নাসায়ী শরীফ pdf
নাসায়ী শরীফ pdf বিচারকের নীতিমালা । ন্যায়পরায়ণ বিচারকের ফযীলত >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৫০, বিচারকের নীতিমালা, হাদীস (৫৩৭৯ – ৫৪২৭)
১.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ বিচারকের ফযীলত
২.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ শাসক
৩.পরিচ্ছেদঃ সঠিক ফয়সালা দান
৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারক পদপ্রার্থীকে বিচারক নিযুক্ত না করা
৫.পরিচ্ছেদঃ নেতৃত্ব প্রার্থনা না করা
৬.পরিচ্ছেদঃ কবিদের শাসনকার্যে নিযুক্ত করা
৭.পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তিকে বিচারক নিয়োগ করলে এবং সে ফয়সালা করলে
৮.পরিচ্ছেদঃ নারীদের শাসক নিযুক্ত করা নিষেধ
৯.পরিচ্ছেদঃ উপমা দ্বারা সমাধান। ইব্ন আব্বাসের হাদীসে ওয়ালিদ ইব্ন মুসলিম হইতে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য
১০.পরিচ্ছেদঃ ইয়াহইয়ার হাদীসে মতপার্থক্য
১১.পরিচ্ছেদঃ আলিমদের ঐকমত্তে ফয়সালা করা
১২.পরিচ্ছেদঃ আয়াত- “যে ব্যক্তি আল্লাহ যা নাযিল করিয়াছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা দেয় না, সে কাফির” [মায়িদা ঃ ৪৪]- এর তাফসীর
১৩.পরিচ্ছেদঃ ব্যাহিক অবস্থা দেখে মীমাংসা
১৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারক কর্তৃক নিজ জ্ঞান অনুযায়ী ফায়সালা দান
১৫.পরিচ্ছেদঃ সত্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে বিচারক যদি বলে,আমি এই কাজ করব, আসলে সে তা করিবে না
১৬.পরিচ্ছেদঃ সমপর্যায় বা উচ্চ পর্যায়ের কাযীর মীমাংসা ভেঙ্গে দেওয়া
১৭.পরিচ্ছেদঃ বিচারক ভুল মীমাংসা করলে তা প্রত্যাখ্যান
১৮.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসাকারীর জন্য যা পরিত্যাজ্য
১৯.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ বিচারকের রাগান্বিত অবস্থায় মীমাংসা করার অনুমতি
২০.পরিচ্ছেদঃ নিজের বাড়িতে থেকে হাকিমের মীমাংসা করা
২১.পরিচ্ছেদঃ সাহায্য প্রার্থনা করা
২২.পরিচ্ছেদঃ মহিলাদেরকে বিচারালয়ে না আনা
২৩.পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচারীকে ডেকে পাঠানো
২৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারকের মীমাংসার জন্য প্রজার নিকট গমন
২৫.পরিচ্ছেদঃ হাকীমের বাদী-বিবাদীর মধ্যে আপোষের ইঙ্গিত করা
২৬.পরিচ্ছেদঃ বিচারক কর্তৃক বিবাদীকে ক্ষমা করার ইঙ্গিত করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ হাকিমের শিথিলতার ইঙ্গিত করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসার পূর্বে হাকিম সুপারিশ করিতে পারে
২৯.পরিচ্ছেদঃ হাকিমের প্রজাবৃন্দকে তাহাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ নষ্ট করিতে বাধা দেয়া
৩০.পরিচ্ছেদঃ সম্পদ অল্প হউক বা অধিক, তাতে ফয়সালা দেয়া
৩১.পরিচ্ছেদঃ অনুপস্থিতিতে তার ব্যাপারে মীমাংসা করা
৩২.পরিচ্ছেদঃ এক আদেশে দুটি মীমাংসা করা নিষেধ
৩৩.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসায় যা পাওয়া যায়
৩৪.পরিচ্ছেদঃ অন্যায়ভাবে অত্যাধিক ঝগড়াটে ব্যক্তি
৩৫.পরিচ্ছেদঃ প্রমাণহীন মোকদ্দমার মীমাংসা
৩৬.পরিচ্ছেদঃ শপথ গ্রহণে হাকিমের নসীহত
৩৭.পরিচ্ছেদঃ হাকিম কিরূপে শপথ নিবেন?
১.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ বিচারকের ফযীলত
৫৩৭৯. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ সুবিচারক লোক আল্লাহ তাআলার নিকট তাহাঁর ডান হাতের দিকে নূরের মিম্বরের উপর উপবিষ্ট থাকিবেন। যারা তাহাদের বিচারকার্যে, পরিবারে ও দায়িতবভুক্ত বিষয়ে ইনসাফ রক্ষা করে। রাবী মুহাম্মদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর হাদীসে বলেনঃ আল্লাহর উভয় হাতই ডান হাত।
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ শাসক
৫৩৮০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সাত ব্যক্তিকে তাহাঁর ছায়ায় স্থান দান করবেন, যে দিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকিবে না। সুবিচারক শাসক; ঐ যুবক যে আল্লাহ তাআলার ইবাদতে বর্ধিত হইয়াছে; ঐ ব্যক্তি যে নিভৃতে আল্লাহকে স্মরন করে অশ্রু বিসর্জন করে; ঐ ব্যক্তি, যাহার অন্তর মসজিদের সাথে লেগে থাকে; ঐ দুই ব্যক্তি, যারা আল্লাহর জন্য একে অন্যকে ভালবাসে; ঐ ব্যক্তি, যাকে কোন সম্ভ্রান্ত রূপসী নারী নিজের দিকে ডাকে আর সে বলে, আমি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করি; আর ঐ ব্যক্তি, যে সাদকা করে এমন গোপনে যে, তার বাম হাত জানে না তার ডান হাত কি করছে।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩.পরিচ্ছেদঃ সঠিক ফয়সালা দান
৫৩৮১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন শাসক তার আদেশ জারি করে ইনসাফের সাথে এবং তা সুস্ঠূ হয়, তার জন্য দুইটি প্রতিদান রয়েছে। আর যে ইজতিহাদ করে আদেশ জারি করে, আর তা ভুল সাব্যস্ত হয়, তার জন্য একটি প্রতিদান রয়েছে।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারক পদপ্রার্থীকে বিচারক নিযুক্ত না করা
৫৩৮২. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার নিকট আশআর গোত্রের কিছু লোক এসে বললো, আমাদেরকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট নিয়ে চল, আমাদের প্রয়োজন রয়েছে। আমি তাহাদের সাথে গেলাম। তারা বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমাদেরকে কোন পদে আধিস্ঠত করুন। আবু মূসা [রাঃআঃ] বলেন, তাহাদের এই আব্দার শুনে আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি জানি না তারা আপনার নিকট এই উদ্দেশ্যে আগমন করেছে। তা হলে আমি তাহাদের সাথে আসতাম না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আপনি সত্যই বলেছেন, আর তিনি আমার ওযর গ্রহণ করিলেন এবং তাহাদেরকে বললেনঃ যে ব্যক্তি কোন পদের প্রার্থী হয়, আমরা তাকে কাজে নিযুক্ত করি না।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৮৩. উসায়দ ইবনি হুযায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক আনসার ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললোঃ আপনি আমাকে কাজে নিযুক্ত করেন না, অথচ আপনি অমুক ব্যক্তিকে কাজে নিযুক্ত করিয়াছেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমার পরে তোমাদের উপর অনুপযুক্ত লোক শাসক নিযুক্ত হইবে, তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করিবে, যতক্ষণ না তোমরা আমার সাথে হাওযে কাওসারে মিলিত হইবে।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিচ্ছেদঃ নেতৃত্ব প্রার্থনা না করা
৫৩৮৪. আব্দুর রহমান ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমরা পদের আকাঙ্ক্ষা করিবে না। কেননা, যদি তুমি তা চেয়ে নাও, তবে তুমিই এর জন্য দায়ী থাকিবে; আর যদি তা তোমাকে আকাঙ্ক্ষা ব্যতীত দেওয়া হয়, তবে আল্লাহর পক্ষ হইতে তোমাকে সাহায্য করা হইবে।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৮৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ তোমরা শাসক হওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে থাকো। অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জা এবং আফসোসের কারন হইবে। এটা উত্তম স্তন্যদায়িনী কিন্তু সেই সঙ্গে নির্মম দুধ বন্ধকারিণী।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিচ্ছেদঃ কবিদের শাসনকার্যে নিযুক্ত করা
৫৩৮৬. আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তামীম গোত্রের একদল আরোহী নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট আসলে আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! কাকা ইবনি মাবাদকে শাসক নিযুক্ত করুন; উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আকরা ইবনি হাবিসকে ১ হাকিম নিযুক্ত করুন। পরে তাঁরা বাদানুবাদে লিপ্ত হলে তাঁদের শব্দ উঁচু হইয়া গেল। তখন এই আয়াত নাযিল হলোঃ হে ঈমানদারগন! আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসূলের বলার পূর্বে তোমরা নিজেদের মত প্রকাশ করো না বা তাহাঁর আদেশের মধ্যে কথার বাধা দিও না………… যদি তারা আপনার বের হওয়া পর্যন্ত সবর করতো, তবে তাহাদের জন্য উত্তম হত। [হুজুরাতঃ ১-৫]
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তিকে বিচারক নিয়োগ করলে এবং সে ফয়সালা করলে
৫৩৮৭. শুরায়হ্ ইব্ন হানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ
একদা তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তিনি শুনতে পেলেন, লোক তাঁকে হানী আবুল হাকাম বলে ডাকছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ আল্লাহ তাআলা বিচারক, তিনিই আদেশ দাতা। কিন্তু লোক তোমাকে আবুল হাকাম বলে কেন? তিনি বললেনঃ আমার গোত্রের লোক যখন কোন ব্যপারে কলহ করে, তখন তারা আমার নিকট বিচার প্রার্থী হয়; আর আমি যে রায় দেই, তারা তা মেনে নেয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এরচেয়ে ভালো কাজ আর হইতে পারে? আচ্ছা তোমার কয়টি সন্তান? তিনি বললেনঃ আমার ছেলে-শুরায়হ, আব্দুল্লাহ এবং মুসলিম। তিনি বললেনঃ এদের মধ্যে বড় কে? হানী বললেনঃ শুরায়হ! তিনি বললেনঃ তবে তুমি আবু শুরায়হ! পরে তিনি তাহাঁর ছেলেদের জন্য দুআ করিলেন।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮.পরিচ্ছেদঃ নারীদের শাসক নিযুক্ত করা নিষেধ
৫৩৮৮. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে এমন এক কথার দ্বারা রক্ষা করিয়াছেন, যা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে শ্রবণ করেছি। ইরানের বাদশাহ কিসরার মৃত্যু হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করলেনঃ এখন তারা কাকে শাসক নিযুক্ত করেছে? তারা বললোঃ তার কন্যাকে। তিনি বললেনঃ যে জাতি নিজেদের শাসক একজন নারীকে সাব্যস্ত করে নেয়। তারা কখনো কল্যাণপ্রাপ্ত হয় না।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৯.পরিচ্ছেদঃ উপমা দ্বারা সমাধান। ইব্ন আব্বাসের হাদীসে ওয়ালিদ ইব্ন মুসলিম হইতে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য
৫৩৮৯. ফযল ইব্ন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে আরোহী ছিলেন কুরবানীর দিন ভোরে। এসময় খাছআম গোত্রের এক নারী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আল্লাহর নির্ধারিত ফরয হজ্জ আমার পিতার উপর, তাহাঁর বার্ধক্য আরোপিত হইয়াছে। অথচ তিনি শায়িত অবস্থা ব্যতিত সওয়ারও হইতে পারে না ; এমতাবস্থায় আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করবো ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাহাঁর পক্ষ হইতে তুমি হজ্জ কর। কেননা, তাহাঁর কোন দেনা থাকলে, তা তোমাকেই আদায় করিতে হতো।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৯০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
খাসআম গোত্রের এক নারী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলো, আর তখন ফযল তাহাঁর পিছনে সহযাত্রী ছিল। সে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আল্লাহর নির্ধারিত ফরয হজ্জ আমার পিতার উপর আরোপিত হইয়াছে, অথচ তিনি এত বৃদ্ধ যে, শায়িত অবস্থা ব্যতীত সওয়ার হইতে পারেন না। আমি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ করলে, তা আদায় হইবে কি ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৯১. আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পিছনে আরোহী ছিলেন, এমন সময় খাসআম গোত্রের এক নারী মাসআলা জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্যে তাহাঁর নিকট উপস্থিত হলো। তখন ফযল [রাঃআঃ] ঐ নারীর প্রতি দৃষ্টি দিলেন, আর ঐ নারীও তাহাঁর দিকে তাকাচ্ছিল আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফযলের চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। তখন ঐ নারী বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ ! আল্লাহ পাকের নির্ধারিত ফরয হজ্জ ঐ সময় ফরয হলো যখন আমার পিতা বৃদ্ধ, এমনকি তিনি উটে বসতেও পারেন না। আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আর এটি বিদায় হজ্জের ঘটনা।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৯২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
খাসআম গোত্রের এক মহিলা বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ ! আমার পিতা অতি বৃদ্ধ, তিনি উটের ওপর ঠিক হইয়া বসতেও পারেন না, এমতাবস্থায় তাহাঁর ওপর আল্লাহর ফরয হজ্জ আরোপিত হইয়াছে, আমি কি তাহাঁর পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করিতে পারি ? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ হ্যাঁ। ফযল ঐ মহিলার দিকে তাকাতে লাগলেন আর সে ছিল এক সুন্দরী মহিলা। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফযলকে ধরে তাহাঁর চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০.পরিচ্ছেদঃ ইয়াহইয়ার হাদীসে মতপার্থক্য
৫৩৯৩. আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যাক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে জজ্ঞাসা করলোঃ আমার পিতার উপর হজ্জ ফরয করা হইয়াছে, কিন্তু তিনি বার্ধক্যে উপনীত, এমনকি উটে বসতেও পারেন না, যদি আমি তাকে বেঁধে দেই তবে ভয় হয় হয়তো তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হইবেন। আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ করবো, তিনি বললেনঃ দেখ, যদি তার উপর ঋণ থাকতো আর তুমি তা আদায় করে দিতে; তবে তা আদায় হতো কিনা ? সে বললোঃ হ্যাঁ, তিনি বলিলেন তবে তুমি তার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় কর। [কেননা এটাও আল্লাহর ঋণ।]
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ শায
৫৩৯৪. ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পিছনে সওয়ার ছিলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ ! আমার মাতা নিতান্ত বৃদ্ধা। তাকে উটে বসালেও তিনি বসতে পারবেন না আর যদি তাহাঁর বেঁধে দেই, তবে ভয় হয় আমি না তার মৃত্যুর কারন হই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ দেখ, যদি তোমার মাতার উপর ঋণ থাকতো, তবে কি তুমি তা আদায় করিতে? সে বললো হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ অতএব তার পক্ষ হইতে তুমি হজ্জ কর।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ শায
৫৩৯৫. ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যাক্তি নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা অত্যধিক বৃদ্ধ তিনি হজ্জ করিতে অক্ষম। আমি যদি তাঁকে বাহনের উপর বসিয়ে দেই, তবে তিনি ঠিকভাবে বসতে পারবেন না। আমি কি তাহাঁর পক্ষে হজ্জ আদায় করিতে পারি? তিনি বলেনঃ তিনি তোমার পিতার পক্ষে হজ্জ করিতে পার।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ শায
৫৩৯৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বললোঃ আমার পিতা অধিক বৃদ্ধ ব্যক্তি, অতএব আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করিতে পারি ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, বল তো, যদি তার উপর ঋণ থাকতো এবং তুমি তা পরিশোধ করে দিতে, তবে তা কি তার পক্ষ হইতে আদায় হতো না?
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিচ্ছেদঃ আলিমদের ঐকমত্তে ফয়সালা করা
৫৩৯৭. আব্দুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আব্দুল্লাহ্ [ইবনি মাসউদ] [রাঃআঃ] -এর নিকট অনেক লোক আসলো। তখন আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] বললেনঃ আমাদের উপর এমন এক সময় অতিবাহিত হইয়াছে, যখন আমরা কোন বিচার করতাম না, আর ভাগ্যে রেখেছেন যে, আমরা এই পদে আমি হবো, যেমন যেমন তোমরা প্রত্যক্ষ করছো। এখন হইতে তোমাদের কারো যদি কখনও কোন মীমাংসা করার প্রয়োজন হয়, তখন সে আল্লাহ পাকের কিতাবানুসারে মীমাংসা করিবে। যদি এমন কোন ব্যাপারে মীমাংসা করিতে হয়, যা কিতাবুল্লাহইতে নেই, তখন সে তার নাবী এ ব্যাপারে যে মীমাংসা করিয়াছেন, তা দ্বারা মীমাংসা করিবে। আর যদি তার নিকট এমন কোন ব্যাপারে উপস্থিত হয়, যা কিতাবুল্লাহইতেও নেই এবং এব্যাপারে নাবী [সাঃআঃ] -এর ফয়সালাও নেই, তখন সে যেন নেককারদের মীমাংসানুযায়ী মীমাংসা করে। যদি তাহাঁর নিকট এমন কোন ব্যাপারে উপস্থিত হয়, যা কিতাবুল্লাহয়ও নেই, তার নাবী যা মীমাংসা দিয়েছেন তাতেও নেই এবং নেককারদের মীমাংসা ও দৃষ্টান্ত নেই, তখন সে ব্যাপারে স্বীয় জ্ঞানের দ্বারা মীমাংসা করিবে এবং সে যেন এ কথা না বলে যে, নিশ্চয় আমি ভয় করি, আমি ভয় করি। কেননা, হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এদুয়ের মধ্যে কোন কোন বিষয় আছে, যা সন্দেহ উদ্দীপক। অতএব এমন কাজ পরিত্যাগ কর, যা সন্দেহে নিপতিত করে ; এবং ঐ কাজ কর, যাতে সন্দেহ নেই।
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
৫৩৯৮. আবদুল্লাহ্ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের উপর এমন এক সময় অতিবাহিত হইয়াছে, যখন আমরা কোন ফয়সালা বা মীমাংসা করতাম না ; আর আমরা তার উপযুক্তও ছিলাম না, আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাগ্যে রেখেছেন এবং আমরা এই পর্যায়ে পৌছালাম, যা তোমরা দেখছো। অতএব, এরপর যদি কারা কোন ফয়সালা বা মীমাংসা করিতে হয়, তবে সে যেন আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তার মীমাংসা করে ; যদি তার নিকট এমন ব্যাপার উপস্থিত হয়, যা আল্লাহর কিতাবে নেই ; তবে সে যেন এর মীমাংসা ঐরূপ করে, যা দ্বারা তার সে মীমাংসা করিয়াছেন। আর যদি তার নিকট এমন বিষয় উপস্থিত হয়, য আল্লাহর কিতাবেও নেই এবং তাহাঁর নাবী [সাঃআঃ] এর মীমাংসা করেন নি; তবে সেভাবে সে মীমাংসা করিবে যেভাবে নেক্কারগণ যা দ্বারা মীমাংসা করিয়াছেন। আর তোমাদের কেউ যেন একথা না বলে যে, আমি ভয় করি, আমি ভয় করি। কেননা, হালাল স্পষ্ট, আর হারামও স্পষ্ট আর এদুয়ের মধ্যে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়সমূহ। অতএব, তুমি তা পরিত্যাগ কর, যা তোমাকে সন্দেহে নিপতিত করে, আর যাতে সন্দেহ নেই, তুমি তা কর।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৫৩৯৯. শুরায়হ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি উমার [রাঃআঃ] -এর নিকট প্রশ্ন লিখলেন। জবাবে তিনি তাঁকে লিখেন, তুমি মীমাংসা কর, যা আল্লাহর কিতাবে রয়েছে, তা দ্বারা ; যদি আল্লাহর কিতাবে তা থাকে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর সুন্নত দ্বারা, আর যদি ঐ বিষয়টি আল্লাহর কিতাবে এবং নাবী [সাঃআঃ] -এর সুন্নতে পাওয়া না যায়, তবে নেক্কারগণ যে মীমাংসা করিয়াছেন, তা দ্বারা মীমাংসা কর। আর যদি তা আল্লাহর কিতাবে এবং রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর সুন্নতে না থাকে এবং নেক্কার লোকেরাও এর কোন মীমাংসা না দিয়ে থাকে, তবে তোমার ইচ্ছা হলে সামনে অগ্রসর হইবে, আর ইচ্ছা হলে স্থগিত রাখবে। আমার মতে, তোমার স্থগিত রাখাই উত্তম। তোমাদের প্রতি সালাম।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
১২.পরিচ্ছেদঃ আয়াত- “যে ব্যক্তি আল্লাহ যা নাযিল করিয়াছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা দেয় না, সে কাফির” [মায়িদা ঃ ৪৪]- এর তাফসীর
৫৪০০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঈসা ইবনি মারয়াম [আঃ]-এর পর এমন কয়েকজন বাদশাহ্ ছিলেন, যারা তাওরাত এবং ইঞ্জিলে পরিবর্তন সাধন করেন। তাহাদের মধ্যে এমন কিছু ইমানদার লোকও ছিলেন, যারা তাওরাত পাঠ করিতেন। তখন তাহাদের বাদশাহদেরকে বলা হলো- এ সকল লোক আমাদেরকে যে গালি দিচ্ছে, এর চেয়ে কঠিন গালি আর কি হইতে পারে? তারা পাঠ করেঃ যারা আল্লাহর নাজিলকৃত আহ্কাম দ্বারা মীমাংসা করে না, তারা কাফির।“ তাহাদের পড়ার মধ্যে থাকে এই আয়াত এবং ঐ সকল আয়াত, যাতে আমাদের কর্মকাণ্ডের দোষ প্রকাশ পায়। তাহাদেরকে আহবান করুন, তারা যেন আমরা যেরূপ পাঠ করি, সেরূপ পাঠ করে, আর আমরা যেরূপ ঈমান এনেছি, সেরূপ ঈমান আনে। বাদশাহ তাহাদের সকলকে ডেকে একত্রিত করিলেন এবং তাহাদের সামনে পেশ করিলেন যে, তাহাদেরকে হত্যা করা হইবে, যদিনা তারা তাওরাত ও ইঞ্জিল পাঠ ত্যাগ করিবে, তবে ঐ সকল আয়াত ব্যতীত, যা পরিবর্তন হইয়াছে। তারা বললোঃ এর দ্বারা তোমাদের উদ্দেশ্য কী ? আমাদেরকে আমাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। তাহাদের একদল বললঃ আমাদের জন্য একটি স্তম্ভ তৈরি কর, এরপর আমাদের তাতে চড়িয়ে দাও এবং আমাদেরকে এমন কিছু দান কর, যা দ্বারা আমরা আমাদের খাদ্য ও পানীয় উঠিয়ে নিতে পারি, তা হলে আমরা আর তোমাদের নিকট আসবো না। তাহাদের আর একদল বললঃ আমাদেরকে ছেড়ে দাও, আমরা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াব এবং বন্য পশুর ন্যায় আহার ও পান করবো। আর এরপর যদি তোমাদের দেশে আমাদেরকে পাও, তবে আমাদেরকে হত্যা করো। তাহাদের আর একদল বললোঃ বনে জঙ্গলে আমাদের জন্য গির্জা তৈরী করে দাও। আমরা কূপ খনন করবো এবং তরি-তরকারি ফলাব, আমরা তোমাদের কাছেও আসবো না, এবং তোমাদের পাশ দিয়ে কোথাও যাব না। আর এমন কোন গোত্র ছিল না, যাতে তাহাদের আত্মীয়-স্বজন না ছিল। পরে তারা ঐরূপ করলো। তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত নাযিল করেনঃ তারা নিজেরা এমন বৈরাগ্য ঠিক করে নিয়েছিল। আমি তাহাদেরকে এর বিধান দিইনি। তারা ঐ দরবেশের হক পূর্ণ করেনি। অন্যান্য লোকেরা বলিতে লাগলোঃ আমরাও তাহাদের ন্যায়, যেমন অমুক অমুক লোক করে থাকে, অমূক লোকের ন্যায় জঙ্গলে জঙ্গলে ভ্রমণ করবো, ঐরূপ গৃহ নির্মাণ করবো, যেমন অমূক লোকেরা করেছিল। অথচ তারা শিরকে পতিত ছিল, তারা যাদের অনুকরণ করছিল, তাহাদের ঈমান সম্বদ্ধেও অবহিত ছিল না। যখন আল্লাহ তাআলা নাবী [সাঃআঃ] -কে প্রেরণ করিলেন, তখন তাহাদের মধ্যে কিছু লোক অবশিষ্ট ছিল। কেউ তো তার ইবাদতখানা হইতে নেমে আসলো, ভ্রমণকারী তার ভ্রমণ হইতে ফিরে আসলো, কেউ তার গির্জা হইতে আসলো এবং তাহাঁর প্রতি ঈমান আনলো এবং তাকে বিশ্বাস করলো। তখন আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন কর, তা হলে তিনি তোমাদেরকে তাহাঁর রহমতের দ্বিগুণ দান করবেন, এক তো হযরত ঈসা [আঃ] -এর উপর ঈমান আনার দরুন এবং তাওরাত-ইঞ্জিলে বিশ্বাস স্থাপনের দরুন। আর দ্বিতীয়ত মুহাম্মদ [সাঃআঃ] এর উপর ঈমান আনা এবং তাঁকে সত্যবাদী জানার কারণে এবং তাঁকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করার দরুন আল্লাহ তাআলা এক আলো দান করবেন, যাহার আলোতে তোমরা চলাফেরা করিবে, অর্থাৎ তা হলো কুরআন এবং তাহাদের নাবী [সাঃআঃ] -এর অনুগমন অনুসরণ, যেন যে আহ্লে কিতাব তোমাদের মত হইতে চায়; তারা যেন না বুঝে যে, তারা আল্লাহর অনুগ্রহ পাবে না।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
১৩.পরিচ্ছেদঃ ব্যাহিক অবস্থা দেখে মীমাংসা
৫৪০১. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আমার নিকট মোকদ্দমা দায়ের করে থাক। আমিতো মানুষই। হয়তো তোমাদের কেউ তার প্রতিপক্ষ হইতে তার দাবী জোরালোভাবে পেশ করিবে; যদি আমি কাউকে তার ভাইয়ের কোন হক দিয়ে ফেলি, তবে সে যেন তা গ্রহণ না করে; এমতাবস্থায় আমি তাকে আগুনের এক অংশই দান করি।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারক কর্তৃক নিজ জ্ঞান অনুযায়ী ফায়সালা দান
৫৪০২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুই নারী এক স্থানে তাহাদের নিজ নিজ সন্তান নিয়ে ছিল। এমন সময় একটি নেকড়ে বাঘ এসে তাহাদের একজনের সন্তান নিয়ে গেল। তাহাদের একজন তার সঙ্গিনীকে বললোঃ তোমার ছেলে নিয়ে গেছে। অন্যজন বললঃ তোমার সন্তান নিয়েছে। তারা উভয়ে এ ব্যাপারে দাউদ [আঃ] -এর নিকট মীমাংসা প্রার্থনা করলো। দাউদ [আঃ] তাহাদের মধ্যে বয়সে যে বড় ছিল, তাকে সন্তান দিয়ে দিলেন। এরপর তারা উভয়ে হযরত সুলায়মান ইবনি দাউদ [আঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া ঘটনাটি বর্ণনা করলে, তিনি বললেনঃ আমার নিকট একখানা ছুরি নিয়ে এস, আমি এই বাচ্চাকে তাহাদের উভয়ের মধ্যে দুই টুকরা করে দিচ্ছি। একথা শুনে যে নারী বয়সে ছোট ছিল, সে বললোঃ এমন কাজ করবেন না; আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন, এ বাচ্চা তারই। তখন তিনি ঐ বাচ্চা ছোট নারীকে দিলেন। আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি এই দিনের পূর্বে ছুরিকে বলিতে শুনিনি আমরা একে মুদয়া বলতাম।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫.পরিচ্ছেদঃ সত্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে বিচারক যদি বলে,আমি এই কাজ করব, আসলে সে তা করিবে না
৫৪০৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুইজন নারী বের হলো, আর তাহাদের সাথে ছিল তাহাদের দুই সন্তান। এক নারীকে নেকড়ে বাঘ আক্রমণ করে তার সন্তান নিয়ে গেল। অবশিষ্ট সন্তানের ব্যাপারে উভয় নারী দাউদ [আঃ]-এর নিকট উপস্থিত হইয়া নিজের সন্তান বলে দাবি করলো, তিনি তাহাদের মধ্যে যে নারী বয়সে বড় ছিল, তার পক্ষে রায় দিলেন। অবশেষে তারা সুলায়মান [আঃ] -এর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাদের ব্যাপারে কি আদেশ দেয়া হইয়াছে? তারা তাহাঁর নিকট ঘটনা বর্ণনা করলে, তিনি বললেনঃ একখানা ছুরি নিয়ে এস, আমি এই শিশুটিকে দুভাগ করে তাহাদের মধ্যে বণ্টন করে দিব। তখন ছোট নারী বললঃ আপনি কি তাকে দ্বিখণ্ডিত করবেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সে বললঃ আপনি এরূপ করবেন না, আমার অংশ আমি তাকে দিয়ে দিলাম। তখন তিনি বললেনঃ এই শিশুটি তোমার; তিনি তার পক্ষেই মীমাংসা করিলেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিচ্ছেদঃ সমপর্যায় বা উচ্চ পর্যায়ের কাযীর মীমাংসা ভেঙ্গে দেওয়া
৫৪০৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুই নারী বের হলো, আর তাহাদের সাথে ছিল তাহাদের দুই সন্তান, এক নেকড়ে বাঘ তাহাদের থেকে এক সন্তানকে উঠিয়ে নিয়ে গেল। তারা এই শিশুর ব্যাপারে ঝগড়া করে দাউদ [আঃ] -এর নিকট বিচার প্রার্থী হলে, তিনি ঐ নারীদয়ের মধ্যে যে বড় ছিল তার পক্ষে রায় দিলেন। তারা সুলায়মান [আঃ] -এর নিকট গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাদের ব্যাপারে কি রায় দিয়েছেন? তারা বল্লোঃ তিনি বড় নারীর পক্ষে রায় দিয়েছেন। সুলায়মান [আঃ] বললেনঃ আমি তাকে কেটে সমান দুই অংশ করবো, এক অংশ এই নারী এবং অপর অংশ ঐ নারীর। তখন বড় নারী বললঃ জি-হ্যাঁ, আপনি তাই করুন, তাকে খণ্ডিত করুন। কিন্তু ছোট নারী বললঃ তাকে কাটবেন না, সে ঐ নারীরই সন্তান। তখন তিনি যে নারী কাটতে অস্বীকার করলো, তার পক্ষেই রায় দিলেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭.পরিচ্ছেদঃ বিচারক ভুল মীমাংসা করলে তা প্রত্যাখ্যান
৫৪০৫. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] খালিদ ইবনি ওলীদ [রাঃআঃ]-কে জাযীমা গোত্রের নিকট প্রেরণ করেন। তিনি তাহাদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান করেন; কিন্তু তারা ভালভাবে বলিল না যে, ইসলাম গ্রহণ করলাম। বরং তারা বললঃ আমরা স্বীয় ধর্ম ত্যাগ করলাম। খালিদ [রাঃআঃ] তাহাদেরকে হত্যা ও বন্দী করিতে আরম্ভ করিলেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তিকে এক একজন বন্দী হাওলা করিলেন। ভোরে খালিদ [রাঃআঃ] প্রত্যেক ব্যক্তিকে স-স বন্দীকে হত্যা করার আদেশ দেন। ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ তখন আমি বল্লামঃ আল্লাহর শপথ! আমি আমার কয়েদীকে হত্যা করবো না, আর কেউই নিজ বন্দীকে হত্যা করিবে না। অথবা তিনি বলেছেনঃ আমার বন্ধুদের কেউই তার কয়েদীকে হত্যা করিবে না। বর্ণনাকারী বলেন, পড়ে আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলাম এবং তাহাঁর নিকট খলিদ [রাঃআঃ] -এর কার্যকলাপ বর্ণনা করা হলে তিনি তাহাঁর হস্তদ্বয় উত্তোলনপূর্বক বললেনঃ হে আল্লাহ! খালিদ যা করেছে, আমি আপনার নিকট ঐ ব্যাপারে পবিত্র। তিনি এ কথা দুবার বলেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসাকারীর জন্য যা পরিত্যাজ্য
৫৪০৬. আব্দুর রহমান ইবনি আবু বাকরা [রাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা আমার দ্বারা সিজিস্তানের বিচারপতি উবায়দুল্লাহ ইবনি আবু বাকরাকে লিখে পাঠান যে, তুমি রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করিবে না। কেননা, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যেন রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যাক্তির মধ্যে মীমাংসা না করে।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯.পরিচ্ছেদঃ ন্যায়পরায়ণ বিচারকের রাগান্বিত অবস্থায় মীমাংসা করার অনুমতি
৫৪০৭. যুবায়র ইব্নুল আওয়াম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি এমন একজন আনসারী ব্যক্তির সাথে হাররা নামক স্থানের পানি প্রবাহ নিয়ে ঝগড়া করেন, যিনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর সাথে বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। তাঁরা উভয়ে এই পানি দ্বারা খেজুর বাগানে পানি দিত। ঐ আনসারী ব্যক্তি বল্লেনঃ পানি ছেড়ে দিন, যাতে তা এর উপর দিয়ে বয়ে যায়। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করিলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে যুবায়র! তুমি নিজের যমীনে পানি দিয়ে তা প্রতিবেশীর জন্য ছেড়ে দাও। একথায় আনসারী ব্যক্তি রাগান্বিত হইয়া বল্লোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! যুবায়র তো আপনার ফুফির ছেলে। একথা শুনে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর চেহারার রং পরিবর্তিত হলো। তিনি বললেনঃ হে যুবায়র! তুমি বাগানে পানি দাও এবং পরে পানি বন্ধ করে দাও, যতক্ষণ না পানি গাছের চতুর্দিকে আইলে পৌঁছে যায়। এবার রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যুবায়রকে তাহাঁর পূর্ণ অধিকার দান করিলেন। এরপূর্বে তিনি যুবায়র [রাঃআঃ] -কে যে আদেশ দিয়েছিলেন, তাতে যুবায়র [রাঃআঃ] এবং আনসারী উভয়ের জন্য ছিল প্রশস্ততা, কিন্তু যখন আনসারী তাঁকে রাগান্বিত করিলেন, তখন তিনি যুবায়র [রাঃআঃ] -এর অংশ তাঁকে পূর্ণরূপে দান করিলেন। যুবায়র [রাঃআঃ] বলেন, আমার মনে হয়ঃ আয়াতটি এ ব্যাপারেই নাযিল হয়।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০.পরিচ্ছেদঃ নিজের বাড়িতে থেকে হাকিমের মীমাংসা করা
৫৪০৮. আব্দুল্লাহ্ ইবনি কাব [রাঃআঃ] তাহাঁর পিতা হইতে হইতে বর্ণিতঃ
কাব [রাঃআঃ] ইবনি আবু হাদরাদ হইতে তাহাঁর প্রাপ্য করযের টাকা চাইলে, এ ব্যাপারে তাহাদের উভয়ের শব্দ উচ্চ হইয়া গেল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -ও তার তাহাঁর বাসস্থান হইতে তা শ্রবণ করিলেন। তিনি তাহাদের প্রতি অগ্রসর হইয়া তাহাঁর ঘরের পর্দা উঠিয়ে উচ্চস্বরে বললেনঃ হে কাব! কাব [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি উপস্থিত আছি, ইয়া রসূলুল্লাহ্! তিনি কাব [রাঃআঃ]-কে বললেনঃ তোমার করয হইতে কমাও এবং তিনি অর্ধেকের প্রতি ইঙ্গিত করিলেন! কাব [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি তা করলাম। এরপর তিনি ইবনি আবু হাদরাদকে বললেনঃ ওঠো তা আদায় কর।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১.পরিচ্ছেদঃ সাহায্য প্রার্থনা করা
৫৪০৯. আব্বাদ ইবনি শারাহীল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচাদের সাথে মদীনায় আগমন করলাম এবং তথাকার বাগানের মধ্যে এক বাগানে প্রবেশ করলাম, আর একটি ফলের গুচ্ছ নিয়ে তা মুচড়ে ফেললাম। তখন ঐ বাগানের মালিক এসে আমার কম্বল কেড়ে নিল এবং আমাকে মারধর করলো। আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া তাহাঁর নিকট ফরিয়াদ করলাম। তিনি ঐ ব্যক্তিকে ডেকে পাঠালে তারা তাকে নিয়ে আসলো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কেন এরূপ করলে? সে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! সে আমার বাগানে প্রবেশ করে ফলের গুচ্ছ নিয়ে তা মুচড়ে ফেলেছে। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদিও সে অজ্ঞ ছিল, তুমি তাকে বললে না কেন? আর যখন সে ক্ষুধার্ত ছিল, তখন তুমি তা খাওয়ালে না কেন? যাও, তুমি তার কম্বল ফিরিয়ে দাও। পরে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে এক ওসক অথবা আধা ওসক দেওয়ার আদেশ দেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২.পরিচ্ছেদঃ মহিলাদেরকে বিচারালয়ে না আনা
৫৪১০. আবু হুরাইরা এবং যায়দ ইবনি খালিদ জুহানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
দুই ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট তাহাদের এক ঝগড়া নিয়ে উপস্থিত হলো। তাহাদের একজন বললোঃ আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবের দ্বারা মীমাংসা করুন। অন্যজন, যে ছিল তাহাদের মধ্যে অধিক জ্ঞানী সে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমাকে নিজের বক্তব্য পেশ করার অনুমতি দিন। সে বললোঃ আমার ছেলে এই লোকের চাকর ছিল এবং সে তার স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করেছে। লোকেরা আমাকে বললোঃ তোমার ছেলেকে পাথর মেরে হত্যা করা হইবে। আমি এক শত ছাগল এবং আমার এক দাসীর বিনিময়ে আমার ছেলেকে ছাড়িয়েছি। এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে, তারা বললোঃ আমার ছেলের শাস্তি একশত বেত্রাঘাত এবং এক বৎসর নির্বাসন, আর তার স্ত্রীকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হইবে। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ যাঁহার হাতে আমার জীবন, সেই সত্তার শপথ করে বলছিঃ আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করবো, তোমার ছাগসমূহ এবং দাসী তোমাকে ফেরত দেওয়া হইবে, আর তার ছেলেকে একশত বত্রাঘাত করা হইবে এবং এক বৎসরের জন্য নির্বাসন দেওয়া হইবে। এরপর তিনি উনায়স [রাঃআঃ] -কে বললেনঃ সে যেন অন্য ব্যক্তির স্ত্রীর নিকট যায়, যদি সে ব্যভিচার করেছে বলে স্বীকার করে, তবে তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হইবে। পরে ঐ নারী স্বীকার করলে তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হয়।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৪১১. আবু হুরাইরা, যায়দ ইবনি খালিদ এবং শিব্ল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললোঃ আমাদের মধ্যে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী মীমাংসা করুন। পরে তার বিপক্ষ যে অধিক বুদ্ধিমান ছিল, সে বললোঃ ঠিকই আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবানুযায়ী মীমাংসা করুন। তখন তিনি বললেনঃ বল! সে বললোঃ আমার পুত্র এই ব্যক্তির চাকর ছিল, এবং সে তার স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করেছে। আমি আমার একশত ছাগল এবং খাদেম দ্বারা তাকে ছাড়িয়ে নিয়েছি, অথচ তাকে কেউ খবর দিয়েছে যে, তার পুত্রকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হইবে। তাই সে এর বিনিময়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। এরপর আমি কয়েকজন আলিমের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তারা বললোঃ আমার পুত্রের উপর একশত বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন বর্তাবে। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহর শপথ! যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবানুযায়ী মীমাংসা করবো। আর একশত ছাগল ও খাদিম তোমাকে ফেরত দেওয়া হইবে এবং তোমার ছেলের উপর একশত বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন বর্তাবে। এরপর তিনি বলেনঃ হে উনায়স! তুমি ভোরে ঐ ব্যক্তির স্ত্রীর নিকট যাবে, যদি সে স্বীকার করে, তবে তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করিবে। উনায়স ভোরে তার নিকট গমন করলে, সে তা স্বীকার করলো, ফলে তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হয়।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩.পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচারীকে ডেকে পাঠানো
৫৪১২. আবু উমামা ইবনি সাহ্ল ইবনি হুনায়ফ [রাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট এক নারীকে আনা হল, যে ব্যভিচার করেছিল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করেনঃ কার সাথে? মহিলাটি বললোঃ ঐ পঙ্গু লোকটির শপথ! যে সাদ [রাঃআঃ] -এর বাগানে অবস্থান করে। তার নিকট লোক পাঠিয়ে তাকে বহন করা আনা হলো। তাকে তাহাঁর সামনে রাখা হল। এরপর সে তা স্বীকার করলো। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] খেযুরের একখানা ডাল আনিয়ে তা দ্বারা তাকে কয়েক ঘা লাগান, আর তিনি তাকে তার পঙ্গুত্তের জন্য সহজ শাস্তি দেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪.পরিচ্ছেদঃ বিচারকের মীমাংসার জন্য প্রজার নিকট গমন
৫৪১৩. সহল ইবনি সাদ সাঈদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আনসারদের দুই গোত্রের মধ্যে বচসা হলে তারা একে অন্যের প্রতি প্রস্তর নিক্ষেপ করলো। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাদের উভয়ের মধ্যে মীমাংসা করানোর জন্য তথায় গমন করেন। এমন সময় নামাযের সময় হলে বিলাল [রাঃআঃ] আযান দিলেন এবং রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু তিনি তথায় ব্যস্ত থাকায় একমত বলা হলে নামাযের ঈমামতির জন্য আবু বকর [রাঃআঃ] সামনে গেলেন, এমন সময় রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আগমন করিলেন, আর তখনও আবু বকর [রাঃআঃ] নামাযে ঈমামতি করছিলেন। লোক তাঁকে দেখে হাতে শব্দ করলো। আবু বকর [রাঃআঃ] নামাযে কোন দিকে লক্ষ্য করিতেন না। কিন্তু তিনি সকলের হাতের শব্দ শুনে লক্ষ্য করে দেখলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আগমন করিয়াছেন। তখন তিনি পেছনে সরে আসার ইচ্ছা করলে রসূলুল্লাহ্ তাঁকে স্থির থাকতে ইঙ্গিত করিলেন। আবু বকর [রাঃআঃ] তাহাঁর হস্তদ্বয় উত্তোলন করে আল্লাহর শোকর আদায় করিলেন এবং তিনি উল্টো পায়ে পেছলে সরে আসলেন। আর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] সামনে এগিয়ে গিয়ে নামায পড়ছিলেন, তিনি নামায শেষে আবু বকর [রাঃআঃ] -কে বললেনঃ আপনি স্বীয় স্থানে অবস্থান করিলেন না কেন? আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ এটা কিরূপে সম্ভব যে, আল্লাহ তাআলা আবু কুহাফার পুত্রকে স্বীয় নাবীর সামনে দেখবেন। এরপর তিনি জনসাধারণের দিকে মুখ করে বললেনঃ তোমাদের অবস্থা কী? তোমরা যখন নামাযে কোন ঘটনা ঘটে, তখন তোমরা নারীদের ন্যায় কেন হাতে তালি দাও? এতো নারীদের জন্য। যখন নামাযে কারো কোন ঘটনা ঘটে, তখন ষে যেন বলে – সুবহানআল্লাহ।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫.পরিচ্ছেদঃ হাকীমের বাদী-বিবাদীর মধ্যে আপোষের ইঙ্গিত করা
৫৪১৪. কাব ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আব্দুল্লাহ্ ইবনি হাদ্রাদ আসলামী [রাঃআঃ]-এর নিকট কিছু পেতেন। একদা তিনি রাস্তায় আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] -কে দেখে তার সাথে কথা কাটাকাটি হইতে হইতে তাহাদের শব্দ উচ্চ হইয়া যায়। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে কাব এবং তিনি হাতে ইঙ্গিত করিলেন, যেন তিনি বললেনঃ অর্ধেক। তখন করযের অর্ধেক গ্রহণ করিলেন, আর বাকী অর্ধেক ছেড়ে দিলেন।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬.পরিচ্ছেদঃ বিচারক কর্তৃক বিবাদীকে ক্ষমা করার ইঙ্গিত করা
৫৪১৫. ওয়ায়ল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হত্যাকারীকে রশিতে বেঁধে টেনে নিয়ে আসলো। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসকে বললেনঃ তুমি কি তাকে ক্ষমা করিবে? ষে বললোঃ না। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি রক্তপণ গ্রহণ কর। ষে বললোঃ না। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি খুনের বদলায় তাকে খুন করিবে? ষে বললোঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি তাকে নিয়ে যাও। যখন সে তাকে নিয়ে চললো এবং তাহাঁর নিকট হইতে পৃষ্ট প্রদর্শন করলো, তখন তিনি তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি তাকে ক্ষমা করিবে ? সে বললোঃ না। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি কি দিয়াত গ্রহণ করিবে? সে বললোঃ না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি তাকে হত্যা করিবে? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তুমি তাকে নিয়ে যাও। যখন সে তাকে নিয়ে চলল এবং তাহাঁর নিকট হইতে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলো, তখন আবার তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি ক্ষমা করিবে? সে বললোঃ না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি তার বিনিময়ে দিয়াত গ্রহণ করিবে? সে বললোঃ না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি তাকে হত্যা করিবে? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তাকে নিয়ে যাও। এরপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদি তুমি তাকে ক্ষমা করিতে, তবে সে তার এবং তোমার নিহত সাথীর পাপের বোঝা বহন করতো। তখন ঐ ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে এবং তাকে ছেড়ে দেয়। আমি দেখলাম, ঐ ব্যক্তি তার রশি টেনে চলছে।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭.পরিচ্ছেদঃ হাকিমের শিথিলতার ইঙ্গিত করা
৫৪১৬. আব্দুল্লাহ্ ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক আনসারী ব্যক্তি হাররা নামক স্থানের পানি প্রবাহ নিয়ে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর দরবারে মোকাদ্দমা দায়ের করলো যে, পানি তারা খেজুর গাছে সিঞ্চন করতো। আনসারী বললোঃ পানি ছেড়ে দিন, তা বয়ে যাবে কিন্তু যুবায়র [রাঃআঃ] তা অস্বীকার করিলেন। তারা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর দরবারে এসে ঝগড়া করলে, রাসূলুল্লহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে যুবায়র! তুমি পানি দিয়ে পানি ছেড়ে দাও, তোমার পড়শীর জন্য। এতে আনসারী ব্যক্তি রাগান্বিত হইয়া বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! বাস্তব পক্ষে যুবায়র তো আপনার ফুফীর ছেলে তাই। এতে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর চেহারা পরিবর্তন হইয়া গেল। তখন তিনি বললেনঃ হে যুবায়র! তুমি গাছে পানি দিয়ে তা বন্ধ করে রাখ যেন তা বাগানের দেয়াল পর্যন্ত পৌঁছে। যুবায়র [রাঃআঃ] বলেনঃ আমার মনে হয় আয়াতটি এ ব্যাপারেই নাযিল হয়।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসার পূর্বে হাকিম সুপারিশ করিতে পারে
৫৪১৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাবীয়া [রাঃআঃ]-এর স্বামী ছিলেন একজন দাস, তাহাঁর নাম ছিল মুগীস। তিনি বলেন, আমি যেন এখনও দেখছি, তিনি রাবীবার পিছে পিছে ঘুরছেন এবং এমনভাবে কাঁদছেন যে, তাহাঁর অশ্রু তাহাঁর দাড়ি বেয়ে পড়ছে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বললেনঃ হে আব্বাস! আপনি বারীবার জন্য মুগীসের ভালবাসায় আর মুগীসের প্রতি বারীবার অনীহাতে আশ্চর্যবোধ করছেন না? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বারীরা-কে বললেনঃ যদি তুমি মুগীসের নিকট প্রত্যাবর্তন করিতে তা হলে ভাল হতো। কারণ সে তোমার সন্তানের পিতা। সে বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি কি আমাকে আদেশ করছেন? তিনি বললেনঃ না, আমি তো তোমার নিকট সুপারিশ করছি। তখন সে বললোঃ তা হলে এতে আমার কোন প্রয়োজন নেই।
নাসায়ী শরীফ pdf বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯.পরিচ্ছেদঃ হাকিমের প্রজাবৃন্দকে তাহাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ নষ্ট করিতে বাধা দেয়া
৫৪১৮. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক আনসারী তার মৃত্যুর পর তার দাসকে মুক্ত করে দিয়েছিল। সে ব্যক্তি ছিল অভাবগ্রস্ত এবং ঋণগ্রস্ত। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ঐ দাসকে আটশত দিরহামে বিক্রি করে ঐ টাকা তাকে দিয়ে বললেনঃ তুমি এর দ্বারা তোমার ঋণ পরিশোধ কর এবং তোমার পোষ্যদের জন্য ব্যয় কর।
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩০.পরিচ্ছেদঃ সম্পদ অল্প হউক বা অধিক, তাতে ফয়সালা দেয়া
৫৪১৯. আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শপথের মাধ্যমে কোন মুসলমান ব্যক্তির সম্পদ আত্নসাৎ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য দোজখ অবধারিত করে দেন এবং তার জন্য বেহেশ্ত হারাম করে দেন। তখন এক ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি ঐ মাল অতি নগণ্য হয়? তিনি বললেনঃ যদিও তা পিলু গাছের একটি ডালই হোক না কেন।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১.পরিচ্ছেদঃ অনুপস্থিতিতে তার ব্যাপারে মীমাংসা করা
৫৪২০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একদা হিন্দা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। সে না আমার খরচ দেয়, না আমার সন্তানদের। আমি কি তাহাঁর মাল হইতে তাহাঁর অনুমতি ব্যতীত নিতে পারি? তিনি বললেনঃ তুমি তোমার এবং তোমার সন্তানদের প্রয়োজন অনুযায়ী সঙ্গতভাবে নিতে পার।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২.পরিচ্ছেদঃ এক আদেশে দুটি মীমাংসা করা নিষেধ
৫৪২১. আবু বাক্রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ কেউ যেন দুই মোকাদ্দমার মীমাংসা, এক ফয়সালায় না করে। আর কোন ব্যক্তি যেন রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা না করে।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩.পরিচ্ছেদঃ মীমাংসায় যা পাওয়া যায়
৫৪২২. ্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আমার নিকট বিবাদ নিয়ে এসো মীমাংসার জন্য, আমিও তো একজন মানুষ। তোমাদের মধ্যে হয়তো কেউ বর্ণনাভঙ্গিতে অন্য হইতে পটু। আমি যা শুনি, তার পরিপ্রেক্ষিতেই তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করি। যদি আমি কাউকে তার ভাই-এর কোন অধিকার অন্যায়ভাবে দিয়ে দেই; তবে আমি যেন তাকে আগুনের এক অংশ দেই।
বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪.পরিচ্ছেদঃ অন্যায়ভাবে অত্যাধিক ঝগড়াটে ব্যক্তি
৫৪২৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার নিকট অত্যাধিক ঘৃণিত ব্যক্তি সেই, যে অন্যায়ভাবে ঝগড়া করে থাকে।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫.পরিচ্ছেদঃ প্রমাণহীন মোকদ্দমার মীমাংসা
৫৪২৪. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
দুই ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে একটি জন্তুর ব্যাপারে মোকদ্দমা পেশ করলো, কিন্তু তাহাদের কারো কোন প্রমাণ ছিল না। তিনি তাহাদের মধ্যে তার ব্যাপারে প্রত্যেকের জন্য অর্ধাংশের মীমাংসা দিলেন।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৩৬.পরিচ্ছেদঃ শপথ গ্রহণে হাকিমের নসীহত
৫৪২৫. ইবনি আবু মুলায়কা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তায়েফে দুটি বালিকা জুতা সেলাই করতো। তাহাদের একজন এমন অবস্থায় বের হলো যে, তার হাত হইতে রক্ত পড়ছিল। সে বললোঃ আমার বান্ধবী আমাকে প্রহার করেছে। কিন্তু অন্য বালিকা তা অস্বীকার করলো। আমি এ ব্যাপারে ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -কে লিখলাম। তিনি উত্তরে লিখলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এরূপ মীমাংসা করিয়াছেন যে, বিবাদী শপথ করিবে। কেননা, যদি সকলেই তাহাদের দাবী অনুযায়ী পেয়ে যেত, তাহলে লোক অন্যান্য লোকের সম্পদ ও জন্তুর দাবী করে বসতো। এ ব্যাপারে তার নিকট এ আয়াত তিলাওয়াত করুনঃ অর্থাৎ “যারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা এবং শপথের বিনিময়ে ক্ষুদ্র পার্থিব সম্পদ গ্রহণ করে, আখিরাতে তাহাদের কোন অংশই থাকিবে না”[৩ঃ৭৭] তিনি পূর্ণ আয়াত শেষ করিলেন। তখন আমি ঐ বালিকাকে ডেকে তার নিকট এই আয়াত তিলাওয়াত করলে, সে তার অপরাধ স্বীকার করলো। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট এই সংবাদ পৌঁছলে তিনি সন্তুষ্ট হন।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭.পরিচ্ছেদঃ হাকিম কিরূপে শপথ নিবেন?
৫৪২৬. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুআবিয়া [রাঃআঃ] বলেছেন, একদা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বের হইয়া তাহাঁর সাহাবীদের এক মজলিসে পৌঁছলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাদের এখানে কিসে বসিয়েছে? তারা বললেনঃ আমরা আল্লাহর স্মরণে এবং তিনি যে আমাদেরকে হিদায়াত দান করিয়াছেন, এবং আপনাকে প্রেরণ করে আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর যে ইহসান করিয়াছেন তার শোকর আদায় করার জন্য বসেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সত্যই কি তোমরা এজন্য এখানে বসছো? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমরা এজন্যই এখানে সমবেত হইয়াছি। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করে তোমাদের থেকে শপথ নেইনি বরং এজন্য যে, জিব্রাঈল [আঃ] এসে আমাকে সংবাদ দিলেন যে, আল্লাহ তাআলা তোমাদের ব্যাপারে ফিরিশতাহাদের উপর গৌরব করিয়াছেন।
নাসায়ী শরীফ pdf – বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৪২৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঈসা ইবনি মারয়াম [আঃ] এক ব্যক্তিকে চুরি করিতে দেখে তাকে বললেনঃ তুমি চুরি করেছো? তখন সে বললোঃ আল্লাহ তাআলার শপথ করে বলছিঃ আমি চুরি করিনি, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। ঈসা [আঃ] বললেনঃ আমি আল্লাহর উপর ঈমান রাখি এবং আমার চক্ষুকে মিথ্যাবাদী মনে করি।
নাসায়ী শরীফ pdf -বিচারকের নীতিমালা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply