ফারায়েজ এর নিয়ম কানুন। যার সন্তান নেই কিন্তু বোন আছে
ফারায়েজ এর নিয়ম কানুন। যার সন্তান নেই কিন্তু বোন আছে , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ৪৩ টি (২৮৮৫ – ২৯২৭) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায় – ১৯ঃ ফারায়েজ, অনুচ্ছেদঃ ১-১৮=১৮টি, হাদীসঃ (২৮৮৫-২৯২৭)=৪৩টি
অনুচ্ছেদ-১: ফারায়েজ শিক্ষা করা
অনুচ্ছেদ-২: কালালাহ [পিতৃহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি] সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩: যার সন্তান নেই কিন্তু বোন আছে
অনুচ্ছেদ-৪: সহোদর ভাই-বোনের মীরাস
অনুচ্ছেদ-৫: দাদীর অংশ
অনুচ্ছেদ-৬: মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদে দাদার অংশ
অনুচ্ছেদ-৭: আসাবাহর মীরাস সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৮: নিকটাত্নীয়ের মীরাস সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৯: লিআনকারিণীর সন্তানের মীরাস সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১০: কোন মুসলিম কি কাফিরের ওয়ারিস হইবে
অনুচ্ছেদ-১১: মৃতের মীরাস বন্টনের পূর্বে কোনো ওয়ারিস মুসলিম হলে
অনুচ্ছেদ-১২: ওয়ালাআ [আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত মাল]
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ কেউ কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করলে
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ ওয়ালাআ বিক্রয় করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ সদ্য প্রসূত শিশু কান্নার পর মারা গেলে সে সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ আত্মীয়তার মীরাস মৌখিক স্বীকৃতির মীরাসকে রহিত করে
অনুচ্ছেদ–১৭ঃ শপথ বা চুক্তি সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ স্বামীর রক্তপণে স্ত্রীর মীরাস
অনুচ্ছেদ-১: ফারায়েজ শিক্ষা করা
২৮৮৫। আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জ্ঞান তিন প্রকার। এগুলো ছাড়া যা আছে তা অতিরিক্ত। [১] মুহকাম আয়াতসমূহ [২] প্রতিষ্ঠিত হাদিস [৩] ন্যায্যভাবে সম্পত্তি বন্টনের জ্ঞান
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৩৮৭১], মিশকাত [২৩৯], ইরওয়া[১৬৬৪], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৭/৫৪]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২: কালালাহ [পিতৃহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি] সম্পর্কে
২৮৮৬। জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে দেখার জন্য নাবী [সাঃআঃ] এবং আবু বকর [রাদি.] পায়ে হেঁটে উপস্থিত হলেন। তখন আমি বেহুঁশ থাকায় তাহাঁর সাথে কথা বলিতে পারিনি। তিনি উযু করিলেন এবং তাহাঁর উযুর পানি আমার গায়ে ছিটিয়ে দিলেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পত্তি কি করবো? আমার শুধু কয়েকটি বোন আছে। জাবির [রাদি.] বলেন, অতঃপর উত্তরাধিকার সম্পর্কিত আয়াত অবর্তীর্ণ হলোঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন…” [সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬]
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩: যার সন্তান নেই কিন্তু বোন আছে
২৮৮৭। জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমার অধীনে আমার সাতটি বোন ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে দেখিতে আসলেন। তিনি আমার মুখমন্ডলে ফুঁ দিলেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার বোনদের জন্য আমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ ওসিয়াত করবো কি? তিনি বলিলেনঃ তাহাদের প্রতি অনুগ্রহ করো। আমি বলিলাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বলিলেনঃ তাহাদেরকে অনুগ্রহ করো। আমাকে ছেড়ে চলে যাবার সময় নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ হে জাবির! এ রোগে তুমি মারা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। মহান আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমার বোনদের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি তাহাদের জন্য তোমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ নির্ধারণ করেছেন। অধস্তন বর্ণনাকারী বলেন, জাবির [রাদি.] বলিতেন, আমার ব্যাপারে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন…” [সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬]।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৮৮. আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কালালাহ সম্পর্কিত আয়াত সবশেষে অবতীর্ণ হয়ঃ “লোকেরা তোমার কাছে ফাতাওয়াহ্ জিজ্ঞেস করে। বলো, আল্লাহ তোমাদের কালালাহ সম্পর্কের ফাতাওয়াহ্ দিচ্ছেন…” [সূরাহ আন-নিসাঃ ১৭৬]।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৮৯. আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! “লোকেরা তোমাকে কালালাহ সম্পর্কে ফাতাওয়াহ জিজ্ঞেস করে।” কালালাহ কি? তিনি বলিলেনঃ যে আয়াত গরমকালে অবতীর্ণ হয়েছে তাই তোমার জন্য যথেষ্ট [অর্থাৎ সূরাহ আন-নিসার ১৭৬ নং আয়াত]। আমি আবু ইসহাক্বকে বলি, কালালাহ ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যে সন্তানহীন অবস্থায় মারা যায়। তিনি বলিলেন, হাঁ, লোকদের ধারণা এরুপই।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪: সহোদর ভাই-বোনের মীরাস
২৮৯০. হুযাইল ইবনি শুরাহবীল আল-আওদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] ও সালমান ইবনি রবীআহর [রাদি.] নিকট উপস্থিত হয়ে উভয়কে কন্যা, পুত্রের কন্যা ও সহোদর বোনের মীরাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তারা উভয়ে বলিলেন, মৃতের কন্যা অর্ধেক পাবে এবং সহোদর বোন অর্ধেক পাবে। তারা পুত্রের কন্যা [নাতনীকে] উত্তরাধিকার করেননি। [তারা বলিলেন] তুমি ইবনি মাসউদ [রাদি.]-কে গিয়ে জিজ্ঞেস করিতে পারো। হয়তো তিনিও এ ব্যাপারে আমাদের মতই বলবেন। লোকটি তার নিকট এসে প্রশ্ন করলো এবং তাহাকে তাহাদের কথাও জানালো। তিনি বলিলেন, [যদি ঐরুপ অভিমত সমর্থন করি] তবে তো আমি পথভ্রষ্ট হবো এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবো না। আমি এ বিষয়ে সেই ফায়সালাই দিবো যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দিয়েছেন। মেয়ে পাবে অর্ধেক এবং পুত্রের কন্যা [নাতনী] পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ যেন [উভয়টি মিলে] দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ণ হয়। আর অবশিষ্ট [এক-তৃতীয়াংশ] অংশ পাবে সহোদর বোন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৯১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে বেরিয়ে আল-আসওয়াফ নামক স্থানে এক আনসারী মহিলার নিকট উপস্থিত হই। তখন ঐ মহিলা তার দুটি মেয়েকে নিয়ে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এরা সাবিত ইবনি ক্বায়িসের [রাদি.] কন্যা। তিনি আপনার সাথে উহুদ যুদ্ধে যোগদান করে শহীন হন। এদের চাচা এদের সমস্ত সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে এবং এদের জন্য কিছুই রাখেনি। হে আল্লাহর রাসূল! এ বিষয়ে আপনি কি বলেন? আল্লাহর শপথ! এদের সম্পত্তি না থাকলে এদেরকে বিবাহ দেয়া সম্ভব নয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃএদের ফয়সালা আল্লাহই দিবেন। বর্ণনাকারী বলেন, ইতিমধ্যে সূরাহ আন-নিসার আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে বিধান দিচ্ছেন….।” [আয়াত ১১-১৪]। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা ঐ মহিলা ও তার প্রতিপক্ষকে আমার নিকট ডেকে আনো। তিনি মেযে দুটির চাচাকে বলিলেনঃসম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ এদেরকে দিয়ে দাও, এদের মাকে দাও আট ভাগের এক ভাগ এবং অবশিষ্ট সম্পদ তোমার। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, বর্ণনাকারী বিশর ভুল করেছেন। আসলে মেয়ে দুটি সাদ ইবনিল রবী [রাদি.] এর কন্যা। কারণ সাবিত ইবনি ক্বায়িস [রাদি.] শহীদ হন ইয়ামামার যুদ্ধে।
হাসানঃ কিন্তু এতে সাবিত ইবনি ক্বায়িসের উল্লেখ করাটা ভুল। মাহফূয হলো সাদ ইবনি রাবী। যেমন নীচের হাদিসে রয়েছে। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৮৯২/ জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সাদ ইবনির রবী [রাদি.] এর স্ত্রী বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সাদ [রাদি.] দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং দুটি কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। অতঃপর হাদিসের বাকী অংশ উপরের হাদিসের অনুরুপ। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিসটি অধিক সঠিক।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৮৯৩. আল-আসওয়াদ ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আল্লাহর নাবীর [সাঃআঃ] জীবদ্দশায় মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] ইয়ামানে অবস্থানকালে এক বোন ও এক কন্যার প্রত্যেককে মৃতের সম্পত্তির অর্ধেক অর্ধেক প্রদান করেছেন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫: দাদীর অংশ
২৮৯৪. ক্বাবীসহ ইবনি যুয়াইব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা জনৈক মৃতের নানী আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] এর নিকট এসে তার মীরাস [প্রাপ্য] চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহর কিতাবে তোমার কোন অংশ উল্লেখ নাই। আমার জানামতে আল্লাহর নাবীর [সাঃআঃ] সুন্নাতেও কিছু উল্লেখ নাই। সুতরাং এখন তুমি চলে যাও, এ বিষয়ে আমি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখি। তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলে আল মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি তাহাকে ছয় ভাগের-এক ভাগ প্রদান করেছেন। তিনি বলিলেন, ঐ সময়ে তোমার সাথে অন্য কেউ ছিল কি? আল-মুগীরাহ [রাদি.] বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি মাসলামাহ [রাদি.] ছিলেন। অতঃপর তিনিও আল-মুগীরাহ ইবনি শুবাহ্র [রাদি.] অনুরুপ বলিলেন। আবু বকর [রাদি.] তাহাকে ছয় ভাগের এক ভাগ প্রদানের নির্দেশ দিলেন। অতঃপর উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] খিলাফতের সময় জনৈক দাদী এসে তার মীরাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, তোমার উত্তরাধিকার সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবে কিছু উল্লেখ নাই। প্রথমে প্রদত্ত নির্দেশ নানীর ব্যাপারে ছিল। আর আমার নিজের পক্ষ হইতে মীরাসের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা সম্ভব নয়। সুতরাং তুমিও এক-ষষ্ঠাংশের বেশি পাবে না। যদি তোমরা দাদী-নানী উভয়ে জীবিত থাকো তাহলে তা ঐ এক-ষষ্ঠাংশ তোমাদের উভয়ের মধ্যে [অর্ধেক করে] ভাগ করা হইবে। আর যদি উভয়ের মধ্যে কোন একজন জীবিত থাকলে সে তা একাই পাবে।
দুর্বলঃ যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [৩৭০/২১৯৭], ইরওয়া [১৬৮০], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৫৯৫/২৭২৪], মিশকাত [৩০৬১]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮৯৫. ইবনি বুরাইদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] দাদী ও নানীর জন্য এক-ষষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন; যদি মৃতের মা জীবিত না থাকে।
দুর্বলঃ মিশকাত [৩০৪৯]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬: মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদে দাদার অংশ
২৮৯৬. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, আমার পৌত্র মারা গেছে। এখন আমি কি তার মীরাস পাবো? তিনি বলিলেনঃতোমার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ। সে চলে যাওয়ার সময় তাহাকে ডেকে বলিলেনঃতুমি আরও এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। অতঃপর সে যখন আবার চলে যাচ্ছিল তাহাকে ডেকে বলিলেনঃতুমি অতিরিক্ত ষষ্ঠাংশ উপহার হিসাবে পেয়েছো। ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা সুস্পষ্ট জানা নেই কখন সে এক-ষষ্ঠাংশ পায় [আর কখন এক-তৃতীয়াংশ]। ক্বাতাদাহ বলেন, দাদার সর্বনিম্ন প্রাপ্ত অংশ হচ্ছে এক-ষষ্ঠাংশ।
দুর্বলঃ যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [৩৬৯/২১৬৯], মিশকাত [৩০৬০]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮৯৭. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা তিনি উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞেস করেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাদার মীরাস কতটুকু করেছেন তা তোমাদের মধ্যে কার জানা আছে? মাক্বিল ইবনি ইয়াসার [রাদি.] বলিলেন, আমি অবহিত আছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেন, কোন ওয়ারিসের সাথে? মাক্বিল [রাদি.] বলিলেন, তা আমি জানি না। তিনি [উমার] বলিলেন, তা না জানলে তোমার কথায় কোন লাভ নেই।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭: আসাবাহর মীরাস সম্পর্কে
২৮৯৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ [মৃতের] সম্পদ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আহলে ফারায়িযের মধ্যে বন্টন করা হইবে। এদেরকে বন্টনের পর যা অবশিষ্ট থাকিবে তা মৃতের নিকটাত্নীয় পুরুষ ব্যক্তি পাবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮: নিকটাত্নীয়ের মীরাস সম্পর্কে
২৮৯৯,আল-মিক্বদাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি ঐ ব্যক্তির যিম্মাদার যে সন্তান ও ঋণ রেখে মারা যায়। তিনি কখনো বলিয়াছেনঃ “আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল তার যিম্মাদার। কেউ ধন-সম্পদ রেখে গেলে তা তার ওয়ারিসদের প্রাপ্য। যার ওয়ারিস নেই আমি তার ওয়ারিস। আমি তার রক্তপণ আদায় করবো। যার কোন ওয়ারিস নেই, মামা তার ওয়ারিস, সে রক্তপণ আদায় করিবে এবং তার ওয়ারিস হইবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৯০০. আল-মিক্বদাম আল-কিনদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি প্রত্যেক মুমিনের জন্য তার নিজের চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। যে ব্যক্তি ঋণ বা সন্তান রেখে মারা যাবে তা আমার দায়িত্বে থাকিবে। কেউ সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য। যার অভিভাবক নাই আমি তার যিম্মাদার। আমি হবো তার সম্পদের উত্তরাধিকারী এবং তার বন্দী মুক্ত করবো। যার ওয়ারিস নেই, মামা তার ওয়ারিস হইবে। সে তার সম্পদের অধিকারী হইবে এবং তার বন্দী মুক্ত করিবে।
আবু দাউদ বলেন যাইআ শব্দের অর্থ সন্তান। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৯০১. আল-মিক্বদাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যার কোন ওয়ারিস নেই আমি তার ওয়ারিস হবো। আমি তার বন্দী মুক্ত করবো এবং তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবো। যার কোন ওয়ারিস নাই, মামা তার ওয়ারিস। সে তার বন্দী মুক্ত করিবে এবং তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হইবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৯০২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এর একটি মুক্তদাস কিছু জিনিস রেখে মারা গেলো। তার কোন সন্তান বা আত্নীয় না থাকায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেলেনঃ তার সম্পদ তার গ্রামের কোন লোককে প্রদান করো। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃএখানে তার এলাকার কেউ আছে কি? সাহাবীগণ বলিলেন, হাঁ। তিনি বলিলেনঃতাহাকে এর পরিত্যক্ত বস্তু প্রদান করো।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯০৩. বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললো, আয্দ গোত্রের এক ব্যক্তির কিছু সম্পদ আমার কাছে আছে। আমি ঐ বংশের এমন কোন লোক পাইনি যাকে তা হস্তান্তর করিতে পারি। তিনি বলিলেনঃদেখো কোন আয্দীকে এক বছর পর্যন্ত খুঁজে পাও কিনা। পরে লোকটি এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই মাল হস্তান্তর করার মত কোন লোক আমি আয্দ গোত্রে পাইনি। তখন তিনি বলিলেনঃতুমি খুযাআ গোত্রের যে ব্যক্তির সাথে প্রথম সাক্ষাত পাবে তাহাকে এই মাল দিবে। সে যখন চলে যাচ্ছিল তিনি বলিলেনঃলোকটিকে ডেকে আনো। সে তাহাঁর কাছে ফিরে আসলে তিনি বলিলেনঃখুজাআ গোত্রের কোন বৃদ্ধ লোক খুঁজে তাহাকে এই মাল হস্তান্তর করো।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯০৪. বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, খুজাআ গোত্রের এক লোক মারা গেলে তার পরিত্যক্ত জিনিসপত্র নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে আনা হয়। তখন তিনি বলেনঃ তার কোন ওয়ারিস বা আত্নীয় আছে কিনা খোঁজ করো। কিন্তু তারা কোন ওয়ারিস বা আত্নীয় খুঁজে পেলো না। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এই মাল খুজাআ গোত্রের বৃদ্ধ ব্যক্তিকে দিবে। অন্য বর্ণনায় আছে, খুজাআর কোন বৃদ্ধ লোককে খোঁজ করো।
দুর্বলঃ মিশকাত [৩০৫৬]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯০৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একটি লোক মারা যায় এবং তার একজন মু্ক্তদাস ছাড়া অন্য কোন উত্তরাধিকারী ছিলো না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, তার কেউ আছে কি? লোকেরা বললো, তার মুক্তদাসটি ছাড়া আর কেউ নেই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মাল তাহাকে দিলেন।
দুর্বলঃ মিশকাত [৩০৬৫]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯: লিআনকারিণীর সন্তানের মীরাস সম্পর্কে
২৯০৬.,ওয়াসিলাহ ইবনিল আসকা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, নারীরা তিন ব্যক্তির মীরাস পাবেঃ [১] তার মুক্তদাসের [২] তার কুড়িয়ে পাওয়া শিশুর মীরাস এবং [৩] যে সন্তান সম্পর্কে সে লিআন করেছে।
দুর্বলঃ ইরওয়া [১৫৭৬], মিশকাত [৩০৫৩]। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯০৭. মাকহুল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ব্যভিচারের অপরাধে অভিযুক্ত নারীর সন্তানের উত্তরাধিকার তার মাকে করেছেন এবং তার [মায়ের] মৃত্যুর পর তার পরবর্তীগণ এর ওয়ারিস হইবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯০৮. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতার ও তার দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] হইতে উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০: কোন মুসলিম কি কাফিরের ওয়ারিস হইবে
২৯০৯, উসামাহ ইবনি যায়িদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, মুসলিম ব্যক্তি কাফিরের এবং কাফির ব্যক্তি মুসলিমের উত্তরাধিকারী হইবে না।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১০. উসামাহ ইবনি যায়িদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে হাজ্জে যাওয়ার পথে জিজ্ঞেস করি, হে আল্লাহর রাসূল! আগামীকাল সকালে কোথায় নামবেন? তিনি বলিলেন, আক্বীল কি আমাদের জন্য কোনো মনযিল অবশিষ্ট রেখেছে? পুনরায় তিনি বলিলেন, আমরা বনী কিনানাহর উপত্যকায় অবতরণ করবো; যেখানে বসে কুরাইশরা কুফরীর উপর অটল থাকার শপথ করেছিল- অর্থাৎ আল-মুহাস্সাব নামক জায়গায়। এখানেই বনী কিনানাহর লোকজন কুরাইশদেরকে বনী হাশিম গোত্রের বিরূদ্ধে ওয়াদাবদ্ধ করেছিল যে, তারা হাশিম গোত্রের সাথে কোনরূপ বৈবাহিক সম্পর্ক গড়বে না, তাহাদের সাথে ব্যবসা করিবে না এবং তাহাদেরকে কোনরূপ সহযোগিতা করিবে না।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১১. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, দুটি ভিন্ন ধর্মের লোক পরস্পরের ওয়ারিস হয় না।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১২. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একবার দুই সহোদর ভাই তাহাদের উত্তরাধিকারিত্ব নিয়ে ইয়াহইয়া ইবনি ইয়ামুরের সম্মুখে ঝগড়ায় লিপ্ত হলো। তাহাদের পিতা ইয়াহুদী অবস্থায় মারা যায়। তাহাদের একজন ছিল মুসলিম, অপরজন ইয়াহুদী। অতঃপর তিনি [মুআয] মুসলিম ব্যক্তিকেও উত্তরাধিকারী করিলেন। তিনি বলিলেন, আবুল আসওয়াদ আমাকে জানান যে, এক ব্যক্তি তাহাকে বলিয়াছেন, মুআয [রাদি.] বলিয়াছেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, ইসলাম বৃদ্ধি করে, কমায় না। তারপর মুসলিম ব্যক্তিকে উত্তরাধিকারী করেন।
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [২২৮২] ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯১৩. আবুল আসওয়াদ আদ-দীলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এক ইয়াহুদীর পরিত্যক্ত সম্পদে ওয়ারিস হওয়ার বিষয়ে তার মুসলিম উত্তরাধিকারী মুআযের [রাদি.] নিকট আসে… এরপর উপরের হাদিসের অনুরূপ মারফুভাবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১: মৃতের মীরাস বন্টনের পূর্বে কোনো ওয়ারিস মুসলিম হলে
২৯১৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, জাহিলী যুগে যে মীরাস বণ্টিত হয়েছে তা যার জন্য বণ্টিত হয়েছে তারই থাকিবে। আর যে সম্পদ ইসলামী যুগে বণ্টন হইবে তা ইসলামী নীতি অনুসারে বণ্টিত হইবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২: ওয়ালাআ [আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত মাল]
২৯১৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ [রাদি.] মুক্ত করার জন্য একটি দাসী কেনার ইচ্ছা করিলেন। বাঁদীর মালিক বললো, আমরা তাহাকে আপনার নিকট এ শর্তে বিক্রি করিতে পারি যে, তার ওয়ালাআ [মৃত্যুর পর পরিত্যক্ত সম্পদের মালিক] আমরা হবো। আয়িশাহ [রাদি.] বিষয়টি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেন, সে তোমাকে এর থেকে বঞ্চিত করিতে পারবে না। কারণ দাসীর সম্পদের মালিক তার মুক্তকারী হইবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১৬. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, মুক্তদাসের পরিত্যক্ত সম্পদ ঐ ব্যক্তি পাবে যে মূল্য পরিশোধ করেছে এবং সদয় ব্যবহার করেছে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১৭. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
রিয়াব ইবনি হুযাইফাহ জনৈক মহিলাকে বিবাহ করে এবং তার গর্ভে তিনটি সন্তান জন্ম হয়। অতঃপর তাহাদের মা মারা গেলে তারা তার পরিত্যক্ত বাড়ি ও আযাদকৃত দাসের সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়। আমর ইবনিল আস [রাদি.] ছিলেন তাহাদের আত্মীয়। পরবর্তী সময় তিনি তাহাদেরকে সিরিয়ায় প্রেরণ করেন। তারা সেখানে মৃত্যু বরণ করে। পরে আমর ইবনিল আস সেখানে যান। তখন ঐ মহিলার মুক্তদাস কিছু মালপত্র রেখে মারা যায়। মহিলার ভাইয়েরা আমরের বিরুদ্ধে উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] নিকট অভিযোগ করলে উমার [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ পিতা বা পুত্র যে ওয়ালাআ সঞ্চয় করলো সেগুলো তার আসাবা পাবে। আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] বলেন, উমার [রাদি.] আমরকে একটি রায় লিখেন। এতে আবদুর রহমান ইবনি আওফ, যায়িদ ইবনি সাবিত [রাদি.] ও অন্য এক লোক সাক্ষী হন। আবদুল মালিক যখন [৬৮৫ খৃ.] খলীফা হলেন, তখন হিশাম ইবনি ইসমাঈল বা ইসমাঈল ইবনি হিশামের নিকট অনুরূপ একটি অভিযোগ করা হয়। তিনি বিষয়টি আবদুল মালিকের নিকট পাঠিয়ে দেন। আবদুল মালিক বলেন, আমার মনে হয় এর ফায়সালা ইতিপূর্বে আমার নজরে পড়েছে। তিনি বলেন, তিনি উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] রায় অনুসারেই রায় দিলেন। আর সেই ওয়ালাআর সম্পত্তি এখনো আমাদের অধিকারে রয়েছে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ কেউ কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করলে
২৯১৮. তামীম আদ-দারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] [বর্ণনাকারী] ইয়াযীদের বর্ণনায় রয়েছে, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ], যে ব্যাক্তি কোন মুসলিমের হাতে ইসলাম কবুল করেছে তার ব্যাপারে কি বিধান? তিনি বলিলেনঃ ঐ মুসলিম ব্যাক্তি তার জীবন ও মরণে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ ওয়ালাআ বিক্রয় করা সম্পর্কে
২৯১৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ওয়ালাআ বিক্রয় এবং হেবা করিতে নিষেধ করেছেন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ সদ্য প্রসূত শিশু কান্নার পর মারা গেলে সে সম্পর্কে
২৯২০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ শিশু ভূমিষ্ঠ হয়ে কান্নার শব্দ করে মারা গেলে তাহাকে ওয়ারিস গণ্য করিবে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ আত্মীয়তার মীরাস মৌখিক স্বীকৃতির মীরাসকে রহিত করে
২৯২১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [আল্লাহ্র বাণী] ঃ “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাহাদের প্রাপ্য তাহাদেরকে প্রদান করো” [সূরাহ আন-নিসা ঃ ৩৩]
। পূর্ব যুগের লোকেরা পারস্পরিক চুক্তি বা শপথের মাধ্যমে একে অপরের ওয়ারিস হতো, অথচ তাহাদের মধ্যে বংশীয় বা আত্মীয়তার কোন সম্পর্ক থাকতো না। এ সুযোগ রহিত হয় সূরাহ আল-আনফালের এ আয়াত দ্বারা ঃ “আল্লাহ্র বিধানে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়রা একে অন্যের চেয়ে অধিক হকদার”। ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৯২২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে বর্ণিত ঃ যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাহাদের প্রাপ্য তাহাদেরকে প্রদান করো” [সূরাহ আন-নিসা ঃ ৩৩]। তিনি বলেন, মুহাজিরগণ হিজরাত করে মদিনায় আসার পর, আত্মীয়তার বন্ধন ছাড়াই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কর্তৃক তাহাদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃ-বন্ধনের ভিত্তিতে আনসারদের মীরাস পান। যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় ঃ “পিতা-মাতা ও আত্মীয়রা যে সম্পদ রেখে যাবে, আমরা এর প্রত্যেকটির হকদার নির্দিষ্ট করে দিয়েছি… [সূরাহ আন-নিসা ঃ ৩৩], তিনি বলেন, “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাহাদের প্রাপ্য তাহাদেরকে প্রদান করো” উপরের আয়াত দ্বারা রহিত। কিন্তু সাহায্য, উপদেশ, ওসিয়াত ইত্যাদি করার নির্দেশ বহাল আছে, কিন্তু ওয়ারিস হওয়ার প্রথা বাতিল।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯২৩. দাউদ ইবনিল হুসাইন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রবীর কন্যা এবং সাদের মায়ের নিকট কুরআন পড়তাম। সাদের মা ছিলেন ইয়াতীম। তিনি আবু বাক্রের [রাদি.] তত্ত্বাবধানে লালিত হন। যখন আমি এ আয়াত পড়ি ঃ “যাদের সাথে তোমরা ওয়াদাবদ্ধ তাহাদের প্রাপ্য তাহাদেরকে প্রদান করো”। তিনি বলিলেন, “যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে…” এ আয়াত পাঠ করো না। কেননা এ আয়াত আবু বকর [রাদি.] ও তার ছেলে আবদুর রহমানের প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। সে ইসলাম গ্রহণ করিতে অস্বীকার করায় আবু বকর [রাদি.] শপথ করে বলেন, সে তার উত্তরাধিকারী হইবে না। অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করলে নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমানকে মীরাসের অংশ দেয়ার জন্য আবু বকর [রাদি.]-কে নির্দেশ দেন। বর্ণনাকারী আবদুল আযীয বর্ণনা করেন, তরবারি তাহাকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করার পূর্বে সে ইসলাম গ্রহণ করেনি।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আল্লাহ্র বাণী] ঃ “যারা ঈমান এনেছে, হিজরাত করেছে এবং নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, এবং যারা তাহাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে- তারা পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরাত করেনি, তাহাদের সাথে তোমাদের বন্ধুত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতার সম্পর্ক নেই-যতক্ষণ তারা হিজরাত না করে” [সূরাহ আল-আনফাল ঃ ৭২]। বেদুঈনরা মুহাজিরদের ওয়ারিস হতো না এবং মুহাজিরগণও তাহাদের ওয়ারিস হইতেন না। উপরের আয়াত রহিত হয় এ আয়াত দ্বারা ঃ “আল্লাহ্র কিতাবে রক্তের আত্মীয়গণ পরস্পরের মাঝে অধিক হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছু অবহিত” [সূরাহ আল-আনফাল ঃ ৭৬]।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ–১৭ঃ শপথ বা চুক্তি সম্পর্কে
২৯২৫. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ [অন্যায় কাজে] চুক্তিবদ্ধ হওয়া ইসলামে জায়িয নয়। ইসলাম জাহিলী যুগের এ জাতীয় চুক্তির উপর কঠোরতা আরোপ করেছে।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯২৬. আসিম আল-আহওয়াল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস্ ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের ঘরে বসে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়েন। তাহাকে বলা হলো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বলেননি ঃ ইসলামে কোন ওয়াদা নাই? উত্তরে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বাড়িতে আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব গড়েছেন। আনাস এ কথাটা দুই-তিনবার বলিলেন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ স্বামীর রক্তপণে স্ত্রীর মীরাস
২৯২৭. সাইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] বলিতেন, রক্তপণে বংশের লোকদের অংশ আছে। স্ত্রী তার স্বামীর দিয়াতের ওয়ারিস হয় না। দাহ্হাক ইবনি সুফিয়ান [রাদি.] তাহাকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে লিখিত নির্দেশ পাঠান ঃ আশআম আদ-দিবাবীর স্ত্রীকে তার রক্তপণের ওয়ারিস বানাও। তখন উমার [রাদি.] নিজস্ব মত পরিবর্তন করেন। অন্য বর্ণনায় আছে, নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে বেদুঈনদের প্রশাসক নিযুক্ত করেন।
ফারায়েজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply