ফিতনা, জন্তুর কথা বলা, চন্দ্র বিদীর্ণ, ভূমিধস ও পশ্চিমে সূর্যোদয়

ফিতনা, জন্তুর কথা বলা, চন্দ্র বিদীর্ণ, ভূমিধস ও পশ্চিমে সূর্যোদয়

ফিতনা, জন্তুর কথা বলা, চন্দ্র বিদীর্ণ, ভূমিধস ও পশ্চিমে সূর্যোদয় >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ৩১, অনুচ্ছেদঃ (১-২২)=২২টি

১. অনুচ্ছেদঃ তিনটি কারণের কোন একটি ব্যতীত কোন মুসলমানের রক্তপাত বৈধ নয়
২. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের জীবন ও সম্পদে হস্তক্ষেপ করা হারাম
৩. অনুচ্ছেদঃ এক মুসলমানকে অপর মুসলমানের ভীতি প্রদর্শন করা বৈধ নয়
৪. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির তলোয়ার দ্বারা মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ইশারা করা
৫. অনুচ্ছেদঃ কোষমুক্ত অবস্থায় তলোয়ার আদান-প্রদান নিষেধ
৬. অনুচ্ছেদঃ যে লোক ফজরের নামাজ আদায় করে সে আল্লাহ্ তাআলার হিফাযাতে থাকে
৭. অনুচ্ছেদঃ সংঘবদ্ধ হয়ে থাকার প্রয়োজনীয়তা
৮. অনুচ্ছেদঃ অন্যায় কাজ প্রতিরোধ না করা হলে আযাব অবতীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে
৯. অনুচ্ছেদঃ সৎকাজের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ
১০. অনুচ্ছেদঃ একটি স্বৈরাচারী সামরিক বাহিনী ধ্বসে যাবে
১১. অনুচ্ছেদঃ হাতের শক্তি অথবা ভাষা অথবা অন্তর দ্বারা হলেও অন্যায় প্রতিহত করিতে হইবে
১২. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয় প্রসঙ্গে
১৩. অনুচ্ছেদঃ স্বৈরাচারী শাসকের সামনে হক্ব কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ
১৪. অনুচ্ছেদঃ উম্মাতের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর তিনটি দুআ
১৫. অনুচ্ছেদঃ ফিতনায় পতিত ব্যক্তি প্রসঙ্গে
১৬. অনুচ্ছেদঃ জিহ্‌বা হইবে তরবারির চাইতেও মারাত্মক
১৭. অনুচ্ছেদঃ আমানতদারি থাকিবে না
১৮. অনুচ্ছেদঃ তোমরা তো তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি অবলম্বন করিবে
১৯. অনুচ্ছেদঃ হিংস্র জন্তু কথা বলবে
২০. অনুচ্ছেদঃ চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে
২১. অনুচ্ছেদঃ ভূমিধস প্রসঙ্গে
২২. অনুচ্ছেদঃ পশ্চিম প্রান্ত হইতে সূর্যোদয়

১. অনুচ্ছেদঃ তিনটি কারণের কোন একটি ব্যতীত কোন মুসলমানের রক্তপাত বৈধ নয়

২১৫৮. আবু উমামা ইবনি সাহ্‌ল ইবনি হুনাইফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উসমান [রাদি.]বিদ্রোহীদের দ্বারা বাড়ীতে অবরুদ্ধ থাকাকালে [বিদ্রোহীদের] বলেন, আমি আল্লাহর শপথ করে তোমাদেরকে বলছিঃ তোমরা কি জান যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তিনটি অপরাধের কোন একটি ব্যতীত মুসলমান ব্যক্তিকে খুন করা হালাল নয়? বিয়ে করার পর যিনা করা, ইসলাম ক্ববূল করার পর ধর্মত্যাগী হওয়া এবং কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে খুন করা। এগুলোর যে কোন একটি অপরাধের কারণে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা যায়”। আল্লাহর শপথ! আমি জাহিলী আমলেও যিনা করিনি এবং ইসলাম ক্ববূলের পরেও নয়। আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট যেদিন আনুগত্যের শপথ [বাইআত] গ্রহণ করেছি সেদিন হইতে ধর্মত্যাগীও হইনি। আর এরূপ কোন প্রাণও আমি হত্যা করিনি যার হত্যা আল্লাহ্ তাআলা অবৈধ করিয়াছেন। আমাকে কি কারণে তোমরা হত্যা করিবে?

সহিহ, ইবনি মা-জাহ [২৫৩৩], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসউদ, আইশা ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ হইতে হাম্মাদ ইবনি সালামা মারফুরূপে বর্ণনা করিয়াছেন। আর এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ হইতে ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তানসহ একাধিক বর্ণনাকারী মাওকুফভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, মারফুভাবে নয়। উসমান [রাদি.] এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে একাধিক সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের জীবন ও সম্পদে হস্তক্ষেপ করা হারাম

২১৫৯. সুলাইমান ইবনি আমর [রঃ] হইতে তার বাবা আমর [রাদি.]এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বিদায় হাজ্জে জনগণের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ এটা কোন দিন? জনগণ বলিল, বড় হাজ্জের দিন। তিনি বললেনঃ আজকের এ দিন ও তোমাদের এ শহর যেমন হারাম [মহাপবিত্র] অনুরুপভাবে তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের সম্ভ্রম পরস্পরের জন্য হারাম। সাবধান! অপরাধী তার অপরাধের জন্য নিজেই দায়ী। সাবধান! সন্তানের প্রতি জনকের অপরাধ এবং জনকের প্রতি সন্তানের অপরাধ বর্তায় না। জেনে রাখো, শাইতানের কোন ইবাদাত তোমাদের এ নগরে কখনো হইবে না, সে এ ক্ষেত্রে নিরাশ হয়ে গেছে। তবে তোমরা যে সকল কাজকে তুচ্ছ মনে কর অতি শিঘ্রই সে সকল কাজে তার অনুসরণ করা হইবে এবং সে তাতে সন্তুষ্ট হইবে।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ [৩০৫৫]। আবু ঈসা বলেন, আবু বাকর [রাদি.], ইবনি আব্বাস [রাদি.], জাবির [রাদি.] ও হিযইয়াম ইবনি আমর আস-সাদী [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। যাইদাও একইরকম হাদীস শাবীব ইবনি গারকাদার সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র শাবীব ইবনি গারকাদার সূত্রেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩. অনুচ্ছেদঃ এক মুসলমানকে অপর মুসলমানের ভীতি প্রদর্শন করা বৈধ নয়

২১৬০. সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে তার বাবার সূত্রে তার দাদা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের লাঠিতে ঠাট্টাস্বরূপ বা প্রকৃতই যেন হাত না দেয়। যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের লাঠি নিয়ে যায় তাহলে সে যেন তাকে তা ফেরত দেয়।

সহিহ, লিগাইরিহি, সহীহাহ [৯২১]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি উমার, সুলাইমান ইবনি সুরাদ, জাদাহ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ বিষয়ে আমাদের ইবনি আবী যিবের বর্ণনা ব্যতীত আর কিছুই জানা নেই। সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহচার্য্য পেয়েছেন। তিনি নাবালেগ থাকাকালীন সময়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হইতে অনেক হাদীস শুনেছেন। সাইব [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মৃত্যুকালে সাত বছরের বালক ছিলেন। তার বাবা ইয়াযীদ ইবনিস সাইব [রাদি.] ছিলেন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অন্যতম সাহাবী। তিনি কয়েকটি হাদীস রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি ছিলেন নামিরের বোনের ছেলে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

২১৬১. সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়াযীদ [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে বিদায় হাজ্জ পালন করেন, আমি সে সময়ে সাত বছরের বালক ছিলাম। আলী ইবনিল মাদীনী ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান [রঃ]-এর সূত্রে বলেন, হাদীস শাস্ত্রে মুহাম্মাদ ইবনি ইউসুফ একজন বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। সাইব ইবনি ইয়াযীদ তার নানা ছিলেন। মুহাম্মদ ইঊসুফ বলিতেন সাইব ইবনি ইয়াযীদ আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি আমার নানা হন।

সনদ হাসান, মাওকুফ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান মাওকুফ

৪. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির তলোয়ার দ্বারা মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ইশারা করা

২১৬২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে তার ভাইয়ের দিকে লৌহ [তলোয়ার] দ্বারা ইশারা করে, ফেরেশতাগণ তাকে অভিসম্পাত করেন।

সহিহ, গাইয়াতুল মারাম [৪৪৬], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আবু বাকরা, আইশা ও জাবির [রাদি.]হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ এবং এ সূত্রে গারীব। খালিদ আল-হাযযার কারণে এতে গারীবী এসেছে। একইরকম হাদীস আইয়্যুব মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন হইতে, তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.]এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, তবে তা মারফুভাবে নয়। আর সেই হাদিসে “ওয়াইন কানা আখাহু লিআবীহি ওয়া উম্মিহি” [যদিও সে তার সহোদর ভাই হয়] কথাটুকুও আছে। এ বর্ণনাটি কুতাইবা-হাম্মাদ ইবনি যাইদ এর বরাতে আইয়্যুব [রঃ] এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫. অনুচ্ছেদঃ কোষমুক্ত অবস্থায় তলোয়ার আদান-প্রদান নিষেধ

২১৬৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোষমুক্ত অবস্থায় তলোয়ার আদান-প্রদান করিতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বারণ করিয়াছেন।

সহিহ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৩৫২৭]। আবু ঈসা বলেন, আবু বাকর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং হাম্মাদ ইবনি সালামার বর্ণনা হিসেবে গারীব। আবুয যুবাইর-জাবির হইতে, তিনি বান্নাতুল জুহানী [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে ইবনি লাহীআ [রঃ] এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। আমার মতে হাম্মাদ ইবনি সালামা হইতে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬. অনুচ্ছেদঃ যে লোক ফজরের নামাজ আদায় করে সে আল্লাহ্ তাআলার হিফাযাতে থাকে

২১৬৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফজরের নামাজ যে লোক আদায় করে, সে আল্লাহ্ তাআলার হিফাযতে থাকে। সুতরাং আল্লাহ্ তাআলা তোমাদেরকে যেন তাহাঁর দায়িত্ব প্রসঙ্গে অভিযুক্ত না করেন।

সহিহ, সহীহুত তারগীব [৪৬১], তালীকুর রাগীব [১/১৪১, ১৫৫৫, ১৬৩] আবু ঈসা বলেন, জুনদাব ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং এ সূত্রে গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭. অনুচ্ছেদঃ সংঘবদ্ধ হয়ে থাকার প্রয়োজনীয়তা

২১৬৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জাবিয়া [সিরিয়ার অন্তর্গত] নামক জায়গায় উমার [রাদি.] আমাদের সামনে খুতবাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে বলেনঃ হে উপস্থিত জনতা! যেভাবে আমাদের মাঝে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়াতেন, সেভাবে তোমাদের মাঝে আমিও দাঁড়িয়েছি। তারপর তিনি [রসুলুল্লাহ সাঃআঃ] বলেনঃ আমার সাহাবীদের ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি [তাহাদের জমানা শ্রেষ্ঠ জমানা], তারপর তাহাদের পরবর্তী জমানা, তারপর তাহাদের পরবর্তী জমানা, তারপর মিথ্যাচারের বিস্তার ঘটবে। এমনকি কাউকে শপথ করিতে না বলা হলেও সে শপথ করিবে, আর সাক্ষ্য প্রদান করিতে না বলা হলেও সাক্ষ্য প্রদান করিবে। সাবধান! কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত হলে সেখানে অবশ্যই তৃতীয়জন হিসাবে শাইতান অবস্থান করে [এবং পাপাচারে প্ররোচনা দেয়]। তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস কর। বিচ্ছিন্নতা হইতে সাবধান থেকো। কেননা, শাইতান বিচ্ছিন্নজনের সাথে থাকে এবং সে দুজন হইতে অনেক দুরে অবস্থান করে। যে লোক জান্নাতের মধ্যে সবচাইতে উত্তম জায়াগার ইচ্ছা পোষণ করে সে যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকে [মুসলিম সমাজে]। যার সৎ আমল তাকে আনন্দিত করে এবং বদ্‌ আমল কষ্ট দেয় সেই হলো প্রকৃত ঈমানদার।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ [২৩৬৩]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনি সুকার সূত্রে ইবনিল মুবারাকও বর্ণনা করিয়াছেন। একাধিক সূত্রে উমার [রাদি.] এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৬৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জামাআতের উপর আল্লাহ্ তাআলার [রাহমাতের] হাত প্রসারিত।

সহিহ, তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ [৬১], যিলালুল জান্নাত [১-৮১], মিশকাত [১৭৩], তাহকীক বিদায়াতুল সূল [৭০/১৩৩]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনি আব্বাস[রাদি.] এর সূত্রেই জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৬৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ্ তাআলা আমার উম্মাতকে অথবা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-র উম্মাতকে কখনোও গোমরাহীর উপর সমবেত করবেন না। আর জামাআতের উপর আল্লাহ্ তাআলার হাত [সাহায্য] প্রসারিত। যে লোক [মুসলিম সমাজ হইতে] আলাদা হয়ে গেছে, সে বিচ্ছিন্নভাবেই জাহান্নামে যাবে।

হাদিসে বর্ণিত “মান শাযযা শাযযা ফিননারী” অংশটুকু ব্যতীত হাদীসটি সহিহ। মিশকাত[১৭৩], আয্ যিলাল [৮০]। আবু ঈসা বলেন, উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীসটি গারীব। সুলাইমান আল-মাদানী বলিতে আমার মতে সুলাইমান ইবনি সুফিয়ানকে বুঝায়। আবু দাউদ আত-তায়ালিসী, আবু আমির আল-আল আক্বাদী প্রমুখ বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা আরো বলেন, হাদীস বিশারদগণের মতে আল-জামাআত বলিতে ফিকহ ও হাদীসসহ অন্যান্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধারক বিশেষজ্ঞ আলিমগনের জামাআতকে বুঝায় [জনগনকে তাহাদের সাথে সংঘবদ্ধ থাকতে হইবে ]। আমি আল-জারুদ ইবনি মুআযকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি আলী ইবনিল হাসানকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি আব্দুল্লাহ ইবনিল মুবারাকের নিকট জামাআত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করি। তিনি বলেন, আবু বকর ও উমার [রাদি.] এর দলকে বুঝায়। তাকে বলা হলো, তারা তো মারা গেছেন। তিনি বলেন, অমুক এবং অমুক। তাকে বলা হলো, অমুক ও অমুকও তো মারা গেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, আবু হামযা আস-সুককারী হলেন, জামাআত [কেন্দ্রবিন্দু]। আবু ঈসা বলেন, আবু হামজার নাম মুহাম্মাদ, পিতা মাইমূন। তিনি ছিলেন, একজন সৎকর্মপরায়ণ বুযুর্গ। আবু হামযা আমাদের নিকট জীবিত থাকাকালে ইবনিল মুবারক একথা বলেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮. অনুচ্ছেদঃ অন্যায় কাজ প্রতিরোধ না করা হলে আযাব অবতীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে

২১৬৮. আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হে লোকসকল! তোমরা তো অবশ্যই এই আয়াত তিলাওয়াত করে থাকঃ

‏يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের নিজেদেরই কর্তব্য তোমাদেরকে সংশোধন করা। যদি তোমরা সৎপথে থাক তাহলে যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তারা তোমাদের কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারবে না” [সুরাঃ মাইদা -১০৫]। অথচ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমি বলিতে শুনেছিঃ মানুষ যদি কোন অত্যাচারীকে অত্যাচারে লিপ্ত দেখেও তার দুহাত চেপে ধরে তাকে প্রতিহত না করে তাহলে আল্লাহ্ তাআলা অতি শীঘ্রই তাহাদের সকলকে তাহাঁর ব্যাপক শাস্তিতে নিক্ষিপ্ত করবেন।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ[৪০০৫]। উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মুহাম্মদ ইবনি বাশশার-ইয়াযীদ ইবনি হারুন হইতে, তিনি ইসমাঈল ইবনি আবু খালিদ [রঃ] এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, আইশা, উম্মু সালামা, নুমান ইবনি বাশীর, আব্দুল্লাহ ইবনি উমার ও হুযাইফা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহিহ। ইসমাঈলের সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী ইয়াযীদ হইতে বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এটি ইসমাঈল হইতে কেউ মারফু হিসাবে আবার কেউ মাওকুফ হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯. অনুচ্ছেদঃ সৎকাজের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ

২১৬৯. হুযাইফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎকাজের জন্য আদেশ করিবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করিবে। তা না হলে আল্লাহ্ তাআলা শীঘ্রঈ তোমাদের উপর তাহাঁর শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তোমরা তখন তাহাঁর নিকট দুআ করলেও তিনি তোমাদের সেই দুআ গ্রহন করবেন না।

সহিহ, সহীহাহ [২৮৬৮], বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় হাদীস আলী ইবনি হুজর-ইসমাঈল ইবনি জাফর হইতে, তিনি আমর ইবনি আবু আমর [রঃ] এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০. অনুচ্ছেদঃ একটি স্বৈরাচারী সামরিক বাহিনী ধ্বসে যাবে

২১৭০. হুযাইফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যতক্ষন না তোমরা তোমাদের ঈমামকে হত্যা করিবে এবং পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হইবে এবং নিকৃষ্টতম ব্যক্তিরা তোমাদের হর্তাকর্তা হইবে, ততক্ষন কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না।

যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৪০৪৩] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমর ইবনি আবু আমরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীসটি জেনেছি। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

২১৭১. উম্মু সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

কোনো একদিন একটি সামরিক বাহিনী প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ] আলোচনা করিলেন, যারা ভূমিতে [জীবন্ত] ধ্বসে যাবে। উম্মু সালাম [রাদি.]বলেন, তাহাদের মধ্যে কিছু লোককে হয়তো জবরদস্তিমূলকভাবে ভর্তি করা হয়ে থাকিবে। তিনি বললেনঃ তাহাদের নিয়্যাত অনুসারে তাহাদেরকে পুনরুত্থান করা হইবে।

সহিহ, তালীক আলা ইবনি মা-জাহ, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উপরক্ত সূত্রে গারীব। নাফি ইবনি জুবাইর হইতে আইশা [রাদি.]এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতেও এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১. অনুচ্ছেদঃ হাতের শক্তি অথবা ভাষা অথবা অন্তর দ্বারা হলেও অন্যায় প্রতিহত করিতে হইবে

২১৭২. তারিক ইবনি শিহাব [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মারওয়ান ঈদের নামাজের পূর্বে সর্বপ্রথম খুতবাহর প্রচলন করেন। তখন কোন একজন লোক এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মারওয়ানকে বলেন, আপনি তো সুন্নাত [বিধান] পরিপন্থী কাজ করিলেন। মারওয়ান বলিল, হে মিয়া! ঐ পন্থা এখানে বাতিল হয়ে আছে। আবু সাঈদ [রাদি.] পরবর্তীতে বলেন, এ প্রতিবাদকারী তার দায়িত্ব পালন করেছে। আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যদি তোমাদের মধ্যে কোন লোক কোন অন্যায় সংঘটিত হইতে দেখে তাহলে সে যেন তার হাত দ্বারা [ক্ষমতা প্রয়োগে] তা প্রতিহত করে। যদি এই যোগ্যতা তার না থাকে সে যেন তার মুখ দ্বারা তা প্রতিহত করে। যদি এই যোগ্যতাও তার না থাকে তাহলে, সে যেন তার অন্তর দ্বারা তা প্রতিহত করে [অন্যায়কে ঘৃনা করে]। আর এটা হলো দুর্বলতম ঈমান।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ [১২৭৫], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১২. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয় প্রসঙ্গে

২১৭৩. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যারা আল্লাহ্ তাআলার বিধানকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে এবং যারা অবহেলা করে তাহাদের উদাহরণ হলো সমুদ্রগামী একটি জাহাজের যাত্রীদের অনূরূপ, যারা লটারীর মাধ্যমে এর দুই তলায় আসন নির্ধারণ করিল। একদল উপর তলায় অন্যদল নীচের তলায়। নীচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে উপর তলায় উঠত। ফলে উপরের লোকেদের ঐখানে পানি পড়ত। উপর তলার লোকেরা বলিল, আমাদের এখানে পানি ফেলে তোমরা আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছ। সুতরাং আমরা তোমাদেরকে উপরে উঠতে দিব না। নীচের তলার লোকেরা বলিল, তাহলে জাহাজের তলা ছিদ্র করে আমরা পানি সংগ্রহ করব। এরকম পরিস্থিতিতে উপরের তলার লোকেরা যদি নীচের তলার লোকদের হাত জাপটে ধরে তাহাদেরকে ছিদ্র করা হইতে বিরত রাখতে পারে তাহলে সকলেই বেঁচে যাবে। কিন্তু তারা যদি এদেরকে এ কাজ করিতে ছেড়ে দেয় [প্রতিরোধ না করে] তাহলে সকলেই ডুবে মরবে।

সহিহ, সহীহাহ [৬৯], তালীকুর রাগীব[২/১৬৮]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৩. অনুচ্ছেদঃ স্বৈরাচারী শাসকের সামনে হক্ব কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ

২১৭৪. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সবচেয়ে উত্তম জিহাদ হচ্ছে স্বৈরাচারী শাসকের সামনে ন্যায্য কথা বলা।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ [৪০১০]। আবু ঈসা বলেন, আবু উমামা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪. অনুচ্ছেদঃ উম্মাতের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর তিনটি দুআ

২১৭৫. আব্দুল্লাহ ইবনি খাব্বাব ইবনিল আরাত [রাদি.] হইতে তার বাবার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদা খুব দীর্ঘায়িত করে নামাজ আদায় করেন। সাহাবিগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] ! আপনি তো কখনো এভাবে নামাজ আদায় করেননি! তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এ নামাজ ছিলো অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও ভীতিপূর্ণ। আমি এতে তিনটি বিষয়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ তাআলার নিকট আবেদন করেছি। তিনি আমাকে দুটি দিয়েছেন এবং একটি দেননি। আমি তাহাঁর নিকট আবেদন করেছি, তিনি আমার উম্মাতকে যেন দুর্ভিক্ষে নিক্ষেপ করে ধ্বংস না করে দেন। আমার এ দুআ তিনি ক্ববুল করিয়াছেন। তারপর আমি আবেদন করেছি যে, তিনি বিজাতীয় শত্রুদেরকে যেন তাহাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করিতে না দেন। আমার এ দুআও তিনি ক্ববুল করিয়াছেন। আমি আরো আবেদন জানিয়েছি যে, তারা যেন পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহের আস্বাদ না নেয়। আমার এ দুআ তিনি ক্ববুল করেননি।

সহিহ, সিফাতুস নামাজ।

আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব। সাদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৭৬. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার জন্য দুনিয়াকে আল্লাহ্ তাআলা সংকুচিত করেন। ফলে আমি এর পূর্ব-পশ্চিম সকল দিক দর্শন করি। আমার জন্য দুনিয়ার যেটুকু পরিমাণ সংকুচিত করা হয়েছে, আমার উম্মতের রাজত্ব শীঘ্রই ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করিবে। আর আমাকে লাল-সাদা [সোনা-রুপা] দুটি খনিজ ভান্ডারই প্রদান করা হয়েছে। অধিকন্তু আমি আমার উম্মতের জন্য আমার প্রভুর নিকট আবেদন করেছি যে, তিনি যেন তাহাদেরকে মারাত্মক দুর্ভিক্ষে ফেলে ধ্বংস না করে দেন এবং তাহাদের ব্যতীত বিজাতি দুশমনদেরকে যেন তাহাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করিতে না দেন যাতে তারা তাহাদেরকে সমূলে ধ্বংস না করার সূযোগ পেতে পারে। আমার প্রভু বলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি কোন ফায়সালা করলে তা কোন ক্রমেই পরিবর্তিত হওয়ার নয়। আমি তোমার উম্মাতের জন্য ক্ববুল করলাম যে, প্রচন্ড দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে তাহাদের ধ্বংস করব না, তাহাদের নিজেদের ব্যতীত অন্য কোন দুশমনদেরকে তাহাদের উপর আধিপত্যশালী করব না যাতে তারা তোমার উম্মাতকে বিনাশ করিতে সূযোগ না পায়, এমনকি [দুনিয়ার] সকল অঞ্চল হইতে তারা একজোট হয়ে এলেও। তবে তারা পরস্পর পরস্পরকে ধ্বংস করিবে এবং কতক কতককে বন্দী করিবে।

সহিহ, ইবনি মা-জাহ[৩৯৫২], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫. অনুচ্ছেদঃ ফিতনায় পতিত ব্যক্তি প্রসঙ্গে

২১৭৭. উম্মু মালিক আল-বাহ্যিয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন একদিন একটি ফিতনার উল্লেখ করে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তা খুব নিকটবর্তী। বর্ণনাকারী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! এ ফিতনা চলাকালে সর্বোত্তম ব্যক্তি কে হইবে? তিনি বলিলেন, যে লোক তার পশুপাল নিয়ে ব্যস্ত থাকিবে, পশুপালের হ্ক্ব [যাকাত] প্রদান করিবে এবং তাহাঁর প্রভুর ইবাদাত করিবে। আর যে লোক তার ঘোড়ার মাথা ধরে থাকিবে এবং শত্রুদের ভীতি প্রদর্শন করিবে এবং তারাও তাকে ভয় দেখাবে।

সহিহ, সহীহাহ্ [৬৯৮], তালীকুর রাগীব [২/১৫৩]। আবু ঈসা বলেন, উম্মু মুবাশশির, আবু সাঈদ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। এ হাদীসটি তাউস-উম্মু মালিক আল-বাহযিয়া [রাদি.] এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে লাইস ইবনি আবু সুলাইমও বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬. অনুচ্ছেদঃ জিহ্‌বা হইবে তরবারির চাইতেও মারাত্মক

২১৭৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন এক ফিতনার সৃষ্টি হইবে, যা পুরো আরবকে গ্রাস করিবে। এতে নিহত ব্যক্তিরা হইবে জাহান্নামী। তখন জিহ্‌বা হইবে তরবারির চাইতেও মারাত্মক।

যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৩৯৬৭], আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে বলিতে শুনিয়াছি, এ হাদীস ব্যতীত যিয়াদ ইবনি সীমীন কোশের বর্ণিত আরো হাদীস আছে বলে আমাদের জানা নেই। হাম্মাদ ইবনি সালামা [রঃ] লাইস হইতে মারফূরূপে এবং হাম্মাদ ইবনি যাইদ [রঃ] লাইস হইতে মাওকূফ হিসেবে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৭. অনুচ্ছেদঃ আমানতদারি থাকিবে না

২১৭৯. হুযাইফা ইবনিল ইয়ামা-ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন একদিন আমাদের সামনে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুটি হাদীস বর্ণনা করেন। আমি এদুটির মধ্যে একটিকে প্রকাশিত হইতে দেখেছি এবং অপরটির অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেনঃ নিশ্চয়ই মানুষের হৃদয়মুলে আমানাত অবতীর্ণ হয়। তারপর কুরআন অবতীর্ণ হয়। সুতরাং তারা কোরআনের শিক্ষা অর্জন করে এবং সুন্নাহ [হাদীস] সমন্ধেও শিক্ষা অর্জন করে। তারপর আমানাত তুলে নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ ঘুমিয়ে যাবে এবং এই অবস্থায় তার হৃদয় হইতে আমানাত তুলে নেয়া হইবে। আর এর চিহ্নটা হইবে কালো বিন্দুর মতো। তারপর সে নিদ্রামগ্ন হইবে এবং আমানাত তুলে নেয়ে হইবে। এতে ফোস্কার ন্যায় চিহ্ন পড়বে, যেমন জ্বলন্ত অঙ্গার তোমার পায়ে রাখা হলে ফোস্কা পড়ে। তুমি তা স্ফীত অবস্থায় দেখিতে পাও কিন্তু তার ভিতরে কিছুই নেই। তারপর তিনি তাহাঁর পায়ে একটি শিলাখণ্ড রেখে দেখান। তিনি আরো বলেন, মানুষেরা ব্যবসা-বানিজ্য ও কেনা-বেচা করিবে কিন্তু কেউই আমানাত রক্ষা করিবে না। এমনকি বলা হইবে অমুক গোত্রে একজন বিশ্বস্ত ও আমানাতদার লোক আছে। এরকম পরিস্থিতি দাঁড়াবে যে, কারো প্রসঙ্গে বলা হইবে, সে কত বড় জ্ঞানী, সে কত হুঁশিয়ার এবং সে কত সাহসী। অথচ তার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ইমানও থাকিবেনা। হুযাইফা [রাদি.]বলেন, আমার উপর দিয়ে এমন একটি সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন আমি তোমাদের কারো সাথে বেচা-কেনার চিন্তা করতাম না। কেননা, সে ব্যক্তি মুসলমান হইতে তার দ্বীনদারিই তাকে আমার প্রাপ্য ফিরত দিতে বাধ্য করত। আর সে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান হলে তার শাসকই তাকে আমার প্রাপ্য আদায় করে দিত। কিন্তু এখন অমুক অমুক লোক ব্যতীত তোমাদের কারো সাথে কেনা-বেচা ও ব্যবসা-বাণিজ্য করি না।

সহিহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮. অনুচ্ছেদঃ তোমরা তো তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি অবলম্বন করিবে

২১৮০. আবু ওয়াকিদ আল-লাইসী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হুনাইনের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাত্রা শুরু করিলেন। তিনি মুশরিকদের একটি গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই গাছটিকে যাতু আনওয়াত বলা হতো। তারা এর মধ্যে তাহাদের অস্ত্রসমূহ লটকিয়ে রাখত। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! তাহাদের যাতু আনওয়াতের মতো আমাদের জন্য একটা যাতু আনওয়াতের ব্যবস্থা করুণ। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! এটা তো মূসা [আঃ] এর উম্মতের কথার মতো হলো। তারা বলেছিল, কাফিরদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে তদ্রুপ আমাদেরও উপাস্যের ব্যবস্থা করে দিন। সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা অবশ্যই তোমাদের পুর্ববর্তিগনের নীতি অবলম্বন করিবে।

সহিহ, যিলালুল জান্নাহ্[৭৬], মিশকাত[৫৩৬৯]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু ওয়াকিদ আল-লাইসীর নাম আল-হারিস ইন্বু আওফ। আবু সাঈদ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯. অনুচ্ছেদঃ হিংস্র জন্তু কথা বলবে

২১৮১. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না যে পর্যন্ত না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে, যে পর্যন্ত না কারো চাবুকের মাথা এবং জুতার ফিতা তার সাথে কথা বলবে এবং তার উরুদেশ বলে দিবে তার অনুপস্থিতিতে তার পরিবার কি করেছে।

সহিহ, সহীহাহ [১২২], মিশকাত[৫৪৫৯]। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব। কেননা, এ হাদীসটি আল-কাসিম ইবনিল ফাযলের রিওয়ায়াত ব্যতীত আমাদের জানা নেই। হাদীস বিশারদদের মতে আল-কাসিম ইবনিল ফাযল নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান ও আবদুর রাহমান ইবনি মাহদী তাঁকে সিকাহ্ [নির্ভরযোগ্য] বর্ণনাকারী বলেছেন। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০. অনুচ্ছেদঃ চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে

২১৮২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-র আমলে একদা চাঁদ বিদীর্ণ হলো। তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো।

সহিহ, মুসলিম [৮/১৩৩]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসউদ, আনাস ও যুবাইর ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১. অনুচ্ছেদঃ ভূমিধস প্রসঙ্গে

২১৮৩. হুযাইফা ইবনি মাসউদ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন একদিন কিয়ামাত প্রসঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলছিলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরকম সময় তাহাঁর ঘর হইতে বেরিয়ে আমাদের সামনে এলেন। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা দশটি নিদর্শন না দেখা পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে নাঃ [১] পশ্চিম প্রান্ত হইতে সুর্য উঠবে, [২] ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, [৩] দাব্বাতুল আরদ নামক প্রাণীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে, তিনটি ভূমি ধস হইবেঃ [৪] একটি প্রাচ্যে [৫] একটি পাশ্চাত্যে এবং [৬] একটি আরব উপদ্বীপে, [৭] ইয়ামানের অন্তর্গত আদন [এডেন] এর একটি গভীর কূপ হইতে অগ্নুত্পাত হইবে, যা মানুষকে তাড়িয়ে নেবে বা একত্র করিবে, তারা যেখানে রাত্রি যাপন করিবে আগুনও সেখানে রাত্রি কাটাবে এবং তারা যেখানে দিনের বেলায় বিশ্রাম করিবে, আগুনও সেখানেই বিশ্রাম করিবে।

সহিহ, মুসলিম[৮/১৭৮-১৭৯]। উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মাহমুদ্ ইবনি গাইলান-ওয়াকী হইতে, তিনি সুফিয়ান [রঃ] হইতে এই সনদসূত্রে বর্ণিত আছে। তাতে আছেঃ আদ-দুখান অর্থাত ধোয়া নির্গত হইবে। এ বর্ণনাটিও সহিহ। হান্নাদ-আবুল আহওয়াস হইতে, তিনি ফুরাত আল-কাযযায [রঃ] এর সূত্রেও সুফিয়ান হইতে ওয়াকী [রঃ] এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের ন্যায় বর্ণিত আছে। মাহমুদ্ ইবনি গাইলান-আবু দাঊদ আত-তাইয়ালিসী হইতে, তিনি শুবা ও মাসঊদী-ফুরাত আল-কাযযায [রঃ] হইতে ফুরাতের সূত্রে সুফিয়ান বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসের মতো হাদীস বর্ণিত আছে। এই বর্ণনায় দাজ্জাল ও ধোয়ার উল্লেখ রয়েছে। এ বর্ণনাটিও সহিহ। আবু মূসা মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না-আবুন নূমান আল-হাকাম ইবনি আব্দুল্লাহ আল-ইজলী হইতে, তিনি শুবা হইতে, তিনি ফুরাত [রঃ] এর সূত্রে আবু দাঊদ-শুবা [রঃ] এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনূরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সূত্রে আরো আছেঃ “কিয়ামাতের দশম নিদর্শন হলো এমন প্রবল বাতাস যা তাহাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করিবে অথবা ঈসা ইবনি মারইয়াম [আঃ] এর অবতরণ”। সহিহ, প্রাগুক্ত। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী, আবু হুরাইরা, উম্মু সালামা ও সাফিয়্যা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৮৪. সাফিয়্যা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলার এই ঘরের [কাবা] বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করা হইতে মানুষ বিরত থাকিবে না। অবশেষে একটি বাহিনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে যখন বাইদা নামক উপত্যকা অথবা উন্মুক্ত প্রান্তরে হাজির হইবে তখন তাহাদের সম্মুখ-পিছনের সবাইকে নিয়ে যমীন ধসে যাবে। তাহাদের মধ্যভাগের মানুষও মুক্তি পাবে না। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ]! তাহাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি জোর-জবরদস্তির ফলে বাধ্য হয়ে অংশগ্রহন করিবে তাহাদের কি হইবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা তাহাদেরকে তাহাদের অন্তরের নিয়্যাত অনুসারে পুনরুত্থান করবেন।

সহিহ, তালীক আলা ইবনি মা-জাহ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৮৫. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এই উম্মাতের শেষ পর্যায়ে ভূমিধস, শারীরিক অবয়ব বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি নিপতিত হইবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] ! আমাদের মাঝে সৎলোক বিদ্যমান থাকা সত্তেও কি আমাদের ধ্বংস করে দেয়া হইবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন ঘৃণ্য পাপাচারের প্রকাশ ও ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

সহিহ, সহীহাহ [৯৮৭], রাওযুন নাযির [২/৩৯৪]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আইশা [রাদি.]এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রঃ] আবদুল্লাহ ইবনি উমার আল-উমারীর স্মৃত্সক্তি দুর্বল বলে সমালোচনা করিয়াছেন [অবশ্য তার ছোট ভাই উবাইদুল্লাহ একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী ]। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২২. অনুচ্ছেদঃ পশ্চিম প্রান্ত হইতে সূর্যোদয়

২১৮৬. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ কোন একদিন আমি সুর্য অস্ত যাওয়ার সময় মাসজিদে গেলাম। সে সময় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেখানে বসা অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে আবু যার! তুমি কি জান এই সুর্য কোথায় যায়? তিনি বললেনঃ সে [আল্লাহর তাআলার নিকটে] সাজদার অনুমতি প্রার্থনা করিতে যায়। তারপর তাকে সম্মতি প্রদান করা হয় এবং তাকে যেন বলা হয়, তুমি যে প্রান্তে এসেছ সে প্রান্ত হইতেই উদিত হও। সে তখন পশ্চিম প্রান্ত হইতে উদিত হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ

وَذَلِكَ مُسْتَقَرٌ لَهَا

“এবং এটাই তার নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল। ” [সুরাঃ ইয়াসীন -৩৮ ]।

সহিহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, সাফওয়ান ইবনি আসসাল, হুযাইফা ইবনি উসাইদ, আনাস ও আবু মূসা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইয়াজুজ মাজুজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply