মানত করার নিয়ম । মানত আদায় না করে কেউ যদি মারা যায়।
মানত করার নিয়ম । মানত আদায় না করে কেউ যদি মারা যায়। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৮৩, শপথ ও মানত, অধ্যায়ঃ (২৪-৩৩)=১০টি
৮৩/২৪. অধ্যায়ঃ যখন কোন ব্যক্তি তার মাল মানত এবং তাওবার উদ্দেশ্যে দান করে।
৮৩/২৫. অধ্যায়ঃ যখন কেউ কোন খাদ্যকে হারাম করে নেয়। [৭৭]
৮৩/২৬. অধ্যায়ঃ মানত পুরা করা
৮৩/২৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মানত পূর্ণ করে না তার গুনাহ।
৮৩/২৮. অধ্যায়ঃ নেক কাজের মানত করা।
৮৩/২৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি জাহেলিয়্যাতের যুগে মানত করিল বা কসম করিল যে, সে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করিল।
৮৩/৩০. অধ্যায়ঃ মানত আদায় না করে কেউ যদি মারা যায়।
৮৩/৩১. অধ্যায়ঃ পাপ কাজের এবং ঐ জিনিসের মানত করা যার উপর তার মালিকানা নেই।
৮৩/৩২. অধ্যায়ঃ কেউ নির্দিষ্ট কয়েক দিবসে সওম পালনের মানত করলে আর তার ভিতর কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে গেলে।
৮৩/৩৩. অধ্যায়ঃ কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বক্রী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি?
৮৩/২৪. অধ্যায়ঃ যখন কোন ব্যক্তি তার মাল মানত এবং তাওবার উদ্দেশ্যে দান করে।
৬৯৯০
আব্দুল্লাহ ইবনু কাব ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কাব (রাদি.) যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তখন তাহাঁর এক পুত্র তাঁকে ধরে নিয়ে চলতেন। আবদুর রাহমান বলেন, আমি (আল্লাহর বাণী): যে তিনজন তাবূকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত হয়েছে সংক্রান্ত ঘটনা বর্ণনা করিতে কাব ইবনু মালিককে শুনিয়াছি। তিনি তাহাঁর বর্ণনার শেষভাগে বলেন, আমার তাওবাহ এটাই যে আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে দান করে দিয়ে আমি মুক্ত হব। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ মালের কিছুটা তোমার নিজের জন্য রাখ, এটাই তোমার জন্য কল্যাণকর। [৭৬] (আঃপ্রঃ- ৬২২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৩)
[৭৬] সব কিছু দান করে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন- তোমার হাতকে তোমার গলার সাথে বেঁধে দিওনা, আর তা একেবারে প্রসারিত করে দিও না, তা করলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে পড়বে- (বানী ইসরাইল ২৯)।
৮৩/২৫. অধ্যায়ঃ যখন কেউ কোন খাদ্যকে হারাম করে নেয়। [৭৭]
[৭৭] (আরবী) “যদি কেউ কোন খাবার বা পানীয়কে নিজের উপর হারাম করে নেয় তবে তা হারাম হিসাবে গণ্য হইবে না। কিন্তু যদি শপথ করে হারাম করে নেয় তবুও হারাম গণ্য হইবে না। তবে শপথ ভঙ্গের কারণে তার উপর শপথের কাফ্ফারা অপরিহার্য হইবে। (ফাতহুল বারী)
এবং আল্লাহর বাণীঃ হে নাবী! আল্লাহ যা তোমাদের জন্য হালাল করিয়াছেন তা তুমি কেন হারাম করছ? (এর দ্বারা) তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি পেতে চাও, (আল্লাহ তোমার এ ত্রুটি ক্ষমা করে দিলেন কেননা) আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু। আল্লাহ তোমাদের জন্য নিজেদের কসমের বাধ্যবাধতা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ব্যবস্থা করিয়াছেন, আল্লাহ তোমাদের মালিক-মনিব-রক্ষক, আর তিনি সর্বজ্ঞাতা, মহা প্রজ্ঞার অধিকারী- (সুরা আত্ তাহরীম ৬৬/১-২)। এবং আল্লাহর বাণীঃ পবিত্র বস্তুরাজি যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম করে নিও না- (সুরা আল-মায়িদাহ ৫/৮৭)।
৬৬৯১
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাঃআঃ এক সময় যাইনাব বিন্ত জাহাশ (রাদি.)-এর কাছে অবস্থান করছিলেন এবং তাহাঁর কাছে মধু পান করেছিলেন। আয়েশাহ (রাদি.) বলেন, আমি এবং হাফসাহ (রাদি.) পরস্পরে পরামর্শ করলাম যে, নাবী সাঃআঃ আমাদের দুজনের মধ্যে যার কাছেই আগে আসবেন আমরা তাঁকে বলব, আপনার মুখ থেকে মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? এরপর তিনি কোন একজনের ঘরে প্রবেশ করিলেন। তখন তিনি তাঁকে ঐ কথাটা বলিলেন। তখন নাবী সাঃআঃ জবাব দিলেন, না, আমি তো যাইনাব বিন্ত জাহাশের কাছে মধু পান করেছি। এরপরে আর কক্ষনো এটা করব না। তখনই এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكَ إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللهِ তোমরা উভয়ে যদি আল্লাহর কাছে তাওবাহ কর এখানে সম্বোধন আয়েশাহ ও হাফসাহ (রাদি.)-এর প্রতি। আর وَإِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ নাবী যখন তাহাঁর কোন স্ত্রীর কাছে কথাকে গোপন করেন- এ আয়াতটি রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর কথা بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً বরং আমি মধু পান করেছি-এর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হিশাম থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী সাঃআঃ বলেছেনঃ আমি কসম করেছি কাজটি আমি আর কক্ষনো করব না। তুমি এ বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ করো না।[১] [৪৯১২] (আঃপ্রঃ- ৬২২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৪)
[৭৮] আল্লাহ যা হালাল করিয়াছেন, কাউকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে তা হারাম করা যাবে না। আর আল্লাহ ব্যতিত অন্য কেউ এ ক্ষমতাও রাখে না।
৮৩/২৬. অধ্যায়ঃ মানত পুরা করা
এবং আল্লাহর বাণীঃ “তারা তাদের মানত পূর্ণ করে।” (আল ইনসান/দাহরঃ ৭)
৬৬৯২
সাঈদ ইবনু হারিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি ইবনু উমার (রাদি.)-কে বলিতে শুনেছেন, তোমাদের কি মানত করিতে নিষেধ করা হয়নি? নাবী (সাঃআঃ) তো বলেছেনঃ মানত কোন কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়ে নিতেও পারে না এবং পিছাতেও পারে না। মানতের মাধ্যমে কৃপণের নিকট হইতে (কিছু ধন মাল) বের করে নেয়া হয়।(আঃপ্রঃ- ৬২২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৫)
৬৬৯৩
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃআঃ) মানত করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ তা কিছুই রদ করিতে পারে না, কিন্তু কৃপণ থেকে (কিছু মালধন) বের করা হয়। [৭৯](আঃপ্রঃ- ৬২২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৬)
৬৬৯২, ৬৬৯৩ নং হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী বোঝা যায়, নযর- তাক্বদীরের কোন পরিবর্তন করিতে পারে না। এর মাধ্যমে কোন উপকারও লাভ করা যায় না। আল্লাহ তাআলার বাণী : {يُوفُونَ بِالنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْمًا كَانَ شَرُّهُ مُسْتَطِيرًا} سورة الإنسان (৭)আয়াতটিতে একান্ত যদি কেউ কোন আল্লাহর আনুগত্যের কাজে নযর করে তবে সে যেন তার নযরের হিফাযত করে এবং তা পূরণ করে-এই উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু যদি কোন হারাম কাজের নযর করা হয় তবে তা বাতিল বলে গণ্য হইবে। ফলে তা পূরণ করিতে হইবে না। (ফাতহুল বারী)
৬৬৯৪
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মানত আদম সন্তানকে এমন কিছু এনে দিতে পারে না, যা আমি (আল্লাহ) তার তাক্দীরে নির্দিষ্ট করিনি। বরং মানতটি তাক্দীরের মাঝেই ঢেলে দেয়া হয় যা তার জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ কৃপণের নিকট হইতে (সম্পদ) বের করে নিয়ে আসেন। অতঃপর তাঁকে এমন কিছু দেন যা তাকে পূর্বে দেয়া হয়নি। (আঃপ্রঃ- ৬০২২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৭)
৮৩/২৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মানত পূর্ণ করে না তার গুনাহ।
৬৬৯৫
ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার যুগ সর্বোত্তম, এরপর তাদের পরবর্তী যুগ অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগ। ইমরান (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর যুগ বলার পর দুবার বলেছেন না কি তিনবার তা আমার জানা নেই। এরপর এমন লোকেরা আসবে যারা মানত করিবে কিন্তু তা পুরা করিবে না। তারা খিয়ানাত করিবে, আমানতদার হইবে না। তারা সাক্ষ্য দেবে অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হইবে না। আর তাদের মাঝে আরাম বিলাসিতা প্রকাশ পাবে। (আঃপ্রঃ- ৬২২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৮)
৮৩/২৮. অধ্যায়ঃ নেক কাজের মানত করা।
(আল্লাহর বাণী) তোমরা যে ব্যয়ই কর কিংবা যে কোন মানত কর, আল্লাহ নিশ্চয়ই তা জানেন কিন্তু যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সুরা আল-বাকারাহ ২/২৭০)
৬৬৯৬
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশাহ (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এরূপ মানত করে যে, সে আল্লাহর আনুগত্য করিবে, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করে। আর যে মানত করে, সে আল্লাহর না-ফরমানী করিবে, সে যেন তাহাঁর না-ফরমানী না করে।(আঃপ্রঃ- ৬২২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৯)
৮৩/২৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি জাহেলিয়্যাতের যুগে মানত করিল বা কসম করিল যে, সে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করিল।
৬৬৯৭
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, উমার (রাদি.) একবার বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি জাহেলিয়্যাতের যুগে মানত করেছিলাম যে, মাসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করব। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মানত পূর্ণ কর। (আঃপ্রঃ- ৬২৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪০)
৮৩/৩০. অধ্যায়ঃ মানত আদায় না করে কেউ যদি মারা যায়।
ইবনু উমার (রাদি.) এক মহিলাকে আদেশ করেছিলেন যার মা কুবার মাসজিদে সলাত আদায় করিবে বলে মানত করেছিল। তিনি তাকে বলেছিলেন, তাহাঁর পক্ষ থেকে সলাত আদায় করিতে। ইবনু আব্বাস (রাদি.)-ও এরকম বর্ণনা করিয়াছেন।
৬৬৯৮
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.)-কে ইবনু আব্বাস (রাদি.) জানিয়েছেন যে, সাদ ইবনু উবাদাহ আনসারী (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাহাঁর মায়ের কোন এক মানতের ব্যাপারে, যা আদায় করার আগেই তিনি ইনতিকাল করেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) তাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে মানত পূর্ণ করার আদেশ দিলেন। পরবর্তীতে এটাই সুন্নাত হয়ে গেল।(আঃপ্রঃ- ৬২৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪১)
৬৬৯৯
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এক লোক এসে বলিল যে, আমার বোন হাজ্জের মানত করেছিল। কিন্তু সে মারা গেছে। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহাঁর ওপর কোন ঋণ থাকলে তবে কি তুমি তা আদায় করিতে না? লোকটি বলিল, হাঁ। তিনি বললেনঃ কাজেই আল্লাহর হককে আদায় করে দাও। কেননা, আল্লাহর হক আদায় করা আরো বড় কর্তব্য।(আঃপ্রঃ- ৬২৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪২)
৮৩/৩১. অধ্যায়ঃ পাপ কাজের এবং ঐ জিনিসের মানত করা যার উপর তার মালিকানা নেই।
৬৭০০
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহর আনুগত্য করার মানত করে সে যেন তাহাঁর আনুগত্য করে। আর যে লোক আল্লাহর অবাধ্যতা করার মানত করে সে যেন তাহাঁর অবাধ্যতা না করে।(আঃপ্রঃ- ৬২৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৩)
৬৭০১
আনাস (রাঃ হইতে বর্ণিতঃ
. আনাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এ লোক যে নিজের জানকে কষ্টের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে এতে আল্লাহর আদৌ প্রয়োজন নেই। আর তিনি লোকটিকে দেখলেন যে, সে তার দুছেলের উপর ভর করে হাঁটছে। ফাযারীও অত্র হাদীসটি… আনাস (রাদি.) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৪)
৬৭০২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃআঃ) এক লোককে দেখিতে পেলেন। লোকটি একটি দড়ি অথবা অন্য কিছুর সাহায্যে কাবা তাওয়াফ করছে। তিনি দড়িটি কেটে দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৬২৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৫)
৬৭০৩
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) কাবাহর তাওয়াফ কালে এক লোকের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি অন্য আরেক লোককে নাকে দড়ি লাগিয়ে টানছিল (আর সে তাওয়াফ করছিল)। তখন নাবী (সাঃআঃ) নিজ হাতে তার দড়িটি কেটে ফেললেন এবং তাকে হাত দ্বারা টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৬)
৬৭০৪
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সময় নাবী (সাঃআঃ) খুতবা দিচ্ছিলেন। এক লোককে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। লোকেরা বলিল আবু ইসরাঈল। সে মানত করেছে যে, সে দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়া গ্রহণ করিবে না, কারো সাথে কথা বলবে না এবং সওম পালন করিবে। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ লোকটিকে বল- সে যেন কথা বলে, ছায়ায় যায়, বসে এবং তার সওম পূর্ণ করে। [৮০] আবদুল ওয়াহহাব, আইউব ও ইকরামার সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৬২৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৭)
[৮০] নিজেকে অহেতুক কষ্টে নিক্ষিপ্ত করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
৮৩/৩২. অধ্যায়ঃ কেউ নির্দিষ্ট কয়েক দিবসে সওম পালনের মানত করলে আর তার ভিতর কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে গেলে।
৬৭০৫
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমারকে এক লোক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল যে লোক মানত করেছিল যে, সে সওম পালন থেকে কোন দিনই বিরত থাকবে না। আর তার ভিতর কুরবানী বা ঈদুল ফিতরের দিন এসে গেল। তিনি বলিলেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর মাঝে তোমাদের জন্য সবোর্ত্তম আদর্শ রয়েছে। তিনি ঈদুল ফিতরের এবং কুরবানীর দিন সওম পালন করিতেন না। আর তিনি ঐ দিনগুলোতে সওম পালন করা জায়েযও মনে করিতেন না। [৮১] (আঃপ্রঃ- ৬২৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৮)
[৮১] রাসুল (সাঃ) কর্তৃক নির্দেশিত পথেই যাবতীয় ইবাদাত বন্দেগী করিতে হইবে।
৬৭০৬
যিয়াদ ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সময় ইবনু উমার (রাদি.)-এর সাথে ছিলাম। এক লোক তাঁকে জিজ্ঞেস করিল, আমি মানত করেছিলাম যে, যতদিন বাঁচব প্রতি মঙ্গলবার এবং বুধবার সওম পালন করব। কিন্তু এর ভিতর কুরবানীর দিন পড়ে গেল। তিনি বলিলেন, আল্লাহ মানত পুরা করার হুকুম করিয়াছেন; আর কুরবানীর দিন সওম পালন করিতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। লোকটি আবার সেই প্রশ্ন করিল। তিনি এরকমই উত্তর দিলেন, অধিক কিছু বলিলেন না। (আঃপ্রঃ- ৬২৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৯)
৮৩/৩৩. অধ্যায়ঃ কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বক্রী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি?
এবং ইবনু উমার (রাদি.)-এর হাদীস। তিনি বলেন নাবী (সাঃ)-এর কাছে একবার উমর (রাদি.) আরয করিলেন যে, আমি এমন এক টুকরো জমি পেয়েছি যার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন মাল কক্ষনো পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি চাও তবে তার মূল স্বত্ব রেখে তার (উৎপাদন) দান করে দিতে পার। আবু ত্বলহা (রাদি.) নাবী (সাঃ)-এর কাছে আরয করেছিলেন, আমার কাছে বায়রূহা নামক আমার বাগানটি সবার্ধিক প্রিয়, যার দেয়ালটি মাসজিদে নববীর সম্মুখে অবস্থিত।
৬৭০৭
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে খায়বারের যুদ্ধের দিন বের হলাম। আমরা মাল, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড় ছাড়া সোনা বা রুপা গনীমত হিসাবে পাইনি। যুবায়র গোত্রের রিফাআ ইবনু যায়দ নামক এক লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে একটি গোলাম হাদিয়া দিলেন, যার নাম ছিল মিদআম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ওয়াদি উল কুরার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ওয়াদিউল কুরায় পৌছলেন, তখন মিদআম রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সওয়ারীর হাওদা থেকে মালপত্র নামাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ একটি তীর এসে তার গায়ে বিঁধল এবং তাতে সে মারা গেল। লোকেরা বলিল, সে জান্নাত লাভ করুক। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন কক্ষনো না, কসম ঐ সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! খায়বারের যুদ্ধের দিন গনীমতের মাল থেকে বণ্টনের পূর্বে যে চাদরটি সে নিয়ে গিয়েছিল তার গায়ে তা আগুনের শিখা হয়ে জ্বলবে। যখন লোকেরা এটা শুনল, তখন এক লোক একটি বা দুটি ফিতা নিয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে হাযির হল। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে জাহান্নামের একটি ফিতা বা জাহান্নামের দুটি ফিতা। [৮২](আঃপ্রঃ- ৬২৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫০)
[৮২] সম্পদ আত্মসাৎকারীর ভাগ্যে আছে জাহান্নামের আগুন।
Leave a Reply