পিতা মাতার জন্য দোয়া এবং সদ্ধ্যবহার করা

পিতা মাতার জন্য দোয়া পর্ব – পিতা-মাতার সাথে সদ্ধ্যবহার

পিতা মাতার জন্য দোয়া , এই অধ্যায়ে মোট = ৪৭ টি হাদীস (১ – ৪৬) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ১ পিতা-মাতার সাথে সদ্ধ্যবহার

১. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ “আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি” [২৯ : ৮]।
২. অনুচ্ছেদঃ মায়ের সাথে সদাচার।
৩. অনুচ্ছেদঃ পিতার সাথে সদাচার।
৪. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতা যুলুম করলেও তাহাদের সাথে সদাচার করিতে হইবে।
৫. অনুচ্ছেদঃ পিতা- মাতার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলা।
৬. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার প্রতিদান।
৭. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়ার পরিণতি।
৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় আল্লাহ তাকে অভিশাপ দেন।
৯. অনুচ্ছেদঃ পাপাচার ব্যতীত অন্য সকল ব্যাপারে পিতা-মাতার অনুগত থাকা।
১০. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতাকে পেয়েও যে ব্যক্তি বেহেশত লাভ করিতে পারেনি।
১১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতার সাথে সদাচার করে আল্লাহ তার আয়ু বৃদ্ধি করেন।
১২. অনুচ্ছেদঃ কেউ নিজ মুশরিক পিতার জন্য যেন ক্ষমা প্রার্থনা না করে।
১৩. অনুচ্ছেদঃ মুশরিক পিতার সাথেও সদাচার করিতে হইবে।
১৪. অনুচ্ছেদঃ কেউ যেন নিজ পিতা-মাতাকে গালি না দেয়।
১৫. অনুচ্ছেদ পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়ার শাস্তি।
১৬. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার কান্না।
১৭. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার দোয়া।
১৮. অনুচ্ছেদঃ খৃস্টান ধর্মাবলম্বী মাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দেয়া।
১৯. অনুচ্ছেদঃ মৃত পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
২০. অনুচ্ছেদঃ পিতা যাদের সাথে সদাচার করিতেন তাহাদের সাথে সস্তানের সদাচার।
২১. অনুচ্ছেদঃ তোমার পিতা যাদের সাথে সম্পর্ক রাখতেন, তুমি তাহাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। অন্যথায় তোমার ঈমানের আলো নিভে যাবে।
২২. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা উত্তরাধিকার সূত্রে আসে।
২৩. অনুচ্ছেদঃ পিতার নাম নিও না, তার আগে বসো না এবং তার আগে আগে চলো না।
২৪. অনুচ্ছেদঃ পিতাকে কি উপনামে ডাকা যায়?

১. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ “আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি” [২৯ : ৮]।

১. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হইতে বর্ণীত

আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল কি? তিনি বলেনঃ ওয়াক্তমত নামায পড়া। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেনঃ পিতা-মাতার সাথে সদাচার। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ। রাবী বলেন, তিনি আমাকে এইসব বিষয়ে বলিলেন। আমি আরো জিজ্ঞেস করলে তিনি অবশ্যই আমাকে আরো বলিতেন।

[বোখারী, মুসলিম, দারেমী, তিরমিজী, নাসায়ী] পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

[কারো প্রতি তার] পিতা সন্তুষ্ট থাকলে প্রভুও তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন এবং তার পিতা অসন্তুষ্ট থাকলে প্রভুও অসন্তুষ্ট থাকেন।-

[তিরমিজী, হাকিম, বাযযার, তাহাবী, আদ-দুররুল মানসুর] তাহকীক আলবানীঃ মাওকুফ সুত্রে হাসান, মারফু’ সুত্রে সহীহ। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২. অনুচ্ছেদঃ মায়ের সাথে সদাচার।

৩. হাকীম ইবনি হিযাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সদ্ব্যবহার পেতে কে অগ্রগণ্য? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার পিতা, তারপর ক্রমান্বয়ে আত্মীয়ের সম্পর্কের নৈকট্যের ভিত্তিতে

[দারিমি, তিরমিজী, হাকিম]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক মহিলাকে বিবাহের প্রস্তাব দিলাম। সে আমাকে বিবাহ করিতে অস্বীকার করলো। অপর এক ব্যক্তি তাকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে সে তাকে বিবাহ করিতে পছন্দ করলো। এতে আমার আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লাগলে আমি তাকে হত্যা করি। আমার কি তওবার কোন সুযোগ আছে? তিনি বলেন, তোমার মা কি জীবিত আছেন? সে বললো, না। তিনি বলেন, তুমি মহামহিম আল্লাহর নিকট তওবা করো এবং যথাসাধ্য তার নৈকট্য লাভে যত্নবান হও। আতা [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তার মা জীবিত আছে কিনা তা আপনি কেন জিজ্ঞেস করিলেন? তিনি বলেন, আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য মায়ের সাথে সদাচারের চেয়ে উত্তম কোন কাজ আমার জানা নাই।

[বাযযার] পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩. অনুচ্ছেদঃ পিতার সাথে সদাচার।

৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

ইয়া রসূলাল্লাহ! সদাচার প্রাপ্তির অগ্রগণ্য ব্যক্তি কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার মা। তিনি বলেন, তারপর কে? তিনি বলেনঃ তোমার পিতা

[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ, আবু দাউদ, তাহাবী] পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, আপনি আমাকে কি আদেশ করেন? তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করিবে। সে একই কথা বললে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করিবে। সে পুনরায় একই কথা বললে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করিবে। সে চতুর্থবার জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সাথে সদাচার করিবে। সে পঞ্চমবার জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তোমার পিতার সাথে সদাচার করিবে

[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ, আবু দাউদ, তাহাবী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতা যুলুম করলেও তাহাদের সাথে সদাচার করিতে হইবে।

৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে কোন মুসলমানের মুসলিম পিতা-মাতা জীবিত থাকলে এবং সে ভোরবেলা সওয়াবের আশায় তাহাদের খোঁজ-খবর নিলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বেহেশতের দু’টি দরজা খুলে দেন এবং তাহাদের একজন থাকলে একটি দরজা। সে তাহাদের কোন একজনকে অসন্তুষ্ট করলে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাকে সন্তুষ্ট না করিবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হন না। বলা হলো, তারা তার উপর যুলুম করে থাকলে? তিনি বলেন, তারা তার উপর যুলুম করলেও

[বাযযার]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫. অনুচ্ছেদঃ পিতা- মাতার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলা।

৮. তায়সাল ইবনি মায়্যাস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমি যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত ছিলাম। আমি কিছু পাপকাজ করে বসি যা আমার মতে কবীরা গুনাহর শামিল। আমি তা ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, তা কি? আমি বললাম, এই এই ব্যাপার। তিনি বলেন, এগুলো কবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত নয়। কবীরা গুনাহ নয়টিঃ [১] আল্লাহর সাথে শরীক করা, [২] নরহত্যা, [৩] জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন, [৪] সতী-সাধ্বী নারীর বিরুদ্ধে যেনার মিথ্যা অপবাদ রটানো, [৫] সূদ খাওয়া, [৬] ইয়াতীমের মাল আত্মসাৎ করা, [৭] মসজিদে ধর্মদ্রোহী কাজ করা, [৮] ধর্ম নিয়ে উপহাস করা এবং [৯] সন্তানের অসদাচরণ যা পিতা-মাতার কান্নার কারণ হয়। ইবনি উমার [রাঃআঃ] আমাকে বলেন, তুমি কি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে এবং জান্নাতে প্রবেশ করিতে চাও? আমি বললাম, আল্লাহর শপথ! আমি তাই চাই। তিনি বলেন, তোমার পিতা-মাতা কি জীবিত আছেন? আমি বললাম, আমার মা জীবিত আছেন। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! তুমি তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বললে এবং তার ভরণপোষণ করলে তুমি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করিবে, যদি কবীরা গুনাহসমূহ থেকে বিরত থাকো

[তাবারীর তাফসীর, আবদুর রাযযাক আল-খারাইতীর মাসাবিউল আখলাক]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯. হিশাম ইবনি উরওয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

“তাহাদের জন্য মায়া-মমতার পক্ষপুট বিস্তার করে দাও”[১৭ : ২৪] শীর্ষক আয়াত প্রসংগে তিনি বলেন, তারা যে জিনিসই পছন্দ করেন, তাতে বাধা দিও না

[তাবারী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার প্রতিদান।

১০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সন্তানের পক্ষে তার পিতার প্রতিদান শোধ করা সম্ভব নয়। তবে সে তাকে দাসরূপে পেয়ে ক্রয় করে দাসত্বমুক্ত করে দিলে তার প্রতিদান হইতে পারে

[মুসলিম, দারিমি, ইবনি মাজাহ, তিরমিজী, ইবনি হিব্বান, তাহাবী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১. আবু বুরদা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর সাথে ছিলেন। ইয়ামনের এক ব্যক্তি তার মাকে তার পিঠে বহন করে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করছিল আর বলছিল, “আমি তার জন্য তার অনুগত উটতুল্য+আমি তার পাদানিতে আঘাতপ্রাপ্ত হলেও নিরুদ্বেগে তা সহ্য করি”। অতঃপর সে ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে বললো, আমি কি আমার মাতার প্রতিদান দিতে পেরেছি বলে আপনি মনে করেন? তিনি বলেন, নাসায়ী, তার একটি দীর্ঘশ্বাসের প্রতিদানও হয়নি। অতঃপর ইবনি উমার [রাঃআঃ] তাওয়াফ করিলেন। তিনি মাকামে ইবরাহীমে পৌঁছে দুই রাকআত নামায পড়ার পর বলেন, হে আবু মূসার পুত্র প্রতি দুই রাকআত নামায পূর্ববর্তী পাপের কাফফারা

[বায়হাকী, কানযুল উম্মাল]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

মারওয়ান তাকে তার স্থলাভিষিক্ত করেছিল এবং তিনি তখন যুল-হুলায়ফা নামক স্থানে অবস্থান করিতেন। তিনি একটি ঘরে বাস করিতেন এবং তার মা আর একটি ঘরে বাস করিতেন। যখন তিনি ঘর থেকে বের হইতেন তখন তার মায়ের দরজায় দাঁড়িয়ে বলিতেন,

السَّلَامُ عَلَيْكِ يَا أُمَّتَاهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

“আসসালামু আলাইকে ইয়া উম্মাতাহ ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” [মা! আপনার প্রতি শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক]।

তার মা বলিতেন,

وَعَلَيْكَ السَّلَامُ يَا بُنَيَّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

“ওয়া আলাইকা ইয়া বুনাইয়্যা ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” [হে পুত্ৰ! তোমার উপরও শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক]।

তিনি পুনরায় বলিতেন,

رَحِمَكِ اللَّهُ كَمَا رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا

আল্লাহ “আপনার প্রতি দয়া করুন যেভাবে আপনি আমার শৈশবকালে আমাকে লালন-পালন করিয়াছেন”।

তার মা বলিতেন,

رَحِمَكَ اللَّهُ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا

“আল্লাহ তোমার প্রতিও দয়া করুন যেরূপ আমার বার্ধক্যে তুমি আমার প্রতি সদ্ব্যবহার করছো”।

অতঃপর তিনি যখন ঘরে প্রবেশ করিতেন তখনও অনুরূপ বলিতেন

[আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

হিজরতের উদ্দেশ্যে বায়আত হওয়ার জন্য এক ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে কান্নারত অবস্থায় ত্যাগ করে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলো। তিনি বলেনঃ তুমি তাহাদের নিকট ফিরে যাও এবং তাহাদেরকে যেমন কাঁদিয়ে এসেছো তেমনি তাহাদের মুখে গিয়ে হাসি ফুটাও

[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪. আবু তালিব কন্যা উম্মে হানী [রাঃআঃ]-র মুক্তদাস আবু মুররা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি আকীক নামক স্থানে অবস্থিত আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-র সাথে তার খামার বাড়ীতে একই বাহনে চরে গমন করেন। তিনি তার বাড়িতে পৌঁছে উচ্চস্বরে বলেন,

عَلَيْكِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ يَا أُمَّتَاهُ

আলাইকিস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ইয়া উম্মাতাহ।

তার মা বলেন,

وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

ওয়া আলাইকাস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

আবার আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন,

رَحِمَكِ اللَّهُ رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا

রহিমাকিল্লাহু কামা রব্বায়তানী সাগীরা।

তার মা বলেন,

يَا بُنَيَّ، وَأَنْتَ فَجَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا وَرَضِيَ عَنْكَ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا

ইয়া বুনাইয়্যা ওয়া আনতা জাযাকাল্লাহু খায়রান ওয়া রাদিয়া আনকা কামা বারারতানী কাবীরা

[বাযযার]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৭. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়ার পরিণতি।

১৫. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে কবীরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মকগুলি সম্পর্কে তোমাদের অবহিত করবো না? কথাটি তিনি তিনবার বলেন। সাহাবাগণ বলেন, হাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ। তিনি বলেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা [শিরক] এবং পিতা-মাতার অবাধ্যাচরণ। তিনি হেলান দেয়া অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বসে বলেনঃ এবং মিথ্যা বলা। তিনি এ কথাটি বারবার বলছিলেন। আমি মনে মনে বললাম, আহা! তিনি যদি ক্ষান্ত হইতেন

[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৬. মুগীরা ইবনি শোবা [রাঃআঃ]-র সচিব ওয়াররাদ হইতে বর্ণীত

মুয়াবিয়া [রাঃআঃ] তাকে পত্র লিখলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুখে তুমি যা শুনেছো তা আমাকে লিখে পাঠাও। ওয়াররাদ বলেন, মুগীরা [রাঃআঃ] আমার দ্বারাই লিখালেন এবং আমি স্বহস্তে লিখলাম। আমি তাকে “বেশী যাঞ্চা করিতে, অর্থের অপচয় করিতে এবং গুজবে কান দিতে নিষেধ করিতে শুনিয়াছি”

[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় আল্লাহ তাকে অভিশাপ দেন।

১৭. আবু তোফাইল [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আলী [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করা হলো, নাবী [সাঃআঃ] কি কোন বিশেষ ব্যাপার আপনাকে বলেছেন, যা সর্বসাধারণকে বলেননি? তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অন্য কাউকে বলেননি এমন কোন বিশেষ কথা একান্তভাবে আমাকে বলেননি। অবশ্য আমার তরবারির খাপের মধ্যে যা আছে ততটুকুই। অতঃপর তিনি একখানি লিপি বের করিলেন। তাতে লেখা ছিলঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অপর কারো নামে পশু জবাই করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি জমির সীমানা চিহ্ন চুরি করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ

[মুসলিম, নাসায়ী, আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯. অনুচ্ছেদঃ পাপাচার ব্যতীত অন্য সকল ব্যাপারে পিতা-মাতার অনুগত থাকা।

১৮. আবু দারদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে নয়টি ব্যাপারে ওসিয়াত করেছেনঃ [১] আল্লাহর সাথে কিছু শরীক করো নাসায়ী, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা অগ্নিদগ্ধ করা হয়। [২] ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয নামায ত্যাগ করো নাসায়ী, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ফরয নামায ত্যাগ করিবে তার সম্পর্কে আমার কোন দায়িত্ব নাই। [৩] মদ্যপান করো নাসায়ী, কেননা তা সকল অনাচারের চাবি। [৪] তোমার পিতা-মাতার আনুগত্য করিবে, তারা যদি তোমাকে দুনিয়া ছাড়তেও আদেশ করেন তবে তাই করিবে। [৫] শাসকদের সাথে বিবাদে জড়াবে নাসায়ী, যদিও দেখো যে, তুমিই তুমি। [৬] যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করো নাসায়ী, যদিও তুমি ধ্বংস হও এবং তোমার সঙ্গীরা পলায়ন করে। [৭] তোমার সামর্থ্য অনুসারে পরিবারের জন্য ব্যয় করো। [৮] তোমার পরিবারের উপর থেকে লাঠি তুলে রাখবে না এবং [৯] তাহাদের মধ্যে মহামহিম আল্লাহর ভয় জাগ্রত রাখবে।

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, আমি হিজরত করার জন্য আমার পিতা-মাতাকে কান্নারত রেখে আপনার নিকট বায়আত হইতে এসেছি। তিনি বলেনঃ তুমি তাহাদের নিকট ফিরে যাও এবং তাহাদেরকে যেভাবে কাদিয়েছো সেভাবে তাহাদের মুখে হাসি ফোটাও

[মুসলিম, নাসায়ী, আবু দাউদ, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি জিহাদে যাত্রার উদ্দেশ্যে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলো। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার পিতা-মাতা কি জীবিত আছেন? সে বললো, হাঁ। তিনি বলেনঃ যাও, তাহাদের মধ্যে [সেবাযত্নের] জিহাদে প্রবৃত্ত হও

[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতাকে পেয়েও যে ব্যক্তি বেহেশত লাভ করিতে পারেনি।

২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তার নাক ধুলিমলিন হোক! তার নাক ধুলিমলিন হোক!! তার নাক ধুলিমলিন হোক!!! সাহাবাগণ বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! কার নাক? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বা তাহাদের একজনকে তাহাদের বৃদ্ধাবস্থায় পেলো অথচ সে দোযখে গেলো

[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতার সাথে সদাচার করে আল্লাহ তার আয়ু বৃদ্ধি করেন।

২২. মুআয [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করলো তার জন্য শুভ সংবাদ। আল্লাহ তার আয়ুস্কাল বৃদ্ধি করেন

[হাকিম, তাবারানি, মুসনাদ আবু ইয়ালা]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১২. অনুচ্ছেদঃ কেউ নিজ মুশরিক পিতার জন্য যেন ক্ষমা প্রার্থনা না করে।

২৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমার জীবদ্দশায় তাহাদের কোন একজন অথবা উভয়ে বার্ধক্যে উপনীত হলে তুমি তাহাদের প্রতি [বিরক্তিসূচক] উহ শব্দটিও বলো নাসায়ী, ….যেমন তারা তোমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছে” [১৭ : ২৪]। উক্ত আয়াত “মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী ও ঈমানদারদের জন্য শোভনীয় নয়, যদিও তারা তাহাদের নিকটাত্মীয় হয়, তাহাদের কাছে এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে যাবার পরও যে, তারা দোযখবাসী” [৯ : ১১৩] এই আয়া-ত. দ্বারা রহিত হয়ে গেছে

[তাবারানি, আদ-দুররুল মানসুর]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৩. অনুচ্ছেদঃ মুশরিক পিতার সাথেও সদাচার করিতে হইবে।

২৪. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমার সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবের চারটি আয়াত নাযিল হয়। [১] আমার মা শপথ করেন যে, আমি যতক্ষণ মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে ত্যাগ না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পানাহার করবেন না । এই প্রসঙ্গে মহামহিম আল্লাহ নাযিল করেনঃ “পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করিতে চাপ দেয় যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তুমি তাহাদের আনুগত্য করিবে না এবং দুনিয়াতে তাহাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস করিবে” [৩১ : ১৫]। [২] একখানি তরবারি আমার পছন্দ হলে আমি তা গ্রহণ করে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাকে এটা দান করুন। তখন নাযিল হলো, “লোকে আপনার নিকট যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসম্ভার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে” [৮ : ১]। [৩] আমি রোগাক্রান্ত হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে দেখিতে আসেন। আমি তাহাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি আমার সম্পদ বণ্টন করে দিতে চাই। আমি কি আমার অর্ধেক সম্পত্তি সম্পর্কে ওসিয়াত করবো? তিনি বলেনঃ না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি নিরুত্তর থাকলেন। শেষে এক-তৃতীয়াংশ ওসিয়াত করা বৈধ করা হয়। [৪] আমি কতক আনসারীর সাথে মদপান করি। তাহাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি উটের নীচের চোয়ালের হাড় আমার নাকের উপর ছুড়ে মারে। আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে মহামহিম আল্লাহ মদ্যপান হারাম হওয়া সংক্রান্ত আয়া-ত. [৫ : ৯০-৯১] নাযিল করেন

[মুসলিম, আবু দাউদ, আহমাদ, তিরমিজী, তাবারানি]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫. আসমা বিনতে আবু বাকর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমার মা নাবী [সাঃআঃ]-এর যুগে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট অবস্থায় আমার কাছে আসেন। আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি তার সাথে আত্মীয় সম্পর্ক বজায় রাখবো? তিনি বলেনঃ হাঁ। ইবনি উয়ায়না [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ

لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ} [الممتحنة: 8]

“যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি, তাহাদের সাথে সদ্ব্যবহার ও ইনসাফ করিতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না” [৬০ : ৮]

[বোখারী, মুসলিম, দারিমি]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

উমার [রাঃআঃ] একটি লাল বর্ণের রেশমী চাদর বিক্রি হইতে দেখে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এটা আপনি ক্রয় করুন। জুমুআর দিন ও বহিরাগত প্রতিনিধি দলসমূহের সাথে সাক্ষাতদানকালে তা আপনি পরতে পারবেন। তিনি বলেনঃ তা সেইসব লোকই পরবে যাদের [আখেরাতে] কোন অংশ নাই। পরে অনুরূপ লাল বর্ণের কিছু সংখ্যক রেশমী চাদর নাবী [সাঃআঃ]-এর দরবারে আসে। তিনি তার একটি উমারের কাছে পাঠিয়ে দেন। উমার [রাঃআঃ] বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি এটা পরিধান সম্পর্কে যা বলেছেন, তারপর আমি তা কিভাবে পরতে পারি! তিনি বলেনঃ আমি তা তোমার পরিধানের জন্য পাঠাইনি, বরং তুমি তা বিক্রি করিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে। উমার [রাঃআঃ] তা তার জনৈক মক্কাবাসী ভাইয়ের জন্য পাঠিয়ে দিলেন, যিনি তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি

[বোখারী, মুসলিম, দারিমি, নাসায়ী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪. অনুচ্ছেদঃ কেউ যেন নিজ পিতা-মাতাকে গালি না দেয়।

২৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের একটি হলো নিজ পিতা-মাতাকে গালি দেয়া। সাহাবীগণ বলেন, কেউ কি নিজ পিতা-মাতাকে গালি দিতে পারে! তিনি বলেনঃ সে অন্যের পিতা-মাতাকে গালি দিবে, প্রতিশোধ স্বরূপ ঐ ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে গালি দিবে

[বোখারী, মুসলিম, দারিমি, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

পিতা-মাতাকে গালি শুনানো আল্লাহর নিকট একটি কবীরা গুনাহ

[বোখারী, মুসলিম, দারিমি, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৫. অনুচ্ছেদ পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়ার শাস্তি।

২৯. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পিতা-মাতার অবাধ্যতা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার অপরাধের শাস্তি অন্যান্য পাপের চেয়ে দ্রুত অপরাধীর উপর কার্যকর হয়। পরকালের শাস্তি তো আছেই

[দারেমী, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ, আবু দাউদ, হাকিম, ইবনি হিব্বান]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা ব্যভিচার, মদ্যপান ও চুরি সম্পর্কে কি বলো? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই সর্বাধিক জ্ঞাত। তিনি বলেনঃ এগুলি জঘন্য পাপাচার এবং এগুলির জন্য ভীষণ শাস্তি অবধারিত আছে। আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে মারাত্মক কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করবো না? মহান আল্লাহর সাথে শীরক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্যাচারী হওয়া। তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন, অতঃপর সোজা হয়ে বসে বলেনঃ এবং মিথ্যাচার

[বাযযার, তাবারানি]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৬. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার কান্না।

৩১. তায়সালা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ পিতা-মাতাকে কাঁদানো এবং তাহাদের অবাধ্যাচরণ কবীরা গুনাহসমূহের অন্তর্ভুক্ত [৮ নং হাদিসের বরাত]।

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭. অনুচ্ছেদঃ পিতা-মাতার দোয়া।

৩২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিনটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, এতে কোন সন্দেহ নাই। [১] মযলুম বা নির্যাতিতের দোয়া, [২] মুসাফিরের দোয়া এবং [৩] সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া

দারিমি, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ঈসা ইবনি মরিয়ম [আবু দাউদ] এবং জুরাইজ সংশ্লিষ্ট শিশু ব্যতীত আর কোন মানব-সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ামাত্র দোলনায় কথা বলেনি। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রসূলাল্লাহ! জুরাইজ কে? তিনি বলেনঃ জুরাইজ ছিলেন একজন উপাসনালয়বাসী সংসারত্যাগী দরবেশ। তার উপাসনালয়ের প্রান্তেই এক রাখাল বাস কারতো। গ্রাম্য এক নারী সেই রাখালের কাছে যাতায়াত করতো। একদিন জুরাইজের মা তার নিকট এসে বলেন, হে জুরাইজ! তিনি তখন নামাযরত ছিলেন। তিনি নামাযরত অবস্থায় মনে মনে বলেন, আমার মা এবং আমার নামায। তিনি তার নামাযকে অগ্রাধিকার দিলেন। দ্বিতীয়বার তার মা জোরে ডাক দিলে তিনি মনে মনে বলেন, আমার মা ও আমার নামায। তিনি মায়ের উপর নামাযকে অগ্রাধিকার দিলেন। তৃতীয়বার চীৎকার দিয়ে তার মা তাকে ডাকলে তিনি বলেন, আমার মা ও আমার নামায। তিনি নামাযকে অগ্রাধিকার দেয়াই সমীচীন ভাবলেন। জুরাইজ তার ডাকে সাড়া না দিলে তিনি তাকে অভিশাপ দিলেনঃ “তোকে পতিতা নারীদের মুখ না দেখিয়ে যেন আল্লাহ তোর মৃত্যু না ঘটান”। অতঃপর তার মা চলে গেলেন। ঘটনাক্রমে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু সন্তানসহ সেই নারীকে রাজ-দরবারে উপস্থিত করা হলো। রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, কার ঔরসে এ শিশুর জন্ম? সে বললো, জুরাইজের ঔরসে। রাজা আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, উপাসনালয়বাসী জুরাইজ? সে বললো, হাঁ। রাজা নির্দেশ দিলেন, উপাসনালয়টি ভেঙ্গে দাও এবং তাকে আমার নিকট হাযির করো। তারা কুঠারাঘাতে তার উপাসনালয়টি ভূপাতিত করলো এবং তার দুই হাত রশি দিয়ে তার ঘাড়ের সাথে বেঁধে তাকে নিয়ে রাজ-দরবারে চললো। পথে পতিতা নারীরা সামনে পড়লো, তিনি তাহাদের দেখে মৃদু হাসলেন। তারাও তাকে লোকজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখলো। রাজা তাকে বলেন, সে কি ধারণা করে? জুরাইজ বলেন, সে কী ধারণা করে? রাজা বলেন, তার দাবি এই যে, এ শিশু আপনার ঔরসজাত। জুরাইজ পতিতাকে বলেন, সত্যিই কি তোমার এই ধারণা? সে বললো, হাঁ। তিনি বলেন, কোথায় সেই শিশু? তারা বললো, ঐ যে তার মায়ের কোলে । তিনি তার সামনে গেলেন এবং বলিলেন, কে তোমার পিতা? শিশুটি বললো, গরুর রাখাল। এবার রাজা বলেন, আমরা কি আপনার খানকাহ সোনা দ্বারা নির্মাণ করে দিবো? তিনি বলেন, না। রাজা পুনর্বার বলেন, তবে রূপা দ্বারা? তিনি বলেন, না। রাজা বলেন, তবে আমরা সেটিকে কি করবো? তিনি বলেন, তা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিন। রাজা জিজ্ঞেস করিলেন, তবে আপনার মৃদু হাসির কারণ কি? তিনি বলেন, মৃদু হাসির পেছনে একটা ঘটনা আছে যা আমার জানা ছিল। আমার মায়ের অভিশাপই আমাকে স্পর্শ করেছে। অতঃপর তিনি সকল ঘটনা তাহাদেরকে অবহিত করেন

[বোখারী, মুসলিম]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮. অনুচ্ছেদঃ খৃস্টান ধর্মাবলম্বী মাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দেয়া।

৩৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমার পরিচিত যে কোন ইহুদী বা খৃস্টান আমাকে ভালোবাসে। আমি চাইতাম যে, আমার মা ইসলাম গ্রহণ করুন। কিন্তু তিনি তাতে রাজী হইতেন না। আমি তাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিলাম কিন্তু তিনি তাতে রাজী হননি। আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে বললাম, আপনি তার জন্য দোয়া করুন। তিনি দোয়া করিলেন। আমি তার নিকট গিয়ে দেখি, তিনি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে আছেন। তিনি বলেন, হে আবু হুরাইরা! আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে তা অবগত করে বললাম, আমার জন্য এবং আমার মায়ের জন্য দোয়া করুন। তিনি বলেনঃ

اللَّهُمَّ، عَبْدُكَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَأُمُّهُ، أَحِبَّهُمَا إِلَى النَّاسِ

“হে আল্লাহ! তোমার বান্দা আবু হুরাইরা এবং তার মা, তাহাদের উভয়কে জনপ্রিয় করো”

[মুসলিম, আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯. অনুচ্ছেদঃ মৃত পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার

৩৫. আবু উসাইদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাহাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার কোন অবকাশ আছে কি? তিনি বলেনঃ হাঁ, চারটি উপায় আছে। [১] তাহাদের জন্য দোয়া করা, [২] তাহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, [৩] তাহাদের প্রতিশ্রুতিসমূহ পূর্ণ করা এবং [৪] তাহাদের বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা ও তাহাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করা, যারা তাহাদের মাধ্যমে তোমার আত্মীয়

[দারিমি, ইবনি মাজাহ, হাকিম, ইবনি হিব্বান]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

মানুষের মৃত্যুর পর তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে, হে প্ৰভু! এটা কি জিনিস? তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে

[ইবনি মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৭. মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

এক রাতে আমরা আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। তিনি বলিলেন,

আর-বি.

“হে আল্লাহ! আবু হুরাইরাকে, আমার মাকে এবং তাহাদের দু’জনের জন্য যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহাদের সকলকে তুমি ক্ষমা করো”।

মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমরা তার দোয়ায় শামিল হওয়ার আশায় তাহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বান্দা মারা যাবার সাথে সাথে তার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি কাজ ব্যতীত। [১] সদকায়ে জারিয়া, [২] উপকারী জ্ঞান এবং [৩] সুসন্তান যে তার জন্য দোয়া করে

[মুসলিম, দারিমি, তিরমিজী, নাসায়ী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমার মা মারা গেছেন। তিনি কোনরূপ ওসিয়াত করে যাননি। আমি যদি তার পক্ষ থেকে দান-খয়রাত করি তবে তাতে তার কোন উপকার হইবে কি? তিনি বলেনঃ হাঁ

[বোখারী, দারিমি, তিরমিজী, নাসায়ী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০. অনুচ্ছেদঃ পিতা যাদের সাথে সদাচার করিতেন তাহাদের সাথে সস্তানের সদাচার।

৪০. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক বেদুইন সফরে গেলো। তার পিতা উমার [রাঃআঃ]-এর বন্ধু ছিলেন। বেদুইন বললো, আপনি কি অমুকের পুত্র নন? তিনি বলেন, হাঁ। তিনি তার সাথে আনা একটি গাধা বেদুইনকে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং নিজের মাথার পাগড়ী খুলে তাকে দান করিলেন। তার এক সঙ্গী বললো, তাকে দু’টি দিরহাম দিলে কি যথেষ্ট হতো না? তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পিতার বন্ধুত্ব অটুট রাখো, তা ছিন্ন করো না। অন্যথায় আল্লাহ তোমার

[ঈমানের] আলো নিভিয়ে দিবেন [মুসলিম, আবু দাউদ]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার হলো, তার পিতার বন্ধু পরিবারের প্রতি তার সদ্ব্যবহার

[মুসলিম, দারিমি, তিরমিজী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১. অনুচ্ছেদঃ তোমার পিতা যাদের সাথে সম্পর্ক রাখতেন, তুমি তাহাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। অন্যথায় তোমার ঈমানের আলো নিভে যাবে।

৪২. সাদ ইবনি উবাদা আয-যুরাকী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তার পিতা বলেছেন, আমি মদীনার মসজিদে আমর ইবনি উসমানের সাথে বসা ছিলাম। আবদুল্লাহ ইবনি সালাম [রাঃআঃ] তার ভাতিজার কাঁধে ভর করে আমাদের পাশ দিয়ে গেলেন। তিনি মজলিস অতিক্রম করে যেতে যেতে ফিরে তাকালেন এবং আবার সেখানে ফিরে এলেন। তিনি বলেন, আমর ইবনি উসমান! তুমি কি চাও? তিনি দুই বা তিনবার একথা বলেন। তারপর বলেন, সেই সত্তার শপথ, যিনি মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন! নিঃসন্দেহে আল্লাহর কিতাবে [তাওরাত] দুইবার বলা হয়েছেঃ তোমার পিতা যাদের সাথে সম্পর্ক রাখতো, তাহাদের সাথে তুমি সম্পর্ক ছিন্ন করো না। অন্যথায় তাতে তোমার ঈমানের নূর নির্বাপিত হইবে।

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২২. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা উত্তরাধিকার সূত্রে আসে।

৪৩. মহানাবী [সাঃআঃ]-এর এক সাহাবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তোমাদের জন্য যথেষ্ট যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা আসে উত্তরাধিকার সূত্রে।

[বাযযার, হাকিম] পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৩. অনুচ্ছেদঃ পিতার নাম নিও না, তার আগে বসো না এবং তার আগে আগে চলো না।

৪৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] দুই ব্যক্তিকে দেখে তাহাদের একজনকে জিজ্ঞেস করেন, ইনি তোমার কি হন? সে বললো, তিনি আমার পিতা। তিনি বলেন, তাকে নাম ধরে ডেকো না, তার আগে আগে চলো না এবং তার আগে বসো না

[বাযযার, ইবনুস সুন্নী]। পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪. অনুচ্ছেদঃ পিতাকে কি উপনামে ডাকা যায়?

৪৫. শাহর ইবনি হাওশাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমরা ইবনি উমার [রাঃআঃ]-র সাথে বের হলাম। তার পুত্র সালেম [রাহিমাহুল্লাহ] তাকে বলেন, হে আবদুর রহমানের পিতা! সালাম!

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

হাফসের পিতা উমার [রাঃআঃ] বিচার মীমাংসা করিয়াছেন।

পিতা মাতার জন্য দোয়া হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

Comments

One response to “পিতা মাতার জন্য দোয়া এবং সদ্ধ্যবহার করা”

Leave a Reply