বাংলা নামাজ শিখা – ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা, আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা

বাংলা নামাজ শিখা – ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা, আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা

বাংলা নামাজ শিখা – ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা, আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১-২৬)=২৬টি

১. অনুচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] হইতে নামাযের ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা
২. অনুচ্ছেদঃ ঐ সম্পর্কেই
৩. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয় সম্পর্কিত
৪. অনুচ্ছেদঃ ফযরের নামাজ অন্ধকার থাকতেই আদায় করা
৫. অনুচ্ছেদঃ ফযরের নামাজ অন্ধকার বিদূরিত করে আদায় করা
৬. অনুচ্ছেদঃ যুহরের নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করা
৭. অনুচ্ছেদঃ অধিক গরমের সময় যুহরের নামাজ দেরিতে আদায় করা
৮. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাজ শীঘ্রই আদায় করা
৯. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা
১০. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের ওয়াক্ত সম্পর্কে
১১. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের ওয়াক্ত
১২. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাজ দেরি করে আদায় করা
১৩. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাজের পূর্বে শোয়া এবং নামাজ আদায়ের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ
১৪. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের পর কথাবার্তা বলার অনুমতি সম্পর্কে
১৫. অনুচ্ছেদঃ প্রথম ওয়াক্তের ফাযিলত
১৬. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাযের ওয়াক্ত ভুলে যাওয়া সম্পর্কে
১৭. অনুচ্ছেদঃ ঈমাম যদি বিলম্বে নামাজ আদায় করে তবে মুক্তাদীদের তা প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা সম্পর্কে
১৮. অনুচ্ছেদঃ নামাজ আদায় না করে শুয়ে থাকা
১৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে গেছে
২০. অনুচ্ছেদঃ যার একাধারে কয়েক ওয়াক্তের নামাজ ছুটে গেছে সে কোন ওয়াক্ত থেকে শুরু করিবে
২১. অনুচ্ছেদঃ মধ্যবর্তী নামাজ আসরের নামাজ। তা যুহরের নামাজ বলেও কথিত আছে
২২. অনুচ্ছেদঃ আসর ও ফযরের নামাযের পর অন্য কোন নামাজ আদায় করা মাকরূহ
২৩. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাযের পর অন্য নামাজ আদায় প্রসঙ্গে
২৪. অনুচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাযের পূর্বে নফল নামাজ আদায় করা
২৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের এক রাকআত নামাজ পেয়েছে
২৬. অনুচ্ছেদঃ মুক্বীম অবস্থায় দুই ওয়াক্তের নামাজ এক সাথে আদায় করা

১. অনুচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] হইতে নামাযের ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা

১৪৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ জিবরাইল [আঃ] কাবা শরীফের চত্বরে দুবার আমার নামাযে ঈমামতি করিয়াছেন। তিনি প্রথমবার যুহরের নামাজ আদায় করালেন যখন প্রতিটি জিনিসের ছায়া জুতার ফিতার মত ছিল। অতঃপর তিনি আসরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার সমান ছিল। অতঃপর মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন যখন র্সূয ডুবে গেল এবং যে সময়ে রোযাদার ইফতার করে। অতঃপর ইশার নামাজ আদায় করালেন যখন লাল বর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। অতঃপর ফযরের নামাজ আদায় করালেন যখন ভোর বিদ্যুতের মত আলোকিত হল এবং যে সময় রোযাদারের উপর পানাহার হারাম হয়। তিনি [জিবরাইল] দ্বিতীয় দিন যুহরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার সমান হল এবং পূর্ববর্তী দিন ঠিক যে সময় আসরের নামাজ আদায় করেছিলেন। অতঃপর আসরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোন বস্তুর ছায়া তার দ্বিগুণ হল। অতঃপর মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন পূর্বের দিনের সময়ে। অতঃপর ইশার নামাজ আদায় করালেন যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ চলে গেল এবং ফযরের নামাজ আদায় করালেন যখন যমিন আলোকিত হয়ে গেল। অতঃপর জিবরাইল [আঃ] আমার দিকে তাকিয়ে বলিলেন, হে মুহাম্মাদ! এটাই হল আপনার পূর্ববতী নাবীদের [নামাযের] ওয়াক্ত। নামাযের ওয়াক্ত এই দুই সীমার মাঝখানে।

হাসান সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[৫৮৩], ইরওয়া হাদীস নং-[২৪৯], সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪১৬]। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, বুরাইদা, আবু মূসা, আবু মাসউদ, আবু সাঈদ, জাবির, আমর ইবনি হাযাম, বারাআ ও আনাস [রাদি.] হইতেও বর্ণনাকৃত হাদীস রয়েছে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৫০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জিবরাইল [আঃ] আমার ঈমামতি করিলেন, হাদীসের অবশিষ্ট বর্ণনা ইবনি আব্বাসের হাদীসের মত। তবে এ হাদীসে আসরের নামাজ সম্পর্কে “গতকাল” শব্দটির উল্লেখ নেই।

সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[২৫০], সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪১৮]। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২. অনুচ্ছেদঃ ঐ সম্পর্কেই

১৫১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নামাযের ওয়াক্তের শুরু ও শেষ সীমা রয়েছে। যুহরের নামাযের শুরুর সময় হচ্ছে যখন [সূর্য পশ্চিম দিকে] ঢলতে শুরু করে এবং শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়া। আসরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে যখন আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করে [যুহরের শেষ সময়] এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন সূর্যের আলো হলুদ রং ধারণ করে। মাগরিবের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক চলে যায়। ইশার প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক বিলীন হয়ে যায়, আর তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন অর্ধেক রাত চলে যায়।

ফযরের নামাযের প্রথম ওয়াক্ত যখন ভোর শুরু হয় এবং তার ওয়াক্ত শেষ হয় যখন সূর্য উঠা শুরু হয়। সহিহ। আস্-সহীহাহ্-[১৬৯৬]। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, আমি মুহাম্মাদকে বলিতে শুনিয়াছি, নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে মুজাহিদ হইতে আমাশের সূত্রে বর্ণনাকৃত হাদীসটি আমাশ হইতে মুহাম্মাদ ইবনি ফুযাইলের সূত্রে বর্ণিত হাদীসের চেয়ে বেশি সহীহ। কেননা মুহাম্মাদ ইবনি ফুযাইল রাবীদের সনদের ধারা বর্ণনায় ত্রুটি করিয়াছেন। মুজাহিদ [রঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কথিত আছে যে, নামাযের ওয়াক্তের শুরু এবং শেষ প্রান্ত রয়েছে। এ হাদীসটি অর্থ ও বিষয়বস্তুর দিক হইতে মুহাম্মাদ ইবনি ফুযাইল হইতে আমাশের সূত্রে বর্ণিত হাদীসের মতই। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয় সম্পর্কিত

১৫২. সুলাইমান ইবনি বুরাইদা [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [বুরাইদা] বলেন, এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ নাবী আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে তাঁকে নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করিল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা চান তো তুমি আমাদের সংগে থাক। তিনি বিলাল [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন এবং সে অনুযায়ী তিনি ভোর [সুবহি সদিক] উদয় হলে ফযরের নামাযের ইক্বামাত দিলেন। তিনি আবার নির্দেশ দিলেন এবং সূর্য ঢলে গেলে তিনি [বিলাল] ইক্বামাত দিলেন। অতঃপর তিনি যুহরের নামাজ আদায় করালেন। তিনি আবার নির্দেশ দিলে বিলাল ইক্বামাত দিলেন। তখন সূর্য অনেক উপরে ছিল এবং আলোক উদ্ভাসিত ছিল। অতঃপর তিনি আসরের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি তাকে মাগরিবের নামাযের ইক্বামাত দেয়ার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি তাকে ইশার নামাযের [ইক্বামাতের] নির্দেশ দিলেন। শাফাক অদৃশ্য হলে তিনি ইক্বামাত দিলেন। পরবর্তী সকালে তিনি তাকে [ইকামাতের] নির্দেশ দিলেন। ভোর খুব পরিষ্কার হওয়ার পর তিনি ফযরের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তাকে যুহরের নামাযের [ইক্বামাতের] নির্দেশ দিলেন এবং [সূর্যের তাপ] যথেষ্ট ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত দেরি করে নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি তাকে আসরের নামাযের নির্দেশ দিলেন, সে অনুযায়ী তিনি [বিলাল] সূর্য শেষ সীমায় এবং পূর্ব দিনের চেয়ে অনেক নীচে নেমে আসলে ইক্বামাত দিলেন {অতঃপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের নামাজ আদায় করালেন}।

অতঃপর তিনি তাকে [ইকামাতের] নির্দেশ দিলেন এবং শাফাক অদৃশ্য হওয়ার সামান্য পূর্বে মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তাকে ইশার নামাযের ইক্বামাত দেয়ার নির্দেশ দিলেন এবং সে অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশ রাত চলে যাবার পর ইক্বামাত দিলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বলিল, আমি। তিনি বললেনঃ নামাযের সময় এই দুই সীমার মাঝখানে। সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৬৭], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন; হাদীসটি হাসান, গারীব সহীহ। শুবাও এ হাদীসটি আলক্বামাহ্ ইবনি মারসাদ হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪. অনুচ্ছেদঃ ফযরের নামাজ অন্ধকার থাকতেই আদায় করা

১৫৩. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ ফযরের নামাজ আদায় করিতেন, অতঃপর মহিলারা ফিরে আসতেন। আনসারীর বর্ণনায় আছে-মহিলারা নিজেদের চাদর মুড়িয়ে চলে যেতেন এবং অন্ধকারের মধ্যে তাহাদের চেনা যেত না। কুতাইবার বর্ণনায় [মুতালাফফিফাতিন শব্দের স্থলে] মুতালাফফিআতিন শব্দ রয়েছে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৬৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, আনাস ও ক্বাইলা বিনতু মাখরামা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। যুহরী হাদীসটি উরওয়া হইতে তিনি আয়িশাহ্‌ হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। কিছু সাহাবা যেমন, আবু বাকার ও ঊমার [রাদি.] এবং তাহাদের পরবর্তীগণ অন্ধকার থাকতেই ফযরের নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব বলেছেন। ঈমাম শাফি, আহামদ ও ইসহাক একই মত ব্যক্ত করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫. অনুচ্ছেদঃ ফযরের নামাজ অন্ধকার বিদূরিত করে আদায় করা

১৫৪. রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাঃআঃকে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা ফযরের নামাজ [ভোরের অন্ধকার] ফর্সা করে আদায় কর। কেননা তাতে অনেক সাওয়াব রয়েছে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ -[৬৭২]। শুবা ও সুফিয়ান সাওরী মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাকের সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। মুহাম্মাদ ইবনি আজলান ও আসিম ইবনি ঊমারের সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। এ অনুচ্ছেদে আবু বারযা, জাবির এবং বিলাল [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ। রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর একাধিক বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাবিঈন অন্ধকার চলে যাওয়ার পর ফযরের নামাজ আদায়ের পক্ষে মত দিয়েছেন। সুফিয়ান সাওরী এ মত গ্রহন করিয়াছেন। ঈমাম শাফি, আহমাদ এবং ইসহাক বলেছেন, [অন্ধকার] ফর্সা হওয়ার অর্থ হচ্ছে- সন্দেহাতীতরূপে ভোর হওয়া। কিন্তু ফর্সা হওয়ার অর্থ এই নয় যে, নামাজ দেরী করে আদায় করিতে হইবে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬. অনুচ্ছেদঃ যুহরের নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করা

১৫৫. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাকার ও উমার [রাদি.]-এর তুলনায় অন্য কাউকে আমি যুহরের নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করিতে দেখিনি [ওয়াক্ত শুরু হলেই তাঁরা নামাজ আদায় করে নিতেন]।

সনদ দূর্বল।এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি আবদিল্লাহ, খাব্বাব,আবু বারযা, ইবনি মাসউদ, যাইদ ইবনি সাবিত, আনাস ও জাবির ইবনি সামূরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, আইশা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান। সাহাবায়ে কিরাম ও তাহাদের পরবর্তী বিদ্বানগন আওয়াল [প্রথম] ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ বলেছেন, হাকীম ইবনি জুবাইর [রঃ] ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীস, “প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি মানুষের নিকট প্রার্থনা করে।”

বর্ণনা করার প্রেক্ষিতে শুবাহ্ তাহাঁর [হাকীমের] সমালোচনা করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি মুঈন বলেন, সুফইয়ান এবং যায়িদাহ্ তাহাঁর [হাকীম] নিকট হইতে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি মুঈন তাহাঁর [হাকীম] বর্ণিত হাদীসে কোন ত্রুটি আছে বলে মনে করেন না। মুহাম্মদ [বুখারী] বলেনঃ যুহরের নামাজ আওয়াল ওয়াক্তে আদায় করা সম্পর্কিত আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীসটি হাকীম ইবনি জুবাইর সাঈদ ইবনি জুবাইরের সূত্রেও বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৫৬. আনাস ইবনি মালিক হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ সাঃআঃ সূর্য ঢলে পড়লে যুহরের নামাজ আদায় করিয়াছেন।

সহিহ। বুখারী। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি সহীহ। এ অনুচ্ছেদে এ হাদীসটি সর্বোত্তম। এ অনুচ্ছেদে জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭. অনুচ্ছেদঃ অধিক গরমের সময় যুহরের নামাজ দেরিতে আদায় করা

১৫৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন [সূর্যের] উত্তাপ বেড়ে যায়, তখন তোমরা ঠান্ডা করে নামাজ আদায় কর [বিলম্ব করে নামাজ আদায় কর]। কেননা প্রচন্ড উত্তাপ জাহান্নামের নিঃশ্বাস হইতে হয়।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৭৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ, আবু যার, ইবনি উমার, মুগীরা, কাসিম ইবনি সাফওয়ান তাহাঁর পিতার সূত্রে, আবু মূসা, ইবনি আব্বাস ও আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে উমার [রাদি.]-এর একটি বর্ণনাও রয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনাটি সহীহ নয়। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।

বিশেষজ্ঞদের একদল গরমের মৌসুমে যুহরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। ইবনিল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এই মতের সমর্থক। ঈমাম শাফি বলেন, লোকেরা যখন দূরদূরান্ত হইতে মসজিদে আসে তখন যুহরের নামাজ ঠান্ডার সময় আদায় করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু যে ব্যক্তি একাকী নামাজ আদায় করে অথবা নিজের গোত্রের মসজিদে নামাজ আদায় করে-খুব গরমের সময়েও আমি তার জন্য প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা উত্তম মনে করি। আবু ঈসা বলেনঃ অত্যধিক গরমের সময়ে যারা বিলম্বে যুহরের নামাজ আদায়ের কথা বলেন, তাহাদের মত অনুসরণযোগ্য। কিন্তু আবু যার [রাদি.]-এর হাদীস ঈমাম শাফির বক্তব্যের [দূর হইতে আসা মুসল্লীর কারণে যুহরের নামাজ ঠান্ডার সময়ে আদায়ের নির্দেশ রয়েছে, কেননা তাতে তাহাদের কষ্ট কম হইবে] পরিপন্থি। আবু যার [রাদি.] বলেনঃ “আমরা কোন এক সফরে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। বিলাল [রাদি.] যুহরের নামাজের আযান দিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে বিলাল! শীতল কর [গরমের তীব্রতা কমতে দাও]। তারপর শীতল করা হল [বিলম্বে নামাজ আদায় করা হল]”।

ঈমাম শাফির বক্তব্য অনুযায়ী শীতল করার অর্থ যদি তাই হত তবে এ সময়ে শীতল করার কোন অর্থই হয় না। কেননা সফরের অবস্থায় সবাই একই স্থানে সমবেত ছিল, দূর হইতে কারো আসার কোন প্রশ্নই ছিল না। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫৮. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক সফরে ছিলেন। বিলাল [রাদি.]-ও তাহাঁর সাথে ছিলেন। তিনি ইক্বামাত দিতে চাইলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “যুহরকে শীতল কর”। আবু যার [রাদি.] বলেন, বিলাল [রাদি.] আবার ইক্বামাত দিতে চাইলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যুহরের নামাজ আরও শীতল করে আদায় কর। আবু যার [রাদি.] বলেন, এমনকি আমরা যখন বালির স্তূপের ছায়া দেখিতে পেলাম তখন তিনি ইক্বামাত দিলেন এবং রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাস। তোমরা শীতল করে [রোদের তাপ কমলে] নামাজ আদায় কর”।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪২৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাজ শীঘ্রই আদায় করা

১৫৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [একদিন] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের নামাজ আদায় করালেন, তখনও সূর্যের কিরণ তার [আয়েশা] ঘরের মধ্যে ছিল এবং ছায়াও [দীর্ঘ না হওয়ার ফলে] তার ঘরের বাইরে যায়নি।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৮৩]। এ অনুচ্ছেদে আনাস, আবু আরওয়া, জাবির ও রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। রাফি [রাদি.] হইতে আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা সম্পর্কিত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনাটি সহীহ নয়। আবু ঈসা বলেনঃ আয়েশা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ।

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কিছু বিশেষজ্ঞ সাহাবা আসরের নামাজ শীঘ্রই [প্রথম ওয়াক্তে] আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উমার, আবদুল্লাহ্ ইবনি মাসউদ, আয়েশা ও আনাস [রাদি.]। একাধিক তাবিঈও এ মত গ্রহণ করিয়াছেন এবং দেরিতে আসরের নামাজ আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একথা বলেছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬০. আলা ইবনি আবদুর রহমান [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বসরায় আনাস [রাদি.]-এর বাড়িতে আসলেন। তিনি তখন যুহরের নামাজ আদায় করে বাসায় ফিরে এসেছেন। তাহাঁর ঘরটি মসজিদের পাশেই ছিল। তিনি [আনাস] বলিলেন, উঠো এবং আসরের নামাজ আদায় কর। আলা বলেন, আমরা উঠে গিয়ে আসরের নামাজ আদায় করলাম। আমরা যখন নামাজ শেষ করলাম তখন তিনি বলিলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ এটা মুনাফিকের নামাজ-যে বসে বসে সূর্যের অপেক্ষা করিতে থাকে, যখন সূর্য শাইতানের শিং এর মাঝখানে এসে যায় তখন উঠে চারটি ঠোকর মারে এবং তাতে আল্লাহ্ তাআলাকে খুব কমই স্মরণ করে।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪২০], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা

১৬১. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহরের নামাজ তোমাদের চেয়ে বেশি তাড়াতাড়ি [প্রথম ওয়াক্তে] আদায় করিতেন। আর তোমরা আসরের নামাজ তাহাঁর চেয়ে অধিক সকালে আদায় কর।

সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[৬১৯৫] দ্বিতীয় তাহক্বীক্ব। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি ইসমাঈল ইবনি উলাইয়্যা-ইবনি জুরাইজ হইতে, ইবনি আবী মুলাইকার সূত্রে উম্মু সালমাহ্ হইতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬২. আলী ইবনি হুজর হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম তিরমিযী বলেনঃ আমি আমার গ্রন্থে এটি লেখা পেয়েছি যে, আলী ইবনি হুজর, ইসমাঈল ইবনি ইবরাহীম হইতে, তিনি ইবনি জুরাইজের সূত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৩. বিশর ইবনি মুআয হইতে বর্ণীতঃ

বিশর ইবনি মুআয, ইসমাঈল ইবনি উলাইয়্যা হইতে ইবনি জুরাইজের সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

আর এই বর্ণনাটি অধিক সহিহ। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের ওয়াক্ত সম্পর্কে

১৬৪. সালামাহ্ ইবনিল আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন সূর্য ডুবে পর্দার অন্তরালে চলে যেত তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাগরিবের নামাজ আদায় করিতেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৮৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে জাবির, সুনাবিহী, যাইদ ইবনি খালিদ, আনাস, রাফি ইবনি খাদীজ, আবু আইউব, উম্মু হাবীবা, আব্বাস ইবনি আব্দুল মুত্তালিব ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আব্বাস [রাদি.]-এর হাদীসটি মাওকূফ হিসাবেও বর্ণিত হয়েছে এবং এটাই বেশি সহীহ। সুনাবিহী নাবী [সাঃআঃ] হইতে হাদীস শুনেননি, তিনি আবু বাকার [রাদি.]-এর সাথী।

আবু ঈসা বলেনঃ সালামাহ্ ইবনিল আকওয়া [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা এবং তাহাদের পরবর্তীগণ মাগরিবের নামাজ সকাল সকাল [সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে] আদায় করা পছন্দ করিতেন এবং দেরি করা মাকরূহ মনে করিতেন। কোন কোন বিদ্বান এরূপ পর্যন্ত বলেছেন যে, মাগরিবের নামাযের জন্য একটি মাত্র ওয়াক্ত নির্ধারিত।

তাঁরা জিবরীলের ঈমামতিতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজ আদায় করা সম্পর্কিত হাদীসের উপর আমল করিয়াছেন। ইবনিল মুবারাক ও শাফিঈ এ মত ব্যক্ত করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের ওয়াক্ত

১৬৫. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি অন্যদের তুলনায় এ [ইশার] নামাজের ওয়াক্ত সম্পর্কে বেশী ভাল জানি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তৃতীয়ার চাঁদ অস্ত গেলে এ নামাজ আদায় করিতেন।

সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[৬১৩], সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪৪৫]। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৬. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ হাদীসটি নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে মুহাম্মাদ ইবনি আবান, আব্দুর রহমান ইবনি মাহদীর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হুশাইম বর্ণনা করিয়াছেন আবু বিশর হইতে, তিনি হাবীব ইবনি সালিম হইতে তিনি নুমান ইবনি বাশীর হইতে। হুশাইম তার বর্ণনায় বাশীর ইবনি সাবিতের উল্লেখ করেননি। আমাদের মতে আবু আওয়ানার সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি সর্বাধিক সহীহ। কেননা ইয়াযীদ ইবনি হারুন শুবা হইতে, তিনি আবু বিশর হইতে আবু আওয়ানার অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১২. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাজ দেরি করে আদায় করা

১৬৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি আমি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হইবে বলে মনে না করতাম তাহলে তাহাদেরকে ইশার নামাজ রাতের এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধরাত পর্যন্ত দেরি করে আদায়ের নির্দেশ দিতাম।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৯১]। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি সামুরা, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ, আবু বারযা, ইবনি আব্বাস, আবু সাঈদ খুদরী, যাইদ ইবনি খালিদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। বেশিরভাগ সাহাবা, তাবিঈন ও তাবা-তাবিঈন ইশার নামাজ দেরিতে আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক এ অভিমত গ্রহণ করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৩. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাজের পূর্বে শোয়া এবং নামাজ আদায়ের পর কথাবার্তা বলা মাকরূহ

১৬৮. আবু বারযা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ইশার নামাযের আগে ঘুমানো এবং নামাযের পর আলাপচারিতা করা অপছন্দ করিতেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭০১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আয়েশা আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু বারযা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। বিদ্বানদের একদল ইশার নামাযের আগে ঘুমানো এবং নামাজের পরে আলাপচারিতা করা মাকরূহ বলেছেন এবং অপর দল অনুমতি দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেছেন, বেশিরভাগ হাদীস মাকরূহ মতের পক্ষে। কিছু ব্যক্তি রমজান মাসে ইশার নামাযের আগে ঘুমানোর অনুমতি দিয়েছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের পর কথাবার্তা বলার অনুমতি সম্পর্কে

১৬৯. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের বেলা আবু বাকার [রাদি.]-এর সাথে মুসলমানদের স্বার্থ সম্পর্কিত ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করিতেন। আমিও তাঁদের সাথে থাকতাম।

সহিহ। সহীহাহ্‌ [২৭৮১]। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আওস ইবনি হুযাইফা ও ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উমার [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান। হাদীসটি উমার [রাদি.]-এর নিকট হইতে আরো একটি সূত্রে একটু দীর্ঘ ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। ইশার নামাযের পর কথাবার্তা বলার ব্যাপারে সাহাবা, তাবিঈন ও পরবর্তী যুগের আলিমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। একদল এটাকে মাকরূহ বলেছেন। অপর দলের মতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোচনা ও অতি প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলার অনুমতি রয়েছে। [তিরমিযী বলেন] বেশিরভাগ হাদীস হইতে অনুমতির কথাই প্রমাণিত হয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “নামাজী এবং মুসাফির ব্যতীত কারো জন্য ইশার নামাযের পর কথাবার্তা বলা জায়েয নেই”। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫. অনুচ্ছেদঃ প্রথম ওয়াক্তের ফাযিলত

১৭০. কাসিম ইবনি গান্নাম [রঃ] হইতে তাহাঁর ফুফু ফারওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকটে বাইআত গ্রহণকারিণীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হল, কোন কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বলিলেন, আওয়াল [প্রথম] ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা।

সহিহ। সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৪৫২], মিশকাত-হাদীস নং-[৬০৭]। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭১. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ হে আলী! তিনটি ব্যাপারে দেরি করো নাঃ নামাজ-যখন তার ওয়াক্ত আসে, জানাযা-যখন উপস্থিত হয় এবং বিবাহযোগ্য নারী যখন তুমি তার উপযুক্ত [পাত্র] পাও।

যঈফ, মিশকাত ৬০৫ আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৭২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নামাযের প্রথম সময়ে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ, আর শেষ সময়ে রয়েছে মার্জনা লাভের সুযোগ।

মাওযূ, ইরওয়া ২৫৯, মিশকাত ৬০৬ আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব। ইবনি আব্বাসও নাবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। এ অনুচ্ছেদে আলী, ইবনি উমার, আয়েশা ও ইবনি মাসউদ [রাঃ] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন ঃ উম্মু ফারওয়া [রাঃ]-এর হাদীসটি আবদুল্লাহ ইবনি উমার আল-উমারী ছাড়া আর কেউ বর্ণনা করেননি। অথচ তিনি [আবদুল্লাহ] হাদীস বিশারদদের মতে শক্তিশালী রাবী নন, যদিও তিনি সত্যবাদী। তাহাদের মতে তিনি এ হাদীসের সনদে গোলমাল করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ তাহাঁর স্মরণশক্তির সমালোচনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস

১৭৩. আবু আমর আশ-শাইবানী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি ইবনি মাসউদ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিল, কোন কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বলিলেন, আমি এ বিষয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ নির্দিষ্ট ওয়াক্তসমূহে নামাজ আদায় করা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরপর কোন কাজটি সবচেয়ে ভাল? তিনি বললেনঃ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলার রাস্তায় জিহাদ করা।

সহিহ। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। মাসঊদী, শুবা এবং সুলাইমান [আবু ইসহাক শাইবানী] এবং আরো অনেকে এই হাদীসটি ওয়ালিদ ইবনি আইযারের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুবার কোন নামাজ শেষ ওয়াক্তে আদায় করেননি। এমনকি এ অবস্থায় আল্লাহ তাআলা তাঁকে তুলে নেন।

হাসান। মিশকাত-হাদীস নং-[৬০৮]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আর হাদীসের সনদ মুত্তাসিল [পরস্পর সংযোজিত] নয়। ঈমাম শাফি বলেন, প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা খুবই ভাল। কারণ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাকার ও উমার [রাদি.] প্রথম ওয়াক্তেই নামাজ আদায় করিতেন। তা হইতে প্রমাণিত হয় যে, ওয়াক্তের শেষ সময়ের উপর প্রথম সময়ের ফাযীলাত রয়েছে। বেশি ফাযীলাতের জিনিসই তাঁরা গ্রহণ করিতেন, তাঁরা ফাযীলাতপূর্ণ কাজ ছেড়ে দেননি। প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করাই ছিল তাহাদের আমল। ঈমাম তিরমিযী বলেনঃ আবুল ওয়ালীদ মাক্কী এই উদ্বৃতিটি ঈমাম শাফি হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

১৬. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাযের ওয়াক্ত ভুলে যাওয়া সম্পর্কে

১৭৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তির আসরের নামাজ ছুটে গেল, [তার অবস্থা এরূপ] যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধন সম্পদ সবকিছু লুন্ঠিত হল।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৮৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা ও নাওফাল ইবনি মুআবিয়া [রাদি.]-এর হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ। ঈমাম যুহরীও এ হাদীসটি তাহাঁর সনদ পরম্পরায় ইবনি উমার [রাদি.] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭. অনুচ্ছেদঃ ঈমাম যদি বিলম্বে নামাজ আদায় করে তবে মুক্তাদীদের তা প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা সম্পর্কে

১৭৬. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আবু যার! আমার পর এমন সব আমীর [রাষ্ট্রপ্রধান] ক্ষমতায় আসবে যারা নামাজকে হত্যা করে ফেলবে। অতএব তুমি সময়মত [আওয়াল ওয়াক্তে] নামাজ আদায় করে নিও। যদি তুমি নির্ধারিত সময়ে নামাজ [একাকি] আদায় করে নাও তাহলে পরে ইমামের সাথে আদায় করা নামাজ তোমার জন্য নফল হিসাবে ধরা হইবে। পরে তুমি যদি ইমামের সাথে আবার নামাজ না আদায় কর তাহলে তুমি নিজের নামাযের হিফাজাত করলে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২৫৬], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ ও উবাদা ইবনিস সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে, আবু ঈসা বলেনঃ আবু যার [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান। ঈমাম যদি নামাজ আদায়ে দেরি করে, তাহলে যে কোন ব্যক্তি একা নামাজ আদায় করে নেবে। অতঃপর ইমামের সাথে আবার তা আদায় করিবে। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে প্রথমের নামাজ ফরয হিসাবে বিবেচ্য হইবে। আবু ইমরান আলজাওনীর নাম আব্দুল মালিক ইবনি হাবীব।বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮. অনুচ্ছেদঃ নামাজ আদায় না করে শুয়ে থাকা

১৭৭. আবু কাতাদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নামাযের কথা ভুলে গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা সম্পর্কে প্রশ্ন করিল। তিনি বললেনঃ ঘুমন্ত ব্যক্তির কোন অপরাধ নেই, জেগে থাকা অবস্থায় দোষ হইবে। যখন তোমাদের কেউ নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা তা আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে মনে পড়ার সাথে সাথে নামাজ পড়ে নেবে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ–[৬৯৮], মুসলিম, অনুরূপ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসউদ, আবু মারইয়াম, ইমরান ইবনি হুসাইন, জুবাইর ইবনি মুতইম, আবু জুহাইফা, আমর ইবনি ঊমায়্যা ও যি-মিখবার [রাদি.] [তাঁকে যিমিখমারও বলা হয়ে থাকে আর তিনি হলেন নাজ্জাশীর ভাতিজা] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু কাতাদার হাদীসটি হাসান সহীহ। যদি কোন ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমে অচেতন থাকে, অতঃপর এমন সময় তার নামাযের কথা মনে হয় অথবা ঘুম ভাংগে যখন নামাযের ওয়াক্ত চলে গেছে, অথবা সূর্য উঠছে কিংবা ডুবছে-এরূপ অবস্থায় সে নামাজ আদায় করিবে কি-না সে সম্পর্কে বিদ্বানদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ঈমাম আহমাদ, ইসহাক, শাফিঈ এবং মালিক [রঃ] বলেছেন, এরূপ ক্ষেত্রে সে নামাজ আদায় করে নেবে, চাই সেটা সূর্যোদয় অথবা ডুবে যাবার সময় হোক না কেন। অপর দলের মতে, সূর্যোদয় বা অস্ত যাওয়ার সময় নামাজ আদায় করিবে না, উদয় বা অস্ত শেষ হলেই নামাজ আদায় করিবে।বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে গেছে

১৭৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাজ আদায়ের কথা ভুলে গেছে সে যেন [নামাযের কথা] মনে হওয়ার সাথে সাথেই তা আদায় করে নেয়।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৯৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।.এ অনুচ্ছেদে সামুরা [রাদি.] ও আবু কাতাদা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে, আবু ঈসা বলেনঃ আনাস [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে গেছে, মনে মনে হওয়ার সাথে সাথে সে তা আদায় করে নেবে, চাই নামাযের ওয়াক্ত থাক বা না থাক”। ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহন করিয়াছেন। আবু বাকরাহ [রাদি.] প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, “একবার তিনি ঘুমের ঘোরে আসরের নামাযের ওয়াক্ত কাটিয়ে দিলেন, এমনকি সূর্য ডুবার সময় তিনি জেগে উঠলেন। অতঃপর সূর্যাস্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নামাজ আদায় করিলেন না।” কুফার আলিমগন [আবু হানীফা ও তাহাঁর মতানুসারীগন] এই মত গ্রহণ করিয়াছেন। [তিরমিযী বলেন] কিন্তু আমাদের সঙ্গীরা আলী [রাদি.]-এর মত গ্রহণ করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০. অনুচ্ছেদঃ যার একাধারে কয়েক ওয়াক্তের নামাজ ছুটে গেছে সে কোন ওয়াক্ত থেকে শুরু করিবে

১৭৯. আবু উবাইদা ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেছেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন মুশরিকরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে [লড়াইয়ে বিব্রত করে] চার ওয়াক্ত নামাজ হইতে নিবৃত্ত রাখে। পরিশেষে আল্লাহর ইচ্ছাই যখন কিছু রাত চলে গেল তখন তিনি বিলাল কে আযান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি আযান দিলেন এবং ইক্বামাত বলিলেন৷ তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] যুহরের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি আসরের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি ইশার নামাজ আদায় করালেন।

হাসান, ইরওয়া হাদীস নং-[১/২৫৭]। এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ ও জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর হাদীসের সনদের মধ্যে কোন ত্রুটি নেই। কিন্তু আবু উবাইদা  আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর নিকট কিছু শুনেননি। এ হাদীসের ভিত্তিতে এক দল বিদ্বান বলেছেন, এক সাথে কয়েক ওয়াক্ত নামাজ ছুটে গেলে তার কাযা করার সময় প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৃথকভাবে ইক্বামত দিবে, তবে ইক্বামত না দিলেও চলে। ঈমাম শাফি এ মত গ্রহণ করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

১৮০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খন্দকের যুদ্ধের দিন উমার [রাদি.] কুরাইশ কাফিরদের গালি দিতে দিতে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সূর্য ডুবে গেল অথচ আসরের নামাজ আদায় করার সুযোগ পেলামনা। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করার সুযোগ পাইনি। ঊমার [রাদি.] বলিলেন, আমরা বুতহান নামক উপত্যকায় গিয়ে নামলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ওযূ করিলেন, আমরাও অযূ করলাম। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের নামাজ আদায় করিলেন, এরপর মাগরিবের নামাজ আদায় করিলেন।

সহীহ্‌-বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১. অনুচ্ছেদঃ মধ্যবর্তী নামাজ আসরের নামাজ। তা যুহরের নামাজ বলেও কথিত আছে

১৮১. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মধ্যবর্তী নামাজ হচ্ছে আসরের নামাজ।

সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[৬৩৪], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮২. সামুরা ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মধ্যবর্তী নামাজ হল আসরের নামাজ।

সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[৬৩৪], মুসলিম। আবু মূসা মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না কুরাইশ ইবনি আনাস হইতে, তিনি হাবীব ইবনি আনাস হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি [হাবীব] বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন আমাকে বললেনঃ তুমি হাসানকে জিজ্ঞেস কর তিনি আক্বীক্বাহ্‌ সংক্রান্ত হাদীসটি কার নিকট হইতে শুনেছেন? ফলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলিলেন, আমি তা সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদাবের নিকট শুনিয়াছি।

আবু ঈসা বলেনঃ মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল আলী ইবনি আবদুল্লাহ ইবনিল মাদানী হইতে তিনি কুরাইশ ইবনি আনাস এই সানাদে এই হাদীসটি আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন। মুহাম্মাদ [বুখারী] বলেনঃ আলী [ইবনিল মাদীনী] বলেছেন, সামুরাহ্‌র নিকট হইতে হাসানের হাদীস শ্রবনের বিষয়টি সঠিক। উপরে বর্ণিত হাদীস দ্বারা তিনি এর প্রমান পেশ করিয়াছেন।

এ অনুচ্ছেদে আলী, ইবনি মাসউদ, যাইদ ইবনি সাবিত, আইশা, হাফসা, আবু হুরাইরা ও আবু হাশিম ইবনি উতবা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ মুহাম্মাদ [বুখারী] বলেছেন, আলী ইবনি আবদুল্লাহ বলেছেন, সামুরার সূত্রে আল-হাসান হইতে বর্ণিত হাদীসটি সহীহ। তিনি [হাসান] তাহাঁর নিকটে এই হাদীসটি শুনেছেন। আবু ঈসা বলেন- সামুরার হাদীসটি হাসান।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাবেঈ আসরের নামাজকেই মধ্যবর্তী নামাজ বলেছেন। যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] ও আয়িশাহ [রাদি.] যুহরের নামাজকে, মধ্যবর্তী নামাজ বলেছেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] ও ইবনি উমার [রাদি.] ফযরের নামাজকে মধ্যবর্তী নামাজ বলেছেন। সহিহ। বুখারী, দেখুন হাদীস নং-[১৪৭৮]। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২২. অনুচ্ছেদঃ আসর ও ফযরের নামাযের পর অন্য কোন নামাজ আদায় করা মাকরূহ

১৮৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একাধিক সাহাবীর নিকট হইতে এ হাদীস শুনিয়াছি যাদের মধ্যে উমার [রাদি.]-ও ছিলেন। সাহাবাদের মধ্যে তিনিই ছিলেন আমার নিকট বেশি প্রিয়। [তাঁরা বলেছেন] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফযরের নামাযের পর সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত এবং আসরের নামাযের পর সূর্যাস্ত না যাওয়া পর্যন্ত অন্য কোন নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২৫০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আলী, ইবনি মাসউদ, উকবা ইবনি আমির, আবু হুরাইরা, ইবনি উমার, সামুরা ইবনি জুনদুব, সালামা ইবনিল আকওয়া, যাইদ ইবনি সাবিত, আবদুল্লাহ ইবনি আমর, মুআয ইবনি আফরাআ, সুনাবিহী, আয়িশাহ্‌, কাব ইবনি মুররা, আবু উমামা, আমর ইবনি আবাসা, ইয়ালা ইবনি উমাইয়া এবং মুআবিয়া [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উমার [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণিত এই হাদীসটি হাসান সহীহ। সুনাবিহী নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে  কোন হাদীস শুনেনি।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশীরভাগ ফকীহ সাহাবা ও তাহাদের পরবর্তীগণ ফযরের নামাযের পর হইতে সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর হইতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন নামাজ আদায় করা মাকরূহ বলেছেন, কিন্তু ছুটে যাওয়া [ফওত হওয়া ফরয] নামাজ ফযর ও আসরের পর আদায় করা যাবে। আলী ইবনিল মাদীনী- ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদের সূত্রে, তিনি শুবার সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি [শুবা] বলেছেন, কাতাদা আবুল আলীয়ার নিকট হইতে তিনটি কথা ছাড়া আর কিছুই শুনেননি।

এক. উমার [রাদি.]-এর হাদীস-“রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের নামাযের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত ফযরের নামাযের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।” দুই. ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর হাদীস- রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কারো পক্ষে এটা শোভা পায় না যে, সে দাবি করিবে, আমি ইউনুস [আঃ] ইবনি মাত্তার চেয়ে উত্তম” । তিন. আলী [রাদি.]-এর হাদীস- বিচারক তিন রকমের হয়ে থাকে।বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৩. অনুচ্ছেদঃ আসরের নামাযের পর অন্য নামাজ আদায় প্রসঙ্গে

১৮৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] আসরের নামাযের পর দুই রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। কেননা তাহাঁর নিকট কিছু সম্পদ এসেছিল, তিনি তা বিলি করিতে ব্যস্ত ছিলেন এবং যুহরের [ফরযের] পরের দুই রাকআত আদায়ের সুযোগ পাননি। এই দুই রাকআতই তিনি আসরের নামাযের পর আদায় করিলেন। তারপর তিনি কখনো তার পুণসঙ্ঘটন করেননি।

সনদ দুর্বল। তারপর তিনি কখনও পুণসঙ্ঘটন করেননি, অংশটুকু মুনকার। এ অনুচ্ছেদে আইশা, উম্মু সালামা, মাইমূনা ও আবু মূসা [রাঃ] হইতে বর্ণিত হাদীসও আছে। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস [রাঃ] বর্ণিত হাদীসটি হাসান। একাধিক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি আসরের পর দুই রাকআত নামাজ আদায় করেছিলেন। এই হাদীসটি আসরের পর নামাজ সম্পর্কিত নেতিবাচক হাদীস পরিপন্থী। ইবনি আব্বাস [রাঃ]-এর হাদীসটি বেশী সহীহ, যাতে তিনি বলেছেন ঃ তারপর তিনি তার পুণসঙ্ঘটন করেন নি। ইবনি আব্বাসের হাদীসের অনুরূপ হাদীস যাইদ ইবনি সাবিত [রাঃ] হইতেও বর্ণিত আছে। এ অনুচ্ছেদে আইশা [রাঃ]-এর বেশ কয়েকটি বর্ণনা আছে। একটি বর্ণনা হচ্ছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের নামাযের পর তাহাঁর ঘরে গেলেই তিনি দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

আইশা [রাঃ]-এর দ্বিতীয় হাদীসটি উম্মু সালামা [রাঃ]-এর সূত্রে বর্ণিত, এতে আছে, নাবী [সাঃআঃ] আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এবং ফযরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। এ বিষয়ে বিদ্বানগণের অধিকাংশই ঐকমত্য পোষণ করেন যে, মক্কা মুআযযমায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফের পর আসরের পর হইতে সূর্য ডোবা পর্যন্ত এবং ফযরের পর হইতে সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নামাজ আদায় করা এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে। কেননা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাওয়াফের পর উল্লেখিত সময়ে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন।

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাহাদের পরবর্তীগণ [মাক্কাতে] উল্লেখিত সময়ে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন। ঈমাম শাফি, আহমাদ এবং ইসহাকও এ অভিমত দিয়েছেন। সাহাবাদের অপর দল ও তাহাদের পরবর্তীগণ ফজরের পর এবং আসরের পর মক্কাতেও নামাজ আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। সুফইয়ান সাওরী, মালিক ইবনি আনাস এবং কিছু কুফাবাসী এ মত সমর্থন করিয়াছেন। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

২৪. অনুচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাযের পূর্বে নফল নামাজ আদায় করা

১৮৫. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রত্যেক দুই আযানের মাঝখানে নামাজ আছে, যে চায় তা আদায় করিতে পারে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। মাগরিবের নামাযের পূর্বে [অতিরিক্ত] নামাজ আদায় সম্পর্কে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবাদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। তাহাদের কতেকের মত হল, মাগরিবের [আযানের পর এবং ইক্বামতের] পূর্বে কোন নামাজ না আদায় করাই শ্রেয়। অপরদিকে একাধিক সাহাবা মাগরিবের আযান এবং ইক্বামাতের মাঝখানে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করিতেন। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, কেউ যদি এই দুই রাকআত নামাজ আদায় করে তবে সে ভালোই করে এ দুরাকআত আদায় করে নেয়াটা মুস্তাহাব।বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের এক রাকআত নামাজ পেয়েছে

১৮৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি সূর্য উঠার পূর্বে ফজরের এক রাকআত [ফরয নামাজ] পেল সে ফযরের নামাজ পেল। আর যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে আসরের এক রাকআত পেল সেও আসরের নামাজ পেল।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৭০, ৬৯৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহীহ। ঈমাম শাফি, আহমাদ, ইসহাক ও আমাদের সাথীরা এ হাদীসকে তাহাদের দলীল হিসাবে গ্রহণ করিয়াছেন। তাহাদের মতে হাদীসে অর্পিত এ সুবিধা শুধু তারাই পাবে যাদের অজুহাত রয়েছে। যেমন কেউ ঘুমিয়ে ছিল এবং এমন সময় জেগেছে যখন সূর্য উঠা বা ডুবার উপক্রম হয়েছে, অথবা নামাযের কথা ভুলে গেছে এবং ঐ সময়ে মনে পড়েছে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬. অনুচ্ছেদঃ মুক্বীম অবস্থায় দুই ওয়াক্তের নামাজ এক সাথে আদায় করা

১৮৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভয় অথবা বৃষ্টিজনিত কারণ ছাড়াই মাদীনাতে যুহর ও আসরের নামাজ একত্রে এবং মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্রে আদায় করিয়াছেন। সাঈদ ইবনি যুবাইর বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল, এরূপ করার পেছনে তাহাঁর [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] কি উদ্দেশ্য ছিল? তিনি বলিলেন, উম্মাতের অসুবিধা হ্রাস করাই তাহাঁর উদ্দেশ্য ছিল।

সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[১/৫৭৯], সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১০৯৬], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি তাহাঁর নিকট হইতে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। জাবির ইবনি যাইদ, সাঈদ ইবনি যুবাইর এবং আবদুল্লাহ ইবনি শাকীকও এ হাদীসটি তাহাঁর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি আব্বাসের সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে ভিন্নরূপও বর্ণিত হয়েছে। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন অজুহাত ছাড়াই যে ব্যক্তি দুই ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায় করে সে কাবীরা গুনাহের স্তরসমূহের মধ্যে একটি স্তরে পৌঁছে যায়।

খুবই দুর্বল। তালীকুর রাগীব [১/১৯৮], যঈফাহ্ [৪৫৮১]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীস বিশারদদের বিচারে হানাশ, উপনাম আবু আলী আল-রাহবী, নাম হুসাইন ইবনি কাইস একজন দুর্বল রাবী। ঈমাম আহমাদ ও অন্যরা তাঁকে দুর্বল মনে করিয়াছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে সফর ও আরাফাতের ময়দান ছাড়া দুই ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায় করা যাবে না। কিছু তাবিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই ওয়াক্তের নামাজ একত্র করার অনুমতি দিয়েছেন। আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করিয়াছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ বৃষ্টির কারণে দুই নামাজ একত্রে আদায় করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন। শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক ও অনুরূপ কথা বলেছেন। কিন্তু শাফিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই নামাজ একত্রে আদায়ের অনুমতি দেননি। বাংলা নামাজ শিখা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল


Posted

in

by

Comments

One response to “বাংলা নামাজ শিখা – ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা, আসরের নামাজ বিলম্বে আদায় করা”

Leave a Reply