নাসাঈ শরীফ -পর্ব গোসল ও তায়াম্মুম
নাসাঈ শরীফ -পর্ব গোসল ও তায়াম্মুম এর বর্ণনা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, গোসল ও তায়াম্মুম, হাদিস (৩৯৬ – ৪৪৭)
১.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে জুনুব ব্যক্তির গোসলের নিষেধাজ্ঞা
২.পরিচ্ছেদঃ হাম্মামে প্রবেশের অনুমতি
৩.পরিচ্ছেদঃ বরফ এবং মেঘের পানিতে গোসল করা
৪.পরিচ্ছেদঃ ঠাণ্ডা পানি দ্বারা গোসল করা
৫.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার পূর্বে গোসল করা
৬.পরিচ্ছেদঃ রাতের প্রথম ভাগে গোসল করা
৭.পরিচ্ছেদঃ গোসল করার সময় আড়াল করা
৮.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পানির কোন পরিমাণ নির্ধারিত না থাকা
৯.পরিচ্ছেদঃ স্বামী-স্ত্রীর একই পাত্র থেকে গোসল করা প্রসঙ্গ
১০.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে অনুমতি
১১.পরিচ্ছেদঃ এমন পাত্রে গোসল করা যাতে আটার চিহ্ন বিদ্যমান
১২.পরিচ্ছেদঃ গোসলের সময় মহিলাদের মাথার চুলের বাঁধন না খোলা
১৩.পরিচ্ছেদঃ সুগন্ধি ব্যাবহার করে গোসল করলে এবং সুগন্ধির চিহ্ন অবশিষ্ট থাকলে
১৪.পরিচ্ছেদঃ গায়ে পানি ঢালার পূর্বে শরীর থেকে জুনুব ব্যাক্তির নাপাকি দূর করা
১৫.পরিচ্ছেদঃ গুপ্ত অঙ্গ ধৌত করার পর হাত মাটিতে মুছে ফেলা
১৬.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসল উযু দ্বারা আরম্ভ করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের কাজ ডান দিক থেকে আরম্ভ করা
১৮.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের উযুতে মাথা মসেহ না করা
১৯.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসলে সর্বশরীরে পানি পৌঁছানো
২০.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যাক্তির পক্ষে কতটুকু পানি মাথায় ঢালা যথেষ্ট
২১.পরিচ্ছেদঃ হায়েযের গোসলে করনীয়
২২.পরিচ্ছেদঃ গোসলে সারা শরীর একবার ধোয়া
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রামের সময় নিফাসওয়ালী মহিলার গোসল করা
২৪.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর উযু না করা
২৫.পরিচ্ছেদঃ এক গোসলে সকল স্ত্রীর নিকট গমন
২৬.পরিচ্ছেদঃ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যাক্তি নামাজের পর পানি প্রাপ্ত হয় তার তায়াম্মুম
২৮.পরিচ্ছেদঃ মযী নির্গত হলে উযু করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার কারণে উযূর নির্দেশ
৩০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করার দরুন উযু
১.পরিচ্ছেদঃ বদ্ধ পানিতে জুনুব ব্যক্তির গোসলের নিষেধাজ্ঞা
৩৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন বদ্ধ পানিতে জানাবত অবস্থায় গোসল না করে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে, যাতে সে পরে গোসল অথবা উযূ করিবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন বদ্ধ পানিতে পেশাব করিতে এবং তাতে জানাবতের গোসল করিতে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন বদ্ধ পানিতে পেশাব করিতে, তারপর তাতে গোসল করিতে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন প্রবাহিত হয় না এরূপ বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে, যাতে সে পরে গোসল করিবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ হাম্মামে প্রবেশের অনুমতি
৪০১. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্তে এবং কিয়ামত দিবসে বিশ্বাস করে, সে যেন ইযার পরিধান ব্যতীত হাম্মামে প্রবেশ না করে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ বরফ এবং মেঘের পানিতে গোসল করা
৪০২. মাজযাআ ইবনি যাহির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাঃআঃ] -কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হাদিস বর্ণনা করিতে শুনেছেন, তিনি দুআ করিতেন নিম্নরূপঃ
اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْهَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ. اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ
আল্ল-হুম্মা ত্বহহিরনী মিনায যুনূবি ওয়াল খত্বা-ইয়া- আল্ল-হুম্মা নাক্কিনী মিনহা- কামা- ইউনাক্কস্ সাওবুল আবইয়াযু মিনাদ দানাস আল্ল-হুম্মা ত্বহহিরনী বিস সালজি ওয়াল বারাদি ওয়াল মা-য়িল বা-রিদ
“হে আল্লাহ্! আমাকে পাপ এবং ভুল-ত্রুটি হইতে পবিত্র করুন, হে আল্লাহ্! আমাকে তা থেকে পাক-পবিত্র করূন যেরূপ সাদা বস্ত্র ময়লা থেকে পবিত্র করা হয়। হে আল্লাহ্! আমাকে বরফ, মেঘমালার পানি এবং ঠাণ্ডা পানি দ্বারা পবিত্র করুন।”
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪.পরিচ্ছেদঃ ঠাণ্ডা পানি দ্বারা গোসল করা
৪০৩. ইবনি আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ. اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ كَمَا يُطَهَّرُ الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ
আল্ল-হুম্মা ত্বহহিরনী বিস্ সালজি ওয়াল বারাদি ওয়াল মা-য়িল বা-রিদি আল্লহুম্মা ত্বহহিরনী মিনায যুনূবি কামা- ইউত্বহহারুস্ সাওবুল আবইয়াযু মিনাদ দানাস
“হে আল্লাহ্! আমাকে বরফ, মেঘের পানি এবং ঠাণ্ডা পানি দ্বারা পবিত্র করুন। হে আল্লাহ! আমাকে পাপ থেকে এরূপ পবিত্র করুন যেরূপ সাদা কাপড় ময়লা থেকে পবিত্র করা হয়।”
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার পূর্বে গোসল করা
৪০৪. আবদুল্লাহ্ ইবনি আবু কায়স [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করলাম, জানাবত অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিদ্রা কিরূপ ছিল? তিনি কি নিদ্রার পূর্বে গোসল করিতেন অথবা গোসল করার পূর্বে নিদ্রা যেতেন? তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সবটাই করিতেন, অনেক সময় তিনি গোসল করে নিদ্রা যেতেন আবার কোন কোন সময় উযূ করে নিদ্রা যেতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ রাতের প্রথম ভাগে গোসল করা
৪০৫. গুযায়ফ ইবনি হারিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলামঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি রাতের প্রথমভাগে গোসল করিতেন? না শেষরাতে গোসল করিতেন? তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সবটাই করিতেন। অনেক সময় তিনি রাতের প্রথমভাগে গোসল করিতেন। আবার কখনও শেষরাতে গোসল করিতেন। আমি বললাম, আল্লাহ্র জন্যই সকল প্রশংসা, যিনি প্রত্যেক ব্যাপারে অবকাশ রেখেছেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭.পরিচ্ছেদঃ গোসল করার সময় আড়াল করা
৪০৬. ইয়ালা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দেখলেন, এক ব্যক্তি খোলা জায়গায় {১} গোসল করছে। তিনি মিম্বরে আরোহণ করিলেন, আল্লাহ্ তাআলার প্রশংসা ও তাহাঁর গুণগান করিলেন। তারপর বলিলেন, আল্লাহ্ তাআলা ধৈর্যশীল, লজ্জাশীল, [মানুষের পাপ] আড়ালকারী। তিনি লজ্জাশীলতাকে এবং পর্দা করাকে পছন্দ করেন। অতএব তোমাদের কেউ যখন গোসল করিবে, সে যেন পর্দা করে।
{১} পর্দা ব্যতীত।নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭. ইয়ালা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা [মানুষের দোষ] আড়ালকারী। কেউ যখন গোসল করে, তখন সে যেন কোন কিছু দ্বারা পর্দা করে নেয়।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০৮. মায়মূনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর জন্য [গোসলের] পানি রাখলাম, তিনি বলেনঃ আমি তাঁকে আড়াল করলাম। তিনি [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর] গোসলের অবস্থা বর্ণনা করার পর বললেনঃ আমি তাহাঁর জন্য একটি বস্ত্র আনলাম [গোসলের পানি মুছে ফেলার জন্য], তিনি তা গ্রহণ করিলেন না।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক সময় হযরত আইয়্যূব আলাইহিস সালাম উলঙ্গ অবস্থায় গোসল করছিলেন, এমতাবস্থায় তাহাঁর উপর একটি স্বর্ণের পতঙ্গ পতিত হল, তিনি তা তাহাঁর কাপড়ে ভরতে লাগলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তখন তাহাঁর প্রভু তাঁকে ডেকে বলিলেন, হে আইয়ূব! আমি কি তোমাকে ধনবান করিনি? তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ্! হ্যাঁ, আপনি আমাকে ধনবান করিয়াছেন। কিন্তু আমি আপনার বরকত থেকে আমার বেনিয়াযী নেই।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পানির কোন পরিমাণ নির্ধারিত না থাকা
৪১০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফরক{২} নামক পাত্রে গোসল করিতেন। আর আমি এবং তিনি একই পাত্র থেকে গোসল করতাম।
{২} এ একটি পাত্র বিশেষ।নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ স্বামী-স্ত্রীর একই পাত্র থেকে গোসল করা প্রসঙ্গ
৪১১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং আমি একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমরা উভয়ে তা থেকে একত্রে পানি নিতাম।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪১২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে জানাবতের গোসল করতাম।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪১৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে পাত্রে গোসল করতাম এবং সে পাত্র নিয়ে তাহাঁর সঙ্গে যে কাড়াকাড়ি করতাম, তা আমার এখনো স্মরণ আছে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে অনুমতি
৪১৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমি তাহাঁর আগে পানি নিতে চেষ্টা করতাম আর তিনি আমার আগে নিতে চাইতেন। এমনকি তিনি বলিতেনঃ আমার জন্য রাখ, আর আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন।
সুওয়ায়দ-এর রিওয়ায়াতে রয়েছে, তিনি আমার আগে নিতে চাইতেন আর আমি তাহাঁর আগে নিতে চাইতাম আর বলতামঃ আমার জন্য রাখুন। আমার জন্য রাখুন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১.পরিচ্ছেদঃ এমন পাত্রে গোসল করা যাতে আটার চিহ্ন বিদ্যমান
৪১৫. আতা [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ উম্মেহানী [রাঃআঃ] আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি মক্কা বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তিনি গোসল করছিলেন। তাহাঁর জন্য বস্ত্র দ্বারা পর্দার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি এমন পাত্রে গোসল করছিলেন যাতে আটার চিহ্ন বিদ্যমান ছিল। তিনি বলেনঃ তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চাশ্তের নামাজ আদায় করিলেন। আমার স্মরণ নাই তিনি গোসলের পর কত রাকাআত নামাজ আদায় করেছিলেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১২.পরিচ্ছেদঃ গোসলের সময় মহিলাদের মাথার চুলের বাঁধন না খোলা
৪১৬. উবায়দ ইবনি উমায়র [রহঃ] হইতে বর্ণীত
আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার স্মরণ আছে, আমি এই পাত্র হইতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে একত্রে গোসল করতাম। দেখা গেল, তিনি যে পাত্রের প্রতি ইংগিত করিলেন তা এমন একটি পাত্র যাতে এক সা বা আরও কম পানি ধরে। তিনি বলেনঃ আমরা উভয়ে তা থেকে গোসল করিতে আরম্ভ করতাম, আমি হাত দ্বারা মাথায় তিনবার পানি দিতাম এবং মাথার চুল খুলতাম না।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩.পরিচ্ছেদঃ সুগন্ধি ব্যাবহার করে গোসল করলে এবং সুগন্ধির চিহ্ন অবশিষ্ট থাকলে
৪১৭. মুহাম্মাদ ইবনি মুনতাশির [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেছেনঃ আমি ইবনি উমর [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি যে, মুহরিম অবস্তায় সুগন্ধি ছড়িয়ে সকালে বের হওয়ার চেয়ে আমার নিকট আলকাতরা মেখে বের হওয়া অধিক পছন্ধনীয়। আমি আয়শা [রাঃআঃ] এর নিকট উপস্তিত হয়ে তার এই উক্তি সুনালে তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর গায়ে সুগন্ধি মেখে ছিলাম। তারপর তিনি তার সকল বিবির কাছে গমন করিলেন এবং ইহরাম অবস্থায় ভোর করিলেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪.পরিচ্ছেদঃ গায়ে পানি ঢালার পূর্বে শরীর থেকে জুনুব ব্যাক্তির নাপাকি দূর করা
৪১৮. মায়মুনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিলেন কিন্তু পা দুখানা ধুলেন না; বরং গুপ্তঅঙ্গে এবং গায়ে যে নাপাকি লেগেছিল তা ধুলেন। পড়ে তার শরীরে পানি ঢাললেন। তারপর একটু সরে গেলেন এবং উভয় পা ধৌত করিলেন। মায়মুনা [রাঃআঃ] বলেনঃ এইরূপই ছিল তার জানাবাতের গোসল।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫.পরিচ্ছেদঃ গুপ্ত অঙ্গ ধৌত করার পর হাত মাটিতে মুছে ফেলা
৪১৯. মায়মুনা বিনতে হারিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন গোসল করিতেন তখন তিনি প্রথমে উভয় হাত ধৌত করিতেন। তৎপর তিনি তাহাঁর ডান হাত দ্বারা বাম হাতে পানি ঢেলে গুপ্তঅঙ্গ ধুতেন পরে মাটিতে হাত মেরে ঘষতেন। তারপর তা ধুয়ে ফেলতেন। তারপর নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিতেন এবং তাহাঁর মাথায় পানি ঢালতেন। পরে সমস্ত শরীরে পানি ঢালতেন। তারপর গোসলের স্থান থেকে সরে উভয় পা ধুতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসল উযু দ্বারা আরম্ভ করা
৪২০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন, তখন প্রথমে হস্তদয় ধুয়ে নিতেন, তারপর নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিতেন এবং পরে গোসল করিতেন। হাত দ্বারা মাথার চুল খেলাল করিতেন। যখন তিনি মনে করিতেন মাথার চামড়া ভিজে গেছে, তখন সারা শরীরে তিনবার পানি ঢালতেন এবং সারা শরীর ধুয়ে নিতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭.পরিচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের কাজ ডান দিক থেকে আরম্ভ করা
৪২১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পবিত্রতা অর্জনে, জুতা পরিধানে ও মাথায় চিরুনি করিতে যথাসম্ভব ডান দিক থেকে আরম্ভ করা পছন্ধ করিতেন। তিনি {মাসরূক [রহঃ]} ওয়াসিত নামক স্থানে বলেছেনঃ তাহাঁর সকল কাজ যথাসম্ভব ডান দিক থেকে আরম্ভ করা পছন্ধ করিতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের উযুতে মাথা মসেহ না করা
৪২২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
উমর[রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জানাবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন। আয়শা [রাঃআঃ] ও ইবনি উমর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত, বিভিন্ন হাদিসে এইরুপ বর্ণনা এসেছে যে, তিনি গোসল আরম্ভ করিতে গিয়ে দুবার অথবা তিনবার তাহাঁর ডান হাতে পানি ঢালতেন। তারপর ডান হাত পাত্রে ঢোকাতেন এবং তার লজ্জাস্থানের উপর ডান হাতে পানি ঢালতেন। তখন তাহাঁর বাম হাত থাকত তাহাঁর লজ্জাস্থানের উপর, তিনি সেখানে যে ময়লা থাকত তা ধুয়ে পরিস্কার করিতেন এবং যখন ইচ্ছা করিতেন বাম হাত মাটিতে স্থাপন করিতেন। তারপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে তা পরিস্কার করিতেন। পরে উভয় হাত তিনবার করে ধুয়ে নিতেন, নাক পরিস্কার করিতেন আর কুলি করিতেন এবং তাহাঁর মুখমণ্ডল আর উভয় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিতেন। যখন মাথা মাসেহ করার সময় আসত তকন তিনি মাথা মাসেহ করিতেন না; বরং তাতে পানি ঢালতেন। উপরে যেরূপ বর্ণিত হয়েছে, তদ্রূপই ছিল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর গোসল।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯.পরিচ্ছেদঃ জানাবাতের গোসলে সর্বশরীরে পানি পৌঁছানো
৪২৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন, তখন তিনি প্রথমে উভয় হাত ধুয়ে নিতেন পরে তিনি নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিতেন। তারপর আঙ্গুলি দ্বারা মাথার চুল খেলাল করিতেন এবং যখন তিনি মনে করিতেন যে, মাথার সকল স্থান ভিজে গেছে, তখন তিনি মাথায় তিন অঞ্জলি পানি দিতেন। তারপর তিনি সর্বশরীর ধৌত করিতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪২৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন তখন তিনি দুধ দোহনের পাত্রের মত কোন পাত্র আনতেন এবং তা থেকে এক অঞ্জলি পানি নিয়ে মাথার ডান পার্শ্ব থেকে আরম্ভ করিতেন পরে বাম পার্শ্বে পানি ঢালতেন। তারপর দুহাত দ্বারা পানি নিতেন এবং তা দ্বারা মাথায় পানি ঢালতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যাক্তির পক্ষে কতটুকু পানি মাথায় ঢালা যথেষ্ট
৪২৫. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট গোসলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি আমার মাথায় তিনবার পানি ঢালি।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪২৬. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন গোসল করিতেন , তখন তিনি তাহাঁর মাথায় তিনবার পানি ঢালতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১.পরিচ্ছেদঃ হায়েযের গোসলে করনীয়
৪২৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করিল ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি পবিত্রতা অর্জনের জন্য কিভাবে গোসল করব? তিনি বললেনঃ এক খানা মিশ্ক মিশ্রিত কাপড় ব্যাবহার করিবে, তারপর তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। ঐ মহিলা বলিল, তা দ্বারা কিরুপে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বললেনঃ তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। ঐ মহিলা আবার বলিল, তা দ্বারা কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? হযরত আয়শা [রাঃআঃ] বললেনঃ এতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সুবহানাল্লাহ্ বলিলেন এবং ঐ মহিলার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তখন আয়শা[রাঃআঃ] তা বুঝতে পারলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর উদ্দেশ্য কি ছিল। তিনি বলেনঃ পরে আমি তাকে আমার দিকে টেনে নিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর উদ্দেশ্য তাকে বুজিয়ে বললাম।{১}
{১} কাপড়ের দ্বারা পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্য হচ্ছে হায়েয থেকে পবিত্র হল কিনা যা জ্ঞাত হওয়া।নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২২.পরিচ্ছেদঃ গোসলে সারা শরীর একবার ধোয়া
৪২৮. মায়মুনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জানাবাতের গোসলে তাহাঁর গুপ্তঅঙ্গ ধৌত করিলেন এবং হাত মাটিতে ঘষলেন অথবা বলেছেন, দেয়ালে ঘষলেন। তারপর তিনি নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিলেন। পরে তাহাঁর মাথায় এবং সমস্ত শরীরে পানি ঢাললেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রামের সময় নিফাসওয়ালী মহিলার গোসল করা
৪২৯. মুহাম্মাদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেছেনঃ আমারা যাবির ইবনি আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে বিদায় হজ্জ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বর্ণনা করলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যিলকাদা মাসের পাঁচ দিন অবশিষ্ট থাকতে বের হলেন। আমরাও তাহাঁর সঙ্গে বের হলাম। এর পর তিনি যুল-হুলাইফায় গমন করলে আস্মা বিনতে উমায়স [রাঃআঃ] মুহাম্মাদ ইবনি আবু বকর কে প্রসব করিলেন। পরে তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন এখন আমি কি করব? তিনি বললেনঃ তুমি গোসল করিবে এবং ন্যাকড়া পরিধান করিবে, তারপরে ইহ্রাম বাঁধবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪.পরিচ্ছেদঃ গোসলের পর উযু না করা
৪৩০. আয়শা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসলের পর উযু করিতেন না।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৫.পরিচ্ছেদঃ এক গোসলে সকল স্ত্রীর নিকট গমন
৪৩১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দেহে সুগন্ধি লাগাতাম। তারপর তিনি তার সকল বিবির নিকট গমন করিতেন এবং ভোরে মুহরিম অবস্থায় সুবাস ছড়াতে ছড়াতে বের হইতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৬.পরিচ্ছেদঃ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা
৪৩২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে এমন পাঁচটি বস্তু দান করা হয়েছে যা আমার পূর্বে অন্য কাউকে দেয়া হয় নি। আমাকে এক মাস পথ চলার দূরত্ব থেকে শত্রুর মাঝে ভীতি সঞ্চার করার ক্ষমতা প্রদান করে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অবলম্বনের উপকরন করা হয়েছে। অতএব আমার উম্মতের কোন ব্যাক্তির সামনে যেখানেই নামাজের সময় উপস্তিত হয়। সে সেখানে নামাজ আদায় করিতে পারে। আর আমাকে শাফাআত দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে অন্য কোন নাবীকে দেয়া হয় নি, আর আমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য প্রেরন করা হয়েছে। আমার পূর্বের প্রত্যেক নাবী কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হইতেন।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যাক্তি নামাজের পর পানি প্রাপ্ত হয় তার তায়াম্মুম
৪৩৩. আবু সাইদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
দুই ব্যক্তি তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করিল। পরবর্তীতে নামাজের সময় থাকতেই তারা পানি প্রাপ্ত হল। তাহাদের একজন উযু করে তার নামাজ ওয়াক্তের মধ্যেই আদায় করিল। দ্বিতীয় ব্যাক্তি পুনরায় আদায় করিল না। তারা উভয়েই এই ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করিল। যে লোকটি পুনরায় আদায় করে নি, তিনি তাকে বললেনঃ তুমি বিধান মত কাজ করেছ। তোমার নামাজ তোমার জন্য যথেষ্ট হয়েছে। অন্য ব্যক্তিকে বললেনঃ তোমার জন্য উভয় কাজের সওয়াব আছে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৩৪. আতা ইবনি ইয়াসার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আতা ইবনি ইয়াসার [রাঃআঃ] থেকেও অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২৮.পরিচ্ছেদঃ মযী নির্গত হলে উযু করা
৪৩৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আলী, মিকদাদ এবং আম্মার [রাঃআঃ] আলাপ করছিলেন। আলী [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি এমন একজন ব্যাক্তি যার অত্যধিক মযী নির্গত হয়, কিন্তু এই ব্যাপারে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করি। যেহেতু তাহাঁর কন্যা আমার সহধর্মিণী। অতএব তোমাদের একজন তাকে জিজ্ঞাসা কর, তাঁদের একজন জিজ্ঞাসা করিলেন। কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তা ভুলে গিয়েছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তা মযি। যখন কার তা নির্গত হয়, তখন সে তার ঐ স্থান ধুয়ে ফেলবে এবং নামাজের উযুর ন্যায় উযু করিবে, অথবা তিনি বলেছেনঃ নামাজের উযূর ন্যায়।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৩৬. আলি[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি এমন এক ব্যাক্তি যার প্রায়ই মযী নির্গত হত। আমি এক ব্যাক্তিকে অনুরোধ করলে সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞাসা করিল। তিনি বল্লেনঃ এতে উযু করিতে হইবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৪৩৭. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ ফাতিমা [রাঃআঃ] এর কারনে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে মযী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করতাম। অতএব আমি মিকদাদ [রাঃআঃ] -কে অনুরোধ করলে তিনি তাকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করিলেন, তিনি বললেনঃ এতে উযু করিতে হইবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৩৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বললেনঃ আলী [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি মিকদাদ [রাঃআঃ] কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট মযী সম্পর্কে প্রশ্ন করার জন্য পাঠালাম। তিনি বলিলেন সে উযু করিবে এবং লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৩৯. সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] মিকদাদ [রাঃআঃ] কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট পাঠালেন যেন তিনি তাঁকে এমন এক ব্যাক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন, যার মযী নির্গত হয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে তার পুরুষাঙ্গ ধৌত করিবে এবং উযু করিবে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৪৪০. আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি তাঁকে [ মিকদাদকে ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার অনুরোধ করেন যে ব্যাক্তি স্বীয় স্ত্রীর কাছে গেলে তার মযি নির্গত হয়। কেননা তাহাঁর কন্যা আমার বিবাহে থাকায় আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিতে লজ্জাবোধ করি। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ সে যেন তার লজ্জাস্থান ধৌত করে এবং নামাজের উযুর ন্যায় উযু করে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রার কারণে উযূর নির্দেশ
৪৪১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন রাতে বিছানা ত্যাগ করে, তখন যেন সে দুবার বা তিনবার হাত না ধুয়ে পানির পাত্রে হাত প্রবিষ্ট না করায়। কেননা, তোমাদের কারো জানা নেই যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৪২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে এক রাতে নামাজ আদায় করলাম। আমি তাহাঁর বাম দিকে দাঁড়ালাম কিন্তু তিনি আমাকে তাহাঁর ডানদিকে করে দিলেন। তারপর নামাজ আদায় করে তিনি শুয়ে পরলেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। পরে তাহাঁর কাছে মুয়ায্যিন আসলেন। তিনি উঠে নামাজ আদায় করিলেন কিন্তু তিনি উযু করিলেন না।{১}
{১} এটা তাহাঁর বৈশিষ্ট্য ছিল যে, নিদ্রার কারনে তাহাঁর উযু ভঙ্গ হত না।নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৪৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ নামাজে তন্দ্রাভিভুত হয়, তখন সে যেন নামাজ থেকে বিরত থাকে এবং শুয়ে পড়ে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করার দরুন উযু
৪৪৪. বুসরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যেঃ যে নিজের গুপ্ত অঙ্গ স্পর্শ করে, সে যেন উযু করে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৪৫. বুসরা বিনতে সাফয়ান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ নিজ লজ্জাস্থানে হাত রাখে তবে সে যেন উযু করে নেয়।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৪৬. মারওয়ান ইবনি হাকাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে উযূ করিতে হইবে। মারওয়ান [রাঃআঃ] বলেন, বুসরা বিনত সফওয়ান [রাঃআঃ] আমাকে এটা অবগত করিয়াছেন। একথা শুনে উরওয়া [রাঃআঃ] তার নিকট লোক পাঠালে তিনি বলিলেন রাসূলুল্লাহ [সা:] কি কি কাজে উযূ করিতে হইবে তা উল্লেখ করিতে গিয়ে বলেছেন, পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলেও।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৪৭. বুসরা বিনত সফওয়ান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সা:] বলেছেন; যে ব্যক্তি নিজ গুপ্তাঙ্গ স্পর্শ করে সে যেন উযূ করা ব্যতীত নামাজ আদায় না করে।
নাসাঈ শরীফ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply