বন্ধক – বন্ধকদাতা ও বন্ধক গ্রহীতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে

বন্ধক – বন্ধকদাতা ও বন্ধক গ্রহীতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে

বন্ধক – বন্ধকদাতা ও বন্ধক গ্রহীতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৪৮, বন্ধক, অধ্যায়ঃ (১-৬)=৬টি

৪৮/১. অধ্যায়ঃ স্থায়ী বাসস্থানে থাকা অবস্থায় বন্ধক রাখা।
৪৮/২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নিজ বর্ম বন্ধক রাখে।
৪৮/৩. অধ্যায়ঃ অস্ত্র বন্ধক রাখা।
৪৮/৪. অধ্যায়ঃ বন্ধক রাখা জন্তুর উপর চড়া যায় এবং দুধ দোহন করা যায়।
৪৮/৫. অধ্যায়ঃ ইয়াহূদী ও অন্যান্যদের (অমুসলিমের) নিকট বন্ধক রাখা।
৪৮/৬. অধ্যায়ঃ বন্ধকদাতা ও বন্ধক গ্রহীতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে বা অনুরূপ কোন কিছু হলে বাদীর দায়িত্ব সাক্ষী পেশ করা আর বিবাদীর দায়িত্ব শপথ করা।

৪৮/১. অধ্যায়ঃ স্থায়ী বাসস্থানে থাকা অবস্থায় বন্ধক রাখা।

মহান আল্লাহর বাণীঃ যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধক রাখা বৈধ। (আল-বাকারা : ২৮৩)

২৫০৮. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যবের বিনিময়ে তাহাঁর বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন। আমি একবার নাবী (সাঃআঃ)-এর খিদমতে যবের রুটি এবং দুর্গন্ধ যুক্ত চর্বি নিয়ে গেলাম, তখন তাঁকে বলিতে শুনলাম, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর পরিবার পরিজনের কাছে কোন সকাল বা সন্ধ্যায় এক সা এর অতিরিক্ত (কোন খাদ্য) দ্রব্য থাকে না। [আনাস (রাদি.) বলেন] সে সময়ে তারা মোট নয় ঘর (নয় পরিবার) ছিলেন।

৪৮/২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নিজ বর্ম বন্ধক রাখে।

২৫০৯. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) জনৈক ইয়াহূদীর কাছ হইতে নির্দিষ্ট মেয়াদে খাদ্য শস্য খরিদ করেন এবং নিজের বর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন।

৪৮/৩. অধ্যায়ঃ অস্ত্র বন্ধক রাখা।

২৫১০.জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, কাব ইবনু আশরাফকে হত্যা করার দায়িত্ব কে নিতে পারবে? আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলকে সে তো কষ্ট দিয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাদি.) তখন বলিলেন, আমি। পরে তিনি তার কাছে গিয়ে বলিলেন, আমরা তোমার কাছে এক ওয়াসাক অথবা বলেছেন, দুওয়াসাক (খাদ্য) ধার চাচ্ছি। সে বলিল, তোমাদের মহিলাদেরকে আমার কাছে বন্ধক রাখ। তিনি বলিলেন, তুমি হলে আরবের সেরা সুন্দর ব্যক্তি। তোমার কাছে কিভাবে মহিলাদেরকে বন্ধক রাখতে পারি? সে বলিল, তাহলে তোমাদের সন্তানদের আমার কাছে বন্ধক রাখ। তিনি বলিলেন, কিভাবে সন্তানদেরকে তোমার কাছে বন্ধক রাখি। পরে এই বলে তাদের নিন্দা করা হইবে যে, দু এক ওয়াসাকের জন্য তারা বন্ধক ছিল, এটা আমাদের জন্য হইবে বিরাট কলঙ্ক। তার চেয়ে বরং আমরা তোমার কাছে আমাদের অস্ত্র বন্ধক রাখতে পারি। রাবী সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) (আরবী) শব্দের অর্থ করিয়াছেন অস্ত্র। তারপর তিনি তাকে পরে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং (পরে এসে) তাঁরা তাকে হত্যা করিলেন এবং নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে সে সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করিলেন।

৪৮/৪. অধ্যায়ঃ বন্ধক রাখা জন্তুর উপর চড়া যায় এবং দুধ দোহন করা যায়।

মুগীরা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, হারিয়ে যাওয়া প্রাণী যে পাবে সে তার ঘাসের (ও অন্যান্য প্রয়োজনীয়) খরচ পরিমাণ আরোহণ করিতে পারবে এবং ঘাসের খরচ পরিমাণ দুধ দোহন করিতে পারবে। বন্ধক প্রাণীর ব্যাপারটিও অনুরূপ।

২৫১১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, বন্ধকী প্রাণীর উপর তার খরচ পরিমাণ আরোহণ করা যাবে। তদ্রূপ দুধেল প্রাণী বন্ধক থকলে (খরচ পরমাণ) তার দুধ পান করা যাবে।

২৫১২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, বাহনের পশু বন্ধক থাকলে তার খরচের পরিমাণে তাতে আরোহণ করা যাবে। তদ্রূপ দুধেল প্রাণী বন্ধক থাকলে তার খরচের পরিমাণে দুধ পান করা যাবে। (মোট কথা) আরোহণকারী এবং দুধ পানকারীকেই খরচ বহন করিতে হইবে।

৪৮/৫. অধ্যায়ঃ ইয়াহূদী ও অন্যান্যদের (অমুসলিমের) নিকট বন্ধক রাখা।

২৫১৩.আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) জনৈক ইয়াহুদী হইতে কিছু খাদ্যদ্রব্য কিনেছিলেন এবং তার কাছে নিজের বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন।

৪৮/৬. অধ্যায়ঃ বন্ধকদাতা ও বন্ধক গ্রহীতার মাঝে বিরোধ দেখা দিলে বা অনুরূপ কোন কিছু হলে বাদীর দায়িত্ব সাক্ষী পেশ করা আর বিবাদীর দায়িত্ব শপথ করা।

২৫১৪. ইবনু আবু মুলাইকা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর নিকট আমি (একবার বাদী বিবাদীর মতবিরোধ সম্পর্কে) লিখে পাঠালাম। তার জবাবে তিনি আমাকে লিখলেন, নাবী (সাঃআঃ) এই ফায়সালা দিয়েছেন যে, (বাদী সাক্ষী পেশ করিতে ব্যর্থ হলে) কসম করা বিবাদীর কর্তব্য।

২৫১৫. আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মিথ্যা কসম করে যে ব্যক্তি অর্থ-সম্পদ হস্তগত করে সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করিবে এ অবস্থায় যে, আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত থাকবেন। তারপর আল্লাহ তাআলা [নাবী (সাঃআঃ)-এর] উক্ত বাণী সমর্থন করে আয়াত নাযিল করিলেন : “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, তারা পরকালে কোন অংশ পাবে না আর কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাদের সাথে কথাও বলবেন না এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতও করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে”- (আল ইমরান ৭৭)। (রাবী বলেন) পরে আশআস ইবনু কায়স (রাদি.) আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করিলেন, আবু আবদুর রহমান (ইবনু মাসউদ) তোমাদের কী হাদীস শুনালেন (রাবী বলেন), আমরা তাকে হাদীসটি শুনালে তিনি বলিলেন, তিনি নির্ভুল হাদীস শুনিয়েছেন। আমাকে কেন্দ্র করেই তো আয়াতটি নাযিল হয়েছিল। কুয়া (এর মালিকানা) নিয়ে আমার সাথে এক লোকের ঝগড়া চলছিল। পরে আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর খিদমতে বিরোধটি উত্থাপন করলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) (আমাকে) বলিলেন, তুমি দুজন সাক্ষী উপস্থিত করিবে, নতুবা সে হলফ করিবে। আমি বললাম, তবে তো সে নির্দ্বিধায় হলফ করে বসবে। তখন রসূলুলাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা হলফ করে অর্থ-সম্পদ হস্তগত করিবে, সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করিবে এ অবস্থায় যে, আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত থাকবেন। তিনি (আশআস) বলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এর সমর্থনে আয়াত নাযিল করিলেন। অতঃপর তিনি (আশআস) এই আয়াত : (আরবী) তিলাওয়াত করিলেন।

২৫১৬. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মিথ্যা কসম করে যে ব্যক্তি অর্থ-সম্পদ হস্তগত করে সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করিবে এ অবস্থায় যে, আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত থাকবেন। তারপর আল্লাহ তাআলা [নাবী (সাঃআঃ)-এর] উক্ত বাণী সমর্থন করে আয়াত নাযিল করিলেন : “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, তারা পরকালে কোন অংশ পাবে না আর কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাদের সাথে কথাও বলবেন না এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতও করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে”- (আল ইমরান ৭৭)। (রাবী বলেন) পরে আশআস ইবনু কায়স (রাদি.) আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করিলেন, আবু আবদুর রহমান (ইবনু মাসউদ) তোমাদের কী হাদীস শুনালেন (রাবী বলেন), আমরা তাকে হাদীসটি শুনালে তিনি বলিলেন, তিনি নির্ভুল হাদীস শুনিয়েছেন। আমাকে কেন্দ্র করেই তো আয়াতটি নাযিল হয়েছিল। কুয়া (এর মালিকানা) নিয়ে আমার সাথে এক লোকের ঝগড়া চলছিল। পরে আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর খিদমতে বিরোধটি উত্থাপন করলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) (আমাকে) বলিলেন, তুমি দুজন সাক্ষী উপস্থিত করিবে, নতুবা সে হলফ করিবে। আমি বললাম, তবে তো সে নির্দ্বিধায় হলফ করে বসবে। তখন রসূলুলাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা হলফ করে অর্থ-সম্পদ হস্তগত করিবে, সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করিবে এ অবস্থায় যে, আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত থাকবেন। তিনি (আশআস) বলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এর সমর্থনে আয়াত নাযিল করিলেন। অতঃপর তিনি (আশআস) এই আয়াত : (আরবী) তিলাওয়াত করিলেন।

Comments

Leave a Reply