বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – কিরাআত, দোয়া কুনূত সহ

বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – কিরাআত, দোয়া কুনূত সহ

বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – কিরাআত, দোয়া কুনূত সহ >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে

পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (১১৪-১২৮)=১৫টি

৫ /১১৪. অধ্যায়ঃ বিতরের নামাজ।

১১৬৮. খারিজা বিন হুযায়ফাহ আল-আদাবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট বের হয়ে এসে বলেন, নিশ্চই আল্লাহ একটি নামাজ দ্বারা তোমাদের সাহায্য করিয়াছেন। এটা তোমাদের জন্য অনেক লাল উটের চেয়েও উত্তম। তা হলো বিতরের নামাজ। আল্লাহ তোমাদের জন্য এটা ইশা ও ফজরের মধ্যবর্তী সময়ে পড়ার জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। {১১৬৮}

তাহকীক আলবানি ঃ লাল উটের চেয়ে উত্তম কথাটি ছাড়া সহিহ।{১১৬৮} তিরমিজি ৪৫২, আবু দাউদ ১৪১৮, দারিমি ১৫৭৬। তাহকিক আলবানিঃ লাল উটের চেয়ে উত্তম কথা কথাটি ছাড়া সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ১৪১৮ জইফ, ইরওয়া ৪২৩ সহিহ, জামি সগীর ১৬২২ জইফ, তিরমিজি ৪৫২ সহিহ, মিশকাত ১২৬৭ জইফ, জইফ তারগিব ৩৩৯ জইফ, ইরওয়াহ ৪২৩, সহিহা ১০৮, ১১৪১, যঈফাহু ২৫৫। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন রাশিদ আয-যাওকী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৬৯. আসিম বিন দমরাহ আস-সালূলী হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ], বলেছেন, নিশ্চই বিতর বাধ্যতামূলক নামাজ নয় এবং তোমাদের ফরয নামাজের সম-পর্যায়ভূক্তও নয়। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিতরের নামাজ আদায় করিয়াছেন, অতঃপর বলেছেন, হে আহলে কুরআন! তোমরা বিতরের নামাজ পড়ো। নিশ্চই আল্লাহ বিতর [বেজোড়], তিনি বিতরকে ভালবাসেন। {১১৬৯}

{১১৬৯} তিরমিজি ৪৫৩-৫৪, নাসায়ি ১৬৭৫-৭৬, আবু দাউদ ১৪১৬, আহমাদ ৬৫৪, ৭৬৩, ৭৮৮, ৮৪৪, ৯২৯, ১২৬৫; দারিমি ১৫৭৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৭৪, সহিহ তারগিব ৫৯০ ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭০. আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ বেজোড়, তিনি বেজোড় ভালোবাসেন। হে কুরআনের বাহকগণ! তোমরা বিতর নামাজ পড়ো। এক বেদুইন বললো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বলিলেন? রাবি বলেন, [তা] তোমার জন্য নয় এবং তোমার সাথীদের জন্যও নয়। {১১৭০}

{১১৭০}আবু দাউদ ১৪১৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৭৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১১৫. অধ্যায়ঃ বিতর নামাজের কিরাআত।

১১৭১. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিত্‌রের সলাতে সূরাহ আলা, সূরাহ কাফিরূন ও সূরাহ ইখলাস পড়তেন। {১১৭১}

{১১৭১} নাসায়ি ১৭২৯-৩০, আবু দাউদ ১৪২৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৭৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিত্‌রের সলাতে সূরাহ আলা, সূরাহ কাফিরূন ও সূরাহ ইখলাস পড়তেন।

২/১১৭২ [১]. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] নবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। {১১৭২}

{১১৭২} তিরমিজি ৪৬২, নাসায়ি ১৭০২-৩, আহমাদ ২৭১৫, ২৭২০, ২৭৩৫, ২৭৭২, ২৯০০, ৩৫২১; দারিমি ১৫৮৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ রওযুন লাবীর ৪৪২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭৩. আবদুল আযীয বিন জুরায়জ {[আরবী] অর্থাৎ হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে দুর্বল} হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আয়িশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিত্‌রের সলাতে কি [সূরা] পড়তেন? তিনি বলেন প্রথম রাকআতে সূরা আলা, দ্বিতীয় রাকআতে সূরাহ কাফিরূন, তৃতীয় রাকআতে সূরাহ ইখলাস ও মুআব্বিয়াতাইন [সূরাহ ফালাক ও নাস] পড়তেন। {১১৭৩}

{১১৭৩} তিরমিজি ৪৬৩, আবু দাউদ ১৪২৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৮০, মিশকাত ১২৬৯। উক্ত হাদিসের রাবি খুসায়ফ সম্পর্কে আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি আদী বলেন, তিনি সিকাহ রাবি থেকে হাদিস বর্ণনা করলে তখন তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। ২. আবদুল আযীয বিন জুরায়জ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইমাম বোখারি বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি অপরিচিত তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১১৬. অধ্যায়ঃ বিতরের নামাজ এক রাকআত।

১১৭৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের নামাজ দু দু রাকআত পড়তেন এবং এক রাকআত বিতর পড়তেন। {১১৭৪}

{১১৭৪} বোখারি ৪৭২-৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭; মুসলিম ৭৩১-৪, ৭৪১-৩, ৭৫০, ৭৫১-৩, ৭৫১-২, ৭৫৩; তিরমিজি ৪৩৭, ৪৬১, ৪৬৭, ৪৬৯, ৫৯৭; নাসায়ি ১৬৬৬-৭৪, ১৬৮২, ১৬৮৯-৯৫; আবু দাউদ ১২৯৫, ১৩২৬, ১৪২১, ১৪৩৬, ১৪৩৮, আহমাদ ৪৫৫৭, ৪৮৩২, ৪৮৬৩, ৪৯৬৭, ৫০১২, ৫০৭৭, ৫১৯৫, ৫৩১৯, ৫৩৭৬, ৫৪৪৭, ৫৪৫৯, ৫৪৭৯, ৫৫১২, ৫৫২৪, ৫৭২৫, ৫৭৫৯, ৫৯০১, ৫৯৭২, ৬১৩৪, ৬১৪১, ৬২২২, ৬৩১৯, ৬৩৩৭, ৬৩৮৫, ৬৪০৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৯, দারিমি ১৪৫৮-৫৯, ইবনি মাজাহ ১১৭৫-৭৬, ১৩১৮-২০, ১৩২২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রাতের নামাজ দু দু রাকআত করে এবং বিতর নামাজ এক রাকআত। [রাবি বলেন] আমি বললাম, আপনার কি মত, যদি আমার চোখকে [ঘুম] পরাভূত করে এবং আমি ঘুমিয়ে যাই? তিনি বলেন, তুমি এই তারকার দিকে লক্ষ্য করো। তখন আমি মাথা তুলে সিমাক [মৎস] তারকা দেখিতে পেলাম। এরপর তিনি হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রাতের নামাজ দু দু রাকআত করে এবং সুবহে সাদিকের পূর্বে বিতর নামাজ এক রাকআত পড়বে। {১১৭৫}

{১১৭৫} বোখারি ৪৭২-৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭; মুসলিম ৭৩১-৪, ৭৪১-৩, ৭৫০, ৭৫১-৩, ৭৫১-২, ৭৫৩; তিরমিজি ৪৩৭, ৪৬১, ৪৬৭, ৪৬৯, ৫৯৭; নাসায়ি ১৬৬৬-৭৪, ১৬৮২, ১৬৮৯-৯৫; আবু দাউদ ১২৯৫, ১৩২৬, ১৪২১, ১৪৩৬, ১৪৩৮, আহমাদ ৪৫৫৭, ৪৮৩২, ৪৮৬৩, ৪৯৬৭, ৫০১২, ৫০৭৭, ৫১৯৫, ৫৩১৯, ৫৩৭৬, ৫৪৪৭, ৫৪৫৯, ৫৪৭৯, ৫৫১২, ৫৫২৪, ৫৭২৫, ৫৭৫৯, ৫৯০১, ৫৯৭২, ৬১৩৪, ৬১৪১, ৬২২২, ৬৩১৯, ৬৩৩৭, ৬৩৮৫, ৬৪০৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৯, দারিমি ১৪৫৮-৫৯, ইবনি মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৬, ১৩১৮-২০, ১৩২২; সহিহ আবু দাউদ ১১৯৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭৬. মুত্তালিব বিন আবদুল্লাহ্‌ [তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদীস বর্ণনায় অধিক তাদলীস ও ইরসাল করিয়াছেন] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনি উমার [রাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলো, আমি কিভাবে বিতর পড়বো? তিনি বলিলেন, তুমি এক রাকআত বিতর পড়বে। সে বলল, আমি আশংকা করি যে লোকেরা আমাকে শিকড় কাটা বলবে। তিনি বলেন, আল্লাহর সুন্নাত ও তাহাঁর রাসূলেরও। তিনি মনে করেন, এটাই আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের সুন্নাত। {১১৭৬}

{১১৭৬} বোখারি ৪৭২-৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭; মুসলিম ৭৩১-৪, ৭৪১-৩, ৭৫০, ৭৫১-৩, ৭৫১-২, ৭৫৩; তিরমিজি ৪৩৭, ৪৬১, ৪৬৭, ৪৬৯, ৫৯৭; নাসায়ি ১৬৬৬-৭৪, ১৬৮২, ১৬৮৯-৯৫; আবু দাউদ ১২৯৫, ১৩২৬, ১৪২১, ১৪৩৬, ১৪৩৮, আহমাদ ৪৫৫৭, ৪৮৩২, ৪৮৬৩, ৪৯৬৭, ৫০১২, ৫০৭৭, ৫১৯৫, ৫৩১৯, ৫৩৭৬, ৫৪৪৭, ৫৪৫৯, ৫৪৭৯, ৫৫১২, ৫৫২৪, ৫৭২৫, ৫৭৫৯, ৫৯০১, ৫৯৭২, ৬১৩৪, ৬১৪১, ৬২২২, ৬৩১৯, ৬৩৩৭, ৬৩৮৫, ৬৪০৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৯, দারিমি ১৪৫৮-৫৯, ইবনি মাজাহ ১১৭৪-৭৫, ১৩১৮-২০, ১৩২২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুত্তালিব বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে দারাকুতনী সিকাহ বললেও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইরসাল করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয় কারণ তিনি হদিস বর্ণনায় অধিক ইরসাল করেন। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১৭৭. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রতি দু রাকআতে সালাম ফিরাতেন এবং বিতর এক রাকআত পড়তেন। {১১৭৭}

সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১১৭. অধ্যায়ঃ বিতর সলাতে দুআ কুনূত।

১১৭৮. হাসান বিন আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার নানা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বিতর নামাজের কুনূত পড়ার জন্য কতগুলো বাক্য শিক্ষা দিয়েছে ঃ

 اللَّهُمَّ عَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَاهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ إِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ سُبْحَانَكَ رَبَّنَا تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ

আল্লাহুম্মা আফিনী ফীমান আফায়ত ওয়াতাওল্লানী ফীমান তাওয়াল্লায়ত, ওয়াহদীনী ফীমান হাদায়ত, ওয়াকীনী শাররা মা কদায়ত, ওয়া বারিকলী ফীমান আতায়ত, ইন্নাকা লা তাকদী আলায়ক, ইন্নাহু লা ইয়াযিল্লু মাওঁ ওয়ালায়ত, সুবহানাকা রব্বানা তাবারাকতা ওয়া তাআলায়ত।

অর্থ্যাৎ “হে আল্লাহ! যাদের প্রতি তোমার উদারতা প্রদর্শন করেছো, তাহাদের সাথে আমাকেও উদারতা প্রদর্শন করো, যাদের তুমি অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছো, তাহাদের সাথে আমার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করো, যাদের তুমি হিদায়াত দান করেছো তাহাদের সাথে আমাকেও হিদায়াত দান করো। তোমার নির্ধারিত অকল্যাণ থেকে আমাকে রক্ষা করো। তুমি আমাকে যা দান করেছো তাতে বরকত দাও। কেবল তুমিই নির্দেশ দিতে পারো, তোমার উপর কারো নির্দেশ চলে না। তুমি যার পৃষ্ঠপোষকতা দাও, সে কখনও অপমানিত হয় না। হে আমাদের রব! তুমি পবিত্র ,কল্যাণময় ও সুউচ্চ”। {১১৭৮}

{১১৭৮} তিরমিজি,৪৬৪, না,১৭৪৫, ১৭৪৬ আহমাদ, ১৪২৫ আ, ১৭২০, ২৭৮২০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪২৯, মিশকাত ১২৭৩, তালীক ইবনি খুযাইমাহ ১০৯৫, সহিহ আবু দাউদ ১১৮১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৭৯. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বিত্‌রের নামাজের শেষে বলিতেন ঃ

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سُخْطِكَ وَأَعُوذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ

[আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবি রিদাকা মিন সুখতিক, ওয়া আউযুবি মুআফাতিকা মিন উকূবাতিক, ওয়া আউযুবিকা মিনকা লা উহসী সানাআ আলায়ক, আনতা কামা আসনায়তা আলা নাফসিক]

অর্থ্যাৎ “হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টির উসীলায় আপনার অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় চাই, আপনার ক্ষমার উসীলায় আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাই, আপনার সৌন্দর্যময় গুনাবলীর উসীলায় আপনার মহিমময় গুণাবলী থেকে আশ্রয় পাই, আমি আপনার প্রশংসা গণনা করে শেষ করিতে পারি না, আপনি আপনার প্রশংসারই অনুরূপ”। {১১৭৯}

{১১৭৯} তিরমিজি, ৩৫৬৬, না, ১৭৪৭, আহমাদ, ১৪২৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৩০, মিশকাত ১২৭৬, সহিহ আবু দাউদ ৮২৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১১৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি দুআ কুনুতে তার হস্তদ্বয় উঠায় না।

১১৮০. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] ইস্‌তিসকার নামাজ ব্যতিত তাহাঁর অন্য কোন দুআয় তাহাঁর দুহাত উঠাতেন না [হাত তুলে মোনাজাত করিতেন না]। তিনি ইস্‌তিসকার সলাতে এতটা উপরে হাত উঠাতেন যে, তাহাঁর উভয় বগলের শুভ্রতা দৃষ্টিগোচর হতো। {১১৮০}

{১১৮০} বোখারি ১০৩১, ৩৫৬৫; মুসলিম ৮৯১-২ নাসায়ি ১৫১৩, ১৭৪৮; আহমাদ ১১৭০, দারিমি ১৫৩৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০৬১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১১৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি দুআয় নিজের হাত উঠায় এবং তার মুখমন্ডলে মাসহ করে।

১১৮১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তুমি আল্লাহর নিকট দুআ করলে তোমার দু হাতের তালু উপরে তুলে দুআ করিবে, তার পিঠ তুলে দুআ করিবে না এবং দুআ শেষে উভয় হাত তোমার মুখমন্ডলে মাসহ করিবে। {১১৮১}

{১১৮১} আহমাদ ১৪৮৫, ইবনি মাজাহ ৩৮৬৬। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৩৪, সহিহা ৫৯৫। উক্ত হাদিসের রাবি আয়িব বিন হাবিব সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় বাড়াবাড়ি করিয়াছেন। সালিহ বিন হাসসান আল আনসারী সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার ও দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য।বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/১২০. অধ্যায়ঃ রুকূর আগে বা পরে দুআ কুনূত পড়া।

১১৮২. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিতরের নামাজ আদায় করিতেন এবং রুকূর আগে দুআ কুনূত পড়তেন। {১১৮২}

{১১৮২} নাসায়ি ১৬৯৯ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪২৬।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৮৩. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফজরের সলাতে দুআ কুনূত পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বলেন, আমরা [কখনো] রুকূর আগে বা [কখনো] রুকূর পরে দুআ কুনূত পড়তাম। {১১৮৩}

{১১৮৩} বোখারি ৭৯৮, ১০০১, ১০০২, ৩১৭০, ৪০৮৮, ৪০৯০-৪০৯২, ৪০৯৪-৪০৯৬, ৬৩৯৪; মুসলিম ৬৭১-৪, নাসায়ি ১০৭০, ১০৭১, ১০৭৭, ১০৭৯; আহমাদ ১৪৪৪, ১৪৪৫; আহমাদ ১২২৯৪, ১২৪৩৮, ১২৭০৭, ১৩৫৩৯; দারিমি ১৫৯৬, ১৫৯৯; ইবনি মাজাহ ১১৮৪, ১২৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৬০, মিশকাত ১২৯৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৮৪. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ]-কে দুআ কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূর পরে দুআ কুনূত পড়েছেন। {১১৮৪}

{১১৮৪} বোখারি ৭৯৮, ১০০১, ১০০২, ৩১৭০,৪০৮৮, ৪০৯০-৪০৯২, ৪০৯৪-৪০৯৬, ৬৩৯৪; মুসলিম ৬৭১-৪; নাসায়ি ১০৭০, ১০৭১, ১০৭৭, ১০৭৯; আবু দাউদ ১৪৪৪, ১৪৪৫; আহমাদ ১২২৯৪, ১২৪৩৮, ১২৭০৭, ১৩৫৩৯; দারিমি ১৫৯৬, ১৫৯৯; ইবনি মাজাহ ১১৮৪, ১২৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১২১. অধ্যায়ঃ শেষ রাতে বিতর নামাজ পড়া।

১১৮৫. মাসরূক হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাঃআঃ]-কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিতরের নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তিনি প্রতি রাতেই বিতর নামাজ আদায় করিতেন, কখনো রাতের প্রথম ভাগে, কখনো রাতের মধ্যভাগে, কখনো শেষভাগে। ইনতিকালের পূর্বে তিনি রাতের শেষভাগ পর্যন্ত তা বিলম্বিত করিতেন। {১১৮৫}

{১১৮৫} বোখারি ৯৯৬, মুসলিম ৭৪১-২, তিরমিজি ৪৫৬, নাসায়ি ১৬৮১, আহমাদ ১৪৩৫, আহমাদ ২৪৪৫৩ দারিমি ১৫৮৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৮৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৮৬. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রতি রাতে বিতর নামাজ আদায় করিতেন, কখনো রাতের প্রথমভাগে, কখনো রাতের মধ্যভাগে এবং কখনো শেষভাগে তাহাঁর বিতর পড়তেন। {১১৮৬}

{১১৮৬} আহমাদ ৮২৭, ১২১৯, ১২৬৩। তাহকিক আলবানিঃ হসান সহিহ। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১৮৭. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ শেষরাতে জাগতে পারবে না বলে আশংকা করলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই বিতর পড়ে নেয়, অতঃপর ঘুমায়। আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রাতের শেষভাগে নামাজ পড়ার আশা করে সে যেন শেষরাতে বিতর পড়ে। কেননা শেষ রাতের কিরআত [শুনার জন্যে ফেরেশতাহাদের] উপস্থিতির সময়। তাই তা অধিক উত্তম। {১১৮৭}

{১১৮৭} মুসলিম ৭৫১-২,তিরমিজি ৪৫৫, আহমাদ ১৪৩৩৫, ২৭৫২১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৬১০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১২২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বিতর নামাজ না পড়ে ঘুমালো অথবা ভুলে গেলো।

১১৮৮. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি বিতর নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে গেলো বা তা পড়তে ভুলে গেলো, সে যেন ভোরবেলা অথবা যখন তার স্মরণ হয় তখন তা পড়ে নেয়। {১১৮৮}

{১১৮৮} তিরমিজি ৪৬৫,আহমাদ ১৪৩১,আ ১০৮৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তাখরীজুল মিশকাত ১২৬৮, ১২৭৯; ইরওয়াহ ১৫৩। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন যায়দ বিন আসলাম সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদীনী ও মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৮৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা ভোরে উপনীত হওয়ার আগেই বিতর নামাজ পড়ো।

মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া [রহঃ] বলেন, এই হাদীস প্রমাণ করে যে আবদুর রহমানের রিওয়ায়াত [১১৮৮] দুর্বল বিধায় আমালযোগ্য নয়। {১১৮৯}

{১১৮৯} মুসলিম ৭৫১-২, তিরমিজি ৪৬৮, নাসায়ি ১৬৮৩, ১৬৮৪; আহমাদ ১০৭১৩, ১০৯০৯, ১০৯৩১, ১১২৭৮; দারিমি১৫৮৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪২২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১২৩. অধ্যায়ঃ বিতর নামাজ তিন, পাঁচ, সাত বা নয় রাকআত।

১১৯০. আবু আয়্যূব আল-আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, বিতর নামাজ সত্য। অতএব কেউ চাইলে তা পাঁচ রাকআতও পড়তে পারে, তিন রাকআতও পড়তে পারে এবং এক রাকআতও পড়তে পারে। {১১৯০}

{১১৯০} নাসায়ি ১৭১০, ১৭১১-১৭১৩; আহমাদ ১৪২২,২৩০৩৩; দারিমি ১৫৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১২৬৫, সহিহ আবু দাউদ ১২৭৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৯১. সাদ বিন হিশাম হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞস করলাম, হে মুমিনগণের মাতা! আপনি আমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিতর নামাজ সম্পর্কে ফতোয়া দিন। তিনি বলেন, আমরা তাহাঁর জন্য মিসওয়াক ও উযুর পানি প্রস্তুত রাখতাম। আল্লাহ যখন চাইতেন তখন তাঁকে রাতের ঘুম থেকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি ওঠে মিসওয়াক করিতেন ও উযু করিতেন, অতঃপর নয় রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তাতে তিনি কেবল অষ্টম রাকআতেই বসতেন এবং তাহাঁর প্রতিপালকের নিকট দুআ করিতেন, আল্লাহর যিকির করিতেন, তাহাঁর প্রশংসা করিতেন এবং তাঁকে ডাকতেন, অতঃপর বসতেন এবং আল্লাহর যিকির করিতেন, তাহাঁর প্রশংসা করিতেন, তাহাঁর প্রভুর নিকট দুআ করিতেন এবং তাহাঁর নবীর উপর দরূদ পড়তেন, অতঃপর আমাদের শুনিয়ে সালাম ফিরাতেন। সালাম ফিরানোর পর তিনি বসা অবস্থায় দু রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। এভাবে এগারো রাকআত নামাজ হতো। অতঃপর রসূলুল্লাহর বয়স বেড়ে গেলে এবং তাহাঁর শরীর ভারী হয়ে গেলে তিনি সাত রাকআত বিতর পড়তেন এবং সালাম ফিরানোর পর দু রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। {১১৯১}

{১১৯১} বোখারি ৯৯৪,১১২৩, ১১৩৯, ১১৪০, ৬৩১০,মুসলিম ৭৩১-২ ৭৩৭ নাসায়ি ১৩১৫,১৬০১, ১৬৫১, ১৭০৯, ১৭১৮,১৭১৯,১৭২০-১৭২৫ আহমাদ ৫৬, ১২৫১, ১৩৪২, ১৩৪৬, ১৩৫১, আহমাদ ২৩৪৯৭, ২৩৫৩৭, ২৩৫৫০, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৭৪৮, ১৩৯২৫, ২৩৯৪০, ২৪১৬, ২৪৫৬, ২৪১৯৪, ২৪২১১, ২৪৫৮১, ২৪৭৯১, ২৪৮১৬, ২৪৯৫৮, ২২৫৩১, ২৫২৭৭, ২৫৪৫২, ২৫৫৭৫, ২৫৫৮৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৪, ২৬৫; দারিমি ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৫ ১৫৮৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২১৩। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৯২. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাত বা পাঁচ রাকআত বিতর নামাজ আদায় করতো এবং এর মাঝখানে সালাম ফিরাতেন না, কথাও বলিতেন না। {১১৯২}

{১১৯২} তিরমিজি ৪৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৯৬১ ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১২৪. অধ্যায়ঃ সফরে বিতরের নামাজ পড়া।

১১৯৩. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে দু রাকআত [ফরয] নামাজ আদায় করিতেন তার চেয়ে বেশী পড়তেন না। আর তিনি তাহাজ্জুদ নামাজও পড়তেন। আমি বললাম, তিনি কি বিতর নামাজ আদায় করিতেন? তিনি বলেন, হাঁ। {১১৯৩}

তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{১১৯৩} ইবনি মাজাহ ১১৯৪, আহমাদ ২১৫৭। তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ নাসায়ি ১৪৫৭ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি জাবির [বিন ইয়াযীদ ইবনিল হারিস] সম্পর্কে ওয়াকী ইবনিল জাররাহ সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আল-জাওযুজানী তাকে মিথ্যুক বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

১১৯৪. ইবনি আব্বাস ও ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে দু রাকআত নামাজ প্রবর্তন করেন। এই দুই রাকআতই পূর্ণ নামাজ, কসর নয়। সফরে বিতরের নামাজ সুন্নাত। {১১৯৪}

তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{১১৯৪} ইবনি মাজাহ ১১৯৩, আহমাদ ২১৫৭। তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৫০ জইফ জিদ্দান। জাবির [বিন ইয়াযীদ ইবনিল হারিস] সম্পর্কে ওয়াকী ইবনিল জাররাহ সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আল-জাওযুজানী তাকে মিথ্যুক বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৫/১২৫. অধ্যায়ঃ বিত্‌রের নামাজের পর বসে দু রাকআত নামায পড়া।

১১৯৫. উম্মু সলামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বিত্‌রের নামাজের পর বসা অবস্থায় হালকাভাবে দু রাকআত [নফল] নামাজ আদায় করিতেন। {১১৯৫}

{১১৯৫} তিরমিজি ৪৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১২৮৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৯৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক রাকআত বিতর পড়তেন। অতঃপর তিনি বসা অবস্থায় দু রাকআত নফল নামাজ আদায় করিতেন, তাতে কিরআতও বসে পড়তেন। তিনি রুকূ করিতে ইচ্ছা করলে দাঁড়িয়ে যেতেন, তারপর রুকূ করিতেন। {১১৯৬}

{১১৯৬} নাসায়ি ১৭৫৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১২৮৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১২৬. অধ্যায়ঃ বিতর ও ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত পড়ার পর কাত হয়ে শুয়ে থাকা।

১১৯৭. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে রাতের শেষভাগে আমার পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়েছি। ওয়াকী [রাঃআঃ] বলেন, অর্থাৎ বিতরের নামাজ পড়ার পর। {১১৯৭}

{১১৯৭} বোখারি ১১৩৩, মুসলিম ৭৪২, আহমাদ ১৩১৮, আহমাদ ২৪৭৫০, ২৫৭৯৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আরী দাউদ ১১৯১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৯৮. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ফজরের দু রাকআত [সুন্নাত] পড়ার পর তাহাঁর ডান কাতে ভর করে শুয়ে থাকতেন। {১১৯৮}

{১১৯৮} বোখারি ৬২৬, ৯৯৪, ১১১৯,১১২৩, ৬৩১০, মুসলিম ৭৩১-২ তিরমিজি ৪৪০, নাসায়ি ৬৮৫, ১৬৯৬, ১৭২৬, ১৭৬২, আহমাদ ১২৬২-৬৩, ১৩৩৬; আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৯৪০, ২৪০১৬, ২৪০৫৬, ২৪২১১, ২৪৩৭৯, ২৪৪৮৬, ২৪৫৮১, ২৪৮১৬, ২৫২৭৭, ২৫৫৭৫, ২৫৬৩৬; দারিমি ১৪৪৭, ১৪৭৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৪৮। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১৯৯. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফজরের দু রাকআত [সুন্নাত] নামাজ পড়ার পর কাত হয়ে শুয়ে থাকতেন। {১১৯৯}

{১১৯৯} তিরমিজি ৪২০, আবু দাউদ ১২৬১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়ায়নাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার বর্ণিত হাদিস হাদিস সহীস নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৫/১২৭. অধ্যায়ঃ বাহনের উপর বিতর নামাজ পড়া।

১২০০. সাঈদ বিন ইয়াসার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি [সফরে] ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। আমি পিছনে পড়ে বিতর নামাজ পড়ে নিলাম। তিনি বলেন, তোমাকে কিসে পেছনে ফেলেছে? আমি বললাম, আমি বিতরের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেন, তোমার জন্য কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মধ্যে অনুসরণীয় আদর্শ নেই? আমি বললাম, হাঁ, আছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর উটের পিঠে বিতরের নামাজ আদায় করিতেন। {১২০০}

{১২০০} বোখারি ৯৯৯, ১০০০, ১০৯০; মুসলিম ৭০০/১-৩, তিরমিজি ৪৭২, নাসায়ি ৪৯০, ৭৪৪, ১৬৮৬-৮৮; আবু দাউদ ১২২৪, আহমাদ ৪৫০৪, ৫১৮৬, ৬১৮৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৭১, দারিমি ১৫৯০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২০১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর বাহনের উপর বিতরের নামাজ আদায় করিতেন। {১২০১}

সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি আব্বাদ বিন মাসসুর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে একাধিক হাদিস মুনকার ভাবে বর্ণিত হয়েছে, তিনি কাদারিয়া মতাবলম্বী। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি কাদারিয়া মতাবলম্বী। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৫/১২৮. অধ্যায়ঃ রাতের প্রথম ভাগে বিতর নামাজ পড়া।

১২০২. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করেন ঃ তুমি কখন বিতরের নামাজ পড়ো? তিনি বলেন, ইশার নামাজের পরে, রাতের প্রথম ভাগে। তিনি বলেন, হে উমার! তুমি কখন? তিনি বলেন, রাতের শেষ ভাগে। নবী [সাঃআঃ] বলেন, হে আবু বাক্‌র! তুমি তো মজবুত নীতির উপর আছো। আর হে উমার! তুমি দৃঢ় সংকল্পের উপর আছো।

১/১২০২ [১]. ইবনি উমার [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ]-কে বলেন, …….. উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ। {১২০২} তাহকীক আলবানি ঃ হাসান সহিহ।{১২০২} আহমাদ ১৩৯১২, ১৪১২৬। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আকীল সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল মুনকার বলেছেন। বিতর নামাজের রাকাত সংখ্যা – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply