মন্দ চরিত্র সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন Bulugul Maram
মন্দ চরিত্র সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -৪ঃ মন্দ চরিত্র সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন
১৪৭৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন ,রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন,তোমরা নিজেদেরকে হিংসার অনিষ্ট হতে রক্ষা কর। কারন হিংসা সৎ কর্মগুলোকে ঐভাবেই খেয়ে ফেলে [ বিনষ্টকরে] যেভাবে আগুন কাঠ , খড় পুড়িয়ে ধ্বংস করে। {১৫৯০}
{১৫৯০} ঈমাম সুয়ূত্বী তাহাঁর আল জামেউস সগীর ২৯০৮ এ হাদিসটিকে জঈফ বলেছেন। শাইখ বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম ৭৯১ গ্রন্থেও অনুরূপ বলেছেন। তিনি তাহাঁর আত্ তুহফাতুল কারীমাহ ১৩৯ গ্রন্থে বলেন, এখানে একজন অপরিচিত ব্যক্তি রয়েছে। এতে ঈসা বিন আবু ঈসা আল হান্নাত রয়েছে যিনি মাতরূক। শাইখ আলবানী জঈফ আবু দাউদ, ৪৯০৩, সিলসিলা যঈফা ১৯০২, যঈফা জামে ৩৯৩৫এ হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী আবু হুরাইরাহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদিসকে তাহকীক রিয়াযুস স্বলিহীন ১৫৭৭ গ্রন্থে বলেন, এতে একজন বর্ণনাকারী আছে যার নাম উল্লেখ করা হয়নি। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪৮০. ইবনি মাজাতে আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এর সনদে একজন মাতরূক রাবী রয়েছে।
মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪৮১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। {১৫৯১}
{১৫৯১} বোখারী ৬১১৪, মুসলিম ২৬০৯, আহম্মদ ৭১৭৮, ৭৬৮৪, ১০৩২৪, মালেক। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যুল্ম কিয়ামতের দিন অনেক অন্ধকারের রূপ ধারণ করিবে। {১৫৯২}
{১৫৯২} মুসলিম তাহাঁর বর্ণনায় [আরবী] শব্দটি বৃদ্ধি করেছনে। বোখারী ২৪৪৭, মুসলিম ২৫৭৯, তিরমিজি ২০৩০, আহম্মদ ৫৬২৯, ৬১৭৫ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যুলুম করা হতে নিজেকে বাঁচাও, কেননা, ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে যুলুম কঠিন অন্ধকাররূপে আত্মপ্রকাশ করিবে। আর কৃপনতা হতেও নিজেকে বাঁচাও, কারণ ওটা আগের জাতিগুলোকে ধ্বংস করেছে। {১৫৯৩}
{১৫৯৩} মুসলিম ২৫৭৮, আহম্মদ ১৪০৫২ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৪. মাহমূদ ইবনি লাবীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের ব্যাপারে আমার সর্বাপেক্ষা ভয়ের বস্তু যা আমি ভয় পাচ্ছি তা হচ্ছে ছোট শির্ক- রিয়া [অর্থাৎ লোক দেখানো ধর্মকর্ম]। {১৫৯৪}
{১৫৯৪} আহম্মদ ২৩১১৯,২৭৭৪২। হাদিসটির সানাদ উত্তম; তাওযিহুল আহকাম ৭/৪০০. মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৪৮৫,. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ ১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে; ২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং ৩. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। {১৫৯৫}
{১৫৯৫} বোখারী ৩৩, ২৬৮২, ২৭৪৯, ৬০৯৫, মুসলিম ৫৯, তিরমিজি ২৬৩১, নাসাঈ ৫০২১, আহম্মদ ৮৪৭০, ৮৯১৩ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৬.আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সহিহ হাদিস গ্রন্থ দুটিতে আছে, ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে। {১৫৯৬}
{১৫৯৬} বোখারীর বর্ণনায় রয়েছে, নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ [আরবী] চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকিবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে; ২. কথা বললে মিথ্যা বলে; ৩ অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; ৪. বিবাদে লিপ্ত অশ্লীলভাবে গালাগালি দেয়। বোখারী ৩৪, ২৪৫৯; ৩১৭৮, মুসলিম ৫৮, তিরমিজি ২৬৩২, নাসাঈ ৫০২০, আবু দাঊদ ৪৬৮৮, আহম্মদ ৬৭২৯, ৬৮২৫ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তাকে হত্যা করা কুফুরী। {১৫৯৭}
{১৫৯৭} বোখারী ৪৮, ৭০৭৬, ৬০৪৪, মুসলিম ৬৪, তিরমিজি ১৯৮০, ২৬৩৪, ২৬৩৫, নাসাঈ ৩১০৫, ৪১০৬, ৪১০৮। ইবনি মাজাহ ৬৯, ৩৯৩৯, ৩৮৯৩ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। {১৫৯৮}
{১৫৯৮} বোখারী ৫১৪৩, ৬০৬৪, ৬০৬৬, ৬৭২৫, মুসলিম ১৪১৩, ২৫৬৩, তিরমিজি ১৯৮৮, নাসাঈ ৩২৩৯, ৩২৪০, আবু দাউদ ২০৮০, ইবনি মাজাহ ১৮৬৭, ২১৭৪, আহম্মদ ৭২৯২, ৭৬৪৩, মালেক ১১১১, ১৬৮৪, দারিমী ২১৭৫। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৮৯. মাকিল ইব্নু ইয়াসার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব লাভ করিল এবং তাহাঁর মৃত্যু হল এ হালতে যে, সে তার বিষয়ে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। {১৫৯৯}
{১৫৯৯} বোখারী ৬৯২, ৭১৭৫, আবু দাউদ ৫৮৮। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯০. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের উপর শাসন কর্তৃত্বের অধিকারী হওয়ার পর তাহাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করিবে, তুমিও তার প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর। {১৬০০}
{১৬০০} মুসলিম ১৮২৮, আমমাদ ২৩৮১৬, ২৪১০১, ২৫৭০৫ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন যুদ্ধ করিবে, তখন সে যেন মুখমন্ডলে আঘাত করা হতে বিরত থাকে। {১৬০১}
{১৬০১} বোখারী ২৫৫৯, মুসলিম ২৬১২, আহম্মদ ৭২৭৯, ৭৩৭২, ২৭৩৪১ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বললঃ আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি রাগ করো না। লোকটি কয়েকবার তা বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] প্রত্যেক বারেই বললেনঃ রাগ করো না। {১৬০২}
{১৬০২} বোখারী ৬১১৬, তিরমিজি ২০২০, আহম্মদ ২৭৩১১, ৯৬৮২। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৩. খাওলাহ্ আনসারীয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কিছু লোক আল্লাহ্র দেয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাহাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত। {১৬০৩}
{১৬০৩} বোখারী ৩১১৮, তিরমিজি ২৩৭৪, আমমাদ ২৬৫১৪, ২৬৫৮৩ । [আরবী] এর অর্থঃ অন্যায়ভাবে মুসলমানদের সম্পদ হস্তক্ষেপ করে। উক্ত হাদীসে পৃষ্ঠপোষকদের অন্যায়ভাবে কোন সম্পদ গ্রহণ করা এবং এর হকদারদের মানা করা থেকে নিবারণ করা হচ্ছে। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৪. আবু যার্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, তাহাঁর প্রভু আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুম করাকে নিজের উপর হারাম করেছি! এবং ওটা তোমাদের মধ্যেও হারাম করে দিয়েছি। অতএব, তোমরা পরস্পরের প্রতি যুলুম করো না। {১৬০৪}
{১৬০৪} মুসলিম ২৫৭৭, তিরমিজি ২৪৯৫, ইবনি মাজাহ ৪২৫৭, আহম্মদ ২০৮৬০, ২০৯১১, দারিমী ২৭৮৮ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কি জান গীবাত কাকে বলে? উপস্থিত সাহাবীগণ বলেচেহ, আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ] অধিক জানেন। তিনি বললেনঃ তোমার ভাই যে কথা তার প্রসঙ্গে বলা অপছন্দ মনে করে তার অসাক্ষাতে তা বলার নাম গীবাত। কেউ বললোঃ আপনি কি মনে করেন আমি যা বলছি তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্য থাকে তাহলে তুমি তার গীবাত করলে, আর যদি তার মধ্যে তা না থাকে তুমি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিলে। {১৬০৫}
{১৬০৫} মুসলিম ২৫৮৯, তিরমিজি ১৯৩৪, আবু দাউদ ৪৮৩৪, আহম্মদ ৭১০৬, ৮৭৫৯, দারিমী ২৭১৪ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করো না, [ক্রয় করার ভান করে] মূল্য বৃদ্ধি করে ধোঁকা দিও না। একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করিবে না। একে অপরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন [অবজ্ঞা প্রকাশ] করিবে না। তোমাদের একজনের সাওদা করা শেষ না হলে ঐ বস্তুর সাওদা বা কেনা-বেচার প্রস্তাব করিবে না। হে আল্লাহ্র বান্দাগণ! তোমরা পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করিবে না, অসম্মান করিবে না, তুচ্ছ ভাববে না। ধর্ম ভীরুতা এখানে-এটা বলার সময় তিনি স্বীয় বক্ষস্থলের প্রতি তিনবার ইঙ্গিত করেছিলেন। কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ জ্ঞান করাটা মন্দ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট [অর্থাৎ এরূপ তুচ্ছ জ্ঞান প্রদর্শন দ্বারা পাপ কার্য হওয়া সুনিশ্চিত।] এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে খুন করা, তাহাঁর মাল গ্রাস করা ও সম্মানে আঘাত দেয়া হারাম। {১৬০৬}
{১৬০৬} বোখারী ৫১৪৪, ৬০৬৬, ২৫৬৩, ২৫৬৪, মুসলিম ২৫৬৩, ২৫৬৪, তিরমিজি ১১৩৪, ১৯৮৮, নাসাঈ ৩২৩৯, ৪৪৯৬, আবু দাউদ ৩৪৩৮, ৩৪৪৩, ইবনি মাজাহ ১৮৬৭, ২১৭২,২১৭৪, আহম্মদ ৭৬৭০, ৭৮১৫, মালেক ১৩৯১, ১৬৮৪ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৭. কুত্ববাহ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ جَنِّبْنِي مُنْكَرَاتِ الْأَخْلَاقِ، وَالْأَعْمَالِ، وَالْأَهْوَاءِ، وَالْأَدْوَاءِ
হে আল্লাহ! আমাকে ইসলাম গর্হিত স্বভাব ও মন্দ কাজ হতে, মন্দ কামনা হতে ও ব্যাধি হতে দূর রাখো। {১৬০৭}
{১৬০৭} তিরমিজি ৩৫৯১, হাকিম ১ম ক্ষন্ড ৫৩২ পৃষ্ঠা। [আরবী] শব্দের বহুবচন। এর অর্থ হচ্ছেঃ রোগ-ব্যাধিসমূহ। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪৯৮. ইবনি আবাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তুমি তোমার মুসলিম ভাই এর সাথে ঝগড়া করিবে না, তাকে ঠাট্টা করিবে না ও তার সাথে ওয়াদা করে তা খিলাফ করিবে না। {১৬০৮}
{১৬০৮} তিরমিজি ১৯৯৫ । আবু নাইম তাহাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া ৩/৩৯৪ পৃষ্ঠায় বলেন, ইকরামার হাদিস গারীব। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাহাঁর তুহফাতুল আহওয়ারী ৫/৪০৩ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে লাইস বিন আবু সুলাইম রয়েছে। তার সম্পর্কে ইবনি হাজার আসকালানী বলেন, শেষ জীবনে তিনি হাদিস এলোমেলোভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, পার্থক্য করা যায় না এ হাদিস তার জীবনের কোন সময়ের তাই তার হাদিস বর্জন করা হয়েছে। শাইখ আলবানী জঈফ আল আদাবুল মুফরাদ ৫৯, তাখরীফ মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৮১৮, যঈফুল জামে ৬২৭৪, জঈফ তিরমিজি ১৯৯৫ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন, ঈমাম সুয়ূত্বী তাহাঁর আল জামেউস সগীর ৯৮৬৫ গ্রন্থেও অনুরূপ বলেছেন। ইবনি উসাইমীনও শরহে বুলুগুল মারাম ৬/৩৯১ গ্রন্থেও এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪৯৯. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুমিনের মধ্যে দুটো চরিত্র একত্রিত হয় না, কৃপনতা ও মন্দ চরিত্র। {১৬০৯}
{১৬০৯} এই হাদিসটির হুকুমে দুদল মুহাদ্দিসীন দু ধরনের মত পাওয়া যায়। এক দলের মধ্যে যারা রয়েছেন, তাহাদের মধ্যে ঈমাম মুনযিরী তাহাঁর তারগীর ও তারহীর [৩/৩৩৯] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। ঈমাম সুয়ূতী তাহাঁর আল জামেউস সগীর [৩৯১৫] গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। শাইখ আলবানী তাহাঁর সহিহ তারগীব [২৬০৮] গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ লিগাইরিহী বলেছেন। পক্ষন্তরে দ্বিতীয় মতে হাদিসটিকে যারা দুর্বল বলেছেন তাহাদের মধ্যে শাইখ আলবানীই আবার সিলসিলা যঈফা [১১১৯], যঈফুল জামে [২৮৩৩], তাখরীফ মিশকাতুল মাসাবীহ [১৮১২], জঈফ তিরমিজি [১৯৬২] গ্রন্থসমূহে হাদিসটি দুর্বল বলেছেন। ঈমাম দারাকুতনী তাহাঁর লিসানুল মীযানুল [২/৭৮] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটি আবু হুরাইরাহ [রাদি.] সূত্রে বর্ণনা করে বলেন, হাদিসটি প্রমাণিত নয়। ইবনি আবদুল বার তাহাঁর আত তামহীদ [১৬/২৫৪] গ্রন্থে আবু হুরাইরাহ সূত্রে বর্ণিত এ হাদিসটিকে জাল বলে অভিহিত করিয়াছেন। ঈমাম মিযযী তাহাঁর তাহযীবুল কামাল [৯/৮৯] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে সাদাকাহ বিন মূসা নামক বর্ণনাকারী রয়েছে, যাকে ইবনি মুঈন, ঈমাম আবু দাউদ, ঈমাম নাসাঈ দূর্বল বলেছেন। ইবনি হাজারও তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ [২/২৮০] গ্রন্থে বলেছেন, এ হাদিসটি সাদাকাহ বিন মূসা এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, আর তিনি দুর্বল বর্ণনাকারী। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫০০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গালিদাতাহাদের মধ্যে প্রথম গালিদাতার উপর যাবতীয় গালির পাপ বর্তাকে থাকে, যতক্ষণ অত্যাচারিত দ্বিতীয় ব্যক্তি সীমালংঘন না করে। [গালিদানে প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে না যায়।] {১৬১০}
{১৬১০} মুসলিম ২৪৮৭, ২৪৮৮, বোখারী ৪১৪১, ৪১৪৬ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫০১. আবু সিরমাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের ক্ষতি করিবে প্রতিদানে আল্লাহ তাআলাও তার ক্ষতি করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে কষ্ট দেবে আল্লাহ্ তার প্রতিদানে তাকে কষ্ট দেবেন। {১৬১১}
{১৬১১} আবু দাউদ ৩৬৩৫, তিরমিজি ১৯৪০, ইবনি মাজাহ ২৩৪২, আহম্মদ ১৫৩২৮ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫০২. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা অশ্লীলভাষী, নির্লজ্জ ইতরকে ঘৃণা করে থাকেন। {১৬১২}
{১৬১২} তিরমিজি ২০০ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫০৩. ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, মুমিন তিরস্কারকারী, অভিসম্পাত দানকারী, অশ্লীলভাষী, নির্লজ্জ ইতর প্রকৃতির হয় না। {১৬১৩}
{১৬১৩} তিরমিজি ১৯৭৭, আহম্মদ ৩৮২৯, ৩৯৩৮ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫০৪. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ, তারা স্বীয় কর্মফল পর্যন্ত পৌছে গেছে। {১৬১৪}
{১৬১৪} বোখারী ১৩৯৩, ৬৫১৬, নাসাঈ ১৯৩৬, আবু দাউদ ৪৮৯৯, আহম্মদ ২৪৯৪২, দারিমী ২৫১১ । মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫০৫. হুযাইফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ চোগলখোর কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করিবে না। {১৬১৫}
{১৬১৫} বোখারী ৬০৫৬, মুসলিম ১০৫, তিরমিজি ২০২৬, আবু দাউদ ৪৮৭১, আহম্মদ ২২৭৩৬, ২২৭৯৪, [আরবী] শব্দের অর্থ; [আরবী] অর্থাৎ চোগলখোর ব্যক্তি। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫০৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার ক্রোধ সংবরণ করে [ক্রোধের বশে কোন অঘটন না ঘটায়] আল্লাহ্ তাকে শাস্তি প্রদানে বিরত থাকেন। {১৬১৬}
{১৬১৬} সিলসিলা সহিহাহ ২৩৬০, হাদিসটির সনদেক আলবানী হাসান বলেছেন। ইবনি হাজার বলেন, এর শাহেদ আছে। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫০৭. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীতঃ
এ হাদিসের একটা পৃষ্ঠপোষক হাদিস ইবনি আবিদ দুনিয়া সাহাবী ইবনি উমার [রাদি.] হতে বর্ণনা করিয়াছেন।
মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৫০৮. আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না ধোঁকাবাজ, কৃপণ, কর্তৃত্বের বা ক্ষমতার অপপ্রয়গকারী। {১৬১৭}
{১৬১৭} তিরমিযি ১৯৪৭, ১৯৬৪ । ইবনিল কীসরানী তাহাঁর দাখীরাতুল হুলফায ৫/২৭১০ গ্রন্থে বলেন, দুই দিক থেকে হাদিসটিতে দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫০৯. ইব্নু আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে কেউ কোন এক দলের কথার দিকে কান লাগাল – অথচ তারা এটা পছন্দ করে না – ক্বিয়ামাতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢলে দেয়া হইবে। {১৬১৮}
{১৬১৮} বোখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, ৭০৪২, মুসলিম ২১১০, তিরমিজি ১৭৫১, ২২৮৩, নাসাঈ ৫৩৫৮, ৫৩৫৯, ৬০২৪, ইবনি মাজাহ ৩৯১৬, আহম্মদ ১৮৫৯, ২১৬৩ । হাদিসের প্রথমাংশ হচ্ছেঃ [আরবী] যে লোক এমন স্বপ্ন দেখার ভান করিল যা সে দেখেনি তাকে দুটি যবের দানায় গিট দেয়ার জন্য বাধ্য করা হইবে। অথচ সে তা কখনও পারবে না। তারপর তিনি উপরোক্ত হাদিসটি বর্ণনা করিলেন। তিনি এতে আরো বৃদ্ধি করেন, আর যে কেউ প্রাণীর ছবি আঁকে-তাকে শাস্তি দেয়া হইবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেয়ার জন্য বাধ্য করা হইবে। কিন্তু সে প্রাণ ফুঁকতে পারবে না। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫১০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির জন্য তুবা নামক বিশেষ জান্নাত বা খুশি যে নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্যে অন্যের ত্রুটির প্রতি তার কোন ভ্রুক্ষেপ থাকে না। {১৬১৯}
{১৬১৯} আল ইরাকী তাহাঁর তাখরীজুল এহইয়া ৩/১৮৩ গ্রন্থে এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী তাহাঁর যঈফুল জামে ৩৬৪৪ হাদিসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫১১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মনেই নিজেকে বড় বলে জানে, চলার সময় অহংকার করে চলে, সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি তাহাঁর উপর রাগান্বিত অবস্থায় থাকিবেন। {১৬২০}
{১৬২০} বোখারী আদাবুল মুফরাদ ৫৪৯. মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫১২. সাহেদ ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তাড়াহুড়া অর্থাৎ চিন্তাভাবনা না করেই কথা বলা বা কাজ করা শাইতানের প্রভাব থেকে হয়। {১৬২১}
{১৬২১} হিলইয়াতুল আওলিয়া ৮/৭৮; শুআবুল ঈমান ৪/৮৯; মুসনাদ আবী ইয়ালা ৭/২৪৭, হুসাইন সালিম আসাদ এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম তিরমিজি [২০১২] আবদুল মুহাইমিন বিন আব্বাস বিন সাহল বিন সাদ আস সাঈদী এর সূত্রে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদা থেকে। এর পূর্বে অতিরিক্ত রয়েছে [আরবী]। [ধীরস্থিরতা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে]। অনুরূপভাবে ইবনি হাজার ঈমাম তিরমিজি কর্তৃক হাদিসটিকে হাসান বলার কথা বলেছেন। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাহাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী [৪/১২৯] গ্রন্থে বলেন, ঈমাম তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। কোন কোন মুদ্রণে “এ হাদিসটি গরীব” কথাটির উল্লেখ রয়েছে। কতিপয় মুহাদ্দিস আবদুল মুহাইমীন বিন আব্বাস বিন সাহলএর সমালোচনা করিয়াছেন। স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তাকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম সুয়ূত্বী তাহাঁর আল জামেউস সগীর [৩০৮৮] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। তার আনাস বিন মালিক সূত্রে বর্ণিত একই হাদিস আল জামেউস সগীর [৩৩৯০] গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী আবার উক্ত আনাস বিন মালিকের হাদিসকে সহীহুল জামে [৩০১১] গ্রন্থে হাসান বলেছেন। তিনি সিলসিলা সহিহাহ [১৭৯৫] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ হাসান এবং প্রত্যেক বর্ণনাকারীই বিশ্বস্ত। ইবনিল কীসরানী তাহাঁর দাখীরাতুল হুফফায [৩/১৬০৬] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনি লাহিয়া নামক দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছে। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫১৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কুলক্ষণই মন্দ চরিত্র। {১৬২২}
{১৬২২} মুসলিম ২৫৮৯, তিরমিজি ১৯৩৪, আবু দাউদ ৪৮-৭৪, আহম্মদ ৭১০৬, ৮৭৫৯, দারিমী ২৭১৪। ইবনি আদী তাহাঁর আল কামিল ফিয যুআফা গ্রন্থে ২/১১ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে আবু বকর বিন আবু মারইয়াম রয়েছে তার অধিকাংশ হাদিস গরীব, তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। আবু নুআইম তাহাঁর হুলয়াতুল আউলিয়া ৬/১১০ গ্রন্থে বলেন, আবু বকর বিন আবু মারইয়াম এ হাদিসটি এককভাবে উল্লেখ করিয়াছেন। ঈমাম বাইহাকী শুআবুল ঈমান ৬/২৭৩১ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে আবু বকর আবদুল্লাহ আল গাসানী রয়েছে, সে দুর্বল। শাইখ আলবানী সিলসিলা যঈফা ৭৯৩, যঈফুত তারগীব ১৬১০, যঈফুল জামে ৩৪২৬ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। অনুরূপ জাবের বিন আবদুল্লাহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদিসের সনদকে ঈমাম বাইহাকী শুআবুল ঈমানে ৬/২৭৩১ দুর্বল বলেছেন। আর আলবানী জঈফ তারগীব ১৪৭১ গ্রন্থে হাদিসটিকে জাল হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫১৪. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অধিক লানাতকারীগণ [তিরস্কার ও অভিসম্পাতকারী] পরকালে সুপারিশকারী ও সাক্ষ্য প্রদানকারী হতে পারবে না। [এরূপ দুটো বিশেষ মর্যাদা লাভ হতে এরা বঞ্চিত হইবে। {১৬২৩}
{১৬২৩} মুসলিম ২৫৯৮,আবু দাউদ ৪৯০৭,আহম্মদ ২৬৯৮১। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫১৫. আয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে কোন পাপের কথা বলে লজ্জা দেয়, সে ঐ পাপ কাজ না করে মরবে না। [অর্থাৎ তাকে ঐ কাজে লিপ্ত হয়ে লোকচক্ষে হেয় হতে হয়।] {১৬২৪}
{১৬২৪} তিরমিজি ২৫০৫। শাইখ আলবানী তাহাঁর জঈফ তারগীব ১৪৭১ এ হাদিসটিকে বানোয়াট হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। আসসীগানীও অনুরূপ বলেছেন। ইবনি হিব্বান তাহাঁর আল মাজরুহীন গ্রন্থে ২/২৮৮ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে মুহাম্মাদ ইবনিল হাসান মুনকারুল হাদিস। ইবনিল কীসরানী তাহাঁর তাযকিরাতুল হুফফায গ্রন্থেও একই কথা বলেছেন। আল মুনযিরী তাহাঁর তারগীব ওয়াত তারহীব গ্রন্থে ২/২৮৭ গ্রন্থে ঈমাম তিরমিজির একটি কওল উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি বলেন, খালেদ বিন মাদান মুআযের যুগ পাননি। ঈমাম যাহাবী মিযানুল ইতিদাল ৩/৫১৫ গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসের সনদের একজন রাবী মুহাম্মাদ ইবনিল হাসান বিন আবু ইয়াযীদের দোষ উল্লেখ করা হয়েছে। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৫১৬. বাহয ইবনি হাকিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাহাঁর পিতা, তিনি তাহাঁর দাদা হতে বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বরেন, চরম সর্বনাশ ঐ ব্যক্তির জন্য যে মানুষকে হাসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা কথা বলে থাকে, তার জন্য সর্বনাশ, তার জন্য সর্বনাশ। সনদটি শক্তিশালী। {১৬২৫}
{১৬২৫} তিরমিজি ২৩১৫, আবু দাঊদ ৪৯৯০, আহম্মদ ১৯৫১৯, ১৯৫৪২, দারিমী ২৭০২। হাদিসটিকে আলবানী, বিনবায, ইবনিল মুলকিন, আল মুনযিরী হাসান বলেছেন। ঈমাম সুয়ূত্বী আল জামেউস সগীর [৯৬৪৮] গ্রন্থে একে সহিহ বলেছেন। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫১৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ গীবাতের [পরনিন্দার] কাফ্ফারা [গুনাহ্ মাফের উপায়] হচ্ছে যার গীবাত করেছ তার পাপের ক্ষমার জন্য আল্লাহর দরবারে দুআ করিতে থাকা। [হারেস বিন উসামা দুর্বল সনদে বর্ণনা করিয়াছেন। {১৬২৬}
{১৬২৬} ইবনি উসাইমীন বুলুগুল মারামের শরাহ ৬/৪১৬ গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দুর্বল তবে এর অর্থে লক্ষ্য করে আমল করা যেতে পারে। শাইখ আলবানী তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৮০৩ গ্রন্থে বলেন, এর তিনটি সনদ রয়েছে, যার প্রতিটিই দুর্বল। ঈমাম বাইহাকী তাহাঁর আদ দাওয়াতুল কাবীর [২/২১৩] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে। আল বুসাইরী তার ইতহাফূল খিয়ারাতুল মুহাররাহ গ্রন্থে ৭/৪২৫ বলেন, এ হাদিসের সনদে আনবাসা বিন আবদুর রহমান রয়েছেন যিনি দুর্বল। ঈমাম বাইহাক্বী শুআবুল ঈমান ৫/২৩১০ গ্রন্থে এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ সুমাইর আয যুহাইরী হাদিসটিকে মুওযূ বলেছেন। তিনি বলেন, আনাবাসা বিন আবদুর রহমান হাদিস রচনা করত। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫১৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্রাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যক্তি হচ্ছে অতি ঝগড়াটে লোক। {১৬২৭}
{১৬২৭} বোখারী ২৪৫৭, ৭১৮৮, মুসলিম ২৬৬৮, তিরমিজি ২৯৭৬, নাসাঈ ৫৪২৩, আহম্মদ ২৩৭৫৬, ২৩৮২২। মন্দ চরিত্র সম্পর্কে হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply