মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস
মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৩, অধ্যায়ঃ ৩
- অধ্যায়ঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৭৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : আমি আমার উম্মাতের জন্য যদি কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে ইশার নামাজ দেরীতে আদায় করিতে ও প্রত্যেক সলাতের সময় মিসওয়াক করার আদেশ করতাম। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৮৮৭, মুসলিম ২৫২, আবু দাউদ ৪৬। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৭৭. তাবিঈ শুরায়হ ইবনি হানী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.]- কে জিজ্ঞেস করলাম, বলুন তো রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে কোন্ কাজটি করিতেন? তিনি বললেন, মিসওয়াক। ১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২৫৩। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৭৮. হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের জন্য ঘুম থেকে উঠেই মিসওয়াক দ্বারা ঘষে মুখ পরিষ্কার করে নিতেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২৪৬, মুসলিম ২৫৫। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৭৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : দশটি বিষয় ফিত্বরাহ্ অর্থাৎ প্রকৃতিগত স্বভাবের অন্তর্গত। [১] গোঁফ খাটো করা, [২] দাড়ি লম্বা করা, [৩] মিসওয়াক করা, [৪] পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা, [৫] নখ কাটা,[৬] আঙ্গুলের গিরাগুলো ধোয়া, [৭] বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা, [৮] গুপ্তাঙ্গের লোম কাটা, [৯] শৌচকাজ করা [পবিত্র থাকা] এবং রাবী বলেন, দশমটা আমি ভুলে গেছি, সম্ভবত তা কুলি করা। {১}
অপর এক বর্ণনায় [দ্বিতীয় জিনিসটি] দাড়ি বাড়াবার স্থলে খতনা করার কথা এসেছে। মিশকাতের সংকলক বলেন, এ বর্ণনাটি বোখারী-মুসলিমে আমি পাইনি, আর হুমায়দীতেও নেই [যা সহীহায়নের জামি]। অবশ্য এ রিওয়ায়াতকে জামিউস সগীরে উল্লেখ করিয়াছেন। এভাবে খাত্ত্বাবী [রাহিমাহুল্লাহ] মাআলিমুস সুনানে বর্ণনা করিয়াছেন। {১} সহীহ : মুসলিম ২৬১। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮০. আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হাদিসটি আবু দাউদ-এ আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
{১} হাসান : আবু দাউদ ৫৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন : মিসওয়াক হল মুখগহবর পরিষ্কারকারী এবং আল্লাহর সন্তোষ লাভের মাধ্যম। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২/৬৮২ [তালীক সূত্রে], নাসায়ী ৫, সহীহুত্ তারগীব ২০৯, আহমাদ ২৪২০৩, দারিমী ৭১১। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮২. আবু আইয়ূব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : চারটি বিষয় নবী রসূলদের সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত- [১] লজ্জাশীলতা, আর এক বর্ণনায় এর স্থলে খতনার কথা বলা হয়েছে; [২] সুগন্ধি ব্যবহার করা; [৩] মিসওয়াক করা এবং [৪] বিয়ে করা। {১}
{১} জইফ : তিরমিজি ১০৮০, ইরওয়া ৩৩, সিলসিলা যঈফাহ্ ৪৫২৩। কারণ এর সানাদে আবুশ শিমাল নামক একজন অপরিচিত রাবী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৮৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] দিনে বা রাতে যখনই ঘুম হইতে উঠতেন, উযূ করার পূর্বে মিসওয়াক করিতেন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৭, আহমাদ। তবে وَلَا نَهَارٍ অংশটুকু দুর্বল। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মিসওয়াক করিতেন। অতঃপর ধুয়ে রাখার জন্য তা আমাকে দিতেন। আমি [ধোয়ার আগে] ঐ মিসওয়াক দিয়ে নিজে মিসওয়াক করতাম। তারপর তা ধুয়ে তাঁকে [[সাঃআঃ]-কে] দিতাম। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ৫২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন : একবার আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি একখন্ড মিসওয়াক দিয়ে মিসওয়াক করছি। এমন সময় দুজন লোক আমার কাছে এলো, যাদের মধ্যে একজন অপরজন হইতে [বয়সে] বড়। আমি আমার মিসওয়াকটি ছোটজনকে দিতে উদ্যত হলে আমাকে বলা হল, বড়জনকেই দিন। অতঃপর আমি তা বড়জনকেই দিলাম। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৩০০৩, মুসলিম ২২৭১। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৬. আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : যখনই জিবরীল [আঃ] আমার কাছে আসতেন আমাকে মিসওয়াক করার তাগিদ দিতেন; এমনকি আমার ভয় হল যে, [মিসওয়াক করার দরুন] আমার মুখের সম্মুখভাগ যেন আবার ক্ষত-বিক্ষত না করে ফেলি। {১}
{১} খুবই দুর্বল : আহমাদ ২১৭৬৬, যঈফুল জামি ৫০৫০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল
৩৮৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : আমি তোমাদেরকে মিসওয়াকের [গুরুত্ব ও ফাযীলাতের] ব্যাপারে অনেক বেশি বললাম। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৮৮৮। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিসওয়াক করছিলেন। তখন তাহাঁর কাছে দুজন লোক উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে একজন অপরজন হইতে বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন। তখন মিসওয়াকের ফাযীলাত সম্পর্কে ওয়াহী নাযিল হল- তাদের মধ্যে বড়জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে মিসওয়াকটি দিন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : যে সলাতের জন্য [উযূ করার সময়] মিসওয়াক করা হয় তার ফাযীলাত সত্তর গুন বেশি সে সলাতের চেয়ে যে সলাতে মিসওয়াক করা হয়নি। {১}
{১} জইফ : বায়হাক্বী ২৭৭৪, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১৫০৩, আহমাদ ৩/২৭২, হাকিম ১/১৪৬। কারণ এর সানাদে মুআবিয়াহ্ ইবনি ইয়াহ্ইয়া আস্ সদাকী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে। এছাড়াও এর অন্য একটি সানাদে ওয়াক্বিদী নামে একজন মিথ্যুক রাবী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯০. যায়দ ইবনি খালিদ আল জুহানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি : আমি যদি উম্মাতকে কষ্টে ফেলার আশংকা না করতাম তাহলে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যেক সলাতের সময় মিসওয়াক করিতে হুকুম [ফার্য] করতাম এবং ইশার নামাজ রাতের এক-তৃতীয়াংশে পিছিয়ে দিতাম। তিনি {আবু সালামাহ্ [রাদি.]] বলেন, [আমি দেখেছি] যায়দ ইবনি খালিদ [রাদি.] সলাতে উপস্থিত হইতেন। তার মিসওয়াক স্বীয় কানে আটকানো থাকত, যেখানে লেখকের কলম থাকে ঠিক তদ্রূপ। যখনই তিনি সলাতের জন্য দাঁড়াতেন তখনই মিসওয়াক করিতেন। তারপর তা আবার সেখানে [কানে] রেখে দিতেন। আবু দাউদ ইশার নামাজ পিছিয়ে দিতাম বাক্য ছাড়া বাকীটুকু বর্ণনা করিয়াছেন। ঈমাম তিরমিজি এ হাদিসকে হাসান সহীহ বলেছেন। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ২৩, আবু দাউদ ৪৭। মিসওয়াক সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply