পড়ে থাকা বস্তু উঠানো ও হারিয়ে যাওয়া উষ্ট্র ছাগল খেজুর
পড়ে থাকা বস্তু উঠানো ও হারিয়ে যাওয়া উষ্ট্র ছাগল খেজুর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৪৫, পড়ে থাকা বস্তু উঠানো, অধ্যায়ঃ (১-১২)=১২টি
৪৫/১. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিসের মালিক এসে আলামতের বর্ণনা দিলে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে।
৪৫/২. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া উষ্ট্র
৪৫/৩. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া ছাগল।
৪৫/৪. অধ্যায়ঃ এক বছরের মধ্যে যদি পড়ে থাকা জিনিসের মালিকের দেখা পাওয়া না যায় তবে সেটা যে পেয়েছে তারই হইবে।
৪৫/৫. অধ্যায়ঃ নদীতে শুকনা কাষ্ঠখণ্ড বা চাবুক অথবা এ জাতীয় কোন কিছু পাওয়া গেলে।
৪৫/৬. অধ্যায়ঃ রাস্তায় খেজুর পাওয়া গেলে।
৪৫/৭. অধ্যায়ঃ মক্কাবাসীদের পড়ে থাকা জিনিসের ঘোষণা কিভাবে দেয়া হইবে।
৪৫/৮. অধ্যায়ঃ অনুমতি ছাড়া কারো পশু দোহন করিবে না।
৪৫/৯. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিসের মালিক এক বছর পরে ফিরে আসলে তার জিনিস তাকে ফিরিয়ে দিবে। কারণ সেটা তার কাছে আমানত ছিল।
৪৫/১০. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিস যাতে খারাপ না হয় এবং কোন অবাঞ্ছিত ব্যক্তি যাতে তুলে না নেয় সে জন্যে তা তুলে নিবে কি ?
৪৫/১১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি পড়ে থাকা জিনিসের ঘোষণা করেছে বটে, কিন্তু তা সরকারের কাছে অর্পণ করেনি।
৪৫/১২. অধ্যায়ঃ নাই
৪৫/১. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিসের মালিক এসে আলামতের বর্ণনা দিলে তাকে তা ফিরিয়ে দিবে।
২৪২৬. উবাই ইবনু কাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি থলে পেয়েছিলাম, যার মধ্যে একশ দীনার ছিল এবং আমি (এটা নিয়ে) নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে এলাম। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দাও। আমি তাই করলাম। কিন্তু এটি সনাক্ত করার মতো লোক পেলাম না। তখন আবার তাহাঁর কাছে এলাম। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, আরো এক বছর ঘোষণা দাও। আমি তাই করলাম। কিন্তু কাউকে পেলাম না। আমি তৃতীয়বার তাহাঁর কাছে এলাম। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, থলে ও এর প্রাপ্ত বস্তুর সংখ্যা এবং এর বাঁধন স্মরণ রাখ। যদি এর মালিক আসে (তাকে দিয়ে দিবে) নতুবা তুমি তা ভোগ করিবে। তারপর আমি তা ভোগ করলাম। [শুবা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন] আমি এরপর মক্কায় সালামা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -এর সঙ্গে দেখা করলাম, তিনি বলিলেন, তিন বছর কিংবা এক বছর তা আমার মনে নেই।
৪৫/২. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া উষ্ট্র
২৪২৭. যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন এসে নাবী (সাঃআঃ) -কে পড়ে থাকা বস্তু গ্রহণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এক বছর যাবৎ এর ঘোষণা দিতে থাক। এরপর থলে ও তার বাঁধন স্মরণ রাখ। এর মধ্যে যদি কোন ব্যক্তি আসে এবং তোমাকে তার বিবরণ দেয় (তবে তাকে দিয়ে দিবে), নতুবা তুমি তা ব্যবহার করিবে। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! হারানো বস্তু যদি বকরী হয়? তিনি [নাবী (সাঃআঃ)] বলিলেন, সেটা তোমার অথবা তোমার ভাইয়ের অথবা নেকড়ের জন্য। সে আবার বলিল, হারানো বস্তু উট হলে? নাবী (সাঃআঃ) -এর চেহারায় রাগের ভাব ফুটে উঠল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এতে তোমার কী প্রয়োজন? তার সাথেই (জুতার ন্যায়) ক্ষুর ও পানির পাত্র রয়েছে, সে পানি পান করিবে এবং গাছের পাতা খাবে।
৪৫/৩. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া ছাগল।
২৪২৮. যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, পড়ে থাকা বস্তু সম্পর্কে নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হলো রাবীর বিশ্বাস যে, নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, থলেটি এবং তার বাঁধন চিনে রাখ। এরপর এক বছর যাবৎ এর ঘোষণা দিতে থাক। ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যদি এর সনাক্তকারী না পাওয়া যায়, তবে যে এটা উঠিয়েছে সে খরচ করিবে। কিন্তু তার কাছে সেটা আমানত স্বরূপ থাকবে। ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমার জানা নেই যে, এ কথাটা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর হাদীসের অন্তর্ভুক্ত ছিল, না তিনি নিজ হইতে বলেছেন। এরপর সে জিজ্ঞেস করিল, হারিয়ে যাওয়া বকরী সম্পর্কে আপনি কী বলেন? নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এটি নিয়ে নাও। তা তোমার অথবা তোমার ভাইয়ের অথবা নেকড়ে বাঘের। ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এটাও ঘোষণা দেয়া হইবে। তারপর আবার সে জিজ্ঞেস করিল, হারিয়ে যাওয়া উট সম্পর্কে আপনি কী বলেন? বর্ণনাকারী বলেন, তখন নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, এটা ছেড়ে দাও। এর সাথেই রয়েছে পায়ের ক্ষুর ও তার পানির পাত্র। সে নিজেই পানি পান করিবে এবং গাছপালা খাবে, যতক্ষণ না এর মালিক একে ফিরে পায়।
৪৫/৪. অধ্যায়ঃ এক বছরের মধ্যে যদি পড়ে থাকা জিনিসের মালিকের দেখা পাওয়া না যায় তবে সেটা যে পেয়েছে তারই হইবে।
২৪২৯. যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কাছে এসে পড়ে থাকা জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল, তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, থলেটি এবং এর বাঁধন চিনে রাখ। তারপর এক বছর যাবৎ এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি মালিক আসে (তবে তাকে তা দিয়ে দাও) আর যদি না আসে তবে তা তোমার দায়িত্বে। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করিল, যদি বকরী হারিয়ে যায়? তিনি বলিলেন, সেটা তোমার অথবা তোমার ভাইয়ের নতুবা সেটা নেকড়ের। তারপর সে হারিয়ে যাওয়া উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এতে তোমার কী? এর সাথেই এর পানির পাত্র ও পায়ের ক্ষুর রয়েছে। মালিক তাকে না পাওয়া পর্যন্ত সে পানি পান করিবে এবং গাছপালা খাবে।
৪৫/৫. অধ্যায়ঃ নদীতে শুকনা কাষ্ঠখণ্ড বা চাবুক অথবা এ জাতীয় কোন কিছু পাওয়া গেলে।
২৪৩০. আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বনী ইসরাঈলের জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে উল্লেখ করেন এবং সম্পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করেন। (শেষ পর্যায়ে বলেন) সে ব্যক্তি দেখার জন্য বের হল, হয়ত কোন জাহাজ তার মাল নিয়ে এসেছে। তখন সে একটি কাঠ দেখিতে পেল এবং তা পরিবারের জন্য জ্বালানী কাঠ হিসেবে নিয়ে এল। যখন তাকে চিরে ফেলল তাতে সে তার মাল ও একটি চিঠি পেল।
৪৫/৬. অধ্যায়ঃ রাস্তায় খেজুর পাওয়া গেলে।
২৪৩১. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রাস্তায় পড়ে থাকা খেজুরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, আমার যদি আশঙ্কা না হত যে এটি সাদকার খেজুর তাহলে আমি এটা খেতাম।
২৪৩২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, আমি আমার ঘরে ফিরে যাই, আমার বিছানায় খেজুর পড়ে থাকতে দেখি। খাওয়ার জন্য আমি তা তুলে নেই। পরে আমার ভয় হয় যে, হয়ত তা সাদকার খেজুর হইবে তাই আমি তা রেখে দেই।
৪৫/৭. অধ্যায়ঃ মক্কাবাসীদের পড়ে থাকা জিনিসের ঘোষণা কিভাবে দেয়া হইবে।
তাউস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), ইবনু আব্বাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, মক্কায় পড়ে থাকা জিনিস কেবল সেই ব্যক্তি উঠাবে, যে তার ঘোষণা দিবে। খালিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি), ইকরিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -এর মাধ্যমে ইবনু আব্বাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, মক্কায় পড়ে থাকা জিনিস কেবল সেই ব্যক্তি উঠাবে, যে তার ঘোষণা দিবে।
২৪৩৩. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, সেখানকার গাছ কাটা যাবে না, সে ব্যতীত অন্য কারো জন্য তুলে নেয়া হালাল হইবেনা, সেখানকার ঘাস কাটা যাবে না। তখন আব্বাস (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ইযখির (এক প্রকারের ঘাস) ব্যতীত। তখন তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, ইযখির ব্যতীত (অর্থাৎ ইযখির ঘাস কাটা যাবে)।
২৪৩৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) -কে মক্কা বিজয় দান করিলেন, তখন তিনি (সাঃআঃ) লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হামদ ও সানা (প্রশংসা) বর্ণনা করিলেন। এরপর বলিলেন, আল্লাহ তাআলা মক্কায় (আবরাহার ) হস্তি বাহিনীকে প্রবেশ করিতে দেননি এবং তিনি তাহাঁর রাসুল ও মুমিন বান্দাদেরকে মক্কার উপর আধিপত্য দান করিয়াছেন। আমার আগে অন্য কারোর জন্য মক্কায় যুদ্ধ করা বৈধ ছিল না, তবে আমার পক্ষে দিনের সামান্য সময়ের জন্য বৈধ করা হয়েছিল, আর তা আমার পরেও কারোর জন্য বৈধ হইবে না। কাজেই এখানকার শিকার তাড়ানো যাবে না, এখানকার গাছ কাটা ও উপড়ানো যাবে না, ঘোষণাকারী ব্যক্তি ব্যতীত এখানকার পড়ে থাকা জিনিস তুলে নেয়া যাবে না। যার কোন লোক এখানে নিহত হয় তবে দুটির মধ্যে তার কাছে যা ভাল বলে বিবেচিত হয়, তা গ্রহন করিবে। ফিদইয়া গ্রহণ অথবা কিসাস। আব্বাস (রাদি.) বলেন, ইযখিরের অনুমতি দিন। কেননা এগুলো আমাদের কবরের উপর এবং ঘরের কাজে ব্যবহার করে থাকি। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, ইযখির ব্যতীত (অর্থাৎ তা কাটা ও ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হল)। তখন ইয়ামানবাসী আবু শাহ (রাদি.) দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে লিখে দিন। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমরা আবু শাহকে লিখে দাও। (ওয়ালিদ ইবনু মুসলিম বলেন) আমি আওযায়ীকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে লিখে দিন তাহাঁর এ উক্তির অর্থ কী? তিনি বলেন, এ ভাষণ যা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কাছ হইতে তিনি শুনেছেন তা লিখে দিন।
৪৫/৮. অধ্যায়ঃ অনুমতি ছাড়া কারো পশু দোহন করিবে না।
২৪৩৫. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, অনুমতি ব্যতীত কারো পশু কেউ দোহন করিবে না। তোমাদের কেউ এটা কি পছন্দ করিবে যে, তার (তোশাখানায়) ভান্ডারে কোন ব্যক্তি এসে ভান্ডার ভেঙ্গে ফেলে এবং ভান্ডারের শস্য নিয়ে যায়? তাদের পশুগুলোর স্তন তাদের খাদ্য সংরক্ষিত রাখে। কাজেই কারো পশু তার অনুমতি ব্যতীত কেউ দোহন করিবে না।
৪৫/৯. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিসের মালিক এক বছর পরে ফিরে আসলে তার জিনিস তাকে ফিরিয়ে দিবে। কারণ সেটা তার কাছে আমানত ছিল।
২৪৩৬. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি পড়ে থাকা জিনিস সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এক বছর যাবৎ ঘোষণা দিতে থাক। এরপর জিনিসটির পাত্র ও তার বাঁধন স্মরণ রাখ এবং সেটা খরচ কর। যদি তার মালিক এসে যায় তবে তাকে দিয়ে দাও। সে জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসুল! হারিয়ে যাওয়া বস্তু বকরী হলে কী করিতে হইবে? তিনি বলিলেন, তা তুমি নিয়ে নাও। কেননা, সেটা তোমার কিংবা তোমার ভাইয়ের আর তা না হলে নেকড়ে বাঘের। সে আবার বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! হারানো বস্তু উট হলে কী করিতে হইবে? এতে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাগান্বিত হলেন এমনকি তাহাঁর উভয় গাল লাল হয়ে গেল অথবা রাবী বলেন, তার মুখমণ্ডল লাল হয়ে গেল। তারপর তিনি বলিলেন, এতে তোমার কী? তার সাথে তার ক্ষুর ও মশক রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তার মালিক তার সন্ধান পেয়ে যাবে।
৪৫/১০. অধ্যায়ঃ পড়ে থাকা জিনিস যাতে খারাপ না হয় এবং কোন অবাঞ্ছিত ব্যক্তি যাতে তুলে না নেয় সে জন্যে তা তুলে নিবে কি ?
২৪৩৭. সুওয়াইদ ইবনু গাফালা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুলায়মান ইবনু রবীআহ এবং যায়দ ইবনু সুহানের সঙ্গে আমি এক যুদ্ধে শরীক ছিলাম। আমি চাবুক পেলাম। তারা উভয়েই আমাকে এটা ফেলে দিতে বলিলেন। আমি বললাম, না, এর মালিক এলে এটা আমি তাকে দিয়ে দিব। নতুবা আমিই এটা ব্যবহার করবো। আমরা ফিরে গিয়ে হজ্জ করলাম; এরপর যখন মদীনায় গেলাম, তখন উবাই ইবনু কাব (রাদি.) -কে (এ বিষয়ে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) –এর যুগে আমি একটা থলে পেয়েছিলাম, এর মধ্যে একশ দীনার ছিল। আমি এটা নাবী (সাঃআঃ) –এর কাছে নিয়ে গেলাম। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এক বছর পর্যন্ত তুমি এটার ঘোষণা দিতে থাক। কাজেই আমি এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিলাম। এরপর আমি তাহাঁর কাছে এলাম। তিনি আরো এক বছর ঘোষণা দিতে বলিলেন। আমি আরো এক বছর ঘোষণা দিলাম। এরপর আমি আবার তাহাঁর কাছে এলাম। তিনি (সাঃআঃ) আবার এক বছর ঘোষণা দিতে বলিলেন। আমি আরো এক বছর ঘোষণা দিলাম। এরপর আমি চতুর্থবার তাহাঁর কাছে আসলাম। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, থলের ভিতরে দীনারের সংখ্যা, বাঁধন এবং থলেটি চিনে রাখ। যদি মালিক ফিরে আসে তাকে দিয়ে দাও। নতুবা তুমি নিজে তা ব্যবহার কর।
(আ.প্র. ২২৫৭, ই.ফা. ২২৭৪ ).সালামা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন যে, সুওয়াইদ ইবনু গাফালা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন যে, আমি উবাই ইবনু কাব (রাদি.) –এর সঙ্গে মক্কায় সাক্ষাৎ করলাম। তখন তিনি (এ হাদীস সম্পর্কে ) বলিলেন, আমার স্মরণ নেই যে, নাবী (সাঃআঃ) তিন বছর যাবত না এক বছর যাবত ঘোষণা দিতে বলেছেন। (২৪২৬)(আ.প্র. ২২৫৮, ই.ফা. ২২৭৫)
৪৫/১১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি পড়ে থাকা জিনিসের ঘোষণা করেছে বটে, কিন্তু তা সরকারের কাছে অর্পণ করেনি।
২৪৩৮. যায়দ ইবনু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) –এর কাছে জনৈক বেদুঈন পড়ে থাকা বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, এক বছর পর্যন্ত এটার ঘোষণা দিতে থাক। যদি কেউ আসে এবং তার থলে ও বাঁধন সম্পর্কে বিবরণ দেয়, (তা হলে তাকে ফিরিয়ে দাও) নতুবা তুমি নিজে সেটা ব্যবহার কর। এরপর সে হারিয়ে যাওয়া উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তখন নাবী (সাঃআঃ) –এর চেহারার রং পরিবর্তন হয়ে গেল। তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, সেটা দিয়ে তোমার কি প্রয়োজন? তার সাথে মশক ও ক্ষুর রয়েছে। সে নিজেই পানির কাছে যায়, গাছের পাতা খায়। তাকে ছেড়ে দাও যতক্ষণ না তার মালিক তাকে ফিরে পায়। তারপর সে তাঁকে (সাঃআঃ) হারিয়ে যাওয়া বকরী, সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বলিলেন, সেটা তোমার অথবা তোমার ভাইয়ের, আর তা না হলে নেকড়ে বাঘের।
৪৫/১২. অধ্যায়ঃ নাই
২৪৩৯. আবু বকর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি (হিজরত করে মদীনার দিকে) যাচ্ছিলাম। তখন বকরীর এক রাখালের সাথে দেখা হল। সে তার বকরীগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কার রাখাল? সে কুরাইশ গোত্রের এক ব্যক্তির নাম বলিল। আমি সে ব্যক্তিকে চিনতাম। আমি তাকে বললাম, তোমার বকরীর দুধ আছে কি? সে বলিল, হ্যাঁ আছে। আমি তাকে বললাম, তুমি আমাকে দুধ দোহন করে দিবে কি? সে বলিল, হ্যাঁ দিব। তখন আমি তাকে দুধ দোহন করিতে বললাম। বকরীর পাল হইতে সে একটি বকরী ধরে নিয়ে এল। আমি তাকে ওলান ধূলোবালি হইতে পরিষ্কার করে নিতে এবং তার হাতও পরিষ্কার করে নিতে বললাম। সে তদ্রূপ করলো। এক হাত দিয়ে অপর হাত ঝেড়ে সে এক পেয়ালা দুধ দোহন করলো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর জন্য একটি পাত্র রেখেছিলাম। যার মুখে কাপড়ের টুকরা রাখা ছিল। তা হইতে আমি দুধের উপর (পানি) ঢেলে দিলাম। এতে দুধ নিচ পর্যন্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেল। আমি নাবী (সাঃআঃ) –এর কাছে এই দুধ নিয়ে গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি পান করুন। তিনি তা পান করিলেন। এতে আমি আনন্দিত হলাম।
Leave a Reply