পাওনাদার, দান , সুদ, এতিমের মাল ভক্ষণ ও রিয়া নিষেধ

পাওনাদার, দান , সুদ, এতিমের মাল ভক্ষণ ও রিয়া নিষেধ

পাওনাদার, দান , সুদ, এতিমের মাল ভক্ষণ ও রিয়া নিষেধ >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর কয়েকটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পাওনাদার, দান , সুদ, এতিমের মাল ভক্ষণ ও রিয়া নিষেধ

পরিচ্ছেদ – ২৮৪ঃ পাওনাদারের পাওনা আদায়ে ধনী ব্যক্তির টাল-বাহানা বৈধ নয়
পরিচ্ছেদ – ২৮৫ঃ উপহার বা দানের বস্তু ফেরৎ নেওয়া অপছন্দনীয় কাজ
পরিচ্ছেদ – ২৮৬ঃ এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ
পরিচ্ছেদ – ২৮৭ঃ সূদ খাওয়া সাংঘাতিক হারাম কাজ
পরিচ্ছেদ – ২৮৮ঃ ‘রিয়া’ [লোক-প্রদর্শনমূলক কার্যকলাপ] হারাম
পরিচ্ছেদ – ২৮৯ঃ যাকে লোক ‘রিয়া’ বা প্রদর্শন ভাবে অথচ তা প্রদর্শন নয়

পরিচ্ছেদ – ২৮৪ : পাওনাদার এর পাওনা আদায়ে ধনী ব্যক্তির টাল-বাহানা বৈধ নয়

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا  ٥٨ ﴾ [النساء : ٥٨] 

অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করিবে। [সূরা নিসা ৫৮ আয়াত]

তিনি আরও বলেছেন,  

﴿ فَإِنۡ أَمِنَ بَعۡضُكُم بَعۡضٗا فَلۡيُؤَدِّ ٱلَّذِي ٱؤۡتُمِنَ أَمَٰنَتَهُۥ وَلۡيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥۗ ٢٨٣ ﴾ [البقرة: ٢٨٣] 

অর্থাৎ যদি তোমরা পরস্পর পরস্পরকে বিশ্বাস কর, তাহলে যাকে বিশ্বাস করা হয় [যার কাছে আমানত রাখা হয়] সে যেন [বিশ্বাস বজায় রেখে] আমানত প্রত্যর্পণ করে এবং তার প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করে। [সূরা বাকারাহ ২৮৩ আয়াত]

১৬১৯. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘ধনী ব্যক্তির (ঋণ আদায়ের ব্যাপারে) টাল-বাহানা করা অন্যায়। আর তোমাদের কাউকে যখন কোন ধনী ব্যক্তির হাওয়ালা ক‘রে দেওয়া হবে, তখন তার উচিত, তার অনুসরণ করা।’’ (অর্থাৎ তার কাছে ঋণ তলব করা।)

(সহীহুল বুখারী শরীফ ২২৮৭, ২২৮৮, ২৪০০, মুসলিম ১৫৬৪, তিরমিজী ১৩০৮, নাসাঈ ৪৬৮৮, ৪৬৯১, আবু দাঊদ ৩৩৪৫, ইবনু মাজাহ ২৪০৩, আহমাদ ৭২৯১, ৭৪৮৮, ৮৬৭৯, ৮৭১৫, ৯৬৭৬, ২৭৭৭৮, ২৭৩৯২, ২৭২৩৯, মুওয়াত্তা মালিক ১৩৯৭, দারেমী ২৫৮৬) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ – ২৮৫: উপহার বা দানের বস্তু ফেরৎ নেওয়া অপছন্দনীয় কাজ

১৬২০. ইবনে আব্বাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি নিজের দান ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে, তারপর তা আবার খেয়ে ফেলে।’’

(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৫৮৯, ২৬২১, ২৬২২, ৬৯৭৫, মুসলিম ১৬২২, তিরমিজী ১২৯৮, নাসাঈ ৩৬৯৩-৩৭০৫, ৩৭১০, আবু দাঊদ ৩৫৩৮, ইবনু মাজাহ ২৩৮৫, আহমাদ ১৮৭৫, ২১২০, ২২৫০, ২৫২৫, ২৬১৭, ৩০০৬, ৩২১১) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

১৬২১. উমার ইবনে খাত্তাব রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার একটি ঘোড়া ছিল, যা আমি আল্লাহর রাস্তায় (ব্যবহারের জন্য এক মুজাহিদকে) দান করলাম। যার কাছে এটা ছিল, সে এটাকে নষ্ট করে দিল। [অর্থাৎ যথোচিত যত্ন করতে না পারলে ঘোড়াটি রুগ্ন বা দুর্বল হয়ে পড়ল]। ফলে আমি তা কিনে নিতে চাইলাম এবং আমার ধারণা ছিল যে, সে সেটি সস্তা দামে বিক্রি করিবে। (এ সম্পর্কে) আমি নবী সাঃআঃ-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘‘তুমি তা ক্রয় করো না এবং তোমার [দেওয়া] সাদকাহ ফিরিয়ে নিয়ো না; যদিও সে তোমাকে তা এক দিরহামের বিনিময়ে দিতে চায়। কেননা, দান করে ফেরৎ গ্রহণকারী ব্যক্তি, বমি করে পুনর্ভক্ষণকারীর মত।’’

(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৬২৩, ১৪৯০, ২৬৩৬, ২৯৭০, ৩০০৩, মুসলিম ১৬২০, তিরমিজী ৬৬৮, নাসাঈ ২৬১৫, ২৬১৬, আবু দাঊদ ১৫৯৩, ইবনু মাজাহ ২৩৯০, ২৩৯২, আহমাদ ১৬৭, ২৬০, ২৮৩, ৩৮৬, মুওয়াত্তা মালিক ৬২৪, ৬২৫) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ – ২৮৬: এতীমের মাল ভক্ষণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ

১৬২২. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘তোমরা সাত প্রকার ধ্বংসাত্মক কর্ম থেকে দূরে থাক।’’ লোকেরা বলল, ‘সেগুলো কী কী? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, (১) ‘‘আল্লাহর সাথে শিরক করা। (২) যাদু করা। (৩) অন্যায়ভাবে এমন জীবন হত্যা করা, যাকে আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন। (৪) সূদ খাওয়া। (৫) এতীমের ধন-সম্পদ ভক্ষণ করা। (৬) ধর্মযুদ্ধ কালীন সময়ে (রণক্ষেত্র) থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন ক’রে পলায়ন করা। (৭) সতী-সাধ্বী উদাসীনা মু’মিন নারীদের চরিত্রে মিথ্যা কলঙ্ক আরোপ করা।’’

(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৭৬৭, ২৭৬৬, ৫৭৬৪, ৬৮৫৭, মুসলিম ৮৯, নাসাঈ ৩৬৭১, আবু দাঊদ ২৮৭৪) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ – ২৮৭: সুদ খাওয়া সাংঘাতিক হারাম কাজ

১৬২৩. ইবনে মাসঊদ রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সাঃআঃ সুদখোর ও সূদদাতাকে অভিশাপ করিয়াছেন।’

(মুসলিম ১৫৯৭, তিরমিজী ১২০৬, নাসাঈ ৩৪১৬, আবু দাঊদ ৩৩৩৩, ইবনু মাজাহ ২২৭৭, আহমাদ ৩৭১৭, ৩৭২৯, ৩৭৯৯, ৩৮৭১, ৪০৭৯, ৪২৭১, ৪৩১৫, ৪৪১৪, দারেমী ২৫৩৫) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ – ২৮৮: ‘রিয়া’ (লোক-প্রদর্শনমূলক কার্যকলাপ) হারাম

১৬২৪. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘আমি সমস্ত অংশীদারদের চাইতে অংশীদারি (শির্ক) থেকে অধিক অমুখাপেক্ষী। কেউ যদি এমন কাজ করে, যাতে সে আমার সঙ্গে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করে, তাহলে আমি তাকে তার অংশীদারি (শির্ক) সহ বর্জন করি।’’ (অর্থাৎ তার আমলই নষ্ট করে দিই।)

(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৯৮৫, ইবনু মাজাহ ৪২০২, আহমাদ ৭৯৩৯, ৯৩৩৬) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

১৬২৫. উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রসূল সাঃআঃ বলেছেন যে, ‘‘কিয়ামতের দিন অন্যান্য লোকদের পূর্বে যে ব্যক্তির প্রথম বিচার হবে সে হচ্ছে একজন শহীদ। তাকে আল্লাহর দরবারে হাজির করা হবে। আল্লাহ তাকে তাঁর দেওয়া নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। সুতরাং সে তা স্মরণ করিবে। অতঃপর আল্লাহ বলবেন, ‘ঐ নেয়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল ক’রে এসেছ?’ সে বলবে ‘আমি তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য জিহাদ করেছি এবং অবশেষে শহীদ হয়ে গেছি।’ আল্লাহ বলবেন, ‘তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে জিহাদ করেছ, যাতে লোকেরা তোমাকে বলে, অমুক একজন বীর পুরুষ। সুতরাং তা-ই বলা হয়েছে।’ অতঃপর (ফেরেশতাদেরকে) আদেশ করা হবে এবং তাকে উবুড় ক’রে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

দ্বিতীয় হচ্ছে এমন ব্যক্তি, যে ইলম শিক্ষা করেছে, অপরকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কুরআন পাঠ করেছে। তাকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ তাকে (পৃথিবীতে প্রদত্ত) তাঁর সকল নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। সেও সব কিছু স্মরণ করিবে। অতঃপর আল্লাহ বলবেন, ‘এই সকল নেয়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল ক’রে এসেছ?’ সে বলবে, ‘আমি ইলম শিখেছি, অপরকে শিখিয়েছি এবং তোমার সন্তুষ্টি-লাভের জন্য কুরআন পাঠ করেছি।’ আল্লাহ বলবেন, ‘মিথ্যা বলছ তুমি। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে ইলম শিখেছ, যাতে লোকেরা তোমাকে আলেম বলে এবং এই উদ্দেশ্যে কুরআন পড়েছ, যাতে লোকেরা তোমাকে ক্বারী বলে। আর (দুনিয়াতে) তা বলা হয়েছে।’ অতঃপর (ফেরেশতাদেরকে) নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উবুড় ক’রে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

তৃতীয় হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যার রুযীকে আল্লাহ প্রশস্ত করেছিলেন এবং সকল প্রকার ধন-দৌলত যাকে প্রদান করেছিলেন। তাকে আল্লাহর দরবারে হাজির করা হবে। আল্লাহ তাকে তাঁর দেওয়া সমস্ত নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। সেও সব কিছু স্মরণ করিবে। অতঃপর আল্লাহ প্রশ্ন করিবেন, ‘তুমি ঐ সকল নেয়ামতের বিনিময়ে কি আমল ক’রে এসেছ?’ সে বলবে, ‘যে সকল রাস্তায় দান করলে তুমি খুশী হও সে সকল রাস্তার মধ্যে কোনটিতেও তোমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে খরচ করতে ছাড়িনি।’ তখন আল্লাহ বলবেন, ‘মিথ্যা বলছ তুমি। বরং তুমি এ জন্যই দান করেছিলে; যাতে লোকে তোমাকে দানবীর বলে। আর তা বলা হয়েছে।’ অতঃপর (ফেরেশতাবর্গকে) হুকুম করা হবে এবং তাকে উবুড় ক’রে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

[মুসলিম ১৯০৫ নং] (মুসলিম ১৯০৫, তিরমিজী ২৩৮২, নাসাঈ ৩১৩৭, আহমাদ ৮০৮৭ ) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

১৬২৬. ইবনে উমার রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

কিছু লোক তাঁর নিকট নিবেদন করল যে, ‘আমরা আমাদের শাসকদের নিকট যাই এবং তাদেরকে ঐ সব কথা বলি, যার বিপরীত বলি তাদের নিকট থেকে বাইরে আসার পর। (সে সম্বন্ধে আপনার অভিমত কী?)’ ইবনে উমার রাঃআঃ উত্তর দিলেন, ‘রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর যামানায় এরূপ আচরণকে আমরা ‘মুনাফিক্বী’ আচরণ বলে গণ্য করতাম।’

(সহীহুল বুখারী শরীফ ৭১৭৮, ইবনু মাজাহ ৩৯৭৫, আহমাদ ৫৭৯৫) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

১৬২৭. জুন্দুব ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সুফয়ান রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি শোনাবে, আল্লাহ তা শুনিয়ে দিবেন। আর যে ব্যক্তি দেখাবে, আল্লাহ তা দেখিয়ে দিবেন।’’

[বুখারী ও মুসলিম, মুসলিম ইবনে আব্বাস থেকেও বর্ণনা করিয়াছেন।] (সহীহুল বুখারী শরীফ ৭১৫২, ৬৪৯৯, মুসলিম ২৯৮৭, ইবনু মাজাহ ৪২০৭, আহমাদ ১৮৩৩০) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

১৬২৮. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে বিদ্যা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, তা যদি একমাত্র সামান্য পার্থিব স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিক্ষা করে, তাহলে সে কিয়ামতের দিনে জান্নাতের সুগন্ধটুকুও পাবে না।’’

(ইবনু মাজাহ ২৫২, আবু দাঊদ ২৬৬৪, আহমাদ ৮২৫২) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ – ২৮৯: যাকে লোক ‘রিয়া’ বা প্রদর্শন ভাবে অথচ তা প্রদর্শন নয়

১৬২৯. আবু যার্র রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-কে জিজ্ঞাসা করা হল; বলুন, ‘যে মানুষ সৎকাজ করে, আর লোকে তার প্রশংসা করে থাকে (তাহলে এরূপ কাজ কি রিয়া বলে গণ্য হবে?)’ তিনি বললেন, ‘‘এটা মু’মিনের সত্বর সুসংবাদ।’’

(মুসলিম ২৬৪২, ইবনু মাজাহ ৪২২৫, আহমাদ ২০৮৭২, ২০৯৬৬) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস

Comments

Leave a Reply