পানি সিঞ্চন । বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত

পানি সিঞ্চন । বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত

পানি সিঞ্চন । বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত , এই পর্বের হাদীস =৪২ টি (৯৯৯-১০৪০) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্ব-২২ঃ পানি সিঞ্চন

২২/১. পানি বণ্টন এবং ফলমূল ও শাক-সব্জি ভাগাভাগির ভিত্তিতে বর্গাচাষের ব্যবস্থা ।
২২/২. বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত ।
২২/৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া ।
২২/৪. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ লাঘব করা মুস্তাহাব ।
২২/৫. ক্রেতা যদি দেউলিয়া হয়ে যায় এমতাবস্থায় বিক্রেতা তার মাল ক্রেতার নিকট অক্ষত অবস্থায় পেলে তা ফেরত নিতে পারবে
২২/৬. অসচ্ছল ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়ার ফাযীলাত ।
২২/৭. ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে টাল-বাহানা করা হারাম । অন্যের নিকট ঋণ হাওয়ালা করে দেয়া জায়িয এবং তা সম্পদশালী ব্যক্তির জন্য গ্রহণ করা মুস্তাহাব ।
২২/৮. প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি হারাম ।
২২/৯. কুকুরের মূল্য, গণকের উপার্জন, ব্যভিচারিণী মহিলার পারিশ্রমিক হারাম ।
২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ ।
২২/১১. শিঙ্গাওয়ালার পারিশ্রমিক হালাল ।
২২/১২. মাদক দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয় হারাম ।
২২/১৩. মাদক দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয়, মৃত জন্তু, শুকর ও মূর্তি বিক্রি হারাম ।
২২/১৪. সুদ
২২/১৬. স্বর্ণের বিনিময়ে রৌপ্য বাকীতে বিক্রি নিষিদ্ধ ।
২২/১৮. সমান সমান পরিমাণ খাদ্যশষ্যের ক্রয়-বিক্রয় ।
২২/২০. হালাল গ্রহণ করা ও সন্দেহযুক্তকে ছেড়ে দেয়া ।
২২/২১. উট বিক্রি করা ও তাতে চড়ে যাওয়ার শর্ত লাগানো ।
২২/২২. যে ব্যক্তি ধারে কিছু নিল এবং ঋণদাতাকে তার চেয়ে বেশি দিল এবং তোমাদের মধ্যে সে উত্তম যে উত্তমভাবে অন্যের পাওনা আদায় করে ।
২২/২৪. বন্ধক রাখা এবং এটা বাড়ীতে ও সফরে জায়িয ।
২২/২৫. বাইয়ে সালাম ।
২২/২৭. বিক্রয়ে কসম খাওয়া নিষিদ্ধ ।
২২/২৮. শুফ্আহ
২২/২৯. প্রতিবেশির দেয়ালে খুঁটি গাড়া ।
২২/৩০. যুল্‌ম করা অন্যের জমি জবর-দখল করা ইত্যাদি হারাম ।
২২/৩১. রাস্তার পরিমাণ কত হইবে যখন এতে মতানৈক্য হইবে ।

২২/১. পানি বণ্টন এবং ফলমূল ও শাক-সব্জি ভাগাভাগির ভিত্তিতে বর্গাচাষের ব্যবস্থা ।

৯৯৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] খায়বারবাসীদেরকে উৎপাদিত ফল বা ফসলের অর্ধেক ভাগের শর্তে জমি বর্গা দিয়েছিলেন। তিনি নিজের সহধর্মিণীদেরকে একশ ওয়াসাক দিতেন, এর মধ্যে ৮০ ওয়াসাক খুরমা ও ২০ ওয়াসাক যব। উমার [রাদি.] [তাহাঁর খিলাফতকালে খায়বারের] জমি বণ্টন করেন। তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণীদের ইখতিয়ার দিলেন যে, তাঁরা জমি ও পানি নিবেন, না কি তাহাদের জন্য ওটাই চালু থাকিবে, যা নাবী [সাঃআঃ]-এর যামানায় ছিল। তখন তাহাদের কেউ জমি নিলেন আর কেউ ওয়াসাক নিতে রাজী হলেন। আয়েশা [রাদি.] জমিই নিয়েছিলেন।

[বোখারী পর্ব ৪১ : /৮, হা: ২৩২৮; মুসলিম ২২/১, হাঃ ১৫৫১] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০০০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] যখন খায়বার জয় করেন, তখন ইয়াহূদীদের সেখান হইতে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। যখন তিনি কোন স্থান জয় করেন, তখন তা আল্লাহ্‌, তাহাঁর রসূল  [সাঃআঃ] ও মুসলিমদের জন্য হয়ে যায়। কাজেই ইয়াহূদীদের সেখান হইতে বহিষ্কার করে দিতে চাইলেন। তখন ইয়াহূদীরা আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-এর কাছে অনুরোধ করিল যেন তাহাদের সে স্থানে বহাল রাখা হয় এ শর্তে যে, তারা সেখানে চাষাবাদের দায়িত্ব পালন করিবে আর ফসলের অর্ধেক তাহাদের থাকিবে। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] তাহাদের বলিলেন, আমরা এ শর্তে তোমাদের এখানে বহাল থাকতে দিব যতদিন আমাদের ইচ্ছা। কাজেই তারা সেখানে বহাল রইল। অবশেষে উমার [রাদি.] তাহাদেরকে তাইমা ও আরীহায় নির্বাসিত করে দেন।

[বোখারী পর্ব ৪১: /১৭, হা: ২৩৩৮; মুসলিম ২২/১, হাঃ ১৫৫১] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২. বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত ।

১০০১. আনাস ইবনে মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যে কোন মুসলিম ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোন ফসল ফলায় আর তা হইতে পাখি কিংবা মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু খায় তবে তা তার পক্ষ হইতে সদাকাহ্ বলে গণ্য হইবে।

মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. আনাস [রাদি.] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

[বোখারী পর্ব ৪১ : /১, হা: ২৩২০; মুসলিম ২২/২, হাঃ ১৫৫৩] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া ।

১০০২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] রং ধারণ করার আগে ফল বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধারণ করার অর্থ কী? তিনি বলিলেন, লাল বর্ণ ধারণ করা। পরে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, দেখ, যদি আল্লাহ্‌ তাআলা ফল ধরা বন্ধ করে দেন, তবে তোমাদের কেউ [বিক্রেতা] কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল [ফলের মূল্য] নিবে?

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৮৭, হা: ২১৯৮; মুসলিম ২২/৩, হাঃ ১৫৫৫] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৪. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ লাঘব করা মুস্তাহাব ।

১০০৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] একবার দরজায় ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পেলেন; দুজন তাহাদের আওয়াজ উচ্চ করেছিল। তাহাদের একজন আরেকজনের নিকট ঋণের কিছু মাফ করে দেয়ার এবং সহানুভূতি দেখানোর অনুরোধ করেছিল। আর অপর ব্যক্তি বলছিল, না, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তা করব না। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] তাহাদের দুজনের কাছে এলেন এবং বলিলেন, সৎ কাজ করিবে না বলে যে আল্লাহ্‌র নামে কসম করেছে, সে ব্যক্তিটি কোথায়? সে বলিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আমি। সে যা পছন্দ করিবে তার জন্য তা-ই হইবে।

[বোখারী পর্ব ৫৩: /১০, হা: ২৭০৫; মুসলিম ২২/৪, হাঃ ১৫৫৭] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০০৪. কাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি মাসজিদের ভিতরে ইবনি আবু হাদরাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর নিকট তাহাঁর পাওনা ঋণের তাগাদা করিলেন। দুজনের মধ্যে এ নিয়ে বেশ উচ্চঃস্বরে কথাবার্তা হলো। এমনকি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] তাহাঁর ঘর হইতেই তাহাদের কথার আওয়াজ শুনলেন এবং তিনি পর্দা সরিয়ে তাহাদের নিকট বেরিয়ে গেলেন। আর ডাক দিয়ে বললেনঃ হে কাব! কাব [রাদি.] উত্তর দিলেন, লাব্বাইক ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমার পাওনা ঋণ হইতে এতটুকু ছেড়ে দাও। আর হাতে ইঙ্গিত করে বোঝালেন, অর্থাৎ অর্ধেক পরিমাণ। তখন কাব [রাদি.] বললেনঃ আমি তাই করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন তিনি ইবনি আবু হাদরাদকে বললেনঃ উঠ, আর বাকীটা দিয়ে দাও।

[বোখারী পর্ব ৮: /৭১, হা: ৪৫৭; মুসলিম ২২/৪, হাঃ ১৫৫৮] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৫. ক্রেতা যদি দেউলিয়া হয়ে যায় এমতাবস্থায় বিক্রেতা তার মাল ক্রেতার নিকট অক্ষত অবস্থায় পেলে তা ফেরত নিতে পারবে ।

১০০৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, কিংবা তিনি বলেছেন যে, আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যখন কেউ তার মাল এমন লোকের কাছে পায়, যে নিঃসম্বল হয়ে গেছে, তবে অন্যের চেয়ে সে-ই তার বেশি হকদার। {আবু আবদুল্লাহ {ঈমাম বোখারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} বলেন, এ সনদে উল্লেখিত রাবীগণ বিচারকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তারা হলেন ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ, আবু বকর ইবনি মুহাম্মাদ, উমার ইবনি আবদুল আযীয, আবু বকর ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও আবু বকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তারা সকলেই মদিনায় বিচারক ছিলেন।}

[বোখারী পর্ব ৪৩: /১৪, হা: ২৪০২; মুসলিম ২২/৫, হাঃ ১৫৫৯] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৬. অসচ্ছল ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়ার ফাযীলাত ।

১০০৬. হুযাইসলামিক ফাউন্ডেশনহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে এক ব্যক্তির রূহের সাথে ফেরেশতা সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি কোন নেক কাজ করেছ? লোকটি উত্তর দিল, আমি আমার কর্মচারীদের আদেশ করতাম যে, তারা যেন সচ্ছল ব্যক্তিকে অবকাশ দেয় এবং তার উপর পীড়াপীড়ি না করে। রাবী বলেন, তিনি বলেছেন, ফেরেশতারাও তাঁকে ক্ষমা করে দেন।

আবু মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] রিব্ঈ ইবনি হিরাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি সচ্ছল ব্যক্তির জন্য সহজ করতাম এবং অভাবগ্রস্তকে অবকাশ দিতাম। শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আবু আওয়ানাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি সচ্ছলকে অবকাশ দিতাম এবং অভাবগ্রস্তকে মাফ করে দিতাম এবং নুআইম ইবনি আবু হিন্দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] রিব্ঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বলেন, আমি সচ্ছল ব্যক্তি হইতে গ্রহণ করতাম এবং অভাবগ্রস্তকে ক্ষমা করে দিতাম।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১৭, হা: ২০৭৭; মুসলিম ২২/৬, হাঃ ১৫৬০] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০০৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যবসায়ী লোকদের ঋণ দিত। কোন অভাবগ্রস্তকে দেখলে সে তার কর্মচারীদের বলত, তাকে ক্ষমা করে দাও, হয়তো আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। এর ফলে আল্লাহ্‌ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১৮, হা: ২০৭৮; মুসলিম ২২/৬, হাঃ ১৫৬২] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৭. ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে টাল-বাহানা করা হারাম । অন্যের নিকট ঋণ হাওয়ালা করে দেয়া জায়িয এবং তা সম্পদশালী ব্যক্তির জন্য গ্রহণ করা মুস্তাহাব ।

১০০৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম। যখন তোমাদের কাউকে [ঋণ পরিশোধের জন্যে] কোন ধনী ব্যক্তির হাওয়ালা করা হয়, তখন সে যেন তা মেনে নেয়।

[বোখারী পর্ব ৩৮: /১, হা: ২২৮৮; মুসলিম ২২/৭, হাঃ ১৫৬৪] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৮. প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি হারাম ।

১০০৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, ঘাস উৎপাদন হইতে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি রুখে রাখা যাবে না।

[বোখারী পর্ব ৪২: /২, হা: ২৩৫৩; মুসলিম ২২/৮, হাঃ ১৫৬৬] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৯. কুকুরের মূল্য, গণকের উপার্জন, ব্যভিচারিণী মহিলার পারিশ্রমিক হারাম ।

১০১০. আবু মাসউদ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিতোষিক [গ্রহণ করা] হইতে নিষেধ করিয়াছেন।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১১৩, হা: ২২৩৭; মুসলিম ২২/৯, হাঃ ১৫৬৭] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১০. কুকুর হত্যা করার নির্দেশ ।

১০১১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করিয়াছেন।

[বোখারী পর্ব ৫৯: /১৭, হা: ৩৩২৩; মুসলিম ২২/১০ হাঃ ১৫৭০] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০১২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর কিংবা পশু রক্ষাকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পোষে, সেই ব্যক্তির আমলের সাওয়াব থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ কমে যায়।

[বোখারী পর্ব ৭২: /৬, হাদীস নং ৫৪৮১; মুসলিম হাঃ ১৫৭৪] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০১৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি শস্য ক্ষেতের পাহারা কিংবা পশুর হিফাযতের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে কুকুর পোষে, প্রতিদিন তার নেক আমল হইতে এক কীরাত পরিমাণ কমতে থাকিবে।

[বোখারী পর্ব ৪১: /৩, হা: ২৩২২; মুসলিম ২২/১০, হাঃ ১৫৭৫] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০১৪. সুফ্ইয়ান ইবনি আবু যুহাইর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি এমন কুকুর পোষে যা ক্ষেত ও গবাদি পশুর হিফাযতের কাজে লাগে না, প্রতিদিন তার নেক আমল হইতে এক কীরাত পরিমাণ কমতে থাকে। আমি বললাম, আপনি কি এটা আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] হইতে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, এ মাসজিদের প্রতিপালকের কসম [আমি তাহাঁর কাছেই শুনিয়াছি]।

[বোখারী পর্ব ৪১: /৩, হা: ২৩২৩; মুসলিম ২২/১০, হাঃ ১৫৭৬] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১১. শিঙ্গাওয়ালার পারিশ্রমিক হালাল ।

১০১৫. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁকে শিঙ্গা লাগানোর পারিশ্রমিক দানের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শিঙ্গা লাগিয়েছেন। আবু তাইবা তাঁকে শিঙ্গা লাগায়। এরপর তিনি তাকে দু সা খাদ্যবস্তু প্রদান করেন। সে তার মালিকের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করলে তারা তাহাঁর থেকে পারিশ্রমিকের পরিমাণ লাঘব করে দেয়। নাবী [সাঃআঃ] আরো বলেনঃ তোমরা যে সকল জিনিসের দ্বারা চিকিৎসা কর, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হল শিঙ্গা লাগানো এবং সামুদ্রিক চন্দন কাঠ ব্যবহার করা। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের শিশুদের জিহবা, তালু টিপে কষ্ট দিও না। বরং তোমরা চন্দন কাঠ [ধোঁয়া] ব্যবহার করাও।

[বোখারী পর্ব ৭৬: /১৩, হা: ৫৬৯৬; মুসলিম ২২/১১, হাঃ ১৫৭৭] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০১৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] শিঙ্গা লাগিয়ে নিয়েছেন এবং যে শিঙ্গা লাগিয়ে দিয়েছে সে ব্যক্তিকে পারিশ্রমিক দিয়েছেন আর তিনি [শ্বাস দ্বারা] নাকে ঔষধ টেনে নিয়েছেন।

[বোখারী পর্ব ৭৬: /৯, হা: ৫৬৯১; মুসলিম ২২/১১, হাঃ ১২০২] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১২. মাদক দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয় হারাম ।

১০১৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ সূরা বাকারাহর সুদ সম্পর্কীয় আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হলে নাবী [সাঃআঃ] মাসজিদে গিয়ে সে সব আয়াত সাহাবীগণকে পাঠ করে শুনালেন। অতঃপর তিনি মদের ব্যবসা হারাম করে দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৮: /৭৩, হা: ৪৫৯; মুসলিম ২২/১২, হাঃ ১৫৮০] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১৩. মাদক দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয়, মৃত জন্তু, শুকর ও মূর্তি বিক্রি হারাম ।

১০১৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে মাক্কাহ বিজয়ের বছর মাক্কাহ্য় অবস্থানকালে বলিতে শুনেছেনঃ আল্লাহ্‌ তাআলা ও তাহাঁর রসূল  [সাঃআঃ] শরাব, মৃত জন্তু, শূকর ও মূর্তি কেনা-বেচা হারাম করে দিয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! মৃত জন্তুর চর্বি সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তা দিয়ে তো নৌকায় প্রলেপ দেয়া হয় এবং চামড়া তৈলাক্ত করা হয় আর লোকে তা দ্বারা চেরাগ জ্বালিয়ে থাকে। তিনি বলিলেন, না, তাও হারাম। তারপর আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ্‌ তাআলা ইয়াহূদীদের বিনাশ করুন। আল্লাহ্‌ যখন তাহাদের জন্য মৃতের চর্বি হারাম করে দেন, তখন তারা তা গলিয়ে বিক্রি করে মূল্য ভোগ করে। আবু আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ……. আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির [রাদি.]-কে [হাদীসটি] নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১১২, হা: ২২৩৬; মুসলিম ২২/১৩, হাঃ ১৫৮১] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০১৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর নিকট সংবাদ পৌঁছল যে, অমুক ব্যক্তি শরাব বিক্রি করেছে। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্‌ তাআলা অমুকের বিনাশ করুন। সে কি জানে না যে, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ্‌ তাআলা ইয়াহূদীদের সর্বনাশ করুন, তাহাদের জন্য চর্বি হারাম করা হয়েছিল; কিন্তু তারা তা গলিয়ে বিক্রি করে।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১০৩, হা: ২২২৩; মুসলিম ২২/১৩, হাঃ ১৫৮২] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০২০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ্‌ তাআলা ইয়াহূদীদের বিনাশ করুন। তাহাদের জন্য চর্বি হারাম করা হয়েছে। তারা তা [গলিয়ে] বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করে।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১০৩, হা: ২২২৪; মুসলিম ২২/১৩, হাঃ ১৫৮৩] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১৪. সুদ

১০২১. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, সমান পরিমাণ ছাড়া তোমরা সোনার বদলে সোনা বিক্রি করিবে না, একটি অপরটি হইতে কম-বেশি করিবে না। সমান ছাড়া তোমরা রূপার বদলে রূপা বিক্রি করিবে না ও একটি অপরটি হইতে কম-বেশি করিবে না। আর নগদ মুদ্রার বিনিময়ে বাকি মুদ্রা বিক্রি করিবে না।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৭৮, হাঃ ২১৭৭; মুসলিম ২২/১৮, হাঃ ১৫৮৪] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১৬. স্বর্ণের বিনিময়ে রৌপ্য বাকীতে বিক্রি নিষিদ্ধ ।

১০২২. আবু মিনহাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বারা ইবনি আযিব ও যায়দ ইবনি আরকাম [রাদি.]-কে সার্‌ফ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তাঁরা উভয়ে [একে অপরের সম্পর্কে] বলিলেন, ইনি আমার চেয়ে উত্তম। এরপর উভয়েই বলিলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বাকীতে রূপার বিনিময়ে সোনা কেনা বেচা করিতে বারণ করিয়াছেন।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৮০, হা: ২১৮০-২১৮১; মুসলিম ২২/১৬, হাঃ ১৫৮৯] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০২৩. আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সমান সমান ছাড়া রূপার বদলে রূপার ক্রয়-বিক্রয় এবং সোনার বদলে সোনার ক্রয়-বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং তিনি রূপার বিনিময়ে সোনার বিক্রয়ে এবং সোনার বিনিময়ে রূপার বিক্রয়ে আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী অনুমতি দিয়েছেন।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৮১, হা: ২১৮২; মুসলিম ২২/১৬, হাঃ ১৫৯০] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/১৮. সমান সমান পরিমাণ খাদ্যশষ্যের ক্রয়-বিক্রয় ।

১০২৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে খায়বারে তহসীলদার নিযুক্ত করেন। সে জানীব নামক [উত্তম] খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, খায়বারের সব খেজুর কি এ রকমের? সে বলিল, না, আল্লাহ্‌র কসম, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! এরূপ নয়, বরং আমরা দু সা এর পরিবর্তে এ ধরনের এক সা খেজুর নিয়ে থাকি এবং তিন সা এর পরিবর্তে এক দু সা। তখন আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, এরূপ করিবে না। বরং মিশ্রিত খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিরহাম দিয়ে জানীব খেজুর ক্রয় করিবে।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৮৯, হা: ২২০১-২২০২; মুসলিম ২২/১৮, হাঃ ১৫৯৩] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০২৫. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিলাল [রাদি.] কিছু বরনী খেজুর [উন্নতমানের খেজুর] নিয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে আসেন। নাবী [সাঃআঃ] তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, এগুলো কোথায় পেলে? বিলাল [রাদি.] বলিলেন, আমাদের নিকট কিছু নিকৃষ্ট মানের খেজুর ছিল। নাবী [সাঃআঃ]-কে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে তা দু সা-এর বিনিময়ে এক সা কিনেছি। একথা শুনে নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, হায়! হায়! এটাতো একেবারে সুদ! এটাতো একেবারে সুদ! এরূপ করো না। যখন তুমি উৎকৃষ্ট খেজুর কিনতে চাও, তখন নিকৃষ্ট খেজুর ভিন্নভাবে বিক্রি করে দাও। তারপর সে মূল্যের বিনিময়ে উৎকৃষ্ট খেজুর কিনে নাও।

[বোখারী পর্ব ৪০: /১১, হা: ২৩১২; মুসলিম ২২/১৮, হাঃ ১৫৯৪] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০২৬. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমাদের মিশ্রিত খেজুর দেয়া হতো, আমরা তা দু সা-এর পরিবর্তে তার দু সা বিক্রি করতাম। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এক সা-এর পরিবর্তে দু সা এবং এক দিরহামের পরিবর্তে দু দিরহাম বিক্রি করিবে না।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /২০, হা: ২০৮০; মুসলিম ২২/১৯, হাঃ ১৫৯৫] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০২৭. আবু সালিহ যায়য়াত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.]-কে বলিতে শুনলাম, দীনারের বদলে দীনার এবং দিরহামের বদলে দিরহাম [সমান সমান বিক্রি করিবে]। এতে আমি তাঁকে বললাম, ইবনি আব্বাস [রাদি.] তো তা বলেন না? উত্তরে আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, আমি তাঁকে [ইবনি আব্বাসকে] জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আপনি তা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে শুনেছেন না আল্লাহ্‌র কিতাবে পেয়েছেন? তিনি বলিলেন, এর কোনটি বলিনি। আপনারাই তো আমার চেয়ে নাবী [সাঃআঃ] সম্পর্কে বেশি জানেন। অবশ্য আমাকে উসামা {ইবনি যায়দ [রাদি.]} জানিয়েছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, বাকী বিক্রি ব্যতীত রিবা হয় না। আবু আবদুল্লাহ [বোখারী] [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি সুলায়মান ইবনি র্হাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বলিতে শুনিয়াছি, বাকী বিক্রি ব্যতীত রিবা হয় না, এ কথার অর্থ আমাদের মতে এই যে, সোনা-রূপার বিনিময়ে, গম যবের বিনিময়ে কম-বেশি বেচা-কেনা করাতে দোষের কিছু নেই যদি নগদ হয়, কিন্তু বাকী বেচা-কেনাতে কোন কল্যাণ নেই।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /৭৯, হা: ২১৭৮-২১৭৯; মুসলিম ২২/১৮, হাঃ ১৫৯৬] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২০. হালাল গ্রহণ করা ও সন্দেহযুক্তকে ছেড়ে দেয়া ।

১০২৮. নুমান ইবনি বশীর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দুয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ হইতে বেঁচে থাকিবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করিতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তার উদাহরণ সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু বাদশাহ্ সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে চরায়, অচিরেই সেগুলোর সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রেখ যে, প্রত্যেক বাদশাহরই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রেখ যে, আল্লাহ্‌র যমীনে তাহাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাহাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রেখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রেখ, সে গোশতের টুকরোটি হল অন্তর।

[বোখারী পর্ব ২: /৩৯, হা: ৫২; মুসলিম ২২/২০, হাঃ ১৫৯৯] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২১. উট বিক্রি করা ও তাতে চড়ে যাওয়ার শর্ত লাগানো ।

১০২৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তাহাঁর এক উটের উপর সওয়ার হয়ে সফর করছিলেন, সেটি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করিলেন এবং উটটিকে [চলার জন্য] প্রহার করে সেটির জন্য দুআ করিলেন। ফলে উটটি এত জোরে চলতে লাগলো যে, কখনো তেমন জোরে চলেনি। অতঃপর তিনি বলিলেন, এক উকিয়ার বিনিময়ে এটি আমার নিকট বিক্রি কর। আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, এটি আমার নিকট এক উকিয়ার বিনিময়ে বিক্রি কর। তখন আমি সেটি বিক্রি করলাম। কিন্তু আমার পরিজনের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত সওয়ার হওয়ার অধিকার রেখে দিলাম। অতঃপর উট নিয়ে আমি তাহাঁর নিকট গেলাম। তিনি আমাকে এর নগদ মূল্য দিলেন। অতঃপর আমি চলে গেলাম। তখন আমার পেছনে লোক পাঠালেন। পরে বলিলেন, তোমার উট নেয়ার ইচ্ছে আমার ছিল না। তোমার এ উট তুমি নিয়ে যাও, এটি তোমারই মাল।

শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] উটটির পেছনে মাদীনাহ পর্যন্ত আমাকে সওয়ার হইতে দিলেন । ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে মুগীরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বর্ণনা করেন, আমি সেটি এ শর্তে বিক্রি করলাম যে, মদীনায় পৌঁছা পর্যন্ত তার পিঠে সাওয়ার হওয়ার অধিকার আমার থাকিবে। আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] প্রমুখ বলেন, [রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছিলেন] মাদীনাহ পর্যন্ত তোমার তাতে সওয়ার হওয়ার অধিকার থাকিবে । ইবনি মুনকাদির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি মাদীনাহ পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হওয়ার শর্ত করিয়াছেন । যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন যে, তোমার প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হইতে পারবে । আবু যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণণা করেন যে, তোমাকে মাদীনাহ পর্যন্ত এর পিঠে সওয়ার হইতে দিলাম । আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন, এর উপর সওয়ার হয়ে তুমি পরিজনের নিকট পৌঁছবে । উবাইদুল্লাহ্ ও ইবনি ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ওয়াহ্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন, নাবী [সাঃআঃ] এক উকিয়ার বিনিময়ে সেটি খরীদ করেছিলেন । জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করিতে গিয়ে যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ওয়াহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অনুসরণ করিয়াছেন । ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আত্‌বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] প্রমুখ সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন যে, [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন,] আমি এটাকে বার দীনারের বিনিময়ে নিলাম । দশ দিরহামে এক দীনার হিসেবে তাতে এক উকিয়াই হয় । মুগীরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে এবং ইবনি মুনকাদির ও আবু যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনায় মূল্য উল্লেখ করেননি । আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনায় এক উকিয়া স্বর্ণ উল্লেখ করিয়াছেন । সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির [রাদি.] থেকে দাউদ ইবনি কায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি সেটি তাবুকের পথে খরীদ করেন । রাবী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেন, চার উকিয়ার বিনিময়ে । আবু নাযরা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন, তিনি সেটি বিশ দীনারে খরীদ করিয়াছেন । তবে শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত । এক উকিয়াই অধিক বর্ণিত । আবু আবদুল্লাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, [রিওয়ায়াতে বিভিন্ন রকমের হলেও] শর্তারোপ কৃত রিওয়ায়েতই অধিক সূত্রে বর্ণিত এবং আমার মতে এটাই অধিক সহীহ ।

[বোখারী পর্ব ৫৪: /৪, হা: ২৭১৮; মুসলিম ২২/২১ হাঃ ১৫৯৯] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০৩০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] কিছুক্ষণ পরে এসে আমার সঙ্গে মিলিত হন; আমি তখন আমার পানি-সেচের উটনীর উপর আরোহী ছিলাম। উটনী ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল; এটি মোটেই চলতে পারছিল না। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার উটের কী হয়েছে? আমি বললাম, ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তখন আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] উটনীর পেছন দিক থেকে গিয়ে উটনীটিকে হাঁকালেন এবং এটির জন্য দুআ করিলেন। অতঃপর এটি সবকটি উটের আগে আগে চলতে থাকে। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, এখন তোমার উটনীটি কেমন মনে হচ্ছে? আমি বললাম, ভালই। এটি আপনার বরকত লাভ করেছে। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি এটি আমার নিকট বিক্রি করিবে? তিনি বলেন, আমি মনে মনে লজ্জাবোধ করলাম। [কারণ] আমার নিকট এ উটটি ব্যতীত পানি বহনের অন্য কোন উটনী ছিল না। আমি বললাম, হ্যাঁ। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে আমার নিকট বিক্রি কর। অনন্তর আমি উটনীটি তাহাঁর নিকট এ শর্তে বিক্রি করলাম যে, মাদীনাহ্‌য় পৌঁছা পর্যন্ত এর উপর আরোহণ করব। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আমি সদ্য বিবাহিত একজন পুরুষ। অতঃপর আমি তাহাঁর নিকট অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি লোকদের আগে আগে চললাম এবং মাদীনাহ্‌য় পৌঁছে গেলাম। তখন আমার মামা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন। তিনি আমাকে উটনীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করিলেন। আমি তাকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম যা আমি করেছিলাম। তিনি আমাকে তিরস্কার করিলেন। তিনি [রাবী] বলেন, আর যখন আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট অনুমতি চেয়েছিলাম, তখন তিনি আমাকে প্রশ্ন করছিলেন, তুমি কি কুমারী বিবাহ করেছ, না এমন মহিলাকে বিবাহ করেছ যার পূর্বে বিবাহ হয়েছিল? আমি বললাম, এমন মহিলাকে বিবাহ করেছি যার পূর্বে বিবাহ হয়েছে। তিনি বলিলেন, তুমি কুমারী বিবাহ করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে খেলা করিতে এবং সেও তোমার সঙ্গে খেলা করত। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আমার পিতা শহীদ হয়েছেন। আমার কয়েকজন ছোট ছোট বোন রয়েছে। তাই আমি তাহাদের সমান বয়সের কোন মেয়ে বিবাহ করা পছন্দ করিনি যে তাহাদেরকে আদব-আখলাক শিক্ষা দিতে পারবে না এবং তাহাদের দেখাশোনা করিতে পারবে না। তাই আমি একজন পূর্বে বিবাহ হয়েছে এমন মহিলাকে বিবাহ করেছি যাতে সে তাহাদের দেখাশোনা করিতে পারে এবং তাহাদেরকে আদব-আখলাক শিক্ষা দিতে পারে। তিনি বলেন, যখন আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] মাদীনাহ্‌য় আসেন, পরদিন আমি তাহাঁর নিকট উটনীটি নিয়ে উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে এর মূল্য দিলেন এবং উটটিও ফেরত দিলেন। মুগীরাহ [রাদি.] বলেন, আমাদের বিবেচনায় এটি উত্তম। আমরা এতে কোন কোন দোষ মনে করি না।

[বোখারী পর্ব ৫৬: /১১৩, হা: ২৯৬৭; মুসলিম ২২/১২, হাঃ ৭১৫] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০৩১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ.

আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] আমার নিকট নিকট হইতে একটি উট দু উকিয়া ও এক দিরহাম কিংবা দু দিরহাম দ্বারা কিনে নেন এবং তিনি যখন সিরার নামক স্থানে পৌঁছেন, তখন একটি গাভী যব্‌হ করার নির্দেশ দেন। অতঃপর তা যব্‌হ করা হয় এবং সকলে তার গোশ্‌ত আহার করে। আর যখন তিনি মাদীনাহ্‌য় উপস্থিত হলেন তখন আমাকে মাসজিদে প্রবেশ করে দু রাকআত সালাত আদায় করিতে আদেশ করিলেন এবং আমাকে উটের মূল্য পরিশোধ করে দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৫৬: /১৯৯, হা: ৩০৮৯; মুসলিম ২২/২১, হাঃ ৭১৫] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২২. যে ব্যক্তি ধারে কিছু নিল এবং ঋণদাতাকে তার চেয়ে বেশি দিল এবং তোমাদের মধ্যে সে উত্তম যে উত্তমভাবে অন্যের পাওনা আদায় করে ।

১০৩২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে পাওনার জন্য তাগাদা দিতে এসে রূঢ় ভাষায় কথা বলিতে লাগল। এতে সাহাবীগণ তাকে শায়েস্তা করিতে উদ্যত হলেন। তখন আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা, পাওনাদারদের কড়া কথা বলার অধিকার রয়েছে। তারপর তিনি বলিলেন, তার উটের সমবয়সী একটি উট তাকে দিয়ে দাও। তাঁরা বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! এটা নেই। এর চেয়ে উত্তম উট রয়েছে। তিনি বলিলেন, তাই দিয়ে দাও। তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোৎকৃষ্ট, যে ঋণ পরিশোধের বেলায় উত্তম।

[বোখারী পর্ব ৪০: /৬, হা: ২৩০৬; মুসলিম ২২/২২, হাঃ ১৬০১] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২৪. বন্ধক রাখা এবং এটা বাড়ীতে ও সফরে জায়িয ।

১০৩৩. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বাকীতে ক্রয়ের জন্য বন্ধক রাখা সম্পর্কে আমরা ইবরাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর কাছে আলোচনা করছিলাম। তখন তিনি বলেন, আসওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আয়েশা [রাদি.] হইতে আমার কাছে বর্ণনা করেন যে, নাবী [সাঃআঃ] এক ইয়াহূদীর নিকট হইতে নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য পরিশোধের শর্তে খাদ্য ক্রয় করেন এবং তার নিকট নিজের লোহার বর্ম বন্ধক রাখেন।

[বোখারী পর্ব ৩৪: /১৪, হা: ২০৬৮; মুসলিম ২২/২৪, হাঃ ১৬০৩] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২৫. বাইয়ে সালাম ।

১০৩৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে দু ও তিন বছরের মেয়াদে সলম করত। আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, কোন ব্যক্তি সলম করলে সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে সলম করে।

[বোখারী পর্ব ৩৫: /২, হা: ২২৪০; মুসলিম ২২/২৫, হাঃ ১৬০৪] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২৭. বিক্রয়ে কসম খাওয়া নিষিদ্ধ ।

১০৩৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, মিথ্যা কসম পণ্য চালু করে দেয় বটে, কিন্তু বরকত নিশ্চিহ্ন করে দেয়

। [বোখারী পর্ব ৩৪: /২৬, হা: ২০৮৭; মুসলিম ২২/২৭, হাঃ ১৬০৬] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২৮. শুফ্আহ

১০৩৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যে সব সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়নি, তাতে শুফ্আহ এর ফায়সালা দিয়েছেন। যখন সীমানা নির্ধারিত হয়ে যায় এবং পথও পৃথক হয়ে যায়, তখন শুফ্আহ এর অধিকার থাকে না

। [বোখারী পর্ব ৩৬: /১, হা: ২২৫৭; মুসলিম ২২/২৮, হাঃ ১৬০৮] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/২৯. প্রতিবেশির দেয়ালে খুঁটি গাড়া ।

১০৩৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন প্রতিবেশি যেন তার প্রতিবেশিকে তার দেয়ালে খুঁটি পুঁততে নিষেধ না করে। তারপর আবু হুরাইরাহ [রাদি.] বলেন, কী হল, আমি তোমাদেরকে এ হাদীস হইতে উদাসীন দেখিতে পাচ্ছি। আল্লাহ্‌র কসম, আমি সব সময় তোমাদেরকে এ হাদীস বলিতে থাকব।

[বোখারী পর্ব ৪৬: /২০, হা: ২৪৬৩; মুসলিম ২২/২৯, হাঃ ১৬০৯] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৩০. যুল্‌ম করা অন্যের জমি জবর-দখল করা ইত্যাদি হারাম ।

১০৩৮. সাঈদ ইবনি যায়িদ ইবনি আম্‌র ইবনি নুফাইর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আরওয়া নামক এক মহিলা এক সাহাবীর [সাঈদের] বিরুদ্ধে মারওয়ানের নিকট তার ঐ পাওনার ব্যাপারে মামলা দায়ের করিল, যা তার ধারণায় তিনি নষ্ট করিয়াছেন। ব্যাপার শুনে সাঈদ [রাদি.] বলিলেন, আমি কি তার সামান্য হকও নষ্ট করিতে পারি? আমি তো সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি জুলুম করে অন্যের এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের শিকল তার গলায় পরিয়ে দেয়া হইবে। ইবনি আবুয যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে, তিনি তাহাঁর পিতা নিকট হইতে বর্ণনা করিতে গিয়ে বলেছেন, তিনি [হিশামের পিতা উরওয়াহ] [রাদি.] বলেন, সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.] আমাকে বলেছেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলাম [তখন তিনি এ হাদীস বর্ণনা করেন]।

[বোখারী পর্ব ৫৯: /২, হা: ৩১৯৮; মুসলিম ২২/৩০, হাঃ ১৬১০] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০৩৯. আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর এবং কয়েকজন লোকের মধ্যে একটি বিবাদ ছিল। আয়েশা [রাদি.]-এর কাছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলিলেন, হে আবু সালামাহ! জমির ব্যাপারে সতর্ক থাক। কেননা, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি এক বিঘত জমি অন্যায়ভাবে নিয়ে নেয়, [কিয়ামাতের দিন] এর সাত তবক জমি তার গলায় লটকিয়ে দেয়া হইবে।

[বোখারী পর্ব ৪৬: /১৩, হা: ২৪৫৩; মুসলিম ২২/৩০, হাঃ ১৬১২] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২২/৩১. রাস্তার পরিমাণ কত হইবে যখন এতে মতানৈক্য হইবে ।

১০৪০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, [রাস্তার ব্যাপারে] জমি নিয়ে বিবাদ হলে, তখন নাবী [সাঃআঃ] রাস্তার জন্য সাত হাত জমি ছেড়ে দেয়ার ফয়সালা দেন।

[বোখারী পর্ব ৪৬: /২৯, হা: ২৪৭৩; মুসলিম ২২/৩১, হাঃ ১৬১৩] পানি সিঞ্চন -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

One response to “পানি সিঞ্চন । বৃক্ষরোপণ ও চাষাবাদের ফাযীলাত”

Leave a Reply