মন্দ নাম, সন্তান জন্ম ও অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে

মন্দ নাম, সন্তান জন্ম ও অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে

মন্দ নাম, সন্তান জন্ম ও অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১. অধ্যায়ঃ আবুল কাসিম উপনাম নিষিদ্ধ এবং পছন্দনীয় নামসমুহের বিবরণ
২. অধ্যায়ঃ মন্দ নাম এবং নাফি ইত্যাদি শব্দে নাম রাখা মাকরূহ
৩. অধ্যায়ঃ উত্তম নামে মন্দ নামের পরিবর্তন এবং বার্‌রাহ নামকে যাইনাব, জুওয়াইরিয়াহ্‌ ও অনুরূপ নামে পরিবর্তন করা
৪. অধ্যায়ঃ মালিকুল আমলাক কিংবা মালিকুল মুলূক নাম রাখা নিষিদ্ধকরণ
৫. অধ্যায়ঃ সন্তান জন্ম নিলে নবজাতককে খুরমা [ইত্যাদি] চিবিয়ে তাহাঁর মুখে দেয়া এবং এ উদ্দেশে তাকে কোন নেককার ব্যক্তির নিকট নিয়ে যাওয়া মুস্তাহাব; জন্মের দিন নাম রাখা জায়িয; আব্দুল্লাহ এবং ইবরাহীম ও অন্যান্য নবীগণের নামে নামকরণ করা মুস্তাহাব
৬. অধ্যায়ঃ নিজের ছেলে ছাড়া অন্যকে হে বৎস! বলা জায়িজ এবং আদর প্রকাশের উদ্দেশ্যে তা করা মুস্তাহাব
৭. অধ্যায়ঃ অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে
৮. অধ্যায়ঃ অনুমতি প্রার্থীকে “কে এখানে” প্রশ্ন করা হলে “আমি” বলে উত্তর দেওয়া মাকরুহ
৯. অধ্যায়ঃ পরের ঘরে উঁকি দেয়া নিষিদ্ধকরণ
১০. অধ্যায়ঃ হঠাৎ দৃষ্টি পড়া

১. অধ্যায়ঃ আবুল কাসিম উপনাম নিষিদ্ধ এবং পছন্দনীয় নামসমুহের বিবরণ

৫৪৭৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বাকী নামক স্থানে এক লোক আর এক লোককে ডাক দিল- হে আবুল কাসিম! তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার দিকে দৃষ্টি দিলেন। সে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করিনি; আমি তো অমুককে ডেকেছি। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো; কিন্তু আমার উপনামে তোমরা নামকরণ করো না।{১}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৩]

{১} কুন্ইয়াত- অমুকের বাপ বা অমুকের পুত্র বলে নামকরণ করা।

৫৪৮০. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার নিকটে তোমাদের নামগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পছন্দনীয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৪]

৫৪৮১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মাঝে এক লোকের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নিল। সে তার নাম রাখল মুহাম্মাদ। সে সময় তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে বলিল, আমরা তোমাকে ছাড়ব না রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামে নাম রাখা হলে। এরপর সে তার সন্তানটিকে পিঠে বয়ে নিয়ে চলল এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিয়েছে আমি তার নাম রাখলাম মুহাম্মাদ। এতে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাকে বলছে, আমরা তোমাকে ছাড়ব না রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামে নাম রাখা হলে। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো, কিন্তু আমার উপনাম অনুসারে উপনাম রেখো না। কারণ, আমি একমাত্র [আরবি] [বণ্টনকারী]; [আল্লাহ প্রদত্ত সম্পদ] তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৫]

৫৪৮২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিলেন, আমাদের মাঝে একজন লোকের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিলো। সে তার নাম দিল মুহাম্মাদ। আমরা বললাম, তোমাকে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামের দ্বারা তোমার কুন্ইয়াত রাখতে দিব না, যতক্ষণ তুমি তাহাঁর অনুমতি না নিবে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর সে তাহাঁর নিকট গিয়ে বলিল যে, আমার একটি ছেলে জন্ম নিয়েছে। আমি রসূলুল্লাহর নামে তার নাম রেখেছি। ওদিকে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা সে নাম দিয়ে আমার উপনাম বলিতে অস্বীকৃতি জানায়। [তারা বলিল] যতক্ষণ তুমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অনুমতি গ্রহণ না করো। এরপর তিনি বললেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখো, আমার উপনামে নাম রেখো না। কারণ, আমাকে কাসিম [বণ্টনকারী] হিসেবে পাঠানো হয়েছে; আমি তোমাদের মাঝে বণ্টন করার দায়িত্ব পালন করি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৬]

৫৪৮৩. হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। “কেননা একমাত্র আমাকে বণ্টনাকারীরূপে পাঠানো হয়েছে; “তোমাদের মধ্যে বণ্টন করার দায়িত্ব পালন করি”- উক্তিটুকু বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৭]

৫৪৮৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো এবং আমার উপনাম অনুসারে উপনাম রেখো না। কারণ, আমিই হলাম আবুল কাসিম। তোমাদের মধ্যে ভাগাভাগি করে থাকি। রাবী আবু বকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর বর্ণনায় … স্থানে … রয়েছে। {১}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৮]

{১} শব্দদ্বয় সমার্থক যার অর্থ। উপনাম গ্রহণ করো না।

৫৪৮৫. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোক্ত সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। একমাত্র আমাকে কাসিম [বণ্টনাকারী] রূপে সৃষ্টি করা হয়েছে; তোমাদের মধ্যে আমি বণ্টন করে থাকি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪২৯]

৫৪৮৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক আনসারী লোকের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নিলে সে তার নাম মুহাম্মাদ রাখা ইচ্ছা করিল। তখন সে নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, তিনি বললেনঃ আনসারীরা ভাল কর্ম করেছে। আমার নামে তোমরা নাম রাখো, তবে আমার উপনামে উপনাম রেখো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩০]

৫৪৮৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বাক্‌র ইবনি আবু শাইবাহ্‌, মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না, মুহাম্মাদ ইবনি আম্‌র ইবনি জাবালাহ্‌ ইবনিল মুসান্না ও বিশর্‌ ইবনি খালিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], ইস্‌হাক ইবনি ইব্‌রাহীম হান্‌যালী ও ইস্‌হাক ইবনি মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে ইতোপূর্বে আমরা যাঁদের হাদীস বর্ণনা করেছি তাঁদের হাদীসের হুবহু রিওয়ায়াত করিয়াছেন। শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সানাদে বর্ণিত হাদীসে নায্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন যে, এতে হুসায়ন ও সুলাইমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আরো কিছু বর্ধিত বলেছেন। হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি তো বণ্টনকারী হিসেবে প্রেরিত হয়েছি; আমি তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি। আর সুলাইমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, একমাত্র আমিই বণ্টনকারী, তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩১]

৫৪৮৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে এক লোকের পুত্র জন্ম নিলে সে তার নাম রাখল কাসিম। আমরা বললাম, আমরা তোমাকে আবুল কাসিম [কাসিমের বাপ] উপনামে ডাকব না এবং তোমার চোখ শীতল করব না। সে তারপর নবী [সাঃআঃ] এর সম্মুখে এসে ঐ ব্যাপারটি বলিল। তিনি বলিললেন তোমার সন্তানের নাম রাখো আবদুর রহমান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩২]

৫৪৮৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জাবির [রাদি.] হইতে ইবনি উয়াইনাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি “তোমার চোখ শীতল করব না” এ উক্তি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৩]

৫৪৯০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবুল কাসিম [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার আমার নামে নাম রাখো এবং আমার উপনাম হিসেবে উপনাম রেখো না। আম্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার বর্ণনাতে বলেছেন, আবু হুরায়রা্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণিত এবং তিনি এই উক্তিটি করেননি বলিতে শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৪]

৫৪৯১. আল মুগীরাহ্‌ ইবনি শুবাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি যে সময় নাজরান গমন করলাম, তখন সেখানকার ব্যক্তিরা আমাকে জিজ্ঞেস করিল, আপনারা পড়েন [আরবি] [হে হারূনের বোন] অথচ মূসা [আঃ] ছিলেন ঈসা [আঃ] এর এত দিন আগে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আমি যখন ফিরে আসলাম তখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলিলেন, তারা [ইয়াহূদী-খ্রিষ্টানরা] তাদের পূর্ববর্তী নবী সালিহ্‌গণের নামে [বাচ্চাদের] নাম রাখতো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৩, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৩৫]

২. অধ্যায়ঃ মন্দ নাম এবং নাফি ইত্যাদি শব্দে নাম রাখা মাকরূহ

৫৪৯২. সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের গোলামদের চারটি নাম দ্বারা নামকরণ করিতে বারণ করেছেনঃ আফ্‌লাহ্‌, রাবাহ্‌, ইয়াসার ও নাফি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৬]

৫৪৯৩. সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার ক্রীতদাসের নাম রাবাহ্‌, ইয়াসার, আফ্‌লাহ্‌ ও নাফি রেখো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৭]

৫৪৯৪. সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র নিকট বেশি পছন্দনীয় কালাম চারটি। আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ঘোষণা করছি, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর, [এক] আল্লাহ্‌ ছাড়া আর উপাস্য নেই এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ। এগুলোর যে কোন শব্দ দ্বারা তুমি আরাম্ভ কর, এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই এবং কক্ষনো তোমার ক্রীতদাসের নাম ইয়াসার, রাবাহ্‌, নাজীহ্‌ ও আফ্‌লাহ্‌ রাখবে না। কেননা, তুমি হয়তো বা ডাকবে ওখানে সে আছে কি? আর সে [তখন] সেখানে নাও থাকতে পারে। তখন কেউ বলবে- না এখানে নেই। [এ জবাবে কু-ধারণা তৈরি হইতে পারে]।

[বর্ণনাকারী বলেন], নবী [সাঃআঃ] কেবল এ চারটি নাম বলেছেন। অতঃপর কেউ যেন আমার চাইতে অধিক সংযোজন না করে।

[ই.ফা . ৫৪১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৮]

৫৪৯৫. যুহায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইসহাক্‌ ইবনি ইব্‌রাহীম, উমাইয়াহ্‌ ইবনি বিস্‌তাম, মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না ও ইবনি বাশ্‌শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে মানসুর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে যুহায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সানাদানুসারে হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও রাওহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উল্লিখিত হাদীস যুহায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত সম্পূর্ণ ঘটনার বর্ণনা সম্বলিত হাদীসের অবিকল। তবে শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর হাদীসে শুধু সন্তানের নাম রাখার বর্ণনা আছে। তিনি [চার] এর কথাটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৩৯]

৫৪৯৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইয়ালা, বারাকাহ্‌, আফলাহ, ইয়াসার ও নাফি ইত্যাদি এ রকম নাম রাখা বারণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। অতঃপর তাঁকে আমি লক্ষ্য করলাম যে, এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চুপ রইলেন, কিছু বলিলেন না। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে উঠিয়ে নেয়া হলো এবং তিনিই তা [শক্তভাবে] বারণ করেননি। পরে উমর [রাদি.] তা বারণ করার ইচ্ছা পোষণ করিলেন, তারপর তিনিও তা পরিত্যাগ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৪০]

৩. অধ্যায়ঃ উত্তম নামে মন্দ নামের পরিবর্তন এবং বার্‌রাহ নামকে যাইনাব, জুওয়াইরিয়াহ্‌ ও অনুরূপ নামে পরিবর্তন করা

৫৪৯৭. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আছিয়া [অমান্যকারী] এর নাম পরিবর্তন করে দিলেন এবং বলিলেন, তুমি জামিলা [সুন্দরী]।

বর্ণনাকারী আহ্‌মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সানাদে — এর স্থানে —– দিয়ে উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৯, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪১]

৫৪৯৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উমর [রাদি.] এর এক মেয়েকে [আসিয়াহ্‌] নামে ডাকা হত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নাম রাখলেন, জামীলাহ্‌।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২০, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪২]

৫৪৯৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [উম্মুল মুমিনীন] জুওয়াইরিয়াহ্‌ [রাদি.] এর আসল নাম ছিল বার্‌রাহ [পুণ্যবতী] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখলেন জুওয়াইরিইয়াহ [স্নেহময়ী কিশোরী]। কেননা বার্‌রাহ [পুণ্যবতী] এর নিকট হইতে বের হয়ে এসেছেন- এমন বাক্য তিনি পছন্দ করিতেন না। ইবনি আবু উমর [রাদি.] এর হাদিসে কুরায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে — এর স্থানে —- বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২১, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৩]

৫৫০০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যাইনাব [রাদি.] এর আসল নাম ছিল বার্‌রাহ। তাই বলা হলো, তিনি আত্নশুদ্ধি করেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নামকরণ করিলেন যাইনাব। ইবনি বাশ্‌শার ছাড়া উপরোল্লিখিত রাবীদের বর্ণিত হাদীসের হুবুহু শব্দ বর্ণিত হয়েছে। তবে ইবনি আবী শাইবাহ — এর স্থলে —- বলেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২২, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৪]

৫৫০১. যাইনাব বিনতু উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, পূর্বে আমার নাম বার্‌রাহ্‌ ছিল। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নাম রাখলেন যাইনাব।

তিনি বলেন, যাইনাব বিনতু জাহ্‌শ [রাদি.] তাহাঁর [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ] নিকট আসলো। তাহাঁর [ও] নাম ছিল বাররাহ্‌ তাহাঁর নামও তিনি যাইনাবরেখে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৩, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৫]

৫৫০২. মুহাম্মাদ ইবনি আম্‌র ইবনি আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার কন্যার নাম রাখলাম বার্‌রাহ। সে সময় যাইনাব বিনতু আবু সালামাহ্‌ [রাদি.] আমাকে বলিলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ নাম রাখতে বারণ করিয়াছেন। আমার নাম বার্‌রাহ্‌- [পূণ্যবতী] রাখা হয়েছিল। তাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা স্বয়ং আত্মা পরিশুদ্ধ বলে দাবি করো না। আল্লাহ তাআলাই অধিকতর জানেন তোমাদের মাঝে পুণ্যবানদের সম্পর্কে। অতঃপর তাঁরা বলিল, তবে আমরা তাহাঁর কি নামকরণ করবো? তিনি বলিলেন, তার নাম রাখো যাইনাব।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৪, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৬]

৪. অধ্যায়ঃ মালিকুল আমলাক কিংবা মালিকুল মুলূক নাম রাখা নিষিদ্ধকরণ

৫৫০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর তাআলার নিকট অধিকতর ঘৃণিত নাম ঐ লোকের, যার নাম মালিকুল আমলাক [বাদশার বাদশাহ] রাখা হয়। ইবনি আবু শাইবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বেশি বর্ণনা করিয়াছেন- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে অন্য কোন মালিক অধিপতি নেই”।

আশআসী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, বর্ণনাকারী সুফ্‌ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, এ শব্দ [ফারসী] ভাষায় শাহান শাহ- এর অবিকল।

আর আহ্‌মাদ ইবনি হাম্বাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আবু আম্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কে [আরবি] এর অর্থ জানতে চাইলে তিনি বলেন, [আরবি] চরম নিকৃষ্ট।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৫, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৭]

৫৫০৪. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এগুলো আবু হুরাইরা্‌ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তারপর তিনি কিছু হাদীস বর্ণনা করিলেন। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হলো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে রাগের কারণ, সবচেয়ে ঘৃণিত, অধিকতর ক্ষিপ্রতার সম্মুখীন হইবে সে লোক যার নাম রাখা হয়েছে মালিকুল আম্‌লাক [রাজাধিরাজ সম্রাট], আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কেউ মালিক [সম্রাট] নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৬, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৮]

৫. অধ্যায়ঃ সন্তান জন্ম নিলে নবজাতককে খুরমা [ইত্যাদি] চিবিয়ে তাহাঁর মুখে দেয়া এবং এ উদ্দেশে তাকে কোন নেককার ব্যক্তির নিকট নিয়ে যাওয়া মুস্তাহাব; জন্মের দিন নাম রাখা জায়িয; আব্দুল্লাহ এবং ইবরাহীম ও অন্যান্য নবীগণের নামে নামকরণ করা মুস্তাহাব

৫৫০৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনি আবু তাল্‌হাহ্‌ আনসারী এর জন্মকালে আমি তাঁকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে নিয়ে গেলাম। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্বীয় গায়ে একটি আল্খাল্লা জড়িয়ে তাহাঁর উটের গায়ে তৈল মালিশ করছিলেন। তিনি প্রশ্ন করিলেন, তোমার সাথে খেজুর আছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর আমি তাহাঁর হাতে কয়েকটি খেজুর দিলাম। তিনি তাহাঁর মুখে জড়িয়ে দিয়ে চিবালেন। তারপর শিশুটির মুখ ফাঁক করে তার মুখের ভিতরে দিলেন। শিশুটি তা চুষতে লাগল। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আনসারীদের খেজুরের প্রতি ভালবাসা এবং তিনি তাহাঁর নাম রাখলেন, আব্দুল্লাহ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৭, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৪৯]

৫৫০৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] এর এক পুত্র সন্তান রোগগ্রস্ত ছিল। [একদিন] আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] [তাহাঁর কর্মে] বের হলো এদিকে তাহাঁর বাচ্চাটি মারা যায়। যখন আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] ফিরে আসলেন, তিনি [স্ত্রীকে] প্রশ্ন করিলেন, আমার সন্তান কি করছে? [স্ত্রী] উন্মু সুলায়ম [রাদি.] বলিলেন, সে পুর্বের চেয়ে অধিকতর শান্ত। তারপর তিনি তাঁকে রাতের খাদ্য দিলেন, তিনি তা খেলেন, তারপর তার সাথে মিলিত হলেন। তারপর তিনি অবসর হলে উন্মু সুলায়ম [রাদি.] বলিলেন, শিশুটিকে দাফন করে এসো। যখন সকাল হলো আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে এসে তাঁকে [সব] ঘটনা অবহিত করিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমরা কি গতরাতে মিলিত হয়েছো? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি [দুআ করে] বলিলেন, হে আল্লাহ! তাদের দুজনের জন্যে বারাকাত দিন। তারপর তাহাঁর স্ত্রী একটি সন্তান প্রসব করিলেন। সে সময় আবু তালহাহ্‌ [রাদি.] আমাকে বলিলেন, তাকে [কোলে] তুলে নবী [সাঃআঃ] এর দরবারে নিয়ে যাও। তাকে নিয়ে রসূল [সাঃআঃ] এর নিকট আসলেন। উন্মু সুলায়ম [রাদি.] তাহাঁর সঙ্গে কতক খেজুরও দিলেন। রসূলুলাহ [সাঃআঃ] তাকে [শিশুটিকে] কোলে নেন এবং জিজ্ঞেস করিলেন, তার সাথে কিছু আছে কি? তাঁরা বললো, হ্যাঁ, কয়েকটি খেজুর। তখন নবী [সাঃআঃ] সেগুলো বের করিলেন ও চিবালেন। তারপর তা তাহাঁর মুখ হইতে নিলেন এবং বাচ্চাটির মুখের মধ্যে দিলেন। এরপর তাকে তাহনীক করে তাহাঁর জন্যে দুআ করিলেন এবং তার নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৮, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫০]

৫৫০৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুহাম্মাদ ইবনি বাশ্‌শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … আনাস [রাদি.] হইতে এ ঘটনা সহকারে রাবী ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৯, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫১]

৫৫০৮. আবু মুসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার একটি পুত্র সন্তান ভুমিষ্ঠ হলে আমি তাকে নিয়ে নবী [সাঃআঃ] এর দরবারে উপস্থিত হলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইব্‌রাহীম এবং একটি খেজুর চিবিয়ে তাহাঁর মুখে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩০, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫২]

৫৫০৯. উরওয়াহ্‌ ইবনি যুবায়র ও ফাতিমাহ্‌ বিনতু মুনযির ইবনি যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা বলেন, আসমা বিনতু আবু বাক্‌র [রাদি.] যে সময় হিজরাত করিলেন, সে সময় তিনি আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] কে পেটে ধারণ করছিলেন। কুবায় পৌছলে তিনি আব্দুল্লাহকে প্রসব করিলেন। তারপর প্রসবের পর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে গেলেন যাতে তিনি তাকে [নবজাতককে] খেজুর চিবিয়ে বারাকাত দেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাচ্চাটিকে তাহাঁর নিকট হইতে নিয়ে নিজের কোলে রাখলেন। এরপর একটি খেজুর নিয়ে আসলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আয়িশা [রাদি.] বলেন, তা পাওয়ার আগ পর্যন্ত খুঁজে যোগাড় করিতে আমাদের কিছু সময় দেরী হলো। তারপর তিনি তা চিবিয়ে নিজ মুখে থেকে তার মুখের ভিতরে দিলেন। অতএব তাহাঁর পেটে প্রথম যা ঢুকল তা ছিল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর লালা। আসমা [রাদি.] আরও বলেছেন, তারপর তিনি তাকে হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার জন্যে দুআ করিলেন, আর তার নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ। তারপর সাত কিংবা আট বছর বয়সে সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে বাইআত হওয়ার জন্য এলো। [পিতা] যুবায়র [রাদি.] তাকে তা করার উপদেশ দিয়েছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে এগিয়ে আসতে দেখে মুচকি হাসলেন। তারপর তাকে বাইআত করে নিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৫৩]

৫৫১০. আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি মাক্কায় [থাকাকালে] আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.]-কে গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেন, আমি [মক্কা থেকে] মাদীনায় [হিজরাতের উদ্দেশ্যে] বের হলাম। সে সময় আমার গর্ভকাল পূর্ণ হয়ে আসছে। আমি মাদীনায় এসে কুবায় গমন করলাম এবং তাঁকে প্রসব করলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর খিদমাতে গেলাম। তিনি তাকে [নবজাতককে] তাহাঁর কোলে রাখলেন, এরপর একটি খেজুর আনিয়ে তা চিবালেন, অতঃপর তাহাঁর মুখ থেকে লালাসহ তার [বাচ্চাটির] মুখে দিলেন। অতএব রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর লালাই ছিল প্রথম খাদ্য, যা তার পেটে ঢুকলো। অতঃপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দেয়ার পর তার জন্য দুআ করিলেন এবং তাকে বারাকাত [এর দুআ] দিলেন। এ সন্তানই ছিল [মাদীনায়] হিজরাতের পর ইসলামের প্রথম নবজাতক।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩২, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৪]

৫৫১১. আসমা বিনতু আবু বাক্‌র সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] কে গর্ভে ধারণ করে হিজরাত করে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে পৌছলেন। অতঃপর উসামাহ্‌ [রাদি.] এর হাদীসের অবিকল উল্লেখ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৩, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৫]

৫৫১২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে [নবজাতক] সন্তানদের নিয়ে আসা হত। তাদের জন্য তিনি বারাকাতের দুআ করিতেন এবং খেজুর চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৪, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৬]

৫৫১৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়রকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরবারে [নবজাতক] নিয়ে আসলাম তাকে তাহনীক করার জন্য। অতঃপর আমরা একটি খেজুর চাইলাম। তবে তা সংগ্রহ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়লো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৫, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৭]

৫৫১৪. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুনযির ইবনি আবু উসায়দ [রাদি.] কে তাহাঁর জন্মের সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আনা হলো। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর রানের উপরে তাকে রাখলেন। আবু উসায়দ [রাদি.] [পাশে] উপবিষ্ট। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সামনে কোন বিষয় মনোযোগ দিলেন। আবু উসায়দ [রাদি.] তার সন্তানের ব্যাপারে [কাউকে] আদেশ করিলেন। তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর রানের উপর থেকে উঠিয়ে নিয়ে তাকে ফেরত পাঠিয়ে দিলো। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সজাগ হলেন এবং বলিলেন, বাচ্চাটি কোথায়? আবু উসায়দ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তাকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি প্রশ্ন করিলেন, তার নাম কী? তারা বলিল অমুক- হে আল্লাহর রসূল! তিনি বলিলেন, না; বরং তাহাঁর নাম মুনযির। এভাবে তিনি সেদিন থেকে তাহাঁর নাম মুনযির রেখে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৬, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৮]

৫৫১৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মানুষের মাঝে চরিত্রগুণে সর্বোত্তম ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল, যাকে আবু উমায়র বলে সম্বোধন করা হতো। বর্ণনাকারী বলেন, আমি অনুমান করি তিনি বলেছিলেন যে, সে দুধ ছাড়ানো বয়সের ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখনই [আমাদের ঘরে] আসতেন, তখন তাকে দেখে বলিতেন, হে আবু উমায়র! কি করেছো নুগায়র [চড়ূইছানা]? এ কথা বলে তিনি তাহাঁর সঙ্গে খেলা করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৭, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৫৯]

. অধ্যায়ঃ নিজের ছেলে ছাড়া অন্যকে হে বৎস! বলা জায়িজ এবং আদর প্রকাশের উদ্দেশ্যে তা করা মুস্তাহাব

৫৫১৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, হে বৎস!

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৮, ইসলামিক সেন্টার-৫৪৬০]

৫৫১৭. আল-মুগীরাহ্‌ ইবনি শুবাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট দাজ্জাল সম্বন্ধে আমার চেয়ে বেশি কেউ প্রশ্ন করেনি যত প্রশ্ন আমি করেছি। তিনি আমাকে বলেন, হে বৎস! তার কোন্‌ বিষয় তোমাকে অস্থির করেছে? সে কিছুতেই তোমার অনিষ্ট করিতে পারবে না। মুগীরাহ্‌ বলেন, আমি বললাম, তারা তো ধারণা করে থাকে যে, তার সাথে পানির নহরসমুহ এবং রুটির পাহাড়সমুহ থাকিবে। তিনি বলিলেন, তা আল্লাহ্‌র নিকট তার থেকে সহজতর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬১]

৫৫১৮. ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বাক্‌র ইবনি আবু শাইবাহ্‌ ও ইবনি নুমায়র, সুরায়জ ইবনি ইউনুস, ইসহাক্‌ ইবনি ইব্‌রাহীম ও মুহাম্মদ ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোক্ত সূত্রে হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। কিন্তু তাঁদের মাঝে ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্নিত হাদীস ছাড়া কারো হাদীসে মুগীরাহ্‌ [রাদি.]-এর প্রতি নবী [সাঃআঃ]-এর উক্তিটি “হে বৎস” শব্দের উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬২]

৭. অধ্যায়ঃ অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে

৫৫১৯. বুস্‌র ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] কে বলিতে শুনেছি, আমরা মাদীনার আনসারীদের একটি বৈঠকে উপবিষ্ট ছিলাম। সেময় আবু মূসা [রাদি.] অস্থির হয়ে, অথবা [বর্ণনাকারী বলেছেন] ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আমাদের নিকট এলেন। আমরা বললাম, আপনার সমস্যা কি? তিনি বলিলেন, উমর [রাদি.] আমার নিকট লোক প্রেরন করিলেন, যেন আমি তাহাঁর নিকট যাই। আমি তাহাঁর চৌকাঠে তিনবার সালাম করলাম। তিনি আমাকে উত্তর দিলেন না। তাই আমি ফিরে আসলাম। পরে আমাকে [ডেকে নিয়ে] তিনি বলিলেন, আমাদের নিকট আসতে কোন বিষয় তোমাকে নিষেধ করলো। অতঃপর আমি বললাম, আমি আপনার নিকট এসেছিলাম এবং আপনার চৌকাঠে [দাঁড়িয়ে] তিনবার সালাম করেছিলাম। তবে তারা [গৃহের কেউ] আমাকে সালামের উত্তর দিলেন না। তাই আমি ফিরে গেলাম। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে যদি কেউ তিনবার অনুমতি চায়, আর তাকে অনুমতি দেয়া না হয়, তাহলে সে যেন ফিরে আসে। সে সময় উমর [রাদি.] বলিলেন, এ ব্যাপারে প্রমান দাও। নতুবা তোমাকে প্রহার করব।

সে সময় উবাই ইবনি কাব [রাদি.] বলিলেন, তার সাথে গোষ্ঠীর সবচেয়ে অল্প বয়সের সন্তানই যাবে। আবু সাঈদ [রাদি.] বলিলেন, আমি বললাম, আমি গোষ্ঠীর কনিষ্ঠতম। তিনি বলিলেন, তবে একে নিয়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৩]

৫৫২০. ইয়াযীদ ইবনি খুসাইফাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

কুতাইবাহ্‌ ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … ইয়াযীদ ইবনি খুসাইফাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এবং আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বাড়তি বলেছেন যে, আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, সে সময় আমি তার সাথে উঠে দাঁড়ালাম এবং উমর [রাদি.] এর নিকট গিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৮]

৫৫২১. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা উবাই ইবনি কাব [রাদি.] এর নিকট একটি মাজলিসে ছিলাম। তখন আবু মূসা আশআরী [রাদি.] ক্রোধাম্বিত অবস্থায় এসে দাঁড়িয়ে বলিলেন, আমি তোমাদের আল্লাহ্‌র শফথ দিয়ে বলছি, তোমাদের মাঝে কেউ কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছ যে, অনুমতি গ্রহণ তিনবার, এতে যদি তোমাকে অনুমতি দেয়া হয়, ভাল, নতুবা তুমি প্রত্যাবর্তন কর। উবাই [রাদি.] বলিলেন, তাতে কী হয়েছে? তিনি বলিলেন, গতকাল [খলীফা] উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.] এর নিকট আমি তিনবার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তারপর আমি প্রত্যাবর্তন করলাম। পরদিন তাহাঁর নিকট গমন করলাম এবং তাহাঁর নিকট প্রবেশ করে তাঁকে সংবাদ দিলাম যে, আমি গতকাল এসেছিলাম এবং তিনবার সালাম করে [উত্তর না পেয়ে] চলে গিয়েছিলাম। তিনি বলিলেন, আমরা তোমার শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা তখন ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু যে পর্যন্ত না তোমাকে অনুমতি দেয়া হয় সে পর্যন্ত তুমি তা চাইতে থাকলে না কেন? তিনি বলিলেন, আমি তো সে অনুমতি চেয়েছি, যেরূপ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছি। উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, আল্লাহ্‌র শপথ! তোমার পিঠে ও পেটে আঘাত করব; অথবা তুমি এমন ব্যক্তি পেশ করিবে, যে এ ব্যাপারে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।

সে সময় উবাই ইবনি কাব [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ্‌র শপথ! আমাদের মধ্যে সবচেয়ে অল্প বয়সের লোকই তোমার সঙ্গে যাবে; তিনি বলেন, হে আবু সাঈদ! দাঁড়াও, অতঃপর আমি দাঁড়ালাম এবং উমর [রাদি.] এর নিকট এসে বললাম, অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এ কথা বলিতে শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৫]

৫৫২২. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু মুসা [রাদি.] উমর [রাদি.] এর দরজায় এসে অনুমতি চাইলেন। উমর [রাদি.] [শব্দ শুনে মনে মনে] বলিলেন, একবার হলো। অতঃপর দ্বিতীয়বার অনুমতি চাইলেন। উমর [রাদি.] বলিলেন, দুবার হলো। অতঃপর তৃতীয়বার অনুমতি চাইলেন। উমর [রাদি.] বলিলেন, তিনবার হলো। অতঃপর তিনি প্রত্যাবর্তন করিলেন। পরে {উমর [রাদি.]} তাহাঁর পশ্চাতে লোক প্রেরণ করে তাকে ডেকে নিয়ে বলিলেন, এটি যদি এমন হয়, যা তুমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে সংরক্ষণ করেছ, তাহলে তা উপস্থাপন করো। নতুবা আমি তোমাকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিব। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, সে সময় তিনি আমাদের নিকট এসে বলিলেন, তোমরা কি জান না যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ অনুমতি গ্রহণ তিনবার। বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা তখন [এ কথা শুনে] হাসাহাসি করিতে লাগল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, তোমাদের নিকট একজন মুসলিম ভাই আগমন করিয়াছেন, যাকে ভয় দেখানো হয়েছে, আর তোমরা হাসছ? [তাঁকে বললাম] চলুন! এ শাস্তিতে আমি আপনার অংশীদার হবো। সে সময় তিনি [আমাকে সাথে নিয়ে] তার নিকট গিয়ে বলিলেন, এ যে আবু সাঈদ … [আমার সাক্ষী]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৬]

৫৫২৩. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না এবং ইবনি বাশ্‌শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আহ্‌মাদ ইবনি খিরাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে আবু মাসলামাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে নেয়া বিশ্‌র ইবনি মুফায্‌যাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৭]

৫৫২৪. উবায়দ ইবনি উমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

[খলীফা] উমর [রাদি.] এর নিকট আবু মূসা [রাদি.] তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। তখন [উত্তর না পেয়ে] তিনি যেন তাঁকে ব্যতিব্যস্ত মনে করে চলে গেলেন। সে সময় উমর [রাদি.] বলিলেন, তুমি কি আবদুল্লাহ ইবনি কায়স [আবু মূসা] এর শব্দ শোননি? তোমরা তাকে অনুমতি দাও! সে সময় তাকে উমারের নিকট ডাকা হলো। তখন তিনি তাঁকে বলিলেন, এ রকম করিতে তোমাকে কোন্‌ বিষয় তোমাকে উৎসাহিত করেছে? তিনি বলিলেন, আমাদের এ রকম করার আদেশ করা হয়েছে। তিনি বলিলেন, নিশ্চয়ই তুমি এ বিষয়ে সাক্ষী হাজির করিবে, নতুবা অবশ্যই আমি এমন করবো অর্থাৎ শাস্তি দিবো। তিনি বেরিয়ে গিয়ে আনসারীদের এক বৈঠকে পৌছলেন। তাঁরা বলিলেন, আমাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সের লোকই এ ব্যাপারে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।

তখন আবু সাঈদ [রাদি.] উঠলেন এবং বলিলেন, আমাদের এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়। তখন উমর [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর এ ব্যাপারটি আমার নিকট অজ্ঞাত রয়েছে। [কারন] বাজারের বাণিজ্যে আমাকে এ ব্যাপারে উদাসীন রেখেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৮]

৫৫২৫. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

মুহাম্মদ ইবনি বাশ্‌শার ও হুসায়ন ইবনি হুরায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সূত্রে হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু বর্ণনাকারী নায্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্নিত হাদীসে বাজারের ক্রয়-বিক্রয় আমাকে এ বিষয় হইতে উদাসীন রেখেছে বাক্যটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৬৯]

৫৫২৬. আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বুরদাহ্‌ [রাদি.] এর সানাদে আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্নিত। আবু বুরদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু মূসা [রাদি.] উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.] এর নিকট এসে বলিলেন, আস্‌সালামু আলাইকুম- এ [আমি] আবদুল্লাহ ইবনি কায়স। তবে তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন না। তখন [পুনরায়] বলিলেন, আস্‌সালামু আলাইকুম- এ যে, আবু মূসা। আস্‌সালামু আলাইকুম- এ যে আশআরী। তারপর [উত্তর না পেয়ে] চলে গেলেন।

সে সময় উমর [রাদি.] বলিলেন, [তাকে] আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। আমার নিকট ফিরিয়ে নিয়ে আসো। প্রত্যাবর্তন শেষে তিনি বলিলেন, কিসে তোমাকে ফিরিয়ে দিল, হে আবু মূসা? আমরা কোন্‌ কর্মে মশগুল ছিলাম। তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমি বলিতে শুনেছি- অনুমতি প্রার্থনা তিনবার। এতে তোমাকে অনুমতি দেয়া হলে ভাল, নতুবা ফিরে যাবে। উমর [রাদি.] বলিলেন, এ ব্যাপারে অবশ্যই তুমি আমার নিকট প্রমাণাদি নিয়ে আসবে। নতুবা আমি এমন করব, তেমন করব, [সাজা দিব]। তখন আবু মূসা [রাদি.] ফিরে গেলেন। উমর [রাদি.] বলিলেন, প্রমান যোগাড় করিতে পারলে, বিকালে তাকে তোমরা মিম্বারের নিকট দেখিতে পাবে, আর যদি প্রমান না পায়, তাহলে তোমরা তাঁকে দেখিতে পাবে না। বিকালে তিনি এলে তাঁরা তাঁকে [মিম্বারের নিকট দেখিতে] পেল। উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আবু মূসা! কি বলছ? প্রমান পেয়েছ? তিনি বলিলেন, হাঁ- উবাই ইবনি কাব! তিনি বলিলেন, ইনি ন্যায়পরায়ণ! তারপর উবাই ইবনি কাব [রাদি.] কে লক্ষ্য করে বলিলেন- হে আবু তুফায়ল!{২৩} ইনি কী বলেন? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এমন বলিতে আমি শুনেছি- হে ইবনিল খাত্তাব! আপনি কখনো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সহাবীগণের জন্য শাস্তি স্বরূপ হয়ে পরবেন না। তিনি বলিলেন, সুব্‌হানাল্লাহ্‌! [আমি তা কখনো চাই না]। আমি তো একটি বিষয় শোনার পর সে ব্যাপারে সুনিশ্চিত হইতে আমার আগ্রহ প্রকাশ করেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭০]

৫৫২৭. তাল্‌হাহ্‌ ইবনি ইয়াহ্‌ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমর ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি আবান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … তাল্‌হাহ্‌ ইবনি ইয়াহ্‌ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, উমর [রাদি.] [উবাইকে উদ্দেশ্য করে] বলিলেন, হে আবুল মুন্‌যির! আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এ কথাটি শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। [তিনি আরো বলেন] হে ইবনিল খাত্তাব! আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সহাবীদের প্রতি শাস্তিদাতা স্বরূপ হইবেন না। তবে তিনি উমর [রাদি.] এর সুবহানাল্লাহ্‌ ও পরবর্তী উক্তিটি বর্ণনা করেন নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭১]

৮. অধ্যায়ঃ অনুমতি প্রার্থী কে “কে এখানে” প্রশ্ন করা হলে “আমি” বলে উত্তর দেওয়া মাকরুহ

৫৫২৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকটে এসে তাঁকে ডাকলাম। নবী [সাঃআঃ] প্রশ্ন করিলেন, এ কে? আমি বললাম, আমি। বর্ণনাকারী {জাবির [রাদি.]} বলেন, তখন তিনি বের হয়ে এলেন আর বলছিলেন, আমি! আমি!!

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭২]

৫৫২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট অনুমতি চাইলাম। তিনি বলিলেন, এ কে? আমি বললাম, আমি। সে সময় নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি! আমি!!

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৩]

৫৫৩০. শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইসহাক্ ইবনি ইব্‌রাহীম, মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না ও আবদুর রহমান ইবনি বিশ্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সবাই শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে উল্লিখিত সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাদের বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি যেন তা [আমি আমি বলা] পছন্দ করিলেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৪]

৯. অধ্যায়ঃ পরের ঘরে উঁকি দেয়া নিষিদ্ধকরণ

৫৫৩১. সাহ্‌ল ইবনি সাদ আস-সাইদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দরজার একটি ছিদ্র দিয়ে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট একটি [মাথার চুল আঁচড়ানো] চিরুনি ছিল, যা দ্বারা তিনি তাহাঁর মাথা আচরাচ্ছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে দেখিতে পেয়ে বললেনঃ আমি যদি জানতাম যে, তুমি আমাকে দেখছ তাহলে নিশ্চয়ই তা দ্বারা তোমার চোখে খোঁচা দিতাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরও বললেনঃ চোখের জন্যেই তো অনুমতির বিধান করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৫]

৫৫৩২. শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

সাহ্‌ল ইবনি সাদ আনসারী [রাদি.] তাঁকে বলেছেন, এক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর ঘরের একটি দরজার ছিদ্র দিয়ে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর হাতে একটি চিরুনি ছিল, যা দ্বারা তিনি মাথার চুল আচড়াচ্ছিলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, যদি আমি জানতাম যে, তুমি দেখছো, তাহলে সেটি দ্বারা তোমার চোখে খোঁচা দিতাম। চোখের জন্যই আল্লাহ অনুমতি নেয়ার বিধান করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৬]

৫৫৩৩. সাহ্‌ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বাক্‌র ইবনি আবু শাইবাহ্‌, আম্‌র আন্‌ নাকিদ, যুহায়র ইবনি হার্‌ব, ইবনি আবু উমর ও আবু কামিল জাহ্‌দারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … সাহ্‌ল ইবনি সাদ [রাদি.] এর সানাদে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে আল্‌-লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের হুবুহু বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৭]

৫৫৩৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক লোক নবী [সাঃআঃ] এর কোন এক হুজরার ভিতরে তাকাল। তখন তিনি তাকে দেখে একটি তীরের ফলক অথবা বর্ণনাকারীর সংশয় কয়েকটি ফলক নিয়ে দাঁড়ালেন। আমি যেন [এখনও ঐ দৃশ্য] দেখছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে খোঁচা দেয়ার উদ্দেশে সুযোগ সন্ধান করছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৮]

৫৫৩৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক কোন গোত্রের ঘরে তাদের নির্দেশ ছাড়া উঁকি মারে, তাহলে তার চোখে আঘাত করা তাদের জন্য জায়িয হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৭৯]

৫৫৩৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক যদি বিনা অনুমতিতে তোমার প্রতি উঁকি দেয় আর তুমি তাকে পাথর মেরে তার চোখ ফুঁড়ে দাও, তাতে তোমার কোন গুনাহ হইবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৮০]

১০. অধ্যায়ঃ হঠাৎ দৃষ্টি পড়া

৫৫৩৭. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট আচমকা নজর পড়া ব্যাপারে প্রশ্ন করলাম। তিনি আমাকে আদেশ করিলেন, যেন আমি আমার দৃষ্টি দ্রুত ফিরিয়ে নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৮১]

৫৫৩৮. ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইসহাক্‌ ইবনি ইব্‌রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোল্লিখিত সূত্রে হুবুহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৪৮২]

Comments

One response to “মন্দ নাম, সন্তান জন্ম ও অনুমতি গ্রহন প্রসঙ্গে”

Leave a Reply