বাজার সম্পর্কে হাদিস এবং নিলাম ডাকে কেনা-বেচা

বাজার সম্পর্কে হাদিস এবং নিলাম ডাকে কেনা-বেচা

বাজার সম্পর্কে হাদিস এবং নিলাম ডাকে কেনা-বেচা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৩৪, ক্রয় ও বিক্রয়, অধ্যায়ঃ (৪৯-৫৯)=১১টি

৩৪/৪৯. অধ্যায়ঃ বাজার বা ব্যবসা কেন্দ্র সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
৩৪/৫০. অধ্যায়ঃ বাজারে চিল্লানো ও হৈ হুল্লোড় করা অপছন্দনীয়।
৩৪/৫১. অধ্যায়ঃ ওজন করার পারিশ্রমিক প্রদানের দায়িত্ব বিক্রেতা বা দ্রব্য প্রদানকারীর উপর।
৩৪/৫২. অধ্যায়ঃ মেপে দেয়া পছন্দনীয়।
৩৪/৫৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) সা ও মুদ-এ (দুটো নির্দিষ্ট পরিমাপ) বরকত বা কল্যাণ কামনা সম্পর্কে।
৩৪/৫৪. অধ্যায়ঃ খাদ্য শস্য বিক্রয় করা ও তা মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।
৩৪/৫৫. অধ্যায়ঃ হস্তগত হওয়ার পূর্বে খাদ্য বিক্রি করা এবং যে পণ্য নিজের কাছে নেই তা বিক্রি করা।
৩৪/৫৬. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করলে কারো কারো মতে যতক্ষণ তা নির্দিষ্ট স্থানে না পৌঁছাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা বিক্রয় করা জায়িয নয়।
৩৪/৫৭. অধ্যায়ঃ কোন বস্তু বা জন্তু ক্রয় করার আগে বিক্রেতার নিকট তা রেখে বিক্রয় করা অথবা হস্তগত করার আগে এর মৃত্যু হওয়া।
৩৪/৫৮. অধ্যায়ঃ কেউ যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে, এবং তার দাম দস্তুর করার উপর দর-দাম না করে যতক্ষণ না সে অনুমতি প্রদান করে বা ছেড়ে দেয়।
৩৪/৫৯. অধ্যায়ঃ নিলাম ডাকে কেনা-বেচা

৩৪/৪৯. অধ্যায়ঃ বাজার বা ব্যবসা কেন্দ্র সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।

আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাদি.) বলেন, আমরা মাদীনায় আগমনের পর জিজ্ঞেস করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়? সে বলিল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস (রাদি.) বলেন, আবদুর রহমান (রাদি.) বলিলেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। উমর (রাদি.) বলেন, আমাকে বাজারের কেনা বেচা গাফিল করে রেখেছে।

২১১৮. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, (পরবর্তী যামানায়) একদল সৈন্য কাবা (ধ্বংসের উদ্দেশ্যে) অভিযান চালাবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাদের আগের পিছের সকলকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তাদের অগ্রবাহিনী ও পশ্চাৎবাহিনী সকলকে কিভাবে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে, অথচ সে সেনাবাহিনীতে তাদের বাজারের (পণ্য-সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকবে এবং এমন লোকও থাকবে যারা তাদের দলভুক্ত নয়, তিনি বলিলেন, তাদের আগের পিছের সকলকে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। তারপরে (কিয়ামতের দিবসে) তাদের নিজেদের নিয়্যাত অনুযায়ী উত্থান করা হইবে।

২১১৯.আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের কারো জামাআতে সালাত আদায়ে নিজ ঘরের সালাতের চেয়ে বিশ গুণেরও অধিক মর্তবা রয়েছে। কারণ সে যখন উত্তমরূপে অযু করে মসজিদে আসে, সালাত আদায় ছাড়া অন্য কোন অভিপ্রায়ে আসে না, সালাত ছাড়া অন্য কিছুই তাকে উদ্বুদ্ধ করে না। এমতাবস্থায় তার প্রতি কদমে এক মর্তবা বৃদ্ধি করা হইবে এবং একটি গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হইবে। আর ফেরেশতাগণ তোমাদের সে ব্যক্তির জন্য (এ মর্মে) দুআ করিতে থাকবেন, যতক্ষণ সে যেখানে সালাত আদায় করেছে, হে আল্লাহ! আপনি তার প্রতি অনুগ্রহ করুন, তার প্রতি রহম করুন। যতক্ষণ না সে তথায় অযু ভঙ্গ করে, যতক্ষণ না সে তথায় কাউকে কষ্ট দেয়। তিনি আরো বলেছেন, তোমাদের সে ব্যক্তি সালাতে রত গণ্য হইবে, যতক্ষণ সে সালাতের অপেক্ষায় থাকে।

২১২০. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক সময় বাজারে ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি বলিলেন, এই আবুল কাসিম! নাবী (সাঃআঃ) তার দিকে তাকালে তিনি বলিলেন, আমি তো তাকে ডেকেছি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ কিন্তু আমার কুনিয়াতে কুনিয়াত রেখ না। [৭]

[৭] আবুল কাসিম ছিল রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর উপনাম। তাহাঁর জীবদ্দশায় এ নাম রাখা নিষিদ্ধ ছিল।

২১২১. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সাহাবী বাকী নামক স্থানে আবুল কাসিম বলে (কাউকে) ডাক দিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) তার দিকে তাকালেন। তিনি বলিলেন, আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করিনি। তখন তিনি বলিলেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখ না।

২১২২. আবু হুরাইরা দাওসী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) দিনের এক অংশে বের হলেন, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেননি এবং আমিও তাহাঁর সঙ্গে কথা বলিনি। অবশেষে তিনি বানূ কায়নুকা বাজারে এলেন (সেখান হইতে ফিরে এসে) ফাতিমা (রাদি.)-এর ঘরের আঙ্গিণায় বসে পড়লেন। তারপর বলিলেন, এখানে খোকা [হাসান (রাদি.)] আছে কি? এখানে খোকা আছে কি? ফাতেমা (রাদি.) তাঁকে কিছুক্ষণ দেরী করালেন। আমার ধারণা হল তিনি তাঁকে পুতির মালা সোনা-রূপা ছাড়া যা বাচ্চাদের পরানো হতো, পরাচ্ছিলেন। তারপর তিনি দৌড়িয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুমু খেলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! তুমি তাঁকেও (হাসানকে) মহব্বত কর এবং তাকে যে ভালবাসবে তাকেও মহব্বত কর। সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমার কাছে উবাইদুল্লাহ বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি নাফি ইবনু জুবায়রকে এক রাকআত মিলিয়ে বিতর আদায় করিতে দেখেছেন।

২১২৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তারা নাবী (সাঃআঃ)- এর সময়ে বাণিজ্যিক দলের কাছ হইতে (পথিমধ্যে) খাদ্য ক্রয় করিতেন। সে কারণে খাদ্য-দ্রব্য বিক্রয়ের স্থানে তা স্থানান্তর করার আগে বণিক দলের কাছ হইতে ক্রয়ের স্থলে বেচা-কেনা করিতে নিষেধ করার জন্য তিনি তাদের কাছে লোক পাঠাতেন।

২১২৪. See previous Hadith. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাবী (ইবনু মুনযির) বলেন, ইবনু উমর (রাদি.) আরো বর্ণনা করিয়াছেন, নাবী (সাঃআঃ) পূর্ণভাবে অধিকারে আনার আগে ক্রয় করা পণ্য বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

৩৪/৫০. অধ্যায়ঃ বাজারে চিল্লানো ও হৈ হুল্লোড় করা অপছন্দনীয়।

২১২৫. আতা ইবনু ইয়াসার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাদি.)-কে বললাম, আপনি আমাদের কাছে তাওরাতে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর গুণাবলী বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেন, আচ্ছা। আল্লাহর কসম! কুরআনে বর্ণিত তাহাঁর কিছু গুণাবলী তাওরাতেও উল্লেখ করা হয়েছেঃ “হে নাবী! আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি” এবং উম্মীদের রক্ষক হিসাবেও। আপনি আমার বান্দা ও আমার রাসুল। আমি আপনার নাম মুতাওয়াক্কিল (আল্লাহর উপর ভরসাকারী) রেখেছি। তিনি বাজারে কঠোর রূঢ় ও নির্দয় স্বভাবের ছিলেন না। তিনি মন্দর প্রতিশোধ মন্দ দ্বারা নিতেন না বরং মাফ করে দিতেন, ক্ষমা করে দিতেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে ততক্ষণ মৃত্যু দিবেন না যতক্ষণ না তাহাঁর দ্বারা বিকৃত মিল্লাতকে ঠিক পথে আনেন অর্থাৎ যতক্ষণ না তারা (আরববাসীরা) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর ঘোষনা দিবে। আর এ কালিমার মাধ্যমে অন্ধ-চক্ষু, বধির-কর্ণ ও আচ্ছাদিত হৃদয় খুলে যাবে।

আবদুল আযীয ইবনু আবু সালামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হিলাল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে হাদীস বর্ণনায় ফুলাইহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)- এর অনুসরণ করিয়াছেন। সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ……… ইবনু সালাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

৩৪/৫১. অধ্যায়ঃ ওজন করার পারিশ্রমিক প্রদানের দায়িত্ব বিক্রেতা বা দ্রব্য প্রদানকারীর উপর।

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “যখন তারা লোকদের মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়”- (মুত্বাফফিফীন (৮৩):৩)। এখানে …………. অর্থাৎ ……….. এবং …………অর্থাৎ …………. যেমন বলা হয়…………. অর্থাৎ……………..।

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, ঠিকভাবে মেপে নিবে উসমান (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে বলেছেন, যখন তুমি বিক্রি করিবে তখন মেপে দিবে আর যখন ক্রয় করিবে তখন মেপে নিবে।

২১২৬. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করিবে, সে তা পুরোপুরি আয়ত্তে না এনে বিক্রি করিবে না।

২১২৭. জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (আমার পিতা) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু হারাম (রাদি.) ঋণী অবস্থায় মারা যান। পাওনাদারেরা যেন তাহাঁর কিছু ঋণ ছেড়ে দেয়, এজন্য আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে সাহায্য চাইলাম। নাবী (সাঃআঃ) তাদের কাছে কিছু ঋণ ছেড়ে দিতে বললে, তারা তা করিল না। তখন নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, যাও, তোমার প্রত্যেক ধরনের খেজুরকে আলাদা আলাদা করে রাখ, আজওয়া আলাদা এবং আযকা যায়দ আলাদা করে রাখ। পরে আমাকে খবর দিও। আমি [জাবির (রাদি.)] তা করে নাবী (সাঃআঃ)-কে খবর দিলাম। তিনি এসে খেজুরের (স্তুপ এর) উপরে বা তার মাঝখানে বসলেন। তারপর বলিলেন, পাওনাদারদের মেপে দাও। আমি তাদের মেপে দিতে লাগলাম, এমনকি তাদের পাওনা পুরোপুরি দিয়ে দিলাম। আর আমার খেজুর এরূপ থেকে গেল, যেন এ হইতে কিছুই কমেনি।

ফিরাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) শাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) তাদের এ পর্যন্ত মেপে দিতে থাকলেন যে, তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিলেন। হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ওহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছিলেন গাছ থেকে খেজুর কেটে নাও এবং পুরোপুরি আদায় করে দাও।

৩৪/৫২. অধ্যায়ঃ মেপে দেয়া পছন্দনীয়।

২১২৮. মিকদাম ইবনু মাদীকারিব (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের খাদ্য মেপে নিবে, তাতে তোমাদের জন্য বরকত হইবে।

৩৪/৫৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) সা ও মুদ-এ (দুটো নির্দিষ্ট পরিমাপ) বরকত বা কল্যাণ কামনা সম্পর্কে।

এ প্রসঙ্গে আয়েশা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে হাদীস বর্ণিত রয়েছে।

২১২৯. আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেন, ইবরাহীম (আঃ) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন ও তার জন্য দুআ করিয়াছেন। আমি মাদীনাহকে হারাম ঘোষণা করেছি, যেমন ইবরাহীম (আঃ) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন এবং আমি মাদীনাহর মুদ ও সা এর জন্য দুআ করেছি। যেমন ইবরাহীম (আঃ) মক্কার জন্য দুআ করেছিলেন।

২১৩০. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি তাদের মাপের পাত্রে বরকত দিন এবং তাদের সা ও মুদ- এ বরকত দিন অর্থাৎ মাদীনাবাসীদের।

(৬৪১৪, ৭৩৩১). (আ.প্র. ১৯৮২, ই.ফা. ১৯৯৭)

৩৪/৫৪. অধ্যায়ঃ খাদ্য শস্য বিক্রয় করা ও তা মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।

২১৩১.আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যারা অনুমানে (না মেপে) খাদ্য ক্রয় করে নিজের স্থানে পৌঁছানোর আগেই তা বিক্রি করত, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সময়ে আমি দেখেছি যে, তাদেরকে মারা হতো। (২১২৩)

(আ.প্র. ১৯৮৩, ই.ফা. ১৯৯৮)

২১৩২. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) খাদ্য (ক্রয় করে) পুরোপুরি আয়ত্বে না এনে বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন। [রাবী তাউস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,] আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করলাম, এ কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলিলেন, এ এভাবে হয়ে থাকে যে, দিরহাম এর বিনিময়ে আদান-প্রদান হয় অথচ পণ্যদ্রব্য অনুপস্থিত থাকে।

ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আয়াতে বর্ণিত ………… অর্থ যারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে বিলম্বিত করে।

(২১৩৫, মুসলিম ২১/৮, হাদীস ১৫২৫, আহমাদ ৩৩৪৬) (আ.প্র. ১৯৮৪, ই.ফা. ১৯৯৯)

২১৩৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, খাদ্য ক্রয় করে কেউ যেন তা হাতে আসার পূর্বে বিক্রি না করে। (২১২৪)

(আ.প্র. ১৯৮৫, ই.ফা. ২০০০)

২১৩৪. মালিক ইবনু আওস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ঘোষণা দিলেন যে, কে সারফ এর বেচা-কেনা (দিরহাম এর বিনিময়ে দীনার এর বেচা-কেনা) করিবে? তালহা (রাদি.) বলিলেন, আমি করব। অবশ্য আমার পক্ষের বিনিময় প্রদানে আমার হিসাবরক্ষক গাবা (এলাকা) হইতে ফিরে আসা পর্যন্ত দেরি হইবে। (বর্ণনাকারী) সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এটুকু মনে রেখেছি, এর হইতে বেশী নয়। এরপর যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মালিক ইবনু আওস (রাদি.) আমাকে বলেছেন যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.)-কে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, নগদ হাতে হাতে বিনিময় ছাড়া সোনার বদলে সোনা বিক্রি, গমের বদলে গম বিক্রি, খেজুরের বদলে খেজুর বিক্রি, যবের বদলে যব বিক্রি করা সুদ হিসাবে গণ্য।

(২১৭০, ২৭৭৪, মুসলিম ২২/১৫, হাদীস ১৫৮৬, আহমাদ ১৬২) (আ.প্র. ১৯৮৬, ই.ফা. ২০০১)

৩৪/৫৫. অধ্যায়ঃ হস্তগত হওয়ার পূর্বে খাদ্য বিক্রি করা এবং যে পণ্য নিজের কাছে নেই তা বিক্রি করা।

২১৩৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যা নিষেধ করিয়াছেন, তা হল অধিকারে আনার পূর্বে খাদ্য বিক্রয় করা। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আমি মনে করি, প্রত্যেক পণ্যের ব্যাপারে অনুরূপ নির্দেশ প্রযোজ্য হইবে। (২১৩২)

(আ.প্র. ১৯৮৭, ই.ফা. ২০০২)

২১৩৬. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, খাদ্য ক্রয় করে পুরোপুরি মেপে না নিয়ে। রাবী ইসমাঈল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আরো বলেন, খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে নিজের অধিকারে না এনে কেউ যেন তা বিক্রি না করে। (২১২৪)

(আ.প্র. ১৯৮৮, ই.ফা. ২০০৩)

৩৪/৫৬. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করলে কারো কারো মতে যতক্ষণ তা নির্দিষ্ট স্থানে না পৌঁছাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা বিক্রয় করা জায়িয নয়।

২১৩৭. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর সময়ে দেখেছি যে, লোকেরা খাদ্য আনুমানিক পরিমাণের ভিত্তিতে বেচা-কেনা করত, পরে তা সেখানেই নিজেদের ঘরে তুলে নেয়ার আগেই বিক্রি করলে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হতো। (২১২৩)

(আ.প্র. ১৯৮৯, ই.ফা. ২০০৪)

৩৪/৫৭. অধ্যায়ঃ কোন বস্তু বা জন্তু ক্রয় করার আগে বিক্রেতার নিকট তা রেখে বিক্রয় করা অথবা হস্তগত করার আগে এর মৃত্যু হওয়া।

ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, যদি বিক্রয়কালে পশু জীবিত ও যথাযথ অবস্থায় থাকে (এবং পরে তার কোন ক্ষতি হয়) তবে তা ক্রেতার মাল নষ্ট হয়েছে বলে গণ্য হইবে।

২১৩৮. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এমন দিন খুব কমই গিয়েছে, যে দিন সকালে বা বিকালে নাবী (সাঃআঃ) (আমার পিতা) আবু বকর (রাদি.)-এর ঘরে আসেন নি। যখন তাঁকে (আল্লাহ তাআলার পক্ষ হইতে) মাদীনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হল, তখন তিনি একদিন দুপুরের সময় আগমন করায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। আবু বকর (রাদি.)-কে এ সংবাদ জানানো হলে তিনি বলে উঠলেন, নাবী (সাঃআঃ) বিশেষ কোন ঘটনার কারণেই অসময়ে আগমন করিয়াছেন। যখন নাবী (সাঃআঃ) প্রবেশ করিলেন তখন তিনি আবু বকর (রাদি.)-কে বলিলেন, যারা তোমার কাছে আছে তাদের সরিয়ে দাও। আবু বকর (রাদি.) বলিলেন হে আল্লাহর রাসুল! এরা তো আমার দুই কন্যা আয়েশা ও আসমা। তিনি বলিলেন, তুমি কি জান আমাকে তো বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে? আপনার সফরসঙ্গী হওয়া আমার কাম্য হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তুমি আমার সফরসঙ্গী হইবে। আবু বকর (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে দুটি উটনী রয়েছে, যা আমি হিজরতের জন্য প্রস্তুত রেখেছি। এর একটি আপনি গ্রহণ করুন। তিনি বলিলেন, আমি মূল্যের বিনিময়ে তা গ্রহণ করলাম। (৪৭৬)

(আ.প্র. ১৯৯০, ই.ফা. ২০০৫)

হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়

৩৪/৫৮. অধ্যায়ঃ কেউ যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে, এবং তার দাম দস্তুর করার উপর দর-দাম না করে যতক্ষণ না সে অনুমতি প্রদান করে বা ছেড়ে দেয়।

২১৩৯. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয় না করে।

(২১৬৫, ৫১৫২, মুসলিম ১৬/৫, হাদীস ১৪১২, আহমাদ ৪৭২২) (আ.প্র. ১৯৯১, ই.ফা. ২০০৬)

২১৪০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসী কর্তৃক বিক্রয় করা হইতে নিষেধ করিয়াছেন এবং তোমরা প্রতারণামূলক দালালী করিবে না। কোন ব্যক্তি যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে। [৮] কেউ যেন তার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়। কোন মহিলা যেন তার বোনের (সতীনের) তালাকের দাবী না করে, যাতে সে তার পাত্রে যা কিছু আছে, তা নিজেই নিয়ে নেয়। (অর্থাৎ বর্তমান স্ত্রীর হক নষ্ট করে নিজে তা ভোগ করার জন্য)

(২১৪৮, ২১৫০, ২১৫১, ২১৬০, ২১৬২, ২৭২৩, ২৭২৭, ৫১৪৪, ৫১৫২, ৬৬০১, মুসলিম ২১/৪, হাদীস ১৫১৫, আহমাদ ৯৫২৩) (আ.প্র. ১৯৯২, ই.ফা. ২০০৭)

[৮] শহরবাসী যেন গ্রাম্য লোককে ঠকিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে গ্রাম্য লোকের পক্ষে পণ্য বিক্রয় না করে। নিজের প্রাপ্য অংশ বৃদ্ধি করে অধিক সুখ সুবিধা ভোগ করার উদ্দেশ্যে কোন নারী যেন তার সতীনকে তালাক দেয়ার জন্য স্বামীকে উদ্বুদ্ধ না করে।

৩৪/৫৯. অধ্যায়ঃ নিলাম ডাকে কেনা-বেচা

আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি লোকেদের (সাহাবায়ে কিরামকে) দেখেছি যে, তারা গণীমতের মাল অধিক মূল্য দানকারীর কাছে বিক্রি করাতে দোষ মনে করিতেন না।

২১৪১. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি তার মৃত্যুর পরে তার গোলাম আযাদ হইবে বলে ঘোষণা দিল। তারপর সে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ল। নাবী (সাঃআঃ) গোলামটিকে নিয়ে নিলেন এবং বলিলেন, কে একে আমার নিকট হইতে ক্রয় করিবে? নুআঈম ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) (তাহাঁর কাছ হইতে) সেটি এত এত মূল্যে ক্রয় করিলেন। তিনি গোলামটি তার হাওয়ালা করে দিলেন।

(২২৩০, ২২৩১, ২৪০৩, ২৫১৫, ২৫৩৪, ২৭১৬, ২৯৪৭, ৭১৮৬, মুসলিম ১২/১৩, হাদীস ৯৯৭, আহমাদ ১৪২৭৭) (আ.প্র. ১৯৯৩, ই.ফা. ২০০৮)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply