মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান ও নাবী (সাঃ) এর উক্তি

মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান ও নাবী (সাঃ) এর উক্তি

মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান ও নাবী (সাঃ) এর উক্তি >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৬৩, আনসারগণের মর্যাদা, অধ্যায়ঃ (৪৭-৫৩)=৭টি

৬৩/৪৭. অধ্যায়ঃ হাজ্জ সমাধার পর মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান।
৬৩/৪৮. অধ্যায়ঃ তারিখ, কোথা হইতে তারিখ
৬৩/৪৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) – এর উক্তি, হে আল্লাহ! আমার সহাবাগণের হিজরতকে অটুট রাখুন এবং মক্কায় মৃত সাহাবীদের উদ্দেশ্যে শোক জ্ঞাপন।
৬৩/৫০. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কিভাবে তাহাঁর সাহাবীদের ভিতর ভ্রাতৃবন্ধন মজবুত করিলেন।
৬৩/৫১. অধ্যায়ঃ –
৬৩/৫২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) – এর মদীনায় আগমনে তাহাঁর নিকট ইয়াহুদীদের উপস্থিতি।
৬৩/৫৩. অধ্যায়ঃ সালমান ফারসী (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহণ।

৬৩/৪৭. অধ্যায়ঃ হাজ্জ সমাধার পর মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান।

৩৯৩৩

উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত। তিনি সাইব ইবনু উখতিননামর (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনি মক্কায় অবস্থান ব্যাপারে কী শুনেছেন? তিনি বলিলেন, আমি আলা ইবনুল হাযরামী (রাদি.)- এর কাছে শুনিয়াছি, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, মুহাজিরদের জন্য তাওয়াফে সদর [১] আদায় করার পর তিন দিন মক্কায় থাকার অনুমতি আছে। [২]

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৩, ইঃফাঃ ৩৬৪৬)

[১] হাজ্জ কার্যসমূহ সমাপন করে মিনা হইতে প্রত্যাবর্তন করার পর কাবা ঘরের যে তাওয়াফ করা হয় তাকে বুঝানো হয়েছে।

[২] মক্কা বিজয়ের পূর্বে যারা হিজরত করেছিলেন তাদের জন্য পুনরায় মক্কায় অবস্থান করা হারাম ছিল। কিন্তু যারা হাজ্জ বা উমরাহ এর উদ্দেশ্যে মক্কায় আসবে তারা তাদের হাজ্জ উমরাহ এর কাজ সমাধা করে মাত্র তিন দিন প্রয়োজন হলে অবস্থান করিতে পারবে-তাতে নিষেধ নেই।

৬৩/৪৮. অধ্যায়ঃ তারিখ, কোথা হইতে তারিখ

৩৯৩৪

সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) বর্ণনা করেন, লোকেরা বছর গণনা নাবী (সাঃআঃ)- এর নবুয়াত প্রাপ্তির দিন হইতে করেনি এবং তাহাঁর মৃত্যুর দিন থেকেও করেনি বরং তাহাঁর মদীনায় হিজরত হইতে বছর গণনা করা হয়েছে।

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৪, ইঃফাঃ ৩৬৪৭)

৩৯৩৫

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় দু দু রাকআত করে সলাত ফরয করা হয়েছিল। অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) যখন হিজরত করিলেন, ঐ সময় সলাত চার রাকআত করে দেয়া হয়। এবং সফর কালে আগের অবস্থা অর্থাৎ দু রাকআত বহাল রাখা হয়। আব্দুর রাজ্জাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মামার সূত্রে রিওয়ায়াত বর্ণনায় ইয়াযীদ ইবনু যরায়-এর অনুসরণ করিয়াছেন।

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৫, ইঃফাঃ ৩৬৪৮)

৬৩/৪৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) – এর উক্তি, হে আল্লাহ! আমার সহাবাগণের হিজরতকে অটুট রাখুন এবং মক্কায় মৃত সাহাবীদের উদ্দেশ্যে শোক জ্ঞাপন।

৩৯৩৬

সাদ ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

বিদায় হাজ্জের বছর আমি ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছাকাঠি হই তখন রাসুল সাঃআঃ আমাকে দেখিতে আসেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার রোগ কি পর্যায় পৌছেছে তা আপনি দেখিতে পাচ্ছেন। আমি একজন সম্পদশালী। আমার ওয়ারিশ হচ্ছে একটি মাত্র কন্যা। আমি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ আল্লাহর রাস্তায় সাদকা করে দিব? তিনি বলিলেন, না। আমি বললাম, তবে কি অর্ধেক? তিনি বলিলেন, হে সাদ, এক তৃতীয়াংশ দান কর। এবং এক তৃতীয়াংশই অনেক বেশি। তুমি তোমার ছেলে-মেয়েদেরকে সম্পদশালী রেখে যাও তা-ই উত্তম, এর চেয়ে তুমি তাদেরকে নিঃস্ব রেখে গেলে যে তারা অন্যের নিকট ভিক্ষে করে। আহ্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)…..ইব্রাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ কথাগুলোও বর্ণনা করিয়াছেন। তুমি তোমার ওয়ারিশদের সম্পদশালী রেখে যাবে আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু ব্যয় করিবে, আল্লাহ তার প্রতিদান তোমাকে দেবেন। তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমাটি তুলে দিবে এর প্রতিদানও আল্লাহ তোমাকে দেবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি আমার সাথী সঙ্গীদের হইতে পশ্চাতে থাকব? তিনি বলিলেন, তুমি কক্ষণো পিছে পড়ে থাকবে না আর এ অবস্থায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে তুমি যে কোন নেক আমাল করিবে তাহলে তোমার সম্মান ও মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হইবে। সম্ভবতঃ তুমি বয়স বেশি পাবে এবং এর ফলে তোমার দ্বারা অনেক মানুষ উপকৃত এবং অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। হে আল্লাহ! আমার সাহাবীদের হিজরাতকে অটুট রাখুন। তাদেরকে পশ্চাৎমুখী করে ফিরিয়ে নিবেন না। কিন্তু অভাবগ্রস্ত সাদ ইবনু খাওলাহর মক্কা্য় মৃত্যুর কারণে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করিলেন। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ও মূসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইব্রাহীম সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ তোমার ওয়ারিশদের রেখে যাওয়া….। (৫৬)

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৬, ইঃফাঃ ৩৬৪৯)

৬৩/৫০. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কিভাবে তাহাঁর সাহাবীদের ভিতর ভ্রাতৃবন্ধন মজবুত করিলেন।

আবদুর রাহমান ইবনু আউফ (রাদি.) বলেন, আমরা যখন মদীনা এলাম তখন আমার ও সাদ ইবনু রাবীর মধ্যে নাবী (সাঃআঃ) ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দেন এবং আবু জুহাইফাহ (রাদি.) বলেন, সালমান ও আবুদ্ দারদা (রাদি.) – এর মধ্যে নাবী (সাঃআঃ) ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দিয়েছিলেন।

৩৯৩৭

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাদি.) যখন মদীনায় আসলেন, তখন নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর ও সাদ ইবনু রাবী আনসারী (রাদি.) – এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দিলেন। সাদ (রাদি.) তার সম্পদ ভাগ করে অর্ধেক সম্পদ এবং দুজন স্ত্রীর যে কোন একজন নিয়ে যাওয়ার জন্য আবদুর রহমানকে অনুরোধ করিলেন। তিনি উত্তরে বলিলেন, আল্লাহ আপনার পরিবারবর্গ ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে এখানকার বাজারের রাস্তাটি দেখিয়ে দিন। তিনি মুনাফা হিসেবে কিছু ঘি ও পনির লাভ করিলেন। কিছুদিন পরে নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে তার দেখা হল। তিনি (সাঃআঃ) তখন তার গায়ে ও কাপড়ে হলুদ রং-এর চিহ্ন দেখিতে পেয়ে বলিলেন, হে আবদুর রাহমান, ব্যাপার কি! তিনি বলিলেন, আমি একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করেছি। নাবী (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, তাকে কি পরিমাণ মোহর দিয়েছ? তিনি বলিলেন, তাকে খেজুর বিচির পরিমাণ সোনা দিয়েছি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, একটি বকরি দিয়ে হলেও ওয়ালীমাহ করে নাও।

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৭, ইঃফাঃ ৩৬৫০)

৬৩/৫১. অধ্যায়ঃ –

৩৯৩৮

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.)-এর নিকট নাবী সাঃআঃ-এর মদিনায় আসার খবর পৌঁছলে তিনি এসে তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করিলেন। তিনি বলিলেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করছি। এগুলোর ঠিক উত্তর নাবী ছাড়া অন্য কেউ জানে না।

(১) কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত কী?

(২) জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম খাদ্য কী?

(৩) কী কারণে সন্তান আকৃতিতে কখনও পিতার মত কখনো বা মায়ের মত হয়? নাবী সাঃআঃ বলিলেন, এ বিষয়গুলি সম্পর্কে এই মাত্র জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে জানিয়ে গেলেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) একথা শুনে বলিলেন, তিনিই ফেরেশ্তাদের মধ্যে ইয়াহূদীদের দুশমন। নাবী সাঃআঃ বলিলেন,

(১) কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম আলামত লেলিহান অগ্নি যা মানুষকে পূর্বদিক হইতে পশ্চিম দিকে ধাবিত করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে একত্র করিবে।

(২) সর্বপ্রথম খাদ্য যা জান্নাতবাসী খাবে তা হল মাছের কলিজার বাড়তি অংশ।

(৩) যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার মত হয় আর যদি পুরুষের আগে নারীর বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের মত হয়। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসুল। হে আল্লাহর রাসুল, ইয়াহূদীগণ এমন একটি জাতি যারা অন্যের কুৎসা রটনায় খুব পটু। আমার ইসলাম গ্রহণ প্রকাশ হওয়ার পূর্বে আমার অবস্থা সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। নাবী সাঃআঃ তাদেরকে ডাকলেন, তারা হাযির হল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমাদের মাঝে আবদুল্লাহ ইবনু সালাম কেমন লোক? তারা বলিল, তিনি আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি এবং সর্বোত্তম ব্যক্তির সন্তান। তিনি আমাদের সবচেয়ে মর্যাদাবা/পাশান এবং সবচেয়ে মর্যাদাবা/পাশান ব্যক্তির সন্তান। নাবী সাঃআঃ বলিলেন, আচ্ছা বলত, যদি আবদুল্লাহ ইবনু সালাম ইসলাম কবুল করে তাহলে কেমন হইবে? তোমরা তখন কি করিবে? তারা বলিল, আল্লাহ তাকে একাজ হইতে রক্ষা করুন। নাবী সাঃআঃ আবার এ কথাটি বলিলেন, তারাও আগের মত উত্তর দিল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সালাম বেরিয়ে আসলেন, এবং বলিলেন,

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ

তা শুনে ইয়াহূদীগণ বলিতে লাগল, সে আমাদের মধ্যে খারাপ লোক এবং খারাপ লোকের সন্তান। অতঃপর তারা তাকে তুচ্ছ করার উদ্দেশে আরো অনেক কথাবার্তা বলিল। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এটাই আশংকা করেছিলাম। (৩৩২৯)

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৮, ইঃফাঃ ৩৬৫১)

৩৯৩৯

আবদুর রাহমান ইবনু মুতঈম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুর রাহমান ইবনু মুতঈম (রাদি.) বলেন, আমার ব্যবসায়ের একজন অংশীদার কিছু দিরহাম বাজারে নিয়ে বাকীতে বিক্রি করে। আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এমন কেনাবেচা কি জায়িয? তিনিও বলিলেন, সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর শপথ, আমি তা খোলা বাজারে বিক্রি করেছি তাতে কেউ ত আপত্তি করেন নি। এরপর আমি বারা ইবনু আযিব (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আসলেন তখন আমরা এরকম বাকীতে কেনাবেচা করতাম; তখন তিনি বলিলেন যদি নগদ হয় তবে তাতে কোন বাধা নেই। আর যদি ধারে হয় তবে জায়িয হইবে না। তুমি যায়েদ ইবনু আরকাম (রাদি.) – এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করে নাও। কেননা তিনি আমাদের মধ্যে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এরপর আমি যায়দ ইবনু আরকামকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও এ রকমই বলিলেন। রাবী সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হাদীসটি কখনও এভাবে বর্ণনা করেন “…” নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা হাজ্জের মৌসুম পর্যন্ত মিয়াদে বাকীতে কেনাবেচা করতাম।

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৯, ইঃফাঃ ৩৬৫২)

৩৯৪০

আবদুর রাহমান ইবনু মুতঈম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুর রাহমান ইবনু মুতঈম (রাদি.) বলেন, আমার ব্যবসায়ের একজন অংশীদার কিছু দিরহাম বাজারে নিয়ে বাকীতে বিক্রি করে। আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এমন কেনাবেচা কি জায়িয? তিনিও বলিলেন, সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর শপথ, আমি তা খোলা বাজারে বিক্রি করেছি তাতে কেউ ত আপত্তি করেন নি। এরপর আমি বারা ইবনু আযিব (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আসলেন তখন আমরা এরকম বাকীতে কেনাবেচা করতাম; তখন তিনি বলিলেন যদি নগদ হয় তবে তাতে কোন বাধা নেই। আর যদি ধারে হয় তবে জায়িয হইবে না। তুমি যায়েদ ইবনু আরকাম (রাদি.) – এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করে নাও। কেননা তিনি আমাদের মধ্যে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এরপর আমি যায়দ ইবনু আরকামকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও এ রকমই বলিলেন। রাবী সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হাদীসটি কখনও এভাবে বর্ণনা করেন “…” নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা হাজ্জের মৌসুম পর্যন্ত মিয়াদে বাকীতে কেনাবেচা করতাম।

(আঃপ্রঃ ৩৬৪৯, ইঃফাঃ ৩৬৫২)

৬৩/৫২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) – এর মদীনায় আগমনে তাহাঁর নিকট ইয়াহুদীদের উপস্থিতি।

(আরবী) অর্থ ইয়াহূদী হয়ে গেছে। (আরবী) অর্থ আমরা তাওবা করেছি। (আরবী) অর্থ তাওবাকারী।

৩৯৪১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যদি আমার উপর দশজন ইয়াহূদী ঈমান আনত তবে গোটা ইয়াহূদী সম্প্রদায়ই ঈমান আনত। [১]

(আঃপ্রঃ ৩৬৫০, ইঃফাঃ ৩৬৫৩)

[১] উক্ত হাদীসে দুপ্রকার তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়ে থাকে (১) উক্ত হাদীসটি নাবী (সাঃআঃ) যে সময়ে বলেন, সে সময় পর্যন্ত যদি দশজন ইয়াহুদী নাবী (সাঃআঃ) এর প্রতি ঈমান আনত তবে সমগ্র ইয়াহুদী জাতী ঈমান আনত। (২) উক্ত হাদীসে নাবী (সাঃআঃ) বিশেষ দশজন ইয়াহুদী নেতার প্রতি ইঙ্গিত করেন যারা সকলে ঈমান আনলে তাদের প্রভাবে তাদের সম্প্রদায়ের সকলেই ঈমান আনত। কিন্তু বাস্তবে তাদের মধ্য হইতে খুব অল্প সংখ্যক ঈমান এনেছিল। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ ও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হচ্ছেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু সালাম। (ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড ৩৫০ পৃষ্ঠা)

৩৯৪২

আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আসলেন, তখন ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের কিছু লোক আশুরার দিনকে খুব সম্মান করত এবং সেদিন তারা সাওম পালন করত। এতে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, ইয়াহূদীদের চেয়ে ঐ দিন সাওম পালন করার আমরা বেশি হকদার। তারপর তিনি সবাইকে সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫১, ইঃফাঃ ৩৬৫৪)

৩৯৪৩

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু আব্বাস (রাদি.) বর্ণনা করেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন মদীনায় আসেন তখন দেখিতে পেলেন ইয়াহূদীরা আশুরা দিবসে সাওম পালন করে। তাদেরকে সাওম পালনের কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলিল, এদিনই আল্লাহ তাআলা মূসা (আঃ) ও বনী ইসরাঈলকে ফিরাউনের উপর বিজয় দিয়েছিলেন। তাই আমরা ঐ দিনের সম্মানে সাওম পালন করি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমাদের চেয়ে আমরা মূসা (আঃ)- এর বেশি নিকটবর্তী। এরপর তিনি সাওম পালনের নির্দেশ দিলেন।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫২, ইঃফাঃ ৩৬৫৫)

৩৯৪৪

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) চুলে সিঁথি না কেটে সোজা পিছনে দিতেন। আর মুশরিকরা তাদের চুলে সিঁথি কাটত। আহলে কিতাব সিঁথি কাটত না। নাবী (সাঃআঃ) আল্লাহর নিকট হইতে কোন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আহলে কিতাবের অনুকরণ পছন্দ করিতেন। তারপর (ওয়াহী মোতাবেক) তাহাঁর মাথায় সিঁথি কাটলেন।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫৩, ইঃফাঃ ৩৬৫৬)

৩৯৪৫

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এরাই তো সেই আহলে কিতাব যারা ভাগাভাগি করে ফেলেছে, কোন কোন বিষয়ের উপর ঈমান এনেছে আর কোন কোন বিষয়কে অস্বীকার করেছে। রাবী আল্লাহর এ বাণী বুঝাতে চেয়েছেন – “যারা কুরআনকে খণ্ড খণ্ড করেছে” (সুরা আল-হিজরঃ ৯১)

(আঃপ্রঃ ৩৬৫৪, ইঃফাঃ ৩৬৫৭)

৬৩/৫৩. অধ্যায়ঃ সালমান ফারসী (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহণ।

৩৯৪৬

সালমান ফারসী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি দশ জনেরও অধিক মালিকের অধীনে হাত বদল হইতে থাকেন।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫৫, ইঃফাঃ ৩৬৫৮)

৩৯৪৭

আবু উসমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু উসমান (রাদি.) বলেন, আমি সালমান (রাদি.) – কে বলিতে শুনিয়াছি; তিনি বলেন, আমি রাম হুরমুয এর বাসিন্দা।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫৬, ইঃফাঃ ৩৬৫৯)।

৩৯৪৮

সালমান ফারসী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

সালমান ফারসী (রাদি.) বলেন, ঈসা এবং মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)- এর মধ্যে ছয় শত বছরের পার্থক্য ছিল।

(আঃপ্রঃ ৩৬৫৭, ইঃফাঃ ৩৬৬০)

Comments

Leave a Reply