মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা আছার হাদীস বাংলা
মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা আছার হাদীস বাংলা >> মুল সুচিপত্র দেখুন
হাদিস – ১ – আব্দুর রহমান বিন আবদু রাব্বিল কাবা বলেছেন:
আমি আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃআঃআঃ এর কাছে এলাম, উনি কাবার ছায়ায় বসে ছিলেন
উনার চারদিকে অনেক মানুষ জমেছিলো।
একবার আমরা রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর সংগে সফরে ছিলাম
একটা মনজিলে থামার পরে, আমাদের মাঝে কেউ তাবু টাংগানো আরম্ভ করলো, কেউ তীর চালনা প্রতিযোগিতা আরম্ভ করলো, কেউ বা জন্তুগুলো নিয়ে দৌড় আরম্ভ করলো।
এই অবস্থায় একজন ডাক দিলেন, “আসসালাতু জামিয়া”। আমরা শুনে সবাই একত্রিত হলাম।
তখন রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, আমার আগের সব নবী উম্মতদের বলে দিয়ে গিয়েছেন কোনটা তাহাদের জন্য ভালো, আর কোনটা তাহাদের জন্য খারাপ। এটা জানানো ছিলো তাহাদের উপর আল্লাহর হক।
এই উম্মতের প্রথম যুগের মানুষেদের সঠিক পথে রাখা হইবে। আর শেষ যুগের মানুষদের উপর বিপদাপদ এবং তারা যা অপছন্দ করে সেগুলো আসবে।
এর পর ফিতনা এত বাড়বে যে মু`মিন বলবেন “এটাতে আমি ধ্বংশ হয়ে যাবো”
এর পর ফিতনা চলে যাবে।
এর পর ফিতনার আবার বাড়বে।
মু`মিন বলবে “না, বরং এবার।”
তোমাদের মাঝে যে চায় আগুন থেকে বাচতে এবং জান্নাতে প্রবেশ করিতে, সে যেন আল্লাহ আর আখিরাতের উপর বিশ্বাস রেখে মৃত্যু বরন করে। এবং নিজে যেটা পেতে পছন্দ করে, সেটা যেন মানুষের জন্য পছন্দ করে।
যে লোক কোনো ইমামকে বায়াত দিলো তার হাত ও অন্তর দিয়ে, সে যেন তার আদেশ পালন করে যতটুকু পারে। এবং অন্য কেউ এসে চ্যলেঞ্জ করলে তোমরা তার ঘাড়ে আঘাত করিবে।”
আমি মানুষের মাঝ থেকে মাথা বের করে জিজ্ঞাসা করলাম, “আমি আল্লাহ নামে জিজ্ঞাসা করছি। আপনি কি এটা রসূলুল্লাহ সাঃআঃ থেকে শুনেছেন?”
উনি উনার দু হাত দিয়ে উনার কান দেখালেন এবং বলিলেন, “আমি এই দুই কান দিয়ে শুনিয়াছি এবং অন্তর দিয়ে খেয়াল করেছি।”
আমি বললাম, “আমি হলাম আপনার চাচার ছেলে। আমাদের বলুন নিজেদের মাল অবৈধ ভাবে খাওয়া আর নিজেদের হত্যা না করার ব্যপারে। যেমন আল্লাহ বলেছেন — তোমরা তোমাদের মাল নিজেরা অবৈধ ভাবে ভোগ করো না, এবং ভোগ করার জন্য বিচারকের কাছে নিয়ে যেও না`…” সুরা বাকার ১৮৮ নং আয়াত তিলওয়াত করিলেন শেষ পর্যন্ত।
উনি দুই হাত একত্র করিলেন এবং মুখের উপর রাখলেন। এর পর হাত কিছুটা নামিয়ে বলিলেন: “আল্লাহর অনুসরনের ক্ষেত্রে তাহাদের বাধ্য হইবে। আর আল্লাহর অবাধ্যতার ক্ষেত্রে তাহাদের অবাধ্য হইবে।”
আব্দুল্লাহ বিন উমার রাঃআঃআঃ রসূলুল্লাহ সাঃআঃ থেকেও একই কথা বর্ননা করিয়াছেন। তিনি যোগ করিয়াছেন “এই উম্মতের শেষ যুগে একের পর এক ফিতনা দেখা যাবে যার পরেরটা আগেরটার থেকে বড় হইবে।”
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১১ }
হাদিস – ২ঃ { মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১২ }
পাথরের উপর আঘাত হানবে তলোয়ার ভোতা করে ফেলার জন্য।
হাদিস – ৩ঃ { মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৩ }
হাদিস – ৪ঃ খালিদ বিন সুবাই বা সুবাই বিন খালিদ বলছেন:
আমি কুফায় আসলাম। সেখানে অনেক বাহনের ডাক শুনতে পারলাম। আমি কুফার মসজিদে গেলাম। একজন লোক আসলেন এবং সমস্ত লোক উনার চারদিকে জমে গেলেন।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম: উনি কে?
জবাব দিলো: হুজাইফা বিন ইয়ামান।
আমি উনার পাশে বসে পড়লাম। উনি বলিলেন:
মানুষজনেরা নবী সাঃআঃ কে ভালো জিনিষ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিতেন। আমি জিজ্ঞাসা করতাম খারাপ সম্পর্কে।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম:
: ইয়া রসূলুল্লাহ, দেখছেন আমরা এখন যে ভালোর মাঝে আছি। এর আগে কি খারাপ ছিলো? আর এর পরে কি খারাপ আসবে?
উনি সাঃআঃ বলিলেন:
: হ্যা।
: এর থেকে রক্ষা কিসে?
: তলোয়ারে।
: ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, তলোয়ারের পরে কি কিছু বাকি থাকিবে?
: হ্যা। এর পর সন্ধি।
: সন্ধির পরে?
: বিশৃংখলার দিকে ডাক দেয়া হইবে। যদি তুমি তখন কোনো খলিফাকে দেখো, তবে তার আনুগত্য করিবে। যদিও সে তোমার পিঠে বেত্রাঘাত করে, আর তোমার মাল কেড়ে নেয়। আর যদি খলিফা না থাকে, তবে পালাও যতক্ষন না তোমার মউত আসে এই অবস্থায় যে তুমি গাছ কামড়ে ধরে আছো।
: ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর পর কি হইবে?
: দাজ্জাল বের হইবে।
: ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, দাজ্জাল কি নিয়ে আসবে?
: সে আসবে আগুন আর ঝর্না নিয়ে। যে তার আগুনে পড়বে সে পুরস্কার পাবে, তার গুনাহ কমে যাবে। যে তার ঝর্নায় পড়বে, তার পুরস্কার কমে যাবে, সে গুনাহ পাবে।
: ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, দাজ্জালের পর কি?
: তোমাদের কোন একজন ঘোড়ায় জিন চড়িয়ে তাতে উঠার সময় পাবে না, কিয়ামত চলে আসবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৪ }
হাদিস – ৫ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ কে মানুষ ভালো জিনিষ নিয়ে জিজ্ঞাসা করিতেন। আমি খারাপ জিনিষ নিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম। ভালো গুলো সম্পর্কে {মানুষদের কাছ থেকে} জেনে নিতাম যেগুলো শুনিনি।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম: `ইয়া রসূলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?”
উনি সাঃআঃ জবাব দিলেন, “হ্যা হুজাইফা! আল্লাহর কিতাব, এতে যা আছে তা অনুসরন করিবে।”
আমি এটা তিন বার জিজ্ঞাসা করেছিলাম।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “ইয়া রসূলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?”
উনি সাঃআঃ জবাব দিলেন, “ফিতনা আর খারাপ”
: ঐ খারাপের পর কি ভালো আসবে?
: হ্যা, হুজাইফা! আল্লাহর কিতাব, এতে যা আছে তা অনুসরন করিবে।” তিনবার বলিলেন।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “ইয়া রসূলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?”
জবাব দিলেন, “অন্ধ আর বধির ফিতনা। তখন {কিছু লোক} মানুষকে জাহান্নামের দরজার দিকে ডাকবে। হুজাইফা! তুমি যদি গাছের শেকড় কামড় দেয়া অবস্থায় মরেও যাও তবে সেটা তোমার জন্য ভালো, ঐ লোকদের কাউকে অনুসরন করা থেকে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৫ }
হাদিস – ৬ঃ আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃআঃআঃ বলেছেন,
আমরা একসময় রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর চারদিকে বসা ছিলাম।
উনি সাঃআঃ ফিতনার কথা আলোচনা করিলেন বা অন্য কেউ প্রসংগ তুললো।
তিনি সাঃআঃ বলিলেন,
: যখন দেখবে মানুষ তাহাদের ওয়াদা ভঙ্গ করছে,
আমানত খিয়ানত করছে,
এবং এই রকম হয়ে গিয়েছে
বলে উনি উনার আংগুলগুলো একে অন্যটার ভেতর ঢুকালেন।
তখন আমি দাড়িয়ে উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
: ঐ সময়ে আমি কি করবো? আল্লাহ আমাকে আপনার মুক্তিপন বানান।
উনি সাঃআঃ আমাকে বলিলেন,
: তখন নিজের বাসায় থাকিবে,
নিজের জিহ্বাকে সংযত রাখবে,
যেটা জানো সেটা গ্রহন করিবে,
যেটা খারাপ জানো, সেটা পরিত্যাগ করিবে,
তোমার দায়িত্ব শুধু তোমার নিজের বিষয় দেখা,
আর জনসাধারনের কাজ পরিত্যাগ করিবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৬ }
হাদিস – ৭ঃ আবু সাইদ রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন,
এটা হইতে যাচ্ছে যে কোনো মুসলিমের উত্তম সম্পদ হইবে ভেড়া যেটা নিয়ে সে ভালো লাগা কোনো পাহাড়ে চলে যাবে যেখানে বৃস্টি পড়ে। তার দ্বীন নিয়ে ফিতনা থেকে পলানোর জন্য।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৭ }
হাদিস – ৮ঃ হুজাইর বিন রাবী বলেছেন:
ইমরান বিন হুসাইন আমাকে বলিলেন,
তোমার কওম এসেছিলো, এর পর এই বিষয়ে কম করিতে তাহাদের নিষেধ করা হয়েছিলো।
আমি বললাম,
আমি তাহাদের মাঝে থাকি, তবে তাহাদের অনুসারি না।
উনি বলিলেন,
তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাহাদের জানিয়ে দিও যে, এক জন হাবশি গোলাম হয়ে পাহাড়ের চুড়ায় ছাগল পালন করা যতক্ষন না আমার মৃত্যু আসে, আমার কাছে বেশি প্রিয়, কোনো কাতারে ভুল কোনো তীর নিক্ষেপ বা আঘাত করার থেকে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৮ }
হাদিস – ৯ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
ফিতনা হইবে।
থামবে, আবার আরম্ভ হইবে।
তুমি যদি এটা থেমে থাকার সময়ে মরে যেতে পারো, তবে তাই করো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪১৯ }
হাদিস – ১০ঃ আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃআঃআঃ বলেছেন,
ফিতনা দেখা দিবে। আরবদের উপর ফোটায় ফোটায় পড়বে।
সে সময় কতলকারী জাহান্নামে যাবে।
সে সময় জিহ্বা, তলোয়ারের আঘাত থেকেও প্রচন্ড হইবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২০ }
হাদিস – ১১ঃ আবি মুসা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
উনি সাঃআঃ আমাদেরকে খুতবা দিলেন এবং বলিলেন,
সাবধান! তোমাদের পেছনে আধার রাত্রির টুকরার মত ফিতনা আছে।
তখন এক লোক সকালে মু`মিন থাকিবে তো সন্ধায় কাফির হইবে।
সন্ধায় কাফির থাকলে সকালে মু`মিন হইবে।
ঐ সময়ে বসে থাকা লোক দাড়ানো লোকের থেকে ভালো।
দাড়ানো লোক হেটে চলা লোকের থেকে ভালো।
হেটে চলা লোক আরোহী থেকে ভালো।
লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো:
আমাদের কি করিতে বলেন?
উনি সাঃআঃ বলিলেন,
বাসায় বসে থাকিবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২১ }
হাদিস – ১২ঃ মুজাহিদ রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন,
কিয়ামতের আগে রাতের আধার টুকরার মত ফিতনা দেখা দিবে।
সকালে এক জন মুমিন থাকিবে, তো সন্ধায় সে কাফির হয়ে যাবে।
সন্ধায় মুমিন থাকিবে, তো সকালে কাফির হয়ে যাবে।
মানুষ তার দ্বীনকে দুনিয়ার মালের বিনিময়ে বিক্রি করে দেবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২২ }
হাদিস – ১৩ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বর্ননা করিয়াছেন আবি মুসা রাঃআঃআঃ থেকে:
নবী সাঃআঃ বলেছেন:
তোমাদের ধনুক ভেঙ্গে ফেলো, অর্থাৎ ফিতনার সময়।
আর ধনুকের তারগুলো কেটে ফেলো।
আর নিজেদেরকে বাসায় আবদ্ধ করে ফেলো।
এবং সে সময় আদমের সন্তানদের মাঝে উত্তম জনের মত হয়ে যাও।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৩ }
হাদিস – ১৪ঃ আবু জর রাঃআঃআঃ বলছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলেছেন
: হে আবু যর। যখন তুমি দেখবে মানুষ একে অন্যকে কতল করছে এমন কি “হিজারাতু জাইত” পর্যন্ত রক্তে ডুবে গিয়েছে তখন তুমি কি করিবে?
: আল্লাহ আর উনার রাসুল ভালো জানেন।
: তুমি নিজের বাসায় ঢুকে যাবে।
: আমি কি অস্ত্র বহন করবো না?
: যদি এটা তোমার বিষয় হয়।
: তখন আমি কি করবো, ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ ?
: যদি ভয় পাও সূর্যরশ্মি তোমাকে পরাজিত করছে তবে তোমার জামার অংশ দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলবে। সে তোমার আর তার নিজের পাপের বোঝা নেবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৪ }
হাদিস – ১৫ঃ আবি মুসা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন:
তোমাদের পরে এমন দিন আসবে যখন অজ্ঞতা নেমে আসবে। ইলম তুলে নেয়া হইবে। আর হারজ বেড়ে যাবে।
সবাই জিজ্ঞাসা করলো:
ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, হারজ কি?
উনি সাঃআঃ বলিলেন:
কতল করা।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৫ }
হাদিস – ১৬ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
আধার রাত্রির টুকরার মত তোমাদের উপর ফিতনা আসবে। তাতে ধ্বংশ হয়ে যাবে প্রত্যেক সাহসী বীর, প্রত্যেক স্থির সাওয়ারী আর প্রত্যেক দক্ষ বক্তা।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৬ }
হাদিস – ১৭ঃ কুরযি বিন আলকামা আল-খুজাই বলেছেন:
এক লোক বলিলেন:
ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, ইসলামের কি সমাপ্তি আছে?
উনি সাঃআঃ বলিলেন,
: হ্যা। যখন আল্লাহ তায়ালা কোনো আরব বা অনারব কোনো পরিবারের ভালো চান তখন উনি তাহাদের ইসলামে প্রবেশ করান।
: এর পর?
: এর পর ফিতনা যেটা ছায়ার মত ঢেকে ফেলবে। সে সময়ে সিংহরা গড়িয়ে পড়ে যাবে। তোমাদের এক দল অন্য দলের গলায় আঘাত করিবে।
সিংহ হলো: জীবিত লোক যারা জেগে উঠবে, এর পর আবার গড়িয়ে পড়বে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৭ }
হাদিস – ১৮ঃ আসমা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ একবার মদিনার উচু ঘরগুলোর মাঝে একটা উচু ঘরে দাড়ালেন এবং বলিলেন,
তোমরা কি দেখছো যা আমি দেখছি?
আমি ফিতনার দেখছি তোমাদের বাসাগুলোর মাঝ দিয়ে পড়ছে, যেমন করে বৃস্টি ঐ জায়গায় পড়ে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৮ }
হাদিস – ১৯ঃ আউফ বলছেন আবু মিনহাল সাইয়ার বিন সালামা থেকে:
যে সময়ে ইবনি জিয়াদ বেরুলেন তখন
সিরিয়ায় মারওয়ান উঠে দাড়ালেন
মক্কায় ইবনি জুবাইর উঠে দাড়ালেন
বসরায় দুনিয়া ত্যগিরা দাড়িয়ে গেলেন।
তখন আমার পিতা প্রচন্ড দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন।
উনার বেশ প্রসংসা ছিলো ঐ সময়ে।
আমার পিতা আমাকে বলিলেন:
হে আমার ছেলে, আমার সাথে চলো। আমরা রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর এক সাহাবির কাছে যাবো।
এর পর আমরা আবি বারযাহ আল-আসলামি রাঃআঃআঃ এর কাছে গেলাম প্রচন্ড এক গরম দিনে।
উনি আখের ছালের তৈরি একটা কিছুর ছায়ায় বসে ছিলেন।
আমার আব্বা উনাকে পেয়ে উনার সাথে কথপোকথন আরম্ভ করিলেন,
এটা দিয়ে কথা আরম্ভ করিলেন।
: হে আবি বারযাহ! আপনি দেখছেন না? দেখছেন না?
উনি বলিলেন,
: আমি কুরাইশদের কাজকর্মের উপর অসন্তুস্ট।
তোমরা আরব জাতীরা কিরকম জাহিলিয়াত আর অধ্বঃপতনে ছিলে সেটা তোমরা জানো।
আল্লাহ তোমাদের ইসলাম দিয়ে তুলে এনেছে, আর মুহাম্মদ সাঃআঃ কে দিয়েছেন যিনি তোমাদের কাছে কি নিয়ে এসেছেন দেখেছো।
আর এই দুনিয়া তোমাদের মাঝে ফাসাদ {ঝগড়া} সৃস্টি করছে।
এবং শামে একই অবস্থা — মানে মারওয়ান।
ওয়াল্লাহ! দুনিয়ার কারন ছাড়া যুদ্ধ করছে না।
এবং মক্কাতেও একই অবস্থা — মানে ইবন জুবাইর।
ওয়াল্লাহ! দুনিয়ার কারন ছাড়া যুদ্ধ করছে না।
একই অবস্থা তোমাদের আশেপাশে যারা আছে তাহাদেরও, যাদের তোমরা দুনিয়া ত্যগি ডাকো।
ওয়াল্লাহ! তারা দুনিয়ার কারন ছাড়া যুদ্ধ করছে না।
যখন উনি কারো পক্ষে বলিলেন না তখন আমার পিতা উনাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,
: হে আবি বারজাহ! তাহলে আপনার মত কি?
উনি বলিলেন,
: দুনিয়া ত্যগিদের ভালোগুলো এখন আর দেখা যায় না।
যাদের পেটে মানুষের মাল নেই।
যাদের গায়ে অন্যের রক্ত নেই।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪২৯ }
হাদিস – ২০ঃ শাকিক বলেছেন:
হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
আমরা ওমর রাঃআঃআঃ এর সাথে বসে ছিলাম। উনি জিজ্ঞাসা করিলেন:
“তোমাদের মাঝে কে রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর ফিতনা সম্পর্কিত হাদিস মুখস্ত করে রেখেছো যেভাবে উনি বলেছিলেন?”
বললাম, “আমি।”
: তুমি তো দুঃসাহসী। কিভাবে?
: আমি শুনিয়াছি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন: একজন মানুষের ফিতনা হলো তার পরিবার, তার মাল, সে নিজে, তার সন্তান আর তার প্রতিবেশি। এর ক্ষমা হলো রোজা আর সদকা।
: আমি এটা জানতে চাইনি। আমি জানতে চাইছি ওটা সম্পর্কে যেটার ঢেউ হইবে সমূদ্রের ঢেউয়ের মত।
: তাতে আপনার আর তার কি আমিরুল মু`মিনিন? আপনার আর তার মাঝে একটা দরজা আছে, বন্ধ।
: দরজাটা কি ভাঙ্গা হইবে নাকি খুলা হইবে?
: না। বরং ভাঙ্গা হইবে।
: সেটা হলে, চেস্টা করলেও সেই দরজা আর কখনো বন্ধ করিতে পারবে না।
আমরা হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম,
: ওমর রাঃআঃআঃ কি জানতেন দরজাটা কে?
: হ্যা। যে রকম আমি জানি রাতের পরে দিন। আমি উনাকে এমন হাদিস বর্ননা করেছি যেটাতে প্রশ্ন তোলার মত কিছু ছিলো না।
শাকিক বলছেন:
আমরা ভয় পেলাম হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে জিজ্ঞাসা করিতে, ঐ দরজাটা আসলে কে? তাই আমরা মাসরুককে বললাম, আপনি বরং উনাকে জিজ্ঞাসা করেন।
উনি জিজ্ঞাসা করিলেন।
হুজাইফা রাঃআঃআঃ জবাব দিলেন: “ওমর।”
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩০ }
হাদিস – ২১ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
চাবুকের ফিতনা হইবে তলোয়ারের ফিতনা থেকেও প্রচন্ড।
জিজ্ঞাসা করা হলো:
কিভাবে?
বলিলেন:
মানুষকে চাবুক দিয়ে মারা হইবে যতক্ষন না সে কাঠের তক্তায় আরোহন করে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩১ }
হাদিস – ২২ঃ সাইদ বিন যাইদ রাঃআঃআঃ বলেছেন:
আমরা নবী সাঃআঃ এর সংগে বসে ছিলাম।
উনি ফিতনার কথা আলোচনা করিলেন এবং ঐ সময়ের বিপদের প্রচন্ডতা বর্ননা করিলেন।
আমরা বললাম:
ইয়া রসূলুল্লাহ সাঃআঃ, যদি এটা আমরা পাই তাহলে এটা তো আমাদের ধংশ করে দেবে।
উনি বলিলেন:
না! বরং, কতল হয়ে যাওয়া তোমাদের জন্য যথেষ্ট।
সাইদ রাঃআঃআঃ বলছেন:
আমি দেখেছি আমার ভাইদের কতল হয়ে যেতে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩২ }
হাদিস – ২৩ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
তিনটা ফিতনা হইবে। চতুর্থটা দাজ্জালের দিকে নিয়ে যাবে।
তখন কালো পাথর ছুড়ে মারা হইবে। এবং অগ্নি পাথর ছুড়ে মারা হইবে।
ঢেউয়ের মত অন্ধকার আসবে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মত।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৩ }
হাদিস – ২৪ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সা: বলেছেন,
ফিতনা দেখা দিবে
অন্ধ ও বধির হয়ে যাওয়া মানুষদের জাহান্নামের দরজার দিকে ডাকা হইবে।
হুজাইফা! তুমি যদি গাছের শেকড় কামড় দেয়া অবস্থায় মরেও যাও তবে সেটা তোমার জন্য ভালো, ঐ লোকদের কাউকে অনুসরন করা থেকে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৪ }
হাদিস – ২৫ঃ এক ব্যক্তি হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে জিজ্ঞাসা করলো,
: যখন মুসুল্লিদের কতল করা হইবে তখন আমি কি করবো?
: নিজের বাসায় ঢুকে যাবে।
: সে যদি আমার বাসায় ঢুকে পড়ে তখন কি করবো?
: বলে দিবে, আমি তোমাকে হত্যা করবো না, আমি রাব্বুল আলামিন আল্লাহকে ভয় করি।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৫ }
হাদিস – ২৬ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
তিনটা জিনিস দিয়ে ফিতনা বাড়বে।
এমন লোকের হাতে রক্তপাত বৃদ্ধির কারনে, যে ফিতনা বাড়ুক সেটা চায় না, বরং তলোয়ার দ্বারা কমাতে চায়।
এমন খতিবের কারনে যে সবকিছু নিজের দিকে ডাকে।
এবং প্রশংসিত শরিফ লোকের কারনে।
এর পর রক্তপাত যখন বেড়ে যাবে, তখন সেটা তাহাদেরকে ফেলে দেবে।
এরপর তাহাদেরকে উপড়ে ফেলবে এবং তাহাদের নিকট যা ছিলো সেটা তাহাদের ক্ষতি করিবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৬ }
হাদিস – ২৭ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
: তখন তোমাদের কি অবস্থা হইবে যখন উট তার লাগাম সহ এসে তোমাদের মাঝে হাটু গেড়ে বসবে, এবং তোমাদের কাছে এখান থেকে, ওখান থেকে লোকেরা আসবে?
: ওয়াল্লাহ আমরা জানি না।
: তবে ওয়াল্লাহ। আমি জানি। তোমারা তখন গোলাম আর তার মালিকের মত হয়ে যাবে। মালিক গোলামকে ধমক দিলেও গোলাম পাল্টা ধমক দেয় না। আর পিটালেও গোলাম পাল্টা পিটায় না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৭ }
উট: উটের পিঠের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করিয়াছেন।
গোলাম-মালিক: প্রতিশোধ প্রতিবাদ না করে চুপ থেকে মেনে নিতে বলেছেন।
হাদিস – ২৮ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ লোকদের বলছেন,
: তখন তোমাদের কি অবস্থা হইবে যখন তোমরা দ্বীনের ব্যপারে এরকম উদার হয়ে যাবে, যেমন এক মহিলা কবুল বলার পর উদার হয়ে যায়। তার কাছে যে আসে তাকে মানা করে না?
: আমরা জানি না।
: কিন্তু ওয়াল্লাহ! আমি জানি। তোমরা সেদিন থাকিবে অক্ষম আর অসৎ হবার মাঝে।
ঐ কওম থেকে এক লোক বলিলেন,
: এর অক্ষমতাকে ঘৃনা করে তা থেকে দূরে থাকতে হইবে।
হুজাইফা রাঃআঃআঃ তখন ঐ লোকের গায়ে কয়েকবার আঘাত করিলেন। এর পর বলিলেন,
: যেভাবে তুমি এ থেকে দূরে থাকলে। যেভাবে তুমি এ থেকে দূরে থাকলে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৮ }
বুঝা যাচ্ছে: আঘাত গুলো ঠেকাতে সে যেমন অক্ষম হয়েছিলো, সেরকম অক্ষম তখন মানুষ হয়ে যাবে।
হাদিস – ২৯ঃ খারাশাহ বলছেন:
হুজাইফা রাঃআঃআঃ একবার মসজিদে ঢুকলেন।
দেখলেন এক কওমের কিছু লোক অন্য লোককে পড়াচ্ছেন।
বলিলেন,
: তোমরা যদি পথের উপর থাকতে! তোমরা অনেক দূরের জিনিষকে জরুরী বানিয়ে ফেলেছো।
এর পর উনি রাঃআঃআঃ তাহাদের সাথে বসলেন এবং বলিলেন,
: আমরা ছিলাম সেই কওম যারা পড়া শেখার আগে ঈমান এনেছি। শিগ্রই এমন কওম আসবে যারা ঈমান আনার আগে পড়া শিখবে।
ঐ কওম থেকে একজন বলিলেন,
: এটা ফিতনা?
উনি বলিলেন,
: দ্রুতই, তোমাদের সামনে থেকে কিছু এসে তোমাদের চেহারাকে অপরাধি করে দিবে। এর পর অনবরত আসতে থাকিবে আসতে থাকিবে। লোকজন ফিরে গিয়ে পরামর্শ নেবে এমন দুব্যক্তি থেকে, তাহাদের একজন অথর্ব, অন্যজন অসৎ।
খারাশাহ বলিলেন,
: এর পর কিছু সময় যায় নি। আমি দেখলাম লোকটা তার তলোয়ার নিয়ে বেরিয়ে মানুষকে পর্যবেক্ষন করছে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৩৯ }
দুইব্যক্তি: দুজন নেতা।
এটা ঐ যুগের ঘটনা।
হাদিস – ৩০ঃ যাইদ বিন ওয়াহাব বলেছেন:
হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে প্রশ্ন করা হলো:
ফিতনা “আরম্ভ হওয়া” আর “থেমে যাওয়া” মানে কি?
বলিলেন:
আরম্ভ হওয়া মানে তলোয়ারকে খাপমুক্ত করা।
থেমে যাওয়া মানে সেটাকে কোষবদ্ধ করা।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪০ }
হাদিস – ৩১ ঃআবি আল-তাফাইল আমির বিন ওয়াথিলা বলেছেন:
হুজাইফা রাঃআঃআঃ আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,
: তোমার কি অবস্থা হইবে যখন ফিতনা দেখা দেবে — যাদের চাহিদা নেই এবং নিজেদেরকে গোপন রাখে — এরকম উত্তম মানুষদের মাঝে?
: আর কেমন? একে একে এটা আমাদের সামনে পরিবেশন করা হইবে। প্রত্যেক বিচ্ছিন্ন লোককে এটা বিচ্ছিন্ন করে দেবে। প্রতিটা লক্ষ্যেকে কেন্দ্র করে ছুড়ে মারা হইবে।
: তুমি তখন সদ্যজাত শিশুর মত হয়ে যাবে
সে চড়ে বসে না, তাকে বহন করা হয়।
সে দুধ খায় না, তাকে খাওয়ানো হয়।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪১ }
হাদিস – ৩২ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
ফিতনা আসবে।
তখন সন্দেহ জনক বিষয় বাড়বে, পরিস্কার বিষয় চলে যাবে।
তখন ঐ বেদুইন সম্মানিত হইবে, যে লাঠিতে ভর করে তার ভেড়ার পেছনে থাকিবে।
এবং সে তোমাদের স্রোতের সাথে চলবে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪২ }
হাদিস – ৩৩ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলো,:
বনি ইসরাইল কি একদিনেই কুফরিতে চলে গিয়েছিলো?
বলিলেন,
: না। বরং তাহাদের উপর ফিতনা আসে। তারা এতে পড়ে যায়।
কিন্তু ফিতনাকে তারা খারাপ বুঝতে পারে।
এর পর আবার ফিতনা আসে, এতে আবার পড়ে যায়।
এভাবে,
এক পর্যায়ে তারা চাবুক আর তলোয়ার নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে তারা সাওয়ারী নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে তারা জানা জিনিস ভুলে যায়।
এবং খারাপকে আর খারাপ বুঝতে পারে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৩ }
হাদিস – ৩৪ঃ রিবয়ি বলেছেন:
আমি শুনিয়াছি হুজাইফা রাঃআঃআঃ এর জানাজায় এক লোক বলছেন:
আমি এই খাটিয়ার লোকের কাছে শুনিয়াছি উনি বলেছেন:
আমার সামান্য কস্টও নেই।
কারন আমি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর কাছে শুনিয়াছি,
: তোমাদের যদি হত্যা করা হয়, তবে তোমরা আমার ঘরে প্রবেশ করিবে। তাই, তারা যদি আমার ঘরে প্রবেশ করে তবে আমি তাহাদেরকে বলবো: আসো! আমার আর তোমার গুনাহ নিয়ে ফিরে যাও।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৪ }
হাদিস – ৩৫ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
যে জামাত থেকে এক হাত দূরে চলে গেলো সে যেনো ইসলাম থেকে দূরে চলে গেলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৫ }
জামাত: মুসলিমদের মূলধারা।
হাদিস – ৩৬ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
মানুষের উপর এমন যুগ আসবে, ডুবন্ত মানুষের মত যে দোয়া করছে, সে ছাড়া আর কেউ তখন বাচতে পারবে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৬ }
হাদিস – ৩৭ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
মানুষের উপর এমন একটা যুগ আসবে যখন কেউ রক্ষা পাবে না, সে ছাড়া যে দোয়া করছে, ডুবন্ত মানুষের দোয়ার মত।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৭ }
হাদিস – ৩৮ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
ওয়াল্লাহ! এক জন সকাল অতিবাহিত করিবে দৃস্টি ক্ষমতা নিয়ে। এর পর সন্ধায় সে থাকিবে অন্ধ।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৮ }
হাদিস – ৩৯ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ সুরা তৌবার ১২ নং আয়াত পাঠ করিলেন,
অর্থ: আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাহাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর। কারণ, এদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে
এর পর বলিলেন,
: পরবর্তিতে এই আয়াতে যাদের কথা আছে তাহাদের সাথে আর যুদ্ধ হয় নি।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৪৯ }
হাদিস – ৪০ঃ মুহাম্মদ বিন মাসলামা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে একটা তলোয়ার দিয়ে বলিলেন:
এটা দিয়ে তুমি মুশরিকদের কতল কর, যাদের কতল করা হয়।
আর যখন দেখবে মানুষদের একদল অন্যদলকে মারছে — বা এরকম কোনো কথা বলিলেন,
তখন এটা নিয়ে তুমি পাথরের কাছে চলে যাও এবং এটা দিয়ে পাথরের উপর মারতে থাকো যতক্ষন না এটা ভেঙ্গে যায়।
এর পর নিজেকে নিজের বাসায় আটকে রাখো যতক্ষন না তোমার কাছে খারাপ কোনো হাত আসে বা মৃত্যুর লিখনি চলে আসে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫০ }
হাদিস – ৪১ঃ আবু সাইদ খুদরী রাঃআঃআঃ লোকদেরকে বলেছেন,
: সাবধান! অন্ধ কতল আর জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যু থেকে।
: অন্ধ কতল কি?
: যখন বলা হয় হে অমুকের লোক! হে অমুকের বংশ!
: আর জাহেলিয়াতের মৃত্যু কি?
: তুমি যদি মারা যাও এমন অবস্থায় যে তোমার কোনো ইমাম নেই।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫১ }
দিস – ৪২ঃ হাসান রাঃআঃআঃ বলেছেন:
অন্ধ যুদ্ধে যে মারা যাবে, তার মৃত্যু জাহেলিয়াতের উপর হলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫২ }
হাদিস – ৪৩ঃ আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃআঃআঃ বলছেন,
যখন উথমান রাঃআঃআঃ এর বিরোধিতায় মানুষ বিভক্ত হয়ে গেলো তখন আমার পিতা দাড়িয়ে গেলেন।
রাতে নামাজ পড়লেন।
এর পর ঘুমালেন।
তাকে বলা হলো,
: দাড়াও! আর আল্লার কাছে চাও যেন উনি তোমাকে ফিতনা থেকে রক্ষা করেন। যে ফিতনা থেকে উনি উনার নেক বান্দাদের রক্ষা করেন।
উনি দাড়ালেন।
এক সময় অসুস্থ হয়ে গেলেন।
মৃত্যু পর্যন্ত উনাকে আর বের হইতে দেখি নি।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৩ }
হাদিস – ৪৪ঃ আলী রাঃআঃআঃ বলেছেন:
ইসলাম কমে যেতে থাকিবে।
এমন কি “আল্লাহ, আল্লাহ” বলার মত মানুষ থাকিবে না।
এ অবস্থা হলে দ্বীনের এক শীর্ষ নেতা দাড়িয়ে যাবে তার পাপ নিয়ে।
এর পর মানুষ বেরিয়ে তার চারিদিকে জড়ো হত থাকিবে যেভাবে শরৎ কালে মেঘ জমা হয়।
ওয়াল্লাহ! আমি তাহাদের আমিরের নাম জানি এবং তাহাদের ঘোড়ার জাতও জানি।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৪ }
হাদিস – ৪৫ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
যে জামাত থেকে এক হাত দূরে চলে গেলো, সে নিজের গলা থেকে ইসলামের বেড়িকে খুলে ফেললো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৫ }
হাদিস – ৪৬ঃ আলী রাঃআঃআঃ বলেছেন:
নেতৃত্ব হইবে কুরাইশ থেকে।
আর যে জামাত থেকে এক হাত দূরে চলে গেলো সে যেন নিজের ঘাড় থেকে ইসলামের বন্ধনকে খুলে ফেললো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৬ }
হাদিস – ৪৭ঃ আব্দুল্লাহ রাঃআঃআঃ বলেছেন,
: তখন তোমাদের কি অবস্থা হইবে যখন ফিতনার কাপড় তোমাদের পড়ানো হইবে?
অল্প বয়সীরা সে সময় সীমা ছাড়াবে, এবং বয়স্করা দুর্বল হয়ে পড়বে।
মানুষ এটাকে সুন্নাহ হিসাবে নিবে।
এর মাঝে কিছু পরিবর্তন করলে মানুষ বলবে, “তুমি সুন্নাহকে বদলাচ্ছো।”
লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো,
: এটা কখন হইবে, আবি আব্দুর রহমান?
: যখন তোমাদের মাঝে লিখাপড়া জানা লোক বেড়ে যাবে কিন্তু বিশ্বস্ত লোক কমে যাবে।
যখন তোমাদের মাঝে নেতা বেড়ে যাবে কিন্তু ফকিহ কমে যাবে।
যখন তোমরা আখেরাতের আমল দ্বারা দুনিয়ার সন্ধান করিবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৭ }
হাদিস – ৪৮ঃ আলী রাঃআঃআঃ বলেছেন,
এই উম্মার জন্য আল্লাহ তায়ালা পাচটি ফিতনা রেখেছেন।
সর্বসাধারনদের ফিতনা,
এর পর বিশেষ ব্যক্তিদের ফিতনা,
এর পর সর্বসাধারনদের ফিতনা,
এর পর বিশেষ ব্যক্তিদের ফিতনা,
এর পর ঢেউয়ের মত ফিতনা, সমূদ্রের ঢেউয়ের মত।
মানুষ তাতে সাতার কাটবে গরু-ছাগলের মত।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৮ }
হাদিস – ৪৯ঃ ইবনি আব্বাস রাঃআঃআঃ মিম্বরে দাড়িয়ে বলেছেন:
যে জামাত থেকে এক হাত দূরে চলে গেলো এর পর মারা গেলো, সে জাহেলিয়াতের উপর মরলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৫৯ }
হাদিস – ৫০ঃ জাইদ বিন উথাইয়ি বলেছেন:
হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
: তোমরা তখন কি করিবে যখন তোমাদের কাছে অন্যে হক চাবে তখন তোমরা তাকে দিয়ে দেবে, কিন্তু তোমাদের হক তোমাদেরকে দিতে তারা আস্বিকার করিবে?
লোকেরা জবাব দিলো,
: আমরা সবর করবো।
হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলিলেন,
: তোমরা প্রবেশ করেছো! কাবার রবের শপথ।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬০ }
শেষ দুটো লাইন প্রিন্টেড বইয়ের PDF এ ভিন্ন রকমে আছে। ওখানে আছে:
তারা জবাব দিলো, “আমরা সবর করি, কাবার রবের শপথ।” {এখানেই শেষ}
প্রবেশ করেছো: জান্নাতে প্রবেশ করেছো।
অন্যেরাঃআঃআঃ মূলতঃ ক্ষমতাসীনরা।
হাদিস – ৫১ঃহুজাইফা রাঃআঃআঃ এবং আবু মাসউদ রাঃআঃআঃ মসজিদে বসে ছিলেন। ঐ সময়ে কুফাবাসীরা সাইদ ইবনি আস রাঃআঃআঃ কে মাত্র বহিস্কার করেছে।
এক লোক উনাদের দুজনের কাছে আসলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন,
: আপনাদের কি জিনিস আটকিয়ে রেখেছে? অথচ সমস্ত মানুষ বেরিয়ে পড়েছে! ওয়াল্লাহ আমরাই সুন্নাহর উপর আছি।
তারা জবাব দিলো,
: তোমরা কি করে সুন্নাহর উপর আছো, যেখানে তোমরা তোমাদের ইমামকে বহিস্কার করেছো? ওয়াল্লাহ তোমরা সুন্নাহর উপর নেই যতক্ষন না তোমাদের নেতারা দুঃখ প্রকাশ করে জনগনকে নসিহা করে।
: যদি নেতারা দুঃখ প্রকাশ না করে, এবং জনগনকে নসিহা না করে — তবে আমাদের কি বলেবেন?
: তবে আমরা বেরিয়ে যাবো, এবং তোমাদের বিদায় জানাবো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬১ }
হাদিস – ৫২ঃ ইয়াজিদ বিন সুহাইব আল-ফকির বলেছেন:
আমার কাছে এই কথা পৌছেছে যে, ফিতনার সময় যে তার তলোয়ারের অনুসরন করিবে সেই ভুলের মাঝে পড়ে গিয়ে আফসো করিবে এবং সে লাঞ্চিত হইবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬২ }
হাদিস – ৫৩ঃ সুলাইমান বিন আমর বর্ননা করেছে উনার পিতা থেকে:
নবী সাঃআঃ বিদায়ী হজ্জে বলেছেন,
: এটা কোন দিন?
তিন বার জিজ্ঞাসা করিলেন।
লোকেরা জবাব দিলো,
: বড় হজ্জের দিন।
: নিশ্চই, তোমাদের রক্ত, মাল, সম্মান হারাম, যেরকম হারাম তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই মাসে, তোমাদের এই শহরে।
সাবধান! অপরাধির অপরাধের দায়িত্ব শুধু তার উপর। পিতার অপরাধের দায়িত্ব সন্তানের উপর না, আবার সন্তানের অপরাধের দায়িত্ব পিতার উপর না।
সাবধান! হে উম্মতেরা আমি কি তোমাদের কাছে পৌছেছি?
তারা বললো,
: হ্যা।
উনি সাঃআঃ বলিলেন,
: হে আল্লাহ! সাক্ষি থাকিবেন।
তিন বার বলিলেন।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৩ }
হাদিস – ৫৪ঃ আদ্দা বিন খালিদ বিন হাওদাহ রাঃআঃআঃ বলেছেন:
নবী সাঃআঃ এর সংগে আমি বিদায় হজ্জ করেছি। দেখেছি নবী সাঃআঃ দুটো বাহনের উপর দাড়িয়ে বলছেন,
: তোমরা জানো এটা কোন মাস? এটা কোন শহর?
তাহলে জেনে রাখো, তোমাদের রক্ত, তোমাদের মাল হারাম যেরকম হারাম তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই মাসের মাঝে, তোমাদের এই শহরের মাঝে।
তোমাদের কাছে কি কথাটি পৌছেছি?
: হ্যা।
: হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষি থাকেন।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৪ }
হাদিস – ৫৫ঃ আবু বকর রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদের বলেছেন,
: এটা কোন মাস?
: আল্লাহ ও উনার রাসুল সাঃআঃ ভালো জানেন।
এর পর এত লম্বা সময় উনি চুপ করে থাকলেন, যে আমাদের ধারনা হলো উনি হয়তো নতুন কোনো নাম দিবেন।
এর পর উনি বলিলেন,
: এটা কি জিলহজ্জ মাস না?
: নিশ্চই।
: এটা কোন শহর?
: আল্লাহ ও উনার রাসুল সাঃআঃ জানেন।
এর পর উনি আবার এত লম্বা সময় চুপ থাকলেন যে আমার ধারনা করলাম উনি হয়তো নতুন কোনো নাম রাখবেন।
এর পর বলিলেন,
: এটা কি হারাম শহর না?
: হ্যা।
: এটা কোন দিন?
: আল্লাহ ও উনার রাসুল সাঃআঃ জানেন।
এর পর উনি আবার এত লম্বা সময় চুপ থাকলেন যে আমরা ধারনা করলাম উনি হয়তো নতুন কোনো নাম রাখবেন।
এর পর বলিলেন,
: এটা কি কোরবানীর দিন না?
: নিশ্চই, ইয়া রসূলুল্লাহ!
: তাহলে নিশ্চই তোমাদের রক্ত, তোমাদের মাল, তোমাদের সম্মান তোমাদের উপর হারাম যেরকম হারাম তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই শহরে, তোমাদের এই মাসে। এর পর তোমাদের আমলের ব্যপারে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হইবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৫ }
হাদিস – ৫৬ঃ হযরত জাবের রাঃআঃআঃ বলেছেন,
নবী সাঃআঃ হজ্জে বলেছেন,
: তোমরা জানো কোন দিন সবচেয়ে বেশি হারাম?
আমরা বললাম,
: আমাদের এই দিনটি।
: কোন শহর সবচেয়ে বেশি হারাম?
: আমাদের এই শহর।
: কোন মাস সবচেয়ে বেশি হারাম?
: আমাদের এই মাস।
তখন রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন,
: নিশ্চই তোমাদের রক্ত আর মালও হারাম, যেরকম হারাম তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই শহরে, তোমাদের এই মাসে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৬ }
হাদিস – ৫৭ঃ মুররাহ একজন সাহাবী থেকে শুনে বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদের মাঝে দাড়ালেন একটা বয়স্ক লাল উটনির উপর। এর পর বলিলেন,
: তোমরা কি জানো এটা তোমাদের কোন দিন? তোমরা কি জানো এটা তোমাদের কোন মাস? তোমরা কি জানো এটা তোমাদের কোন শহর?
নিশ্চই তোমাদের রক্ত, মাল তোমাদের উপর হারাম যেরকম হারাম এই এই দিন, এই শহরে, এই মাসে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৭ }
হাদিস – ৫৮ঃ যাইদ বলেছেন:
ইমুল যারআর দিনে হুজাইফা রাঃআঃআঃ কে কেউ বলিলেন,
: আপনিও কি মানুষদের সঙ্গে বের হইবেন না?
উনি বলিলেন,
: তাহাদের সাথে আমার বের হওয়ায় কি? আমি জেনেছি যে তাহাদের মাঝে সামান্য রক্তপাত হইবে না, যতক্ষন না তারা ফিরে আসে। তিনি সাঃআঃ যারআর কথা বলেছেন হাদিসে। অনেক হাদিসে।
আমি চাই না যে এর কিছু আমার গায়ে লাগুক, যা তোমাদের ঘরে আছে।
ফিতনার দিকে যে তাকিয়ে দেখবে তাকে ফিতনায় ধরবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৮ }
হাদিস – ৫৯ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
: আমার ইচ্ছে হয় আমার সাথে ১০০ জন লোক থাকিবে যাদের অন্তর হইবে স্বর্নের।
এর পর আমি একটা পাথরের উপর উঠে তাহাদেরকে হাদিস বর্ননা করবো যে এর পর তারা আর কখনো ফিতনায় পড়বে না।
এর পর অল্প অল্প করে আমি চলে যাবো। আমি আর তাহাদের দেখবো না, তারাও আমাকে দেখবে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৬৯ }
হাদিস – ৬০ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন:
আমি যদি তোমাদের বলি যা আমি জানি, তবে তোমরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে যাবে।
এক ভাগ আমাকে কতল করিবে।
এক ভাগ আমাকে কোনো সাহায্য করিবে না।
আর এক ভাগ আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭০ }
হাদিস – ৬১ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
এক লোকের বিজয়ে যদি উম্মাহ ময়লা হয়, তবে দুই লোক থাকে।
তাহাদের একজন আশাতীত করেন।
অন্যজন মুশকিলে পড়েন।
যিনি আশাতীত করিয়াছেন, উনি হলেন উমর রাঃআঃআঃ।
যিনি মুশকিলে পড়েছেন উনি হলেন আলী রাঃআঃআঃ।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭১ }
বিজয়ের দ্বারা ময়লা: আরবী টিকাতে লিখা আছে — বিজয়ে এমন জায়গা থেকে সাহায্য পাওয়া যেটা আসা উচিৎ না।
হাদিস – ৬২ঃ ইবনি হানাফীয়া রাঃআঃআঃ বলেছেন:
আল্লাহ রহম করুন ঐ লোকের উপর যে
তার হাত গুটিয়ে রাখে,
জিহ্বাকে আটকিয়ে রাখে,
অন্তরকে চাহিদাশূন্য রাখে
নিজের ঘরে বসে থাকে
আর তার নিজ দায়িত্ব নিজের উপর।
সে কিয়ামতের দিন ঐ লোকদের সাথে থাকিবে, যাদেরকে ভালোবাসা হইবে।
সাবধান! মুমিনদের তলোয়ার তাহাদের দিকে সবচেয়ে দ্রুত আসে।
সাবধান! বিজয় হক্বের জন্য। আল্লাহ তায়ালা যখন চান দিবেন।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭২ }
হাদিস – ৬৩ঃ সুনাবিহ রাঃআঃআঃ বলেছেন,
আমি শুনিয়াছি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন,
: আমি তোমাদের আগে হাউজে থাকবো। আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য দেখে আনন্দিত হবো। আমার পরে তোমরা একে অন্যকে হত্যা করো না।
দ্বিতীয় একটা সুত্র থেকে একই হাদিস বর্নিত হয়েছে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৩ }
হাদিস – ৬৪ঃ আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বিদায় হজ্জে বলেছেন,
সাবধান! আমার পরে তোমরা একে অন্যের ঘাড়ে আঘাত করে কুফরিতে ফিরে যেও না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৪ }
হাদিস – ৬৫ঃ জারির বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলেছেন,
: মানুষ শান্ত হোক।
এর পর মানুষ শান্ত হলে বলিলেন,
: আমি তোমাদের আশংকা জানাচ্ছি যেটা আমি ভবিষ্যতে দেখছি। তোমরা আমার পরে কুফরিতে ফিরে যাবে। এক দল লোক অন্য দলের গলায় আঘাত করে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৫ }
হাদিস – ৬৬ঃ আবা জুরআহ বিন আমর বিন জারির রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বিদায়ী হজ্জে বলেছেন,
: হে মানুষ, চুপ করে মনোযোগ দিয়ে শুনো। আমার পরে তোমরা একে অন্যের গলায় আঘাত করে কুফরিতে ফিরে যেও না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৬ }
গলায় আঘাত করাঃআঃআঃ হত্যা করা।
হাদিস – ৬৭ঃ হুজাইফা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলেছেন,
আমি তোমাদের আগে হাউজে পৌছে যাবো। আমার কওম নিয়ে আমি ঝগড়া করবো এবং তাহাদের উপর জয়ী হবো। আমি বলবো,
: ইয়া রব! আমার আসহাব!
আমাকে বলা হইবে,
: আপনি জানেন না, আপনার পরে তারা কি করেছে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৭ }
ঝগড়া করবো: আরবী টিকায় বলা আছে, আযাবের ফিরিস্তারা যখন তাহাদের আগুনের দিকে নিয়ে যেতে থাকিবে তখন আমি তাহাদের আমার সংগে রাখতে চাইবো।
হাদিস – ৬৮ঃ আনাস বিন মালিক রাঃআঃআঃ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলেছেন:
কাউছার হলো একটা নহর যেটা আমার রব আমাকে দেবেন বলে ওয়াদা করিয়াছেন।
এতে অনেক ভালো কিছু আছে।
ওটা আমার হাউজ।
কিয়ামতের দিন এখান থেকে আমি আমার উম্মাহর জবাব দেবো।
এর পাত্রের সংখ্যা হলো তারকার সংখ্যার সমান।
কিছু আবদদের এখানে আসতে বাধা দেয়া হইবে।
আমি বলবো: এরা তো আমার উম্মত!
আমাকে বলা হইবে: আপনি জানেন না আপনার পরে তারা কি করেছিলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৮ }
হাদিস – ৬৯ঃ উম্মে সালমা রাঃআঃআঃ বলেছেন,
আমি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ কে শুনেই এই মিম্বরের উপর বলিতে
আমি কাউছারে তোমাদের আগেই থাকবো।
যখন আমি সেখানে থাকবো তখন আমি তোমাদের কাছে যেতে গেলে তোমাদের মাঝে একটা দূরত্ব চলে আসবে। আমি ডাক দিবো, তোমরা আসো!
তখন একজন ডেকে বলবে,
: না! তারা আপনার পরে বদলিয়ে গিয়েছিলো।
এর পর আমি বলবো,
: এসো না! তোমরা দুরের লোক! তোমরা দুরের লোক!
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৭৯ }
বদলিয়ে গিয়েছিলো: ধর্মান্তরিত হয়ে গিয়েছিলো।
হাদিস – ৭০ঃ মুররাহ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর একজন সাহাবি বলছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ একবার আমাদের মাঝে দাড়ালেন, এবং বলিলেন:
সাবধান! আমি তোমাদের আগে হাউজে পৌছে যাবো।
তোমাদের দেখবো, এবং তোমাদের বিশাল সংখ্যা দেখে অনন্দিত হবো।
তাই তোমরা আমার মুখকে কালো করো না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮০ }
হাদিস – ৭১ঃ উমর রাঃআঃআঃ আবি মুসা রাঃআঃআঃ কে লিখে পাঠান,
স্বভাবতঃ মানুষ তাহাদের সুলতানকে অপছন্দ করে। তাই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই আমার আর তোমার মাঝে ঘৃনা আসা থেকে,
দুনিয়া দ্বারা প্রভাবিত হওয়া থেকে,
মনের ইচ্ছার অনুসরন করা থেকে।
কাবিলাগুলো একটা অন্যটার বিরুদ্ধে লাগতে যাচ্ছে।
এটাই হলো অহংকার যে শয়তান থেকে আসে।
এরকম হলে: তখন তলোয়ার তলোয়ার, কতল কতল হইবে।
তারা বলবে: হে ইসলামের পরিবার, হে ইসলামের পরিবার।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮১ }
হাদিস – ৭২ঃ উবাই বিন কাব রাঃআঃআঃ বলেছেন,
আমি শুনিয়াছি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন,
যে তার নিজের গোত্রে দিকে ডাকে, সে যেন তার পিতার অঙ্গ কামড় দিলো। এবং এটা বলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮২ }
হাদিস – ৭৩ঃ উমর রাঃআঃআঃ বলেছেন,
যে তার গোত্রের জন্য গর্বিত হলো সে অংগ কামড় দিয়ে চুষলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৩ }
হাদিস – ৭৪ঃ তালহা বিন উবাইদিল্লাহ বিন কুরাইজ বলেছেন:
উমর রাঃআঃআঃ সেনাপ্রধানদের লিখে দিয়েছিলেন:
যদি গোত্রগুলো একে অন্যের সংগে সংঘর্ষে নামে তবে তলোয়ার দিয়ে তাহাদের তাড়া করো যতক্ষন না তারা ইসলামের শিক্ষার দিকে ফিরে আসে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৪ }
হাদিস – ৭৫ঃ আবি সালেহ বলেছেন,
যে বললো: হে ওমুকের বংশধর!
তবে সে আগুনের শাস্তির দিকে ডাকলো।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৫ }
হাদিস – ৭৬ঃ মাসরুক রাঃআঃআঃ বলেছেন:
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন:
আমি যেন তোমাদেরকে এই ভাবে না পাই যে আমার পরে তোমরা একদল অন্যদলের ঘাড়ে আঘাত করে কুফরিতে ফিরে গিয়েছো।
কোনো মানুষকে তার ভাইয়ের পাপ বা পিতার পাপের জন্য ধরা হইবে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৬ }
হাদিস – ৭৭ঃ আব্দুল্লাহ রাঃআ বলেছেন,
শিগ্রই উপেক্ষা করা হইবে এবং ঘটনার পূনরাবৃত্তি হইবে।
তখন তুমি ধীরে চলবে এবং ভালোর অনুসরন করিবে।
খারাপ রাষ্ট্রপ্রধানের মাঝে যতটুকু ভালো আছে, সেটার।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৭ }
হাদিস – ৭৮ঃ শায়বি বলেছেন,
এক লোক অন্যকে ডাকলো,
: এই! যে দাব্বার জন্য!
ওমর রাঃআঃআঃ কে এটা লিখে পাঠনো হলো। উনি জবাব দিলেন,
: তাকে শাস্তি দাও। আর তাকে আদব শিখাও।
দাব্বা তাহাদের কোনো ক্ষতি করিতে পারে না। আর কোনো উপকারও তাহাদের থেকে নিতে পারে না।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৮ }
দাব্বা হলো আরবদের একটা গোত্রের নাম। তাহাদের পূর্বপুরুষ একজনের নাম থেকে এসেছে।
হাদিস – ৭৯ঃ জাইদ বিন থাবিত রাঃআঃ বলেছেন,
রসূলুল্লাহ সাঃআঃ একবার বলিলেন,
আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও প্রকাশ পাওয়া আর গোপন থাকা ফিতনা থেকে।
আমরা বললাম,
আমরা আশ্রয় চাইছি আল্লাহর কাছে, প্রকাশ পাওয়া আর গোপন থাকা ফিতনা থেকে।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৮৯ }
হাদিস – ৮০ঃ আব্দুল্লাহ রাঃআঃআঃ বলেছেন,
যখন উসমান রাঃআঃআঃ উনার কাছে হুকুম পাঠালেন মদিনার দিকে বেরিয়ে যেতে।
তখন মানুষেরা উনার কাছে আসলো।
তারা তাকে বললো:
দাড়ান। আপনি বের হইবেন না। আমরা আপনাকে নিষেধ করছি।
উনার কাছ থেকে আপনার কাছে অপছন্দনীয় কিছু আসবে না।
আব্দুল্লাহ বলিলেন:
শিগ্রি ঘটনা ঘটবে এবং ফিতনা দেখা দিবে।
আমি এটা পছন্দ করি না যে আমি প্রথম এটা খুলবো, অথচ উনি আমার আনুগত্য প্রাপ্য।
মানুষ এর পর একে একে চলে গেল এবং উনি বের হলেন।
{ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা – ৩৬৪৯০ }
Leave a Reply