বদলী হজ্জ করা বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

বদলী হজ্জ করা বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

বদলী হজ্জ করা বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল >> আল হিদায়া ফিকহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

কিতাবঃ আল হিদায়া, নবম অনুচ্ছেদ – অপরের পক্ষে হজ্জ করা

এ বিষয়ে মূলনীতি এই যে, মানুষ নিজের আমলের সাওয়াব অন্যের জন্য নির্ধারণ করিতে পারে। চাই তা নামাজ হোক,  রোযা হোক, সাদাকা হোক বা অন্য আমল হোক। এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের  অভিমত। কেননা বর্ণীত আছে যে, নাবী(সাঃআঃ) সাদা কালো মিশ্রিত রং এর দুটি মেষ কুরবানী করেছেন। একটি নিজের পক্ষ থেকে আর দ্বিতীয়টি তার উম্মতের পক্ষ থেকে- যারা আল্লাহর একত্ব স্বীকার করে এবং তিনি যে আল্লাহ্‌র বার্তা পৌছিয়েছেন তার সাক্ষ্য দেয়। এখানে তিনি দুটি বকরীর একটিকে আপন উম্মতের জন্য নির্ধারিত করেছেন। ( হজ্জের মাসালা মাসায়েল )

আর ইবাদত কয়েক প্রকার: ১) কেবলমাত্র আর্থিক, যেমন যাকাত; ২) কেবল দৈহিক, যেমন নামাজ; ৩) উভয়টি জড়িত, যেমন, হজ্জ। প্রথম প্রকার ইবাদতের ক্ষেত্রে আদায় করার সার্মথ্য থাকা ও অক্ষমতা উভয় অবস্থায় স্থলবর্তীতা প্রয়োগ হয়। কেননা স্থলভিত্তিক কার্যা দ্বারাই উদ্দেশ অর্জিত হয়। দ্বিতীয় প্রকারের কোন অবস্থাতেই স্থলবর্তিতা কার্যকর হয় না। কেননা নফসের সাধনা যা এ ইবাদতের উদ্দেশ্য, তা স্থলাভিষিক্ত দ্বারা অর্জিত হয় না।

তৃতীয় প্রকারে অক্ষমতার অবস্থায় স্থলবর্তিতা কার্যকর হয়। কেননা এতে দ্বিতীয় বিষয়টি অর্থাত্ মাল খরচের মাধ্যমে কষ্ট লাভের বিষয়টি অর্জিত হয়। কিন্তু সক্ষমতার অবস্থায় তা কার্যকর হবে না। কেননা এতে সাধনা অর্জিত হয় না।

হজ্জের ক্ষেত্রে স্থলবর্তিতা জাইয হওয়ার জন্য মৃত্যুর সময় পর্যন্ত স্থায়ী অক্ষমতা শর্ত। কেননা হজ্জ হলো সারা জীবনের ফরয। পক্ষান্তরে নফল হজ্জের ক্ষেত্রে সক্ষম অবস্থায়ও স্থলবর্তিতা জাইয রহিয়াছে। কেননা সফরের বিষয়ে অধিকতর গোঞ্জায়েশ আছে।

হানাফী মাযহাবের প্রকাশিত মতে যার পক্ষ থেকে হজ্জ করা হচ্ছে, তার পক্ষ থেকেই হজ্জটি সংঘটিত হবে। আলোচ্য বিষয়ে বর্ণীত হাদীসসমূহ একথারই সাক্ষ্য দেয়। যেমন খাছআম গোত্রের জনৈকা স্ত্রী লোক সম্পর্কিত হাদীস। রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃআঃ) তাকে বলেছিলেন, তুমি তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ করো এবং উমরা করো।

মুহাম্মাদ(রঃআঃ) থেকে একটি বর্ণনা অবশ্য আছে যে, যে হজ্জ করবে, তারই পক্ষে সংঘটিত হবে। তবে আদেশদাতা খরচের সাওয়াব পাবে। কেননা হজ্জ হলো একটি দৈহিক ইবাদত। আর অক্ষমতার ক্ষেত্রে অর্থব্যয়কে হজ্জের স্থলবর্তী করা হয়, যেমন, রোযার ক্ষেত্রে ফিদ্‌ইয়া।

কুদূরীর লেখক বলেন, যাকে দুজন মানুষ আদেশ করলো যেন সে তাদের প্রত্যেকের পক্ষ থেকে একটি হজ্জ পালন করে। আর সে তাদের উভয়ের পক্ষ থেকে হজ্জের ইহরাম বাধল । তবে এ হজ্জটি হজ্জকারীর পক্ষ থেকেই গন্য হবে। তার তাকে খরচের ক্ষতিপুরণ দিতে হবে। কেননা, আদেশদাতার পক্ষ থেকেই হজ্জ  সংঘটিত হয়। এ কারণেই হজ্জকারী ইসলামের ফরয হজ্জ থেকে মুক্ত হতে পারে না। আর এখানে উভয়ের প্রত্যেকে তাকে আদেশ করেছে, যেন সে হজ্জটিকে অন্য কারো শরিকানা ছাড়া তার একার জন্য আদায় করে। অথচ অগ্রাধিকার কোন সম্ভাবনা না থাকার কারণে হজ্জকে দুজনের কোন একজনের পক্ষ থেকে সাব্যস্ত করা সম্ভব নয়।

সুতরাং আদিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকেই তা সংঘটিত হবে। আর তার পক্ষ থেকে সংঘটিত হওয়ার পরে দুজনের কোন একজনের মাঝে নির্ধারণ করার সম্ভাবনা নেই।

পক্ষান্তরে যদি নিজের আম্মা-আব্বার পক্ষ থেকে হজ্জ করে,তবে তার হুকুম ভিন্ন। সেক্ষেত্রে হজ্জটিকে সে দুজনের যে কোন একজনের নির্ধারণ করিতে পারে। কেননা, সে তো নিজের আমলের সাওয়াব দুজনের একজনের জন্য কিংবা উভয়ের জন্য নির্ধারণ করার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় দানকারী হচ্ছে, সুতরাং হজ্জটি তার সাওয়াবের  সব্ব বা কারণ রূপে সম্পন্ন হওয়ার পর তার ইখতিয়ার অন্তর্ভূক্ত থাকবে। কিন্তু আলোচ্য ক্ষেত্রে তো সে আদেশদাতার আদেশের ভিত্তিতে আমলটি করছে। অথচ উভয়ের আদেশকেই সে লংঘন করেছে। সুতরাং আমলটি তার নিজের পক্ষ থেকে হবে। যদি সে তাদের প্রদত্ত অর্থ ব্যয় করে থাকে, তাহলে সে খরচের ক্ষতিপুরণ করবে। কেননা সে আদেশদাতার খরচের টাকা নিজের হজ্জে খরচ করেছে।

আর যদি ইহরামকে সে অনির্ধারিত রেখে থাকে, অর্থাত্ অনির্ধারিতভাবে দুজনের একজনের নিয়্যত করে থাকে এবং এভাবেই হজ্জ করে যায়, তাহলে সে (আদেশ দাতার) কথা অমান্য করলো। অগ্রাধিকার না থাকার কারণে। পক্ষান্তরে হজ্জের ক্রিয়াকর্ম শুরু করার পূর্বে যদি একজনকে নির্ধারণ করে নেয় তাহলেও ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) এর নিকট একই হুকুম হবে। ( হজ্জের মাসালা মাসায়েল )

আর এই হলো কিয়াস। কেননা সি নির্ধারণ করার জন্য আদিষ্ট ছিল। আর অনির্ধারিত রাখা মানে সে আদেশের বিরূদ্ধাচরণ করা। সুতরাং তা নিজের পক্ষ থেকে হবে। পক্ষান্তরে হজ্জ বা উমরা নির্ধারণ না করার বিষয়টি ভিন্ন। এক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা মতো নির্ধারণ করার ইখতিয়ার তার রহিয়াছে। কেননা প্রথম সুরতে হজ্জের দায়িত্ব গ্রহণকারী অজ্ঞাত। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় সুরতে ইহরামের হকদার অজ্ঞাত।

সূক্ষ কিয়াসের যুক্তি কেননা সে নির্ধারণ করার আদিষ্ট ছিল। আর অণির্ধারিত রাখা মানে সে আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করা। সুতরাং তা নিজের পক্ষ থেকে হবে। পক্ষান্তরে হজ্জ বা উমরা নির্ধারণ না করার বিষয়টি ভিন্ন। এক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা মতো নির্ধারণ করার ইখতিয়ার তার রহিয়াছে। কেননা  প্রথম সুরতে হজ্জের দায়িত্ব গ্রহণকারী অজ্ঞাত। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় সুরতে ইহরামরের হকদার অজ্ঞাত।

সূক্ষ কিয়াসের যুক্তি এই যে, আমলের মাধ্যম বা উপায় রূপে ইহরাম শরীআত অনুযায়ী প্রবর্তিত হইয়াছে। নিজস্ব সত্তায় মাকসুদ ও উদ্দেশ্য রূপে নয়। আর অস্পষ্ট ইহরাম পরবর্তীতে নির্ধারনের মাধ্যমে উপায় বা ওসীলা রূপে গণ্য হতে পারে। সুতরাং শর্ত রূপে তা যথেষ্ট হবে ।

পক্ষান্তরে স্বয়ং ক্রিয়াকর্মগুলোই যদি অনির্ধারিতভাবে আদায় করে তাহলে বিষয়টি ভিন্ন হবে। কেননা যা আদায় করা হয়ে গেছে, সেটাকে নির্ধারণ করার উপায় নেই। সুতরাং সে আদেশদাতার বিরুদ্ধচারণকারী হলো।

ইমাম মুহাম্মাদ(রঃআঃ) বলেন, যদি কেউ কেউ তাকে তার পক্ষ থেকে কিরান করার আদেশ করে, তাহলে ইহরামকারীর উপর দম  ওয়াজিব হবে। কেননা এটা তো ওয়াজিব হইয়াছে আল্লাহ্‌ পাক দুটি আমল একত্র করার যে তাওফীক দান করেছেন। তার শোকর হিসাবে। আর এই নিয়ামত তো আদিষ্ট ব্যক্তির আপন সত্তার সংগে বিশিষ্ট। কেননা প্রকৃত কাজ তো তার পক্ষ থেকেই হচ্ছে।

আলোচ্য মাসআলাটি ইমাম মুহাম্মাদ(রঃআঃ) থেকে এ মর্মে বর্ণীত মতামতের বিশুদ্ধতা প্রমাণ করে যে, হজ্জ তো আসলে আদিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকেই সংঘটিত হয়।

তদ্রুপ যদি কেউ তাকে তার পক্ষ থেকে হজ্জ করার আদেশ করে আর অন্য একজন তাকে তার পক্ষ থেকে উমরা করার আদেশ করে, এবং উভয়ে তাকে কিরানের অনুমতি প্রদান করে, তবে দম তারই উপর ওয়াজিব হবে। এর কারণ যা আমরা বলে এসেছি। বাধগ্রস্ত হওয়ার দম আদেশদাতার উপর ওয়াজিব হবে। এটা ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) ও মুহাম্মাদ(রঃআঃ) এর মত। আর ইমাম আবূ ইউসুফ (রঃআঃ) বলেন, হজ্জকারীর উপর ওয়াজিব। কেননা এটা ইহরাম প্রলম্বিত হওয়ার কষ্ট দূর করার জন্য হালাল হওয়ার কারণে ওয়াজিব হইয়াছে। আর এ্ই কষ্টের সম্পর্ক তারই সাথে। সুতরাং দম তারই উপরই ওয়াজিব হবে।

ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) ও মুহাম্মাদ(রঃআঃ) এর দলিল এই যে, আদেশদাতাই তাকে এক যিম্মাদারিতে ঢুকিয়েছে। সুতরাং তারই কর্তব্য হবে তাকে মুক্ত করা।

যদি কোন মাইয়েতের পক্ষ থেকে হজ্জ করে থাকে আর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, তাহলে ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) ও মুহাম্মাদ(রঃআঃ) এর মাইয়েতের মাল থেকে দম ওয়াজিব হবে।

ইমাম আবূ ইউসুফ(রঃআঃ) ভিন্নমত পোষণ করেন। আবার কেউ কেউ বলেন যে, মাইয়েতের মালের এক-তৃতীয়াংশ থেকে ওয়াজিব হবে। কেননা এটি দান। যেমন যাকাত ইত্যাদি।

আরো কারো কারো মতে, সমগ্র মাল থেকে দম ওয়াজিব হবে। কেননা তা আদেশদাতার  জন্য হক হিসাবে ওয়াজিব হইয়াছে। সুতরাং তা ঋণ পর্যায়ের।

স্ত্রী সহবাস জনিত দম হজ্জকারীর উপর ওয়াজিব হবে। কেননা এটি অপরাধের দম। আর সে স্বেচ্ছায় অপরাধী হইয়াছে।

এবং খরচের ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। অর্থাত্ যদি উকুফের পূর্বে সহবাস করে থাকে। যে কারণে হজ্জ ফাসিদ হয়ে যায়। কেননা তাকে শুদ্ধ হজ্জ আদায় করার আদেশই করা হইয়াছে। হজ্জ ফউত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভিন্ন। তখন হজ্জকারীকে খরচের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। কেননা সে তা স্বেচ্ছায় ফউত করেনি।

আর যদি উকুফের পর সহবাস করে, তাহলে তার হজ্জ ফাসিদ হবে না এবং খরচের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে না। কেননা আদেশদাতার উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে গেছে। আর আদিষ্ট ব্যক্তির নিজের মাল থেকেই তার উপর দম ওয়াজিব হবে। এর কারণ আমরা বর্ণনা করেছি। তদ্রুপ কাফ্‌ফারার যাবতীয় দমও হজ্জকারীর উপর ওয়াজিব হবে। এর কারণও যা আমরা বলে এসেছি।

আর যদি কেউ ওসীয়ত করে যায় যে, তার পক্ষ থেকে যেন হজ্জ করান হয়।  পরে ওয়ারিছগণ তার পক্ষ থেকে এক ব্যক্তি দ্বারা হজ্জের জন্য পাঠাল। যখন সে কুফায় উপনীত হওয়ার পর সে মারা গেল কিংবা খরচের অর্থ চুরি হয়ে গেলো অথচ ইতোমধ্যে সে অর্ধেক অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে, তাহলে মাইয়েতের পক্ষ থেকে তার বাড়ী থেকে হজ্জ করানো হবে অবশিষ্ট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে।

এ হল ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) এর মত। সাহেবাইন বলেন, যেখানে প্রথম ব্যক্তি মারা গেছে, সেখান থেকে হজ্জ করাতে হবে। তাহলে এখানে বিবেচ্য বিষয় হলো দুটি : পরিত্যাক্ত সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ বিবেচনা করা এবং হজ্জের স্থান বিবেচনা করা।

প্রথম বিষয়টি সম্পর্কে মতনে যা উল্লেখ করা হইয়াছে, তা ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর মত। পক্ষান্তরে ইমাম মুহাম্মাদ(রঃআঃ) এর মতে যে মাল তাকে দেয়া হয়েছিল তার কিছু যদি অবশিষ্ট থাকে, তবে সেই অবশিষ্ট মাল দ্বারা তার পক্ষ হতে হজ্জ করানো হবে। অন্যথায় ওসীয়ত বাতিল হয়ে যাবে। তিনি একথা বলেন, ওসীয়তকারীর নিজের নির্ধারণ করার উপর কিয়াস করে। কেননা তত্ত্বাবধানকারীর নির্ধারণ করা তার নিজের নির্ধারণ করার মতই।

ইমাম আবূ ইউসুফ(রঃআঃ) এর মতে প্রথম তৃতীয়াংশ থেকে যা অবশিষ্ট আছে তা থেকেই তার পক্ষ হতে হজ্জ করান হবে। কেননা ঐ তৃতীয়াংশই হলো ওসীয়ত কার্যকরী হওয়ার ক্ষেত্র।

ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) এর দলিল এই যে, তত্ত্বাবধায়কের মাল বন্টন করা এবং মাল পৃথক করা তখনই সহী্‌হ হবে, যখন সে মাল ঐভাবে অর্পন করবে, যেভাবে ওসীয়তকারী নির্ধারণ করেছে। কেননা মাল কবজা করার জন্য তার কোন দাবীদার নেই। আর এখানে (ওসীয়তকারীর নির্ধারিত সুরতে) সম্পদ অর্পন করা পাওয়া যায়নি। তাই এটি হজ্জের খরচ আলাদা করার পূর্বে মারা যাওয়ার মত হলো। সুতরাং অবশিষ্ট মালের তৃতীয়াংশ থেকে হজ্জ করানো হবে।

দ্বিতীয় বিষয় সম্পর্কে ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) এর মতামতের দলিল এই যে, আর কিয়াসের দাবীও তাই সফরের যে পরিমাণ অংশ অস্তিত্ব লাভ করেছিল, তা দুনিয়ার কার্যকর বিধানের দিক থেকে বাতিল হয়ে গেছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃআঃ) বলেছেন- ইব্‌ন আদম যখন মারা যায়, তখন তার আমল নিঃশেষ হয়ে যায় তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া।

আর ওসীয়তের কার্যকারিতা হলো দুনিয়ার আহকামের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং ওসীয়তকারীর বাড়ী থেকেই ওসীয়ত কারীর বাড়ী থেকেই ওসীয়ত বহাল থাকবে এবং ধরে নেয়া হবে যেন সফরে বের হওয়ার অস্তিত্বই ঘটেনি।

সাহেবাইনের দলিল হল, আর সূক্ষ এই কিয়াসের দাবী যে তার সফর বাতিল হয়নি। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন-

যে ব্যক্তি তার বাড়ী থেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের পথে বের হয় অতঃপর সে মারা যায়, তার আজর(ও সাওয়াব) আল্লাহ্‌র যিম্মায় থাকবে। ( হজ্জের মাসালা মাসায়েল )

রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি হজ্জের পথে মারা যায়,তার জন্য প্রতি বছর একটি হজ্জে মাবরূর লেখা হবে।

যখন তার সফর বাতিল হলো না তখন সেই স্থান থেকেই তার ওসীয়ত বিবেচনা করা হবে। মূল মতপার্থক্য হলো ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে, যে নিজেই হজ্জ করিতে রওয়ানা হইয়াছে (আর পথে মারা গেছে। এবং তার পক্ষ থেকে হজ্জ করানো ওসীয়ত করেছে। এর উপর ভিত্তি হবে হজ্জ করার জন্য আদিষ্ট ব্যক্তির বিষয়টি (যে পথে মারা গেল)। ইমাম কুদুরী(রঃআঃ) বলেন, যে ব্যক্তি পিতামাতার পক্ষ থেকে হজ্জের ইহরাম বাধল, তার জন্য দুজনের যে কোন একজনের জন্য হজ্জটি নির্ধারণ করে নেওয়াই যথেষ্ট হবে। কেননা যে ব্যক্তি অন্যের পক্ষ থেকে তার অনুমতি ছাড়া হজ্জ করানো, সে মূলতঃ নিজের হজ্জের দাওয়াত তাকে প্রদান করল। আর তা সম্ভব হতে পারে হজ্জ আদায় হওয়ার পর। সুতরাং হজ্জ আদায়ের পূর্বে তার নিয়্যত মূল্যহীন হলো। আর হজ্জ আদায়ের পর তার সাওয়ার দুজনের যে কোন একজনের জন্য নির্ধারণ করা বৈধ হবে।

হজ্জ করার জন্য আদিষ্ট ব্যক্তির বিষয়টি ভিন্ন। ইতোপূর্বে উভয়ের মাঝে পার্থক্য আমরা বর্ণনা করে এসেছি। সঠিক বিষয় আল্লাহ্‌ই অধিক অবগত।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply