মানত ও কসম পর্ব
মানত ও কসম পর্ব [১৩] ১৩৬০ -১৩৮২ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্ব-১৩ঃ মানত ও কসম
পরিচ্ছেদ ০১. আল্লাহর নামে শপথ করাদি.র আবশ্যকীয়তা এবং তিনি ব্যতীত অন্যের নামে শপথ করাদি. নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০২. কসম প্রার্থনাকারীর নিয়্ত অনুযায়ী কসম প্রযোজ্য হইবে
পরিচ্ছেদ ০৩. কসম খাওয়া বিষয়ের চেয়ে অন্য বস্তুর মাঝে অধিক কল্যান দেখা গেলে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ০৪. কসমে ইনশা আল্লাহ বলার বিধান
পরিচ্ছেদ ০৫. নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শপথ প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ০৬. মিথ্যা শপথ প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ০৭. উদ্দেশ্যহীন শপথ প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ০৮. আল্লাহর সুন্দর নাম সমূহ প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ০৯. কল্যাণকারীর উদ্দেশ্যে দুয়া করা প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ১০. মানত মানা নিষেধ প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ১১. কতক মানত কুফরে লিপ্ত করে
পরিচ্ছেদ ১২. মানতের কতিপয় প্রকারের বিধানাবলী
পরিচ্ছেদ ১৩. আল্লাহর ঘরে [কাবা] হেঁটে যাওয়ার মানতের বিধান
পরিচ্ছেদ ১৪. মৃত ব্যক্তির মানত পূর্ণ করা প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ১৫. শরীয়ত বিরোধী না হলে নির্দিষ্ট স্থানে মানত পূর্ণ করার বৈধতা
পরিচ্ছেদ –15 কেউ কোন ভাল স্থানে সলাত আদায়ের মান্নত করলে তার চেয়ে উত্তম স্থানে তা আদায় যথেষ্ট
পরিচ্ছেদ –16 মানত পূর্ণ করার জন্য তিনটি মাসজিদের কোন একটির জন্য সফরের প্রস্তুতি নেওয়ার বৈধতা
পরিচ্ছেদ ১৭. মুশরিক অবস্থায় কৃত ইতিকাফের মানত পূর্ণ করার বিধান
পরিচ্ছেদ ০১. আল্লাহর নামে শপথ করাদি.র আবশ্যকীয়তা এবং তিনি ব্যতীত অন্যের নামে শপথ করাদি. নিষেধ
১৩৬০। আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একবার রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে বাহনে চলা অবস্থায় পেলেন যখন তিনি তাহাঁর পিতার নামে কসম করছিলেন। তিনি তাহাদেরকে ডেকে বলিলেনঃ সাবধান! আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করিতে নিষেধ করিয়াছেন। কেউ কসম করিতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নইলে যেন চুপ থাকে। {১৪৬৮}
{১৪৬৮} বোখারী ২৬৭৯, ৩৮৩৬, ৬১০৮, মুসলিম ১৪৪৬, তিরমি্যী ১৫৩৩, ১৫৩৮, ১৫৩৫, নাসাঈ ৩৭৬৬, ৩৭৬৭, আবু দাউদ ৩২৪৯, আহম্মদ ৪৫০৯, মালেক ১০৩৭, দারিমী ২৩৪১। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৬১। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তোমরা তোমাদের পিতার নামে কসম করিবে না , মাতা বা দেব দেবির নামেও না। কেবল আল্লাহর নামেই কসম করিবে। আর আল্লাহর নামে কসম করার ব্যাপারে তোমাদের সত্যবাদী থাকতে হইবে।[মিথ্যা কসম খাবে না]। {১৪৬৯}
{১৪৬৯} আবু দাউদ ৩২৪৮, নাসাঈ ৩৭৬৯ – এর হাদিস সহিহ অথবা হাসান সহিহ তাওযিহুল আহকাম ৭/১০৭। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ০২. কসম প্রার্থনাকারীর নিয়্ত অনুযায়ী কসম প্রযোজ্য হইবে
১৩৬২। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ ক্বসম করার জন্য তোমাকে যে ব্যক্তি চাপ দেয় বা দাবী জানায় তার উদ্দেশ্যের অনুকূলে তোমাকে ক্বসম করিতে হইবে। অন্য রিওয়ায়েতে আছে প্রতিপক্ষের নিয়্যাতের বা উদ্দেশ্যের অনুকূলে [কসম সাব্যস্ত]হইবে। {১৪৭০}
{১৪৭০} মুসলিম ১৬৫৩, তিরমিজি ১৩৫৪, আবু দাউদ ৩২৫৫, ইবনি মাজাহ ২১২০, আহম্মদ ৭০৭৯, দারিমী ২৩৪৯। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. কসম খাওয়া বিষয়ের চেয়ে অন্য বস্তুর মাঝে অধিক কল্যান দেখা গেলে তার বিধান
১৩৬৩। আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, কোন ব্যাপারে যদি শপথ কর আর তা ছাড়া অন্য কিছুর ভিতর কল্যান দেখিতে পাও, তবে নিজ শপথের কাফফারা আদায় করে তা থেকে উত্তমটি গ্রহণ কর।
বোখারীর শব্দে আছে, “ভাল কাজটি কর আর শপথ ভঙ্গের কাফফারা দাও”।
আবু দাউদের এক বর্ণনায় আছে, “শপথ ভঙ্গের কাফফারা দাও, তারপর ভাল কাজটি কর। {১৪৭১}
{১৪৭১} বোখারী ৬৭২২, ৭১৪৬, ৭১৪৭, মুসলিম ১৬৫২, তিরমিজি ১৫২৯, নাসাঈ ৩৭৮২, ৩৭৮৩, ৩৭৮৪, আবু দাউদ ২৯২৯, ৩২৭৭, আহম্মদ ২০০৯৩, দারিমী ২৩৪৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. কসমে ইনশা আল্লাহ বলার বিধান
১৩৬৪। ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ যদি কেউ ইনশাআল্লাহ বাক্য জুড়ে দিয়ে কোন ক্বসম করে তবে সে ক্বসম ভঙ্গকারী হইবে না।[যদিও সে ক্বসমের বিপরীত কাজ করে বসে।]{১৪৭২}
{১৪৭২} আবু দাউদ ৬১৬২, তিরমিজি ১৫৩১, নাসাঈ ৩৭৯৩, ইবনি মাজাহ ২১০৫, ২১০৬, আহম্মদ ৪৪৯৭, ৪৫৬৭, ৫০৭৪, মালেক ১০৩৩, দারিমী ২৩৪২। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শপথ প্রসঙ্গে
১৩৬৫। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর কসম ছিল [আরবি] বাক্য দ্বারা। অর্থাৎ অন্তরের পরিবর্তনকারীর কসম। {১৪৭৩}
{১৪৭৩} বোখারী ৬৬১৭, ৭৩৯১, তিরমিজি ১৫৪০, নাসাঈ ৩৭৬১, আবু দাউদ ৩২৬৩, ইবনি মাজাহ ২০৯২, আহম্মদ ৪৭৭৩, মালেক ১০৩৭, দারিমী ২৩৫০। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. মিথ্যা শপথ প্রসঙ্গ
১৩৬৬। আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! কবীরা গুনাহ সমূহ কী? এর পর উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন। তাতে আরো আছে ,আমি জিজ্ঞেস করলাম, মিথ্যা শপথ কী? তিনি বলিলেনঃ যে ব্যক্তি [শপথের সাহায্যে] মুসলিমের ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়। অথচ সে এ শপথের ক্ষেত্রে মিথ্যাচারী । {১৪৭৪}
{১৪৭৪} বোখারী ৬৬৭৫, ৬৮৭০, তিরমিজি ৩০২১, নাসাঈ ৪০১১, আহম্মদ ৬৮৪৫, দারিমী ২৩৬০। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৭. উদ্দেশ্যহীন শপথ প্রসঙ্গে
১৩৬৭। আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আয়িশা [রাদি.] হতে বর্ণিত যে, [আরবি] আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে মানুষের উদ্দেশ্যবিহীন উক্তি [আরবি] না আল্লাহর শপথ, [আরবি] হ্যাঁ আল্লাহর শপথ ইত্যাদি উপলক্ষে। {১৪৭৫}
{১৪৭৫} বোখারী ৪৬১৩, ৬৬৬৩, আবু দাউদ ৩২৪৫, মালেক ১০৩২। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৮. আল্লাহর সুন্দর নাম সমূহ প্রসঙ্গে
১৩৬৮। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আল্লাহর নিরানব্বই অর্থাৎ এক কম একশটি নাম রয়েছে, যে ব্যক্তি তা মনে রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।
{১৪৭৬} বোখারী এবং মুসলিমে আরো রয়েছে, [আরবি] এক কম একশটি নাম রয়েছে। বোখারী ৬৪১০, ৭৩৯২, মুসলিম ২৬৭৭, তিরমিজি ৩৫০৭, ৩৫০৮, ইবনি মাজাহ ৩৮৬০, ৩৮৬১, আহম্মদ ৭৪৫০, ৭৫৬৮, ৭৮৩৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৯. কল্যাণকারীর উদ্দেশ্যে দুয়া করা প্রসঙ্গে
১৩৬৯। উসমাহ ইবনি যাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যার প্রতি কোন কল্যাণ করা হইবে আর সে ঐ কল্যাণের বিনিময়ে কল্যাণকারীর ইয়দ্দেসগ্যে বলবে [দুআ করিবে] আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন,তবে সে তার চরম গুন বরণনা করলো। {১৪৭৭}
{১৪৭৭} তিরমিজি ২০৩৫। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১০. মানত মানা নিষেধ প্রসঙ্গ
১৩৭০। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মানত করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বলেন, মানত কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এর দ্বারা শুধু কৃপণের কিছু মাল বের হয়ে যায়। {১৪৭৮}
{১৪৭৮} বোখারী ৬৬৯২, ৬৬৯৩, মুসলিম ১৬৩৯, নাসাঈ ৩৮০১, ৩৮০২, ৩৮০৩, আবু দাউদ ৩২৮৭, ইবনি মাজাহ ২১২২, আহম্মদ ৫২৫৩, ৫৫৬৭, দারিমী ২৩৪০। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১১. কতক মানত কুফরে লিপ্ত করে
১৩৭১। উক্ববাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ মানতের [পূরণ না করার] কাফফারা ক্বসম ভঙ্গের কাফফারার অনুরূপ। {১৪৭৯}
{১৪৭৯} মুসলিম ১৬৪৫, তিরমিজি ১৫২৮, নাসাঈ ৩৮৩২, আবু দাউদ ৩৩২৩, আহম্মদ ১৬৮৫০, ১৬৮৬৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১২. মানতের কতিপয় প্রকারের বিধানাবলী
১৩৭২। আবু দাউদে ইবন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যে ব্যক্তি কোন [বস্তুর] নাম উল্লেখ না করে মানত মানবে তার কাফফারা হইবে আল্লাহর নামে ক্বসম করে তা ভেঙ্গে ফেলার কাফফারার অনুরূপ। আর যে পাপ কাজ করার মানত করিবে তার কাফফারা হইবে আল্লাহর নামে ক্বসম করে তা ভাঙ্গার অনুরূপ কাফফারা। আর যে এমন বস্তুর মানত করিবে যা সাধ্যতীত তার কাফফারা হইবে ক্বসম ভঙ্গের কাফফারা অনুরূপ। এর সানাদ সহিহ কিন্তু হাদিস শাস্ত্রের হাফিযগণ হাদিসটির মাওকূফ হওয়াকে অধিক প্রাধান্য দিয়েছেন। {১৪৮০}
{১৪৮০} আবু দাউদ ৩৩২২, ইবন মাজাহ ২১২৮। শাইখ আলবানী জঈফ আবু দাউদ ৩৩২২. তাখরাজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৩৬৯ গ্রন্থদ্বয়ে হাদিসটিকে মারফূ হিসেবে দুর্বল বলেছেন, আর যঈফুল জামে ৫৮৬২ তে দুর্বল বলেছেন। ইরওয়াউল গালীল ৮/২১০ গ্রন্থে বলেন, সঠিক হচ্ছে সনদটি পৌছেছে ইবনি আব্বাস পর্যন্ত। জঈফ ইবনি মাজাহ ৪১৫ গ্রন্থে বলেন, অত্যন্ত দুর্বল তবে মাওকুফ হিসেবে সহিহ। আত্তালিকাত আর রাযীয়্যাহ ১২/৩ গ্রন্থে বলেন, এটি মাওকুফের দোষে দুষ্ট। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৭৩। আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বোখারীতে আছে, যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করার নযর মানবে সে যেন তাহাঁর বিরুদ্ধাচরণ না করে। [তথা নযর পূরপণ না করে] {১৪৮১}
{১৪৮১} এর প্রথমাংশটুকু হচ্ছেঃ [আরবি] যে লোক আল্লাহর আনুগত্য করার মানত করে সে যেন তাহাঁর আনুগত্য করে। বোখারী ৬৬৯৬, নাসাঈ ৩৮০৬, ৩৮০৭, আবু দাউদ ৩২৮৯, ইবনি মাজাহ ২১২৬, আহম্মদ ২৩৫৫৫, ২৩৬২১, মালেক ১০৩১, দারিমী ২৩৩৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭৪। মুসলিমে ইমরান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
পাপ কাজের নযর মানলে তা পূরণ করা যাবে না। {১৪৮২}
{১৪৮২} ঈমাম মুসলিম [রহঃ] একটি লম্বা হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তা একতি মর্যাদাপূর্ণ হাদিস। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিধান রয়েছে। তন্মধ্য হতে একটি হলোঃ নির্দিষ্ট কিছু অবস্থায় মহিলার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত একাকী সফর করার বৈধতা। মুসলিম ১৬৪১, নাসাঈ ৩৮১২, ৩৮৪৭, আবু দাউদ ৩৩১৬, আহম্মদ ১৯৩৫৫, ১৯৩৬২, দারিমী ১৩৩৭, ২৫০৫। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৩. আল্লাহর ঘরে [কাবা] হেঁটে যাওয়ার মানতের বিধান
১৩৭৫। উকবাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার বোন খালি পায়ে হেঁটে বায়তুল্লাহ হাজ্জ করার মানত করেছিল। তিনি [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ পায়ে হেঁটে চলুক, সওয়ারও হোক। {১৪৮৩}
{১৪৮৩} বোখারী এবং মুসলিমে রয়েছে, উকবাহ ইবনি আমির [রাদি.]-বলেন, আমাকে আমার বোন এ বিষয়ে নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হতে ফাতাওয়া আনার নির্দেশ করলে আমি নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। বোখারী ১৮৬৬, মুসলিম ১৬৪৪, তিরমিজি ১৫৪৪, নাসাঈ ৩৮১৪, ৩৮১৫, আহম্মদ ১৬৮৪০, দারিমী ২৩৩৪। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭৬। আহম্মদ হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ অবশ্যই তোমার বোনের কোন কষত দ্বারা আল্লাহ কিছু করবেন না। তোমার বোনকে বল সে ওড়না [চাদর] পরে নেয়। সাওয়ার হোক আর তিন দিন রোযা রাখুক। {১৪৮৪}
{১৪৮৪} বোখারী ১৮৬৬, মুসলিম ১৬৪৪, তিরমিজি ১৫৪৪, নাসাঈ ৩৮১৪, ৩৮১৫, আবু দাউদ ৩২৯৯, ৩৩০৪, ইবনি মাজাহ ২১৩৪, আহম্মদ ১৬৮৪০, ১৬৮৫৫, দারিমী ২৩৩৪। শাইখ আলবানী ইরওয়াতুল গালীলে ২৫৯২ একে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম ইবন্য তাইমিয়্যা নায্রিয়াতুল আকদ ৪০ গ্রন্থে বলেনঃ এই সনদের কোন দোষ জানায় যায় না। ঈমাম শওকানী নাইলুল আওতার ৯/১৪৫ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আবদুল্লাহ বিন যুহর সম্পর্কে একদল ঈমাম সমালোচনা করিয়াছেন। ঈমাম বাইহাকী আস সুনান আল কুবরা ১০/৮০ গ্রন্থে বলেন, এর সনদের ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। আলবানী জঈফ নাসাঈ ৩৮২৪ এ একে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৪. মৃত ব্যক্তির মানত পূর্ণ করা প্রসঙ্গ
১৩৭৭। ইব্নু আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাদ্ ইব্নু উবাদাহ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট জানতে চাইলেন যে, আমার মা মারা গেছেন এবং তার উপর মানৎ ছিল, রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তুমি তার পক্ষ থেকে তা পূর্ণ কর। {১৪৮৫}
{১৪৮৫} বোখারী ২৭৫৬, ২৭৬২, ২৭৭০, মুসলিম ১৬৩৮, তিরমিজি ৬৬৯, ১৫৪৬, নাসাঈ ৩৮১৭, ৩৮১৮, ৩৮১৯, আবু দাউদ ২৮৮২, ৩৩০৭, ইবনি মাজাহ ২১৩২, আহম্মদ ৩০৭০, ৩৪৯৪, মালেক ১০২৫।মহাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৫. শরীয়ত বিরোধী না হলে নির্দিষ্ট স্থানে মানত পূর্ণ করার বৈধতা
১৩৭৮। সাবিত ইবনি যাহহাক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ কোন এক লোক রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর যুগে বুওয়ানা নামক স্থানে একটা উট যবাহ করার জন্য নযর মেরেছিল। সে রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর নিকটে এসে তাকে জিজ্ঞেস করায় তিনি তাকে বলিলেন, ঐ স্থানে কি কোন ঠাকুরের মূর্তি ছিল যার পূজা করা হতো? সে বললো ,না। তিনি বলিলেন, সেখানে কি মুশরিকদের কোন ঈদের মেলা হত? সে বললো, না; তা হত না। এবারে রসুলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তুমি তোমার নযর পূরণ কর, কেননা কোন পাপ কাজের নযর, আত্মীয়তা ছিন্ন করার নযর, মানুষ যার অধিকারী নয় এমন বস্তুর নযর পূরণ করার বিধান নেই। {১৪৮৬}
{১৪৮৬} আবু দাউদ ৩৩১৩। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭৯। আহমাদে কারদাম হইতে বর্ণীতঃ
বর্ণিত এর একটি শাহিদ[ সমার্থবোধক হাদিস আছে] {১৪৮৭}
{১৪৮৭} আহম্মদ ১৫০৩০। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – 16 কেউ কোন ভাল স্থানে সলাত আদায়ের মান্নত করলে তার চেয়ে উত্তম স্থানে তা আদায় যথেষ্ট
১৩৮০। জাবির[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন এক ব্যক্তি মাক্কা বিজয়ের দিন বললোঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি এরূপ মানৎ মেনেছি যে, যদি মাক্কা আপনার হাতে বিজিত হয় তবে আমি বাইতুল মাক্বদিসের মাসজিদে নামায পড়ব। তিনি বললেনঃ তুমি এখানে [মাক্কায়] নামায পড়; তারপর জিজ্ঞাসা করায় বলেঃ এখানে নামায পড়, তারপর তৃতীয় বার জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেনঃ তবে তোমার যা ইচ্ছা [হয় কর]। {১৪৮৮}
{১৪৮৮} আবু দাউদ ৩৩০৫, আহম্মদ ১৪৫০২, ২২৬৮৫, দারিমী ২৩৩৯,হাকিম ৪র্থ খন্ড ৩০৪ ও ৩০৫ পৃষ্ঠা । হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ – মানত পূর্ণ করার জন্য তিনটি মাসজিদের কোন একটির জন্য সফরের প্রস্তুতি নেওয়ার বৈধতা
১৩৮১। আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, তিনটি মাসজিদ ব্যতীত কোন স্থানের যিয়ারাতের জন্য সফরের প্রস্তুতি নেয়া যাবে না। এগুলো হচ্ছে, মাসজিদুল হারাম [কাবা শরীফ] বাইতুল মাক্বদিস ও আমার এ মাসজিদ [ এগুলোর জন্য নির্দিষ্ট নিয়্যাতে যাত্রা করা যায়]। উল্লেখিত শব্দ বোখারীর। {১৪৮৯}
{১৪৮৯} বোখারী ৫৮৬, ১১৮৯, ১৮৬৪, মুসলিম ৮২৭, নাসাঈ ৫৬৬, ৫৬৭, ইবনি মাজাহ ১২৪৯, ১৪১০, আহম্মদ ১০৬৩৯, ২৭৯৪৮, দারিমী ১৭৫৩। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১৭. মুশরিক অবস্থায় কৃত ইতিকাফের মানত পূর্ণ করার বিধান
১৩৮২। ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উমার [রাদি.] নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কে জিজ্ঞেস করেন যে, আমি জাহিলিয়্যা যুগে মাসজিদুল হারামে এক রাত ইতিকাফ করার মানৎ করেছিলাম। তিনি [উত্তরে] বললেনঃ তোমার মানত পুরা কর। {১৪৯০}
{১৪৯০} বোখারী ২০৪২, ২০৪৩, ৩১৪৪, ৪৩২০, মুসলিম ১৬৫৬, তিরমিজি ১৫৩৯, নাসাঈ ৩৮২০, ৩৮২১, আবু দাউদ ৩৩২৫, ইবনি মাজাহ ১৭৭২, আহম্মদ ২৫৭, ৪৫৬৩, দারিমী ২৩৩৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply