নামাজে ভুল হলে – নামাজে সালাম, নফল নামায বাড়ীতে আদায় করা
নামাজে ভুল হলে – নামাজে সালাম, নফল নামায বাড়ীতে আদায় করা >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ ১৯০-২০২ =১৩টি
অনুচ্ছেদ-১৯০ ইমামের সালামের জবাব দেয়া প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-১৯১ নামাজের পরে তাকবীর বলা প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-১৯২ সালাম সংক্ষিপ্ত করা
অনুচ্ছেদ-১৯৩ নামাযরত অবস্থায় বায়ু নির্গত হলে পুনরায় উযু করে নামায আদায় করা
অনুচ্ছেদ-১৯৪ ফারয নামায আদায়ের স্থানে নাফল নামায আদায় প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-১৯৫ দুই সাহু সাজদাহ্ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৯৬ (ভুলবশত চার রাকআতের স্থলে) পাঁচ রাকআত আদায় করলে
অনুচ্ছেদ-১৯৭ দুই কিংবা তিন রাকআতে সন্দেহ হলে করণীয় কেউ বলেন, সন্দেহ পরিহার করিবে
অনুচ্ছেদ-১৯৮ যিনি বলেন, (সন্দেহ হলে) প্রবল ধারণার ভিত্তিতে নামায পূর্ন করিবে
অনুচ্ছেদ-১৯৯ যিনি বলেন, সালাম ফিরানোর পর সাহু সাজদাহ্ দিবে
অনুচ্ছেদ-২০০ কেউ দু রাকআতের পর তাশাহ্হুদ না পড়েই দাঁড়িয়ে গেলে
অনুচ্ছেদ-২০১ প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়তে ভুলে গেলে
অনুচ্ছেদ-২০২ দুটি সাহু সাজদাহ্র পর তাশাহ্হুদ পাঠ ও সালাম ফিরানো
অনুচ্ছেদ-১৯০ ইমামের সালামের জবাব দেয়া প্রসঙ্গে
১০০১.সামুরাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাদেরকে আদেশ করিয়াছেন ইমামের সালামের জবাব দিতে, পরস্পরকে ভালবাসতে এবং একে অন্যকে সালাম দিতে।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯১ নামাজের পরে তাকবীর বলা প্রসঙ্গে
১০০২. আবদুল্লা ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নামাজের সমাপ্তি জানা যেতো তাকবীর দ্বারা।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০০৩. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর যুগে লোকেরা ফারয নামায শেষে উচ্চস্বরে তাকবীর বলতো। ইবনি আব্বাস বলেন, এভাবে উচ্চস্বরে তাকবীর বলা শুনে আমি বুঝতে পারতাম যে, লোকদের নামায সমাপ্ত হয়েছে।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯২ সালাম সংক্ষিপ্ত করা
১০০৪. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সালাম সংক্ষিপ্ত করাকে সুন্নাত বলেছেন। ঈসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনিল মুবারক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাকে এ হাদিস নাবী এর বাণীরূপে বর্ণনা করতে নিষেধ করিয়াছেন। {১০০৪}
দুর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আবু উমাইর ঈসা ইবনি ইউনুস ইল-ফাখূরী আর-রামলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আল ফিরয়াবী মাক্কাহ হইতে প্রত্যাবর্তনের পর এটি নাবী (সাঃআঃ)-এর বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করা ত্যাগ করিয়াছেন এবং বলেছেন, ঈমাম আহমাদ ইবনি হাম্বাল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাকে এ হাদিস নাবী (সাঃআঃ)-এর বাণী হিসাবে বর্ণনা করতে নিষেধ করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৩ নামাযরত অবস্থায় বায়ু নির্গত হলে পুনরায় উযু করে নামায আদায় করা
১০০৫. আলী ইবনি ত্বালক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাযরত অবস্থায় তোমাদের কেউ বায়ু নিঃসরণ করলে সে যেন উঠে গিয়ে উযু করে পুনরায় নামায আদায় করে। {১০০৫}
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৪ ফারয নামায আদায়ের স্থানে নাফল নামায আদায় প্রসঙ্গে
১০০৬. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কি ফারয নামায আদায়ের পর সামনে এগিয়ে বা পিছনে সরে অথবা ডানে বা বাম সরে নাফল নামায আদায় করতে অপারগ? হাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণিত হাদীসে আছে, ফারয নামায আদায়ের পর।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০০৭. আল-আযরাক্ব ইবনি ক্বায়স (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমাদের ঈমাম আবু রিমসা (রাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে নামায আদায় করিলেন। তিনি বলিলেন, এ নামায বা এরূপ নামায আমরা নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে আদায় করেছি। তিনি আরো বলিলেন, আবু বাক্র ও উমার (রাঃআঃ) সামনের কাতারে নাবী (সাঃআঃ) এর ডান পাশে দাঁড়াতেন। উক্ত নামায এমন এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলো যিনি প্রথম তাকবীরেই নামায শামিল হইতে পেরেছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) নামায আদায় করে তাহাঁর ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরালেন। আমরা তাহাঁর গলার শুভ্রতা দেখিতে পেলাম। তারপর তিনি উঠে দাঁড়ালেন। যেমন আবু রিমসা উঠে দাঁড়ালেন। অর্থাৎ তিনি নিজের কথাই বলিলেন। এ সময় প্রথম তাকবীরসহ নামায পাওয়া ব্যক্তি দুরাকাত নফল নামায আদায়ের জন্য উঠে দাঁড়ালে উমার তার দিকে ছুটে গিয়ে তার দুই কাঁধ ধরে সজোরে ঝাঁকুনি দিয়ে বলিলেন, বসো। কেননা আহলে কিতাবগণ এ কারণে ধ্বংস হয়েছে যে, তারা ফরয ও নফল নামাজের মাঝে কোন ব্যবধান করতো না। নাবী (সাঃআঃ) সেদিকে তাকিয়ে বলিলেন, হে খাত্তাবের পুত্র ! আল্লাহ্ তোমাকে দিয়ে সঠিক কাজ করিয়েছেন। {১০০৭}
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কোন বর্ণনায় আবু রিমসা (রাঃআঃ) এর স্থলে আবু উমাইয়াহ্র (রাঃআঃ) কথা রহিয়াছে।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৫ দুই সাহু সাজদাহ্ সম্পর্কে
১০০৮. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের সাথে যুহর বাআসর নামায আদায় করেন। বর্ণনাকারী (আবু হুরাইরাহ) বলেন, তিনি (সাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে দু রাক্আত নামায আদায় করেই সালাম ফিরিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি মাসজিদের সম্মুখ দিকে রাখা কাষ্ঠখণ্ডের দিকে অগ্রসর হয়ে তার উপরে এক হাতকে অপর হাতের উপর রাখলেন। এ সময় তাহাঁর চেহারায় অসন্তুষ্টির ছাপ ছিল। লোকজন মাসজিদ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে যেতে বলছিল, নামায সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে, সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে। তাহাঁদের মধ্যে আবু বাক্র এবং উমার (রাঃআঃ) ও ছিলেন। তারা উভয়ে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে এ নিয়ে কথা বলিতে ভয় পাচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যাকে যুল-ইয়া-ইয়াদাইন (দু হাতবিশিষ্ট) বলে ডাকতে। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আপনি কি ভুল করিয়াছেন, না নামায সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে? রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, আমি ভুলও করি নাই এবং নামাযও হ্রাস করা হয় নাই। যুল-ইয়াদাইন বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! তাহলে আপনি ভুল করিয়াছেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) লোকজনের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন –যুল-ইয়াদাইন কি সত্য বলছে? জবাবে সকলেই ইশারায় হ্যাঁ বলিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর জায়গায় এগিয়ে গেলেন এবং অবশিষ্ট দুরাক্আত নামায আদায় করে সালাম ফিরালেন, এরপর তাকবীর বলে স্বাভাবিক সাজদাহ্র মত সাজদাহ্ করিলেন অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সাজদাহ্ করিলেন। এরপর তাকবীর বলে মাথা উঠালেন, তারপর আবার তাকবীর বলে স্বাভাবিক সাজদাহ্র মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সাজদাহ্ করিলেন, অতঃপর তাকবীর বলে মাথা উঠালেন।
বর্ণনাকারী আইয়ূব বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি সীরীনকে সাহু সাজদাহ্ এবং সালাম ফিরানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরাহ্র কাছে এ বিষয়ে শুনিয়াছি কিনা স্মরণ নেই। তবে আমাকে জানানো হয়েছে যে, ইমরান ইবনি হুসাইন (রাঃআঃ) বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সাহু সাজদাহ্র পরও সালাম ফিরিয়ে ছিলেন।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০০৯.আবদুল্লা ইবনি মাসলামাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মালিক, তিনি আইয়ুব হইতে, তিনি মুহাম্মাদ হইতে পূর্বোক্ত সানাদে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে বর্ণনাকারী হাম্মাদের সানাদে বর্ণিত হাদিসটিই পূর্ণাঙ্গ। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নামায আদায় করিলেন। এ বর্ণনায়আমাদের নিয়ে এবংলোকদের ইশারা শব্দদ্বয় উল্লেখ নেই। বর্ণনাকারী বলেন, জবাবে লোকেরা শুধু হ্যাঁ বলেছিলো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাথা উঠালেন। এতেএরপর তাকবীর বলেন… অতঃপর মাথা উঠালেন এ কথাগুলো উল্লেখ নেই। এভাবেই হাদিস শেষ হয়েছে। হাম্মাদ ইবনি যায়িদ ব্যতীত অন্য কেউফা আওমায়ূ (লোকদের ইশারা) শব্দটি উল্লেখ করেননি।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যারা এ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তাহাঁদের কেউইফাক্বাবারা (তিনি তাকবীর দিলেন) এবং রাজায়া (প্রত্যাবর্তন করিলেন) শব্দদ্বয় উল্লেখ করেননি।
সহীহঃ বোখারি। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১০. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের নিয়ে নামায আদায় করিলেন। অতঃপর হাম্মাদের অনুরূপ অর্থবোধক হাদিসনুববিতু আন্না ইমরানাব্ হুসাইন ক্বালা সুম্মা সাল্লামা পর্যন্ত বর্ণনা করিলেন। বর্ণনাকারী সালামাহ বলেন, আমি তাকে (মুহাম্মাদ ইবনি সীরীরকে) জিজ্ঞেস করলাম, তাশাহহুদের বিষয়? তিনি বলিলেন, তাশাহহুদ পড়া সম্পর্কে আমি তার নিকট থেকে কিছু শুনিনি। অথচ তাশাহহুদ পাঠ করা আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। তিনিকানা ইউসাম্মীহি যাল্-ইয়াদাইন,ফাআওমায়ু, এবং গাদাবা এগুলো উল্লেখ করেননি। এ বিষয়ে হাম্মাদ বর্ণিত হাদিসটিই পূর্ণাঙ্গ।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১১. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে যুল-ইয়াদাইন সম্পর্কিত হাদীসে রয়েছেঃ তিনি তাকবীর বলে সাজদাহ্ করিলেন। আর হিশাম ইবনি হাস্সান বলেছেন, তিনি তাকবীর বলিলেন, অতঃপর আবারো তাকবীর বলিলেন এবং সাজদাহ্ করিলেন। {১০১১}
শায।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিসটি হাবীব ইবনিল শাহীদ, হুমাইদ, ইঊনুস, এবং আসিম আল-আহ্ওয়াল-মুহাম্মাদ হইতে, তিনি আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাহাঁদের কেউই হাম্মাদ ইবনি যায়িদ হইতে হিশাম সূত্রে বর্ণিত হাদিসের এ কথাগুলো উল্লেখ করেননি। (অর্থাৎ)তিনি তাকবীর বলিলেন, অতঃপর আবারো তাকবীর বলিলেন এবং সাজদাহ্ করিলেন। হাম্মাদ ইবনি সালামাহ ও আবু বাক্র ইবনি আইয়্যাশ এ হাদিস হিশাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা দুজন হিশাম হইতেপরপর দুইবার তাকবীর দেয়ার কথা উল্লেখ করেননি, যা হাম্মাদ করিয়াছেন।
{১০১১}- জঈফ আবু দাউদ (৯৯)। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ শায
১০১২. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
অনুরূপ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলেন, মহান আল্লাহ্ তাঁকে (দুরাক্আত নামায ভুলবশতঃ ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি) নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তিনি (সাঃআঃ) দুটি সাহু সাজদাহ্ করেননি। {১০১২}
{১০১২}- পূর্বেরটি দেখুন। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০১৩. ইবনি শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তাকে আবু বাক্র ইবনি সুলায়মান ইবনি আবু হাসমাহ্ অবহিত করিয়াছেন যে, তার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, নামায সন্দেহ হলে যে দুটি সাজদাহ দিতে হয় সে বিষয়ে লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের পূর্বে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তা করেননি। ইবনি শিহাব বলেন, সাঈদ ইবনিল মুসাইয়াব এ হাদিসটি আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন আবু হুরাইরা হইতে। তিনি আরো বলেন, আবু সালামাহ ইবনি আব্দুর রহমান, আবু বাক্র ইবনি হারিস ইবনি হিশাম এবং উবাইদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লা ও আমার কাছে এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। {১০১৩}
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ ঘটনাটি ইয়াহইয়া ইবনি আবু কাসীর এবং ইমরান ইবনি আবু আনাস (রাঃআঃ) আবু সালামাহ ইবনি আব্দুর রহমান হইতে আবু হুরাইরা সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু তাতে দুটি সাজদাএর কথা উল্লেখ নেই। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যুবাইদী-যুহরী- আবু বাক্র ইবনি সুলায়মান ইবনি আবু হাস্মাহ হইতে নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে যে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন তাতে রহিয়াছে, তিনি দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করেননি।
শায।
{১০১৩}- নাসাঈ (অধ্যায়ঃ সাহু, হাঃ ১২৩০-১২৩১), দারিমী (অধ্যায়ঃ আযান, হাঃ ১৪৯৭), ইবনি খুযাইমাহ (হাঃ ১০৪২) সকলে যুহরী হইতে। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ শায
১০১৪ আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা নাবী (সাঃআঃ) যুহরের নামায (ভুলবশতঃ) দু রাকআত আদায় করেই সালাম ফিরালেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, নামায কি সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে? এ কথা শুনে তিনি আরো দু রাকআত নামায আদায় করে দুটি সাজদাহ্ করিলেন।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৫. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা নাবী (সাঃআঃ) (চার রাক্আত বিশিষ্ট) ফরয নামায (ভুলবশতঃ) দু রাকআত আদায় করেন। নামায শেষে এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! নামায কি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, না আপনি ভুল করিয়াছেন? জবাবে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, আমি এর কোনটাই করি নাই। লোকজন বললো, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তা করিয়াছেন। তখন তিনি আরো দু রাকআত নামায আদায় করিলেন।
শায।
দাউদ ইবনিল হুসাইন আহমাদের মুক্তদাস আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) সূত্রে এ ঘটনা সম্পর্কিত হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলেন, অতঃপর সালাম ফিরিয়ে নাবী (সাঃআঃ) বসা অবস্থায়ই দুটি সাহু সজাদাহ্ করেন। {১০১৫}
সহীহঃ মুসলিম। {১০১৫}- ইতিপূর্বে সুফয়ান ও অন্যদের সূত্রে সহিহভাবে গত হয়েছে। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১০১৬. দামদাম ইবনি জাওস আল-হাফ্ফানী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) এ হাদিসটি অনুরূপভাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সালাম ফিরানোর পর দুটি সাহু সাজদাহ্ করিয়াছেন।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১০১৭. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে (চার রাকআত বিশিষ্ট ফরয) নামায আদায় করতে গিয়ে (ভুল বশতঃ) দু রাকআত আদায় করেই সালাম ফিরালেন। আতঃপর আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) সূত্রে ইবনি সীরীন বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। এতে রয়েছেঃ অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সালাম ফিরালেন এবং দুটি সাহু সাজদাহ্ করিলেন।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৮. ইমরান ইবনি হুসাইন (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)আসরের তিন রাকআত নামায আদায় করেই সালাম ফিরালেন এবং হুজরায় প্রবেশ করিলেন। তখন লম্বা হাতওয়ালা খিরবাক্ব নামক এক ব্যাক্তি উঠে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! নামায কি কমিয়ে দেয়া হয়েছে? এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাগান্বিত অবস্থায় চাদর টানতে টানতে বেরিয়ে এসে লোকদের জিজ্ঞেস করিলেন, সে কি সত্যি বলেছে? লোকজন বললো, হাঁ, তখন তিনি অবশিষ্ট এক রাকআত নামায আদায় করে (ডান দিকে) সালাম ফিরালেন। অতঃপর দুটি সাহু সাজদাহ্ দিয়ে পরে (বাম দিকে) সালাম ফিরালেন।
সহীহঃ মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৬ (ভুলবশত চার রাকআতের স্থলে) পাঁচ রাকআত আদায় করলে
১০১৯. আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যুহরের নামায পাঁচ রাকআত আদায় করেন। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, নামায কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ তা আবার কিভাবে ! সকলেই বললো, আপনি তো পাঁচ রাকআত নামায আদায় করিয়াছেন। তখন তিনি (সাঃআঃ) সালাম ফিরানোর পর দুটি সাহু সাজদাহ্ করিলেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২০. আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নামায আদায় করিলেন। ইবরাহীম বলেন, এ নামায তিনি বেশী করেছিলেন না কম করেছিলেন তা আমি অবহিত নই। তিনি সালাম ফিরালে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! নামায নতুন কিছু হয়েছে কি? রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তা আবার কেমন করে? তারা বললো, আপনি তো নামায এরূপ এরূপ করিয়াছেন (কম অথবা বেশী নামায আদায় করিয়াছেন)। এ কথা শুনে তিনি পা ঘুরিয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে দুটি সাহু সিজদাহ্ করে সালাম ফিরালেন। নামায শেষে নাবী (সাঃআঃ) আমাদের দিকে ঘুরে বলিলেন, নামাজের ব্যাপারে নতুন কিছু ঘটে থাকলে আমি তোমাদেরকে অবহিত করতাম। কিন্তু আমি তো তোমাদের মতই মানুষ। তোমাদের মত আমিও ভুল করে থাকি। কাজেই আমি ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্বরণ করিয়ে দিবে। তিনি আরো বললেনঃ তোমাদের কেউ নামায সন্দিহান হলে সে যেন সঠিক দিক বের করতে চিন্তা ভাবনা করে, অতঃপর তার ভিত্তিতে নামায সম্পন্ন করে এবং সালাম ফিরায় অতঃপর দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করে।
সহীহঃ বোখারি মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২১. আবদুল্লা (রাঃআঃ) সুত্র হইতে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তিনি (সাঃআঃ) বলেনঃ (নামাজের মধ্যে) তোমাদের কেউ (কিছু) ভুলে গেলে যেন দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করে নেয়। অতঃপর তিনি (সাঃআঃ) ঘুরে দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হুসাইন বর্ণিত হাদিসটি আমাশের হাদিসের অনুরূপ। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২২. আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে পাঁচ রাকআত নামায আদায় করিলেন। নামায শেষে লোকেরা এ নিয়ে চুপি চুপি আলাপ করতে থাকলো। তা দেখে তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমাদের কি হয়েছে? তারা বললো, হে আল্লাহর রসূল ! নামায কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বলিলেন, না। তারা বললো, আপনি তো পাঁচ রাকআত নামায আদায় করিয়াছেন। এ কথা শুনে তিনি (সাঃআঃ) ঘুরে গিয়ে দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করে সালাম ফিরলেন, অতপর বললেনঃ আমি তো একজন মানুষ। তোমাদে মত আমিও ভুল করে থাকি।
সহীহঃ মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৩.মুআবিয়াহ ইবনি খাদীজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নামায আদায়কালে নামাজের এক রাকআত বাকি থাকতেই সালাম ফিরালেন। এক ব্যাক্তি তাহাঁর নিকট গিয়ে বললো, আপনি এক রাকআত নামায আদায় করতে ভুলে গেছেন। কাজেই রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফিরে এসে মাসজিদে প্রবেশ করে বিলাল (রাঃআঃ)-কে ইক্বামাত দিতে বলেন। বিলাল (রাঃআঃ) ইক্বামাত দিলে তিনি লোকদেরকে নিয়ে এক রাকআত নামায আদায় করিলেন।
মুআবিয়াহ ইবনি খাদীজ বলেন, আমি এ ঘটনা লোকজনের নিকট বর্ণনা করলে তারা আমাকে বললো, আপনি কি লোকটিকে চিনেন? আমি বললাম, না, তবে দেখলে চিনতে পারবো। পরে সেই লোকটি আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমি বললাম, ইনিই সেই লোক। সকলেই তাকে দেখে বললো, ইনি হচ্ছেন তাল্হা ইবনিউবায়দুল্লাহ (রাঃআঃ)।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৭ দুই কিংবা তিন রাকআতে সন্দেহ হলে করণীয় কেউ বলেন, সন্দেহ পরিহার করিবে
১০২৪. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ নামায সন্দিহান হলে সে যেন সন্দেহ পরিহার করে নিশ্চিত প্রত্যয়ের উপর ভিত্তি করে স্বীয় নামায পূর্ণ করে এবং দুটি সাহু সাজদাহ্ আদায় করে। তার নামায পূর্ণ হয়ে থাকলে অতিরিক্ত এক রাকআত ও দুটি সাজদাহ্ নফল হিসেবে গণ্য হইবে। আর নামায কম হয়ে থাকলে উক্ত এক রাকআত সহ তা পূর্ণ হইবে এবং দুটি সাজদাহ্ শাইত্বানের জন্য অপমানকর হইবে।
হাসান সহিহঃ অনুরুপ মুসলিম
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১০২৫. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) ভুলের দুটি সাজদাহ্র নাম করণ করিয়াছেন “আল্-মুরাগগিমাতাইন” (শাইত্বানের জন্য লাঞ্ছনাকর দুটি সাজদাহ্)।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৬. আত্বা ইবনি ইয়াসার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের মধ্যে তোমাদের কেউ যদি নামায এরূপ সন্দেহে পতিত হয় যে, সে তিন রাকআত না চার রাকআত নামায আদায় করেছে তা স্মরণ করতে পারছে না তাহলে সে যেন আরো এক রাকআত নামায আদায় করে নেয় এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে বসা অবস্থায় দুটি সাজদাহ্ আদায় করে। আদায়কৃত অতিরিক্ত এক রাকআত যদি পঞ্চম রাকআত হয়ে থাকে তবে এ দুটি সাজদাহ্ মিলে তা দুরাকআত নফল নামায পরিনত হইবে। আর তা যদি চতুর্থ রাকআত হয়ে থাকে তবে এ সাজদাহ্ দুটি শাইত্বানের জন্য লাঞ্ছনাকর হইবে।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৭.যায়িদ ইবনি আসলাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ঈমাম মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামায সন্দিহান হয় এবং তার দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে, সে তিন রাকআত আদায় করেছে, তখন সে যেন (চতুর্থ রাকআতের জন্য) দাঁড়িয়ে সাজদাহ্ সহ আরো এক রাকআত পূর্ণ করে। সে তাশাহ্হুদে বসে তাশাহ্হুদ পাঠ শেষে দুটি সাজদাহ্ করিবে, অতঃপর সালাম ফিরাবে। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি ঈমাম মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণিত হাদিস হুবহু বর্ণনা করেন।
সহীহঃ মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ঈমাম মালিক, হাফ্স ইবনি মাইসারাহ, দাউদ ইবনি ক্বায়িস ও হিশাম ইবনি সাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে ইবনি ওয়াহাব উপরোক্ত হাদিস হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হাদিসের সানাদকে আবু সাঈদ আল-খুদরীর (রাঃআঃ) সাথে যুক্ত করিয়াছেন। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯৮ যিনি বলেন, (সন্দেহ হলে) প্রবল ধারণার ভিত্তিতে নামায পূর্ন করিবে
১০২৮. আবুউবায়দাহ ইবনিআবদুল্লা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামায আদায়কালে তুমি তিন রাকআত আদায় করেছো নাকি চার রাকআত- এরূপ সন্দেহ হলে তোমার দৃঢ় ধারণা যদি চার রাকআতে হয়, তাহলে তুমি তাশাহ্হুদ পাঠ করে বসা অবস্থায় সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সাহু সাজদাহ্ করিবে, তারপর আবার তাশাহুত পাঠ করিবে, অতঃপর সালাম ফিরাবে। {১০২৮}
দূর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আবদুল্লা ওয়াহিদ এ হাদিস খুসাইফ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু মরফূভাবে নয়।আবদুল ওয়াহিদ সূত্রে বর্ণনাকারীরাও একে মরফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি, যদিও তারা হাদিসের মাতানে মতভেদ করিয়াছেন। {১০২৮}- আহমাদ (১/৪২৯/হাঃ ৪০৭৫)। শায়খ আহমাদ শাকির বলেনঃ সানাদে ইঙ্কিতা (বিচ্ছিন্ন) হওয়ার কারনে এর সানাদ দুর্বল। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০২৯. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ নামাজেরত অবস্থায় নামায বেশী আদায় করেছে নাকি কম- এ নিয়ে সন্দিহান হলে সে বসা অবস্থায় দুটি সাজদাহ্ করিবে। অতঃপর যদি তার নিকট শাইত্বান এসে বলে, (হে মুসল্লী) তোমার তো উযু নষ্ট হয়ে গেছে, তখন সে বলে তুই মিথ্যা বলেছিস। অবশ্য নাকে (বাযু নির্গমনের) দুর্গদ্ধ পেলে অথবা কানে শব্দ শুনতে পেলে তা স্বতন্ত্র কথা।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৩০. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামায দাঁড়ায় তখন শাইত্বান তার কাছে এসে তাকে ধোঁকা দিতে থাকে। এমনকি সে কয় রাকআত নামায আদায় করেছে তা স্মরন করতে পারে না। কাজেই তোমাদের কারো এরূপ অবস্থা হলে সে যেন বসা অবস্থায় দুটি সাজদাহ্ আদায় করে।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩১. মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার সানাদে এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে এও রয়েছেঃ সে সালাম ফিরানোর পূর্বে বসা অবস্থায় (দুটি সাহু সাজদাহ) করিবে।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১০৩২. মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম আয-যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
উপরোক্ত সানাদ ও অর্থে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি (সাঃআঃ) বলেছেন, সে যেন সালাম ফিরানোর আগে দুটি সাজদাহ্ আদায় করে, অতঃপর সালাম ফিরায়।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-১৯৯ যিনি বলেন, সালাম ফিরানোর পর সাহু সাজদাহ্ দিবে
১০৩৩. আবদুল্লা ইবনি জাফর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাযরত অবস্থায় কারো সন্দেহ হলে সে যেন সালাম ফিরানোর পর দুটি সাজদাহ্ করে নেয়। {১০৩৩}
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০০ কেউ দু রাকআতের পর তাশাহ্হুদ না পড়েই দাঁড়িয়ে গেলে
১০৩৪. আবদুল্লা ইবনি বুহাইনাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে নামায আদায় করিলেন। তিনি দুরাকআত আদায় করে (তাশাহ্হুদের জন্য) না বসেই দাঁড়িয়ে গেলেন। লোকেরা তাহাঁর সাথে দাড়িঁয়ে গেল। নামায শেষে আমরা যখন সালামের অপেক্ষায় ছিলাম তখন তিনি তাকবীর বলে সালামের পূর্বে বসা অবস্থায় দুটি সাজদাহ্ করিলেন, তারপর সালাম ফিরালেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৫. আয-যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আয-যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার সানাদে হাদিসটি হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। বর্ণনাকারী শুআয়িব এটাও বর্ণনা করেন যে, আমাদের মধ্যকার কেউ কেউ (ভুল বশতঃ) দাঁড়ানো অবস্থায় তাশাহুদ পাঠ করেছে। ঈমাম আবু দাউদ বলেন,আবদুল্লা ইবনিয যুবাইর (রাঃআঃ)-ও দু রাকআত আদায় করে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন এবং অনুরূপভাবে সালামের পূর্বে দুটি সাজদাহ্ করেছিলেন আর এটাই আয-যুহরীর অভিমত।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০১ প্রথম বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়তে ভুলে গেলে
১০৩৬. মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুরাকআতের পরে ঈমাম দাঁড়িয়ে গেলে এবং সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পূর্বেই তার স্মরণ হলে তিনি বসে যাবেন; কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলে তিনি বসবেন না, বরং সাহু সাজদাহ্ আদায় করবেন।
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমার কিতাবে জাবির আল-জফা সূত্রে বর্ণিত এ হাদিস ছাড়া অন্য কোন হাদিস নেই। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৭. যিয়াদ ইবনিইলাক্বাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) আমাদের নিয়ে নামায আদায় করিলেন। তিনি দ্বিতীয় রাকআতের পর দাঁড়িয়ে গেলে আমরাসুবহানাল্লাহ বললাম, তখন তিনিওসুবহানাল্লাহ বলিলেন এবং ঐভাবেই নামায শেষ করে সালাম ফিরানোর পর ভূলের জন্য দুটি সাজদাহ্ করিলেন। নামায শেষে তিনি আমাদের দিকে ঘুরে বলিলেন, আমি আমার মত রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কেও করতে দেখেছি।
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, ইবনি আবু লায়লাহ শাবীর হইতে মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) সূত্রে মরফূ হিসেবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আর আবুউমাইস (উতবাহ ইবনিআবদুল্লা) সাবিত ইবনিআবদুল্লা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) আমাদের নিয়ে নামায আদায় করিলেন……. যিয়াদ ইবনিইলাক্বাহর হাদিসের অনুরূপ ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণনা করিয়াছেন, আবুউমাইস (উতবাহ ইবনিআবদুল্লা) হলেন আল-মাসঊদীর ভাই। মুগীরাহ ইবনি শুবাহ যেরূপ করিয়াছেন সাদ ইবনি আবু সুফয়ানইমরান ইবনি হুসাইন, দাহ্হাক ইবনি ক্বায়ীস এবং মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফয়ান (রাঃআঃ) ও অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।আবদুল্লা ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) এবংউমার ইবনিআবদুলআযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ ফাতাওয়াহ দিয়েছেন। ঈমাম আবু দাউদ বলেন, যারা নামায দুরাকআতের পর না বসে (ভূল বশতঃ) দাঁড়িয়ে যায় এবং সালাম ফিরানোর পর সাজদাহ্ আদায় করে এটা তাহাঁদের জন্য। সাদ এর খবরঃ সহিহ।ইমরান ইবনি হুসাইনের খবরঃ বিশ্বস্থ রিজাল। দাহহাক এর খবরঃ আমি পাইনি। মুআবিয়ার খবরঃ দূর্বল। ইবনিআব্বাসের ফাতাওয়াহঃ হাসান। আরউমারের ফাতাওয়াহঃ দূর্বল। নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৮. সাওবান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের যেকোন ভুলের জন্য সালাম ফিরানোর পর দুটি সাজদাহ্ করতে হয়।
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০২ দুটি সাহু সাজদাহ্র পর তাশাহ্হুদ পাঠ ও সালাম ফিরানো
১০৩৯. ইমরান ইবনি হুসাইন (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁদেরকে নিয়ে নামায আদায়কালে ভুল করেন। ফলে তিনি দুটি সাহু সাজদাহ্ করেন। অতঃপর তাশাহ্হুদ পড়ে সালাম ফিরান। {১০৩৯}
নামাজে ভুল হলে -হাদিসের তাহকিকঃ শায
Leave a Reply