বিভিন্ন সময়ের দোয়া পাঠের হাদিস সমূহ

বিভিন্ন সময়ের দোয়া পাঠের হাদিস সমূহ

বিভিন্ন সময়ের দোয়া পাঠের হাদিস সমূহ >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১০, অধ্যায়ঃ ৪

  • অধ্যায়ঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ

২৩৮১. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যার সময় বলিতেন,

أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَفِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْرِ

আম্‌সায়না- ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লা-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খয়রি হা-যিহিল লায়লাতি ওয়া খয়রি মা- ফীহা- ওয়া আঊযুবিকা মিন শার্‌রিহা- ওয়া শার্‌রি মা- ফীহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়াসূয়িল কিবারি ওয়া ফিত্‌নাতিদ্ দুন্ইয়া- ওয়া আযা-বিল কবরি, [অর্থাৎ- আমরা সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম এবং সন্ধ্যায় প্রবেশ করিল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তার কোন শারীক নেই। তাহাঁরই সাম্রাজ্য। তাহাঁরই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ রাতের কল্যাণ চাই এবং এতে যা আছে তার কল্যাণ। আর আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে রাতের অকল্যাণ হইতে আর এতে যা আছে তার অকল্যাণ হইতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই, অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা এবং দুনিয়ার বিপদাপদ ও কবরের আযাব হইতে।]।

আর যখন ভোর হতো তখনও তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এরূপ বলিতেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিতেন,

أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلّٰهِ

আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুলকু লিল্লা-হি [অর্থাৎ- আমরা ভোরে প্রবেশ করলাম, ভোরে প্রবেশ করিল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে]। আর এক বর্ণনায় রয়েছে,

رَبِّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِى النَّارِ وَعَذَابٍ فِى الْقَبْر

রব্বি ইন্নী আঊযুবিকা মিন আযা-বিন ফিন্‌না-রি ওয়া আযা-বিন ফিল কবরি [অর্থাৎ- হে রব! আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে জাহান্নামের আযাব ও কবরের শাস্তি হইতে]। [মুসলিম]{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ২৭২৩, তিরমিজি ৩৩৯০, আবু দাউদ ৫০৭১, আহমাদ ৪১৯২, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৮ । বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮২. হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমানোর সময় গালের নীচে হাত রাখতেন আর বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا

আল্ল-হুম্মা বিস্‌মিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া– [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার নামে মৃত্যুবরণ করি ও তোমার নামেই জীবিত হই]। আবার তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ঘুম থেকে জেগে বলিতেন,

الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ أَحْيَانًا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ

আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বাদা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলায়হিন্ নুশূর [অর্থাৎ- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করিলেন এবং তারই দিকে আমাদেরকে প্রত্যাবর্তন]।

[বোখারী]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ৬৩১৪, আহমাদ ২৩২৮৬। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৩.وَمُسْلِمٌ عَنِ الْبَرَاءِ আর ঈমাম মুসলিম বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হইতে [বর্ণনা করেন]।{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ২৭১০। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ বিছানায় ঘুমানোর সময় যেন নিজের পরিধেয় বস্ত্রের ভিতর দিক দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না, তারপর বিছানায় কি এসে পড়েছে। অতঃপর সে যেন এ দুআ পড়ে,

بِاسْمِكَ رَبِّىْ وَضَعْتُ جَنْبِىْ وَبِكَ أَرْفَعُهْ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِىْ فَارْحَمْهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِه عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ

বিস্‌মিকা রব্বী ওয়া যতু জাম্‌বী ওয়াবিকা আরফাউহ ইন্ আম্‌সাকতা নাফসী ফারহাম্‌হা- ওয়া ইন্ আরসালতাহা- ফাহফাযহা- বিমা- তাহফাযু বিহী ইবা-দাকাস্ স-লিহীন, [অর্থাৎ- হে রব! তোমার নামে আমার দেহ রাখলাম এবং তোমার নামেই আবার তা উঠাব। যদি তুমি আমার আত্মাকে [মৃত্যু হইতে] ফিরিয়ে রাখো, তবে তুমি আমার আত্মার উপর দয়া করো। আর যদি একে ছেড়ে দাও, তাহলে এর রক্ষা করো, যা দিয়ে তুমি তোমার নেক বান্দাদেরকে রক্ষা করে থাকো।]। অন্য এক বর্ণনায় আছে, অতঃপর সে যেন নিজের ডান পাশে ঘুমায়, তারপর বলে, বিসমিকা [অর্থাৎ- তোমারই নামে]।

[বোখারী, মুসলিম] {১}. {১} সহীহ : বোখারী ৬৩২০, ৭৩৯৩, মুসলিম ২৭১৪, আবু দাউদ ৫০৫০, আহমাদ ৭৯৩৮, দারিমী ২৭২৬, ইবনি হিব্বান ৫৫৩৪। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৫. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় ডান কাত হয়ে ঘুমাতেন। অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِىْ إِلَيْكَ وَوَجَّهْتُ وَجْهِىْ إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِىْ إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِىْ إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ اٰمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِىْ أَنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِىْ أَرْسَلْتَ

আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা ওয়া ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহী ইলায়কা ওয়া ফাও্ওয়াযতু আমরী ইলায়কা ওয়া আলজাতু যহরী ইলায়কা রগবাতান ওয়া রহ্বাতান ইলায়কা লা- মালজাআ ওয়ালা- মানজা- মিনকা ইল্লা- ইলায়কা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম, তোমার দিকে চেয়ে থাকলাম, আমার কাজ তোমার ওপর সমর্পণ করলাম এবং ভয়ে ও আগ্রহ ভরে তোমার সাহায্যের উপর ভরসা করলাম। তুমি ছাড়া আর কারো কাছে আশ্রয় ও মুক্তি পাওয়ার কোন স্থান নেই। যে কিতাব তুমি অবতীর্ণ করেছ ও যে নবী তুমি পাঠিয়েছ, সম্পূর্ণরূপে আমি এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করি।]। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এ দুআ পড়বে তারপর ঐ রাতেই মারা যাবে, সে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করিবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, বর্ণনাকারী {বারা [রাদি.]] বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক! তুমি বিছানায় ঘুমানোর সময় সলাতের ওযূর মতো ওযূ করিবে এবং ডান কাত হয়ে ঘুমাবে, অতঃপর বলবে,

اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِىْ إِلَيْكَ

আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা…..আরসালতা [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম …… পাঠিয়েছ পর্যন্ত।] অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, যদি তুমি এ রাতেই মৃত্যুবরণ করো, তাহলে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করিবে। আর যদি ভোরে [জীবিত] ওঠো, তাহলে কল্যাণের উপর উঠবে।

[বোখারী, মুসলিম]{১} {১} সহীহ : বোখারী ২৪৭, ৭৪৮৮, ৬৩১৫, মুসলিম ২৭১০, তিরমিজি ৩৫৭৪, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৬৫২৬, আহমাদ ১৮৫১৫, শুআবুল ঈমান ৪৩৮১, ইবনি হিব্বান ৫৫৩৬, সহীহাহ্ ২৮৮৯, সহীহ আত তারগীব ৬০৩, সহীহ আল জামি ২৭৬। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় ঘুমানোর সময় বলিতেন,

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَاٰوَانَا فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِىَ لَه وَلَا مُؤْوِىَ

আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আত্বআমানা- ওয়া সাকা-না- ওয়া কাফা-না- ওয়াআ-ওয়া-না- ফাকাম মিম্‌মান্ লা-কা-ফিয়া লাহূ ওয়ালা- মুবিয়া, [অর্থাৎ- প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে খাওয়ালেন, পান করালেন, আমাদের প্রয়োজন পূরণ করিলেন এবং আমাদেরকে আশ্রয় দিলেন। অথচ এমন অনেক লোক আছে যাদের না আছে কেউ প্রয়োজন মিটাবার আর না আছে কোন আশ্রয়দাতা।]।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ২৭১৫, আবু দাউদ ৫০৫৩, তিরমিজি ৩৩৯৬, আহমাদ ১২৫৫২, ইবনি হিববান ৫৫৪০, শামায়িলে তিরমিজি ২১৯, সহীহ আল জামি ৪৬৮৯। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৭. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন ফাতিমা [রাদি.] [আটার] চাক্কি পিষতে পিষতে তার হাতের কষ্ট অনুভূত হওয়ার অভিযোগ স্বরূপ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলেন। তিনি {ফাতিমা [রাদি.]] জানতে পেরেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে যুদ্ধবন্দী গোলাম এসেছে। কিন্তু তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] রসূলের দেখা না পেয়ে মা আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর কাছে এ কথা বললেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন ফিরে আসলেন আয়িশাহ্ ফাত্বিমার কথা তাঁকে জানালেন। আলী [রাদি.] বলেন, অতঃপর খবর পেয়ে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন আমাদের এখানে আসলেন, তখন আমরা বিছানায় শুয়ে পড়ছিলাম। তাঁকে দেখে আমরা উঠতে চাইলে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তোমরা নিজ নিজ জায়গায় থাকো। অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদের কাছে এসে আমার ও ফাত্বিমার মাঝে বসে গেলেন। এমনকি আমি আমার পেটে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পায়ের শীতলতা অনুভব করলাম। তারপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তোমরা যা আমার কাছে চেয়েছ এর [গোলামের] চেয়ে অনেক উত্তম এমন কথা আমি কি তোমাদেরকে বলে দেবো না? আর তা হলো যখন তোমরা ঘুমাবে তখন তেত্রিশবার সুবহা-নাল্ল-হ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লা-হ এবং চৌত্রিশবার আল্ল-হু আকবার পড়বে। এটা তোমাদের জন্য খাদিম [গোলাম] হইতে অনেক উত্তম হবে।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ৫৩৬১, মুসলিম ২৭২৭, আবু দাউদ ৫০৬২, আহমাদ ১১৪১, ইবনি হিববান ৬৯২১, সহীহ আত তারগীব ৬০৪। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৮৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন ফাতিমা [রাদি.] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একজন খাদিম চাইতে আসলেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, আমি কি তোমাকে এমন পথ দেখাবো না, যা তোমার জন্য খাদিমের চেয়ে অনেক উত্তম হবে? তা হলো প্রত্যেক সলাতের সময় ও ঘুমানোর সময় পড়বে

তেত্রিশবার সুবহা-নাল্ল-হ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লা-হ ও চৌত্রিশবার আল্ল-হু আকবার

[মুসলিম]{১}, বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২৩৮৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে ঘুম থেকে উঠে বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ

আল্ল-হুম্মা বিকা আসবাহনা-, ওয়াবিকা আমসায়না-, ওয়াবিকা নাহ্ইয়া-, ওয়াবিকা নামূতু, ওয়া ইলায়কাল মাসীর, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্যে সকালে {ঘুম থেকে] উঠি, তোমারই সাহায্যে আমরা সন্ধ্যায় পৌঁছি। তোমারই নামে আমরা জীবিত হই {ঘুম থেকে উঠি] ও তোমারই নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি {ঘুমাতে যাই]। আর তোমার কাছেই আমরা ফিরে যাব।]।

সন্ধ্যার সময় তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

আল্ল-হুম্মা বিকা আমসায়না-, ওয়াবিকা আসবাহনা-, ওয়াবিকা নাহ্ইয়া-, ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলায়কান্ নুশূর, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্যে সন্ধ্যা বেলায় এসে পৌঁছি, তোমারই সাহায্যে সকালে উঠি। তোমারই নামে আমরা জীবিত হই, তোমারই নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি। আর তোমারই দিকে আমরা পুনঃএকত্রিত হব।]। [তিরমিজি, আবু দাউদ ও ইবনি মাজাহ]{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০২৭, তিরমিজি ৩৩৯১, ইবনি মাজাহ ৩৮৬৮, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১১৯৯/৯১৫, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ২০, সহীহাহ্ ২৬৩, সহীহ আল জামি ৩৫৩। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯০. {আবু হুরাইরাহ [রাদি.]] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.] বলেছেন, একদিন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে একটি দুআ বলে দিন যা আমি সকাল-সন্ধ্যায় পড়তে পারি। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তুমি পড়বে,

اللّٰهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّ كُلِّ شَىْءٍ وَمَلِيكَه أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِىْ وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِه

আল্ল-হুম্মা আ-লিমাল গয়বি ওয়াশ্‌শাহা-দাতি, ফা-ত্বিরস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, রব্বা কুল্লি শাইয়িন, ওয়া মালীকাহূ আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা, আঊযুবিকা মিন্ শাররি নাফ্‌সী, ওয়ামিন শার্‌রিশ্ শায়ত্ব-নি, ওয়া শিরকিহী, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! যিনি দৃশ্য ও অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, প্রত্যেক জিনিসের প্রতিপালক ও মালিক- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই, আমি তোমার কাছে আমার মনের মন্দ হইতে, শয়তানের মন্দ ও তাহাঁর শির্ক হইতে আশ্রয় চাই।]

তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তুমি এ দুআ সকালে-সন্ধ্যায় ও ঘুমানোর সময় পড়বে।

[তিরমিজি, আবু দাউদ ও দারিমী]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৩৩৯২, আবু দাউদ ৫৬৭, আহমাদ ৬৩, দারিমী ২৭৩১, ইবনি হিববান ৯৬২, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১২০২/৯১৭। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯১. আবান ইবনি উসমান হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে বান্দা প্রত্যেক সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে পড়বে,

بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِىْ لَا يَضُرُّ مَعَ اِسْمِه شَىْءٌ فِى الْأَرْضِ وَلَا فِى السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াযুররু মাআইস্‌মিহী শায়উন ফিল আরযি ওয়ালা- ফিস্‌সামা-য়ি, ওয়া হুওয়াস্ সামীউল আলিম [অর্থাৎ- আল্লাহর নামে শুরু করছি, যে নামের সাথে আসমান ও জমিনে কোন কিছুই কোন ক্ষতি করিতে পারে না। তিনি সব শুনেন ও জানেন]-

কোন কিছু তাকে ক্ষতি করিতে পারে না। বর্ণনাকারী বলেন, আবান পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এজন্য যারা হাদিস শুনছিলেন তারা তাহাঁর দিকে তাকাচ্ছিল। আবান তখন বললেন, আমার দিকে কী দেখছ? নিশ্চয়ই হাদিস যা আমি বর্ণনা করছি তাই, তবে যেদিন আমি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছি সেদিন এ দুআ পড়িনি। এ কারণে আল্লাহ আমার ভাগ্যে যা লিখে রেখেছিলেন তা কার্যকরী হয়েছে। [তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ। কিন্তু আবু দাউদ-এর অপর বর্ণনায় রয়েছে, সে রাতে তাহাঁর ওপর কোন আকস্মিক বিপদাপদ ঘটবে না যে পর্যন্ত না ভোর হয়, আর যে তা ভোরে বলবে তার ওপর কোন আকস্মিক বিপদাপদ সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না সন্ধ্যা উপনীত হয়।]{১}

{১} সহীহ : তিরমিজি ৩৩৮৮, আবু দাউদ ৫০৮৮, ইবনি মাজাহ ৩৮৬৯, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৮৯৫, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ২৩, সহীহ আত তারগীব ৬৫৫, সহীহ আল জামি ৫৭৪৫। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯২. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যা হলে বলিতেন,

أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِىْ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِىْ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَمِنْ سُوءِ الْكِبَرِ أَوِ الْكُفْرِ

আম্‌সায়না- ওয়া আম্‌সাল মুলকু লিল্লা-হি ওয়ালহাম্‌দু লিল্লা-হি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, রব্বী আস্আলুকা খয়রা মা- ফী হা-যিহিল লায়লাতি ওয়া খয়রা মা- বাদাহা- ওয়া আঊযুবিকা মিন্ শার্‌রি মা- ফী হা-যিহিল লায়লাতি ওয়াশার্‌রি মা- বাদাহা- রব্বী আঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়ামিন্ সূয়িল কিবারি আউইল কুফরি, [অর্থাৎ- আমরা সন্ধ্যায় এসে পৌঁছলাম এবং সমগ্র সাম্রাজ্য সন্ধ্যায় এসে পৌঁছল আল্লাহর উদ্দেশে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাহাঁর কোন শারীক নেই। তাহাঁরই রাজত্ব ও শাসন, তাহাঁরই জন্য সব প্রশংসা। আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আমি তোমার কাছে চাই এ রাতে যা কল্যাণ আছে তা হইতে, এরপরে যা আছে তার কল্যাণ হইতে। আর আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই এ রাতে যা অকল্যাণ রয়েছে তা হইতে। এরপরে যা অকল্যাণ রয়েছে তা হইতেও। হে রব! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই অলসতা হইতে ও বার্ধক্যের অকল্যাণ হইতে; অথবা বলেছেন, কুফরীর অনিষ্টতা হইতে।]।

আর অপর এক বর্ণনায় আছে, বার্ধক্যের অকল্যাণ ও দাম্ভিকতা হইতে। হে পরওয়ারদিগার! আমি তোমার কাছে জাহান্নাম ও কবরের শাস্তি হইতে আশ্রয় চাই। আর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন সকালে উঠতেন তখনও এ দুআ পড়তেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পড়তেন,

أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلّٰهِ

আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুলকু লিল্লা-হি [অর্থাৎ- আমরা সকালে এসে উপনীত হলাম। আর সমগ্র সাম্রাজ্যও আল্লাহর উদ্দেশে এসে উপনীত হলো।] [আবু দাউদ ও তিরমিজি; তবে ঈমাম তিরমিজির বর্ণনায় مِنْ سُوْءِ الْكُفْرِ বাক্যটির উল্লেখ নেই]{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০৭১, তিরমিজি ৩৩৯০, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৮। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯৩.নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন কন্যা হইতে বর্ণীতঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে শিখাতেন এভাবে, যখন তুমি ভোরে বিছানা হইতে উঠবে তখন বলবে,

سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِه وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ مَا شَآءَ اللّٰهُ كَانَ وَمَا لَمْ يَشَأْ لَمْ يَكُنْ أَعْلَمُ أَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللّٰهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًا

সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী, ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি, মা-শা-আল্ল-হু কা-না, ওয়ামা-লাম ইয়াশালাম ইয়াকুন, আলামু আন্‌নাল্ল-হা আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, ওয়া আন্‌নাল্ল-হা কদ আহা-ত্বা বিকুল্লি শাইয়িন ইলমা- [অর্থাৎ- আল্লাহ তাআলার প্রশংসার সাথে তাহাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, আল্লাহর শক্তি-সামর্থ্য ছাড়া কারো কোন শক্তি নেই। আল্লাহ যা চান তাই হয়, যা তিনি চান না তা হয় না। আমি জানি, আল্লাহ সমস্ত জিনিসের উপর ক্ষমতাবান। আর সব জিনিসই আল্লাহ তার জ্ঞানের মাধ্যমে ঘিরে রেখেছেন।]।

যে ভোরে উঠে এ দুআ পড়বে সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত সে [আল্লাহর] হিফাযাতে থাকিবে। আর যে সন্ধ্যা হবার পর এ দুআ পড়বে সে সকাল হওয়া [ঘুম হইতে ওঠা] পর্যন্ত হিফাযাতে থাকিবে।

[আবু দাউদ]{১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৭৫, জইফ আত তারগীব ৩৮৮, জইফ আল জামি ৪১২১, শারহুস্ সুন্নাহ ১৩২৭। কারণ এর সানাদে সালিম আল ফাররা আর আবদুল হামীদ দুজন মাসতুর্ রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৩৯৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভোরে [ঘুম হইতে] উঠে এ আয়াতটি পড়বে,

فَسُبْحَانَ اللهِ حِيْنَ تُمْسُوْنَ وَحِينَ تُصْبِحُوْنَ وَلَهُ الْحَمْدُ فِى السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ وَعَشِيًّا وَّحِيْنَ تُظْهِرُوْنَ
إِلٰى قَوْلِه: وَكَذٰلِكَ تُخْرَجُوْنَ

ফাসুবহা-নাল্ল-হি হীনা তুম্‌সূনা ওহীনা তুসবিহূন, ওয়া লাহুল হাম্‌দু ফিস্‌সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি, ওয়া আশিয়্যাও ওহীনা তুযহিরূন….. ওয়াকাযা-লিকা তুখরাজূন, [অর্থাৎ- অতএব আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর তোমরা সন্ধ্যায় ও সকালে এবং আসমান ও জমিনে প্রশংসা একমাত্র তারই জন্য, আর বিকালে ও দুপুরে উপনীত হও….. এভাবে বের হবে পর্যন্ত- [সূরা আর্ রূম ৩০ : ১৭-১৯]। সে লাভ করিবে ঐদিন যা তার ছুটে গেছে। আর যখন এ দুআ সন্ধ্যায় পড়বে তখন সে লাভ করিবে যা তার ঐ রাতে ছুটে গেছে।

[আবু দাউদ]{১},{১} খুবই দুর্বল : আবু দাউদ ৫০৭৬, জইফ আত তারগীব ৩৮০, জইফ আল জামি ৫৭৩৩। কারণ এর সানাদে সাঈদ বিন বাশীর মাজহূল রাবী আর মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বিন বায়লামানী মাজহূল রাবী।এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল

২৩৯৫. আবু আইয়্যাশ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভোরে [ঘুম থেকে] উঠে বলবে,

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, [অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মাবূদ নেই। তিনি একক, তাহাঁর কোন শারীক নেই। সাম্রাজ্য তাহাঁরই, প্রশংসাও তাহাঁর এবং তিনি সকল জিনিসের উপর সবচেয়ে শক্তিশালী।]।

তার জন্য এ দুআ ইসমাঈল বংশীয় একটি চাকর মুক্ত করার সমতুল্য হবে এবং তার জন্য দশটি সাওয়াব লিখা হবে ও তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে, আর তার দশটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে এবং [সন্ধ্যা না হওয়া পর্যন্ত] সে শয়তান হইতে হিফাযাতে থাকিবে।

আর যদি সে ব্যক্তি এ দুআ সন্ধ্যায় পড়ে তাহলে আবার সকালে [ঘুম হইতে] ওঠার পূর্ব পর্যন্ত অনুরূপ সাওয়াব ও মর্যাদা পেতে থাকিবে। বর্ণনাকারী বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখল এবং বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আবু আইয়্যাশ আপনার নাম করে এসব কথা বলে। উত্তরে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, আবু আইয়্যাশ সত্য কথা বলছে।

[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ]{১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০৭৭, ইবনি মাজাহ ৩৮৬৭, আহমাদ ১৬৫৮৩, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯২৯০, সহীহ আত তারগীব ৬৫৬, সহীহ আল জামি ৬৪১৮।বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯৬. হারিস ইবনি মুসলিম আত তামীমী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তাহাঁর পিতা হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। একদিন তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মৃদুস্বরে বললেন, তুমি মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে কারো সাথে কথা বলার আগে সাতবার পড়বে,

اَللّٰهُمَّ أَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ

আল্ল-হুম্মা আজিরনী মিনান্‌না-র [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো]। তুমি এ দুআ পড়ার পর ঐ রাতে মারা গেলে, তোমার জন্য জাহান্নাম হইতে ছাড়পত্র লেখা হবে। একইভাবে তুমি ফজরের নামাজ আদায়ের পর এ দুআ পড়বে, তারপর তুমি ঐ দিন মারা গেলে, তোমাকে জাহান্নাম হইতে ছাড়পত্র লেখা হবে।

[আবু দাউদ]{১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৭৯, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ১২৪, যঈফাহ্ ১৬২৪। কারণ এর সানাদে আল হারিস ইবনি মুসলিম একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৩৯৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কক্ষনো সকাল-সন্ধ্যায় এ দুআটি না পড়ে ছাড়েননি। [দুআটি হলো]

اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِىْ دِينِىْ وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِىْ وَمَالِىْ اَللّٰهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِىْ وَاٰمِنْ رَوْعَاتِىْ اَللّٰهُمَّ احْفَظْنِىْ مِنْ بَيْنِ يَدِىْ وَمِنْ خَلْفِىْ وَعَنْ يَمِينِىْ وَعَنْ شِمَالِىْ وَمِنْ فَوْقِىْ وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِىْ

আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল আ-ফিয়াতা ফিদ্ দুন্ইয়া- ওয়াল আ-খিরাতি, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল আফ্ওয়া, ওয়াল আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়া দুন্ইয়া-ইয়া ওয়া আহলী, ওয়ামা-লী। আল্ল-হুমাসতুর আওর-তী, ওয়া আ-মিন রওআ-তী। আল্ল-হুম্মাহ্ ফাযনী, মিন বায়নি ইয়াদী ওয়ামিন খলফী, ওয়া আন ইয়ামীনী, ওয়া আন শিমা-লী, ওয়ামিন ফাওক্বী। ওয়া আঊযু বিআযামাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহতী, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার দীন, দুনিয়া, পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ সম্পর্কে নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমার দোষ-ত্রুটিগুলো গোপন রাখো এবং ভীতিকর বিষয় হইতে আমাকে নিরাপদ রাখো। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার সামনের দিক হইতে, পেছনের দিক হইতে, আমার ডান দিক হইতে, আমার বাম দিক হইতে, আমার উপর হইতে আমাকে হিফাযাত করো। হে আল্লাহ! আমি মাটিতে ধসে যাওয়া হইতে তোমার মর্যাদার কাছে আশ্রয় চাই।]। ওয়াকী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, অর্থাৎ- ভূমিধ্বস হইতে। [আবু দাউদ]{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫১৭৪, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯২৭৮, ইবনি মাজাহ ৩৮৭১, আহমাদ ৪৭৮৫, ইবনি হিব্বান ৯৬১, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ১২০০/৯১৬, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ২৭। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৩৯৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভোরে [ঘুম থেকে] উঠে বলবে,

اَللّٰهُمَّ أَصْبَحْنَا نُشْهِدُكَ وَنُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلَائِكَتَكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ وَحْدَكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ

আল্ল-হুম্মা আসবাহনা- নুশহিদুকা, ওয়া নুশহিদু হামালাতা আরশিকা, ওয়া মালা-য়িকাতাকা, ওয়া জামীআ খলক্বিকা, আন্‌নাকা আনতাল্ল-হু, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু আন্‌তা ওয়াহদাকা, লা- শারীকা লাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রসূলুকা, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি ভোরে তোমাকে এবং তোমার আরশের বহনকারীদেরকে, তোমার মালায়িকাহকে {ফেরেশতাগণকে], তোমার সমস্ত সৃষ্টিকে। নিশ্চয়ই তুমিই আল্লাহ! তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মাবূদ নেই। তুমি একক, তোমার কোন শারীক নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার বান্দা ও রসূল।]।

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ঐ দিনে তার যে গুনাহ হবে তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর সে যদি এ দুআ সন্ধ্যায় পড়ে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ঐ রাতে যে গুনাহ সংঘটিত হবে তা ক্ষমা করে দেবেন। [তিরমিজি, আবু দাউদ; ঈমাম তিরমিজি হাদিসটিকে গরীব বলেন]{১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৭৮, তিরমিজি ৩০৫১, যঈফাহ্ ১০৪১, জইফ আল জামি ৫৭২৯। কারণ এর সানাদে আবদুর রহমান ইবনি আবদুল মাজীদ একজন মাজহূল রাবী। আর আনাস [রাযিঃ] হইতে মাকহূল-এর শ্রবণ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] এটিকে নাকচ করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৩৯৯. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম বান্দা সন্ধ্যার সময় ও ভোরে উঠে তিনবার বলবে,

رَضِيتُ بِاللّٰهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا

রযীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যান , [অর্থাৎ- আমি আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দ্বীন ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবী হিসেবে পেয়ে খুশি হয়েছি]- নিশ্চয়ই এ দুআ কিয়ামাতের দিন তাকে খুশী করানো আল্লাহর জন্য অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়বে।

[আহমদ, তিরমিজি]{১},{১} জইফ : তিরমিজি ৩৩৮৯, জইফ আল জামি ৫৭৩৫, যঈফাহ্ ৫০২০। কারণ এর সানাদে সাঈদ ইবনুল মারযাবানী একজন দুর্বল রাবী । এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪০০। হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমাতে ইচ্ছা করিতেন তখন হাত মাথার নীচে রাখতেন, অতঃপর বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ قِنِىْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَجْمَعُ عِبَادَكَ أَوْ تَبْعَثُ عِبَادَكَ

আল্ল-হুম্মা কিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাজমাউ ইবা-দাকা, আও তাব্আসু ইবা-দাকা , {অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাকে তোমার শাস্তি হইতে বাঁচিয়ে রেখ, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে পুনঃএকত্র করিবে; অথবা [বলেছেন] যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে কবর হইতে উঠাবে।]।

[তিরমিজি]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৩৩৯৮, সহীহ আল জামি ৪৭৯০। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪০১. ঈমাম আহমদ [রাহিমাহুল্লাহ] বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।{১}

{১} সহীহ : আহমাদ ১৮৫৫২, ইবনি হিববান ৫৫২২, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১২১৫/৯২৫, সহীহাহ্ ২৭৫৪, সহীহ আল জামি ৪৭৯০। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪০২। হাফসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর ইচ্ছা করলে ডান হাত গালের নীচে রাখতেন, অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তিনবার বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ قِنِىْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ

আল্ল-হুম্মা কিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাব্আসু ইবা-দাকা [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি যেদিন তোমার বান্দাদেরকে কবর হইতে উঠাবে, তোমার আযাব হইতে আমাকে রক্ষা করিবে]।

[আবু দাউদ]{১}, {১} সহীহ : তবে [ثلاث مرات] অংশটুকু ব্যতীত। আবু দাউদ ৫০৪৫, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩৯৪, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ৩৬, সহীহাহ্ ২৭৫৪, সহীহ আল জামি ৪৬৫৬। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪০৩।আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর সময় বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِوَجْهِكَ الْكَرِيمِ وَكَلِمَاتِكَ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا أَنْتَ اٰخِذٌ بِنَاصِيَتِه اَللّٰهُمَّ أَنْت تَكْشِفُ الْمَغْرَمَ وَالْمَأْثَمَ اَللّٰهُمَّ لَا يُهْزَمُ جُنْدُكَ وَلَا يُخْلَفُ وَعْدُكَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ

আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিওয়াজহিকাল কারীম, ওয়া কালিমা-তিকা তা-ম্‌মা-তি মিন্ শাররি মা- আন্‌তা আ-খিযুন বিনা-সিয়াতিহী, আল্ল-হুম্মা আন্‌তা তাকশিফুল মাগরামা, ওয়াল মাসামা। আল্ল-হুম্মা লা- ইউহযামু জুনদুকা, ওয়ালা- ইউখলাফু ওয়াদুকা ওয়ালা- ইয়ানফাউ যালজাদ্দি মিনকাল জাদ্দু। সুবহা-নাকা, ওয়াবিহাম্‌দিকা, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমার অধীনে যা আছে আমি তার অনিষ্ট হইতে তোমার মহান সত্তার ও তোমার পূর্ণ কালামের স্মরণ করে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! তুমিই ঋণগ্রস্ততা ও গুনাহের ভার দূর করে দাও। হে আল্লাহ! তোমার দল পরাভূত হয় না, কক্ষনো তোমার ওয়াদা ভঙ্গ হয় না এবং কোন সম্পদশালীর সম্পদ তাকে তোমা হইতে রক্ষা করিতে পারে না। তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।]।

[আবু দাউদ]{১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৫২, মুজামুস্ সগীর লিত্ব ত্ববারানী ৯৯৮, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ৪০৫। আবু ইসহাকব একজন মুদাল্লিস রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪০৪। আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিছানায় ঘুমানোর সময় তিনবার পড়বে,

أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الحَىُّ الْقَيُّوْمَ وأَتُوْبُ إِلَيْهِ

আস্‌তাগফিরুল্ল-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলায়হি, [অর্থাৎ- আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মাবূদ নেই, যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, তার কাছে আমি তাওবাহ্ করি।]-

এ দুআয় আল্লাহ তার গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনা অথবা বালুর স্তূপ অথবা গাছের পাতার সংখ্যা অথবা দুনিয়ার দিনগুলোর সংখ্যার চেয়েও বেশি হয়।

[তিরমিজি; তিনি বলেন, হাদিসটি গরীব]{১}, {১} জইফ : তিরমিজি ৩৩৯৭, আহমাদ ১১০৭৪, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ৪০, জইফ আত তারগীব ৩৪৯, জইফ আল জামি ৫৭২৮। কারণ আবদুল্লাহ ইবনি ওয়ালীদ আল ওয়ায্ যফী একজন দুর্বল রাবী আর আতিয়্যাহ্ দুর্বল রাবী। আবার কেউ কেউ তাকে মাতরূকও বলেছেন।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪০৫। শাদ্দাদ ইবনি আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম কুরআন মাজীদের যে কোন একটি সূরা পড়ে বিছানায় যাবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য অবশ্যই একজন মালাক [ফেরেশতা] নিয়োজিত করে দেবেন। অতঃপর কোন ক্ষতিকারক জিনিস তার কাছে পৌঁছতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না ঘুম থেকে সে জেগে ওঠে

। [তিরমিজি]{১}, {১} জইফ : তিরমিজি ৩৪০৭, জইফ আত তারগীব ৩৪৫, জইফ আল জামি ৫২১৮, আহমাদ ১৭১৩৩। কারণ এর সানাদে رجل [ব্যক্তি] একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪০৬।আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখবে, সে নিঃসন্দেহে জান্নাতে যাবে। জেনে রাখো, এ বিষয় দুটো সহজ, কিন্তু এর আমালকারী কম। [তা হলো] প্রত্যেক নামাজ আদায়ের পর পড়বে সুবহা-নাল্ল-হ দশবার, আল হাম্‌দুলিল্লা-হ দশবার, আল্ল-হু আকবার দশবার। আবদুল্লাহ ইবনি আমর বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ দুআ পড়ার সময় হাতে গুণতে দেখেছি। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, এ দুআ মুখে [পাঁচ বেলায়] একশ পঞ্চাশবার কিয়ামাতে মীযানের [পাল্লায়] এক হাজার পাঁচশবার।

আর যখন বিছানায় যাবে, সুবহা-নাল্ল-হ ও আলহাম্‌দুলিল্লা-হ আল্লা-হু আকবার [তিনটি দুআ মিলিয়ে] একশবার পড়বে। এ দুআ মুখে একশবার বটে; কিন্তু মীযানে একহাজার বার। অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ একদিন এক রাতে দু হাজার পাঁচশ গুনাহ করে? সাহাবীগণ বললেন, আমরা কেন এ দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারব না? তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, এজন্য পারবে না যে, তোমাদের কারো কারো কাছে নামাজ আদায় অবস্থায় শয়তান এসে বলে, ঐ বিষয় চিন্তা করো, ঐ বিষয় স্মরণ করো। এভাবে [শয়তানের] ওয়াস্ওয়াসা চলতে থাকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত। অতঃপর সে হয়ত তা [পরিপূর্ণ] না করেই উঠে যায়। এভাবে শয়তান তার ঘুমানোর সময় এসে তাকে ঘুম পাড়াতে থাকিবে, যতক্ষণ না সে তা [আদায় না] করে ঘুমিয়ে পড়ে। [তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী]

আবু দাউদ-এর আর এক বর্ণনায় আছে, যে কোন মুসলিম দুটি বিষয়ে লক্ষ্য করিবে। এভাবে তার বর্ণনায় আছে, মীযানের পাল্লায় একহাজার পাঁচশ-এ শব্দের পর আছে, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ যখন সে ঘুমাতে যায় তখন পড়বে, আল্ল-হু আকবার চৌত্রিশবার আলহাম্‌দুলিল্লা-হ তেত্রিশবার ও সুবহা-নাল্ল-হ তেত্রিশবার।{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০৬৫, তিরমিজি ৩৪১০, নাসায়ী ১৩৪৮, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১২১৬/৯২৬, সহীহ আত তারগীব ৬০৬, সহীহ আল জামি ৩২৩০। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪০৭। আবদুল্লাহ ইবনি গন্নাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভোরে [ঘুম থেকে] উঠে এ দুআ পড়বে,

اَللّٰهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِىْ مِنْ نِعْمَةٍ أَوْ بِأَحَدٍ مِنْ خَلْقِكَ فَمِنْكَ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ

আল্ল-হুম্মা মা- আস্‌বাহা বী মিন্ নিমাতিন, আও বিআহাদিম মিন খলকিকা, ফামিনকা ওয়াহদাকা লা- শারীকা লাকা, ফালাকাল হাম্‌দু ওয়ালাকাশ্ শুকরু, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! ভোরে আমার ওপর ও তোমার অন্য যে কোন সৃষ্টির ওপর যে নিয়ামত পৌঁছেছে তা একা তোমার পক্ষ থেকেই, এতে তোমার কোন শারীক নেই। সুতরাং তোমারই প্রশংসা ও তোমারই কৃতজ্ঞতা।]- সে ব্যক্তি তার ঐ দিনের কৃতজ্ঞতা আদায় করিল। আর যে সন্ধ্যায় এ দুআ পড়ল, সে তার ঐ রাতের কৃতজ্ঞতা আদায় করিল।

[আবু দাউদ]{১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৭৩, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ২৬, জইফ আত তারগীব ৩৮৫, জইফ আল জামি ৫৭৩০, ইবনি হিববান ৮৬১। কারণ আবদুল্লাহ বিন আন্বাসাহ্ মাজহূলুল হাল।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪০৮। আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বিছানায় ঘুমানোর সময় বলিতেন,

اَللّٰهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ وَرَبَّ الْأَرْضِ وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوٰى مُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيْلِ وَالْقُرْاٰنِ أعوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ ذِىْ شَرٍّ أَنْتَ اٰخِذٌ بِنَاصِيَتِه أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الْاٰخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَىْءٌ اقْضِ عَنِّى الدَّيْنَ وَاغْنِنِىْ مِنَ الْفَقْرِ

আল্ল-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়া রববাল আরযি ওয়া রব্বা কুল্লি শাইয়িন, ফালিকল হাব্বি ওয়ান্ নাওয়া- মুনযিলাত্ তাওরা-তি, ওয়াল ইঞ্জীলি ওয়াল কুরআ-নি। আঊযুবিকা মিন শাররি কুল্লি যী শাররি। আন্‌তা আ-খিযুন বিনা-সিয়াতিহী, আন্‌তাল আও্ওয়ালু, ফালায়সা কবলাকা শায়উন, ওয়া আন্‌তাল আ-খিরু, ফালায়সা বাদাকা শায়উন, ওয়া আন্‌তায্ যা-হিরু, ফালায়সা ফাওককা শাইউন। ওয়া আন্‌তাল বা-ত্বিনু, ফালায়সা দূনাকা শায়উন, ইকযি আন্‌নিদ্‌দায়না, ওয়া আগ্‌নিনী মিনাল ফাকরি

[অর্থাৎ- হে আল্লাহ! যিনি আসমানের রব, জমিনের রব, তথা প্রতিটি জিনিসের রব, শস্যবীজ ও খেজুর দানা ফেড়ে গাছ-পালা উৎপাদনকারী; তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআন অবতীর্ণকারী, আমি তোমার কাছে এমন প্রতিটি অনিষ্টকারীর অনিষ্ট হইতে আশ্রয় চাই যা তোমার অধিকারে রয়েছে। তুমিই প্রথম- তোমার আগে কেউ ছিল না। তুমিই শেষ- তোমার পরে আর কেউ থাকিবে না। তুমি প্রকাশ্য- তোমার চেয়ে প্রকাশ্য আর কিছু নেই। তুমি অন্তর্যামী- তোমার চেয়ে গোপনীয়তা আর কিছু নেই। তুমি আমাকে ঋণমুক্ত করে দাও এবং দারিদ্র্যতা হইতে বাঁচিয়ে রেখ {স্বচ্ছলতা দাও]]। [আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনি মাজাহ; কিছু ভিন্নতাসহ মুসলিমেও]{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০৫১, তিরমিজি ৩৪০০, ইবনি মাজাহ ৩৮৭৩, আহমাদ ৮৯৬০, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১২১২/৯২৩, সহীহ আল জামি ৪৪২৪। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪০৯. আবুল আযহার আল আনমারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে বিছানায় ঘুমানোর সময় বলিতেন,

بسمِ اللّٰهِ وَضَعْتُ جَنْبِى لِلّٰهِ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ ذَنْبِىْ وَاخْسَأْ شَيْطَانِىْ وَفُكَّ رِهَانِىْ وَاجْعَلْنِىْ فِى النَّدِىِّ الْأَعْلٰى

বিস্‌মিল্লা-হি ওয়াযাতু যাম্‌বী লিল্লা-হি, আল্ল-হুম্‌মাগফিরলী যাম্‌বী ওয়াখসা শায়ত্ব-নী ওয়া ফুক্কা রিহা-নী, ওয়াজ্আল্‌নী ফিন্ নাদিয়্যিল আলা– [অর্থাৎ- আল্লাহর নামে, আল্লাহর উদ্দেশে আমি পার্শ্ব রাখলাম। হে আল্লাহ! তুমি আমার অপরাধ ক্ষমা করো। আমার কাছ থেকে শয়তানকে তাড়িয়ে দাও। আমার ঘাড়কে মুক্ত করো এবং আমাকে উচ্চাসনে সমাসীন করো।]।

[আবু দাউদ]{১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ৫০৫৪, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৭৫৮, মুসতাদারাক লিল হাকিম ২০১২, সহীহ আল জামি ৪৬৪৯। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪১০. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমানোর সময় বলিতেন,

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ كَفَانِىْ وَاٰوَانِىْ وَأَطْعَمَنِىْ وَسَقَانِىْ وَالَّذِىْ مَنَّ عَلَىَّ فَأَفْضَلَ وَالَّذِىْ أَعْطَانِىْ فَأَجْزَلَ الْحَمْدُ لِلّٰهِ عَلٰى كُلِّ حَالٍ اَللّٰهُمَّ رَبَّ كُلِّ شَىْءٍ وَمَلِيكَه وَإِلٰهَ كُلِّ شَىْءٍ أَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ

আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী কাফা-নী, ওয়াআ-ওয়া-নী, ওয়া আত্বআমানী, ওয়া সাকা-নী, ওয়াল্লাযী মান্না আলাইয়্যা ফাআফযালা ওয়াল্লাযী আত্বা-নী ফাআজ্‌যালা, আলহাম্‌দুলিল্লা-হি আলা- কুল্লি হা-ল, আল্ল-হুম্মা রব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালীকাহূ, ওয়া ইলা-হা কুল্লি শাইয়িন আঊযুবিকা মিনান্‌না-র, [অর্থাৎ- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার প্রয়োজন পূরণ করিলেন, আমাকে রাতে আশ্রয় দিলেন, আমাকে খাওয়ালেন, আমাকে পান করালেন, যিনি আমার প্রতি দয়াপ্রদর্শন করিলেন, অনেক অনুগ্রহ করিলেন, যিনি আমাকে দান করিলেন এবং যথেষ্ট দান করিলেন। তাই সকল অবস্থায় আল্লাহর শুকর। হে আল্লাহ! যিনি প্রতিটি বস্ত্তর প্রতিপালক ও এর অধিকারী এবং প্রত্যেক বস্ত্তর উপাস্য। আমি তোমার কাছে জাহান্নামের আগুন হইতে আশ্রয় চাই।

[আবু দাউদ]{১}, {১} সানাদ সহীহ : আবু দাউদ ৫০৫৮, আহমাদ ৫৯৮৩, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ৩৯৯।b বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২৪১১. রায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! [স্বপ্নের কারণে] রাতে আমি ঘুমাতে পারি না। [এ কথা শুনে] আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বিছানায় ঘুমাতে গেলে এ দুআ পড়বে,

اَللّٰهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظَلَّتْ وَرَبَّ الْأَرَضِينَ وَمَا أَقَلَّتْ وَرَبَّ الشَّيَاطِينِ وَمَا أَضَلَّتْ كُنْ لِّىْ جَارًا مِّنْ شَرِّ خَلْقِكَ كُلِّهِمْ جَمِيعًا أَنْ يَّفْرُطَ عَلَىَّ أَحَدٌ مِنْهُمْ أَوْ أَنْ يَبْغِىَ عَزَّ جَارُكَ وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ وَلَا إِلٰهَ غَيْرُكَ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ

আল্ল-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব্ই, ওয়ামা- আযল্লাত, ওয়া রব্বাল আরযীনা ওয়ামা- আকল্লাত, ওয়া রব্বাশ্ শায়া-ত্বীনি ওয়ামা- আযল্লাত, কুল্লী জা-রম্ মিন্ শাররি খলকিকা কুল্লিহিম জামীআন আই ইয়াফ্‌রুত্বা আলাইয়্যা আহাদুম্ মিনহুম আও আই ইয়াবগিয়া আযযা জা-রুকা ওয়া জাল্লা সানা-উকা, ওয়ালা- ইলা-হা গইরুকা, লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা

[অর্থাৎ- হে আল্লাহ! সাত আকাশের এবং এ সাত আকাশ যাকে ছায়া দিয়েছে তার রব! আর জমিনসমূহ ও তা যাকে ধারণ করেছে তার রব! সকল শয়তান ও তারা যাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদের রব! তুমি আমাকে নিরাপত্তা দান কর, তোমার সকল সৃষ্টির অনিষ্ট হইতে; তাদের কেউ যে আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করুক অথবা আমার ওপর অবিচার করুক তুমি আমাকে নিরাপত্তা দান করো। বিজয়ী সে যাকে তুমি নিরাপত্তা দান করেছ। মহান প্রশংসা তোমার, তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই]। [তিরমিজি; তিনি বলেন, এ হাদিসের সানাদ দুর্বল। কোন কোন হাদিস বিশারদ এর রাবী হাকাম ইবনি যুহায়র-কে মাতরূক বা পরিত্যাজ্য বলেছেন।]{১}

{১} জইফ : তিরমিজি ৩৫২৩, মুজামুল আওসাত লিত্ব ত্ববারানী ১৪৬, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ৪৮, যঈফাহ্ ২৪০৩, জইফ আল জামি ৪০৮। কারণ এর সানাদে হাকাম ইবনি যুহায়র একজন মাতরূক রাবী। ইবন মাঈন তাকে মিথ্যার অপবাদ দিয়েছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

অধ্যায়ঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২৪১২. আবু মালিক আল আশ্আরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তখন যেন বলে,

 أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ خَيْرَ هٰذَا الْيَوْمِ فَتْحَه وَنَصْرَه وَنُورَه وَبَرَكَتَه وَهُدَاهُ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيهِ وَمِنْ شَرِّ مَا بَعْدَه» ثُمَّ إِذَا أَمْسٰى فَلْيَقُلْ مِثْلَ ذٰلِكَ

আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুল্‌কু লিল্লা-হি রব্বিল আ-লামীন। আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা খয়রা হা-যাল ইয়াওমি ফাত্হাহূ ওয়া নাসরাহূ, ওয়া নূরাহূ, ওয়া বারাকাতাহূ, ওয়া হুদা-হু। ওয়া আঊযুবিকা মিন্ শার্‌রি মা- ফীহি, ওয়া মিন্ শার্‌রি মা- বাদাহূ। সুম্মা ইযা- আমসা-, ফাল্ইয়াকুল মিসলা যা-লিকা

[অর্থাৎ- আমরা ভোরে এসে উপনীত হলাম আর আল্লাহ রব্বুল আলামীনের উদ্দেশে রাজ্যও ভোরে এসে উপনীত হলো। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ দিনের কল্যাণ চাই, এর সফলতা ও সাহায্য, এর জ্যোতি, এর বারাকাত ও এর হিদায়াত এবং এতে যা অকল্যাণ রয়েছে তা হইতে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং এর পরে যে অকল্যাণ রয়েছে তা হইতে আশ্রয় চাই।]। অতঃপর সে সন্ধ্যায় উপনীত হলেও যেন অনুরূপ দুআ করে। [আবু দাউদ]{১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৫০৮৪, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩৪৫৩, যঈফাহ্ ৫৬০৬, জইফ আল জামি ৩৫২। কারণ হাদিসটি মুরসাল । এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২৪১৩. আবদুর রহমন ইবনি আবু বাকরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আমার পিতা! আপনাকে প্রতিদিন ভোরে বলিতে শুনি,

اَللّٰهُمَّ عَافِنِىْ فِىْ بَدَنِىْ اَللّٰهُمَّ عَافِنِىْ فِىْ سَمْعِىْ اَللّٰهُمَّ عَافِنِىْ فِىْ بَصَرِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ

আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী সাম্ঈ, আল্ল-হুম্মা আ-ফিনী ফী বাসারী লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাকে শারীরিকভাবে নিরাপত্তায় রাখো, আমাকে শ্রবণশক্তিতে নিরাপত্তায় রাখো। হে আল্লাহ! আমাকে দৃষ্টিশক্তিতে নিরাপদে রাখো। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই।]

এ দুআ ভোরে তিনবার ও বিকালে তিনবার বলেন। তখন তার পিতা বললেন, হে বৎস! আমি এ বাক্যগুলো দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দুআ করিতে শুনিয়াছি। অতএব আমি তাহাঁর সুন্নাত পালন করাকে পছন্দ করি। [আবু দাউদ]{১}

{১} হাসান : আবু দাউদ ৫০৯০, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯১৮৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৭০১/৫৪২, আল জামি আস্ সগীর ১২১০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

২৪১৪. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরে ঘুম হইতে উঠে বলিতেন,

أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَالْكِبْرِيَاءُ وَالْعَظَمَةُ لِلّٰهِ وَالْخَلْقُ وَالْأَمْرُ وَاللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَمَا سَكَنَ فِيهِمَا لِلّٰهِ اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ أَوَّلَ هٰذَا النَّهَارِ صَلَاحًا وَأَوْسَطَه نَجَاحًا وَاٰخِرَه فَلَاحًا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ

আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুলকু লিল্লা-হি ওয়াল হাম্‌দুলিল্লা-হি ওয়াল কিব্‌রিয়া-উ ওয়াল আযামাতু লিল্লা-হি ওয়াল খলক্বু ওয়াল আমরু ওয়াল্ লায়লু ওয়ান্ নাহা-রু ওয়ামা- সাকানা ফীহিমা- লিল্লা-হি আল্ল-হুম্মাজ্আল আও্ওয়ালা হা-যান্ নাহা-রি সলা-হান ওয়া আওসাত্বাহূ নাজা-হান ওয়া আ-খিরাহূ ফালা-হান ইয়া- আর্‌হামার্ র-হিমীন

[অর্থাৎ- আমরা ভোরে এসে উপনীত হলাম, আর ভোরে এসে উপনীত হলো আল্লাহরই উদ্দেশে আল্লাহর রাজ্য। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। আল্লাহরই জন্য সব অহংকার ও সম্মান। সমগ্র সৃষ্টি ও কর্তৃত্ব, রাত ও দিন এবং এতে যা বসবাস করে সবই আল্লাহর। হে আল্লাহ! তুমি এ দিনের প্রথমাংশকে কল্যাণকর করো, মধ্যাংশকে সাফল্যের ওয়াসীলাহ্ করো, আর শেষাংশকে সাফল্যময় করো। হে সর্বাধিক রহমকারী। [নাবাবী কিতাবুল আযকার- ইবনুস্ সুন্নীর বর্ণনার দ্বারা]{১}

1] খুবই দুর্বল : যঈফাহ্ ২০৪৮। কারণ এর সানাদে আবুল ওয়ারাকা একজন মাতরূক রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল

২৪১৫. আবদুর রহমন ইবনি আবযা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরে উঠে বলিতেন,

أَصْبَحْنَا عَلٰى فِطْرَةِ الْإِسْلَامِ وَكَلِمَةِ الْإِخْلَاصِ وَعَلٰى دِينِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ ﷺ وَعَلٰى مِلَّةِ أَبِينَا إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَّمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ

আস্‌বাহনা- আলা- ফিত্বরাতিল ইস্‌লা-মি ওয়া কালিমাতিল ইখলা-সি ওয়া আলা- দীনি নাবিয়্যিনা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- মিল্লাতি আবীনা- ইব্‌রা-হীমা হানীফাওঁ ওয়ামা- কা-না মিনাল মুশরিকীন, [অর্থাৎ- আমরা ইসলামের ফিত্বরাতের উপর ও কালিমায়ে তাওহীদের সাথে ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম এবং আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বীনের উপর ও ইব্রাহীম [আঃ]-এর মিল্লাতের উপর, আর তিনি মুশরিক ছিলেন না।]।

[আহমদ ও দারিমী]{১}, {১} সহীহ : আহমাদ ১৫৩৬০, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৬৫৪০, দারিমী ২৭৩০, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ২৬, সহীহাহ্ ২৯৮৯। বিভিন্ন সময়ের দোয়া -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply