ফাজায়েলে তাবলীগ আল্লাহর পথে দাওয়াত

ফাজায়েলে তাবলীগ আল্লাহর পথে দাওয়াত

পরিচ্ছেদ ১ঃ কুরআনের আলোকে নবী করিম সাঃআঃ কে দাওয়াতের নির্দেশ
পরিচ্ছেদ ২ঃ কুরআনের আলোকে তাবলীগ/নসিহত ও নবী রাসুলের জিম্মাদারি
পরিচ্ছেদ ৩ঃ হাদীসের আলোকে তাবলীগ/নসিহত ও নবী রাসুলের জিম্মাদারি
পরিচ্ছেদ ৪ঃ কুরআনের আলোকে তাবলীগের দল ও ভাল কাজের আদেশ
পরিচ্ছেদ ৫ঃ হাদীসের আলোকে তাবলীগের দল ও ভাল কাজের আদেশ
পরিচ্ছেদ ৬ঃ কুরআনের আলোকে দাওয়াতের ফযীলত
পরিচ্ছেদ ৭ঃ হাদীসের আলোকে দাওয়াতের ফযীলত
পরিচ্ছেদ ৮ঃ কুরআনের আলোকে আমীর/পরিবারকর্তাদের সালাত ও ভাল কাজের নির্দেশ
পরিচ্ছেদ ৯ঃ হাদীসের আলোকে কুরআনের আলোকে আমীর/পরিবারকর্তাদের সালাত ও ভাল কাজের নির্দেশ
পরিচ্ছেদ ১ঃ কুরআনের আলোকে আখিরাত

পরিচ্ছেদ ১ঃ কুরআনের আলোকে নবী করিম সাঃআঃ কে দাওয়াতের নির্দেশ

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ

আপনি আপনার রবে দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।”

[সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১২৫]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَأَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللهَ لاَ يَهْدِى الْقَوْمَ الْكَافِرِيْنَ-

হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা পৌঁছে দিন। আপনি যদি এরূপ না করেন তবে আপনি তাঁর রিসালাত পৌঁছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অস্বীকারকারী সম্প্রদায়কে সঠিক পথ দেখান না

[সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৬৭]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ وَلاَ تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشرِكِيْنَ

আপনি আপনার পালনকর্তার দিকে (মানুষকে) দাওয়াত দিন। আর আপনি অবশ্যই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না’

ক্বাছাছ ৮৭

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

فَهَلۡ عَلَى ٱلرُّسُلِ إِلَّا ٱلۡبَلَٰغُ ٱلۡمُبِينُ

ফাহাল আলা রছুলিল্লাহ ইল্লাল বালাগুল আমিন

রাসূলগণের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।”

[সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৫]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

اُدْعُ إلَى سَبِيْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ-

আপনি আপনার পালনকর্তার প্রতি দাওয়াত দিন কুরআন বা সঠিক জ্ঞান এবং উত্তম উপদেশের মাধ্যমে। আর পসন্দনীয় পন্থায় প্রত্যুত্তর করুন’

নাহল ১২৫

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلۡمُشۡرِكِينَ مَا تَدۡعُوهُمۡ إِلَيۡهِ

“তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে- আর যা আমি ওহী করেছি আপনাকে- এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে দলাদলি-বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করো না। আপনি মুশরিকদের যার প্রতি আহ্বান করছেন তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়।”

[সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ১৩]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَيَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُسَٰرِعُونَ فِي ٱلۡخَيۡرَٰتِۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ 

“তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।”

[সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১১৪)

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ يَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَٰفِرِينَ

ইয়া আইয়্যুহার রাছুলু বাল্লিগ মা~উংজিলা ইলাইকা মির রব্বিকা। ওয়া ইল্লাম তাফআল ফামা-বাল্লাগতা রিছালাতাহু, ওয়াল্লাহু ইয়াসিমুকা মিনান্না-ছি ইন্নালাহা লা ইয়াহদিল কাওমাল কাফিরিন। হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।

রাসূল ٱلرَّسُولُ হে يَٰٓأَيُّهَا
যা مَآ প্রচার করো بَلِّغۡ
প্রতি তোমার إِلَيۡكَ অবতীর্ণ করা হয়েছে أُنزِلَ
তোমার রবের رَّبِّكَۖ পক্ষ হতে مِن
না لَّمۡ এবং যদি وَإِن
বার্তা তাঁর رِسَالَتَهُۥۚতুমি করো تَفۡعَلۡ
তোমাকে রক্ষা করবেন يَعۡصِمُكَ এবং আল্লাহ وَٱللَّهُ
মানুষের ٱلنَّاسِۗ থেকে مِنَ
আল্লাহ ٱللَّهَ নিশ্চয়ই إِنَّ
পথ দেখান يَهۡدِي না لَا
কাফিরদের ٱلۡكَٰفِرِينَ সম্প্রদায়কে ٱلۡقَوۡمَ

সূরা মায়েদা : আয়াত ৫ : ৬৭

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ

আপনি আপনার রবে দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন

 [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১২৫]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُ

হে রাসূল! আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না

[সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৬৭]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَأيُّهَا النَّبِيُّ إنَّا أرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا إلَى اللهِ بِإذْنِهِ وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا-

হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর পথে দাওয়াত দানকারী হিসাবে ও উজ্জ্বল প্রদীপ রূপে’

আহযাব ৪৪-৪৫

পরিচ্ছেদ ২ঃ কুরআনের আলোকে তাবলীগ/নসিহত ও নবী রাসুলের জিম্মাদারি

নূহ আলাইহিস সালামের জবানিতে বলা হয়েছে

أُبَلِّغُكُمۡ رِسَٰلَٰتِ رَبِّي وَأَنصَحُ لَكُمۡ وَأَعۡلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ

উবাল্লিগুকুম রিছালাতি রাব্বি ওয়া আংসাহু লাকুম, ওয়া আ,লামু মিনাল্লাহি মা লা তা,লামুন। আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসীহত করছি। আর আমি আল্লাহর কাছ থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জান না’।

[সূরা আল-আ‘রাফ ৭, আয়াত: ৬২]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَمَنۡ أَحۡسَنُ قَوۡلٗا مِّمَّن دَعَآ إِلَى ٱللَّهِ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ

ওয়া মান আহছানু কওলাম মিম্মাং দাআ~ ইলাল্লাহি ওয়া আমিলা সালিহাও ওয়া কলা ইন্নানি মিনাল মুছলিমিনি। আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’?

[সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১ঃ৩৩] [ফাজায়েলে তাবলীগ, প্রথম পরিচ্ছেদে, ১ নং এ এই আয়াত টি সংকলন করা হয়েছে]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

قُلْ هَذِهِ سَبِيْلِيْ أدُعُو إلَى اللهِ عَلَى بَصِيْرَةٍ أنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِيْ وَسُبْحَانَ اللهِ وَمَا أنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ

হে নবী! আপনি বলুন, এটিই আমার পথ। আমি এবং আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর পথে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে (সুস্পষ্ট দলীল সহকারে)। আল্লাহ মহা পবিত্র। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই

ইউসুফ ১০৮

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

‘হে মুমিনগণ, তোমরা যা করো না, তা কেন অন্যকে বলো? তোমরা যা করো না, তা অন্যকে বলা আল্লাহর দৃষ্টিতে অসন্তোষজনক’

(সূরা সাফফ : ২-৩)।

পরিচ্ছেদ ৩ঃ হাদীসের আলোকে তাবলীগ/নসিহত ও নবী রাসুলের জিম্মাদারি

জুবায়ের বিন মুত্ব‘ইম (রাঃ) বলেন,

আরাফার দিন বিদায় হজ্জের ভাষণে সমবেত জনগণের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, (১) ‘হে জনগণ! আল্লাহর কসম, আমি জানিনা আজকের পরে আর কোনদিন তোমাদের সঙ্গে এই স্থানে মিলিত হ’তে পারব কি-না। অতএব আল্লাহ রহম করুন ঐ ব্যক্তির উপরে যে ব্যক্তি আজকে আমার কথা শুনবে ও তা স্মরণ রাখবে। কেননা অনেক জ্ঞানের বাহক নিজে জ্ঞানী নয় (সে অন্যের নিকট জ্ঞান বহন করে নিয়ে যায়) এবং অনেক জ্ঞানের বাহক তার চাইতে অধিকতর জ্ঞানীর নিকটে জ্ঞান বহন করে নিয়ে যায়। (২) জেনে রেখ, নিশ্চয়ই তোমাদের মাল-সম্পদ ও তোমাদের রক্ত তোমাদের পরস্পরের উপরে হারাম, যেমন আজকের এই দিন, এই মাস, এই শহর তোমাদের জন্য হারাম’ (অর্থাৎ এর সম্মান বিনষ্ট করা হারাম)। (৩) জেনে রেখ, তিনটি বিষয়ে মুমিনের অন্তর খিয়ানত করে না : (ক) আল্লাহর উদ্দেশ্যে এখলাছের সাথে কাজ করা। (খ) শাসকদের জন্য কল্যাণ কামনা করা এবং (গ) মুসলমানদের জামা‘আতকে অাঁকড়ে ধরা। কেননা তাদের দো‘আ তাদেরকে পিছন থেকে (শয়তানের প্রতারণা হ’তে) রক্ষা করে’ 

(দারেমী হা/২২৭, সনদ ছহীহ)

জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, বিদায় হজ্জের দিন সূর্য ঢলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ক্বাছওয়া (الْقَصْوَاءُ) উটনীর পিঠে সওয়ার হয়ে বাত্বনুল ওয়াদীতে আরাফাহ ময়দানে আসেন। অতঃপর লোকদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে তিনি বলেন,

হে জনগণ! নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত ও মাল-সম্পদ তোমাদের পরস্পরের উপরে হারাম, যেমন আজকের এই দিন, এই মাস, এই শহর তোমাদের জন্য হারাম’ (অর্থাৎ এর সম্মান বিনষ্ট করা হারাম)। (৪) ‘শুনে রাখ, জাহেলী যুগের সকল কিছু আমার পায়ের তলে পিষ্ট হ’ল। জাহেলী যুগের সকল রক্তের দাবী পরিত্যক্ত হ’ল। আমাদের রক্ত সমূহের প্রথম যে রক্তের দাবী আমি পরিত্যাগ করছি, তা হ’ল রাবী‘আহ ইবনুল হারেছ বিন আব্দুল মুত্ত্বালিব-এর শিশু পুত্রের রক্ত। যে তখন বনু সা‘দ[1] গোত্রে দুগ্ধ পান করছিল, আর হোযাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করেছিল’। (৫) ‘জাহেলী যুগের সকল সূদ পরিত্যক্ত হ’ল। আমাদের সূদ সমূহের প্রথম যে সূদ আমি শেষ করে দিচ্ছি সেটি হ’ল (আমার চাচা) আববাস বিন আব্দুল মুত্ত্বালিবের পাওনা সূদ। যার সবটুকুই বাতিল করা হ’ল। (৬) ‘তোমরা নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। কেননা তোমরা তাদেরকে আল্লাহর আমানত হিসাবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালেমার মাধ্যমে তাদেরকে হালাল করেছ। তাদের উপরে তোমাদের প্রাপ্য হক হ’ল এই যে, তারা তোমাদের বিছানা এমন কাউকে মাড়াতে দেবে না, যাদেরকে তোমরা অপছন্দ কর। যদি তারা সেটা করে, তবে তোমরা তাদের প্রহার করবে যা গুরুতর হবে না। আর তোমাদের উপরে তাদের প্রাপ্য হক হ’ল উত্তমরূপে খাদ্য ও পরিধেয় প্রদান করা’। (৭) ‘আর জেনে রাখ, আমি তোমাদের মাঝে ছেড়ে যাচ্ছি এমন এক বস্ত্ত, যা মযবুতভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না। সেটি হ’ল আল্লাহর কিতাব’। (৮) ‘আর তোমরা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। তখন তোমরা কি বলবে? লোকেরা বলল, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি সবকিছু পৌঁছে দিয়েছেন, (রিসালাতের আমানত) আদায় করেছেন এবং উপদেশ দিয়েছেন’। অতঃপর তিনি শাহাদাত অঙ্গুলী আসমানের দিকে উঁচু করে অতঃপর সমবেত জনমন্ডলীর দিকে নীচু করে বললেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক’ (তিনবার)

[2]. মুসলিম হা/১২১৮ (১৪৭) ‘বিদায় হজ্জ’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/২৫৫৫ ‘মানাসিক’ অধ্যায়; ইবনু মাজাহ হা/৩০৭৪।

আবু বাকরা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) কুরবানীর দিন আমাদের সামনে বক্তব্য পেশ করলেন। … তিনি এক পর্যায়ে বললেন, আমি কি (আমার উপর অর্পিত রিসালাত) পৌঁছে দিয়েছি? উপস্থিত ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ (আপনি পৌঁছে দিয়েছেন)। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাকো। (অতঃপর তিনি বললেন) উপস্থিত যারা আছে তারা যেন অনুপস্থিতদের নিকট এ দাওয়াত পৌঁছে দেয়’

(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৬৫৯; বাংলা মিশকাত ৫ম খন্ড, হা/২৫৪১ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে রাসূল (ছাঃ) বলেন,

আমার দাওয়াত পৌঁছানো সম্পর্কে তোমাদেরকে একদিন জিজ্ঞেস করা হবে। সেদিন তোমরা কি বলবে? ছাহাবীগণ বললেন, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, নিশ্চয়ই আপনি দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন, আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন, আপনি মানুষকে উপদেশ দান করেছেন। রাসূল (ছাঃ) তখন শাহাদত অঙ্গুলি আকাশের দিকে উঠিয়ে ইশারা করে তিনবার বললেন, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো (আমি তোমার পয়গাম মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়েছি)’

(মুসলিম, মিশকাত হা/২৫৫৫; বাংলা মিশকাত ৫ম খন্ড, হা/২৪৪০ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)।

‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

আমার একটি কথাও জানা থাকলে অন্যের নিকট পৌঁছে দাও। আর বনী ইসরাঈলের কাহিনীও প্রয়োজনে বর্ণনা কর, এতে কোন দোষ নেই। তবে যে ব্যক্তি আমার উপর মিথ্যারোপ করবে সে যেন তার স্থান জাহান্নামে করে নেয়’

(বুখারী, মিশকাত হা/১৯৮; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/১৮৮ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন

দীন হলো নসীহত। সাহাবীগণ বললেন, কার জন্য? বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য, মুসলিমগণের নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য।

সহীহ মুসলিম

জারির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু, মুগিরা ইবন শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রমুখ সাহাবী বলেন

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বাই‘আত বা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করেছি, সালাত কায়েম, যাকাত প্রদান ও প্রত্যেক মুসলিমের নসীহত (কল্যাণ কামনা) করার ওপর

সহীহ বুখারী

উবাদাহ ইবন সামিত ও অন্যান্য সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম বলেন,

আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাই‘আত করি আনুগত্যের… এবং সৎকর্মে আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধের এবং এ কথার ওপর যে, আমরা মহিমাময় আল্লাহর জন্য কথা বলব এবং সে বিষয়ে কোন নিন্দুকের নিন্দা বা গালি-গালাজের তোয়াক্কা করব না।

মুসনাদে আহমদ

ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

যে ব্যক্তি শক্তি প্রয়োগে দাওয়াত দিবে সে মুমিন, যে মুখের মাধ্যমে দাওয়াত দিবে সে মুমিন, যে অন্তরের মাধ্যমে দাওয়াত দিবে সে মুমিন। যে এ তিনটি পদ্ধতির কোন একটি অবলম্বন করবে না, তার অন্তরে সরিষা দানা সমপরিমাণও ঈমান নেই’ 

(মুসলিম, তারগীব হা/৩৩০৪)

পরিচ্ছেদ ৪ঃ কুরআনের আলোকে তাবলীগের দল ও ভাল কাজের আদেশ

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ أُمَّةٞ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَيۡرِ وَيَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ

ওয়ালা তাকুনু কাল্লাজিনা তাফাররাকু ওয়াখতালাফু মিম বা,দি মাজা~আহহুমুল বাইইয়িনাতু ওয়া উলা~ইকা আজাবুন আজিম, আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।

সূরা আল ইমরান, আয়াত ৩ঃ১০৪

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَمَا لَكُمۡ لَا تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلرَّسُولُ يَدۡعُوكُمۡ لِتُؤۡمِنُواْ بِرَبِّكُمۡ

তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন না, অথচ রাসূল তোমাদেরকে আহ্বান করছেন যে, তোমরা তোমাদের রবের ওপর ঈমান আন।

[সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ৮]

পরিচ্ছেদ ৫ঃ হাদীসের আলোকে তাবলীগের দল ও ভাল কাজের আদেশ

পরিচ্ছেদ ৬ঃ কুরআনের আলোকে দাওয়াতের ফযীলত

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

لَّا خَيۡرَ فِي كَثِيرٖ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَٰحِۢ بَيۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ ٱبۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيهِ أَجۡرًا عَظِيمٗا

“তাদের গোপন পরামর্শের অধিকাংশে কোনো কল্যাণ নেই। তবে (কল্যাণ আছে) যে নির্দেশ দেয় সদকা কিংবা ভালো কাজ অথবা মানুষের মধ্যে মীমাংসার। আর যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করবে তবে অচিরেই আমরা তাকে মহাপুরস্কার প্রদান করব।”

[সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৪]

পরিচ্ছেদ ৭ঃ হাদীসের আলোকে দাওয়াতের ফযীলত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“আল্লাহর কসম, তোমার মাধ্যমে যদি একজন মানুষকেও আল্লাহ সুপথ দেখান তাহলে তা তোমার জন্য (সর্বোচ্চ সম্পদ) লাল উটের মালিক হওয়ার চেয়েও উত্তম বলে গণ্য হবে।”

সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ভালো কার্যে নির্দেশ করা সদকা বলে গণ্য এবং খারাপ থেকে নিষেধ করা সদকা বলে গণ্য

সহীহ মুসলিম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যদি কোনো ব্যক্তি কোনো ভালো পথে আহ্বান করে, তবে যত মানুষ তার অনুসরণ করবে তাদের সকলের পুরস্কারের সমপরিমাণ পুরস্কার সে ব্যক্তি লাভ করবে, তবে এতে অনুসরণকারীদের পুরস্কারের কোনো ঘাটতি হবে না। আর যদি কোনো ব্যক্তি কোনো বিভ্রান্তির দিকে আহ্বান করে তবে যত মানুষ তার অনুসরণ করবে তাদের সকলের পাপের সমপরিমাণ পাপ সে ব্যক্তি লাভ করবে, তবে এতে অনুসরণকারীদের পাপের কোনো ঘাটতি হবে না।

সহীহ মুসলিম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যদি কেউ কোনো ভালো কর্মের দিকে নির্দেশনা প্রদান করে তবে তিনি কর্মটি পালনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবেন।

সহীহ মুসলিম

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল কিংবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে, তার চেয়ে উত্তম।

সহীহ বুখারী ২৭৯২, ইবনে মাজাহ ২৭৫৭

সহীহ বুখারী ২৭৯৩ (আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে), ইবনে মাজাহ ২৭৫৫

সহীহ বুখারী ২৭৯৪ (সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে) ইবনে মাজাহ ২৭৫৬

মুসলিম ১৮১০, তিরমিযী ১৬৫১, আহমাদ ১১৯৪১, ১২০২৮, ১২১৪৬, ১২১৯১, ১২৭৪৯, ১৩৩৬৮, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪২৫৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৩/১৮৭, ইবনু হিব্বান ৪৬০২, ৭৩৯৮, ইরওয়া ১১৮২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

(৩) আল্লাহ্‌র রাস্তায় ধূলাবালি আর জাহান্নামের ধূয়া কখনো একত্রিত হবে না | [তিরমিজী]

(৪) আল্লাহ্‌র রাস্তায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা শবে ক্বদরের রাত্রে হাজরে আসওয়াদ পাথরের পার্শ্বে দাড়িয়ে সারারাত ইবাদকত করার চেয়ে উত্তম | [ইবনে হিব্বান]

(৫) আল্লাহ্‌র রাস্তায় কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকা আপন ঘরে থেকে ৭০ বছর নামায পড়ার চেয়ে উত্তম | [তিরমিজী]

কুরআনের আলোকে রিযক বৃদ্ধি ও সঙ্কচুতি করা

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

ٱللَّهُ يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقۡدِرُۚ وَفَرِحُواْ بِٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَمَا ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَا فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا مَتَٰعٞ

আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন রিযক বাড়িয়ে দেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তারা দুনিয়ার জীবন নিয়ে উৎফুল্লতায় আছে, অথচ আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবন খুবই নগণ্য।

সুরা রাদ ১৩ঃ২৬

পরিচ্ছেদ ৮ঃ কুরআনের আলোকে আমীর/পরিবারকর্তাদের সালাত ও ভাল কাজের নির্দেশ

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَٰبُنَيَّ أَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ وَأۡمُرۡ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَٱنۡهَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَٱصۡبِرۡ عَلَىٰ مَآ أَصَابَكَۖ إِنَّ ذَٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ

হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ’।

সুরা লুকমান ৩১ঃ১৭

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَأۡمُرۡ أَهۡلَكَ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱصۡطَبِرۡ عَلَيۡهَاۖ لَا نَسۡ‍َٔلُكَ رِزۡقٗاۖ نَّحۡنُ نَرۡزُقُكَۗ وَٱلۡعَٰقِبَةُ لِلتَّقۡوَىٰ

আর তোমার পরিবার-পরিজনকে সালাত আদায়ের আদেশ দাও এবং নিজেও তার উপর অবিচল থাক। আমি তোমার কাছে কোন রিযিক চাই না। আমিই তোমাকে রিযিক দেই আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য।

সুরা ত্বাহা ২০ঃ১৩২

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ أَمَنُوْا قُوْا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ نَارًا وَقُوْدُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلاَئِكَةٌ غِلاَظٌ شِدَادٌ لاَ يَعْصِمُوْنَ اللهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُوْنَ مَا يُؤْمَرُوْنَ-

হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও, যে আগুনের খড়ি হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোর স্বভাবের ফেরেশতাগণ। তাদেরকে আল্লাহ যা আদেশ করেন তারা তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তাই করে

তাহরীম ৬

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

مَن كَفَرَ بِٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ إِيمَٰنِهِۦٓ إِلَّا مَنۡ أُكۡرِهَ وَقَلۡبُهُۥ مُطۡمَئِنُّۢ بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَٰكِن مَّن شَرَحَ بِٱلۡكُفۡرِ صَدۡرٗا فَعَلَيۡهِمۡ غَضَبٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيمٞ ١٠٦

ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ ٱسۡتَحَبُّواْ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا عَلَى ٱلۡأٓخِرَةِ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَٰفِرِينَ١٠٧

পরিচ্ছেদ ৯ঃ হাদীসের আলোকে আমীর/পরিবারকর্তাদের সালাত ও ভাল কাজের নির্দেশ

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন,

নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম জিহাদ হচ্ছে স্বৈরাচারী বাদশাহ অথবা স্বৈরাচারী আমীরের নিকট হক কথা বলা 

(তারগীব হা/৩২৯৯)

=====================

‘বলো, এটিই আমার পথ। আমি এবং আমার অনুসারীরা স্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহর দিকে আহ্বান করি’ (সূরা ইউসুফ : ১০৮)। আর এ স্পষ্ট জ্ঞান হলো ওহির জ্ঞান। কুরআনের ভাষ্য : ‘বলো, আমি তো শুধু ওহির ভিত্তিতে তোমাদের ভয় দেখাচ্ছি’ (সূরা আম্বিয়া : ৪৫)

তৃতীয়ত, একজন দাইকে তার আদর্শের প্রতি নিষ্ঠাবান, বিশ্বাসী এবং পালনকারী হতে হবে। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন,

(106) যে ঈমান আনার পর আল্লাহর সাথে কুফরী করেছে এবং যারা তাদের অন্তর কুফরী দ্বারা উন্মুক্ত করেছে, তাদের উপরই আল্লাহর ক্রোধ এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব। ঐ ব্যক্তি ছাড়া যাকে বাধ্য করা হয় (কুফরী করতে) অথচ তার অন্তর থাকে ঈমানে পরিতৃপ্ত। (107) এটা এ জন্য যে, তারা আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনকে পছন্দ করেছে। আর নিশ্চয় আল্লাহ কাফির কওমকে হিদায়াত করেন না।

সুরা নাহল ১৬ঃ১০৬-১০৭

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের যে কেউ কোন অপছন্দনীয় (কথা বা কর্ম) দেখলে সে যেন বলপূর্বক হাত দ্বারা বাধা প্রদান করে। (হাত দ্বারা বাধা প্রদান) সম্ভব না হ’লে যেন কথার মাধ্যমে বাধা প্রদান করে। এটাও সম্ভব না হ’লে সে যেন অন্তর থেকে ঘৃণা করে। আর এটিই হচ্ছে দুর্বল ঈমান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭; বাংলা মিশকাত ৯ম খন্ড, হা/৪৯১০ ‘ভাল কাজের আদেশ প্রসঙ্গ’ অধ্যায়)।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply