মদ্য পানকারীর শাস্তি এবং নিশাজাতীয় দ্রব্যের বর্ণনা

মদ্য পানকারীর শাস্তি এবং নিশাজাতীয় দ্রব্যের বর্ণনা

মদ্য পানকারীর শাস্তি এবং নিশাজাতীয় দ্রব্যের বর্ণনা >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৪ঃ মদ্য পানকারীর শাস্তি এবং নিশাজাতীয় দ্রব্যের বর্ণনা

পরিচ্ছেদ ০১. মদ পানকারীর শাস্তি
পরিচ্ছেদ ০২. সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তির হুকুম
পরিচ্ছেদ ০৩. বার বার মদ পানকারীর বিধান
পরিচ্ছেদ ০৪. মুখমন্ডলে প্রহার করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০৫. মাসজিদে হাদ্দ কায়েম করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০৬. মদের প্রকৃত অর্থ
পরিচ্ছেদ ০৭. নাবীয রস খাওয়ার বৈধতা এবং এর শর্ত প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ০৮. মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম

পরিচ্ছেদ ০১. মদ পানকারীর শাস্তি

১২৪১। আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মদ পানকারী এ ব্যক্তিকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকটে নিয়ে আসা হলো। তিনি তাকে দুখানা ছড়ি [এক যোগে ধরে তার] দ্বারা চল্লিশের মত কোড়া মারলেন। আনাস [রাদি.] বলেনঃ ১ম খলিফা আবু বাকর [রাদি.] এরূপ কোড়া মেরেছেন, উমার [রাদি.] তার খিলাফতকালে এ ব্যাপারে লোকদের সাথে পরামর্শ করিলেন। আবদুর রহমান ইবনি আওফ বলেনঃ সর্বাপেক্ষা হালকা শাস্তি হচ্ছে আশি [কোড়া]। উমার [রাদি.] ঐ [৮০-র] আদেশই জারি করিলেন। {১৩৪৭}

{১৩৪৭} বোখারী ৬৭৭৩, ৬৭৭৬, মুসলিম ১৭০৬, তিরমিজি ১৪৪৩, আবু দাউদ ৪৪৭৯, ইবনি মাজাহ ২৫৭০, আহম্মদ ১১৭২৯, ১২৩৯৪, ১২৪৪৪, দারিমী ২৩১১। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০২. সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তির হুকুম

১২৪২। আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ৪০ কোড়া মেরেছেন, আবু বাকার [রাদি.] ও ৪০ কোড়া মেরেছেন, উমার [রাদি.] ৮০ কোড়া মেরেছেন, আলী [রাদি.] বলেনঃ এগুলো সবই সুন্নত [সঠিক]। কিন্তু ৮০ কোড়া মারা আমার নিকট অধিক প্রিয় [বোখারীর বর্ণনায় ৮০ কোড়া মারার কথা আছে]। এ হাদীসে আরো আছে কোন একজন লোক তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিল, সে মদ বমি করেছিল। ফলে উসমান [রাদি.] বলেনঃ সে মদ খেয়েছে বলেই তো মদ বমি করেছে। {১৩৪৮}

{১৩৪৮} আবু দাউদ ৪৪৮০, ৪৪৮১, ইবনি মাজাহ ২৫৭১, আহম্মদ ১০২৭, ১২৩৪, দারিমী ২৩১২, মুসলিম ১৭০৭। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৩. বার বার মদ পানকারীর বিধান

১২৪৩। মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মদ পানকারী প্রসঙ্গে বলেনঃ যখন তা পান করিবে তখন তাকে কোড়া মারো, তারপর পান করলে কোড়া মারো, তারপর ৩য় বার পান করলেও তাকে কোড়া মারো, তারপর ৪র্থ বার মদ পান করলে তার গর্দান কেটে দাও।

তিরমিজির বক্তব্যে হাদিসটি মানসুখ হয়েছে বলে ব্যক্ত হয়েছে, ঈমাম যুহরী হতে আবু দাউদ এটা মানসুখ হওয়াকে স্পষ্ট করে বর্ণনা করিয়াছেন। {১৩৪৯}. {১৩৪৯} তিরমিজি ১৪৪, আবু দাউদ ৪৪৮২, ইবনি মাজাহ ২৫৭৩, আহম্মদ ১৬৪০৫, ১৬৪১৭, ১৬৪২৭। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৪. মুখমন্ডলে প্রহার করা নিষেধ

১২৪৪। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমরা হাদ্দ মারবে তখন মুখমন্ডলে মারবে না। {১৩৫০}

{১৩৫০} বোখারী ২৫৫৯, মুসলিম ২৬১২। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৫. মাসজিদে হাদ্দ কায়েম করা নিষেধ

১২৪৫। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মাসজিদে কোন হাদ্দ কায়েম করা [জারি করা] যাবে না। {১৩৫১}

{১৩৫১} তিরমিজি ১৪০১, হাকিম ৪র্থ খন্ড ৩৬৯ পৃষ্ঠা । মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৬. মদের প্রকৃত অর্থ

১২৪৬। আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আল্লাহ মদ হারাম করার আয়াত নাযিল করিয়াছেন আর মাদীনায় [তখন] খেজুরের মদ ছাড়া অন্য কোন মদ পান করা হত না। {১৩৫২}

{১৩৫২} বোখারী ২৪৬৪,৭২৫৩, মুসলিম ১৯৮০, নাসাঈ ৫৫৪১, ৫৫৪৩, আহম্মদ ৩৬৭২, ১২৪৫৮, ১২৪৭৭, ১২৫৬১, ১২৮৬১, মালেক ১৫৯৯। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৪৭। উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মদ হারাম করে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ রকম জিনিস থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, মধু, গম ও যব। আর মদ হল, যা বুদ্ধিকে বিলোপ করে। [অর্থাৎ চেতনার মধ্যে ব্যতিক্রম ঘটায়, সঠিকভাবে কোন বস্তুকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।] {১৩৫৩}

{১৩৫৩} বোখারী ৪৬১৬, ৪৬১৯, ৫৫৮১, ৫৫৮৮, মুসলিম ৩০৩২, তিরমিজি ১৮৭২, নাসাঈ ৫৫৭৮, ৫৫৭৯, আবু দাউদ ৩৬৬৯। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৪৮। ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু খামর [মাদক] আর প্রত্যেক নেশা আনয়নকারী বস্তু হারাম। {১৩৫৪}

{১৩৫৪} বোখারী ৫৫৭৫, মুসলিম ২০০৩, তিরমিজি ১৮৬৯, নাসাঈ ৫৬৭১, ৫৬৭৩, ৫৬৭৪, আবু দাঊদ ৩৬৭৯, ইবনি মাজাহ ৩৩৭৩, ৩৩৯০, আহম্মদ ৪৬৩০, ৪৬৭৬, ৪৭১৫, মালেক ১৫৯৭, দারিমী ২০৯০। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৪৯। জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে বস্তুর অধিক পরিমাণ ব্যবহারে নেশা আনে ঐ বস্তুর অল্প ব্যবহারও হারাম। {১৩৫৫}

{১৩৫৫} তিরমিজি ১৮৬৫, আহম্মদ ১৪২৯৩, আবু দাঊদ ৩৬৮১, ইবনি মাজাহ ৩৩৯৩। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৭. নাবীয রস খাওয়ার বৈধতা এবং এর শর্ত প্রসঙ্গ

১২৫০। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্য মশকে কিশমিশ ভিজিয়ে নাবিজ করা হতো আর তিনি তা সে দিন, পরের দিন এবং তার পরে ৩য় দিন সন্ধ্যা বেলাও পান করিতেন। তারপরও কিছু থেকে গেলে তা ঢেলে ফেলে দিতেন। {১৩৫৬}

{১৩৫৬} মুসলিম ২০০৪, নাসাঈ ৫৭৩৭, ৫৭৩৮, ৫৭৩৯, আবু দাঊদ ৩৭১৩, ইবনি মাজাহ ৩৩৯৯, আহম্মদ ১৯৬৪, ২০৬৯, ২৬০১। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ০৮. মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম

১২৫১। উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থা আল্লাহ তার হারামকৃত বস্তুর মধ্যে করেননি। {১৩৫৭ }

{১৩৫৭} আত্-তালখীসুল হাবীর ৪/১৩৯৭, আল মুহাযযিব [৮/৩৯৬৬], মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৫/৮৯] শাকীক বিন সালাম থেকে। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৫২। ওয়ায়িল আল হাযরামী হইতে বর্ণীতঃ

তারিক ইবনি সুওয়াইদ [রাদি.] মদ দিয়ে ওষুধ তৈরী করা প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেছিলেন, উত্তরে তিনি বলেন, ওটাতো ওষুধ নয় বরং তা ব্যাধি। {১৩৫৮}

{১৩৫৮} মুসলিম ১৯৮৪, তিরমিজি ২০৪৬, আবু দাঊদ ৩৮৭৩, আহম্মদ ১৮৩১০, ১৮৩৮০, ২৬৫৯৬। মদ্য পানকারীর শাস্তি হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

Leave a Reply