯, ই.সে ১৪৭৮]
৩. অধ্যায় : বর্ষণমুখর দিনে গৃহে নামাজ আদায়
১৪৮৫. নাফি ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন ঝড় ও শীতের রাতে আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] সলাতে আযান দিলেন। আযানে তিনি বললেনঃ তোমরা যার যার বাড়ীতে নামাজ আদায় করে নাও। পরে তিনি বলিলেন যে, শীতের রাত অথবা মেঘাচ্ছন্ন রাত হলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুয়ায্যিনকে এ কথা ঘোষণা করিতে আদেশ দিতেনঃ তোমরা বাড়ীতে নামাজ আদায় কর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭০, ই.সে ১৪৭৯]
১৪৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর হইতে বর্ণীতঃ
তিনি শীত ও ঝড়-বৃষ্টি কবলিত এক রাতে নামাজের আযান দিলেন। তিনি তার আযানে শেষে উচ্চৈঃস্বরে বলেন, শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানস্থলে নামাজ আদায় করে নাও। শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানস্থলে নামাজ আদায় করে নাও। অতঃপর তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফররত অবস্থায় শীত বা বর্ষণমুখর রাতে মুয়ায্যিনকে নির্দেশ দিতেন, সে যেন বলে, শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে নামাজ আদায় করে নাও।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭১, ই.সে ১৪৭৯-ক]
১৪৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একবার তিনি যজনান নামক স্থানে নামাজের আযান দিলেন। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন। তবে এতটুকু কথা অধিক বর্ণনা করিলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি উমর বললেনঃ তোমরা যার যার অবস্থান স্থলেই নামাজ আদায় করে নাও। তিনি আবদুল্লাহ ইবনি উমর-এর কথা, “তোমরা যার যার অবস্থান স্থলেই নামাজ আদায় করে নাও” কথাটি দ্বিতীয়বার বলিলেন না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭২, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮০]
১৪৮৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সঙ্গী ছিলাম। ইতোমধ্যে বৃষ্টি হলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা কেউ চাইলে নিজের জায়গাতে অবস্থান করে সেখানেই নামাজ আদায় করে নিতে পারো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮১]
১৪৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক বৃষ্টিঝরা দিনে তিনি মুয়াযযিনকে বললেনঃ আজকের আযানে যখন তুমি
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
“আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লা-হ” বলে শেষ করিবে তার পরে কিন্তু
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ
“হাইয়্যা আলাস সলা-হ” বলবে না। বরং বলবে,
صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ
“সল্লু ফী বুয়ূতিকুম” অর্থাৎ- তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই নামাজ আদায় করে নাও।
হাদীসের বর্ণনা কারী [আবদুল্লাহ ইবনি হারিস] বলেছেনঃ এরূপ করা লোকজন পছন্দ করিল না বলে মনে হল। তা দেখে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস বললেনঃ তোমরা এ কাজকে আজগুবি মনে করছ? অথচ যিনি আমার চেয়ে উত্তম তিনি এরূপ করিয়াছেন। জুমুআর নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তোমরা কাদাযুক্ত পিচ্ছিল পথে কষ্ট করে চলবে তা আমি পছন্দ করিনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮২]
১৪৯০. আবদুল হামীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] – কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেন, এক বৃষ্টিঝরা দিনে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস আমাদের সামনে বক্তৃতা করিলেন। এতটুকু বর্ণনা করে তিনি পূর্বোক্ত ইবনি উলাইয়্যাহ্ বর্ণিত। তিনি বলেছেন, হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি জুমআর দিনের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন, যিনি আমার চেয়ে উত্তম অর্থাৎ নবী [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন।
আবু কামিল বলেছেনঃ হাম্মাদ আসিম-এর মাধ্যমে আবদুল্লাহ ইবনি হারিস থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৩]
১৪৯১. আইয়ূব ও আসিম আল-আহ্ওয়াল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের নবী [সাঃআঃ] কথাটি উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৪]
১৪৯২. আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক বৃষ্টিঝরা জুমুআর দিনে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস-এর [নিযুক্ত] মুয়াযযিন আযান দিলেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি ইবনি উলাইয়্যাহ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু বর্ণনা করিলেন। তিনি [আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস] বললেনঃ তোমরা কর্দম্ময় ও পিচ্ছিল পথে চলবে তা আমার পছন্দ হয়নি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৫]
১৪৯৩. আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বৃষ্টিঝরা জুমুআর দিনে তার [নিযুক্ত] মুয়ায্যিনকে আযান দেয়ার আদেশ দিলেন।
মামার-এর হাদীসে রয়েছে, বৃষ্টিঝরা জুমুআর দিনে উক্ত বর্ণনাকারীর অনুরূপ এবং মামার-এর বর্ণিত হাদীসে এ কথাও আছে যে, যিনি আমার চেয়ে উত্তম অর্থাৎ নবী [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৬]
১৪৯৪. আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর মাধ্যমে বর্ণনা করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বৃষ্টিঝরা জুমুআর দিনে তার [নিযুক্ত] মুয়াজ্জিনকে আযান দেয়ার আদেশ দিলেন। এভাবে তিনি অন্য বর্ণনাকারীদের অনুরূপ বর্ণনা করিলেন।
[ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৪৭৯, ইসলামীক সেন্টার ১৪৮৭]
৪. অধ্যায়ঃ সফরে সওয়ারী জন্তুর উপর নাফ্ল নামাজ আদায় বৈধ, তারটি মুখটি যেদিকে হোক না কেন
১৪৯৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সওয়ারীর মুখ যেদিকেই থাক না কেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সওয়ারীর পিঠে বসে নাফ্ল নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮০, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৮]
১৪৯৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উটের মুখ যেদিকেই থাকুক না কেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর উটের পিঠে বসেই নাফ্ল নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮১, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৮৯]
১৪৯৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা থেকে মাদীনায় আসার পথে যে দিকেই তাহাঁর মুখ হোক না কেন সওয়ারীতে বসে নামাজ আদায় করিতেন। এ ব্যাপারেই আয়াত [অর্থ]
فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ
“তোমরা যেদিকেই মুখ ফিরাবে সেটিই আল্লাহ্র দিক” – [সূরাহ আল বাক্বারাহ ২ : ১১৫] অবতীর্ণ হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮২, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯০]
১৪৯৮. আবু কুরায়ব, ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] …… সকলে আবদুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনিল মুবারাক ও ইবনি আবু যায়িদাহ্ বর্ণিত হাদীসে এ কথা উল্লেখিত হয়েছে যে, আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]
فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ
“তোমরা যেদিকেই মুখ করনা কেন সবই আল্লাহ্র দিক” – [সূরাহ আল বাক্বারাহ ২ : ১১৫]। এ আয়াতটি তিলওয়াত করে বলিলেন, এ আয়াতটি এ ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯১]
১৪৯৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি. হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একটি গাধার পিঠে আরোহণ করে খায়বারের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯২]
১৫০০. সাঈদ ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমারের সাথে মাক্কার পথ ধরে চলছিলাম। ভোর হয়ে যাচ্ছে মনে করে একসময় সওয়ারী থেকে নেমে বিত্র এর নামাজ আদায় করলাম এবং পড়ে তাহাঁর কাছে গিয়ে পৌছলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনে উমর আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, ফাজ্রের সময় হয়ে যাচ্ছে দেখে সওয়ারী থেকে নেমে বিত্র এর নামাজ আদায় করলাম। এ কথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনি উমর বলিলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জীবনে কি তোমার অনুসরণের জন্য উত্তম আদর্শ নেই। আমি বললাম, আল্লাহ্র শপথ! তা অবশ্যই আছে। তিনি বলিলেন, উটের পিঠে বসেই রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিত্র নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৩]
১৫০১. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সওয়ারীর মুখ যেদিকেই থাক না কেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [সফরে] সওয়ারীর পিঠে নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৪]
আবদুল্লাহ ইবনি দীনার বলেছেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি উমরও এরূপ করিতেন। [অর্থাৎ সফরে তিনি সওয়ারীর পিঠে আরোহণরত অবস্থায় নাফ্ল নামাজ আদায় করিতেন। সওয়ারী কোন্ দিকে মুখ করে চলছে তাতে কোন দোষ আছে বলে মনে করিতেন না।]
১৫০২. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সওয়ারীর উপর বসেই বিত্র নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৭, ইসলামিক সেন্টার-১৪৯৫]
১৫০৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সওয়ারী যে দিকেই মুখ করে চলুক না কেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওয়ারীর উপর বসে নাফ্ল নামাজ আদায় করিতেন এবং সওয়ারীর উপরেই বিত্র নামাজ আদায় করিতেন। তবে তিনি [সাঃআঃ] সওয়ারীর উপর ফরয নামাজ আদায় করিতেন না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৬]
১৫০৪. আবদুল্লাহ ইবনি আমির ইবনি রবীআহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি সফররত অবস্থায় রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে রাতের বেলা নফল নামাজ সওয়ারীর পিঠে বসে যেদিকে সওয়ারীর মুখ ছিল সেদিকে মুখ করে আদায় করিতে দেখেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৭]
১৫০৫. আনাস ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] যখন শাম [যা বর্তমানে সিরিয়া] থেকে [অথবা শামে] আসলেন, তখন আমরা তাহাঁর সাথে আইনুত্ তাম্র নামক স্থানে সাক্ষাৎ করলাম। তখন দেখলাম তিনি একটি গাধার পিঠে বসে ঐ দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করছেন। বর্ণনাকারী হুমাম ক্বিবলার বাম দিকে ইশারা করে দেখালেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে ক্বিবলাহ্ ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিতে দেখলাম যে, তিনি বললেনঃ যদি আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে এরূপ করিতে না দেখতাম তাহলে আমিও এরূপ করতাম না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯০, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৮]
৫. অধ্যায়ঃ সফরে দু ওয়াক্তের নামাজ একত্রে [এক ওয়াক্তে] আদায় জায়িয
১৫০৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন সফরে দ্রুত চলতে হলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাগরিব এবং ইশার নামাজ একসাথে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯১, ইসলামিক সেন্টার- ১৪৯৯]
১৫০৭. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
কোন সফরে আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] -কে দ্রুত পথ চলতে হলে সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশের লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পর তিনি মাগরিব এবং ইশার নামাজ একত্র করে আদায় করিতেন। এ ব্যাপারে তিনি বলিতেনঃ সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে যখন দ্রুত চলতে হত তখন তিনি মাগরিব এবং ইশার নামাজ একসাথে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯২, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০০]
১৫০৮. সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] -এর মাধ্যমে তাহাঁর পিতার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [আবদুল্লাহ ইবনি উমর] বলেছেনঃ আমি দেখেছি সফরে দ্রুত পথ চলার প্রয়োজন হলে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মাগরিব এবং ইশার নামাজ একসাথে আদায় করে নিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০২]
১৫০৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখেছি সফরে কখনো রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দ্রুত চলতে মাগরিব এবং ইশার নামাজ দেরী করে একসাথে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৩]
১৫১০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার পূর্বেই যদি তিনি সফরে রওয়ানা হইতেন তাহলে আস্রের নামাজের সময় পর্যন্ত দেরী করিতেন এবং তারপর কোথাও থেমে যুহর ও আস্রের নামাজ একসাথে আদায় করিতেন। কিন্তু রওয়ানা হওয়ার পূর্বেই যদি সূর্য ঢলে পড়ত তাহলে তিনি যুহরের নামাজ আদায় করে তারপর যাত্রা করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৪]
১৫১১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সফরে থাকাকালীন দুওয়াক্ত নামাজ একসাথে আদায় করিতে মনস্থ করলে যুহর নামাজ আদায় করিতে বিলম্ব করিতেন। পরে আস্রের ওয়াক্ত শুরু হলে তিনি যুহর ও আস্রের নামাজ এক সাথে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৫]
১৫১২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সফররত অবস্থায় নবী [সাঃআঃ]-এর কোন তাড়াহুড়ো থাকলে আস্রের সময় পর্যন্ত যুহরের নামাজ আদায় করিতে দেরী করিতেন এবং আস্রের প্রাথমিক সময়ে যুহর ও আস্রের নামাজ একসাথে আদায় করিতেন। আর এ অবস্থায় তিনি [সাঃআঃ] মাগরিবের নামাজ ও দেরী করে পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভা অন্তর্হিত হওয়ার সময় মাগরিব ও ইশার নামাজ একসাথে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৬]
৬. অধ্যায়ঃ আবাসে দু ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায়
১৫১৩. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভীতিকর অবস্থা কিংবা সফররত অবস্থা ছাড়াই এবং আস্রের নামাজ একসাথে এবং মাগরিব ও ইশার নামাজ একসাথে আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৭]
১৫১৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সফররত বা ভীতিকর অবস্থা ছাড়াই রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনায় অবস্থানকালে যুহর এবং আস্রের নামাজ একসাথে আদায় করিয়াছেন।
আবুয্ যুবায়র বলেছেনঃ [এ হাদীস শুনে] আমি সাঈদ ইবনি যুবায়রকে জিজ্ঞেস করলাম যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন? তিনি বললেনঃ তুমি যেন আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমিও তেমনি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে [বিষয়টি] জিজ্ঞেস করেছিলাম। জবাবে তিনি আমাকে বলেছিলেন, এ দ্বারা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইচ্ছা ছিল তাহাঁর উম্মাতের মনে যেন কোন প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে। {২৭}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৪৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৮]
{২৭} এ মর্মে দুটি উল্লেখযোগ্য মত হল- [১] এ হাদীস অসুস্থতাজনিত অবস্থার উপর প্রযোজ্য-এটা আহমাদ বিন হাম্বাল ও কাজী হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অভিমত। [২] ইবনি সীরীন এবং কতক মালিকী ও শাফিঈ বিদ্বানের মতে অভ্যাসে পরিণত না করে একান্ত প্রয়োজনে যুহর, আস্র একত্রে এবং মাগরিব ইশা একত্রে আদায় করা এ হাদীস অনুপাতে জায়িয।
১৫১৫. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাবূক যুদ্ধকালে কোন এক সফরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [একাধিক] নামাজ একসাথে করেছিলেন। সুতরাং তিনি যুহর এবং আস্র আর মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্রে আদায় করেছিলেন।
সাঈদ ইবনি যুহায়র বর্ণনা করিয়াছেন- আমি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাসকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তিনি কী কারণে এরূপ করেছিলেন জবাবে সাঈদ ইবনি যুবায়র বলিলেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর উম্মাতকে বাধ্য করিতে বা কষ্ট দিতে চাননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০০, ইসলামিক সেন্টার- ১৫০৯]
১৫১৬. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা তাবূক অভিযানে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ছিলাম। [এ সফরে] তিনি যুহর ও আস্র এবং মাগরিব ও ইশার নামাজ একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০১, ইসলামিক সেন্টার- ১৫১০]
১৫১৭. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তাবূক অভিযানকালে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহর ও আস্রের নামাজ এবং মাগরীব ও ইশার নামাজ একসাথে আদায় করিয়াছেন। আবু তূফায়ল বর্ণনা করেছেনঃ আমি মুআয ইবনি জাবালকে জিজ্ঞেস করলাম, কী কারণে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন? জবাবে মুআয ইবনি জাবাল বলিলেন- তিনি তাহাঁর উম্মাতকে বাধ্যবাধকতার মধ্যে ফেলতে বা কষ্ট দিতে চাননি [এ কারণেই তিনি এরূপ করিয়াছেন]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০২, ইসলামিক সেন্টার- ১৫১১]
১৫১৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মাদীনায় অবস্থানরত কোন ভীতিকর পরিস্থিতি কিংবা বৃষ্টি-বাদল ছাড়াই রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহর, আস্র, মাগরিব এবং ইশার নামাজ আদায় করিয়াছেন।
[ওয়াকী বর্ণিত হাদীসে] এ কথার উল্লেখ রয়েছে যে, সাঈদ ইবনি যুবায়র বলেছেন- আমি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বললাম, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন এজন্যে যাতে তাহাঁর উম্মাতের কোন কষ্ট না হয়।
তবে আবু মুআবিয়াহ্ বর্ণিত হাদীসে আছে যে, আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] -কে বলা হল- রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কী উদ্দেশে এরূপ করিয়াছেন? জবাবে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস বললেনঃ তিনি [সাঃআঃ] চেয়েছেন তাহাঁর উম্মাতের যেন কোন কষ্ট না হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০৩ ইসলামিক সেন্টার- ১৫১২]
১৫১৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] -এর পিছনে আট রাকআত [ফারয্] নামাজ এবং একত্রে সাত রাকআত নামাজ আদায় করেছি। আমি বললামঃ হে আবুশ্ শাসা! আমার মনে হয় নবী [সাঃআঃ] যুহরের নামাজ দেরী করে শেষ ওয়াক্তে এবং আস্রের নামাজ প্রথমভাগে আদায় করিয়াছেন। আর তেমনি মাগরিবের নামাজ দেরী করে এবং ইশার নামাজ প্রথমভাগে আদায় করিয়াছেন। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, আমিও তাই মনে করি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০৪,ইসলামিক সেন্টার- ১৫১৩]
১৫২০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মাদীনায় অবস্থানরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাত রাকআত ও আট রাকআত নামাজ একত্রে আদায় করিয়াছেন। অর্থাৎ যুহর ও আস্রের আট রাকআত একসাথে এবং মাগরিব ও ইশার সাত রাকআত এক সাথে আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৫১৪]
১৫২১. আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন আস্রের নামাজের পর আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস আমাদের সামনে বক্তব্য পেশ করিতে থাকলেন। এ অবস্থায় সূর্য ডুবে গেল এবং তারকারাজি দৃষ্টিগোচর হইতে থাকল। তখন লোকজন বলিতে শুরু করিল, নামাজ! নামাজ! [অর্থাৎ নামাজের সময় চলে যাচ্ছে, নামাজ আদায় করুন]। আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব বলেনঃ এ সময় বানূ তামীম গোত্রের একজন লোক তাহাঁর কাছে আসল এবং শান্ত ও বিরত না হয়ে বারবার আস্ নামাজ [নামাজ! নামাজ!] বলে চলল। তা দেখে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বললেনঃ তোমার সর্বনাশ হোক! তুমি কি আমাকে সুন্নাত [রসূলের পদ্ধতি] শিখাচ্ছ? পরে তিনি বললেনঃ আমি দেখেছি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহর ও আস্রের নামাজ এবং মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্র করে আদায় করিয়াছেন।
আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব বলেন, এ কথা শুনে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জাগল। তাই আমি আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.]-এর কাছে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর কথার সত্যতা স্বীকার করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৫১৫]
১৫২২. আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব আল উক্বায়লী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিল- নামাজের সময় হয়েছে, নামাজ আদায় করুন। কিন্তু তিনি চুপ করে রইলেন। সে আবার বলিল- নামাজ আদায় করুন। তিনি এবারও চুপ করে থাকলেন। লোকটি পুনরায় বলিল- নামাজের সময় হয়েছে, নামাজ আদায় করুন। এবার আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেনঃ তুমি আমাকে নামাজ সম্পর্কিত ব্যাপারে শিখাচ্ছ? আমরা তো রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময়ে দুওয়াক্ত নামাজ একসাথে আদায় করতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৫০৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৫১৬]
Leave a Reply