বিচার বিধান

বিচার বিধান

বিচার বিধান >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

পর্বঃ ৩১, তালাক, অধ্যায়ঃ (১-১১)=১১টি

১.অদ্ধায়ঃ বিবাদীর উপর আল্লাহ্‌র নামে শপথ করা কর্তব্য
২.অধ্যায়ঃ এক সাক্ষী ও এক শপথে বিচার করার বৈধতা
৩.অধ্যায়ঃঅন্যায় হক প্রতিষ্ঠিত হয় না বিচারকের সদৃশ ফায়সালায়
৪. অধ্যায়ঃ হিন্দার ঘটনা
৫. অধ্যায়ঃ বিনা প্রয়োজনে অধিক প্রশ্ন করা, প্রাপ্য হক না দেয়া এবং অন্যায় কিছু চাওয়া নিষিদ্ধ
৬. অধ্যায়ঃ বিচারকের প্রতিদান, প্রচেষ্টার পর সে যথাযথ সমাধানে পৌঁছুক বা ভুল করুক
৭. অধ্যায়ঃ রাগাম্বিত অবস্থায় বিচারকের বিচার করা নিন্দনীয়
৮. অধ্যায়ঃ বাতিল সিদ্ধান্ত খন্ডন ও বিদআতী কার্যকলাপ পরিত্যাগ
৯. অধ্যায়ঃ সঠিক সাক্ষীগণের বর্ণনা
১০. অধ্যায়ঃ মুজতাহিদগণের মতবিরোধ সম্পর্কে
১১. অধ্যায়ঃ বিচারক কর্তৃক বিবাদমান দুদলের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়া উত্তম

২.অধ্যায়ঃ এক সাক্ষী ও এক শপথে বিচার করার বৈধতা

৪৩৬৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিবাদী থেকে [কসম] শপথ গ্রহণ এবং একজন সাক্ষীর মাধ্যমে মুকদ্দমা নিষ্পত্তি করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৩, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৪]

৩.অধ্যায়ঃঅন্যায় হক প্রতিষ্ঠিত হয় না বিচারকের সদৃশ ফায়সালায়

৪৩৬৫. উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা মুকাদ্দমা নিয়ে আমার কাছে আগমন করে থাক এবং তোমাদের একজন অপরজন অপেক্ষা অধিক বাকপটু হয়ে যুক্তি খাটিয়ে স্বীয় দাবি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কর। আমি কথা শুনে তাহাঁর অনুকূলে রায় প্রদান করি। সুতরাং এতে যদি তার ভাইয়ের হকের কিছু তাকে প্রদান করি [বাস্তবে হয়ত এতে তার কোন অধিকারই নেই] তখন তার কর্তব্য হইবে তা গ্রহণ না করা। কেননা, এতে যেন আমি তাকে জাহান্নামের এক খণ্ড আগুন প্রদান করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৪, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৫]

৪৩৬৬. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৫, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৬]

৪৩৬৭. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হুজ্‌রার দ্বার প্রান্তে জনৈক ঝগড়াকারীর শোরগোল শুনতে পেলেন। তখন তিনি তাদের কাছে বেরিয়ে এলেন এবং বলিলেন, আমি তো একজন মানুষ আর আমার কাছে কোন মুকাদ্দমা দায়েরকারী আসে। তাদের একজনের চেয়ে অন্যজন খুব ভাল করে কথা বলিতে জানে। আমি তখন মনে করি সেই সঠিক, তাতে আমি তার পক্ষে রায় প্রদান করি। আমি যার পক্ষে [অপর]মুসলিমদের হকের ব্যাপারে রায় দেই, তা বস্তুত জাহান্নামের একটি টুকরা। অতএব সে তা গ্রহন করুক কিংবা ছেড়ে দিক।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৭]

৪৩৬৮. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একই সূত্রে ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

আর মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসে [আরবী] –এর পরিবর্তে [আরবী] উল্লেখ রয়েছে। নবী [সাঃআঃ] জনৈক ঝগড়াকারীর শোরগোল উম্মু সালামার [হুজরার] দরজাতে শুনতে পেলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৮]

৪. অধ্যায়ঃ হিন্দার ঘটনা

৪৩৬৯. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হিন্দা বিন্‌ত উত্‌বা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! আবু সুফ্‌ইয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। তিনি আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় করেন না। তবে আমি তাকে না জানিয়েই তার সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচাদি গ্রহন করে থাকি। এতে কি আমার কোন পাপ হইবে? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তাহাঁর সম্পদ থেকে ততটুকু গ্রহণ করিতে পার, যা তোমার ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৮, ইসলামিক সেন্টার-৪৩২৯]

৪৩৭০. মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি নুমায়র, আবু কুরায়ব, ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি ইয়াহ্‌ইয়া ও মুহাম্মাদ ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে এ হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩২৯, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩০]

৪৩৭১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হিন্দা নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আল্লাহর কসম, পৃথিবীর মধ্যে অন্য কোন পরিবার-পরিজনের চেয়ে আল্লাহ আপনার পরিবার-পরিজনকে লাঞ্চিত করুন- এর চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমার কাছে আর কিছুই ছিলনা। আর এখন পৃথিবীর মধ্যে অন্য কোন পরিবার-পরিজনের চেয়ে আল্লাহ আপনার পরিবার-পরিজনকে সম্মানিত করুন- এর চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমার কাছে আর কিছুই নেই। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে মহান আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তা আরো বাড়বে। অতঃপর তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আবু সুফ্‌ইয়ান একজন কৃপণ স্বভাবের লোক। তবে আমি যদি তার বিনা অনুমতিতে তার সন্তান-সন্ততির জন্য তার সম্পদ থেকে খরচ করি, এতে কি আমার কোন অন্যায় হইবে? তখন নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তাদের জন্য তুমি যথাবিধি খরচ করলে কোন দোষ হইবেনা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩০, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩১]

৪৩৭২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হিন্দা বিন্‌ত উত্‌বা ইনু রবীয়াহ্‌, এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! [মুসলিম হওয়ার পূর্বে] পৃথিবীর মধ্যে অন্য কোন পরিবার-পরিজনের চেয়ে আল্লাহ আপনার পরিবার-পরিজনকে লাঞ্চিত করুন- এর চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমার কাছে আর কিছুই ছিলনা। আর আজ [মুসলিম হওয়ার পর] পৃথিবীর মধ্যে অন্য কোন পরিবার-পরিজনের চেয়ে আল্লাহ আপনার পরিবার-পরিজনকে সম্মানিত করুন- এর চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমার কাছে আর কিছুই নেই। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে মহান আল্লাহর কসম যাঁর হাতে আমার জীবন, তা আরো বৃদ্ধি পাবে। তারপর হিন্দা বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আবু সুফ্‌ইয়ান একজন বড় কৃপণ স্বভাবের লোক। এমতাবস্থায় আমি যদি আমাদের সন্তানাদির খাবার [তারই অজান্তে] তার সম্পদ থেকে প্রদান করি তবে কি এতে আমার কোন দোষ হইবে? তিনি বললেনঃ না। তবে তা যথাবিধি হইতে হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩১, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩২]

৫. অধ্যায়ঃ বিনা প্রয়োজনে অধিক প্রশ্ন করা , প্রাপ্য হক না দেয়া এবং অন্যায় কিছু চাওয়া নিষিদ্ধ

৪৩৭৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তিনটি কাজ পছন্দ করেন এবং তিনটি কাজ অপছন্দ করেন। তোমাদের জন্য তিনি যা পছন্দ করেন, তা হলঃ ১. তোমরা তাহাঁরই ইবাদাত করিবে, ২. তাহাঁর সঙ্গে কিছুই শারীক করিবেনা এবং ৩. তোমরা সম্মিলিতভাবে আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে ধারণ করিবে ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইবে না। আর যে সকল বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেনঃ ১. নিরর্থক কথাবার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩২, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৩]

৪৩৭৪. সুহায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি বলেছেনঃ “এবং তিনি তোমাদের তিনটি কাজে রাগাম্বিত হন”। “এবং তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না” বাক্যটি তিনি উল্লেখ করেন নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৩, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৪]

৪৩৭৫. মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হারাম করিয়াছেন মায়েদের অবাধ্য হওয়া, জীবন্ত কন্যা সন্তানকে মাটিতে পুঁতে ফেলা এবং অন্যের হক আদায় না করা এবং না-হক কোন বস্তু প্রার্থনা করা। আর তিনটি বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেন। তা হলঃ ১. নিরর্থক কথা-বার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৪, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৫]

৪৩৭৬. মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্ত তিনি “নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর হারাম করিয়াছেন” স্থলে বলেছেন “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাদের উপর হারাম করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৫, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৬]

৪৩৭৭. শাবি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুগীরাহ্‌ ইবনি শুবাহ্‌ [রাদি.]-এর লেখক আমাকে বলেছেন যে, মুআবিয়াহ্‌ [রাদি.] মুগীরাহ্‌ [রাদি.]-এর কাছে পত্র লিখলেন, আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন, এমন কিছু বিষয় আমাকে লিখে অবহিত করুন। তখন তিনি তাঁকে লিখলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য তিনটি কাজ অপছন্দ করেনঃ ১. অনর্থক কথা-বার্তা বলা, ২. সম্পদ বিনষ্ট করা এবং ৩. বেশী বেশী প্রশ্ন করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৭]

৪৩৭৮. ওয়ার্‌রাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুগীরাহ্‌ [রাদি.] মুআবিয়াহ্‌ [রাদি.]-এর নিকট পত্র লিখলেনঃ “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তিনটি বিষয় হারাম করিয়াছেন এবং তিনটি কাজ নিষিদ্ধ করিয়াছেন। তিনি হারাম করেছেনঃ পিতা-মাতার নাফরমানী, জীবন্ত কন্যা সন্তানকে মাটিতে পুঁতে রাখা এবং পাওনাদারের হক আদায় না করা। আর তিনি তিনটি কাজ নিষিদ্ধ করিয়াছেন, তা হলোঃ ১. অনর্থক কথাবার্তা বলা, ২. অতিরিক্ত প্রশ্ন করা এবং ৩. ধন-সম্পদ বিনষ্ট করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৩৮]

৬. অধ্যায়ঃ বিচারকের প্রতিদান , প্রচেষ্টার পর সে যথাযথ সমাধানে পৌঁছুক বা ভুল করুক

৪৩৭৯. আমর ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, যদি কোন বিচারক যথাযথ চিন্তা-গবেষণার পর সমাধান প্রদান করেন, অতঃপর তিনি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছেন, তার জন্য রয়েছে দ্বিগুন পুরস্কার। আর যদি তিনি চিন্তা-গবেষণা করে রায় প্রদান করেন তারপরও তিনি ভুল করেন, তবুও তার জন্য রয়েছে একটি পুরস্কার। {২৯}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৩৩৯]

{২৯} মুজতাহিদ ভুল করলেও সাওয়াব পাবেন, কারণ হলো তারা আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই আল্লাহর দ্বীনের শ্রম-সাধনা করে যান। [সহীহ মুসলিম- মুখতাসারুল শারহে নাবাবী, আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান, ৪র্থ খন্ড, ৩৪৮ পৃষ্ঠা]

৪৩৮০. ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল আযীয ইবনি মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এবং হাদীসের শেষাংশে অতিরিক্ত উল্লেখ করিয়াছেন, রাবী ইযাযীদ বলেন, আমি হাদীসটি আবু বকর ইবনি আম্‌র ইবনি হায্ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর কাছে বর্ণনা করলে তিনি বলিলেন যে, আমার কাছে আবু হুরায়রা্ [রাদি.] থেকে আবু সালমাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এরূপ বলেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৩৯, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪০]

৪৩৮১. ইয়াযীদ ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হাদীসটি উভয় সূত্রে আবদুল আযীয ইবনি মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণিত রিওয়ায়াতের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪০, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪০]

৭. অধ্যায়ঃ রাগাম্বিত অবস্থায় বিচারকের বিচার করা নিন্দনীয়

৪৩৮২. আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্‌রাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আমার পিতা আমাকে একটি পত্র লেখালেন। তখন আমি সিজিস্তানের বিচারক আবদুল্লাহ ইবনি আবু বাক্‌রাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে লিখলাম যে, আপনি রাগাম্বিত অবস্থায় দুজনের মধ্যে বিচার ফায়সালা দেবেন না। কেননা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, কোন বিচারক যেন রাগাম্বিত অবস্থায় দুজনের মধ্যে বিচার না করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪১, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪১]

৪৩৮৩. আবু বাকরাহ [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে আবু আওয়ানাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪২, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪২]

৮. অধ্যায়ঃ বাতিল সিদ্ধান্ত খন্ডন ও বিদআতী কার্যকলাপ পরিত্যাগ

৪৩৮৪. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ধর্মীয় কাজের বিষয়ে এমন বিষয় উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই [দলীলবিহীন], তা পরিত্যাজ্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৩, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৩]

৪৩৮৫. সাদ ইবনি ইব্‌রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, যার তিনটি বাসস্থান ছিল। অতঃপর সে [মৃত্যুকালে] প্রত্যেক বাসস্থানের এক তৃতীয়াংশ দান করার ওয়াসিয়্যাত করে যায়। কাসিম বলিলেন, এ সকল অংশকে এক বাসস্থান একত্রিত করা হইবে। এরপর তিনি বলিলেন, আমাকে আয়িশা [রাদি.] বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করলো যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৪, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৪]

৯. অধ্যায়ঃ সঠিক সাক্ষীগণের বর্ণনা

৪৩৮৬. যায়দ ইবনি খালিদ জুহানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কি আমি উত্তম সাক্ষীদের সম্পর্কে জানাবো না? উত্তম সাক্ষী হল সে ব্যক্তি, যে সাক্ষ্য প্রদান করে, তাকে সাক্ষ্যের জন্য আহবানের আগেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৫, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৫]

১০. অধ্যায়ঃ মুজতাহিদগণের মতবিরোধ সম্পর্কে

৪৩৮৭. আবু হুরাইরা্‌হ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ একদা দুজন মহিলা তাদের নিজ নিজ ছেলে নিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় এক বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলেকে নিয়ে যায়। তখন তাদের একজন তার সঙ্গীনীকে বলিল, তোমার ছেলেকে বাঘে নিয়েছে। আর দ্বিতীয়া জন বলিল, বরং তোমার ছেলেকে বাঘে নিয়েছে। এ নিয়ে উভয়ে দাউদ [আঃ] –এর নিকট নালিশ নিয়ে গেল। তিনি বয়সে বড় মহিলার পক্ষে সন্তানের রায় দিলেন। তখন উভয়ে বেরিয়ে সুলাইমান ইবনি দাউদ [আঃ] –এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে সে ঘটনা বলিল। তিনি বলিলেন, তোমরা আমার কাছে একটি ছুরি নিয়ে এসো, আমি সন্তানটিকে কেটে উভয়ের মাঝে ভাগ করে দেবো। তখন বয়সে ছোট মহিলাটি বলিল, না, আল্লাহ্‌ আপনার প্রতি রহম করুন। [আমি মেনে নিলাম]। ছেলেটি ঐ মহিলারই। তখন তিনি ছোট মহিলার পক্ষে ছেলে প্রদানের রায় দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু হুরায়রা্‌ [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমি ইতোপূর্বে [আরবী] ছুরি শব্দটি সেদিন ব্যতীত আর কখনও শুনিনি। আমরা তাকে [আরবী] বলতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৬]

৪৩৮৮. আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

ওয়ারকার [রাদি.] –এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৭]

১১. অধ্যায়ঃ বিচারক কর্তৃক বিবাদমান দুদলের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়া উত্তম

৪৩৮৯. মারের মাধ্যমে হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু হুরায়রা্ [রাদি.] যে সকল হাদীস আমাদের বর্ণনা করিয়াছেন তার মধ্যে একটি এই যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির নিকট থেকে এক খন্ড জমি ক্রয় করে। যে ব্যক্তি জমি ক্রয় করেছিল সে তার কেনা সম্পত্তিতে একটি কলসী পেল। তাতে স্বর্ণ ছিল। যে ব্যক্তি জমি ক্রয় করেছিল সে বিক্রেতাকে বলিল, তুমি আমার কাছ থেকে তোমার স্বর্ণ বুঝে নাও। আমি তোমার কাছে থেকে জমি ক্রয় করেছি, স্বর্ণ ক্রয় করিনি। তখন যে ব্যক্তি সম্পত্তি বিক্রি করেছিল সে বলিল, আমি তো তোমার কাছে জমি এবং জমির মধ্যে যা কিছু আছে সবই বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, তারপর উভয়েই এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে এর ফয়সালা চাইল। তখন সে বলিল, তোমাদের কি কোন সন্তান আছে? তাদের একজন বলিল যে, আমার একটি ছেলে আছে এবং অপর জন বলিল, আমার একটি মেয়ে আছে। তখন তিনি বলিলেন, তোমার ছেলেটিকে [তার] মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে দাও এবং এ উপলক্ষে তোমরা তোমাদের উপর তা ব্যয় কর এবং এ থেকে সদাকাহ্ও কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৩৪৮, ইসলামিক সেন্টার-৪৩৪৮]

Comments

One response to “বিচার বিধান”

Leave a Reply