ফরজ গোসলের কারণ এবং ফরয ব্যাতিত অন্যান্য গোসল এর মাসালা

ফরজ গোসলের কারণ এবং ফরয ব্যাতিত অন্যান্য গোসল এর মাসালা

ফরজ গোসলের কারণ এবং ফরয ব্যাতিত অন্যান্য গোসল এর মাসালা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১, পবিত্রতা, হাদীস (১৮৮-২৫৪)

১২৩.পরিচ্ছেদঃ যাতে গোসল ফরয হয় আর যাতে ফরয হয় না এবং ইসলাম গ্রহণকালে কাফিরের গোসল করা
১২৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহণের জন্য কাফিরের আগে-ভাগে গোসল করে নেয়া
১২৫.পরিচ্ছেদঃ মুশরিককে দাফন করার পর গোসল
১২৬.পরিচ্ছেদ ঃদুই লজ্জাস্থান পরস্পর মিলিত হলে গোসল ফরয হওয়া
১২৭.পরিচ্ছেদঃ বীর্যপাতের দরুন গোসল
১২৮.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের ন্যায় নারী স্বপ্ন দেখলে তার গোসল
১২৯.পরিচ্ছেদঃ যার স্বপ্নদোষ হয় অথচ বীর্য দেখে না
১৩০.পরিচ্ছেদঃ হায়যের পর গোসল
১৩১.পরিচ্ছেদঃ হায়যের মুদ্দত সম্পর্কিত বর্ণনা
১৩২.পরিচ্ছেদঃ ইস্তেহাযায় আক্রান্ত নারীর গোসল
১৩৩.পরিচ্ছেদঃ নিফাসের গোসল
১৩৪.পরিচ্ছেদঃ হায়য ও ইস্তেহাযার রক্তের পার্থক্য
১৩৫.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে জুনুব {১} ব্যক্তির গোসল না করা
১৩৬.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে পেশাব এবং তাতে গোসল না করা
১৩৭.পরিচ্ছেদঃ রাতের প্রথমভাগে গোসল করা
১৩৮.পরিচ্ছেদঃ প্রথমাংশে ও শেষাংশে গোসল করা
১৩৮.পরিচ্ছেদঃ গোসলের সময় পর্দা করা
১৪০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের গোসলের জন্য পানির পরিমাণ
১৪১.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ না থাকার বর্ণনা
১৪২.পরিচ্ছেদঃ স্বামী এবং স্ত্রীর একই পাত্র থেকে গোসল করা
১৪৩.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির উদ্বৃত্ত পানি দ্বারা গোসল করার উপর নিষেধাজ্ঞা
১৪৪.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে অনুমতি
১৪৫.পরিচ্ছেদঃ আটা-খামির করার পাত্রে গোসল করা
১৪৬.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসলে নারীর মাথার খোপা না খোলা
১৪৭.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রামের গোসলে ঋতুমতির জন্য এর আদেশ
১৪৮.পরিচ্ছেদঃ পাত্রে হাত ঢুকাবার পূর্বে জুনুব ব্যক্তির উভয় হাত ধৌত করা প্রসঙ্গ
১৪৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় হাত পাত্রে ঢুকাবার পূর্বে কতবার ধৌত করিতে হইবে
১৫০.পরিচ্ছেদঃ হাত ধোয়ার পর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে জুনুব ব্যক্তির নাপাকী দূর করা
১৫১.পরিচ্ছেদঃ দেহ হইতে ময়লা দূর করার পর জুনুব ব্যক্তির পুনরায় উভয় হাত ধৌত করা
১৫২.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পূর্বে জুনুব ব্যক্তির উযূ করা
১৫৩.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির মাথা খিলাল করা
১৫৪.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির মাথায় কতটুকু পানি ঢালা যথেষ্ট
১৫৫.পরিচ্ছেদঃ হায়যের গোসলে কি করিতে হয়
১৫৬.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর উযূ না করা
১৫৭.পরিচ্ছেদঃ গোসলের স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে পা ধৌত করা
১৫৮.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর রুমাল ব্যবহার না করা

১২৩.পরিচ্ছেদঃ যাতে গোসল ফরয হয় আর যাতে ফরয হয় না এবং ইসলাম গ্রহণকালে কাফিরের গোসল করা

১৮৮. কায়স ইবনি আসিম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি মুসলমান হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে রসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল করিতে আদেশ করিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহণের জন্য কাফিরের আগে-ভাগে গোসল করে নেয়া

১৮৯. সাঈদ ইবনি আবু সাঈদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, সুমামা ইবনি উসাল হানাফী মসজিদে নববীর নিকটবর্তী একটি বাগানে গেলেন সেখানে গোসল করার পর মসজিদে নববীতে প্রবেশ করিলেন এবং বললেনঃ

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ

“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শরীক নেই, আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাঃআঃ তাহাঁর বান্দা এবং রাসূল।”

হে মুহাম্মদ সাঃআঃ আল্লাহর শপথ, পৃথিবীতে আমার কাছে কোন চেহারাই আপনার চেহারা থেকে অধিক অপ্রিয় ছিল না, এখন আপনার চেহারা আমার নিকট সকল চেহারা থেকে প্রিয়। আপনার সৈনিকরা আমাকে গ্রেফতার করেছে অথচ আমি উমরার ইচ্ছা করেছিলাম। এখন এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? রসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাঁকে সুসংবাদ দান করিলেন এবং তাঁকে উমরাহ্ করিতে অনুমতি দিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৫.পরিচ্ছেদঃ মুশরিককে দাফন করার পর গোসল

১৯০. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

একবার তিনি রসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নিকট এলেন এবং বললেনঃ আবু তালিব মরে গিয়েছেন। রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ যাও, তাকে দাফন কর, আলী [রাঃআঃ]বললেনঃ তিনি তো মুশরিক অবস্থায় মারা গিয়েছেন। রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আবার বললেনঃ যাও তাকে দাফন কর। যখন আমি তাকে দাফন করে তাহাঁর নিকট ফিরে আসলাম, তখন তিনি আমাকে বললেনঃ গোসল করে নাও।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৬.পরিচ্ছেদ  ঃদুই লজ্জাস্থান পরস্পর মিলিত হলে গোসল ফরয হওয়া

১৯১. আবু হুরাইরা হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ কেউ যখন স্ত্রীর চার শাখার মাঝে বসে তার সাথে সহবাসের চেষ্টা করে, তখন গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ যখন কেউ তার স্ত্রীর চার শাখার মাঝে বসে তার সাথে সঙ্গমের চেষ্টা চালায় {১} তখন গোসল ওয়াজিব হয়।

{১} চার শাখা-অর্থাৎ দুই হাত দুই পা।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৭.পরিচ্ছেদঃ বীর্যপাতের দরুন গোসল

১৯৩. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি এমন ছিলাম যে, আমার অধিক মযী নির্গত হতো, রসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বললেনঃ যখন তুমি মযী দেখবে, তখন তোমার পুরুষাঙ্গ ধৌত করিবে এবং নামাজের উযূর ন্যায় উযূ করিবে। আর যখন বীর্য নির্গত হয়, তখন গোসল করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন আমার অত্যধিক মযী নির্গত হতো, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম {১} , তখন তিনি আমাকে বললেনঃ যখন তুমি মযী দেখিতে পাও, তখন তোমার পুরুষাঙ্গ ধৌত করো ও উযূ করো, আর যখন বীর্যের ফোঁটা দেখিতে পাবে, তখন গোসল করিবে।

{১} মিকদাদ [রাঃআঃ] অথবা আম্মার [রাঃআঃ]-এর মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৮.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের ন্যায় নারী স্বপ্ন দেখলে তার গোসল

১৯৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

পুরুষের ন্যায় মহিলার স্বপ্নে দেখা সম্পর্কে উম্মে সুলায়ম [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ বীর্য নির্গত হলে গোসল করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৬. উরওয়া [রহঃ] হইতে বর্ণীত

আয়িশাহ [রাঃআঃ] তাঁকে সংবাদ দিলেন যে, উম্মু সুলায়ম রসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন আয়িশাহ [রাঃআঃ] উপবিষ্ট ছিলেন। উম্মু সুলায়ম বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আল্লাহ্ সত্যের ব্যাপারে লজ্জা করেন না, আমাকে বলেন কোন নারী যদি স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা পুরুষ দেখে থাকে, এতে কি তারও গোসল করিতে হইবে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ হ্যাঁ। আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি তাঁকে বললাম, ধিক তোমায়! নারীও কি তা দেখে? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমার হাত ধুলো-মলিন হোক, তা না হলে সন্তান মাতার মত হয় কি করে? {২}

{২} অর্থাৎ নারীরও পানি আছে বলেই সন্তান মায়েরও চেহারা পায়। আর তারও যখন পানি আছে, তখন স্বপ্নদোষ তো হইতেই পারে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ জনৈক মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আল্লাহ্ তাআলা সত্য প্রকাশে লজ্জা করেন না। নারীদের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন তার উপর কি গোসল ওয়াজিব হয়? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে। এতে উম্মু সালামা হেসে দিলেন, তিনি বললেনঃ নারীরও কি স্বপ্নদোষ হয়? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তা না হলে সন্তান মায়ের সদৃশ হয় কিরূপে?

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮. খাওলা বিনত হাকীম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃআমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এমন নারীর কথা জিজ্ঞাসা করলাম যার স্বপ্নদোষ হয়। তিনি বলিলেনঃসে যখন বীর্য দেখবে, তখন গোসল করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২৯.পরিচ্ছেদঃ যার স্বপ্নদোষ হয় অথচ বীর্য দেখে না

১৯৯. আবু আইয়্যূব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ পানির ব্যবহার পানির কারণেই অপরিহার্য হয় [অর্থাৎ বীর্যপাত হলেই গোসল করিতে হয়] {১}

{১} উক্ত হাদীসে ইহতিলাম বা স্বপ্নদোষের হুকুম বর্ণনা করা হয়েছে। সহবাসের বেলায় এটা প্রযোজ্য নয়। এ সম্পর্কে অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের লজ্জাস্থান পরস্পর মিলিত হলেই গোসল ওয়াজিব হয়।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা বর্ণের এবং নারীর বীর্য পাতলা হলদে বর্ণের। এতদুভয়ের যেটিই পূর্বে নির্গত হয় সন্তান তার সদৃশ হয়ে থাকে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩০.পরিচ্ছেদঃ হায়যের পর গোসল

২০১. ফাতিমা বিনতে কায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে উল্লেখ করিলেন যে, তার অতিরিক্ত রক্তস্রাব হয়। তাহাঁর ধারণা যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বলেছেন যে, তা একটি শিরার রক্ত {১} মাত্র। অতএব যখন হায়য আরম্ভ হয় তখন নামাজ ছেড়ে দেবে-আর যখন হায়যের মেয়াদ অতিবাহিত হয়, তখন রক্ত ধৌত করিবে তারপর নামাজ আদায় করিবে।

{১} কোন মহিলার হায়যের নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় রজঃস্রাব হলে তাকে ইস্তেহাযা বলে। এটা এক প্রকারের ব্যাধি।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন হায়য আরম্ভ হয় তখন নামাজ ছেড়ে দেবে আর যখন তা বন্ধ হয়ে যায় [অর্থাৎ হায়যের মেয়াদ অতিবাহিত হয়] তখন গোসল করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ উম্মে হাবীবা বিনত জাহশ সাত বছর ইস্তেহাযায় ভুগছিলেন। তিনি এব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অবহিত করিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা হায়য নয় বরং এটা একটি শিরার রক্ত মাত্র। অতএব, তুমি গোসল কর এবং নামাজ আদায় কর।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন আব্দুর রহমান ইবনি আউফ [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা বিন্ত জাহ্শ [রাঃআঃ] যিনি ছিলেন উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিন্ত জাহ্শ [রাঃআঃ]-এর বোন—ইস্তেহাযায় আক্রান্ত ছিলেন, আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেনঃ তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এ বিষয়ে ফতওয়া জিজ্ঞাসা করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ এটা হায়য নয়। এটা একটি শিরার রক্ত মাত্র। অতএব যখন হায়য বন্ধ হয়ে যায়, তখন গোসল করিবে এবং নামাজ আদায় করিবে। আবার যখন হায়য আরম্ভ হইবে, তখন নামাজ ছেড়ে দেবে। হযরত আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেনঃ এরপর তিনি প্রত্যেক নামাজের জন্য গোসল করিতেন এবং নামাজ আদায় করিতেন। কোন কোন সময় তিনি তাহাঁর বোন যয়নবের কক্ষে যখন যয়নব রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট থাকতেন, একটি বড় গামলায় গোসল করিতেন। এমনকি রক্তের লাল রং পানির উপর উঠে আসত। তারপর তিনি বের হইতেন এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজে শরীক হইতেন। এটা তাকে নামাজে বাধা প্রদান করত না।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২০৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আবদুর রহমান ইবনি আউফ [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শ্যালিকা উম্মে হাবীবা [রাঃআঃ] সাত বছর যাবত ইস্তেহাযায় ভুগছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ফতওয়া জিজ্ঞাসা করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা হায়য নয়, বরং এটা একটি শিরার রক্ত। অতএব তুমি গোসল কর এবং নামাজ আদায় কর।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০৬. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ উম্মে হাবীবা বিনত জাহ্শ [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ফতওয়া জিজ্ঞাসা করিতে গিয়ে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ইস্তেহাযায় আক্রান্ত। তিনি বললেনঃ এটা একটি শিরার রক্ত মাত্র। অতএব তুমি গোসল কর এবং নামাজ আদায় কর। এরপর উম্মে হাবীবা প্রত্যেক নামাজের জন্য গোসল করিতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

উম্মে হাবীবা [রাঃআঃ] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে [ইস্তেহাযার] রক্ত প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করিলেন। হযরত আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি তাহাঁর টব রক্তে পূর্ণ দেখেছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ তোমার হায়য যতদিন তোমাকে তোমার নামাজ হইতে বিরত রাখত, ততদিন বিরত থাক তারপর গোসল কর।

কুতায়বা [রহঃ] থেকে অন্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাতে তিনি জাফরের {১} নাম উল্লেখ করেননি।

{১} জাফর পূর্বোক্তঃ রিওয়ায়াতের সনদে একজন রাবী।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০৮. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সময়ে জনৈকা মহিলার সর্বদা রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, উম্মে সালামা তাহাঁর এ ব্যপারে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ [রক্তস্রাব বন্ধ না হওয়ার] যে রোগে সে আক্রান্ত, সে রোগ হওয়ার পূর্বে তার প্রত্যেক মাসে কতদিন কত রাত হায়য আসত সে তার প্রতি লক্ষ্য রাখবে। মাসের সেই দিন ও রাত্রিগুলোতে নামাজ আদায় করিবে না। তারপর সে দিনগুলো অতিবাহিত হলে সে গোসল করিবে ও লজ্জাস্থান কাপড় দিয়ে বেঁধে নেবে এবং নামাজ আদায় করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩১.পরিচ্ছেদঃ হায়যের মুদ্দত সম্পর্কিত বর্ণনা

২০৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

উম্মে হাবীবা বিনত জাহ্‌শ যিনি আবদুর রহমান ইবনি আউফের সহধর্মিণী ছিলেন- ইস্তেহাযায় আক্রান্ত হলেন যা অবিরাম চলতে লাগল। তাহাঁর এ অবস্থা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উল্লেখ করা হলে তিনি বললেনঃ তা হায়য নয়, বরং তা জরায়ুর স্পন্দন মাত্র। অতএব সে যেন তার হায়যের মুদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রাখে এবং সে দিনগুলোতে নামাজ আদায় হইতে বিরত থাকে। হায়যের মুদ্দত অতিবাহিত হলে সে যেন প্রত্যেক নামাজের জন্য গোসল করে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

উম্মে হাবীবা বিনত জাহ্‌শ [রাঃআঃ] সাত বছর ইস্তেহাযায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ এটা হায়য নয়, বরং এটা একটি শিরা মাত্র [যা হইতে রক্ত নির্গত হয়]। অতএব তিনি তাকে তার হায়যের মুদ্দত পরিমাণ নামাজ ত্যাগ করিতে আদেশ দিলেন। তারপর গোসল করিতে ও নামাজ আদায় করিতে বলিলেন। এরপর তিনি প্রত্যেক নামাজের জন্য গোসল করিতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১১. উরওয়া [রহঃ] হইতে বর্ণীত

ফাতিমা বিনত আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে তাহাঁর রক্তক্ষরণ জনিত অসুবিধার কথা জানালেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ এটা একটি শিরা মাত্র [যা হইতে রক্ত নির্গত হয়]। অতএব লক্ষ্য রাখবে যখন তোমার হায়য উপস্থিত হয়, তখন নামাজ আদায় করা থেকে বিরত থাকিবে। আর যখন তোমার হায়য অতিবাহিত হয় এবং তুমি পবিত্র হও, তখন তুমি নামাজ আদায় করিবে এক হায়য হইতে অন্য হায়য-এর মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত।

এ হাদিস হইতে বুঝা যায় [আরবি] আকরা এখানে হায়য অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। আবু আব্দুর রহমান বলেনঃ হিশাম ইবনি উরওয়া [রহঃ] এ হাদিসটি উরওয়া থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু মুনযির [রাবী] তাতে এ [হায়য] সম্পর্কে যা উল্লেখ করিয়াছেন তা তিনি উল্লেখ করেন নি।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিন্‌ত আবী হুবায়শ [রাঃআঃ] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললেনঃ আমি একজন ইস্তেহাযায় আক্রান্ত মহিলা; আমি পাক হই না। এমতাবস্থায় আমি কি নামাজ ত্যাগ করব? তিনি বললেনঃ না, এটা হায়য নয়। এটা একটি শিরার রক্ত মাত্র। যখন তোমার হায়য আরম্ভ হইবে তখন নামাজ ছেড়ে দেবে। যখন তা আতিবাহিত হয় তখন রক্ত ধুয়ে নামাজ আদায় করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩২.পরিচ্ছেদঃ ইস্তেহাযায় আক্রান্ত নারীর গোসল

২১৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সময় একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত নারীকে বলা হয়েছিল যে, এটা একটি শিরামাত্র, যার রক্ত বন্ধ হয় না। তাঁকে আদেশ করা হয়েছিল, সে যেন যোহ্‌র নামাজকে পিছিয়ে শেষ ওয়াক্তে এবং আসরের নামাজকে প্রথম ওয়াক্তে আদায় করে এবং উভয় নামাজের জন্য একবারই গোসল করে এবং মাগরিবকে শেষ ওয়াক্তে এবং ইশাকে প্রথম ওয়াক্তে আদায় করে এবং এ দুই নামাজের জন্য একবারই গোসল করে। আর ফজরের নামাজের জন্য একবার গোসল করে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩.পরিচ্ছেদঃ নিফাসের গোসল

২১৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি আসমা বিনতে উমায়স [রাঃআঃ] এর হাদীসে বর্ণনা করেন যে, তিনি যখন যুল-হুলায়ফা নামক স্থানে নিফাসগ্রস্ত হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ]-কে বললেনঃ তাকে [আসমা বিনতে উমায়স] গোসল করে ইহরাম বাঁধতে বল।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪.পরিচ্ছেদঃ হায়য ও ইস্তেহাযার রক্তের পার্থক্য

২১৫. ফাতিমা বিনতে আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তাহাঁর ইস্তেহাযা হলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ যখন হায়যের রক্ত হয়, যা কাল রক্ত, চেনা যায়, তখন তুমি নামাজ থেকে বিরত থাকিবে, আর যখন অন্য রক্ত হয় তখন উযূ করে নেবে। কেননা তা একটি শিরামাত্র [যা হইতে রক্ত নির্গত হয়]।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

২১৬. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

ফাতিমা বিনত আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] এর ইস্তেহাযা হলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ হায়যের রক্ত কাল বর্ণের হয়ে থাকে যা সহজে চেনা যায়। যখন এ রক্ত দেখা দেবে তখন নামাজ থেকে বিরত থাকিবে, আর যখন অন্য রক্ত দেখা দেবে তখন উযূ করিবে এবং নামাজ আদায় করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

২১৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিনত আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] এর ইস্তেহাযা হলে তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার ইস্তেহাযা হয়, অতএব আমি পাক হই না। এমতাবস্থায় আমি কি নামাজ ত্যাগ করব? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা হায়য নয়, এটা একটা শিরামাত্র। অতএব যখন হায়য দেখা দেয় তখন নামাজ আদায় করিবে না। আর যখন হায়য বন্ধ হইবে তখন রক্তের চিহ্ন ধৌত করিবে এবং উযূ করে নেবে। কারণ এটা হায়য নয়, বরং [একটা শিরা মাত্র যা হইতে রক্ত নির্গত হয়]। তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, হায়য বন্ধ হওয়ার পর কি গোসল করিতে হইবে? তিনি বললেনঃ এতে কারও সন্দেহ থাকতে পারে না।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীততিনি বলেনঃ

ফাতিমা বিনত আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আমি পাক হই না, আমি কি নামাজ ত্যাগ করব? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এটা একটি শিরামাত্র [যা হইতে রক্ত নির্গত হয়], এটা হায়য নয়। যখন হায়য দেখা দেবে, তখন নামাজ ত্যাগ করিবে আর যখন হায়যের মুদ্দত অতিবাহিত হইবে, তখন গোসল করে রক্ত দূর করিবে এবং নামাজ আদায় করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আবু হুবায়শের কন্যা বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি পাক হই না, অতএব আমি কি নামাজ ত্যাগ করবো? তিনি বললেনঃ না, এটা একটি শিরামাত্র [যা হইতে রক্ত নির্গত হয়]। খালিদ বললেনঃ আমি তার নিকট যা পাঠ করেছি তাহলো, তা হায়য নয়, অতএব যখন হায়য আসে তখন নামাজ ছেড়ে দেবে আর যখন শেষ হয়ে যায় তখন তোমরা গোসল করে নামাজ আদায় করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৫.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে জুনুব {১} ব্যক্তির গোসল না করা

২২০. বুকায়র [রহঃ] হইতে বর্ণীত

আবু সায়িব তাহাঁর নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন জানাবাত অবস্থায় বদ্ধ পানিতে গোসল না করে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৬.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে পেশাব এবং তাতে গোসল না করা

২২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে, যাতে সে পরে গোসল করিবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৭.পরিচ্ছেদঃ রাতের প্রথমভাগে গোসল করা

২২২. গুযায়ফ ইবনি হারিস [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি আয়িশাহ [রাঃআঃ] কে জিজ্ঞাসা করেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের কোন অংশে গোসল করিতেন? তিনি বললেনঃ কোন কোন সময় তিনি রাতের প্রথমভাগে গোসল করিতেন আবার কোন কোন সময় রাতের শেষ ভাগে গোসল করিতেন। আমি বললাম, সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ্‌র, যিনি এ ব্যাপারে অবকাশ রেখেছেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮.পরিচ্ছেদঃ প্রথমাংশে ও শেষাংশে গোসল করা

২২৩. গুযায়ফ ইবনি হারিস [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ] –এর নিকট গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের প্রথমভাগে গোসল করিতেন না শেষভাগে? তিনি বললেনঃ সব রকমই করিয়াছেন। কোন সময় রাতের প্রথমভাগে গোসল করিয়াছেন আবার কোন সময় রাতের শেষভাগে গোসল করিয়াছেন। আমি বললাম, সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌ তাআলার, যিনি এ ব্যাপারে অবকাশ রেখেছেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৯.পরিচ্ছেদঃ গোসলের সময় পর্দা করা

২২৪. মুহিল ইবনি খলীফা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আবুস সামহ্‌ [রাঃআঃ] আমার নিকট বর্ণনা করেছেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর খেদমত করতাম। তিনি যখন গোসল করার ইচ্ছা করিতেন, তখন বলিতেনঃ তোমার পিঠটা আমার দিকে ঘুরিয়ে দাও। তখন আমি আমার পিঠ তাহাঁর দিকে ঘুরিয়ে দিতাম। এভাবে তাঁকে পর্দা করতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২৫. উম্মে হানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি মক্কা বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট গিয়ে দেখলেন, তিনি গোসল করছেন আর ফাতিমা [রাঃআঃ] তাঁকে একখানা কাপড় দ্বারা পর্দা করে আছেন। তিনি তাঁকে সালাম করিলেন, তিনি বলিলেন ইনি কে? আমি বললাম, আমি উম্মে হানী। তিনি গোসল শেষ করিলেন এবং পরে একখানা কাপড় জড়িয়ে আট রাকআত নামাজ আদায় করিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের গোসলের জন্য পানির পরিমাণ

২২৬. মুসা জুহানী [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ মুজাহিদ [রহঃ]-এর নিকট একটি পেয়ালা আনা হলো, আমার অনুমান তাতে আট রত্‌ল {১} পরিমাণ পানি হইবে। পরে তিনি বললেনঃ আমাকে আয়িশাহ [রাঃআঃ] বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ পরিমাণ পানি দ্বারা গোসল করিতেন।

{১} এক রত্‌ল বলিতে সাধারণত আধা সের, যা বর্তমান পরিমাণে প্রায় ১/২ লিটার।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২৭. আবু বকর ইবনি হাফ্‌স [রহঃ] হইতে বর্ণীত

আমি আবু সালামাকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি এবং আয়িশাহ [রাঃআঃ]–এর দুধভাই তাহাঁর নিকট গেলাম। তাহাঁর ভাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর গোসল সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলেন। তখন তিনি এমন একটি পাত্র আনলেন যাতে এক সা পরিমাণ পানি ছিল। তারপর তিনি যথাযথ পর্দা করে গোসল করিলেন এবং তাহাঁর মাথায় তিনবার পানি ঢাললেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমন এক পানির পাত্রে গোসল করিতেন যার নাম ফারাক [যাতে ষোল রত্‌ল পানি ধরত] আর আমি এবং তিনি একই পাত্রে গোসল করতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২৯. আবদুল্লাহ ইবনি জাবর [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মাক্‌কুক {২} দ্বারা উযূ করিতেন এবং গোসল করিতেন পাঁচ মাক্‌কুক দ্বারা। {৩}

{২} মাককূক অর্থ এক মুদ্দ। আর ১ মুদ্দ ইরাকের ফকীহগণের মতে ২ রতল বা ১ লিটার [প্রায়] এবং হিজাযের ফকীহগণের মতে ১ রতল ও ১ রতলের তিন ভাগের এক ভাগ বা পৌনে ১ লিটার [প্রায়]।{৩} ৫ মাককূক ইরাকী ফকীহগণের মতে ১০ রতল বা পৌনে ৫ লিটার [প্রায়]। আর হিজাযের ফকীহগণের মতে ৩ লিটারের একটু বেশি।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩০. আবু জাফর [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমরা জাবির ইবনি আবদুল্লাহর সম্মুখে গোসলের ব্যাপারে সন্দেহে পতিত হলাম। তখন জাবির [রাঃআঃ] বললেনঃ জানাবাতের গোসলে এক সা {১} পানিই যথেষ্ট। আমরা বললাম এক সা অথবা দুই সা কোনরূপই যথেষ্ট নয়। জাবির বললেনঃ তোমাদের থেকে উত্তম ও অধিক কেশযুক্ত ব্যক্তির [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর] জন্য তা যথেষ্ট হতো।

{১} ১সা সকলের মতে ৪ মুদ্দ। ইরাকী হিসাবমতে তাতে হয় ৮ রতল বা পৌনে ৪ লিটার [প্রায়]। আর হিজাযী হিসাবমতে তাতে হয় ৫.৩৩ রতল বা আড়াই লিটার। উল্লেখ্য, ১ রতল=৪০ তোলা।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪১.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ না থাকার বর্ণনা

২৩১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করতাম আর সে পাত্র ছিল ফারাক [ষোল রাত্‌ল পরিমাপের একটি পাত্র]

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪২.পরিচ্ছেদঃ স্বামী এবং স্ত্রীর একই পাত্র থেকে গোসল করা

২৩২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং আমি একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমরা অঞ্জলিপূর্ণ করে তা থেকে একই সময় পানি নিতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৩৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে জানাবাতের গোসল করতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমার স্মরণ আছে, আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে পাত্র থেকে গোসল করতাম সে পাত্র নিয়ে আমি ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাড়াকাড়ি করতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করতাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমাকে আমার খালা [উম্মুল মুমিনীন] মায়মূনা [রাঃআঃ] সংবাদ দিয়েছেন, তিনি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করিতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩৭. আবদুর রহমান ইবনি হুরমূয আল-আরাজ [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমাকে উম্মে সালামার আযাদকৃত গোলাম নায়িম বর্ণনা করিয়াছেন যে, উম্মে সালামা [রাঃআঃ]–কে জিজ্ঞাসা করা হলো, স্ত্রী কি পুরুষের সাথে গোসল করিতে পারে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, করিতে পারে যখন স্ত্রী বুদ্ধিমতী হয়। আমার স্মরণ আছে, আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই গামলা থেকে গোসল করতাম। আমরা আমাদের উভয় হাতে পানি ঢালতাম এবং তা ধুইতাম পরে তার উপর পানি ঢালতাম। আরাজ [রহঃ] বুদ্ধিমতী–এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেনঃ যে লজ্জাস্থানের উল্লেখ করে না এবং নির্বোধ মহিলার ন্যায় আচরণ করে না।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৩.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির উদ্বৃত্ত পানি দ্বারা গোসল করার উপর নিষেধাজ্ঞা

২৩৮. হুমায়দ ইবনি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি সাক্ষাৎ লাভ করেছি এমন এক ব্যক্তির যিনি চার বৎসর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহচর্য লাভ করেছিলেন যেরূপ আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] তাহাঁর সাহচর্য লাভ করিয়াছেন। তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের প্রতিদিন মাথা আচঁড়াতে এবং গোসলের স্থানে পেশাব করিতে নিষেধ করিয়াছেন আর স্ত্রীর উদ্বৃত্ত পানি দ্বারা পুরুষের এবং পুরুষের উদ্বৃত্ত পানি দ্বারা স্ত্রীর গোসল করিতে এবং তাহাদের একত্রে অঞ্জলি দিয়ে পানি নিতেও নিষেধ করিয়াছেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৪.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে অনুমতি

২৩৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। তিনি আমার পূর্বে পানি নেয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করিতেন, আমি তাহাঁর পূর্বে নেয়ার জন্য তাড়াহুড়া করতাম। এমনকি তিনি বলিতেন, আমার জন্য রাখ, আর আমি বলতাম আমার জন্য রাখুন। সুওয়ায়দ [রহঃ] বলেনঃ আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেছেন, তিনি আমার পূর্বে ও আমি তাহাঁর পূর্বে পানি নেয়ার জন্য চেষ্টা করতাম। এক পর্যায়ে আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন, আমার জন্য রাখুন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫.পরিচ্ছেদঃ আটা-খামির করার পাত্রে গোসল করা

২৪০. উম্মে হানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও মায়মূনা [রাঃআঃ] একই পাত্রে গোসল করেছেন্‌ তা এমন পাত্র ছিল যাতে আটার খামিরের চিহ্ন ছিল।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসলে নারীর মাথার খোপা না খোলা

২৪১. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! আমি শক্ত করে বেণী করি। আমি কি জানাবাতের গোসলের সময় তা ধোয়ার জন্য খুলে ফেলবো? তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মাথায় তিন অঞ্জলি পানি দিয়ে পরে তোমার শরীরে পানি ঢালবে। {১}

{১} যে সমস্ত স্ত্রীলোকের চুল লম্বা এবং ঘন, তাহাদের জন্য জানাবাতের গোসলের সময় চুলের গোড়া ভিজলেই যথেষ্ট। বেণী বা খোপা না খুলেও তা করা যায়।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৭.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রামের গোসলে ঋতুমতির জন্য এর আদেশ

২৪২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমরা বিদায় হজ্জের বছর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সঙ্গে বের হলাম, তারপর আমি উমরার ইহ্‌রাম বাধঁলাম। আর আমি হায়য অবস্থায় মক্কায় উপস্থিত হলাম। ফলে আমি কাবাঘরের ও সাফা-মারওয়ার তাওয়াফ করিতে পারলাম না। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এ ব্যাপারে মনঃকষ্টের কথা জানালাম। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মাথার চুল খুলে ফেল এবং আঁচড়াও, আর হজ্জের ইহরাম বাঁধ, উমরার নিয়্যত ছাড়। আমি তাই করলাম। তারপর যখন আমরা হজ্জের কাজ সমাপ্ত করলাম, তিনি আমাকে আবদুর রহমান ইবনি আবু বকরের সাথে তানঈমে {১} পাঠালেন। তখন আমি উমরা করলাম। তিনি বললেনঃ এ-ই তোমার উমরার স্থান। আবু আবদুর রহমান বলেনঃ এ হাদিসটি গরীব, কারণ মালিক থেকে আশ্‌হাব ভিন্ন আর কেউ এটি বর্ণনা করেন নি।

{১} মক্কার অদূরে হারামের বাইরে একটি স্থানের নাম, যেখান থেকে ইহরাম বাঁধা হয়ে থাকে।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮.পরিচ্ছেদঃ পাত্রে হাত ঢুকাবার পূর্বে জুনুব ব্যক্তির উভয় হাত ধৌত করা প্রসঙ্গ

২৪৩. আবু সালামা ইবনি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আয়িশাহ [রাঃআঃ] আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন, তাহাঁর জন্য পাত্র রাখা হত, তখন তিনি তাহাঁর হাতদ্বয়কে পাত্রে ঢুকাবার পূর্বে তার উপর পানি ঢেলে নিতেন তারপর যখন উভয় হাত ধুয়ে নিতেন তখন নিজ ডান হাত পাত্রে ঢুকাতেন। তারপর ডান হাতে পানি ঢালতেন আর বাম হাতে তাহাঁর লজ্জাস্থান ধৌত করিতেন। এ কাজ শেষ করার পর তিনি ডান হাতে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এভাবে উভয় হাত ধুয়ে ফেলতেন। তারপর তিনি তিনবার কুল্লি করিতেন এবং নাকে পানি দিতেন। পরে উভয় হাতের তালুভরে মাথায় তিনবার পানি ঢালতেন। তারপর দেহে পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় হাত পাত্রে ঢুকাবার পূর্বে কতবার ধৌত করিতে হইবে

২৪৪. আবু সালমা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ]-কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জানাবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিনবার হাতে পানি ঢালতেন, তারপর লজ্জাস্থান ধুতেন। তারপর উভয় হাত ধুতেন, পরে কুলি করিতেন এবং নাকে পানি দিতেন। তারপর মাথার উপর তিনবার পানি ঢালতেন। এরপর তাহাঁর সমস্ত শরীরের উপর পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫০.পরিচ্ছেদঃ হাত ধোয়ার পর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে জুনুব ব্যক্তির নাপাকী দূর করা

২৪৫. আতা ইবনি সায়িব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি আবু সালামা [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি আয়িশাহ [রাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে তাঁকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জানাবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পানির পাত্র আনা হলে তিনি নিজ হাত তিনবার পানি ঢেলে ধৌত করিতেন। তারপর তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাতে পানি ঢালতেন। সে পানি দ্বারা উভয় উরু ধৌত করিতেন। পরে উভয় হাত ধৌত করিতেন, কুলি করিতেন এবং নাক পরিস্কার করিতেন। তারপর মাথায় তিনবার পানি ঢালতেন। এরপর সমস্ত শরীরে পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫১.পরিচ্ছেদঃ দেহ হইতে ময়লা দূর করার পর জুনুব ব্যক্তির পুনরায় উভয় হাত ধৌত করা

২৪৬. আবু সালামা ইবনি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আয়িশাহ [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জানাবাতের গোসলের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন যে, তিনি উভয় হাত তিনবার ধৌত করিতেন। তারপর তাহাঁর ডান হাত দ্বারা বাম হাতের উপর পানি ঢালতেন। এরপরে তাহাঁর লজ্জাস্থান ধৌত করিতেন এবং যে সকল স্থানে নাপাকী লেগেছে তা ধুতেন। উমর ইবনি উবায়দ বলেনঃ আমি তাঁকে {বর্ণনাকারী আতা ইবনি সায়িব [রহঃ]-কে} এ ব্যতীত আর কিছু বলিতে শুনিনি। তিনি বলেছেন যে, তিনি ডান হাতে বাম হাতের উপর তিনবার পানি ঢালতেন এবং তিনবার কুলি করিতেন। আর তিনবার নাকে পানি দিতেন এবং তাহাঁর চেহারাও দুহাত তিনবার ধুয়ে ফেলতেন। তারপর মাথায় তিনবার পানি ঢালতেন। পরিশেষে তাহাঁর সর্বাঙ্গে পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫২.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পূর্বে জুনুব ব্যক্তির উযূ করা

২৪৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন তখন উভয় হাত ধোয়ার মাধ্যমে আরম্ভ করিতেন। তারপর নামাজের উযূর মত উযূ করিতেন। তারপর আঙ্গুলসমূহ পানিতে ডুবিয়ে তদ্বারা তাহাঁর চুলের গোড়া খিলাল করিতেন। পরে মাথায় তিন অঞ্জলি পানি দিতেন। এরপর সর্বাঙ্গে পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৩.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির মাথা খিলাল করা

২৪৮. উরওয়া [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আয়িশাহ [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর জানাবাতের গোসল সম্বন্ধে আমাকে বলেছেন যে, তিনি উভয় হাত ধৌত করিতেন, উযূ করিতেন এবং মাথায় খিলাল করিতেন, যেন পানি তাহাঁর চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে, তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর মাথায় [খিলালের সাহায্যে] পানি পৌঁছাতেন তারপর মাথায় তিন অঞ্জলি পানি ঢালতেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৪.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির মাথায় কতটুকু পানি ঢালা যথেষ্ট

২৫০. জুবায়র ইবনি মুতঈম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সামনে সাহাবীগণ গোসল সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হলেন। তাঁদের কেউ বললেনঃ আমি এভাবে গোসল করি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ কিন্তু আমি আমার মাথায় তিন অঞ্জলি পানি ঢালি।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৫.পরিচ্ছেদঃ হায়যের গোসলে কি করিতে হয়

২৫১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক মহিলা তার হায়যের গোসল সম্বন্ধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট জিজ্ঞাসা করলো। তিনি তাকে কিভাবে গোসল করিতে হইবে তা বলিলেন। তারপর বললেনঃ মিশ্‌ক মিশ্রিত একখন্ড তুলা নিয়ে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। সে বলিল, তা দ্বারা কিভাবে পবিত্র হবো? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] {লজ্জায়} এভাবে মুখ ঢাকলেন {বর্ণনাকারী নিজ মুখ ঢেকে দেখালেন} এবং বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেনঃ তখন আমি ঐ মহিলাকে টেনে নিলাম এবং বললাম, এটা যেখানে রক্তের চিহ্ন আছে সেখানে লাগাবে।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৬.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর উযূ না করা

২৫২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসলের পর উযূ করিতেন না। {১}

{১} অর্থাৎ গোসলের পূর্বে যে উযূ করিয়াছেন সে উযূই যথেষ্ট বলে মনে করিতেন অথবা গোসলের মাধ্যমে উযূর উদ্দেশ্য হাসিল হয় বলে পুনরায় উযূ করিতেন না।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৭.পরিচ্ছেদঃ গোসলের স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে পা ধৌত করা

২৫৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমার খালা মায়মূনা [রাঃআঃ] আমার নিকট বর্ণনা করেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর জানাবাতের গোসলের সময় তাহাঁর কাছে পানি এগিয়ে দিলাম। তিনি দুবার কি তিনবার উভয় হাত [কব্জি পর্যন্ত] ধুলেন, তারপর তাহাঁর ডান হাত পাত্রে ঢুকালেন। ঐ হাতে তাহাঁর লজ্জাস্থানে পানি ঢাললেন এবং বাম হাতে তা ধুলেন। তারপর বাম হাত মাটিতে রেখে তা উত্তমরূপে ঘষলেন। তারপর নামাজের উযূর মত উযূ করিলেন। এরপর অঞ্জলিভরে তিন অঞ্জলি পানি মাথায় ঢাললেন। তারপর সমস্ত শরীর ধৌত করিলেন। এরপর গোসলের স্থান হইতে সরে উভয় পা ধৌত করিলেন। পরিশেষে আমি তাহাঁর নিকট রুমাল নিয়ে গেলে তিনি তা ফিরিয়ে দিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫৮.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর রুমাল ব্যবহার না করা

২৫৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] গোসল করার পর তাহাঁর নিকট রুমাল আনা হলো। কিন্তু তিনি তা স্পর্শ করিলেন না এবং এরূপে পানি ঝেড়ে ফেলতে লাগলেন। {১}

{১} গোসলের পর দেহের পানি মোছার জন্য তিনি কখনো রুমাল ব্যবহার করিতেন, কখনো করিতেন না।নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply