হাতিব ইবনি আবু বালতাআহ্ এবং বদরী সহাবীগণ [রাদি.]-এর ফযিলত
হাতিব ইবনি আবু বালতাআহ্ এবং বদরী সহাবীগণ [রাদি.]-এর ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৩৬. অধ্যায়ঃ হাতিব ইবনি আবু বালতাআহ্ এবং বদরী সহাবীগণ [রাদি.]-এর ফযিলত
৬২৯৫. উবাইদুল্লাহ ইবনি আবু রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আলী [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে যুবায়র ও মিকদাদ [রাদি.]-কে [বিশেষ কাজে] প্রেরণ করে বললেনঃতোমরা দ্রুত আওযায়ে খাখ [মাদীনার সন্নিকটবর্তী একটি জায়গার নাম] যাও। সেখানে উষ্ট্রারোহিণী এক নারী রয়েছে তার কাছে একটি গোপনীয় পত্র রয়েছে। তোমরা তার নিকট হইতে সেটা নিয়ে এসো। আমরা ঘোড়ার পৃষ্ঠে আরোহিত হয়ে ছুটে চললাম। সেখানে আমরা জনৈক নারীকে দেখিতে পেলাম। আমরা তাকে বললাম, পত্র বের করে দাও। সে বলিল, আমার নিকট কোন পত্র নই। আমরা বললাম, তোমাকে পত্র বের করিতেই হইবে, আর না হলে গায়ের বস্ত্র খুলতে বাধ্য হব। তারপর সে তার চুলের বেণীর মাঝখান থেকে পত্র বের করে দিল। তখন আমরা তা নিয়ে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলাম। পত্র খুলে দেখা গেল যে, তা হাতিব ইবনি আবু বালতা [রাদি.]-এর পক্ষ হইতে মাক্কার কতিপয় মুশরিকের প্রতি লিখিত একটি চিঠি ছিল। তিনি এ চিঠিতে রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কতক গুরুত্বপূর্ণ কাজের লুকানো তথ্য প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃহে হাতিব! তুমি এমন কাজ কেন করলে? সে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমার ব্যাপারে অনুগ্রহ করে দ্রুত রায় ঘোষণা করবেন না। আমি এমন একজন লোক, কুরায়শদের সঙ্গে যার সম্পর্ক রয়েছে [কিন্তু আমি তাদের বংশের কেউ নেই]। সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তিনি তাদের মিত্র ছিলেন, কিন্তু তাদের [বংশোদ্ভূত] গোত্রভুক্ত ছিলেন না। আর আপনার মুহাজির সহাবীদের অনেকের আত্মীয়-স্বজন সেখানে আছে, যাদের মাধ্যমে তাঁদের পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে। তাই আমি স্থির করলাম যে, কুরায়শদের সাথে যখন আমা্র কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই তখন এমন কোন কাজ করি যার দ্বারা আমার পরিবার-পরিজন মুক্তি পেতে পারে। আমি এ কাজটি এজন্য করিনি যে, আমি কাফির হয়ে গেছি অথবা মুরতাদ হয়েছি দ্বীন থেকে। আর আমি ইসলাম কবূলের পরে কুফরের প্রতি আসক্ত হইনি। তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃসে সত্যই বলেছে। উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিকের গর্দান কেটে দিব। তখন তিনি বলিলেন, সে তো বদর যুদ্ধে শারীক হয়েছিল এবং তুমি কি জান না যে, আল্লাহ বদরী সহাবীদের সম্পর্কে অধিক অবহিত আছেন। তিনি বলেছেন: “তোমরা যা খুশী করিতে পারো, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।” এরপর আল্লাহ তাআলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ
“হে মুমিনগণ! আমার ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না”- [সুরাহ্ আল মুমতাহিনাহ্ ৬০: ১]।
আবু বকর ও যুহায়র বর্ণিত হাদীসে আয়াতের বর্ণনা নেই। আর ইসহাক্ তাহাঁর বর্ণনায় আয়াতটিকে সুফ্ইয়ানের তিলাওয়াত হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬২২০]
৬২৯৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে এবং আবু মারসাদ গানবী ও যুবায়র ইবনিল আও্ওয়াম [রাদি.]-কে প্রেরণ করিলেন। আমরা সকলে অশ্বারোহী ছিলাম। তিনি বললেনঃতোমরা রাওযায়ে খাখ নামক জায়গার দিকে রওনা হয়ে যাও। সেখানে এক মুশরিকা নারী রয়েছে। তার কাছে হাতিবের পক্ষ হইতে মুশরিকদের নিকটে লেখা একটি পত্র রয়েছে। তারপর তিনি [বর্ণনাকারী] আলী [রাদি.] হইতে উবাইদুল্লাহ ইবনি আবু রাফি বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬২২১]
৬২৯৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হাতিবের এক দাস রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে তাহাঁর বিপক্ষে অভিযোগ উথপান করিল। সে বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]হাতিব অবশ্যই জাহান্নাম ঢুকবে। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন তুমি মিথ্যা বলেছ, সে জাহান্নামে প্রবেশকরিবে না। কারণ সে বদর যুদ্ধে ও হুদাইবিয়ার প্রান্তরে উপস্থিত হয়েছিল।
[ সহীহ মুসলিম হাদীস নং- ৬২৯৭] [ই.ফা.৬১৭৮, ইসলামিক সেন্টার-৬২২২]
অধ্যায়ঃ হাতিব ইবনি আবু বালতাআহ এবং বাদরী সাহাবীগণ [রাদি.] এর ফযিলত।৫ম খন্ড ৪৪৮ পৃষ্টা, আহলে হাদীস লাইব্রেরী ঢাকা প্রকাশিত।
Leave a Reply