পবিত্রতা অধ্যায় – জইফ মেসকাত শরীফ

পবিত্রতা অধ্যায় – জইফ মেসকাত শরীফ

পবিত্রতা অধ্যায় – জইফ মেসকাত শরীফ >> জইফ মিশকাত শরীফ এর মুল সূচীপত্র দেখুন

৪            পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ

  • পরিচ্ছেদঃ ওযূর মাহাত্ম্য
  • পরিচ্ছেদঃ যে যে কারনে ওযু ওয়াজিব হয়
  • পরিচ্ছেদঃ পায়খানা-পেশাবের শিষ্টাচার
  • পরিচ্ছেদঃ মিসওয়াক করা
  • পরিচ্ছেদঃ ওযূর সুন্নাতসমূহ
  • পরিচ্ছেদঃ গোসল

পরিচ্ছেদঃ ওযূর মাহাত্ম্য

৭৩. আব্দুল্লাহ ইবনি ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযূ থাকা অবস্থায় ওযূ করিবে, তার জন্য আল্লাহ্‌ দশটি নেকী রয়েছে লেখবেন।

তাহক্বীক্ব : জইফ।

জইফ তিরমিজি হাদীস নং/৫৯ ও ৬১;জইফ আবুদাউদ হাদীস নং/৬২। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৭৪. জাবের [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, জান্নাতের চাবি হল ছালাত। আর ছালাতের চাবি হল পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ।

তাহক্বীক্ব : উক্ত হাদীসের প্রথমাংশ জইফ। এর কারণ হল, উক্ত সনদে দুইজন জইফ রাবী আছে। সুলায়মান বিন করম ও আবু ইয়াহইয়া আল–কাত্তাত। আর দ্বিতীয় অংশ সম্পর্কে পৃথক সনদে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। মূলতঃ জান্নাতের চাবী লা ইলা–হা ইল্লাল্লাহু। আহমাদ হাদীস নং/১৪৭০৩;তিরমিজি হাদীস নং/৪; মিশকাত হা /২৯৪;বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা /২৪৭,২/৪৩। ছহীহ বোখারী হা /৫৮২৭,২/৮৬৭ পৃঃ; ছহীহ মুসলিম হাদীস নং/২৮৩, ১/৬৬ পৃঃ; মিশকাত হাদীস নং/২৬;বোখারী পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৭৫. শাবীব ইবনি আবু রাওহা হইতে বর্ণিতঃ

শাবীব ইবনি আবু রাওহা রসূল  [সাঃআঃ]-এর ছাহাবীগনের এক ব্যক্তি হইতে বর্ণনা করেন, রসূল  [সাঃআঃ] একদা ফজরের ছালাত আদায় করিলেন এবং সূরা রূম পড়লেন। কিন্তু তেলাওয়াতে কিছুটা গোলমাল হয়ে গেল। যখন তিনি ছালাত শেষ করিলেন তখন বলিলেন, তাহাদের কি হয়েছে, যারা আমাদের সাথে ছালাত আদায় করে, অথচ উত্তমরূপে পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ লাভ করে না? এরাই আমাদের কুরআন পাঠে গোলযোগ সৃষ্টি করে।

তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত হাদীছের সনদে আব্দুল মালেক বিন উমাইর নামে একজন জইফ রাবী আছে। তাহক্বীক্ব মিশকাত হাদীস নং/২৯৫-এর টীকা দ্রঃ; জইফ নাসাঈ হাদীস নং/৯৪৭ ; যঈফুল জামে  হাদীস নং/৫০৩৪। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৭৬. বানী সুলাইম গোত্রের এক ব্যক্তি হইতে বর্ণিতঃ

একবার রসূল  [সাঃআঃ] এই পাঁচটি কথা আমার হাতে অথবা তাহাঁর নিজের হাতে গুনে গুনে বলিলেন, সুবহানাল্লাহ বলা হল পাল্লার অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ উহাকে পূর্ণ করে এবং আল্লাহু আকবর আসমান ও যমীনের মাঝে যা আছে তাকে পূর্ণ করে। ছিয়াম হল ধৈর্যের অর্ধেক এবং পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ হল ঈমানের অর্ধেক।

জইফ তিরমিজি হাদীস নং/৩৫১৯। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

পরিচ্ছেদঃ যে যে কারনে ওযু ওয়াজিব হয়

৭৭. মুআবিয়া ইবনি আবি সুফিয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী করীম [সাঃআঃ] বলেছেন, চক্ষুদয় হল গুহ্যদ্বারের ঢাকনা। সুতরাং চোখ যখন ঘুমায়, তখন ঢাকনা খুলে যায়।

[মিশকাত হাদীস নং/৩১৬]। তাহক্বীক্ব দারেমী হাদীস নং/৭২২। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৭৮. আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, নিশ্চয় ওযূ সেই ব্যক্তির উপর ওয়াজিব, যে কাত হয়ে ঘুমিয়েছে। কেননা যখন কেউ কাত হয়ে ঘুমায়, তখন তার শরীরের বন্ধনসমূহ খুলে যায়।

তিরমিজি হাদীস নং/৭৭; যঈফুল জামে হাদীস নং/২০৫১। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৭৯. আবু রাফে [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একদা তাকে একটা ছাগল হাদিয়া দেওয়া হল এবং তিনি পাতিলে রাখলেন। এমন সময় রসূল  [সাঃআঃ] তার নিকট উপস্থিত হলেন এবং বলিলেন, পাতিলে কি রাখা হয়েছে হে আবু রাফে? তিনি বলিলেন, একটি ছাগল আমাদেরকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। তা পাতিলে পাক করেছি। রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, আমাকে এর একটি বাজু দাও। [আবু রাফে বলেন,] আমি তাঁকে একটি বাজু দিলাম। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমাকে আর একটি বাজু দাও। আমি তাঁকে আরো একটি বাজু দিলাম। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমাকে আর একটি বাজু দাও তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]! ছাগলের মাত্র দুটি বাজু হয়। এটা শুনে তিনি বলিলেন, তুমি যদি চুপ করে থাকতে তাহলে আমাকে বাজুর পর বাজু দিতে থাকতেন। অতঃপর তিনি পানি চাইলেন এবং কুলি করিলেন। তারপর তাহাঁর অঙ্গুলীসমূহের মাথা ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর সালাতের জন্য দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করিলেন। রসূল  [সাঃআঃ] তাহাদের নিকট পুনরায় ফিরে আসলেন এবং তাহাদের নিকট ঠান্ডা গোশত পেলেন। তিনি তা খেলেন। অতঃপর মসজিদে প্রবেশ করিলেন এবং সালাত আদায় করিলেন, কিন্তু পানি স্পর্শ করিলেন না।

মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং/২৭২৩৯; মিশকাত হাদীস নং/৩২৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩০২। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮০. ইবনি ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

ওমর [রাদি.] বলেন, চুম্বন স্পর্শের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তোমরা চুম্বন দিয়ে ওযূ কর।

দারেমী হাদীস নং/৫২৬; মিশকাত হাদীস নং/৩৩২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩০৬, ২/৫৭। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮১. ওমর ইবনি আব্দুল আযীয তামীমুদ দারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেন, প্রত্যেক প্রবাহমান রক্তের কারণেই ওযূ করিতে হইবে।

ঈমাম দারাকুৎনী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ওমর ইবনি আব্দুল আযীয তামীমুদ্দারীর নিকট থেকে শুনেননি। আর ইয়াযীদ ইবনি খালেদ ও ইয়াযীদ ইবনি মুহাম্মাদ দুজনই অপরিচিত রাবী।

দারাকুৎনী ১/১৫৭ পৃঃ; মিশকাত হাদীস নং/৩৩৩, সিলসিলা জয়িফা হাদীস নং/৪৭০। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

পরিচ্ছেদঃ পায়খানা-পেশাবের শিষ্টাচার

৮২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] যখন পায়খানায় যেতেন, তখন তাহাঁর আংটিটি খুলে রাখতেন।

আবুদাউদ হাদীস নং/১৯; তিরমিজি হাদীস নং/১৭৪৬; নাসাঈ হাদীস নং/৫২১৩; মিশকাত হাদীস নং/৩৪৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩১৬, ২/৬২ পৃঃ।এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৩. আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একদিন আমি নাবী করীম [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। অতঃপর তিনি যখন পেশাব করার ইচ্ছা করিলেন, তখন একটি দেয়ালের গোড়ায় নরম জায়গায় গেলেন এবং পেশাব করিলেন। অতঃপর বলিলেন, যখন তোমাদের কেউ পেশাব করিতে ইচ্ছা করে, তখন যেন সে এরূপ স্থান সন্ধান করে যাতে শরীরে পেশাবের ছিটা না পড়ে।

আবুদাউদ হাদীস নং/৩; মিশকাত হাদীস নং/৩৪৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩১৮, ২/৬২ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৪. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি চোখে সুরমা লাগায়, সে যেন বিজোড় সংখ্যায় লাগায়। যে এইরূপ করিল সে ভাল কাজ করিল, আর যে করিল না সে মন্দ কাজ করিল না। আর যে ব্যক্তি ইস্তিঞ্জা করে সেও যেন বিজোড় করে। যে তা করিল সে ভাল করিল, আর যে করিল না সে মন্দ কাজ করিল না। যে ব্যক্তি খানা খেল এবং খিলাল দ্বারা দাঁত হইতে কিছু বের করিল, সে যেন তা বাইরে ফেলে দেয় এবং যা জিহবা দ্বারা মথিত করে তা যেন গিলে ফেলে। যে এরূপ করিল ভাল করিল, আর যে এরূপ করিল না সে মন্দ করিল না এবং যে ব্যক্তি পায়খানায় যায়, সে যেন পর্দা করে, যদি সে পর্দা করিতে বালির স্তূপ ব্যতীত কিছু না পায়, তাহলে স্তূপকে যেন পিঠ দিয়ে বসে। কারণ শয়তান মানুষের বসার স্থান নিয়ে খেলা করে। যে এরূপ করিল ভাল করিল, আর যে না করিল মন্দ করিল না।

ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৩৪৯৮; আবুদাউদ হাদীস নং/৩৫; মিশকাত হাদীস নং/৩৫২; বঙ্গানুবাদ মিকাত হাদীস নং/৩২৫, ২/৬৪ পৃঃ। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৫. আব্দুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় পেশাব না করে। অতঃপর সেখানে সে গোসল করিবে অথবা ওযূ করিবে, কারণ অধিকাংশ ধোঁকা সেখান থেকেই উৎপন্ন হয়।

আবুদাউদ হাদীস নং/২৭; মিশকাত হাদীস নং/৩৫৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩২৬, ২/৬৫ পৃঃ। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৬. আব্দুল্লাহ ইবনি সারজেস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন গর্তে পেশাব না করে।

নাসাঈ হাদীস নং/৩৪; মিশকাত হাদীস নং/৩৫৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩২৭, ২/৬৫ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৭. ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] একদা আমাকে দাঁড়িয়ে পেশাব করিতে দেখলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে ওমর! দাঁড়িয়ে পেশাব করো না। তারপর থেকে আমি আর দাঁড়িয়ে পেশাব করিনি।

ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৩০৮; মিশকাত হাদীস নং/৩৬৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৩৬, ২/৬৭ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৮. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার নিকট জিবরীল [আঃ] এসে বলিলেন, হে মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]! যখন ওযূ করবেন, তখন পানি ছিটাবেন।

তিরমিজি হাদীস নং/৫০; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৪৬৩; মিশকাত হাদীস নং/৩৬৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৩৯, ২/৬৮; এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৮৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একদা রসূল  [সাঃআঃ] পেশাব করিলেন এবং ওমর তাহাঁর পিছনে পানির একটি পাত্র নিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি বলিলেন, হে ওমর! এটা কী? ওমর [রাদি.] বলেন, পানি- যার দ্বারা আপনি ওযূ করবেন। রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি এভাবে আদিষ্ট হয়নি যে, যখনই পেশাব করব তখনই ওযূ করবো। যদি আমি সর্বদা এরূপ করি, তাহলে এটা সুন্নত হয়ে যাবে।

আবু দাউদ হাদীস নং/৪২; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৩২৭; মিশকাত হাদীস নং/৩৬৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৪০, ২/৬৯ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] যখন পায়খানা হইতে বের হইতেন, তখন বলিতেন, সেই আল্লাহ্‌র যাবতীয় প্রশংসা, যিনি আমার নিকট হইতে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করিলেন এবং আমাকে নিরাপদ করিলেন।

উক্ত বর্ণনার সনদে ইসমাঈল ইবনি মুসলিম নামে একজন রাবী আছে। সে মুহাদ্দিসগণের ঐকমত্যে জইফ।

ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৩০১; মিশকাত হাদীস নং/৩৭৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৪৫, ২/৭০ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

পরিচ্ছেদঃ মিসওয়াক করা

৯১. আবু আইয়ূব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, চারটি জিনিস নাবীদের সুন্নাত। [ক] লজ্জা করা। [খ] সুগন্ধি ব্যবহার করা। [গ] মিসওয়াক করা ও [ঘ] বিবাহ করা।

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জইফ। উক্ত বর্ণনায় কয়েকটি ত্রুটি রয়েছে। আইয়ূব ও মাকহূলের মাঝে রাবী বাদ পড়েছে। হাজ্জাজ বিন আরত্বাহ নামক রাবীর দোষ রয়েছে। এছাড়াও এর সনদে আবু শিমাল রয়েছে। তাকে আবু যুরআহ ও ইবনি হাজার আসক্বালানী অপরিচিত বলেছেন। তিরমিজি হাদীস নং/১০৮০, ১/২০৬; মিশকাত হাদীস নং/৩৮২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৫২, ২/৭৪ পৃঃ, মিসওয়াক করা অনুচ্ছেদ; মুন্তাখাব হাদীস, পৃঃ ২৯৭। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯২. আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যখনই জিবরীল [আঃ] আমার নিকট আসতেন, তখনই আমাকে মিসওয়াক করার জন্য বলিতেন, যাতে আমার ভয় হইতে লাগলো যে, আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দিব।

তাহক্বীক্ব : নিতান্তই জইফ। আহমাদ হাদীস নং/২২৩২৩; মিশকাত হাদীস নং/৩৮৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৫৬, ২/৭৫। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ খুবই দুর্বল

৯৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাতে মিসওয়াক করা বিহীন সালাতের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী নেকী হয়।

তাহক্বীক্ব : ঈমাম বায়হাক্বী উক্ত বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, মুআবিয়া ইবনি ইয়াহইয়া যুহরী থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। সে নির্ভরযোগ্য নয়। অন্য সূত্রে উরওয়া আয়েশা থেকে বর্ণনা করেছে। কিন্তু তারা উভয়েই জইফ। অন্য সূত্রে উরওয়া আক্বেদী থেকে বর্ণনা করেছে, সে মিথ্যুক। বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হাদীস নং/১৫৯, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৬১-৬২; হাকেম হাদীস নং/৫১৫; ইবনি খুযায়মাহ হাদীস নং/১৩৭; মিশকাত হাদীস নং/৩৮৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৫৯, ২/৭৬ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ওযূর সুন্নাতসমূহ

৯৪. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

আবু উমামা [রাদি.] একদা রসূল  [সাঃআঃ]-এর ওযূর অবস্থা বর্ণনা করিলেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর দুই চোখের কোণা মাসহে করিলেন এবং বলিলেন, দুই কান মাথারই অংশ। তাহক্বীক্ব : জইফ।জইফ আবু দাউদ হাদীস নং/১৩৪; উল্লেখ্য, দুই কান মাথার অন্তর্ভুক্ত এই অংশ সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত [সহীহ তিরমিজি হাদীস নং/৩৭; এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯৫. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেন, ওযূর জন্য একটি শয়তান রয়েছে, যাকে ওলাহান বলা হয়। সুতরাং পানির কুমন্ত্রণা হইতে সতর্ক থাকিবে।

তাহক্বীক্ব : নিতান্তই জইফ। জইফ ইবনে মাজাহ হাদীস নং/৪২১; জইফ তিরমিজি হাদীস নং/৫৭। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ খুবই দুর্বল

৯৬. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূল  [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, যখন তিনি ওযূ করিতেন, আপন কাপড়ের কিনারা দ্বারা নিজ মুখমণ্ডল মুছে নিতেন।

তাহক্বীক্ব : জইফ। জইফ তিরমিজি হাদীস নং/৫৪; সিলসিলা জয়িফা হাদীস নং/৪১৮০, উল্লেখ্য যে, ওযূ অঙ্গ মাসাহ করার পক্ষে পৃথক সনদে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ]-এর একটি পৃথক কাপড় খণ্ড ছিল, যার দ্বারা তিনি ওযূর পরে তাহাঁর ওযূর অঙ্গসমূহ মুছে নিতেন।

তাহক্বীক্ব : জইফ। জইফ আবু দাউদ হাদীস নং/২৫৩২; এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯৮. ছাবেত ইবনি আবী সাফিয়া [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবু জাফর মুহাম্মাদ আল-বাকেরকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কি জাবের [রাদি.] বলেছেন যে, নাবী করীম [সাঃআঃ] ওযূ করিয়াছেন কখনো একবার কখনো দুই দুইবার; আবার কখনো তিন তিনবার করে। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ।

তাহক্বীক্ব : জইফ। তিরমিজি হাদীস নং/৪৫; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৪১০; মিশকাত হাদীস নং/৩৮৮। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

৯৯. আব্দুল্লাহ ইবনি যায়েদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] একদা দুই দুইবার করে ওযূ করিলেন এবং বলিলেন, এটা এক নূরের উপর আরেক নূর। তাহক্বীক্ব : হাদীছটি জাল, ভিত্তিহীন। রাযীন, মিশকাত হাদীস নং/৪২৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৮৯, ২/৮৭ পৃঃ। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ জাল হাদীস

১০০. আবু হুরায়রা, ইবনি মাসউদ ও ইবনি ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী করীম [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযূ করিল এবং বিসমিল্লাহ্‌ পড়ল, সে তার সমস্ত শরীরকে পবিত্র করিল। আর যে ব্যক্তি ওযূ করিল অথচ বিসমিল্লাহ্‌ পড়ল না, সে কেবল তার ওযূর স্থানসমূহকেই পবিত্র করিল।

তাহক্বীক্ব : জইফ। বায়হাক্বী হাদীস নং/২০১; দারাকুৎনী ১/৭৩; মিশকাত হাদীস নং/৪২৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৯৪। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

১০১. আবু রাফে [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] যখন সালাতের জন্য ওযূ করিতেন, তখন তাহাঁর আঙ্গুলে পরিহিত আংটি নাড়াচাড়া করিতেন।

তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত হাদীসের সনদে মামার ও তার পিতা মুহাম্মাদ ইবনি ওবায়দুল্লাহ নামে দুইজন দুর্বল রাবী আছে। দারাকুৎনী ১/৯৪; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৪৪৯; মিশকাত হাদীস নং/৪২৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৩৯৫। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

পরিচ্ছেদঃ গোসল

১০২. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রত্যেক চুলের নিচে নাপাকী রয়েছে। সুতরাং চুলগুলোকে উত্তমরূপে ধৌত করিবে এবং শরীর ভালভাবে পরিষ্কার করিবে।

তাহক্বীক্ব : জইফ। এর সনদে হারিছ ইবনি ওয়াজীহ নামক এক রাবী আছে। ঈমাম আবুদাউদ বলেন, তার হাদীছ মুনকার। সে দুর্বল রাবী।

তাহক্বীক্ব মিশকাত হাদীস নং/৪৪৩, ১/১৩৮; জইফ আবু দাউদ হাদীস নং/২৪৮; জইফ তিরমিজি হাদীস নং/১০৬; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৫৯৭; জয়িফা হাদীস নং/৩৮০১। এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

১০৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নাপাকীর এক চুল পরিমাণ স্থানও ছেড়ে দিবে এবং তা ধৌত করিবে না, তার বিরুদ্ধে আগুনের এই এই ব্যবস্থা নেয়া হইবে। আলী [রাদি.] বলেন, সেই থেকে আমি আমার মাথার সাথে শত্রুতা পোষণ করেছি। এই কথা তিনি তিনবার বলিলেন।

তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত বর্ণনার সনদে আত্বা হাম্মাদ ও যামান নামের দুই ব্যক্তি জইফ রয়েছে। সিলসিলা জয়িফা হাদীস নং/৯৩০, ২/২৩২ পৃঃ; ইরওয়াউল গালীল হাদীস নং/১৩৩; পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

১০৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী করীম [সাঃআঃ] খিতমী দ্বারা মাথা ধৌত করিতেন, অথচ তখন তিনি অপবিত্র থাকতেন। একেই তিনি যথেষ্ট মনে করিতেন। মাথায় আর পানি ঢালতেন না।

তাহক্বীক্ব : জইফ। আবু দাউদ হাদীস নং/২৫৬; আহমাদ হাদীস নং/১১২১; মিশকাত হাদীস নং/৪৪৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৪১০। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

১০৫. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকটে এসে বলিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]! আমি নাপাকীর গোসল করেছি ও ফজরের সালাত পড়েছি। অতঃপর দেখি এক নখ পরিমাণ জায়গায় পানি পোঁছেনি। রসূল  [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি তখন তুমি উহার উপর তোমার [ভিজা] হাত মুছে দিতে, তাহলে তোমার জন্য যথেষ্ট হত।

তাহক্বীক্ব : জইফ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৬৬৪; মিশকাত হাদীস নং/৪৪৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৪১৩, ২/৯৮। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস

১০৬, আব্দুল্লাহ ইবনি ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

সালাত ছিল পঞ্চাশ ওয়াক্ত, নাপাকীর গোসল ছিল সাতবার এবং কাপড় হইতে পেশাব ধোয়ার বিধান ছিল সাতবার। রসূল  [সাঃআঃ] আল্লাহ্‌র দরবারে বারংবার প্রার্থনা করিতে থাকেন, ফলে সালাত আদায় করা হয় পাঁচ ওয়াক্ত, নাপাকীর গোসল করা হয় একবার এবং পেশাব হইতে কাপড় ধোয়ার বিধান করা হয় একবার।

তাহক্বীক্ব : জইফ। জইফ আবু দাউদ হাদীস নং/২৪৭; ইরওয়াউল গালীল হাদীস নং/১৮৬। পবিত্রতা -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply