নামাজে বিসমিল্লাহ সূরা ফাতিহা কেরাত আমিন বলা

নামাজের বিসমিল্লাহ ,সূরা ফাতিহা ও কেরাত পড়ার বিধান

নামাজের বিসমিল্লাহ ,সূরা ফাতিহা ও কেরাত পড়ার বিধান >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১১, নামাজ আরম্ভ করা, হাদীস (৯০২-৯৩২)

১.পরিচ্ছেদঃ অন্য সূরা পড়ার পূর্বে সূরা ফাতিহা পড়া
২.পরিচ্ছেদঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম পাঠ করা
৩.পরিচ্ছেদঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম বলিতে উচ্চস্বর পরিত্যাগ করা
৪.পরিচ্ছেদঃ নামাজে ফাতিহা পড়া ওয়াজিব
৫.পরিচ্ছেদঃ সূরা ফাতিহার ফযীলত
৬.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তায়ালার বাণীঃআমি তোমাকে সাতটি আয়াত দান করেছি, যা বারবার পড়া হয় এবং মহান কুরআন -এর ব্যাখ্যা
৭.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে কিরাআত চুপে চুপে পাঠ করা হয় সে নামাজে ইমামের পশ্চাতে কিরাআত ত্যাগ করা
৮.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে ঈমাম উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করেন তাতে মুকতাদীর কুরআন পাঠ ত্যাগ করা
৯.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে ঈমাম উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করে সে নামাজে ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পড়া
১০.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শুনবে এবং চুপ থাকিবে। আশা করা যায় তাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হইবে- আয়াতের ব্যাখ্যা
১১.পরিচ্ছেদঃ ইমামের কিরাআত মুকতাদীর জন্য যথেষ্ট হওয়া
১২.পরিচ্ছেদঃ যে ভালভাবে কুরআন পাঠ করিতে জানে না, তার জন্য যা পাঠ করা যথেষ্ট
১৩.পরিচ্ছেদঃ ইমামের উচ্চস্বরে আমীন বলা
১৪.পরিচ্ছেদঃ ইমামের পেছনে আমীন বলার নির্দেশ
১৫.পরিচ্ছেদঃ আমীন বলার ফযীলত
১৬.পরিচ্ছেদঃ মুকতাদীর ইমামের পেছনে হাঁচি দিয়ে আলহামদু লিল্লাহ …… বলা

১.পরিচ্ছেদঃ অন্য সূরা পড়ার পূর্বে সূরা ফাতিহা পড়া

৯০২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ], আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ] কিরাআত আরম্ভ করিতেন-

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [الفاتحة: 2]

“আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন”

দ্বারা।

আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” দ্বারা আরম্ভ করার অর্থ এই যে, তাঁরা অন্য সূরা পড়ার পূর্বে সূরা ফাতিহা পড়তেন এবং এর শুরুতে তাঁরা চুপে বিসমিল্লাহ পড়তেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৯০৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে এবং আবু বকর ও উমর [রাঃআঃ]-এর সাথে নামাজ আদায় করেছি। তাঁরা নামাজ আরম্ভ করিতেন,

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [الفاتحة: 2]

আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” দ্বারা।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২.পরিচ্ছেদঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম পাঠ করা

৯০৪. আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, একদিন তিনি আমাদের মধ্যে ছিলেন অর্থাৎ নাবী [সাঃআঃ]। হঠাৎ ওহীর অবস্থা প্রকাশ পেল। তারপর তিনি মুচকি হাসতে হাসতে মাথা উঠালেন। আমরা তাঁকে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বলিলেন, এখন আমার উপর একটি সূরা নাযিল হলোঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ [الفاتحة: 1]

إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ. فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ. إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ} [الكوثر: 2]

তারপর তিনি বলিলেন, তোমরা জান কি “কাওসার” কি? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ]-ই ভাল জানেন। তিনি বলিলেন, এটা একটি নহর। আমার রব! আমাকে তা জান্নাতে প্রদান করবেন বলে ওয়াদা করিয়াছেন। তার পেয়ালাসমূহ তারকার সংখ্যা অপেক্ষা অধিক, আমার উম্মত তার কাছে আমার নিকট আসবে। তারপর তাহাদের মধ্য থেকে কাউকে হটিয়ে দেয়া হইবে। তখন আমি বলব, হে আল্লাহ! সে তো আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত। তখন তিনি আমাকে বলবেন, নিশ্চয় আপনি জানেন না, সে আপনার পরে [শরীয়তের পরিপন্থী] কি নতুন বিষয় আবিষ্কার করেছিল।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯০৫. নুয়ায়ম মুজমির [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃআমি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করি। তিনি প্রথমে পড়লেন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করিলেন, যখন তিনি [আরবী] পর্যন্ত পৌছলেন তখন আমীন বলিলেন, তারপর সকল লোক বলিল, আমীন। যখনই তিনি সিজদা করিতেন তখন বলিতেন, আল্লাহু আকবর, আর যখন তিনি দ্বিতীয় রাকাআতে বসা থেকে দাঁড়াতেন তখনও আল্লাহু আকবর বলিতেন। তিনি সালাম ফিরিয়ে বলিলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর শপথ! আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মত নামাজ আদায় করে তোমাদের দেখালাম।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩.পরিচ্ছেদঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম বলিতে উচ্চস্বর পরিত্যাগ করা

৯০৬. আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন। তখন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ [الفاتحة: 1]

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

-এর কিরাআত আমরা শুনতে পাইনি। আর আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ]-ও আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করিয়াছেন। তাঁদের থেকেও আমরা তা শুনিনি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯০৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং আবু বকর, উমর, ও উসমান [রাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। তাঁদের কাউকে

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ [الفاتحة: 1]

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

উচ্চস্বরে পড়তে শুনিনি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯০৮. ইবন আবদুল্লাহ ইবন মুগাফফাল [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন মুগাফফাল [রাঃআঃ] আমাদের কাউকে

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ [الفاتحة: 1]

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

পড়তে শুনলে বলিতেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি এবং আবু বকর ও উমর [রাঃআঃ]-এর পেছনেও। তাঁদের কাউকেও

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ [الفاتحة: 1]

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

পড়তে শুনিনি।

৯০৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন নামাজ আদায় করে আর তাতে সূরা ফাতিহা না পড়ে তা অসম্পূর্ণ, তা অসম্পূর্ণ, তা অসম্পূর্ণ, পূর্ণ হয় না। তখন আমি বললাম, হে আবু হুরাইরা! আমি অনেক সময় ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করে থাকি, তিনি আমার বাহুটান দিয়ে বলিলেন, হে পারসিক [ইরানী]; তুমি তা মনে মনে পড়বে। কেননা, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে নামাজ আধাআধি ভাগ করেছি। অতএব, এর অর্ধেক আমার জন্য আর অর্ধেক বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে যা সে চায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা পড়। বান্দা যখন বলে,

আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন,

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করিল। আর যখন বান্দা বলে,

الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

আররহমানির রহীম

তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করিল। আর বান্দা যখন বলে,

مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ

মালিকি ইয়াওমিদ্দীন

তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করিল। আর বান্দা যখন বলে,

إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ

ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তায়ীন

তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, এই আয়াতটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে। আর আমার বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে, যা সে চায়। বান্দা বলে,

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাতীম, সিরাতাল লাযীনা আন আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বা-ল্লীন,

[তখন আল্লাহ তাআলা বলেন] এসবই আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে, যা সে চায়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪.পরিচ্ছেদঃ নামাজে ফাতিহা পড়া ওয়াজিব

৯১০. উবাদাহ ইবন সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে সূরা ফাতিহা পড়েনি তার নামাজ হয়নি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯১১. উবাদা ইবন সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে সূরা ফাতিহা -এর পর অধিক [অন্য সূরা] পড়ল না, তার নামাজ হয়নি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫.পরিচ্ছেদঃ সূরা ফাতিহার ফযীলত

৯১২. ইবন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মধ্যে ছিলেন আর তাহাঁর কাছে ছিলেন জিবরাঈল [আঃ]। হঠাৎ জিবরাঈল [আঃ] তাহাঁর মাথার উপর এক বিকট আওয়াজ শুনলেন তখন তিনি আকাশের দিকে চোখ তুলে দেখলেন যে, আকাশের একটি দরজা খুলে দেয়া হয়েছে, যা কখনও খোলা হয়নি। তিনি বলেন, এরপর দরজা দিয়ে একজন ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিলেন, আপনি এমন দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা শুধু আপনাকেই দান করা হয়েছে। আপনার পূর্বে অন্য কোন নাবীকে তা দান করা হয়নি। একটি হলো, সূরা ফাতিহা এবং অন্যটি হলো, সূরা বাকারার শেষাংশ। এতদুভয়ের একটি অক্ষর পাঠ করলেও [তার প্রতিদান] তা আপনাকে দেওয়া হইবে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তায়ালার বাণীঃআমি তোমাকে সাতটি আয়াত দান করেছি, যা বারবার পড়া হয় এবং মহান কুরআন -এর ব্যাখ্যা

৯১৩. আবু সাঈদ ইবন মুআল্লা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, নাবী [সাঃআঃ] তার কাছ দিয়ে যাওয়ার কালে তাঁকে ডাকলেন, তিনি তখন নামাজ আদায় করছিলেন। তিনি বলেন, আমি নামাজ শেষ করে তাহাঁর কাছে আসলে তিনি বলিলেন, আমার আহ্বানে সাড়া দিতে তোমাকে কিসে নিষেধ করিল? তিনি বলিলেন, আমি নামাজ আদায় করছিলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা কি বলেননি, হে মুমিনগণ! রাসূল যখন তোমাদের এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে যা তোমাদের প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ্ ও রাসূলের আহ্বানে সাড়া দিবে। [সূরাঃ৮, আয়াতঃ২৪] মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বে আমি কি তোমাকে সর্বোৎকৃষ্ট সূরা শিক্ষা দিব না? তিনি বলিলেন, তারপর তিনি বের হইতে গেলে আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার কথা? তিনি বলিলেন আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা, ঐ সাত আয়াত যা বারবার পড়া হয়ে থাকে, যা আমাকে দান করা হয়েছে এবং মহান কুরআন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯১৪. উবাই ইবন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সূরা ফাতিহার মত তাওরাত অথবা ইঞ্জিলে কোন আয়াত নাযিল করেন নি। তা সাত আয়াত, যা বারবার পাঠ করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন এ আমার ও আমার বান্দার মধ্যে ভাগ করা। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে, সে যা চায়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯১৫. ইবন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে দান করা হয়েছে কুরআন মজীদের সাতটি বড় সূরা। তিনি অত্র হাদীছে সাবআম মিনাল মাছানী বলিতে সাতটি বড় সূরার কথা বুঝিয়েছেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯১৬. ইবন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

সাবআম মিনাল মাছানী আয়াতের সম্বন্ধে বর্ণিত। তিনি বলেন, তা কুরআন মজীদের সাতটি বড় সূরা।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে কিরাআত চুপে চুপে পাঠ করা হয় সে নামাজে ইমামের পশ্চাতে কিরাআত ত্যাগ করা

৯১৭. ইমরান ইবন হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] জোহরের নামাজ আদায় করিলেন। এক ব্যক্তি তাহাঁর পেছনে সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা পাঠ করিল। তিনি যখন নামাজ শেষ করিলেন, তখন বলিলেন, সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা কে পাঠ করিল? এক ব্যক্তি বলিল, আমি পড়েছি। তখন তিনি বলিলেন, আমি জানতাম, তোমাদের কেউ কিরাআতে আমার সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করিবে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯১৮. ইমরান ইবন হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] একবার জোহর অথবা আসরের নামাজ আদায় করিলেন। আর এক ব্যক্তি তাহাঁর পেছনে কুরআন পড়ছিল। তিনি নামাজ শেষ করে বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা পাঠ করিল? উপস্থিত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি বলিল, আমি পড়েছি। আর আমি তা দ্বারা কল্যাণ ব্যতীত কিছু কামনা করিনি। তখন নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি বুঝলাম তোমাদের কেউ কিরাআতে আমার সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করেছ।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৮.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে ঈমাম উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করেন তাতে মুকতাদীর কুরআন পাঠ ত্যাগ করা

৯১৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উচ্চ শব্দে কুরআন পাঠ করা নামাজ সমাপ্ত করে বলিলেন, তোমাদের কেউ কি এখন আমার সাথে কুরআন পাঠ করেছে? এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আমি বলছি কুরআন তিলাওয়াতে আমার সাথে কেন ঝামেলা সৃষ্টি করা হয়? বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে সকল নামাজে কুরআন উচ্চস্বরে পড়তেন সে সকল নামাজে লোকেরা কুরআন পড়া থেকে বিরত থাকলো, যখন তারা এ ব্যাপারটি শুনতে পেল।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯.পরিচ্ছেদঃ যে নামাজে ঈমাম উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করে সে নামাজে ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পড়া

৯২০. উবাদাহ ইবন সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে এক নামাজ আদায় করিলেন, যাতে উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করা হয়। তারপর তিনি বলিলেন, যখন আমি উচ্চস্বরে কুরআন পড়ি তখন সূরা ফাতিহা ব্যতীত তোমাদের কেউ যেন কিছু না পড়ে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১০.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শুনবে এবং চুপ থাকিবে। আশা করা যায় তাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হইবে- আয়াতের ব্যাখ্যা

৯২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ঈমাম নিযুক্ত করা হয়েছে তাহাঁর অনুসরণ করার জন্য। অতএব, যখন সে তাকবীর বলে তখন তোমরাও তাকবীর বল, আর যখন সে কুরআন পড়ে তখন তোমরা চুপ থাকিবে, আর যখন তিনি বলেন, সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ তখন তোমরা বলবে, রাব্বানা লাকাল হামদ।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৯২২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ঈমাম তো এজন্য যে, তাহাঁর অনুসরণ করা হইবে। অতএব, যখন ঈমাম তাকবীর বলে তখন তোমরাও তাকবীর বল। আর যখন ঈমাম কুরআন পড়ে তখন তোমরা চুপ থাক। আবু আবদুর রহমান বলেন, মুখাররিমী বলিতেন, তিনি অর্থাৎ মুহাম্মদ ইবন সাদ আনসারী নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১১.পরিচ্ছেদঃ ইমামের কিরাআত মুকতাদীর জন্য যথেষ্ট হওয়া

৯২৩. আবুদ দারদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হলো, প্রত্যেক নামাজেই কি কিরাআত আছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। এক আনসার ব্যক্তি বলিল, তা ওয়াজিব। তখন তিনি আমার দিকে লক্ষ্য করিলেন, আমি সকলের মধ্যে তাহাঁর নিকটবর্তী ছিলাম। তিনি বলিলেন, ঈমাম যখন দলের ঈমামতি করেন, তখন আমি মনে করি, ঈমামই তাহাদের জন্য যথেষ্ট। আবু আবদুর রহমান [রহঃ] বলেন, এটা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বলা ভুল। এ হলো আবুদ দারদারই কথা।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১২.পরিচ্ছেদঃ যে ভালভাবে কুরআন পাঠ করিতে জানে না, তার জন্য যা পাঠ করা যথেষ্ট

৯২৪. ইবন আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে আরয করিল, আমি কুরআন পাঠ করিতে পারি না। অতএব, আমাকে এমন কিছু শিক্ষা দিন যা কুরআন পাঠের পরিবর্তে যথেষ্ট হয়। তিনি বললেনঃ তুমি বল,

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৩.পরিচ্ছেদঃ ইমামের উচ্চস্বরে আমীন বলা

৯২৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তিলাওয়াতকারী আমীন বলে, তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা, ফেরেশতাগণও আমীন বলে থাকেন। অতএব, যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার মত হইবে, আল্লাহ পাক তার পূর্বের পাপ মার্জনা করবেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯২৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন তিলাওয়াতকারী [ঈমাম] আমীন বলে তখন তোমরাও আমীন বল। কেননা, ফেরেশতাগণও আমীন বলে থাকেন। আর যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার মত হয় তার পূর্ববর্তী পাপ মার্জনা করে দেওয়া হয়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯২৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন ঈমাম গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বাল্লীন বলেন তখন তোমরা আমীন বল। কেননা, ফেরেশতাগণও আমীন বলে থাকেন আর ঈমামও আমীন বলেন। যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার মত হয়, তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯২৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন ঈমাম আমীন বলে তখন তোমরাও আমীন বল। যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার মত হয় তার পূর্ববর্তী পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪.পরিচ্ছেদঃ ইমামের পেছনে আমীন বলার নির্দেশ

৯২৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন ঈমাম গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ-দ্বা-ল্লীন বলেন, তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা যার কথা ফেরেশতাগণের কথার মত হইবে, তার পূর্বের পাপ মার্জনা করা হইবে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫.পরিচ্ছেদঃ আমীন বলার ফযীলত

৯৩০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আমীন বলে, আর ফেরেশতারাও আকাশে আমীন বলেন, তখন যদি একটির সাথে অপরটির মিল হয় তবে তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করা হয়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৬.পরিচ্ছেদঃ মুকতাদীর ইমামের পেছনে হাঁচি দিয়ে আলহামদু লিল্লাহ …… বলা

৯৩১. রিফা ইবন রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। তখন আমি হাঁচি দিলাম এবং বললাম- [আরবী] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ সমাপ্ত করে ফিরে বলিলেন, নামাজে কে কথা বলেছে? তখন কেউই উত্তর দিল না। তিনি দ্বিতীয়বার বলিলেন, কে নামাজে তা বলেছে? তখন রিফাআ ইবন রাফি ইবন আফরা বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি বলেছি। তিনি বলিলেন, তুমি কি বলেছ? তিনি বলিলেন, আমি বলেছি- [আরবী] তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ যার হাতে আমার প্রাণ তাহাঁর শপথ! ত্রিশজনের বেশি ফেরেশতা তা নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে, কে তা নিয়ে উপরে উঠবে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯৩২. ওয়ায়িল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। যখন তিনি তাকবীর বলিলেন, তাহাঁর কর্ণদ্বয়ের নিম্ন পর্যন্ত উভয় হাত তুললেন, যখন তিনি গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বাল্লীন বলিলেন, তখন আমীন বলিলেন। রাবী বলেন, আমি তাহাঁর পেছনে থেকে তা শ্রবণ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুনলেন, এক ব্যক্তি বলছে- [আরবী] যখন নাবী [সাঃআঃ] নামাজের সালাম ফিরালেন তখন বলিলেন, নামাজে কে তা বলেছে? তখন ঐ ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি বলেছি। আর আমি এদ্বারা অন্য কিছু ইচ্ছা করিনি। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, বারজন ফেরেশতা তা দ্রুত আরশে তুলে নিয়ে গেল এবং তাতে কোন বাধা সৃষ্টি হয়নি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply