মদীনার ফযিলত – দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না

মদীনার ফযিলত – দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না

মদীনার ফযিলত – দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৯, মদীনার ফযিলত, অধ্যায়ঃ (১-১৩)=১৩টি

২৯/১. অধ্যায়ঃ মদীনা হারম (পবিত্র স্থান) হওয়া ।
২৯/২. অধ্যায়ঃ মদীনার ফযীলত । মদীনা (অবাঞ্ছিত) লোকজনকে বহিষ্কার করে দেয় ।
২৯/৩. অধ্যায়ঃ মদীনার অন্য নাম ত্বাবাহ ।
২৯/৪. অধ্যায়ঃ মদীনার কংকরময় দুটি এলাকা।
২৯/৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মদীনা হইতে মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
২৯/৬. অধ্যায়ঃ ঈমান মদীনার দিকে প্রত্যাবর্তন করিবে।
২৯/৭. অধ্যায়ঃ মদীনাবাসীদের সাথে চক্রান্তকারীর গুনাহ ।
২৯/৮. অধ্যায়ঃ মদীনার পাথরের তৈরী দূর্গসমূহ ।
২৯/৯. অধ্যায়ঃ দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না ।
২৯/১০. অধ্যায়ঃ মদীনা অপবিত্র লোকদেরকে বের করে দেয় ।
২৯/১১. অধ্যায়ঃ
২৯/১২. অধ্যায়ঃ মদীনার কোন এলাকা ছেড়ে দেয়া বা জনশূন্য করা নাবী (সাঃআঃ) অপছন্দ করিতেন।
২৯/১৩. অধ্যায়ঃ ২৯/১৩. অধ্যায়ঃ

২৯/১. অধ্যায়ঃ মদীনা হারম (পবিত্র স্থান) হওয়া ।

১৮৬৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মদীনা এখান হইতে ওখান পর্যন্ত হারাম (রূপে গণ্য)। সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না এবং এখানে কোন ধরনের অঘটন (বিদআত, অত্যাচার ইত্যাদি) ঘটানো যাবে না। যদি এখানে কোন অঘটন ঘটায় তাহলে তার প্রতি আল্লাহর এবং ফেরেশতাদের ও সকল মানুষের লানত (অভিশাপ)।

১৮৬৮. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মদীনায় এসে মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। অতঃপর বলেনঃ হে বনূ নাজ্জার! আমার নিকট হইতে মূল্য নিয়ে (ভূমি) বিক্রি কর। তাঁরা বলিলেন, আমরা এর মূল্য কেবল আল্লাহর নিকটই চাই। এরপর নাবী (সাঃআঃ) – এর নির্দেশে মুশরিকদের কবর খুঁড়ে ফেলা হল, ধ্বংসাবশেষ সমতল করা হল, খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলা হল। কেবল মসজিদের কিবলার দিকে কিছু খেজুর গাছ সারিবদ্ধভাবে রাখা হল।

১৮৬৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মদীনার দু পাথুরে ভূমির মধ্যবর্তী স্থান আমার ঘোষণা মোতাবেক হারাম হিসাবে নির্ধারিত করা হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বনূ হারিসের নিকট তাশরীফ আনেন এবং বলেন, হে বনূ হারিসা! আমার ধারণা ছিল যে, তোমরা হারামের বাইরে অবস্থান করছ, অতঃপর তিনি সেদিকে দৃষ্টিপাত করে বললেনঃ (না তোমরা হারামের বাইরে নও) বরং তোমরা হারামের ভিতরেই আছ।

১৮৭০. আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব এবং নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত, এ সহীফা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি আরো বলেন, আয়ির নামক জায়গা হইতে অমুক জায়গা পর্যন্ত মদীনা হল হারাম। যদি কেউ এতে অঘটন ঘটায় অথবা আশ্রয় দেয়, তাহলে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশ্‌তা ও মানুষের অভিসম্পাত। সে ব্যক্তির কোন ফরয এবং নফল ইবাদত গৃহীত হইবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলমান কর্তৃক নিরাপত্তা দানের অধিকার সকলের ক্ষেত্রে সমান। তাই যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দেয়া নিরাপত্তাকে লঙ্ঘন করিবে, তার প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। আর কবূল করা হইবে না তার কোন নফল কিংবা ফরয ইবাদাত। যে ব্যক্তি তার মাওলার (চুক্তিবদ্ধ মিত্রের) অনুমতি ছাড়া অন্য সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করিবে, তার প্রতিও আল্লাহর এবং সব ফেরেশতা ও সকল মানুষের অভিসম্পাত। তার ফরয কিংবা নফল কোন ইবাদাতই কবূল করা হইবে না। আবু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আদলুন অর্থ বিনিময়।

২৯/২. অধ্যায়ঃ মদীনার ফযীলত । মদীনা (অবাঞ্ছিত) লোকজনকে বহিষ্কার করে দেয় ।

১৮৭১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেনঃ আমি এমন এক জনপদে হিজরত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সকল জনপদের উপর জয়ী হইবে। লোকেরা তাকে ইয়াসরিব বলে থাকে। এ হল মদীনা। তা অবাঞ্ছিত লোকদেরকে এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচা দূর করে দেয়।

২৯/৩. অধ্যায়ঃ মদীনার অন্য নাম ত্বাবাহ ।

১৮৭২. আবু হুমাইদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে আমরা তাবূক যুদ্ধ হইতে প্রত্যাবর্তন করে মদীনার নিকটবর্তী স্থানে পৌঁছলে, তিনি বললেনঃ (মদীনা) হল ত্বাবাহ।

২৯/৪. অধ্যায়ঃ মদীনার কংকরময় দুটি এলাকা।

১৮৭৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলিতেন, আমি যদি মদীনাতে কোন হরিণকে বেড়াতে দেখি তাহলে তাকে আমি তাড়াব না। (কেননা) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মদীনার প্রস্তরময় পাহাড়ের দুই এলাকার মধ্যবর্তী এলাকা হল হারম বা সম্মানিত স্থান।

২৯/৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মদীনা হইতে মুখ ফিরিয়ে নেয় ।

১৮৭৪.আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা উত্তম অবস্থায় মদীনাকে রেখে যাবে। আর জীবিকা অন্বেষণে বিচরণকারী অর্থাৎ পশু-পাখি ছাড়া আর কেউ একে আচ্ছন্ন করে নিতে পারবে না। সবশেষে যাদের মদীনাতে একত্রিত করা হইবে তারা হল মুযায়না গোত্রের দুজন রাখাল। তারা তাদের বক্‌রীগুলোকে হাঁক-ডাক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই মদীনাতে আসবে। এসে দেখবে মদীনা বন্য পশুতে ছেয়ে আছে। এরপর তারা সানিয়্যাতুল-বিদা নামক স্থানে পৌঁছতেই মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।

১৮৭৫. সুফিয়ান ইবনু আবু যুহায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনেছিঃ ইয়ামান বিজিত হইবে, তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং অনুগত লোকদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। অথচ মদীনা তাদের জন্য উত্তম ছিল, যদি তারা বুঝত। সিরিয়া বিজিত হইবে, তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং অনুগত লোকদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে; অথচ মদীনাই ছিল তাদের জন্য মঙ্গলজনক, যদি তারা জানত। এরপর ইরাক বিজিত হইবে তখন একদল লোক নিজেদের সওয়ারী তাড়িয়ে এসে স্বজন এবং অনুগতদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে; অথচ মদীনাই তাদের জন্য ছিল মঙ্গলজনক, যদি তারা জানত।

২৯/৬. অধ্যায়ঃ ঈমান মদীনার দিকে প্রত্যাবর্তন করিবে।

১৮৭৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ঈমান মদীনাতে ফিরে আসবে যেমন সাপ তার গর্তে ফিরে আসে।

২৯/৭. অধ্যায়ঃ মদীনাবাসীদের সাথে চক্রান্তকারীর গুনাহ ।

১৮৭৭. সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনেছিঃ যে কেউ মদীনাবাসীর সাথে ষড়যন্ত্র করিবে বা প্রতারণা করিবে, সে লবণ যেভাবে পানিতে গলে যায়, সেভাবে গলে যাবে।

২৯/৮. অধ্যায়ঃ মদীনার পাথরের তৈরী দূর্গসমূহ ।

১৮৭৮. উসামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মদীনার কোন একটি পাথর নির্মিত গৃহের উপর আরোহণ করে বললেনঃ আমি যা দেখি তোমরা কি তা দেখিতে পাচ্ছ? (তিনি বলিলেন) বৃষ্টি বিন্দু পতিত হওয়ার স্থানসমূহের মত আমি তোমাদের গৃহসমূহের মাঝে ফিতনার স্থানসমূহ দেখিতে পাচ্ছি। মামার এবং সুলাইমান বিন কাসীর উক্ত হাদীস যুহরী থেকে বর্ণনার ক্ষেত্রে সুফিয়ানকে অনুসরণ করিয়াছেন।

২৯/৯. অধ্যায়ঃ দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না ।

১৮৭৯. আবু বাকরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) ) বলেছেন, মদীনাতে দাজ্জালের ত্রাস ও ভীতি প্রবেশ করিতে পারবে না। ঐ সময় মদীনার সাতটি প্রবেশ পথ থাকবে। প্রত্যেক পথে দুজন করে ফেরেশতা (মোতায়েন) থাকবে।

১৮৮০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মদীনার প্রবেশ পথসমূহে ফেরেশ্‌তা পাহারায় নিয়োজিত আছে। তাই প্লেগ রোগ এবং দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করিতে পারবে না।

১৮৮১. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মক্কা ও মদীনা ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল পদচারণ করিবে না। মক্কা এবং মদীনার প্রত্যেকটি প্রবেশ পথেই ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। এরপর মদীনা তার অধিবাসীদেরকে নিয়ে তিনবার কেঁপে উঠবে এবং আল্লাহ তাআলা সমস্ত কাফির এবং মুনাফিকদেরকে বের করে দিবেন।

১৮৮২. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাদের সামনে দাজ্জাল সম্পর্কে এক দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। বর্ণিত কথাসমূহের মাঝে তিনি এ কথাও বলেছিলেন যে, মদীনার প্রবেশ পথে অনুপ্রবেশ করা দাজ্জালের জন্য হারাম করে দেয়া হয়েছে। তাই সে মদীনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে মদীনার নিকটবর্তী কোন একটি বালুকাময় জমিতে অবতরণ করিবে। তখন তার নিকট এক ব্যক্তি যাবে যে উত্তম ব্যক্তি হইবে বা উত্তম মানুষের একজন হইবে এবং সে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমিই হলে সে দাজ্জাল যার সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাদেরকে অবহিত করিয়াছেন। দাজ্জাল বলবে, আমি যদি একে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করিতে পারি তাহলেও কি তোমরা আমার ব্যাপারে সন্দেহ করিবে? তারা বলবে, না। এরপর দাজ্জাল লোকটিকে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করিবে। জীবিত হয়েই লোকটি বলবে, আল্লাহর শপথ! আজকের চেয়ে অধিক প্রত্যয় আমার আর কখনো ছিল না। অতঃপর দাজ্জাল বলবে, আমি তাকে হত্যা করে ফেলব। কিন্তু সে লোকটিকে হত্যা করিতে আর সক্ষম হইবে না।

২৯/১০. অধ্যায়ঃ মদীনা অপবিত্র লোকদেরকে বের করে দেয় ।

১৮৮৩.জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একজন বেদুঈন নাবী (সাঃআঃ) – এর নিকট এসে ইসলামের উপর তাহাঁর কাছে বায়আত গ্রহণ করলো। পরদিন সে জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে এসে বললো, আমার (বায়আত) ফিরিয়ে নিন। নাবী (সাঃআঃ) তা প্রত্যাখ্যান করিলেন। এভাবে তিনবার হল। অতঃপর বললেনঃ মদীনা কামারের হাপরের মত, যা তার আবর্জনা ও মরিচাকে দূরীভূত করে এবং খাঁটি ও নির্ভেজালকে পরিচ্ছন্ন করে।

১৮৮৪.যায়দ ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে উহুদ যুদ্ধে যাত্রা করে তাহাঁর কতিপয় সাথী ফিরে আসলে একদল লোক বলিতে লাগল, আমরা তাদেরকে হত্যা করব, আর অন্য দলটি বলিতে লাগলো, না, আমরা তাদেরকে হত্যা করব না। এ সময়ই

‏فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينِ فِئَتَيْنِ

(তোমাদের হল কী, তোমরা মুনাফিকদের ব্যাপারে দুদল হয়ে গেলে?) (আন-নিসাঃ ৮৮) আয়াতটি নাযিল হয়। এরপর নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ মদীনা (বিশেষ কিছু) লোকদেরকে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে আগুন লোহার মরিচাকে দূর করে দেয়।

২৯/১১. অধ্যায়ঃ

১৮৮৫. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ হে আল্লাহ! মক্কাতে তুমি যে বরকত দান করেছ, মদীনাতে এর দ্বিগুণ বরকত দাও। উসমান বিন উমর উক্ত হাদীস ইউনুস থেকে বর্ণনার ক্ষেত্রে জারীরের অনুসরণ করিয়াছেন।

১৮৮৬. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সফর হইতে ফিরে আসার পথে যখন মদীনার প্রাচীরগুলোর দিকে তাকাতেন, তখন তিনি মদীনার প্রতি ভালবাসার কারণে তাহাঁর উটকে দ্রুত চালাতেন আর তিনি অন্য কোন জন্তুর উপর থাকলে তাকেও দ্রুত চালিত করিতেন।

২৯/১২. অধ্যায়ঃ মদীনার কোন এলাকা ছেড়ে দেয়া বা জনশূন্য করা নাবী (সাঃআঃ) অপছন্দ করিতেন।

১৮৮৭. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বনূ সালামা গোত্রের লোকেরা মসজিদে নববীর নিকটে চলে যাওয়ার সংকল্প করিলেন। নাবী (সাঃআঃ) মদীনাকে জনশূন্য করা অপছন্দ করিলেন, তাই তিনি বলিলেন হে বনূ সালামা! মসজিদে নববীর দিকে তোমাদের হাঁটার সওয়াব কি তোমরা হিসাব কর না? এরপর তাঁরা সেখানেই রয়ে গেলেন।

২৯/১৩. অধ্যায়ঃ ২৯/১৩. অধ্যায়ঃ

১৮৮৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানটি হল জান্নাতের বাগানের একটি বাগান, আর আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানটি হল জান্নাতের বাগানের একটি বাগান আর আমার মিম্বরটি হল আমার হাউয (কাউসার)- এর উপর অবস্থিত।

১৮৮৯. আয়েশা‌ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মদীনায় শুভাগমন করলে আবু বকর (রাদি.) ও বিলাল (রাদি.) জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আবু বকর (রাদি.) জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়লে তিনি এ কবিতাংশটি আবৃত্তি করিতেনঃ

“প্রত্যেকেই স্বীয় পরিবারের মাঝে দিনাতিপাত করছে,

অথচ মৃত্যু তার জুতার ফিতা অপেক্ষা সন্নিকটবর্তী।”

আর বিলাল (রাদি.) জ্বর থেকে সেরে উঠলে উচ্চৈঃস্বরে এ কবিতাংশ আবৃত্তি করিতেনঃ

“হায়, আমি যদি কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে মক্কার প্রান্তরে একটি রাত কাটাতে পারতাম

আর আমার চারদিকে থাকত ইযখির এবং জালীল ঘাস।

মাজান্না ঝর্ণা পানি পানের সুযোগ কখনো হইবে কি?

আমার জন্য শামা এবং ত্বফীল পাহাড় প্রকাশিত হইবে কি?”

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেনঃ হে আল্লাহ! তুমি শায়বা ইবনু রাবীআ, উতবা ইবনু রাবীআ এবং উমায়্যাহ ইবনু খালফের প্রতি লানত বর্ষণ কর; যেমনিভাবে তাঁরা আমাদের মাতৃভূমি হইতে বের করে মহামারীর দেশে ঠেলে দিয়েছে। এরপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুআ করলেনঃ হে আল্লাহ! মদীনাকে আমাদের নিকট মক্কার মত বা তার চেয়েও বেশি প্রিয় করে দাও। হে আল্লাহ! আমাদের সা ও মুদে বরকত দান কর এবং মদীনাকে আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর বানিয়ে দাও। এর জ্বরের প্রকোপকে বা মহামারীকে জুহফায় স্থানান্তরিত করে দাও। আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমরা যখন মদীনা এসেছিলাম তখন তা ছিল আল্লাহর যমীনে সর্বাপেক্ষা অধিক মহামারীর স্থান। তিনি আর বলেন, সে সময় মদীনায় বুতহান নামক স্থানে একটি ঝর্ণা ছিল যেখানে হইতে বর্ণ ও বিকৃত স্বাদের পানি প্রবাহিত হত।

১৮৯০. উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি এ বলে দুআ করিতেন, হে আল্লাহ! আমাকে তোমার রাস্তায় শাহাদাত লাভের তাওফীক দান কর এবং আমার মৃত্যু তোমার রাসূলের শহরে প্রদান কর। ইবনু যুরাই (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ….. হাফসা বিনতু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উমর (রাদি.)- কে অনুরূপ বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি। হিশাম (রহঃ) বলেন, যায়দ তাহাঁর পিতার সূত্রে হাফসা (রাদি.) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি উমর (রাদি.)- কে (উপরোক্ত কথা) বলিতে শুনিয়াছি। আবু আবদুল্লাহ বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, রাওহ তাহাঁর মায়ের সূত্রে এরূপ বলেছেন।”


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply