পানাহারের নিয়ম ও বিধান

পানাহারের নিয়ম ও বিধান

পানাহারের নিয়ম ও বিধান >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১৩. অধ্যায়ঃ পানাহারের নিয়ম ও বিধান

৫১৫৪. হুযাইফাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন খাবার অনুষ্ঠানে যখন আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে উপবিষ্ট হতাম। যতক্ষণ তিনি স্বীয় হাত রেখে আরম্ভ না করিতেন ততক্ষণ আমরা আমাদের হাত [আহারে] রাখতাম না। একবার আমরা তাহাঁর সাথে এক খাবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলাম। এমনি মুহূর্তে একটি মেয়ে এলো। [মনে হচ্ছিল] যেন তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সে খাবারে হাত দিতে গেলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার হাত ধরে নিলেন। অতঃপর একজন বেদুঈন এলো। [মনে হচ্ছিল] যেন তাকে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল। তিনি তারও হাত ধরে নিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করা না হলে শাইতান সে খাদ্যকে হালাল করে ফেলে। আর সে এ মেয়েটিকে নিয়ে এসেছে যাতে করে [এ খাদ্যকে] তার দ্বারা হালাল করিতে পারে। অতঃপর আমি তার হাত ধরে ফেললে সে এ বেদুঈনকে নিয়ে এসেছে। যাতে করে [এ খাদ্যকে] তার দ্বারা হালাল করিতে পারে। কিন্তু আমি তারও হাত ধরে ফেলেছি। সে সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন! অবশ্যই তার [শাইতানের] হাত মেয়েটির হাতসহ আমার হাতের মুঠোয়।

[ই.ফা.৫০৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫০৯৯]

৫১৫৫. হুযাইফাহ্‌ ইবনি ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদেরকে যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে কোন খাবার উপলক্ষে দাওয়াত করা হতো। অতঃপর বর্ণনাকারী আবু মুআবিয়াহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের মতই বর্ণনা করেন। তবে তিনি يُدْفَعُ এর স্থলে يُطْرَدُ এবং মেয়ের বেলায় تُدْفَعُ স্থলে تُطْرَدُ শব্দ উচ্চারণ করেন। আর এ হাদীসে তিনি মেয়েটির আগমনের পূর্বে বেদুঈনের আসার কথা বর্ণনা করিয়াছেন এবং হাদীসের শেষে অতিরিক্ত বলেছেন, তারপর তিনি “বিসমিল্লাহ” বলেন এবং খাদ্য গ্রহণ করেন।

[ই.ফা.৫০৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০০]

৫১৫৬. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উপরোল্লিখিত সূত্রে হুবহু বর্ণিত আছে। তবে তিনি মেয়েটির আসা ও পরে বেদুঈনের আসার কথা উল্লেখ করিয়াছেন।

[ই.ফা.৫০৯০, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৫১৫৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন যে যখন কোন ব্যাক্তি তার ঘরে প্রবেশের এবং খাবার গ্রহণের সময় আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করে, তখন শাইতান হতাশ হয়ে [তার সঙ্গীদের] বলে- তোমাদের [এখানে] রাত্রি যাপনও নেই, খাওয়াও নেই। আর যখন সে প্রবেশ করে এবং প্রবেশকালে আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ না করে, তখন শাইতান বলে, তোমরা থাকার স্থান পেয়ে গেলে। আর যখন সে খাবারের সময় আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ না করে, তখন সে [শাইতান] বলে, তোমাদের নিশি যাপন ও রাতের খাওয়ার আয়োজন হলো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০১]

৫১৫৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন। তারপর রাবী আবু আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] –এর হাদীসের মত বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি وَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ طَعَامِهِ শব্দের স্থানে وَإِنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ عِنْدَ طَعَامِهِ এবং فَلَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ এর জায়গায়إِنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ عِنْدَ دُخُولِهِ বলেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০২]

৫১৫৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা বাম হাতে আহার করিবে না। কারণ, শাইতান বাম হাতে আহার করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০৩]

৫১৬০. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ খাদ্য খায়, তখন সে যেন ডান হাতে খায় আর যখন পান করে, সে যেন ডান হাতে পান করে কারণ শাইতান বাম হাতে খায় ও পান করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০৪]

৫১৬১. কুতাইবাহ্ ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] মালিক ইবনি আনাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, ভিন্ন সূত্রে ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার পিতা নুমায়র থেকে, অন্য একটি সূত্রে ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইয়াহ্ইয়া আল-কাত্তান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, শেষাংশে দুজন উবাইদুল্লাহ হইতে, আর তারা সবাই যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৪, ই.সা. ৫১০৫]

৫১৬২. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন বাম হাতে পানাহার না করে। কারণ শাইতান বাম হাতে পানাহার করে। রাবী বলেন, নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এতে অতিরিক্ত করিতেন, বাম হাতে যেন কোন [কিছু] আদান-প্রদানও না করে। আবু তাহির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় [আরবি] এর জায়গায় [আরবি] শব্দ রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০৬]

৫১৬৩. সালামাহ্‌ ইবনি আক্‌ওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট বাম হাতে খাদ্য গ্রহণ করছিল। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার ডান হাতে খাও। সে বলিল, আমি পারবো না। তিনি বললেনঃ তুমি যেন না-ই পার। শুধুমাত্র অহমিকাই তাকে বারণ করছে। সালামাহ্‌ [রাদি.] বলেন, সে আর কখনো তার ডান হাত মুখের নিকট উঠাতে পারেনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০৭]

৫১৬৪. উমর ইবনি আবু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর তত্ত্বাবধানে ছিলাম। খাবার বাসনে আমার হাত চারপাশে ঘুরত। তিনি আমাকে বললেনঃ হে বালক! তুমি তোমার ডান হাতে খাও এবং নিজের পাশ হইতে খাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫১০৮]

৫১৬৫. উমর ইবনি আবু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সাথে খাবার খাচ্ছিলাম। আমি বাসনের বিভিন্ন দিকে হইতে গোশ্ত নিতে লাগলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি নিজের পাশ থেকে ভক্ষণ কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৯]

৫১৬৬. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী[সাঃআঃ] বর্তনের মুখে মুখ লাগিয়ে পান করিতে বারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫১১০]

৫১৬৭. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মশ্‌ক বাকিয়ে এর মুখে মুখ লাগিয়ে পান করিতে বারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০০, ইসলামিক সেন্টার- ৫১১১]

৫১৬৮. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উপরোল্লিখিত সূত্রে হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। তবে রাবী মামার বলেছেন, [আরবি] অর্থ মশ্কের মাথা হেলিয়ে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০১, ইসলামিক সেন্টার- ৫১১২]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply