বিপদের দোয়া ও শিশুদের বারাকাতের দুআ

বিপদের দোয়া ও শিশুদের বারাকাতের দুআ

বিপদের দোয়া ও শিশুদের বারাকাতের দুআ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

বিপদের দোয়া ও শিশুদের বারাকাতের দুআ

৮০/২৭. অধ্যায়ঃ বিপদের সময় দুআ করা।
৮০/২৮. অধ্যায়ঃ ভীষণ বিপদ থেকে আশ্রয় চাওয়া।
৮০/২৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর দুআ আল্লাহুম্মা রাফীকাল আলা।
৮০/৩০. অধ্যায়ঃ মৃত্যু আর জীবনের জন্য দুআ করা।
৮০/৩১. অধ্যায়ঃ শিশুদের জন্য বারাকাতের দুআ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলানো।

৮০/২৭. অধ্যায়ঃ বিপদের সময় দুআ করা।

৬৩৪৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) বিপদের সময় এ দুআ পড়তেনঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ 

লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল আজিমুল হালিম, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রব্বুস সামাওয়াতে ওয়াল আরদি রুব্বুল আরসিল আজিম, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। যিনি মহান ও ধৈর্যশীল। আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই আসমান যমীনের প্রতিপালক ও মহান আরশের প্রভু।

[৬৩৪৬, ৭৪২৬, ৭৪৩১; মুসলিম ৪৮/২১, হাদীস ২৭৩০, আহমাদ ৩৩৫৪] আঃপ্রঃ- ৫৮৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯২)

৬৩৪৬. মুসান্নাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

বিপদের সময় নাবী (সাঃআঃ) এ দুআ পড়তেনঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ، وَرَبُّ الأَرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আ’রশিল কারিম, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, যিনি অতি উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ও অশেষ ধৈর্যশীল, আরশে আযীমের প্রভু। আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আসমান যমীনের প্রতিপালক ও সম্মানিত আরশের মালিক। আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই।

[৬৩৪৫; মুসলিম ৪৮/২১, হাদীস ২৭৩০, আহমাদ ৩৩৫৪] আঃপ্রঃ- ৫৯০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৩)

৮০/২৮. অধ্যায়ঃ ভীষণ বিপদ থেকে আশ্রয় চাওয়া।

৬৩৪৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বালা মুসীবতের কঠোরতা, দুর্ভাগ্যে পতিত হওয়া, ভাগ্যের অশুভ পরিণতি এবং দুশমনের আনন্দিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাইলেন। সুফ্‌ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর হাদীসে তিনটি বিষয়ের উল্লেখ আছে। একটি আমি বৃদ্ধি করেছি। জানি না তা এগুলোর কোনটি।

[৬৬১৬; মুসলিম ৪৮/১৬, হাদীস ২৭০৭] আঃপ্রঃ- ৫৯০১ ,ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৪)

৮০/২৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর দুআ আল্লাহুম্মা রাফীকাল আলা।

৬৩৪৮. আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) সুস্থাবস্থায় বলিতেনঃ জান্নাতের জায়গা না দেখিয়ে কোন নাবীর জান কবয করা হয় না, যতক্ষণ না তাঁকে তাহাঁর বাসস্থান দেখানো হয় এবং তাঁকে ইখ্‌তিকার দেয়া হয় (দুনিয়া বা আখিরাত গ্রহণ করার)। এরপর যখন তাহাঁর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলো, তখন তাহাঁর মাথাটা আমার উরুর উপর ছিল। কিছুক্ষণ অজ্ঞান থাকার পর তাহাঁর জ্ঞান ফিরে এলো। তখন তিনি ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ

اللَّهُمَّ الرَّفِيقَ الأَعْلَى

“আল্লাহুম্মা রাফীকাল আলা” হে আল্লাহ! আমি রাফীকে আলা (শ্রেষ্ঠ বন্ধু)-কে গ্রহণ করলাম। আমি বললামঃ এখন থেকে তিনি আর আমাদের পছন্দ করবেন না। আর এটাও বুঝতে পারলাম যে, তিনি সুস্থ অবস্থায় আমাদের নিকট যা বলিতেন এটি তাই। আর তা সঠিক। আয়েশাহ (রাদি.) বলেন, এটি ছিল তাহাঁর সর্বশেষ বাক্য যা তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমি শ্রেষ্ঠ বন্ধু গ্রহণ করলাম।

(আঃপ্রঃ- ৫৯০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৫)

৮০/৩০. অধ্যায়ঃ মৃত্যু আর জীবনের জন্য দুআ করা।

৬৩৪৯. কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি খাব্বাব (রাদি.) -এর নিকট আসলাম। তিনি লোহা গরম করে শরীরে সাতবার দাগ দিয়েছিলেন। তিনি বললেনঃ যদি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে মৃত্যুর জন্য দুআ করিতে নিষেধ না করিতেন, তাহলে আমি এজন্য দুআ করতাম।

[৫৬৭২; মুসলিম ৪৮/৪, হাদীস ২৬৮১, আহমাদ ৮১৯৬] আঃপ্রঃ- ৫৯০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৬)

৬৩৫০. কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি খাব্বাব (রাদি.) -এর নিকট গেলাম। তিনি তাহাঁর পেটে সাতবার দাগ দিয়েছিলেন। তখন আমি তাঁকে বলিতে শুনলামঃ নাবী (সাঃআঃ) যদি আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ করিতে নিষেধ না করিতেন, তবে আমি এজন্য দুআ করতাম।

(আঃপ্রঃ- ৫৯০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৭)

৬৩৫১. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা করিবে না। আর কেউ যদি এমন অবস্থায় পড়ে যে, তাকে মৃত্যু কামনা করিতেই হয়, তবে সে দুআ করবেঃ

اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي

আল্লাহুম্মা আহইয়ানি মা কানাতিল হায়াতু খইরান লি ওয়া তাওয়াক্কানি ইজা কনাতিল ওয়া ফাতু খয়রান লি, হে আল্লাহ! যতদিন বেঁচে থাকা আমার জন্য কল্যাণকর হয়, ততদিন আমাকে জীবিত রাখো, আর যখন আমার জন্য মৃত্যুই কল্যাণকর হয় তখন আমার মৃত্যু দাও।

[৫৬৭১; মুসলিম ৪৮/৪, হাদীস ২৬৮০, আহমাদ ১১৯৭৯] আঃপ্রঃ- ৫৯০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৮)

৮০/৩১. অধ্যায়ঃ শিশুদের জন্য বারাকাতের দুআ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলানো।

আবু মূসা (রাদি.) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নাবী তার জন্য বারাকাতের দুআ করিলেন।

৬৩৫২. সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকটে গেলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার এ ভাগ্নেটি অসুস্থ। তিনি আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বারাকাতের দুআ করিলেন। এরপর তিনি অযূ করলে, আমি তার অযূর পানি থেকে কিছুটা পান করলাম। তারপর আমি তাহাঁর পিঠের দিকে দাঁড়ালাম। তখন আমি তাহাঁর দু কাঁধের মাঝে মোহরে নবূওয়াত দেখিতে পেলাম। তা ছিল খাটের চাঁদোয়ার ঝালরের ন্যায়।

(আঃপ্রঃ- ৫৯০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৯৯)

৬৩৫৩. আবু আকীল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর দাদা আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাদি.) তাকে নিয়ে বাজারের দিকে বের হইতেন। সেখানে তিনি খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করিতেন। তখন পথে ইবনু যুবায়র (রাদি.) ও ইবনু উমার (রাদি.) -এর দেখা হলে, তাঁরা তাঁকে বলিতেন যে, এতে আপনি আমাদেরও অংশীদার করে নিন। কারণ নাবী (সাঃআঃ) আপনার জন্য বারাকাতের দুআ করিয়াছেন। তখন তিনি তাঁদের অংশীদার করে নিতেন। তিনি বাহনের পৃষ্ঠে লাভের শস্যাদি পূর্ণরূপে পেতেন, আর তা ঘরে পাঠিয়ে দিতেন।

(আঃপ্রঃ- ৫৯০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৮০০)

৬৩৫৪. ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

মাহমূদ ইবনু রাবী বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনিই ছিলেন সেই লোক, বাল্যাবস্থায় তাঁদেরই কূপ থেকে পানি মুখে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যার চেহারার উপর ছিটিয়ে দিয়েছিলেন।

(আঃপ্রঃ- ৫৯০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৮০১)

৬৩৫৫. আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর খিদমতে শিশুদের নিয়ে আসা হতো। তিনি তাদের জন্য দুআ করিতেন। একদা একটি শিশুকে আনা হলো। শিশুটি তাহাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি কিছু পানি আনালেন এবং তা তিনি কাপড়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন আর তা ধুলেন না।

[২২২; মুসলিম ২/৩১, হাদীস ২৮৬, আহমাদ ২৫৮২৯] আঃপ্রঃ- ৫৯০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৮০২)

৬৩৫৬. আব্দুল্লাহ ইবনু সাআলাবাহ ইবনু সুআইর হইতে বর্ণিতঃ

আব্দুল্লাহ ইবনু সাআলাবাহ ইবনু সুআইর, যার মাথায় (শিশুকালে) রাসুলুল্লাহ হাত বুলিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাসকে বিতরের সালাত এক রাকআত আদায় করিতে দেখেছেন।

(আঃপ্রঃ- ৫৯১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৮০৩)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply