বায়াত । বায়াত হওয়ার দলিল ও বিভিন্ন পদ্ধতি
বায়াত । বায়াত হওয়ার দলিল ও বিভিন্ন পদ্ধতি >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪০, বায়াত, হাদীস (৪১৪৯ – ৪২১১)
১.পরিছেদঃ আদেশ পালন এবং অনুগত থাকার শপথ
২.পরিছেদঃ উপযুক্ত শাসকের বিরোধিতা না করার শপথ
৩.পরিছেদঃ সত্য কথা বলার উপর বায়াত
৪.পরিছেদঃ ন্যায়ানুগ কথা বলার বায়াত
৫.পরিছেদঃ অন্যদের প্রাধান্য দেয়া হলে তাতে ধৈর্যধারণের বায়াত
৬.পরিছেদঃ প্রত্যেক মুসলমানের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ার উপর বায়াত
৭.পরিছেদঃ যুদ্ধ হইতে পলায়ন না করার উপর বায়াত
৮.পরিছেদঃ মৃত্যুর উপর বায়াত
৯.পরিছেদঃ জিহাদ করার উপর বায়য়াত
১০.পরিছেদঃ হিজরতের উপর বায়াত
১১.পরিছেদঃ হিজরতের গুরুত্ব
১২.পরিছেদঃ বেদুঈনের হিজরত
১৩.পরিছেদঃ হিজরতের ব্যাখ্যা
১৪.পরিছেদঃ হিজরতের প্রতি উদ্ধুদ্ধ করা
১৫.পরিছেদঃ হিজরত শেষ হইয়া যাওয়ার ব্যাপারে মতপার্থক্য
১৬.পরিছেদঃ যা পছন্দনীয় এবং যা অপছন্দনীয় সকল বিষয়ের বায়াত
১৭.পরিছেদঃ মুশরিক হইতে পৃথক থাকার বায়াত
১৮.পরিছেদঃ মহিলাদের বায়ায়াত
১৯.পরিছেদঃ রুগ্ন ব্যক্তি থেকে বায়াত
২০.পরিছেদঃ অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকদের বায়াত
২১.পরিছেদঃ দাসদের বায়াত
২২.পরিছেদঃ বায়াত প্রত্যাহার করা
২৩.পরিছেদঃ হিজরতের পর পুনরায় বেদুঈন জীবনে ফিরে যাওয়া
২৪.পরিছেদঃ মানুষের শক্তি অনুযায়ী কাজে বায়াত করা
২৫.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি কোন ইমামের হাতে হাত দিয়ে নিষ্ঠার সাথে বায়াত করে
২৬.পরিছেদঃ ইমামের আনুগত্যের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
২৭.পরিছেদঃ ইমামের আনুগত্যের প্রতি উৎসাহ প্রদান
২৮.পরিছেদঃ উলুল আমরের ব্যাখ্যা
২৯.পরিছেদঃ ঈমামকে অমান্য করার পরিণতি
৩০.পরিছেদঃ ইমামের দায়িত্ব ও প্রাপ্য
৩১.পরিছেদঃ ইমামের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়া
৩২.পরিছেদঃ ইমামের একান্ত পরামর্শদাতা
৩৩.পরিছেদঃ ইমামের একান্ত পরামর্শদাতা
৩৪.পরিছেদঃ শাসকের মন্ত্রী
৩৫.পরিছেদঃ যদি কেউ কাউকে কোন অন্যায় কাজ করিতে বলে এবং সে তা করে, তার বিনিময়
৩৬.পরিছেদঃ অন্যায় কাজে শাসককে সাহায্য করা
৩৭.পরিছেদঃ যে শাসকের অত্যাচারে সাহায্য করিবে না
৩৮.পরিছেদঃ অত্যাচারী শাসকের সামনে যে সত্য কথা বলে তাহাঁর ফযীলত
৩৯.পরিছেদঃ বায়াত পূর্ণকারীর সওয়াব
৪০.পরিছেদঃ শাসনকাজের লোভ করা অপছন্দনীয়
১.পরিছেদঃ আদেশ পালন এবং অনুগত থাকার শপথ
৪১৪৯. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট শপথ করলাম, তাহাঁর কথা শ্রবণ করা এবং আনুগত্য করার উপর প্রত্যেক অনুকূল এবং প্রতিকূল অবস্থায় এবং সুখে-দুঃখে সর্ববস্থায়। আর ক্ষমতার ব্যাপারে যথোপযুক্ত লোকের সংগে বিরোধে লিপ্ত হবো না। আর যেখানেই থাকি না কেন, আমরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো এবং আমরা কোন নিন্দুকের নিন্দার পরওয়া করবো না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৫০. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর হাতে আনুগত্যের শপথ করলাম প্রত্যেক অনুকূল ও প্রতিকূল অবস্থায়। অতঃপর পূর্বের অনুরূপ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিছেদঃ উপযুক্ত শাসকের বিরোধিতা না করার শপথ
৪১৫১. উবাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট শপথ গ্রহন করলাম অনুকূল-প্রতিকূল সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় অনুগত থাকার, উপযুক্ত নেতার বিরোধিতা না করার এবং এই বিষয়ের উপর যে, আমরা যেখানেই থাকি না কেন সত্য বলব কিংবা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো। আর আমরা কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারকে ভয় করবো না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩.পরিছেদঃ সত্য কথা বলার উপর বায়াত
৪১৫২. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত করলাম অনুকূল-প্রতিকূল এবং সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় আনুগত্য প্রদর্শনের আর যিনি আমাদের মধ্যে শাসক নিযুক্ত হইবেন তার সাথে বিরোধ না করার এবং আমরা যেখানেই থাকি না কেন, সদা সত্য কথা বলার।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪.পরিছেদঃ ন্যায়ানুগ কথা বলার বায়াত
৪১৫৩. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট অনুকূল-প্রতিকূল এবং সুখ-দুঃখ সর্বাবস্থায় শ্রবণ ও আনুগত্য প্রদর্শনের বায়াত করলাম, আর একথার যে, আমরা আমাদের শাসকের সাথে বিরোধ করবো না, এবং আমরা যেখানেই থাকি না কেন, ন্যায়ানুগ কথা বলবো। আর আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভয় করবো না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিছেদঃ অন্যদের প্রাধান্য দেয়া হলে তাতে ধৈর্যধারণের বায়াত
৪১৫৪. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত করলাম অনুকূল-প্রতিকূল এবং দুঃখ-সুখ সর্বাবস্থায় এবং আমাদের উপর অন্যদের প্রাধান্য দানের ক্ষেত্রে শ্রবণ ও আনুগত্য বজায় রাখার, উপযুক্ত শাসকের সংগে বিরোধে লিপ্ত না হওয়ার আর এ বিষয়ের যে, আমরা যেখানেই থাকি না কেন, ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকব এবং আমরা আল্লাহর ব্যাপারে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভয় করবো না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৫৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শাসকের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা তোমার উপর অত্যাবশ্যক, তোমার সুখে-দুঃখে এবং অনুকূল-প্রতিকূল সর্ববস্থায় তোমার উপর কাউকে প্রাধান্য দিলেও।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিছেদঃ প্রত্যেক মুসলমানের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ার উপর বায়াত
৪১৫৬. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট প্রত্যেক মুসলমানের শুভ কামনার বায়াত গ্রহন করি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৫৭. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট তাহাঁর কথা মান্য করার এবং তাহাঁর আনুগত্য করার এবং প্রত্যেক মুসলমানের শুভাকাঙ্ক্ষী থাকার উপর বায়াত গ্রহন করি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিছেদঃ যুদ্ধ হইতে পলায়ন না করার উপর বায়াত
৪১৫৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট মৃত্যুর উপর বায়াত গ্রহন করিনি, বরং আমরা যুদ্ধ হইতে পলায়ন না করার উপর বায়াত গ্রহন করেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮.পরিছেদঃ মৃত্যুর উপর বায়াত
৪১৫৯. ইয়াযীদ ইবনি আবু উবায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সালামা ইবনি আকওয়া [রাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা হুদায়বিয়ার দিনে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট কোন কথার উপর বায়য়াত গ্রহন করেছিলেন? তিনি বলেনঃ মৃত্যুর উপর।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৯.পরিছেদঃ জিহাদ করার উপর বায়য়াত
৪১৬০. ইয়ালা ইবনি উমাইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ মক্কা বিজয়ের দিন আমি আমার পিতা উমাইয়াকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট নিয়ে আসলাম এবং বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমার পিতা থেকে হিজরত করার উপর বায়য়াত গ্রহন করুন। তিনি বললেনঃ আমি তার থেকে জিহাদ করার বায়াত নেব। কারন হিজরত শেষ হইয়া গেছে।
হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৪১৬১. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] সাহাবা বেষ্টিত অবস্থায় বললেনঃ তোমরা আমার নিকট এ কথার উপর বায়াত কর যে, তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যাভিচার করিবে না, স্বীয় সন্তানদের হত্যা করিবে না। আর তোমরা কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেবে না এবং ন্যায় কাজে আমার অবাধ্যতা প্রকাশ করিবে না; যে ব্যক্তি এরূপ বায়য়াত পূর্ণ করিবে, তার সওয়াব আল্লাহর যিম্মায়, আর যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে কোন অপরাধ করিবে, তারপর শাস্তি ভোগ করিবে, তা তার জন্য কাফ্ফারা হইয়া যাবে। আর কেউ যদি কোন অপরাধ করে এবং আল্লাহ তায়ালা তা ঢেকে রাখেন, তার ব্যাপার আল্লাহর ইচ্ছাধীন। যদি তিনি ইচ্ছে করেন, তবে তাকে ক্ষমাও করিতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৬২. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা কি আমার নিকট এ কথার উপর বায়াত গ্রহন করিবে না, যে কথার উপর নারীরা বায়াত গ্রহন করেছে? অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যভিচার করিবে না, স্বীয় সন্তানদের হত্যা করিবে না, আর কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেবে না, এবং ন্যায় কাজে আমার অবাধ্যতা করিবে না। আমরা বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! কেন নয়, অবশ্যই বায়য়াত করবো। এরপর আমরা উপরোক্ত বিষয়ে তাহাঁর হাতে বায়য়াত করলাম। তিনি বললেনঃ এখন যে ব্যক্তি ঐ সকল পাপ হইতে কোনটি করিবে এবং পৃথিবীতে এর জন্য শাস্তি ভোগ করিবে, সে শাস্তি তাহাঁর গুনাহর কাফ্ফারা হইয়া যাবে। আর যে শাস্তি পাবে না, তার ব্যাপার আল্লাহর ইচ্ছাধীন, তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তিও দিতে পারেন এবং ক্ষমাও করিতে পারেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
১০.পরিছেদঃ হিজরতের উপর বায়াত
৪১৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নিকট হিজরতের উপর বায়য়াত গ্রহন করছি আর আমি আমার মাতাপিতাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে এসেছি। তিনি বললেনঃ তুমি তাহাদের কাছে ফিরে যাও এবং তাহাদেরকে হাসাও যেমন তুমি তাহাদেরকে কাঁদিয়েছ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিছেদঃ হিজরতের গুরুত্ব
৪১৬৪. আবু সাইদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে হিজরত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ হিজরত বড় কঠিন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ আচ্ছা, তোমার কি উট আছে? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি কি তার যাকাত আদায় কর? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যাও তুমি সাগরের ওপারে থেকে কাজ করিতে থাক। কেননা আল্লাহ তায়ালা তোমার কোন কাজ বৃথা যেতে দেবেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২.পরিছেদঃ বেদুঈনের হিজরত
৪১৬৫. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! কোন হিজরত সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ তোমার ঐ বস্তু ত্যাগ করা, যা আল্লাহর নিকট অপছন্দনীয়। তিনি আরও বললেনঃ হিজরত দুই প্রকারঃ এক, নগরবাসীর হিজরত; দ্বিতীয়, বেদুঈনের হিজরত। যখন তাকে প্রয়োজনবশত ডাকা হয়, তখন সে চলে আসবে; আর কোন আদেশ দিলে তা পালন করিবে, নগরবাসীর উপর বিপদ অনেক এবং সর্বাধিক সওয়াব তারই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩.পরিছেদঃ হিজরতের ব্যাখ্যা
৪১৬৬. জাবির ইবনি যায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আবু বকর এবং উমার [রাঃআঃ]-ও মুহাজির ছিলেন। কেননা তাঁরা মুশরিকদেরকে পরিত্যাগ করেছিলেন। আর কোন কোন আনসারও মুহাজির ছিলেন, কেননা মদীনা ছিল মুশরিকদের আবাসস্থল, পরে তাঁরা আকাবার রাতে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪.পরিছেদঃ হিজরতের প্রতি উদ্ধুদ্ধ করা
৪১৬৭. আবু ফাতিমা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলুন, যা আমি সদা সর্বদা করিতে পারি। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ তুমি হিজরত করাকে অবধারিত করে নাও। কেননা কোন কাজই এর মত নেই।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৫.পরিছেদঃ হিজরত শেষ হইয়া যাওয়ার ব্যাপারে মতপার্থক্য
৪১৬৮. ইয়ালা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
মক্কা বিজয়ের দিন আমি আমার পিতাকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট এনে বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমার পিতা হইতে হিজরতের বায়াত গ্রহণ করুন। তিনি বলেলেনঃ আমি তার থেকে জিহাদের উপর বায়াত গ্রহণ করবো। কেননা হিজরত শেষে হইয়া গেছে।
হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৪১৬৯. সাফওয়ান ইবনি উমাইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! লোকেরা বলে, বেহেশতে শুধু ঐ সকল লোক প্রবেশ করিবে, যারা হিজরত করেছে। তিনি বললেনঃ মক্কা বিজিত হওয়ার সাথে সাথে হিজরত শেষ হইয়া গেছে। কিন্তু জিহাদ ও বিশুদ্ধ নিয়্যত এখনও অবশিষ্ট আছে। অতএব তোমাদেরকে যখন জিহাদের জন্য বের হইতে বলা হইবে, তখন তোমরা জিহাদের জন্য বের হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন বলেনঃ এখন আর হিজরত নেই। কিন্তু জিহাদ এবং বিশুদ্ধ নিয়্যত এখনও অবশিষ্ট আছে। অতএব যখন তোমাদেরকে যুদ্ধের জন্য ডাকা হইবে, তখন তোমরা বের হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭১. নুআয়ম ইবনি দুজাজা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর ইনতিকালের পর হিজরত অবশিষ্ট নেই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭২. আবদুল্লাহ ইবনি ওয়াকিদ সাদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি একটি প্রতিনিধি দলের সাথে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হই এবং আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট কোন কোন প্রয়োজন প্রকাশ করিতে থাকে। আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট সকলের শেষে উপস্থিত হইয়াছিলাম। আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমি এমনসব লোককে রেখে এসেছি যারা মনে করে, হিজরত শেষ হইয়া গেছে। তিনি বলেলেনঃ যতদিন কাফিরদের সাথে জিহাদ জারী থাকিবে, ততদিন হিজরত শেষ হইবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭৩. আবদুল্লাহ ইবনি সাদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা প্রতিনিধি হিসাবে রাসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হই, আমার সাথীরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাহাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেন। আমি সকলের শেষে তাহাঁর নিকট উপস্থিত হই। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ তোমার কী প্রয়োজন? আমি বলিঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! হিজরত কখন শেষ হইবে? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেনঃ কাফিরদের সাথে যুদ্ধ যতদিন চলতে থাকেব, ততদিন হিজরত শেষ হইবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিছেদঃ যা পছন্দনীয় এবং যা অপছন্দনীয় সকল বিষয়ের বায়াত
৪১৭৪. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি আমার পছন্দনীয় এবং অপছন্দনীয় সকল প্রকার কাজের ব্যপারে আপনার কথা শ্রবণের এবং আপনার অনুসরণ করার বায়াত গ্রহণ করেছি। তিনি বললেনঃ হে জারীর! তোমার কি সেই ক্ষমতা আছে কিংবা তুমি কি তা পারবে? বরং তুমি বল, আমার দ্বারা যতটূকু সম্ভব। তারপর তিনি এরপর আমার নিকট হইতে বায়াত করিলেন। আমি আরও বায়াত গ্রহণ করলাম প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি কল্যাণকামিতার।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭.পরিছেদঃ মুশরিক হইতে পৃথক থাকার বায়াত
৪১৭৫. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত গ্রহণ করলাম নামাজ আদায় করার, যাকাত প্রদান করার, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য শুভ কামনার এবং মুশরিকদের থেকে পৃথক থাকার।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭৬. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হই। এরপর তিনি পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৪১৭৭. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট তখন উপস্থিত হই, যখন তিনি বায়াআত গ্রহণ করেছিলেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আপনার হাত বাড়িয়ে দিন, যাতে আমিও আপনার নিকট বায়াত গ্রহণ করিতে পারি। আর আপনি যা ইচ্ছা আমার উপর শর্ত করুন এবং এ সম্পর্কে আপনি ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ আমি এই শর্তে তোমার বায়াত গ্রহণ করছি যে, তুমি এক আল্লাহর ইবাদত করিবে, নামাজ কায়েম করিবে, যাকাত দিবে, মুসলমানদের শুভাকাঙ্ক্ষী থাকিবে এবং মুশরিকদের পরিত্যাগ করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৭৮. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি একদল লোকের সাথে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর হাতে বায়াত গ্রহণ করি। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি তোমাদের থেকে এ ব্যপারে বায়াত গ্রহণ করছি যে, তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরীক করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যভিচার করিবে না, নিজের সন্তানকে হত্যা করিবে না, কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিবে না, ভাল কাজে আমার অবাধ্য হইবে না। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ সকল অঙ্গীকার পূর্ণ করিবে তার সওয়াব আল্লাহর নিকট রয়েছে। আর যে ব্যক্তি এই কার্যাবলীর কোন একটি করে ফেলবে এবং পৃথিবীতে এর শাস্তি ভোগ করিবে, তবে তা তার পবিত্রতার উপায় হইবে। আর যদি আল্লাহ তাআলা তার পাপ গোপন রাখেন তবে তা আল্লাহর মরযী, তিনি ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমা করবেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তি দেবেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮.পরিছেদঃ মহিলাদের বায়ায়াত
৪১৭৯. উম্মে আতিয়্যা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি যখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়ায়াত গ্রহণ করার ইচ্ছা করি, তখন আমি বলিঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! জাহিলী যুগে এক মহিলা মৃত্যুর উপর ক্রন্দনে আমাকে সাহায্য করেছিল। এখন তার সাহায্যেও আমাকে যেতে হয়। আমি সেখানে গিয়ে তাকে সাহায্য করব, তারপর এসে আপনার নিকট বায়াত গ্রহণ করবো। তিনি বলেলেনঃ যাও এবং তাকে সাহায্য কর। উম্মে আতিয়্যা [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি গিয়ে সে মহিলাকে সাহায্য করি এবং ফিরে এসে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত গ্রহণ করি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৮০. উম্মে আতিয়্যা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যে, তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাদের থেকে বায়াত নেন যে, আমরা যেন কোন মৃত ব্যক্তির জন্য ক্রন্দনে শরীক না হই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৮১. উমায়মা বিনতে রুকায়কা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি কয়েকজন আনসারী নারীর সাথে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত গ্রহণের জন্য উপস্থিত হই। আমরা আরয করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমরা আপনার নিকট এ কথার উপর বায়াত করছি যে, আমরা আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরীক করবো না, চুরি করবো না, ব্যভিচার করবো না, আমরা কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেব না, ভাল কাজে আপনার নাফরমানী করবো না। তিনি বললেনঃ তোমারা এও বল যে, আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব। উমায়মা [রাঃআঃ] বলেন, আমরা বললামঃ আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল আমাদের প্রতি কত মেহেরবান। আমরা বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আসুন, আমরা আপনার হাতে বায়াত করবো। তখন রাসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি স্ত্রীলোকের হাতে হাত মিলাই না। কোন একজন নারী কে আমার বলাটা একশত নারীকে বলার মত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯.পরিছেদঃ রুগ্ন ব্যক্তি থেকে বায়াত
৪১৮২. আমর নামক এক ব্যক্তি তার পিতা হইতে হইতে বর্ণিতঃ
বনু সকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলে এক ব্যক্তি কুষ্ঠ রোগী ছিল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে বলেনঃ তুমি চলে যাও, আমি তোমার বায়াত গ্রহণ করেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০.পরিছেদঃ অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকদের বায়াত
৪১৮৩. হিরমাস ইবনি যিয়াদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বায়াত করার জন্য রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর দিকে আমার হাতে বাড়িয়ে দেই, আর আমি ছিলাম তখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক। কিন্তু তিনি আমাকে বায়াত করান নি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২১.পরিছেদঃ দাসদের বায়াত
৪১৮৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একজন দাস রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে হিজরতের উপর বায়াত গ্রহন করিল। নাবী [সাঃআঃ] জানিতেন না যে, সে একজন দাস। পরে যখন তার মালিক তাকে নিতে আসলো, তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি একে আমার নিকট বিক্রি কর। এরপর তিনি তাকে দুটি কাল দাসের বিনিময়ে ক্রয় করেন। তারপর তিনি দাস কিনা জিজ্ঞাসা না করে কাউকে বায়াত করিতেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২.পরিছেদঃ বায়াত প্রত্যাহার করা
৪১৮৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর হাতে ইসলামের উপর বায়াত গ্রহণ করিল। পরে সে মদীনায় জ্বরে আক্রান্ত হলে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হল এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার বায়াত প্রত্যাহার করুন। তিনি তা করিলেন না। কিন্তু সে পুনরায় এসে বলিল, আমার বায়াত প্রত্যাহার করুন। তিনি এবারও তা করিলেন না। এরপর সে চলে গেল, তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ মদীনা কামারের হাপরের মত, যে এর ময়লা দূর করে এবং নিখুঁতটুকু রেখে দেয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩.পরিছেদঃ হিজরতের পর পুনরায় বেদুঈন জীবনে ফিরে যাওয়া
৪১৮৬. সালামা ইবনি আকওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি হাজ্জাজের নিকট উপস্থিত হলে হাজ্জাজ বলেনঃ হে ইবনি আকওয়া! তুমি কি পিছনে ফিরে গেছ? তিনি আরও কিছু বলিলেন, যাহার অর্থ হলো, তুমি মদীনা ছেড়ে মরুপল্লীতে চলে গেছ। তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে মরুপল্লীতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪.পরিছেদঃ মানুষের শক্তি অনুযায়ী কাজে বায়াত করা
৪১৮৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট শ্রবণ ও আনুগত্যের বায়াত করতাম, এরপর তিনি বলিতেনঃ যতটুকু তোমার শক্তিতে কুলায়। অন্য বর্ণনায় আলী [রাঃআঃ] বলেনঃ তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৮৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা যখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট শ্রবন ও আনুগত্যের বায়াত করতাম, তখন তিনি আমাদের বলিতেনঃ তোমাদের যতটুকু ক্ষমতা আছে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৮৯. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট শ্রবণ ও আনুগত্যের বায়াত করলাম। তিনি আমাকে বলে দিলেন— যতটুকু তোমার শক্তি আছে। এবং প্রত্যেক মুসলমানের কল্যাণকামিতার শপথ নিলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৯০. উমায়মা বিন্ত রুকায়কা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা কতিপয় মহিলার সাথে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়াত গ্রহণ করি। এরপর তিনি আমাদেরকে বলেনঃ তোমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব এবং তোমাদের যতটুকু শক্তি আছে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫.পরিছেদঃ যে ব্যক্তি কোন ইমামের হাতে হাত দিয়ে নিষ্ঠার সাথে বায়াত করে
৪১৯১. আবদুর রহমান ইবনি আব্দে রাব্বিল কাবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম, তখন তিনি কাবার ছায়ায় উপবিষ্ট ছিলেন এবং তাহাঁর চতুর্দিকে লোক সমবেত ছিল। তিনি বলেন, আমি তাঁকে বলিতে শুনলামঃ একবার আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। আমরা এক মনযিলে অবতরণ করলাম। এ সময় আমাদের কেউ তাঁবু খাটাচ্ছিল, কেউ তীর নিক্ষেপের প্রতিযগিতায় ছিল, কেউ পশু চারণে ছিল। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর পক্ষ হইতে আহ্বানকারী আহ্বান করলঃ সালাতের জন্য একত্রিত হও। আমারা সকলে একত্র হলে নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে বললেনঃ আমার পূর্ববর্তী প্রত্যেক নাবীর দায়িত্ব ছিল, তাহাঁর উম্মতের জন্য যা ভাল মনে করিতেন তাহাদেরকে তা শিক্ষা দেওয়া। আর যা তাহাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করিতেন, তা হইতে তাহাদেরকে সতর্ক করা। আর তোমাদের এই উম্মতের প্রথমদিকের লোকদের জন্য নিরাপত্তা রাখা হইয়াছে কিন্তু শেষের দিকে যারা আসবে তারা মুসীবত এবং এমন কিছু বিষয়ের সম্মুখীন হইবে যা তারা অনিষ্টকর মনে করিবে। তাহাদের উপর উপর্যুপরি ফিতনা আসতে থাকিবে, যাহার পরেরটির কাছে আগেরটি তুচ্ছ মনে হইবে। এক ফিতনা আসবে। তখন মুমিন বলবেঃ এটিত আমাকে ধ্বংস করিবে। পরে তা দূর হইয়া যাবে। তা দূর হইতে না হইতে আর এক মুসীবত এসে পড়বে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জাহান্নাম হইতে নিস্তার পেতে এবং জান্নাতে প্রবেশ করিতে চায়, সে যেন আল্লাহ ও কিয়ামতের উপর বিশ্বাস রেখে মারা যায়। আর সে লোকের প্রতি ঐরূপ ব্যবহার করিবে, যেরূপ ব্যবহার সে তাহাদের নিকট প্রত্যাশা করে আর যে ইমামের হাতে হাত রেখে বায়াত করিবে, সে যেন নিষ্ঠার সাথে সাধ্যমত তার আনুগত্য করে। পরে যদি কোন ব্যক্তি ওই ইমামের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হইতে চায়, তবে তার গর্দান উড়িয়ে দিবে। তখন আমি তার নিকটবর্তী হইয়া বললামঃ আপনি কি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে এরূপ বলিতে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬.পরিছেদঃ ইমামের আনুগত্যের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
৪১৯২. ইয়াহ্ইয়া ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আমার দাদীকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বিদায় হজ্জের সময় বলিতে শুনেছিঃ যদি তোমাদের কোন উপর হাবশী দাসকেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, যিনি তোমাদেরকে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালনা করেন, তখন তোমার তার কথা শুনবে; তার আনুগত্য করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭.পরিছেদঃ ইমামের আনুগত্যের প্রতি উৎসাহ প্রদান
৪১৯৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো, সে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য করলো; আর যে আমার আনুগত্য করলো না, সে আল্লাহরও আনুগত্য করলো না। আর যে আমার নির্বাচিত শাসকের আনুগত্য করলো, সে আমার আনুগত্য করলো; আর যে আমার নির্বাচিত শাসককে অমান্য করলো, সে আমাকে অমান্য করলো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮.পরিছেদঃ উলুল আমরের ব্যাখ্যা
৪১৯৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
{আরবী} আয়াতটি আবদুল্লাহ ইবনি হুযাফা ইবনি কায়স ইবনি আদীর সম্পর্কে নাযিল হইয়াছিল। যাকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কোনো যুদ্ধের অধিনায়ক করে পাঠিয়েছিলেন।
অর্থঃ হে মুমিনগণ! তোমার আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসূলের এবং তাহাদের, যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী [৪ঃ ৫৯]।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯.পরিছেদঃ ঈমামকে অমান্য করার পরিণতি
৪১৯৫. মুআয ইবনি জাবাল [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ জিহাদ দুই প্রকারঃ ১. যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি কামনা করে এবং ইমামের আনুগত্য করে আর উত্তম মাল আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে এবং ফিতানা-ফাসাদ পরিহার করে। তার নিদ্রা ও জাগরন সবই ইবাদতরূপে গণ্য হয়। ২. আর ঐ ব্যক্তি, যে লোককে দেখানোর জন্য ও প্রসিদ্ধি লাভ করার উদ্দেশ্যে জিহাদ করে এবং ইমামের অবাধ্য হয়, পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে, সে কিছুই নিয়ে প্রত্যাবর্তন করিবে না অর্থাৎ তার কোন সওয়াব হইবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩০.পরিছেদঃ ইমামের দায়িত্ব ও প্রাপ্য
৪১৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ঈমাম ঢাল সদৃশ, যাহার আড়ালে লোকে যুদ্ধ করে এবং তার দ্বারা পরিত্রাণ লাভ করে। যদি ঈমাম আল্লাহর ভয়ের আদেশ করে এবং ইনসাফের সাথে আদেশ করে, তবে এর জন্য তার সওয়াব রয়েছে, আর যদি এর অন্যথা করে, তবে তার উপর এর পরিণতি বর্তাবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১.পরিছেদঃ ইমামের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়া
৪১৯৭. তামীম দারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শুভ কামনা করার নামই দ্বীন। লোকগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কার জন্য? তিনি বললেনঃ আল্লাহর জন্য, তাহাঁর কিতাবের, তাহাঁর রাসূলের, আর মুসলমানদের নেতাহাদের এবং মুসলিম সাধারণের জন্য।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৯৮. তামীম দারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শুভ কামনার নামই দ্বীন। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! কার জন্য? তিনি বললেনঃ আল্লাহর জন্য, তাহাঁর কিতাবের, তাহাঁর রাসূলের, আর মুসলমানদের ঈমামদের এবং মুসলিম সাধারণের জন্য।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কল্যাণকামিতাই দ্বীন, কল্যাণকামিতাই দ্বীন, দ্বীন হলো কল্যাণকামিতাই। লোকগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, কার জন্য, ইয়া রসূলুল্লাহ? তিনি বললেনঃ আল্লাহর জন্য, তাহাঁর কিতাবের এবং তাহাঁর রাসূলের ও মুসলমানের ঈমামদের এবং মুসলিম সাধারণের জন্য।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪২০০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কল্যাণকামিতাই দ্বীন। লোকগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! কার জন্য? তিনি বললেনঃ আল্লাহর, তাহাঁর কিতাবের, তাহাঁর রাসূলের ও মুসলমানদের ঈমামদের এবং মুসলিম সাধারণের জন্য।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩২.পরিছেদঃ ইমামের একান্ত পরামর্শদাতা
৪২০১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক ইমামের দুজন পরামর্শদাতা থাকে। এক. পরামর্শদাতা হলো, যে তাকে নেকী ও উত্তম কাজের আদেশ করে এবং তাকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আর এক পরামর্শদাতা হলো, যে তার কাজে ফাসাদ সৃষ্টিতে ত্রুটি করে না। অতএব, যে ব্যক্তি এর মন্দ থেকে রক্ষা পায়, সে সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা পেল। আর সে এমন দলের একজন হইয়া যায়, যারা মন্দ পরামর্শদাতার উপর জয়যুক্ত হয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২০২. আবু সাইদ [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলা কোন নাবী বা কোন প্রতিনিধি প্রেরণ করেননি, তাহাঁর সাথে দুটি পরামর্শদাতা ব্যতীত। এক. পরামর্শদাতা হলো, যে ভাল কাজের প্রতি উদ্ভুদ্ধ করে। আর এক পরামর্শ দাতা হলো, যা মন্দ কাজের প্রেরণা যোগায়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা যাকে রক্ষা করেন তিনিই রক্ষা পান।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২০৩. আবু আইয়্যুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ দুনিয়াতে কোন নাবী প্রেরিত হননি আর না তাহাঁর কোন খলীফা, যাকে দুটি অলক্ষ্য পরামর্শদাতা দেয়া হয়নি। এক. পরামর্শদাতা হলো, যে ভাল কাজের প্রতি নির্দেশ করে এবং মন্দ কাজ হইতে নিষেধ করে। আর এক পরামর্শদাতা হলো, যে মন্দ কাজের প্রেরণা দেয়। অতএব যে ব্যক্তি মন্দ পরামর্শদাতা হইতে রক্ষা পেল, সেই সকল অনিষ্ট হইতে রক্ষা পেল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩.পরিছেদঃ ইমামের একান্ত পরামর্শদাতা
৩৪.পরিছেদঃ শাসকের মন্ত্রী
৪২০৪. কাসিম ইবনি মুহাম্মদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আমার ফুফুকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শাসক নিযুক্ত হন এবং আল্লাহ তাআলা তার কল্যাণের ইচ্ছা করেন, আল্লাহ তাআলা তার জন্য একজন পুণ্যবান মন্ত্রী নিযুক্ত করেন, যদি ভুলে যান তবে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেন। আর যদি তাহাঁর স্মরণ থাকে, তবে তাঁকে সাহায্য করেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫.পরিছেদঃ যদি কেউ কাউকে কোন অন্যায় কাজ করিতে বলে এবং সে তা করে, তার বিনিময়
৪২০৫. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক সেনাদল প্রেরণ করেন এবং তাহাদের জন্য এক ব্যক্তিকে অধিনায়ক নিযুক্ত করেন। তিনি আগুন জ্বালিয়ে লোকদের তাতে প্রবেশ করিতে বলিলেন। কেউ কেউ তো তাতে প্রবেশের ইচ্ছা করে; আর অন্যরা বলেঃ আমরা তো আগুন থেকেই পালিয়ে এসেছি। এরপর তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ বিষয়টি অবহিত করলে, তিনি যারা আগুনে প্রবেশ করিতে মনস্থ করেছিল তাহাদেরকে বলেন, যতি তোমরা তাতে প্রবেশ করিতে, তবে তোমরা কিয়ামত পর্যন্ত থাকতে। আর যারা প্রবেশ করিতে ইচ্ছা করেন নি, তিনি তাহাদের কাজকে উত্তম বলে অভিহিত করিলেন। আবু মূসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার হাদীসে একটি উত্তম কথা বলেছেন, তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতায় কারো আনুগত্য করা যাবে না; আনুগত্য শুধু ভাল কাজে করিতে হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২০৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানেরই শাসকের আদেশ শোনা ও আনুগত্য করা আবশ্যক; সে পছন্দ করুক আর নাই করুক। কিন্তু তিনি যদি গুনাহর কাজের আদেশ করেন, তবে তা শ্রবন করার এবং মানার প্রয়োজন নেই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৬.পরিছেদঃ অন্যায় কাজে শাসককে সাহায্য করা
৪২০৭. কাব ইবনি উজরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট আগমন করিলেন, তখন আমরা ছিলাম নয়জন। তিনি বললেনঃ দেখ, অচিরেই আমার পর এমন শাসক হইবে, যে ব্যক্তি তাহাদের মিথ্যাকে স্বীকার করিবে, আর অন্যায় কাজে তাহাদের সাহায্য করিবে, সে আমার দলভুক্ত নয় এবং আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকিবে না। কিয়ামতের দিন সে আমার কাছে হাওযে আসবে না, আর যারা এ সকল শাসকের মিথ্যাকে সত্য বলবে না, আর যুলুমেও তাহাদের সাহায্য করিবে না; সে আমার সাথী এবং আমিও তার সাথী; আর এ ব্যক্তি আমার কাছে হাওযে আগমন করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭.পরিছেদঃ যে শাসকের অত্যাচারে সাহায্য করিবে না
৪২০৮. কাব ইবনি উজরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট আগমন করিলেন। তখন আমরা ছিলাম নয়জন। তার মধ্যে পাঁচ ও চার-এর একটি সংখ্যায় ছিল আরব এবং অপর সংখ্যায় ছিল অনারব। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ শোন, তোমরা শুনে থাকিবে যে, আমার পরে শাসক হইবে, যারা তাহাদের নিকট গিয়ে তাহাদের মিথ্যাকে সত্য বলে প্রতিপাদন করিবে, আর অত্যাচারে তাহাদের সাহায্য করিবে, আমি তার নই, আর সেও আমার নয়। সে আমার কাছে হাওযে আসতে পারবে না। আর যারা তাহাদের নিকটে যাবে না, তাহাদের মিথ্যাকে সত্য প্রতিপাদন করিবে না এবং তাহাদের অত্যাচারে সাহায্য করিবে না, সে আমার এবং আমিও তার, আর সে আমার কাছে হাওযে আগমন করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮.পরিছেদঃ অত্যাচারী শাসকের সামনে যে সত্য কথা বলে তাহাঁর ফযীলত
৪২০৯. তারিক ইবনি শিহাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলো, আর তখন তিনি তাহাঁর পদদ্বয় ঘোড়ার পাদানীতে রেখেছিলেন, কোন জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯.পরিছেদঃ বায়াত পূর্ণকারীর সওয়াব
৪২১০. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা এক মজলিসে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি বলেনঃ তোমরা এই কথার উপর আমার নিকট বায়াত কর যে, তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরীক করিবে না, ব্যভিচার করিবে না, চুরি করিবে না, এরপর তিনি পূর্ণ আয়াত পড়ে শোনান। পরে তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার বায়াত পূর্ণ করিবে, তার বিনিময় আল্লাহ তাআলার নিকট রয়েছে, আর যে ব্যক্তি ঐ সকলের মধ্যে কোন একটা করিবে, তারপর যদি আল্লাহ তার এই কাজকে গোপন রাখেন, তবে তা আল্লাহর উপর নির্ভর করে, তিনি ইচ্ছা করলে শাস্তি দেবেন, আর ইচ্ছা করলে ক্ষমা করবেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪০.পরিছেদঃ শাসনকাজের লোভ করা অপছন্দনীয়
৪২১১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ অচিরে তোমরা শাসক হওয়ার লোভ করিবে। অথচ তার শেষ ফল লজ্জাকর ও অনুতাপের হয়। কেননা তা অতি উত্তম দুগ্ধদায়িনী [অর্থাৎ যখন তা লাভ হয়, তখন তো খুবই উত্তম মনে হয়] আর অতি নিকৃষ্ট ছাড়ানদাত্রী [অর্থাৎ যখন তা চলে যায়, তখন খুবই বেদনাদায়ক হয়]।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply