রফাদাইন, আমিন, ফাতিহা ও নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন

নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন । নামাজ সম্পাদনের পদ্ধতি।

 নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন । নামাজ সম্পাদনের পদ্ধতি। >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় ৭ঃ নামাজ সম্পাদনের পদ্ধতি

পরিচ্ছেদ ৯১. নামাজে দু’হাত উত্তোলন ও হাত উত্তোলনের স্থানসমূহ
পরিচ্ছেদ ৯২. নামাজে দণ্ডায়মান অবস্থায় দু’হাত রাখার স্থান
পরিচ্ছেদ ৯৩. নামাজে সূরা-ফাতিহা পড়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ৯৪. নামাজে বিসমিল্লাহ্‌ জোরে বা প্রকাশ্যে পড়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ৯৫. বিসমিল্লাহ সূরা ফাতেহার আয়াতের অন্তর্ভুক্ত
পরিচ্ছেদ ৯৬. ইমামের আমীন উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করা শরীয়তসম্মত
পরিচ্ছেদ ৯৭. যে মুসল্লী কুরআন ভালভাবে পড়তে জানে না তার বিধান
পরিচ্ছেদ ৯৮. নামাজে কিরাত পাঠ করার পরিমাণ
পরিচ্ছেদ ৯৯. মাগবির নামাজের ক্বেরাত
পরিচ্ছেদ ১০১. নফল নামাজে রহমতের আয়াত পাঠ করার সময় [আল্লাহর নিকট] চাওয়া শরীয়তসম্মত

পরিচ্ছেদ ৯১. নামাজে দু’হাত উত্তোলন ও হাত উত্তোলনের স্থানসমূহ

২৭৫ – আবদুল্লাহ ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যখন নামাজ শুরু করিতেন, তখন উভয় হাত তার কাধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকূ’তে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলিতেন এবং যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন।” {৩১১}

{৩১১} বুখারী ৭৩৫, ৭৩৬, ৭৩৮, ৭৩৯, মুসলিম ৩৯০, তিরমিজি ২৫৫, নাসায়ী ৮৭৭, ৮৭৮, ১০২৫, ১১৪৪, আৰু দাউদ ৭২১, ৭২২, ইবনু মাজাহ ৮৫৮, আহমাদ ৪৫২৬, ৪৬৬০, মালেক ১৬৫, দারেমী ১৩০৮, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবু হুমাইদ থেকে আবু দাউদে আছে- নাবী [সাঃআঃ] তার উভয় কাঁধ বরাবর দু’ হাত ওঠাতেন তারপর আল্লাহু আকবার বলিতেন।” {৩১২}

{৩১২} বুখারী ৮২৮, তিরমিজি ২৬০, ২৭০, ৩০৪, নাসায়ী ১১৮১, ইবনু মাজাহ ৮৬২, ৮৬৩. আহমাদ ২৩০৮৮, দারেমী ১৩০৭, ১৩৫৬, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৭৭ – ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ হাদীসে আরো আছেঃ নাবী [সাঃআঃ] দু’ হাত দু’ কানের উপরিভাগ পর্যন্ত উঠাতেন। {৩১৩}

{৩১৩} মুসলিম ৩৯১, নাসায়ি হাদিস ৮৮১, ১০২৪, ১০৫৬, ১০৮৫, আবূ দাউদ ৭৪৫, ইবনু মাজাহ ৮৫৯, আহমাদ ২০০০৮, দারেমী ১২৫১, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯২. নামাজে দণ্ডায়মান অবস্থায় দু’হাত রাখার স্থান

২৭৮ – ওয়ায়িল বিন্‌ হুজ্‌র থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলাম, তিনি স্বীয় ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে তাহাঁর সিনার উপর {৩১৪} স্থাপন করিলেন। ইবনু খুযাইমাহ। {৩১৫}

{

[বুখারী ১০২ পৃষ্ঠা। সহিহ ইবনু খুযায়মাহ ২০ পৃষ্ঠা। মুসলিম ১৭৩ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১ম খণ্ড ১১০, ১২১, ১২৮ পৃষ্ঠা। তিরমিজি ৫৯ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪১ পৃষ্ঠা। ইবনু মাজাহ ৫৮, ৫৯ পৃষ্ঠা, মেশকাত ৭৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১৭৪ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৬০ পৃষ্ঠা। যাদুল মায়াদ ১২৯ পৃষ্ঠা। হিদায়া দিরায়াহ ১০১ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সাআদাত ১ম খণ্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদিস নং ৪৩৫। বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদিস নং ৬৯৬। বুখারী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদিস নং ৭০২; মুসলিম ইসলামিম ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদিস নং ৮৫১। আবূদাঊদ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদিস নং ৭৫৯, তিরমিজি ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদিস নং ২৫২, মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্‌রাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদিস নং ৭৪১, ৭৪২। বুলুগুল মারাম বাংলা ৮২ পৃষ্ঠা]

পরিচ্ছেদ ৯৩. নামাজে সূরা-ফাতিহা পড়ার বিধান

২৭৯ – উবাদাহ ইব্‌নু সমিত [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাজে সূরাহ্‌ আল-ফাতিহা পড়ল না তার নামাজ হলো না। দারাকুৎনী ও ইবনু হিব্বানের সংকলিত হাদীসে আছে- যে নামাজে সূরা ফাতিহা পঠিত হয় না সে নামাজ আদায় হয় না। [হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ]

২৭৯ নং হাদিসটি অনুবাদ বইয়ে ২ বার এসেছে। প্রথমটি উপরে দ্বিতীয়টি নিচে দেয়া হল –

২৭৯. আহমাদ, আবূ দাউদ, তিরমিজি ও ইবনু হিব্বানে আছে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন- তোমরা হয়তো ইমামের পিছনে [কুরআন] পড়। আমরা বললাম, হাঁ পড়ি, তিনি বলিলেন, সূরা ফাতিহা ব্যতীত তা করিবে না [পড়বে না]। কেননা, যে এটা পড়েনা তার নামাজ হয় না। [হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস]. {৩১৬} বুখারী ৭৫৬, মুসলিম ৩৯৪, তিরমিজি ২৪৭, নাসায়ি হাদিস ৯১০, ৯১১, আবূ দাউদ ৮২২, ইবনু মাজাহ ৮৩৭, আহমাদ ২২১৬৩, ২২১৮৬, ২২২৩৭ দারেমী ১২৪২, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯৪. নামাজে বিসমিল্লাহ্‌ জোরে বা প্রকাশ্যে পড়ার বিধান

২৮০ – আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ], আবূ বাক্‌র [রাঃআঃ] এবং`উমার [রাঃআঃ] [আরবী] দিয়ে নামাজ শুরু করিতেন। {৩১৭}

মুসলিমে [এ সম্বন্ধে] আরো আছে- কিরাআতের প্রথমেও`বিস্‌মিল্লাহির রহমানির রহীম’ [প্রকাশ্যে] বলিতেন না, শেষেও না। আহমাদ, নাসায়ি হাদিস ও ইবনু খুযাইমাহতে আছে-`তাঁরা বিস্‌মিল্লা-হির রহমা-নির রহীম’ সশব্দে পাঠ করিতেন না।’ ইবনু খুযাইমাহ এর অন্য বর্ণনায় আরো আছে, তাঁরা বিসমিল্লাহ চুপিসারে পড়তেন।

মুসলিমের বর্ণনা দ্বারা বিসমিল্লাহ উচ্চৈঃস্বরে না পড়ার প্রমাণ বহন করে, তবে যারা এ বর্ণনাকে দুর্বল বলেছেন তাদের বিরোধিতার কথা স্বতন্ত্র।

{৩১৭} বুখারী ৭৪৩, মুসলিম ৩৯৯, তিরমিজি ২৪৬, নাসায়ি হাদিস ৯০২, ৯০৩, ৯০৬, ৯০৭, আবূ দাউদ ৭৮২, ইবনু মাজাহ ৮১৩, আহমাদ ১১৫৮০, ১১৬৭৪, ১১৭২৫, ১২২৮৯, মালেক ১৬৪, দারেমী ১২৪০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৮১ – নু’আইম আলমুজ্‌মির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] -এর পিছনে নামাজ আদায় করেছি, তিনি`বিসমিল্লা-হি্‌র রহমা-নির রহীম’ পড়লেন তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করিলেন, তারপর`অলায্‌ যা-ল্লীন’ পর্যন্ত পড়ে`আমিন’ বলিলেন এবং প্রত্যেক সাজদাহ যাবার সময় ও সাজদাহ থেকে ওঠার সময়`আল্লাহ্‌ আকবার’ বলিতেন। তারপর তিনি সালাম ফিরাবার পর বলিতেন- ঐ সত্ত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি তোমাদের মধ্যে নামাজের দিক দিয়ে নাবী [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে সর্বাধিক সাদৃশ্য রক্ষাকারী। {৩১৮}

{৩১৮} নাসায়ি হাদিস ৯০৫, হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯৫. বিসমিল্লাহ সূরা ফাতেহার আয়াতের অন্তর্ভুক্ত

২৮২ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন- তোমরা সূরা ফাতিহা পাঠের সময়`বিস্‌মিল্লাহির রহমানির রহীম’ পাঠ করিবে। কেননা ওটা তারই একটা আয়াত। দারাকুৎনী হাদিসটির মওকুফ হওয়াকে সঠিক বলে মন্তব্য করিয়াছেন। {৩১৯}

{৩১৯} দারাকুতনী মারফু’ ও মাওকূফরূপে ২/৩১২, তোমরা যখন সূরা ফাতিহা পড়বে তখন তোমরা বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম পড়বে। কেননা, সেটি হচ্ছে উম্মুল কুরআন, উম্মুল কিতাব, সাবআ মাসানী। আর বিসমিল্লাহ তারই একটি। তিনি ইলাম গ্রন্থে মাওকূফ সূত্রে [৮/১৪৯] বলেনঃ এটি হকের অধিক সম্ভাবনা রাখে। nইবনু হাজার আসকালানী তাহাঁর আত-তালখীসুল হাবীর [১/৩৮১] গ্রন্থে বলেন, এ সনদের রাবীগণ বিশ্বস্ত। অনেক ইমাম এ হাদিসটিকে মারফূ’ হওয়ার চেয়ে মাওকূফ হওয়াটাকেই সহিহ বলেছেন। এর শাহেদ রয়েছে যা এটিকে শক্তিশালী করে। ইবনু উসাইমিন শারহু বুলুগুল মারামে [২/৭৬] উল্লেখ করেন এটা মাওকুফ আবূ হুরাইরা পর্যন্ত। নাবী [সাঃআঃ] থেকে সহিহভাবে প্রমানিত হয়নি। আলবানী সহীহুল জামে [৭২৯] গ্রন্থে, সহিহ সিলসিল সহীহা [১১৮৩] এর সনদকে মাওকুফ ও মারফু হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। ইতহাফুল মাহরা বিল ফারায়িদ আল মুবাক্কারা মিন আতরাফিল আশারা [১৪/৬৬৪] গ্রন্থে ইবনু হাজার বলেন এই হাদীসে আব্দুল হামীদ বিন জা’ফার সত্যবাদী, তবে তার ব্যাপারে সমালোচনা করা হয়েছে। সঠিক কথা হলো হাদিসটি মাওকুফ। ইবনুল মুলকিন খুলাসা আল বাদরুল মুনীর [১/১১৯] ও আল বাদরুল মুনীর [৩/৫৫৮] গ্রন্থে এর সনদে সহিহ বলেছেন। ইমাম যাহাবী তাহাঁর তাকীহুত তাহকীক [১/১৪৪] গ্রন্থে বলেন, যদি সহিহ হয় তাহলে তা মাওকূফ হিসেবেই সহিহ। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৯৬. ইমামের আমীন উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করা শরীয়তসম্মত

২৮৩ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যখন উম্মুল কুরআন বা সূরা ফাতিহা পাঠ সমাপ্ত করিতেন তখন তাহাঁর কন্ঠস্বর উঁচু করে`আমীন’ বলিতেন। দারাকুৎনী একে হাসান বলেছেন; হাকিম একে সহীহ্‌ বলেছেন। {৩২০}

{৩২০} দারাকুতনী [১/৩৩৫] হাকিম ১/২২৩, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৮৪ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

আবূ দাউদ ও তিরমিজিতে ওয়ায়িল বিন হুজর [রাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। {৩২১}

{৩২১} আবূ দাউদ ৯৩২, ৯৩৩, তিরমিজি সহিহ ২৪৮, নাসায়ি হাদিস ৯৩২, ইবনু মাজাহ ৮৫৫, আহমাদ ১৮৩৬২, ১৮৩৬৫, ১৮৩৭৮, দারেমী ১২৪৭ তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান বললেও এটি মুলতঃ সহিহ হাদিস কেননা, এর পর্যাপ্ত শাহেদ হাদিস রয়েছে। ইবনু হাজার আত্‌-তালখীসুল হাবীর গ্রন্থে [১/২৩৬] এর সনদকে সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯৭. যে মুসল্লী কুরআন ভালভাবে পড়তে জানে না তার বিধান

২৮৫ – আবদুল্লাহ্‌ বিন আবূ`আউফাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কোন এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] –এর নিকট এসে বলিল-`আমি কুরআনের কোন অংশ গ্রহণে [মুখস্ত করিতে] সক্ষম নই, তাই আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দেন যা আমার জন্য যথেষ্ঠ হয়। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি বলবে,`সুব্‌হানাল্লাহ্‌’`আল্‌হামদুলিল্লাহ্‌’ অলা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, অলা হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল`আলিয়্যিল`আযীম্‌। [সংক্ষিপ্ত] ইবনু হিব্বান, দারাকুৎনী ও হাকিম এটিকে সহীহ্‌ বলেছেন। {৩২২}

{৩২২} হাসান। আবূ দাউদ ৮৩২, আহমাদ ১৮৬৩১, নাসায়ি হাদিস ৯২৪, ইবনু হিব্বান ১৮০৮, দারাকুতনী [৩/৩০ হাঃ ১], হাকিম [১/২৪১], নাসায়ি হাদিস ও ইবনু হিব্বান ব্যতীত সকলেই এ কথা বৃদ্ধি করিয়াছেন- “হে আল্লাহর রাসূল! এটাতো আল্লাহর জন্য। আমার জন্য কী? তিনি বলেন, তুমি বল, হে আল্লাহ! আমার প্রতি রহম কর, আমাকে রিযিক দান কর। আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে হেদায়েত কর। অতঃপর সে দাঁড়িয়ে বলিল, এটাও তো তাহাঁরই হাতে রইল। তখন রাসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, এতটুকুই তার হাতকে কল্যাণে পরিপূর্ণ করে দিবে। নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৮৬ – আবূ ক্বাতাদাহ্‌ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে নামাজ পড়তেন, তাতে তিনি যুহর ও`আসরের প্রথম দু’ রাক’আতে সূরাহ্‌ ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরাহ্‌ পাঠ করিতেন। কখনো কোন আয়াত শুনিয়ে পড়তেন। প্রথম রাক’আত দীর্ঘ করিতেন। আর শেষের দু’রাক’য়াতে তিনি [কেবল] সূরাহ্‌ ফাতিহা পড়তেন। {৩২৩}

{৩২৩} বুখারী ৭৫৯, ৭৬২, ৭৭৬, ৭৭৮, ৭৭৯, মুসলিম ৪৪১, ৯৭৪, ৯৭৫, ৯৭৬, ৯৭৭, ৯৭৮, আবূ দাউদ ৭৯৮, মাজাহ ৮২৯, আহমাদ ২২১০৪, ২২০৩৩, ২২০৫৭, দারেমী ১২৯৩, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯৮. নামাজে কিরাত পাঠ করার পরিমাণ

২৮৭ -আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন-আমরা নাবী [সাঃআঃ] -এর যুহর ও আসরের কিয়াম’ -কে [কিরাআতকালে দাঁড়ান অবস্থাকে] অনুমান করতাম। তার যুহরের প্রথম দুরাকাআতের কিয়াম সাজদাহ সূরা পাঠের সময়ের পরিমাণ হত, আর শেষের দুরাকাআতের কিয়ামকে এর অর্ধেক পরিমাণ, আর আসরের প্রথম দুরাকাআতের কিয়ামকে যুহরের শেষের দুরাকাআতের কিয়ামের অনুরূপ আর শেষের দুরাকাআতের কিয়ামকে এর অর্ধেক সময়ের মত অনুমান করতাম।” {৩২৪}

{৩২৪} মুসলিম ৪৫২, নাসায়ী ৪৭৫, ৪৭৬, আবু দাউদ ৮০৪, ইবনু মাজাহ ৮২৮, আহমাদ ১১৩৯৩, দারেমী ১২৮৮, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৮৮ – সুলাইমান বিন ইয়াসার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- অমুক সহাবী যুহরের ফার্য নামাজের প্রথম দু‘রাকা‘আতকে লম্বা করিতেন ও`আসরকে হালকা করিতেন এবং মাগরিবের নামাজে কুরআনের কিসারে মুফাস্সাল, ইশার নামাজে ওয়াসাতে মুফাস্সাল ও ফাজরের নামাজে তিওয়ালে মুফাসসালের সূরা পাঠ করিতেন। অতঃপর আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলিলেন- রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজের সঙ্গে এর থেকে বেশী সাদৃশ্য পূর্ণ নামাজ এ ব্যক্তি ছাড়া আর কারো পিছনে পড়ি নাই। -নাসায়ী সহিহ সানাদে। {৩২৫}

{৩২৫} ইবনু মাজাহ ৮২৭, নাসায়ী ৯৮২, ৯৮৩, [আরবী]`তিওয়ালে মুফাস্সাল’ –সূরা হুজুরাত হতে সূরা বুরুজ পর্যন্ত সূরাসমুহকে বলা হয়। [আরবী]`আওসাত্বে মুফাস্সাল’ –সূরা তারিক্ব হতে সূরা বাইয়্যেনা পর্যন্ত সূরাসমূহকে বলে। [আরবী] ’কিসারে মুফাস্সাল’ –সূরা যিলযাল হতে সূরা নাস পযন্ত সূরাসমূহকে বলা হয়। সূরা যিলযাল হতে সূরা নাস পর্যন্ত সূরা সমূহকে বলা হয়।হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ৯৯. মাগবির নামাজের ক্বেরাত

২৮৯ – জুবার ইবনু মুতা‘ইম [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] –কে মাগবিরের নামাজে সূরাহ আত-তুর পড়তে শুনিয়াছি। {৩২৬}

{৩২৬} বুখারী ৭৬৫, ৩০৫০, ৪০২৩, ৪৮৫৪, মুসলিম ৪৬৩, ৯৮৭, আবু দাউদ ৮১১, ইবনু মাজাহ ৮৩২, আহমাদ ১৬২৯৩, ১৬৩২১, ১৬৩৩২, মালিক ১৭২, দারেমী ১২৯৫, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস,পরিচ্ছেদ ১০০. জুমু‘আর দিনে ফযর নামাজে যে [সূরা] পাঠ করিতে হয়

২৯০ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] জুমু‘আহর দিন ফাজরের নামাজে [আরবী] এবং [সূরা সাজদাহ]এবং [আরবী] [সূরা দাহর] দু‘টি সূরাহ তিলাওয়াত করিতেন।” {৩২৭}

{৩২৭} বুখারী ৮৯১, ১০৬৮, মুসলিম ৮৮০, নাসায়ী ৯৫৫, ইবনু মাজাহ ৮২৩, আহমাদ ৯২৭৭, ৯৭৫২, দারেমী ১৫৪২, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

২৯১ – ইবনু মাসউদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ফাজরে এ সূরা দুটি সব সময়ই পাঠ করিতেন। {৩২৮}

{৩২৮} তাবরানী সগীর ৯৮৬, [দুর্বল সূত্রে]; মাজমাউয যাওয়ায়িদ [২/১৭১] ইবনু রজব তার ফাতহুল বারি [৫/৩৮৩] গ্রন্থে বলেন, এর সকল বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত। তবে আবুল আহওয়াস থেকে মুরসাল রূপে বর্ণিত হয়েছে। অন্য একটি সূত্রে আবুল আহওয়াস আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ থেকে মুত্তসিলরূপে বর্ণনা করিয়াছেন। সেখানে [আরবী] [সর্বদা] কথাটি উল্লেখ নেই। ইমাম হাইসামী তার মাজমাউয যাওয়ায়িদ [২/১৭১] গ্রন্থে বলেন, এর সকল রাবী বিশ্বস্ত। ইবনু হাজার আসকালানী তার ফাতহুল বারি [২/৪৩৯] গ্রন্থে বলেন, এর সকল রাবী বিশ্বস্ত, কিন্তু সঠিক কথা হচ্ছে আবু হাতিম এটিকে মুরসাল বলেছেন। ইবনু হাজার তাহাঁর নাতায়িজুল আফকার [১/৪৭১] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন, আর এর সকল বর্ণনাকারীকে বিশ্বস্ত বলেছেন। বিন বায তাহাঁর মাসায়িলুল ইমাম [২৮০] গ্রন্থে হাদিসটি উত্তম বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০১. নফল নামাজে রহমতের আয়াত পাঠ করার সময় [আল্লাহর নিকট] চাওয়া শরীয়তসম্মত

২৯২- যাইফাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেছি [নামাজে] কুরআন পড়ে রহমতের আয়াতে পৌঁছে রহমত কামনা করিতেন এবং আযাবের আয়াতে পৌছে আযাব থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। {৩২৯}

{৩২৯} মুসলিম ৭৭২, তিরমিজি ২৬২, আবু দাউদ ৮৭১, ৮৭৪, নাসায়ী ১০০৮, ১০০৯, ১০৪৬, ১৬৬৪, ইবনু মাজাহ ১৩৫১, আহমাদ ২২৭৫০, ২২৮৫৮, ২২৮৬৬, দারেমী ১৩০৬, হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস


by

Comments

Leave a Reply