বিয়ের প্রস্তাব । বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া।
বিয়ের প্রস্তাব । বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬৭, বিয়ে শাদী, অধ্যায়ঃ (৩৩-৪৭)=১৫টি
৬৭/৩৩. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের সৎ পুরুষের কাছে নিজেকে (বিয়ের উদ্দেশে) পেশ করা।
৬৭/৩৪. অধ্যায়ঃ নিজের কন্যা অথবা বোনকে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে কোন নেক্কার পরহেজগার ব্যক্তির সামনে পেশ করা।
৬৭/৩৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণী: তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই যদি তোমরা কথার ইশারায় নারীদেরকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ। আল্লাহ অবগত আছেন ……… ক্ষমাকারী এবং ধৈর্যশীল। (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২৩৫)
৬৭/৩৬. অধ্যায়ঃ বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া।
৬৭/৩৭. অধ্যায়ঃ যারা বলে, ওয়ালী বা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ তাআলার কালাম দলীল হিসাবে পেশ করে:
৬৭/৩৮. অধ্যায়ঃ ওয়ালী বা অভিভাবক নিজেই যদি বিয়ের প্রার্থী হয়।
৬৭/৩৯. অধ্যায়ঃ কার জন্য ছোট শিশুদের বিয়ে দেয়া বৈধ।
৬৭/৪০. অধ্যায়ঃ আপন পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া।
৬৭/৪১. অধ্যায়ঃ সুলতানই ওলী (যার কোন ওলী নাই)। এর প্রমাণ নাবী (সাঃআঃ) – এর হাদীসঃ আমি তাকে তোমার কাছে জানা কুরআনের বিনিময়ে বিয়ে দিলাম।
৬৭/৪২. অধ্যায়ঃ পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিবাহ দিতে পারে না।
৬৭/৪৩. অধ্যায়ঃ কন্যার অসন্তুষ্টিতে পিতা তার বিয়ে দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হইবে।
৬৭/৪৪. অধ্যায়ঃ ইয়াতীম বালিকার বিয়ে দেয়া।
৬৭/৪৫. অধ্যায়ঃ যদি কোন বিয়ে প্রার্থী পুরুষ অভিভাবককে বলে, অমুক মেয়েকে আমার কাছে বিয়ে দিন এবং মেয়ের অভিভাবক বলে, তাকে এত মোহরের বিনিময়ে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম, তাহলে এই বিয়ে বৈধ হইবে যদিও সে জিজ্ঞেস না করে, তুমি কি রাযী আছ? তুমি কি কবুল করেছ?
৬৭/৪৬. অধ্যায়ঃ কারো প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব দেবে না, যতক্ষণ না তার বিয়ে হইবে কিংবা প্রস্তাব ত্যাগ করিবে।
৬৭/৪৭. অধ্যায়ঃ বিয়ের প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা।
৬৭/৩৩. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের সৎ পুরুষের কাছে নিজেকে (বিয়ের উদ্দেশে) পেশ করা।
৫১২০
সাবিত আল বুনানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাদি.) – এর কাছে ছিলাম। তখন তাহাঁর কাছে তাহাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাদি.) বলিলেন, একজন মহিলা নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করিতে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাদি.) – এর কন্যা বলিলেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছি: লজ্জার কথা। আনাস (রাদি.) বলিলেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নাবী (সাঃআঃ) – এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারনেই সে নিজেকে নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে পেশ করেছে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৫)
৫১২১
সাহল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একজন মহিলা এসে রাসুল (সাঃআঃ) – এর কাছে নিজেকে পেশ করিলেন। এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দিন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার কাছে কি আছে? সে উত্তর দিল, আমার কাছে কিছুই নেই। রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, যাও, তালাশ কর, কোন কিছু পাও কিনা? দেখ যদি একটি লোহার আংটিও পাও। লোকটি চলে গেল এবং ফিরে এসে বলিল, কিছুই পেলাম না এমনকি একটি লোহার আংটিও না; কিন্তু আমার এ তহবন্দখানা আছে। এর অর্ধেকাংশ তার জন্য। সাহল (রাদি.) বলেন, তার দেহে কোন চাদর ছিল না। অতএব নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার তহবন্দ দিয়ে সে কি করিবে? যদি তুমি এটা পর, মহিলার শরীরে কিছুই থাকবে না, আর যদি এটা সে পরে তবে তোমার শরীরে কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি অনেকক্ষণ বসে রইল। এরপর নাবী (সাঃআঃ) তাকে চলে যেতে দেখে ডাকলেন বা তাকে ডাকানো হল এবং বলিলেন, তুমি কুরআন কতটুকু জান? সে বলিল, আমার অমুক অমুক সুরা মূখস্থ আছে এবং সে সুরাগুলোর উল্লেখ করিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার বিনিময়ে তোমাকে এর সঙ্গে বিয়ে দিলাম। (আঃপ্রঃ- ৪৭৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৬)
৬৭/৩৪. অধ্যায়ঃ নিজের কন্যা অথবা বোনকে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে কোন নেক্কার পরহেজগার ব্যক্তির সামনে পেশ করা।
৫১২২
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যখন উমার (রাদি.) – এর কন্যা হাফসাহ (রাদি.) খুনায়স ইবনু হুযাইফাহ সাহমীর মৃত্যুতে বিধবা হলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর একজন সাহাবী ছিলেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদি.) বলেন, আমি উসমান ইবনু আফ্ফান (রাদি.) – এর কাছে গেলাম এবং হাফসাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিলাম; তখন তিনি বলিলেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। এরপর আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম, তারপর আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলিলেন, আমার কাছে এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, যেন এখন আমি তাকে বিয়ে না করি। উমার (রাদি.) বলেন, তারপর আমি আবু বক্র সিদ্দিক (রাদি.) – এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, যদি আপনি চান তাহলে আপনার সঙ্গে উমরের কন্যা হাফসাকে বিয়ে দেই। আবু বকর (রাদি.) নিরব থাকলেন এবং প্রতি-উত্তরে আমাকে কিছুই বলিলেন না। এতে আমি উসমান (রাদি.) – এর চেয়ে অধিক অসন্তুষ্ট হলাম, তারপর আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হাফসাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠালেন এবং হাফসাকে আমি তার সঙ্গে বিয়ে দিলাম। এরপর আবু বকর (রাদি.) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলিলেন, সম্ভবত আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি যখন হাফসাকে আমার জন্য পেশ করেন তখন আমি কোন উত্তর দেইনি। উমার (রাদি.) বলেন, আমি বললাম, হাঁ। আবু বকর (রাদি.) বলিলেন, আপনার প্রস্তাবে সাড়া দিতে কোন কিছুই আমাকে বিরত করেনি; এ ছাড়া যে, আমি জানি, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হাফসার বিষয় উল্লেখ করিয়াছেন আর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর গোপন ভেদ প্রকাশ আমার পক্ষে কখনও সম্ভব নয়। যদি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা ত্যাগ করিতেন তাহলে আমি হাফসাকে গ্রহন করতাম।(আঃপ্রঃ- ৪৭৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৭)
৫১২৩
ইরাক ইবনু মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যাইনাব বিনতে আবু সালামাহ (রাদি.) তাহাঁর কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, উম্মু হাবীবা (রাদি.) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে বলেছেন, আপনি দুররাহ বিনতে আবু সালামাকে বিয়ে করিতে যাচ্ছেন। এ কথা আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, উম্মু সালামাহ থাকতে আমি তাকে বিয়ে করব? যদি আমি উম্মু সালামাকে বিয়ে না-ও করতাম, তবুও সে আমার জন্য হালাল হত না। কেননা তার পিতা আমার দুধভাই। (আঃপ্রঃ- ৪৭৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৮)
৬৭/৩৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণী: তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই যদি তোমরা কথার ইশারায় নারীদেরকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ। আল্লাহ অবগত আছেন ……… ক্ষমাকারী এবং ধৈর্যশীল। (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২৩৫)
(আরবী) আরবী অর্থ – তোমরা গোপনে মনে পোষণ কর, প্রত্যেক বস্তু যা তুমি গোপনে রাখ তা হলো মাকনূন।
৫১২৪
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
“যদি কোন ব্যক্তি ইদ্দত পালনকারী কোন মহিলাকে বলে যে, আমার বিয়ে করার ইচ্ছে আছে। আমি কোন নেক্কার মহিলাকে পেতে ইচ্ছে পোষণ করি।” কাসিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেন কোন ব্যক্তি বলিল, তুমি আমার কাছে খুবই সম্মানিতা এবং আমি তোমাকে পছন্দ করি। আল্লাহ তোমার জন্য কল্যাণ বর্ষণ করুন। অথবা এ ধরনের উক্তি। আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বিয়ের ইচ্ছে ইশারায় ব্যক্ত করা উচিত, খোলাখুলি এ ধরণের কোন কথা বলা ঠিক নয়। কেউ এ ধরণের বলিতে পারে, আমার এ সকল গুণের প্রয়োজন আছে। আর তোমার জন্য সুখবর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য আপনি পুন: বিয়ের উপযুক্ত। সে মহিলাও বলিতে পারে- আপনি যা বলেছেন, তা আমি শুনিয়াছি কিন্তু এর অধিক ওয়াদা করা ঠিক নয়। তার অভিভাবকদেরও তার অজ্ঞাতে কোন প্রকার ওয়াদা দেয়া ঠিক নয়। কিন্তু যদি কেউ ইদ্দাতের মাঝে কাউকে বিয়ের কোন প্রকার ওয়াদা করে এবং ইদ্দত শেষে সে ব্যক্তি যদি তাকে বিয়ে করে তবে সেই বিয়ে বিচ্ছেদ করিতে হইবে না। হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, (আরবি) এর অর্থ হল: ব্যভিচার। ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা বলা হয় যে, (আরবি) অর্থ হল- ইদ্দত পূর্ণ হওয়া।(আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)
৬৭/৩৬. অধ্যায়ঃ বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া।
৫১২৫
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বলেছেন, আমি তোমাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখেছি, একজন ফেরেশতা তোমাকে রেশমী চাদরে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে এসে বলিল, এ হচ্ছে আপনার স্ত্রী। এরপর আমি তোমার মুখমন্ডল থেকে চাদর খুলে ফেলে তোমাকে দেখিতে পেলাম। তখন আমি বললাম, যদি স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা বাস্তবায়িত হইবে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৯)
৫১২৬
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মহিলা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করিতে এসেছি। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার দিকে দেখলেন এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দৃষ্টি দিলেন। আপাদমস্তক দেখা শেষ করে তিনি মাথা নিচু করিলেন। যখন মহিলা দেখিতে পেল, নাবী (সাঃআঃ) তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন সে বসে পড়ল। তারপর একজন সাহাবী দাঁড়িয়ে অনুরোধ করিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! যদি আপনার এ মহিলার কোন প্রয়োজন না থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে তাকে বিয়ে দিয়ে দিন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার কাছে কোন সম্পদ আছে কি? সে বলিল – না আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কোন সম্পদ নেই। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি তোমার পরিবারের কাছে গিয়ে দেখ, কোন কিছু পাও কিনা? তারপর সে চলে গেল, ফিরে এসে বলিল, না, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কিছুই পেলাম না। তখন তিনি বলিলেন, দেখ একটি লোহার আংটি পাও কিনা! এরপর সে চলে গেল। ফিরে এসে বলিল, না, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কসম, একটি লোহার আংটিও পেলাম না; কিন্তু এই আমার তহবন্দ আছে। [বর্ণনাকারী সাহল (রাদি.) বলেন তার কোন চাদর ছিল না] এর অর্ধেক তাকে দিয়ে দেব। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেন, তোমার এ তহবন্দ দ্বারা কি হইবে? যদি তুমি পর তবে তার জন্য কিছুই থাকবে না, আর যদি সে পরে তাহলে তোমার জন্য কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি বসে পড়ল। দীর্ঘক্ষণ পরে সে চলে যাবার জন্য উদ্যত হলে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে দেখলেন এবং ডেকে এনে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কুরআন কতটুকু জানা আছে? সে বলিল, হ্যাঁ, আমার অমুক, অমুক, অমুক সুরা জানা আছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি কি এগুলো মুখস্থ পড়তে পার? সে বলিল, হ্যাঁ। তখন তিনি বলিলেন, যাও, যে পরিমাণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ জান, এর বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৪৭৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫০)
৬৭/৩৭. অধ্যায়ঃ যারা বলে, ওয়ালী বা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ তাআলার কালাম দলীল হিসাবে পেশ করে:
“যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, তারপর তাদের ইদ্দৎ পূর্ণ হয়ে যায়, সে অবস্থায় তারা স্বামীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে চাইলে তাদেরকে বাধা দিও না।” -(সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২৩২) এ নির্দেশের আওতায় বয়স্কা বিবাহিতা মহিলারা যেমন, তেমনি কুমারী মেয়েরাও এসে গেছে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা মুশরিক মহিলাদের কখনও বিয়ে করিবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান না আনবে”- (সুরা আল-বাক্বারাহ ২/২২১)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, “তোমাদের ভিতরে যারা অবিবাহিতা আছে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও” – (সুরা আন-নূর ২৪/৩২)।
৫১২৭
উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাদি.) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলছে অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করিবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হবার পর এ কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যক্তির কাছে যাও এবং তার সঙ্গে যৌন মিলন কর। এরপর স্ত্রী তার স্বামীর থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না, যতক্ষণ না সে অন্য ব্যক্তির দ্বারা গর্ভবতী হত, যার সঙ্গে তার যৌন মিলন হত। যখন তার গর্ভ সুস্পষ্টভাবে ইচ্ছে করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করত। এটা ছিল তার স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করিতে পারে। এ ধরনের বিয়েকে নিকাহুল ইস্তিবদা বলা হত। তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কয়েক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর ফলে গর্ভবতী হত এবং সন্তান ভূমিষ্ট হবার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যক্তিকে ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জান- তোমরা কী করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি, সুতরাং হে অমুক! এটা তোমার সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন ঐ ব্যক্তি উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করিতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত। চতুর্থ প্রকারের বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ ঐ মহিলার সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার আছে যত পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-সঙ্গী করিতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল পতিতা, যার চিহ্ন হিসেবে নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছে করলে অবাধে এদের সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ পুরুষ এবং একজন কাফাহ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলিতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান)-কে ডেকে আনা হত। সে সন্তানটির যে লোকটির সঙ্গে সাদৃশ্য দেখিতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি ঐ সন্তানকে নিজের হিসেবে গ্রহণ করিতে বাধ্য হত এবং লোকে ঐ সন্তানকে তার সন্তান হিসেবে আখ্যা দিত এবং সে এই সন্তানকে অস্বীকার করিতে পারত না। যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি বর্তমানে প্রচলিত ব্যবস্থা ছাড়া জাহিলী যুগের সমস্ত বিবাহের রীতি বাতিল করে দিলেন।(আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ ৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫১)
৫১২৮
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে দিচ্ছেন সেসব নারী সম্পর্কে যাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না অথচ তাদেরকে বিয়ে করিতে চাও” (সুরা আন-নিসাঃ ১২৭) তিনি বলেন, এ আয়াত হচ্ছে ঐ ইয়াতীম নারীদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকের আওতাধীন রহিয়াছে এবং তার ধন-সম্পদে সে মালিকানা রাখে কিন্তু তাকে বিয়ে করা পছন্দ করে না এবং তার সম্পদের জন্য অন্যের কাছে বিয়ে দিতে আগ্রহীও নয়, যাতে করে অন্য লোক এ সম্পত্তিতে তাদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে না বসে (উক্ত আয়াতে অভিভাবকদের এরূপ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫২)
৫১২৯
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমর (রাদি.) – এর কন্যা হাফসা (রাদি.) যখন তার স্বামী খুনায়স ইবনু হুযাফা আস্সাহমীর মৃত্যুর ফলে বিধবা হল, ইনি নাবী (সাঃআঃ) –এর সাহাবী ছিলেন এবং বদরের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। উমর (রাদি.) বলেন, আমি উসমান ইবনু আফ্ফান (রাদি.) –এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাহাঁর কাছে হাফসার বিয়ের প্রস্তাব করলাম এই বলে যে, যদি আপনি ইচ্ছা করেন, তবে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব। তিনি বলিলেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। আমি কয়েকদিন অপেক্ষা করলাম। তারপর তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলিলেন, আমি বর্তমানে বিয়ে না করার জন্য মনস্থির করেছি। উমর (রাদি.) আরো বলেন, আমি আবু বকর (রাদি.) –এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, আপনি যদি চান, তাহলে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৩)
৫১৩০
আল হাসান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি “তোমরা তাদেরকে আটকে রেখো না” – এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, মাকিল ইবনু ইয়াসার (রাদি.) বলেছেন যে, উক্ত আয়াত তাহাঁর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমি আমার বোনকে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেই, সে তাকে তালাক দিয়ে দেয়। যখন তাহাঁর ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয় তখন সেই ব্যক্তি আমার কাছে আসে এবং তাকে পুনরায় বিয়ের পয়গাম দেয়। কিন্তু আমি তাকে বলে দিই, আমি তাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম এবং তোমরা মেলামেশা করেছ এবং আমি তোমাকে মর্যাদা দিয়েছি। তারপরেও তুমি তাকে তালাক দিলে? পুনরায় তুমি তাকে চাওয়ার জন্য এসেছ? আল্লাহর কসম, সে আবারও কখনও তোমার কাছে ফিরে যাবে না। মাকিল বলেন, সে লোকটি অবশ্য খারাপ ছিল না এবং তার স্ত্রীও তার কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী ছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ “তাদেরকে বাধা দিও না,” এরপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার বোনকে তার কাছে বিয়ে দেব। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাকে তার সঙ্গে পুনরায় বিয়ে দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৪)
৬৭/৩৮. অধ্যায়ঃ ওয়ালী বা অভিভাবক নিজেই যদি বিয়ের প্রার্থী হয়।
মুগীরা ইবনু শুবাহ (রাদি.) এমন এক মহিলার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যার নিকটতম অভিভাবক তিনিই ছিলেন। সুতরাং তিনি অন্য একজনকে তার বিয়ে বন্ধনের আদেশ দিলে সে ব্যক্তি তার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলেন।
আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) উম্মু হাকীম বিনতে কারিয (রাদি.) -কে বলিলেন, তুমি কি তোমার বিয়ের ব্যাপারে আমাকে দায়িত্ব দেবে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আবদুর রহমান (রাদি.) বলিলেন, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম। আত্বা বলেন, অভিভাবক লোকদেরকে সাক্ষী রেখে বলবে, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম, অথবা ঐ মহিলার নিকটতম আত্মীয়দের কাউকে তার কাছে তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য বলবে।
সাহল (রাদি.) বলেন, একজন মহিলা এসে নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে বলিল, আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম। এরপর একজন লোক বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! এই মহিলাকে যদি আপনার প্রয়োজন না থাকে তাহলে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন।
৫১৩১
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এ আয়াত হচ্ছে “লোকেরা তোমার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চাচ্ছে। বলে দাও, আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে দিচ্ছেন……” –(সুরা আন-নিসা ৪/১২৭)। এ আয়াত হচ্ছে ইয়াতিম বালিকাদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকদের অধীনে আছে এবং তারা ঐ অভিভাবকের ধন-সম্পদেও অংশীদার; অথচ সে নিজে ওকে বিয়ে করিতে ইচ্ছুক নয় এবং অন্য কেউ তাদেরকে বিয়ে করুক এবং ধন-সম্পদে ভাগ বসাক তাও সে পছন্দ করে না। তাই সে তার বিয়েতে বাধার সৃষ্টি করে। সুতরাং আল্লাহ তাআলা এই ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৫)
৫১৩২
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একদা আমরা নাবী (সাঃআঃ) – এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় নাবী (সাঃআঃ) – এর নিকট একজন মহিলা এসে নিজেকে পেশ করিল। নাবী (সাঃআঃ) তার আপাদমস্তক ভাল করে দেখলেন; কিন্তু তার কথার কোন উত্তর দিলেন না। একজন সাহাবী আরজ করিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি উত্তর করিল, না, আমার কাছে কিছু নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, একটি লোহার আংটিও নেই? লোকটি উত্তর করিল, না, আমার একটি লোহার আংটিও নেই। কিন্তু আমি আমার পরিধানের তহবন্দের অর্ধেক তাকে দেব আর অর্ধেক নিজে পরব। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, না। তোমার কুরআন মাজীদের কিছু জানা আছে? সে বলিল, হ্যাঁ। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার পরিবর্তে আমি তাকে তোমার সাথে বিয়ে দিলাম। (আঃপ্রঃ- ৪৭৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৬)
৬৭/৩৯. অধ্যায়ঃ কার জন্য ছোট শিশুদের বিয়ে দেয়া বৈধ।
আল্লাহ তাআলার কালাম “এবং যারা ঋতুবতী হয়নি” –(সুরা আত-ত্বলাকঃ ৪) এই আয়াতকে দলীল হিসাবে ধরে নাবালেগার ইদ্দাত তিন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
৫১৩৩
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) যখন তাঁকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর সঙ্গে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাহাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল ছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৭)
৬৭/৪০. অধ্যায়ঃ আপন পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া।
উমর (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমার কন্যা-হাফসাহর সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তাকে তাহাঁর সঙ্গে বিয়ে দেই।
৫১৩৪
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যখন তাহাঁর ছয় বছর বয়স তখন নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাহাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে। হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জেনেছি যে, আয়িশা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে নয় বছর ছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৮)
৬৭/৪১. অধ্যায়ঃ সুলতানই ওলী (যার কোন ওলী নাই)। এর প্রমাণ নাবী (সাঃআঃ) – এর হাদীসঃ আমি তাকে তোমার কাছে জানা কুরআনের বিনিময়ে বিয়ে দিলাম।
৫১৩৫
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কোন এক মহিলা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে এসে বলিল, আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে দান করলাম। এরপর সে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকল। তখন একজন লোক বলিল, আপনার দরকার না হলে, আমার সঙ্গে এর বিয়ে দিয়ে দিন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কাছে মোহর দেয়ার মত কি কিছু আছে? লোকটি বলিল, আমার এ তহবন্দ ছাড়া আর কিছুই নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, যদি তুমি তহবন্দখানা তাঁকে দিয়ে দাও, তাহলে তোমার কিছু থাকবে না। কাজেই তুমি অন্য কিছু খুঁজে আন। লোকটি বলিল, আমি কোন কিছুই পেলাম না। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, খুঁজে দেখ, যদি একটি লোহার আংটিও পাও। সে কিছুই পেল না। নাবী (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, কুরআনের কিছু অংশ তোমার জানা আছে কি? লোকটি বলিল হ্যাঁ! অমুক অমুক সুরা আমার জানা আছে এবং সে সুরাগুলোর নাম বলিল। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, কুরআনের যা তোমার জানা আছে, তার বিনিময়ে আমি তাকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম। [২৩১০; মুসলিম ১৬/১২, হাদীস ১৪২৫, আহমাদ ২২৯১৩](আঃপ্রঃ- ৪৭৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৯)
৬৭/৪২. অধ্যায়ঃ পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিবাহ দিতে পারে না।
৫১৩৬
আবু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। আবু হুরায়রা (রাদি.) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তাহাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসুল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হইবে। তিনি বলিলেন, তার চুপ থাকাটাই তার অনুমতি।[৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হাদীস ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১] (আঃপ্রঃ- ৪৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬০)
[১৫] এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ইমাম আবু হানীফা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন – অলী বিবাহিত ও অবিবাহিত মেয়েকে কোন নির্দিষ্ট ছেলেকে বিয়ে করিতে বাধ্য করিতে পারে না। অতএব পূর্বে বিবাহিত মেয়েদের কাছ থেকে বিয়ের জন্য রীতিমত আদেশ পেতে হইবে এবং অবিবাহিত বালেগ মেয়ে থেকে যথারীতি অনুমতি নিতে হইবে। এ সম্পর্কে ইমাম মুসলিম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন- পূর্বে বিবাহিত মেয়েরা তাদের নিজেদের বিয়ের মত জানানোর ব্যপারে তাদের অলী অপেক্ষাও বেশি অধিকার রাখে। আর পূর্বে অবিবাহিত মেয়েদের নিকট তাদের পিতা বিয়ের মত জানতে চাইলে তাদের চুপ থাকাই তাদের অনুমতিজ্ঞাপক।
কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার বর্তমান অধঃপতিত মুসলিম সমাজে মেয়েদের এ অধিকার বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না। এর অপর একটি দিক বর্তমানে খুবই প্রাবল্য লাভ করেছে। আধুনিক ছেলেমেয়েরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে তাদের বাপ-মা-গার্জিয়ানদের কোন তোয়াক্কাই রাখে না। তাদের কোন পরোয়াই করা হয় না। বিয়ে নিজের পছন্দেই ঠিক এ কথার সত্যতা অস্বীকার করা হচ্ছে না, তেমনি এ কথাও এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই, আধুনিক যুবক যুবতীরা যৌবনের উদ্দামতায় অবাধ মেলামেশার গড্ডালিকা প্রবাহে পড়ে দিশেহারা হয়ে যেতে পারে এবং ভাল-মন্দ, শোভন-অশোভন বিচারশূন্য হয়ে যেখানে সেখানে আত্মদান করে বসতে পারে। তাই উদ্দাম-উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ বিচার বিবেচনারও বিশেষ প্রয়োজন। কেননা বিয়ে কেবলমাত্র যৌন পরিতৃপ্তির মাধ্যম নয়; ঘর, পরিবার, সন্তান, সমাজ, জাতি ও দেশ সর্বপরি নৈতিকতার প্রশ্নও তাহাঁর সাথে গভীরভাবে জড়িত। তাই বিয়ের ব্যপারে ছেলেমেয়ের পিতা বা অলীর মতামতের গুরুত্ব আছে। কেননা সাধারণতঃ অলী-পিতা-মাতা নিজেদের ছেলেমেয়েদের কখনও অকল্যাণকামী হইতে পারে না। তাই বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিতামাতার মতের গুরুত্ব কিছুতেই অস্বীকার করা চলেনা।
ছেলেরা বিয়েতে অলী তথা অভভাবকের বাধ্য বাধকতা নেই কিন্তু মেয়ের জন্য বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে। মেয়ের বৈধ অলী থাকাবস্থায় তাকে না জানিয়ে নকল অলী বানিয়ে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে যত বিবাহ হয়ে থাকে তা সবই বাতিল। তাদের দাম্পত্য জীবন হইবে ব্যভিচারী জীবনের মত। তাদের অর্জিত সন্তান সন্ততি জারজ হিসেবে পরিগণিত হইবে। এ অভিশপ্ত জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য তাদের বৈধ অলীর মাধ্যমে পুনর্বিবাহ পড়াতে হইবে। অনেক সময় দেখা যায় অলী বর্তমান থাকা সত্বেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং তাহাঁর নির্দেশ ও সম্মতি ব্যতিরেকে অন্য কোন লোককে অলী হিসিবে দাঁড় করিয়ে বিবাহ কার্য সম্পন্ন করা হয়, এটা না-জায়িয। বরং মূল অলী নিজেই অথবা তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্ব দিবে সে অলী হিসেবে বিবাহ কার্য সম্পাদন করিবে।
উল্লেখ্য অলী কর্তৃক মেয়ের পক্ষ থেকে পূর্ব অনুমতি বা সমর্থন নিতে হইবে ঠিক আছে। কিন্তু বৈধ অলীর [অভিভাবকের] সমর্থন ও অনুমতি ব্যতীত কোন মেয়ের বিয়েই বৈধ হইবে না। কারণ আয়েশা হইতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েকে তার অভিভাবক বিয়ে না দিবে [সে নিজে বিয়ে করলে] তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল…।“ [হাদীসটি ইবনু মাজাহ বর্ণনা করিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ, দেখুন “সহীহ ইবনু মাজাহ” (১৮৭৯)।
অন্য বর্ণনায় আয়েশা(রাদি.) হইতে বর্ণিত হয়েছে রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েই তার অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করিবে তার বিয়ে বাতিল। এ কথাটি তিনবার উল্লেখ করেন।“ [এ ভাষায় হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (২০৮৩), তিরমিযী (১১০২) বর্ণনা করিয়াছেন। হাদীসটি সহীহ, দেখুন “সহীহ আবু দাউদ”, “সহীহ তিরমিযী”, “সহীহ জামেইস সাগীর” (২৭০৯) ও “মিশকাত” (৩১৩১)]।
৫১৩৭
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! নিশ্চয়ই কুমারী মেয়েরা লজ্জা করে। নাবী (সাঃআঃ) বলেন, চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার সম্মতি।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬১)
৬৭/৪৩. অধ্যায়ঃ কন্যার অসন্তুষ্টিতে পিতা তার বিয়ে দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হইবে।
৫১৩৮
খানসা বিনতে খিযাম আল আনসারইয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি অকুমারী ছিলেন তখন তার পিতা তাকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তিনি অপছন্দ করিলেন। এরপর তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর কাছে আসলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬২)
৫১৩৯
আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ এবং মুজাম্মি ইবনু ইয়াযীদ হইতে বর্ণিতঃ
খিযামা নামীয় এক লোক তার মেয়েকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেন। পরবর্তী অংশ পূর্বোক্ত হাদীসের ন্যায়।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৩)
৬৭/৪৪. অধ্যায়ঃ ইয়াতীম বালিকার বিয়ে দেয়া।
আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “যদি তোমরা ভয় কর যে ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি পূর্ণ ইনসাফ করিতে পারবে না, তাহলে তোমরা পছন্দ মতো অন্য কাউকে বিয়ে কর।” –(সুরা আন-নিসা ৪/৩)। কেউ কোন অভিভাবককে যদি বলে, অমুক মহিলাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন এবং সে যদি চুপ থাকে অথবা তাকে বলে তোমার কাছে কী আছে?সে উত্তরে বলে আমার কাছে এই এই আছে অথবা নীরব থাকে। এরপর অভিভাবক বলেন, আমি তাকে তোমার কাছে বিয়ে দিলাম, তাহলে তা বৈধ। এ ব্যাপারে সাহল (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
৫১৪০
উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আয়িশা (রাদি.) – কে জিজ্ঞেস করেন, হে খালা! “যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি ন্যায় বিচার করিতে পারবে না তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যার মালিক……।” (সুরা আন-নিসাঃ ৪/৩) এ আয়াত কোন প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে? আয়িশা (রাদি.) বলিলেন, হে আমার ভাগ্নে! এ আয়াত ঐ ইয়াতীম বালিকাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা তার অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে রহিয়াছে এবং সেই অভিভাবক তার রূপ ও সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে তাকে বিয়ে করিতে চায়; কিন্তু মোহর কম দিতে চায়। এ আয়াতের মাধ্যমে উক্ত বালিকাদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের ব্যতীত অন্য নারীদের বিয়ে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্য যদি সে এদের পূর্ণ মোহর আদায় করে দেয় তবে সে বিয়ে করিতে পারবে। আয়িশা (রাদি.) আরো বলেন, পরবর্তী সময় লোকেরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “তারা তোমার কাছে মহিলাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে… এবং তোমরা যাদের বিয়ে করিতে চাও” (সুরা আন-নিসাঃ ৪/১২৭) আল্লাহ তাআলা এদের জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ করেন; যদি কোন ইয়াতীম বালিকার সৌন্দর্য এবং সম্পদ থাকে, তাহলে এরা তাদেরকে বিয়ে করিতে চায় এবং এদের স্বীয় আভিজাত্যের ব্যাপারেও এ ইচ্ছা পোষণ করে এবং মোহর কম দিতে চায়। কিন্তু সে যদি তাদের পছন্দমতো পাত্রী না হয়, তার সম্পদ ও রূপ কম হবার কারণে এদেরকে ত্যাগ করে অন্য মেয়ে বিয়ে করে। আয়িশা (রাদি.) বলেন, যেমনিভাবে এদের প্রতি অনীহার সময় এদের পরিত্যাগ করিতে চায় তেমনি যে সময় আকর্ষণ থাকবে, সে সময়েও যেন তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করে পূর্ণ মোহর আদায় করে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৪)
৬৭/৪৫. অধ্যায়ঃ যদি কোন বিয়ে প্রার্থী পুরুষ অভিভাবককে বলে, অমুক মেয়েকে আমার কাছে বিয়ে দিন এবং মেয়ের অভিভাবক বলে, তাকে এত মোহরের বিনিময়ে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম, তাহলে এই বিয়ে বৈধ হইবে যদিও সে জিজ্ঞেস না করে, তুমি কি রাযী আছ? তুমি কি কবুল করেছ?
৫১৪১
সাহল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক মহিলা নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে এলো এবং বিয়ের জন্য নিজেকে তাহাঁর কাছে পেশ করিল। তিনি বলিলেন, এখন আমার কোন মহিলার প্রয়োজন নেই। এরপর উপস্থিত একজন লোক বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। নাবী (সাঃআঃ) তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কী আছে? লোকটি বলিল আমার কিছু নেই। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তাকে একটি লোহার আংটি হলেও দাও। লোকটি বলিল, আমার কাছে কিছুই নেই। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার কাছে কী পরিমাণ কুরআন আছে? লোকটি বলিল, এই এই পরিমাণ। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি কুরআনের যা জান, তার বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার মালিকানায় দিয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)
৬৭/৪৬. অধ্যায়ঃ কারো প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব দেবে না, যতক্ষণ না তার বিয়ে হইবে কিংবা প্রস্তাব ত্যাগ করিবে।
৫১৪২
(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৬)
ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক ভাই দরদাম করলে অন্যকে তার দরদাম করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং এক মুসলিম ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের ওপরে অন্য ভাইকে প্রস্তাব দিতে নিষেধ করিয়াছেন, যতক্ষণ না প্রথম প্রস্তাবকারী তার প্রস্তাব উঠিয়ে নেবে বা তাকে অনুমতি দেবে।
৫১৪৩
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারনা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারনা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। একে অপরের দোষ-ত্রুটি খুঁজিও না, একে অন্যের ব্যাপারে মন্দ কথায় কান দিও না এবং একে অপরের প্রতি শত্রুতা পোষণ করো না; বরং ভাই ভাই হয়ে যাও।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)
৫১৪৪
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব করো না; যতক্ষণ না সে তাকে বিয়ে করে অথবা বাদ দেয়।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)
৬৭/৪৭. অধ্যায়ঃ বিয়ের প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা।
৫১৪৫
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
উমর (রাদি.) বলেন, হাফসা (রাদি.) বিধবা হলে আমি আবু বকর (রাদি.) – এর সঙ্গে দেখা করে তাকে বললাম, আপনি যদি চান তবে হাফসা বিনত উমরকে আপনার কাছে বিয়ে দিতে পারি। আমি কয়েকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে বিয়ের জন্য পয়গাম পাঠালেন। পরে আবু বকর (রাদি.) আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বলিলেন, আপনার প্রস্তাবের উত্তর দিতে কিছুই আমাকে বাধা দেয়নি এ ছাড়া যে, আমি জেনেছিলাম রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার সম্পর্কে আলোচনা করিয়াছেন এবং আমি কখনও নাবী (সাঃআঃ) – এর গোপন তথ্য প্রকাশ করিতে পারি না। তিনি যদি তাকে বাদ দিতেন, তাহলে আমি তাকে গ্রহণ করতাম। ইউনুস, মূসা ইবনু উকবাহ এবং আতীক যুহরীর সূত্রে উক্ত হাদীসের সমর্থন করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৮)
Leave a Reply