মদ হারাম হওয়ার আয়াত ও হাদীস। যেসব বস্তু থেকে মাদক তৈরি হয়
মদ হারাম হওয়ার আয়াত ও হাদীস। যেসব বস্তু থেকে মাদক তৈরি হয় >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭৪, পানীয় দ্রব্যসমূহ, অধ্যায়ঃ (১-১১)=১২টি
৭৪/১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ হে বিশ্বাসীগণ ! মদ, জুয়া আর আস্তানা ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হইতে পার (সুরা আল-মায়িদা ৫ : ৯০)
৭৪/২. অধ্যায়ঃ আঙ্গুর থেকে তৈরি মদ
৭৪/৩. অধ্যায়ঃ মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং তা থেকে তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে।
৭৪/৪. অধ্যায়ঃ মধু থেকে তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় বিতা বলে।
৭৪/৫. অধ্যায়ঃ মদ এমন পানীয় যা জ্ঞান লোপ করে দেয়।
৭৪/৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে তা হালাল মনে করে।
৭৪/৭. অধ্যায়ঃ বড় ও ছোট পাত্রে নাবীয প্রস্তুত করা।
৭৪/৮. অধ্যায়ঃ বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর নাবী (সাঃআঃ)-এর পক্ষ থেকে পুনঃ অনুমতি প্রদান।
৭৪/৯. অধ্যায়ঃ শুকনো খেজুরের রস যতক্ষণ তা নেশা না সৃষ্টি করে।
৭৪/১০. অধ্যায়ঃ বাযাক (অর্থাৎ আঙ্গুরের হালকা জাল দেয়া রস)-এর বর্ণনা।
৭৪/১১. অধ্যায়ঃ যারা মনে করেন নেশাদার হবার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একসঙ্গে মিশানো ঠিক নয় এবং উভয়ের রসকে একত্র করা ঠিক নয়।
৭৪/১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ হে বিশ্বাসীগণ ! মদ, জুয়া আর আস্তানা ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হইতে পার (সুরা আল-মায়িদা ৫ : ৯০)
৫৫৭৫
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুনিয়ায় মদ পান করেছে অতঃপর তা-থেকে তওবা করে নি, সে আখিরাতে তা-থেকে বঞ্চিত থাকবে।[মুসলিম ৩৬/৮, হাদীস ২০০৩, আহমাদ ৪৬৯০] আঃপ্রঃ- ৫১৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬২)
৫৫৭৬
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইস্রা (মিরাজের) রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সম্মুখে শরাব ও দুধের দুটি পেয়ালা পেশ করা হল। তিনি উভয়টির প্রতি লক্ষ্য করিলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করিলেন। তখন জিবরীল (আঃ) বললেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত দ্রব্যের দিকে পথ প্রদর্শন করিয়াছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করিতেন তাহলে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। [৪৮]
যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে মামার, ইবনু হাদী, উসমান ইবনু উমর ও যুবায়দী এরকম বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৩)
৫৫৭৭
মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ………আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট হইতে এমন একটি হাদীস শুনিয়াছি যা আমি ছাড়া আর কেউ তোমাদের বর্ণনা করিবে না। তিনি বলেন, কেয়ামতের কতক নিদর্শন হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, ইল্ম (দ্বীনী) হ্রাস পাবে, ব্যভিচার প্রকাশ হইতে থাকবে, মদ্যপান ব্যাপক হইবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর পরিচালক হইবে একজন পুরুষ।(আঃপ্রঃ- ৫১৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৪)
৫৫৭৮
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যভিচার করার সময়ে মুমিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মুমিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মুমিন থাকে না।
ইবনু শিহাব বলেনঃ আবদুল মালিক ইবনু আবু বক্র ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবু বকর (রাদি.) এ হাদীসটি আবু হুরাইরা (রাদি.) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। এরপর তিনি বলেন, আবু বক্র উপরোক্ত হাদীসের সাথে এটিও যোগ করিতেন যে, মূল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঁচিয়ে তাকিয়ে থাকে, ছিনতাইকারী তা ছিনতাই করার সময়ে মুমিন থাকে না।(আঃপ্রঃ- ৫১৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৫)
৭৪/২. অধ্যায়ঃ আঙ্গুর থেকে তৈরি মদ
৫৫৭৯
হাসান ইবনু সাব্বাহ (রাদি.) ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমন অবস্থায় যে, মদীনায় আঙ্গুরের মদের কিছু অবশিষ্ট ছিল না।(আঃপ্রঃ- ৫১৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৬)
৫৫৮০
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আমাদের উপর মদ হারাম হল, তখন আমরা মদীনায় আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ খুব কম পেতাম। সাধারণভাবে আমাদের মদ ছিল কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে প্রস্তুত।(আঃপ্রঃ- ৫১৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৭)
৫৫৮১
ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমর (রাদি.) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেনঃ অতঃপর জেনে রাখ মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ রকম জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, মধু, গম ও যব। আর মদ হল, যা বুদ্ধিকে বিলোপ করে।(আঃপ্রঃ- ৫১৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৮)
৭৪/৩. অধ্যায়ঃ মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং তা থেকে তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে।
৫৫৮২
আনাস ইবনু মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু উবাইদাহ, আবু তালহা ও উবাই ইবনু কাব (রাদি.)-কে কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে মদ প্রস্তুত মদ পান পান করিতে দিয়েছিলাম। এমন সময়ে তাদের নিকট এক আগন্তুক এসে বলিল, মদ হারাম করা হয়েছে। তখন আবু তালহা (রাদি.) বলিলেন, হে আনাস! দাঁড়াও আর এগুলো গড়িয়ে দাও। আমি তখন তা গড়িয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫১৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৯)
৫৫৮৩
মুতামির তার পিতার সূত্রে আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আনাস (রাদি.)-কে বলিতে শুনেছেনঃ একটি আসরে দাঁড়িয়ে আমি তাদের অর্থাৎ চাচাদের ফাযীখ অর্থাৎ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে প্রস্তুত মদ পান করাচ্ছিলাম। আমি ছিলাম সবার ছোট। এমন সময় বলা হলঃ মদ হারাম করা হয়েছে। তখন তাঁরা বললেনঃ তা গড়িয়ে দাও। সুতরাং আমি তা ঢেলে দিলাম।
রাবী বলেন, আমি আনাস (রাদি.)-কে বললামঃ তাঁদের শরাব কিসের ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী। তখন আনাস (রাদি.)-এর পুত্র আবু বক্র বললেনঃ সেটিই কি ছিল তাদের মদ? জবাবে আনাস (রাদি.) কোন অসম্মতি জানালেন না।
রাবী আরো বলেন, আমার কতক সঙ্গী বর্ণনা করিয়াছেন যে, তাঁরা আনাস (রাদি.) থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, সেকালে এটিই ছিল তাদের মদ।(আঃপ্রঃ- ৫১৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭০)
৫৫৮৪
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তাদের কাছে বর্ণনা করিয়াছেন, মদ হারাম করা হয়েছে। আর সেকালে মদ তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে।(আঃপ্রঃ- ৫১৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭১)
৭৪/৪. অধ্যায়ঃ মধু থেকে তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় বিতা বলে।
মান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি মালিক ইবনু আনাসকে ফুক্কা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেছেনঃ নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে কোন ক্ষতি নেই। ইবনু দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ সম্পর্কে অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।
৫৫৮৫
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বললেনঃ সর্বপ্রকার নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।(আঃপ্রঃ- ৫১৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭২)
৫৫৮৬
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বিতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। বিতা হচ্ছে মধু থেকে তৈরী নাবীয। ইয়ামানের লোকেরা তা পান করত। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ যে সকল পানীয় নেশার সৃষ্টি করে তা-ই হারাম। যুহরী হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা দুব্বা (কদুর খোল) এর মধ্যে নাবীয তৈরী করিবে না, মুযাফ্ফাত (আলকাতরা যুক্ত পাত্র)র মধ্যেও করিবে না।(আঃপ্রঃ- ৫১৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৩)
৫৫৮৭
যুহরী হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) এগুলোর সঙ্গে হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) ও নাকীর (খেজুর বৃক্ষের মূলের খোল) এর কথাও যোগ করিতেন।[মুসলিম ৩৬/৬, হাদীস ১৯৯২, ১৯৯৩] আঃপ্রঃ- ৫১৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৩)
৭৪/৫. অধ্যায়ঃ মদ এমন পানীয় যা জ্ঞান লোপ করে দেয়।
৫৫৮৮
ইবনু উমর হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উমার মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুত্বা দিতে গিয়ে বলিলেন, নিশ্চয় মদ হারাম সম্পর্কীয় আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা প্রস্ত্তত হয় পাঁচটি জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর খামর মদ) হল তা, যা বিবেক লোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে, আমি চাচ্ছিলাম যেন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা না করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হইতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান। বিষয়গুলো হল, দাদার মীরাস, কালালার ব্যাখ্যা এবং সুদের প্রকারসমূহ। রাবী আবু হাইয়্যান বলেন, আমি বললামঃ হে আবু আমর! এক প্রকারের পানীয় জিনিস যা সিন্ধু অঞ্চলে চাউল দিয়ে তৈরী করা হয়, তার হুকুম কী? তিনি বললেনঃ সেটি নাবী সাঃআঃ -এর আমলে ছিল না। কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেটি উমার -এর আমলে ছিল না।
হাম্মাদ সূত্রে আবু হাইয়্যান থেকে হাজ্জাজ الْعِنَبِ আঙ্গুর) এর জায়গায় الزَّبِيب কিসমিস) বলেছেন। [৪৬১৯; মুসলিম ৫৪০/৬, হাদীস ৩৩২] আঃপ্রঃ- ৫১৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৪)
৫৫৮৯
উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, মদ প্রস্তুত করা হয় পাঁচটি বস্তু থেকে। সেগুলো হলঃ কিসমিস, খেজুর, গম, যব ও মধু। [মুসলিম ৫৪/৬, হাদীস ৩০৩২]আঃপ্রঃ- ৫১৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৫)
৭৪/৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে তা হালাল মনে করে।
৫৫৯০
আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশআরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার নিকট আবু আমির কিংবা আবু মালিক আশআরী বর্ণনা করিয়াছেন। আল্লাহর কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নাবী (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হইবে, যারা ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করিবে। তেমনি এমন অনেক দল হইবে, যারা পাহাড়ের ধারে বসবাস করিবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুপাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের নিকট কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা বলবে, আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। এদিকে রাতের অন্ধকারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পর্বতটি ধ্বসিয়ে দেবেন, আর বাকী লোকদেরকে তিনি কেয়ামতের দিন পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৬)
৭৪/৭. অধ্যায়ঃ বড় ও ছোট পাত্রে নাবীয প্রস্তুত করা।
৫৫৯১
সাহল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু উসাইদ সাঈদী (রাদি.) এসে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে তাহাঁর বিয়ের দাওয়াত দিলেন। তখন তাহাঁর স্ত্রী নববধূ তাঁদের মধ্যে পরিবেশনকারিণী ছিলেন। তিনি বলেন, তোমরা কি জান আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে কী জিনিস পান করিতে দিয়েছিলাম? (তিনি বলেন) আমি রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫১৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৭)
৭৪/৮. অধ্যায়ঃ বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর নাবী (সাঃআঃ)-এর পক্ষ থেকে পুনঃ অনুমতি প্রদান।
৫৫৯২
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কতগুলো পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। তখন আনসারগণ বললেনঃ সেগুলো ছাড়া আমাদের কোন গত্যন্তর নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ব্যবহার করিতে পার।
খালীফাহ (রাদি.) বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আমাদের কাছে সুফিয়ান, মানসূর, সালিম ইবনু আবুল জাদ-জাবির (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে এরকমই বর্ণনা করেন।(আঃপ্রঃ- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৯)
৫৫৯৩
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) এক রকমের পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করিলেন, তখন নাবী (সাঃআঃ)-কে বলা হল, সব মানুষের নিকট তো মশ্ক মওজুদ নেই। ফলে নাবী (সাঃআঃ) তাদের কলসীর জন্য অনুমতি দেন, তবে আলকাতরার প্রলেপ দেয়া পাত্রের জন্য অনুমতি দেননি।[মুসলিম ৩৬/৬, হাদীস ২০০০]আঃপ্রঃ- ৫১৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৭৯)
৫৫৯৪
আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) দুব্বা ও মুযাফ্ফাত ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন। উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, জারীর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন। [মুসলিম ৩৬/৬, হাদীস ১৯৯৪, আহমাদ ৬৩৪]আঃপ্রঃ- ৫১৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮০)
৫৫৯৫
ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আসওয়াদকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি কি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কোন্ কোন্ পাত্রের মধ্যে নাবীয তৈরী করা মাকরূহ। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে উম্মুল মুমিনীন! কোন্ কোন্ পাত্রের মধ্যে নাবী (সাঃআঃ) নাবীয তৈরী করিতে নিষেধ করিয়াছেন? তখন তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদের অর্থাৎ আহলে বায়তকে দুব্বা ও মুযাফফাত নামক পাত্রে নাবীয তৈরী করিতে নিষেধ করিয়াছেন। (ইবরাহীম বলেন) আমি বললামঃ আয়েশা (রাদি.) কি জার (মাটির কলসী) ও হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) এর কথা উল্লেখ করেননি? তিনি বলিলেন, আমি যা শুনিয়াছি কেবল তাই তোমাকে বর্ণনা করেছি। আমি যা শুনিনি তাও কি আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করব?[মুসলিম ৩৬/৬, হাদীস ১৯৯৫, আহমাদ ২৪২৫৬]আঃপ্রঃ- ৫১৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮১)
৫৫৯৬
মূসা বিন ইসমাঈল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)……… আবদুল্লাহ ইবনু আওফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সবুজ রং এর কলসী ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আমি বললামঃ তাহলে সাদা রং এর পাত্রে (নাবীয) পান করা যাবে কি? তিনি বললেনঃ না।(আঃপ্রঃ- ৫১৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮২)
৭৪/৯. অধ্যায়ঃ শুকনো খেজুরের রস যতক্ষণ তা নেশা না সৃষ্টি করে।
৫৫৯৭
সাহল ইবনু সাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবু উসাইদ সাঈদী (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-কে তাহাঁর ওলীমার দাওয়াত করেছিলেন। সেদিন তার স্ত্রী নববধু অবস্থায় সবার খিদমত করছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনারা কি জানেন, আমি রাসুলল্লাহ (সাঃআঃ)-কে কিসের রস পান করিতে দিয়েছিলাম? আমি তাহাঁর জন্য রাতে কতকগুলো খেজুর পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫১৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৩)
৭৪/১০. অধ্যায়ঃ বাযাক (অর্থাৎ আঙ্গুরের হালকা জাল দেয়া রস)-এর বর্ণনা।
এবং যারা নেশা সৃষ্টিকারী সকল পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তার বর্ণনা। উমর, আবু উবাইদাহ ও মু আয (রাদি.) তিলা অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করা জায়িয মনে করেন। বারা ও আবু জুহাইফাহ (রাদি.) পাকিয়ে অর্ধেক থাকতে রস পান করিয়াছেন। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেনঃ আমি তাজা অবস্থার আঙ্গুরের রস পান করেছি। উমর (রাদি.) বলেছেনঃ আমি উবাইদুল্লাহর মুখ হইতে শরাবের গন্ধ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেসও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহলে আমি বেত্রাঘাত করতাম।
৫৫৯৮
আবুল জুওয়াইরিয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে বাযাক সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তর দিলেনঃ মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) বাযাক উৎপাদনের আগে বিদায় হয়ে গেছেন। কাজেই যে বস্তু নেশা জন্মায় তা-ই হারাম। তিনি বলেন, হালাল পানীয় পবিত্র। তিনি বলেন, হালাল ও পবিত্র পানীয় ছাড়া অন্য সব পানীয় ঘৃণ্য হারাম।(আঃপ্রঃ- ৫১৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৪)
৫৫৯৯
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) মিষ্টি ও মধু পছন্দ করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৫)
৭৪/১১. অধ্যায়ঃ যারা মনে করেন নেশাদার হবার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একসঙ্গে মিশানো ঠিক নয় এবং উভয়ের রসকে একত্র করা ঠিক নয়।
৫৬০০
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু ত্বলহা, আবু দুজনা এবং সুহাইল ইবনু বাইযা -কে কাঁচা ও শুকনো খেজুরের মেশানো রস পান করাচ্ছিলাম। এ সময়ে মদ হারাম করা হল, তখন আমি তা ফেলে দিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের পরিবেশনকারী এবং তাঁদের সবার ছোট। সে সময় আমরা এটিকে মদ গণ্য করতাম।
আমর ইবনু হারিস বলেনঃ ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাদের নিকট عَنْ أَنَسٍ এর স্থলে سَمِعَ أَنَساً বর্ণনা করিয়াছেন। [২৪৬৪] আঃপ্রঃ- ৫১৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৬
৫৬০১
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) কিসমিস, শুকনো খেজুর, কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশাতে নিষেধ করিয়াছেন। [মুসলিম ৩৬/৫, হাদীস ১৯৮৬, আহমাদ ১৪২০৩]আঃপ্রঃ- ৫১৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৭)
৫৬০২
আবু ক্বাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) খুরমা ও আধাপাকা খেজুর এবং খুরমা ও কিসমিস একত্র করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আর এগুলোর প্রত্যেকটিকে আলাদাভাবে ভিজিয়ে নাবীয তৈরী করা যাবে।[মুসলিম ৩৬/৫, হাদীস ১৯৮৮, আহমাদ ২২৬৯২]আঃপ্রঃ- ৫১৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৮৮)
Leave a Reply